মানলাম সব।
কিন্তু এবিপির অনলাইনে "সম্পাদকের পছন্দ" খোপে গুরুত্ব দিয়েই দেবেশ রায়ের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, শিরোনাম - "তিস্তা পারের বৃত্যান্ত রেখে চলে গেলেন দেবেশ রায়"।
এটি কী ভ্রম সংশোধনের চেষ্টা? এপিবির নানা চাতুরী অবশ্য মাঝে মধ্যেই ধরা পড়ে।
* বৃত্তান্ত হবে, সরি।
'তিস্তাপারের বৃত্তান্ত' খুব যন্ত্রণাদায়ক পাঠ । লাইব্রেরী থেকে বইটি ১০ মাস রেখেছিলাম। ১০ না ১১ বারের বার লাইব্রেরীর এক কর্মীর ধাতানি খেয়ে অবশেষ সারেন্ডার করে ফেরত দিই । ৪০ পাতার বেশী এগোতে পারিনি । :-(
বইটি নাকি বাংলা গদ্য সাহিত্যে যারে কয় paradigm shift । হবেও বা ।
আনন্দবাজারে লেখা ছাপাননি সেটা সত্যিই একটা বড় কৃতিত্ব । ইতিহাসও বলা যেতে পারে ।
ইনফ্যাক্ট সেটাই দেবেশ বাবুর সবচেয়ে বড় অ্যাচিভমেন্ট, এবার বুঝলাম । ক্ল্যাপ ।
বিপরীত মুখী সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত, লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন এরকম আরো কয়েকজনের কাছে শুনেছি এক রকম অভিজ্ঞতার কথা । একজন বলেছিলেন তাঁর দায়িত্ব পড়েছিল বইটির রিভিউ করা । লেখা জমা দেওয়ার ডেডলাইন আসে, আবার বাড়ান । এভাবে কয়েকটা ডেডলাইন পেরোনোর পরে হঠাৎ শোনেন 'তিস্তাপারের......' নাটকটি মঞ্চস্থ হচ্ছে। নাটক দেখে এসে নাকি রিভিউ লিখেছিলেন এবং পরে যে পত্রিকার জন্যে রিভিউ লেখেন, সেই সম্পাদকের কাছে তা স্বীকারও করেন ।
আমার মনে হয় উপন্যাসটির সঙ্গে লেখকের একটি বড়সড় ভূমিকা কিছুটা সাহায্য করত ।
অর্থ না বুঝলে পাতার পর পাতা পড়া সত্যিই যন্ত্রণাদায়ক ও অসম্ভব ।
@Icm, কমলকুমার (মজুমদার) ও কঠিন ।
আনন্দবাজারে কেউ ইচ্ছে না হলে লিখবেন না। চুকে গেল । কিন্তু আনন্দবাজারকে কেউ লেখেননি এটা বিশেষত্ব হয়ে দাঁড়ালে তার থেকে 'আনন্দবাজার' বিশেষ মর্যাদা পেয়ে যায় ।
আমার এক পরিচিত সম্পাদক আছেন । তিনি সুলেখক এবং আনন্দবাজারের চাট্টি নিন্দে করে ও তাচ্ছিল্য প্রকাশ করে, তিনি যে আনন্দবাজারে কোনোদিন লেখেননি এই খবরটি প্রায় প্রতি আড্ডায় একবার তোলেন । আবার তাঁর পত্রিকায় লিখে যাদের লেখালেখির সূচনা হয়েছে এবং পরে 'দেশ' , 'আনন্দমেলা' ও 'রবিবাসরীয়' তারা লিখেছে এ খবর খুব গর্বের সঙ্গেই বলে থাকেন ।
ব্যাপারটা আমার কাছে পরিষ্কার হয় না।
*আনন্দবাজারে
প্রসংগত, তসলিমা নাসরিন আনন্দবাজার পুরস্কার পেয়েছেন। এর আগে ও পরে দীর্ঘদিন তিনি দেশ ও আনন্দবাজারে গুচ্ছের লেখা লিখেছেন। কিন্তু উভয়ের এই সোনার সংসার ভাংলো কীভাবে, কেউ বলতে পারেন? এখন দেখি সুযোগ পেলেই তসলিমা আনন্দবাজারকে ধুয়ে দেন!
কতই রংগ দেখি দুনিয়ায়! :পি
তাই নাকি? অমন হলে আশ্চর্যের কিছু নয়। আসলে "ওরা ভয় পেয়েছে রবসন"!
কলেজে পড়ার সময় ঢাউস "তিস্তা পারের বৃত্তান্ত" পড়েছি। বোধহয় পড়তে মাসখানেক সময় লেগেছিল। তিস্তার সেই প্রবল বানের বর্ণনা খুব মনে দাগ কেটেছে। পুরো কাহিনী ভাল মনে নেই, আবার পড়তে হবে।
এখন এপারে তিস্তায় পানির অভাবে উত্তরবংগের কয়েকটি জেলা মরুভূমি হতে বসেছে। কে যে হিরক রাণীর নাম "মমতা" রেখেছিলেন, সেটাই ভাবি, তিনি আসলে স্বার্থক ক্ষমতা ব্যানার্জি। অথবা এরই নাম রাজনীতি।
পুনশ্চঃ "তিস্তাপারের বৃত্তান্ত" বোধহয় এখন এপারের তিস্তা অঞ্চলের উত্তরবংগের মানুষের কাছে অলীক স্বপ্ন মনে হবে।
তিস্তা বড় হয়ে পড়ব।
'তিস্তাপার......' সাহিত্য অকাদেমী না পেলে বাঙালি হৃদয়ে না মস্তিস্কে জায়গা পেত ?
বাংলা গদ্য নিয়ে যাদের এত চিন্তা তারা সুন্দরবনের 'আবাদ সাহিত্য' বীরভূমের আদিবাসীদের লেখা পত্র পত্রিকা পড়েন ?
দেবেশ রায়কে ভাল বলার মধ্যেও সেই শহুরে পনা আর পুরষ্কার সর্বস্ব মানসিকতা !
তসলিমার বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান গণ্ডগোলে হলেও তাঁর আগের লেখা, মানে বাছাই করা বেশ কিছু লেখা আমার এখনো খুব প্রিয় ।