
কেরালার বন্যাবিধ্বস্ত বিভিন্ন অঞ্চলে দিনরাত কাজ করে চলেছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টরা। তাঁদেরই মধ্যে একটি দল কাজ করে চলেছেন কেরালায় কাজ করা লক্ষ লক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য। এঁরা এসেছেন বিহার, ওড়িশা, আসাম, পশ্চিমবঙ্গের মত সুদূর রাজ্যগুলি থেকে। সহদেবন এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিবন্ধটি লিখে আমাদের পাঠিয়েছেন সুমগ্না ভৌমিক।
কেরালায় গত চার-পাঁচ দিন ধরে প্রবল বর্ষণের কারণে স্বাভাবিক জীবন-যাপন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার কারণে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৪। ভারি বর্ষণের কারণে কেরালার মোট ৩৩টি বাঁধ থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টির জল বের করে দিতে হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর থেকে আগামী ২৪ ঘন্টায় ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। যদিও রবিবার নাগাদ আবহাওয়া কিছুটা উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কেরালায় এখনও বহু মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। বিপর্যয়ের আশঙ্কাও চরমে। বুধবার কেরালার মোট চৌদ্দোটি জেলাতেই রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। সরকারি দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে ৮৫৩৯৯ সংখ্যক মানুষকে বিভিন্ন রিলিফ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশেষত চেঙ্গান্নুরের অবস্থা অতি শোচনীয়। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন উদ্ধারের কাজে বেশি করে হেলিকপ্টারের প্রয়োজন বলে দাবি করছেন। তাঁরা এটাও আশঙ্কা করছেন যে উদ্ধার কাজ আজই শুরু না করলে আজ রাতেই হয় তো অনেক মানুষ মারা যাবেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর আবেদন, “আমরা ৫ দিন ধরে নৌবাহিনিকে আমাদের উদ্ধারের দাবি করে আসছি। এখনোও পর্যন্ত নৌবাহিনি আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। অবস্থা এতটাই গুরুতর যে এখানকার লোকজনকে এয়ারলিফট করা ছাড়া আর কোনও সমাধান নেই”।
চেঙ্গান্নুরের মত কেরালার বিভিন্ন প্রান্তের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন হাত জোড় করে তাঁদের প্রাণ ভিক্ষা চাইছেন। কেন্দ্র থেকে ভারতীয় সেনা, নৌবাহিনি এবং বিমান সমেত ৫২টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। হাজারের উপর অভিবাসী শ্রমিকদের অবস্থা ভয়াবহ। প্রায় এক লক্ষ শ্রমিক এই অবস্থায় বিপর্যস্ত। এঁদের অনেকেই ওড়িশা, আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। প্রতিটি রাজ্যের কাছে আবেদন করা হয়েছে স্পেশাল ট্রেন চালু করার। কেরালায় প্রায় ১০ লক্ষ বাঙালী থাকেন। এদের মধ্যে এর্নাকুলামে প্রায় ৩ লক্ষ বাঙালী শ্রমিকের অবস্থা বিপন্ন। বিভিন্ন সূত্র অনুসারে জানা যাচ্ছে যে, মালয়ালম ভাষা না জানার কারণে এঁরা ঠিকমতো সহায়তা পাচ্ছেন না। কেরালা ফ্লাড মাল্টিলিঙ্গুয়াল কল সেন্টার নামক একটি ফেসবুক পেজে যাবতীয় জরুরি তথ্য দেওয়া হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ওড়িশা সরকার ইতিমধ্যেই ওড়িয়া অভিবাসী শ্রমিকদের সাহায্যার্থে একটি দল কেরালায় পাঠিয়েছেন। যদিও, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে এখনও জানা নেই আমাদের।
পশ্চিমবঙ্গ কর্তৃপক্ষ এবং রেল মন্ত্রণালয়কে আমাদের নম্র অনুরোধ, কেরালায় বাংলা থেকে হাজারে হাজারে অভিবাসী কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছেন এবং উদ্ধার অভিযান চলছে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় তাঁরা সমস্ত জায়গা থেকে এর্নাকুলামে এসে জড়ো হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর্নাকুলম থেকে হাওড়া বা পশ্চিমবঙ্গের অন্য কোনও অংশে যাবার জন্য কিছু বিশেষ ট্রেন পাঠাতে পারেন, তা হলে মানুষগুলি বেঁচে যায়। আমরা এই অভিবাসী কর্মীদের জন্য বিনামূল্যে আপৎকালীন রেল পরিষেবা দেবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
dc | unkwn.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১৮ ০১:৩৮84677
দ | unkwn.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১৮ ১১:১২84674
সিকি | unkwn.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১৮ ১১:২০84675
দ | unkwn.***.*** | ২১ আগস্ট ২০১৮ ১২:০৫84676