অভিনন্দন। ঐ বিশেষ সময় টিকে ধরার এক সাহসী প্রয়াস।
অনেক ধন্যবাদ, কৌশিক বাবু।
সব কটা পর্ব পড়লাম। ভাল লেখা
রঞ্জন-্দা, এই যে বিজনের একট ঘটনায় পাপবোধ, এ প্রসঙ্গে মনে হল - অতীতে মানুষ খুনের রাস্তায় (নকশাল আন্দোলন, সশস্ত্র বিপ্লব - যাতে মানুষ খুন অবধারিত) যাওয়ার জন্য কোন পাপবোধ নেই?
আপনার লেখায় এটা তেমন ভাবে আসে নি - এক্স নকশাল -রা কি পরবর্তী কালে পাপবোধে ভুগতেন ?
সরি অরণ্য,
কমেন্টটি এখন চোখে পড়ল। তাই উত্তর দিতে দেরি হয়ে গেল।
নকশাল আন্দোলনের হিংস্র 'বিপ্লব' প্রচেষ্টার সঙ্গে অতীতে যুক্ত থাকার সুবাদে আজ কোন 'পাপবোধ' আছে কিনা?
আমার উত্তরঃ ১) কারও কারও আছে। ২) কারও কারও নেই।
১আমি প্রথম দলে। আজ মনে করি-- হিংসার পথে কোন সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়। ওটা একটা ইল্যুশন। হিংসার একটা ভিশিয়াস সাইকল আছে। আঘাত-প্রত্যাঘাত-বদলার অন্ধ যুক্তি পরম্পরা আছে। আগুনে আগুন নেভেনা। এটা আমার ব্যক্তিগত প্রত্যয়। নভেলে সেটা অন্যভাবে বলার চেষ্টা করেছি। ক্যান্সার রোগী কমরেডের কালো বেড়ালের সঙ্গে (আসলে ওর পাপবোধ বা বিবেক) কথোপকথনে, বিধবা মায়ের একমাত্র সন্তান প্রিয়ব্রতর মৃত্যুতে ওর মায়ের সঙ্গে কারও দেখা না করা( সত্যি ঘটনা), বিজনের ঘটনাচক্রে এমন বিষয়ে জড়িয়ে পড়া যা তার পাপবোধকে জাগিয়ে তোলে। এছাড়া দুই বিরোধী দলের দুই শিক্ষকের রেনেগেডদের মেরে ফেলার পরওয়ানা জারি করা। দীপকের ( মাওবাদী নেতা নারায়ণ দাস সান্যাল) ক্যান্সার আক্রান্ত অবস্থায় মৃত্যুর দু'মাস আগে স্টুডেন্ট হলে জনসভায় স্বীকার করা -- ভায়োলেন্সের পথ ভুল। গ্ণ আন্দোলন সঠিক পথ।(সত্যি ঘটনা)।
শেষে মুখ্য চরিত্র রমেনের আন্দোলনে ফুট সোলজার না হয়ে বাচ্চাদের পড়ানোর দায়িত্ব বেছে নেয়া-- সবই পাপবোধের প্রকাশ। নো ভায়োলেন্স বলা।
২ অনেকে এখনও হিংসাকে বিপ্লবী হিংসা বলে বৈধতা দিয়ে ন্যায়যুদ্ধ/অন্যায় যুদ্ধের মধ্যে ফারাক করতে বলে নিজের বিবেক বা পাপবোধকে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন।
ছোটবেলায় অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির দিনে কেরলায় নম্বুদ্রিপাদ সরকার ফেলে দেওয়ায় ওখানে প্রায় সিভিল ওয়ারের মত হয়েছিল। একজন কমরেড পেশায় নাপিত ,ওখান থেকে কোলকাতায় পার্কসার্কাসে এসে শেল্টার নেন। আমার এক কাকা তাঁকে পাড়ার সেলুনে কাজে লাগিয়ে দেন। একটু বড় হয়ে সেই কথা তোলায় উনি আমাকে বলেন আসলে ও কেরালায় ১১টা মার্ডার করে এসেছিল। পুলিশ খুঁজছিল।
আমি অবাক। উনি ভাত খান কি করে ? রাতে ঘুম আসে?
-- বুঝলি, ওটা ইডিওলজির মার, তাই মনে লাগে না।
এই যুক্তি আমার রাইট উইং বন্ধুদেরও। ওরা বলে হিন্দু বিপন্ন, অস্তিত্ব বিপন্ন। 'অপর'কে এদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন না করা হলে আমাদের বিপদ। তাই কেউও কেউও খোলাখুলি দেশ থেকে উইপোকার মত বিদেশিদের ধ্বংস করার কথা বলেন। আসলে সবার চোখেই আমি ঠিক অন্যে ভুল।
আমার কথা ভুল বা ঠিক যাই হোক, অন্যের প্রাণ নেবার অধিকার আমাকে কে দিয়েছে? তাই প্রাণদন্ডেরও বিরোধী। স্তালিনিস্ট মডেল অফ স্টেট ক্র্যাফটের বিরোধী। 'হিংসা সমাজ পরিবর্তনের ধাত্রী' এটায় বিশ্বাস করি না। সে যত বড় ঋষিমুনিই বলে থাকুন।
বুঝলাম, ধন্যবাদ রঞ্জন-দা
শেষটা ভাল লাগল না রন্জন বাবু। ফিকশনে অন্তত রমেনকে জিতিয়ে দিন, ওর পড়ানো স্টুএন্টদের ভিতর থেকে উঠে আসুক আরো নবীন আর প্রত্যয়ী যুবক যুবতীরা।
ফেরারী ফৌজের সারা জীবনের উপলব্ধিকে আত্মস্থ করে তারাই রমেনদের বিজনদের প্রায়শ্চিত্ত হয়ে উঠুক।
আবদুলরা আছে তো। ওর ছাত্রছাত্রীরা। এক্সপ্লিসিট করিনি আর কি।