এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • প্রসঙ্গ: ভারতীয় মুসলিম

    Zarifah Zahan লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০১ এপ্রিল ২০১৮ | ২০৯৯ বার পঠিত
  • ছোটবেলায় বেশ একখানা খেলনা রেলগাড়ী ছিল। প্রথমে লম্বা মইয়ের মতন ট্র্যাকখানা পেতে তারপর চাবি ঘুরিয়ে তিন কামরার গাড়ীটা ছেড়ে দিলেই বেশ ঘসঘসিয়ে সেটি দম ফুরোনো অব্দি হেলতে দুলতে ঘুরপাক খেত ট্র্যাকে। যখনই কান্নাকাটির জন্য ওয়ার্ম আপ করব ভেবে হাত-পা গোটাতে শুরু করতাম ঠিক সে সময়ই আম্মি আলমারির মাথা থেকে টেনে সটান মেঝেতে বসিয়ে দিত গাড়ীটা। আমি তখন চুপ, দুনিয়া রসাতলে গেলেও ঘাড় ঘুরিয়ে জায়গা বদলে মিনি পুশ-আপ দেওয়ার কথা কস্মিনকালে ভাবার আলসেমি করতাম না।
    তা আমাদের এখনকার দশা হল ঠিক সেই ছোটবেলা মার্কা। রেলগাড়ী হল গিয়ে হুজুগ, ট্র্যাক অর্থাৎ ধর্ম। ধর্মের কল একবার পেতে ফেললেই হল, বাতাস থাকুক না থাকুক চাড্ডি বাড়ন্ত। আম-আদমি, কে কাকে গরু ছুঁড়েছে, কে কাকে বিনা পাসপোর্টে পাকিস্তান পাঠাচ্ছে সেসব নিয়ে চুলোচুলি করতে করতে নীরবে বুলেট ট্রেনের বেগে আচ্ছে দিনের লেবেন্চুস চুষবে কিনা আর হনুরা দিব্যি লেজটি নাচিয়ে দাঁতটি কেলিয়ে মালামাল ডেইলির ট্রেলার লঞ্চ করবে আর তার আগে এক মিনিটের অ্যাড চলবে, "মেরা আচ্ছে দিন আয়েগা...জরুর আয়েগা" : এক্কেরে ছেলেভুলানো কান্না থামানো স্ট্র্যাটেজি।
    তা রেলগাড়ীর কথা যখন এলই তখন না হয় তাদের দু'ভাগকেও এনে ফেলি, একটা ধরা যাক ইলেকট্রিক ট্রেন আর একটা না'হয় টয় ট্রেন। ধর্মের মোড়কে এই 'সংখ্যালঘু' টয়ট্রেনটির ঢিমে তালে চলতে চলতে প্রভূত ধোঁয়া নিষ্কাশনের কারণ আপাতত আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে।

    যদিও ২০১১র হিসেব অনুযায়ী ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৪.২% ই মুসলিম অর্থাৎ সংখ্যাটা প্রায় ১৭.২ কোটি, যা কিনা ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানের পরই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী তবুও ক্ষমতা-অধিকার-সামাজিক প্রেক্ষাপট সব মিলিয়ে মুসলিমরা, বিশেষত হালের গোময় রাজনৈতিক বলয়ে প্রকটভাবে 'সংখ্যালঘু'। স্বাধীনতার ৭১ বছর পর অন্ধ ভিখারির অন্নসংস্থানের বদলে জোর করে 'জয় শ্রীরাম' বলানোয় দেশ এখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে।
    শিক্ষাক্ষেত্রে 'ইললিটারেট পার্সেন্টেজ' ডেটা বলছে (^১), গোটা দেশে সংখ্যাটা হিন্দুদের ৩৬.৪ এবং মুসলিমদের ৪২.৭। কর্মসংস্থানের হিসেব অনুযায়ী(^২), ১৭.২ কোটি মুসলিমের মধ্যে কাজ না করা মানুষের সংখ্যা ১১.৬ কোটি অর্থাৎ জনসংখ্যার ৬৭.৪২%, হিন্দুদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা শতকরা ৫৮.৯৫।
    শিক্ষা আর কাজের প্রসঙ্গ যখন এলই, শহর- গ্রামের কথাও একটু আসুক, খানিকটা ওই কান টানলে মাথা আসার মতো ফান্ডায় আর কী। তা ডেভলপমেন্ট ইনডেক্স অনুসরণ করলেই দেখা যাবে, যে দেশ যত 'উন্নত' সে দেশে গ্রামের তুলনায় শহরের অনুপাত অনেক বেশি। জীবন যাত্রার আধুনিকীকরণ, বেসিক অ্যামিনিটিস সবকিছুর নিরিখেই শহর এগিয়ে। এবার এই ধারণা দিয়ে যদি এই বাংলারই কোন একটা জেলার তথ্য বিচার করি, তাহলে দেখব খোদ মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ (মুসলিম -৬৬.২৭%, হিন্দু- ৩৩.২১%) এর সদর শহর বহরমপুরে চরিত্রটা আবার উল্টো : সেখানে মুসলিম ৯.০৭%, হিন্দু ৯০.১৪% ^(৩)। তেমনি উত্তর দিনাজপুরে হিন্দু-মুসলিম অনুপাত প্রায় সমান সমান (৪৯.৩১:৪৯.৯২) হওয়া সত্ত্বেও জেলা সদর রায়গঞ্জে মোট জনসংখ্যার ৯৭.৩৭% হিন্দু। অর্থাৎ শহরে কাজের প্রধান চরিত্র চাকরি/ব্যবসা করার মতো শিক্ষাগত যোগ্যতার অভাব, জীবনযাত্রার মান এক্ষেত্রে বেশ অন্তরায়। অতএব চাষবাস বা কায়িক পরিশ্রমই এদের গ্রাম্য জীবনের চাকা গড়ানোর প্রধান মাপকাঠি। এই পর্যন্ত পড়েই 'মোল্লাদের একগাদা বাচ্চা হলে আর কী উন্নতি হবে' বলে যাঁরা মুখ খুলবেন ভাবছেন, শুধুমাত্র তাঁদের জ্ঞাতার্থেই হাল্কা এক্সট্রা ইনপুট(^৪), গোটা দেশের টোটাল ফার্টিলিটি রেট (TFR) যেখানে ২.৩ সেখানে গোবলয় চত্ত্বর অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশে(হিন্দু: মুসলিম - ৪:১) সংখ্যাটা ৩.১, বিহারে(হিন্দু:মুসলিম -৬:১ ) ৩.৩, মধ্যপ্রদেশে(হিন্দু:মুসলিম - ১৪:১) ২.৮, রাজস্থানে(হিন্দু:মুসলিম - ১০:১) ২.৭ অথচ নাক সিঁটকানো 'সিকুলার' পশ্চিমবঙ্গে(হিন্দু:মুসলিম - ৩:১) সংখ্যাটা ১.৬।

    এত তথ্য কপচিয়ে ঠিক কী বলতে চাইলাম? মুসলিম অর্থাৎ যে 'সংখ্যালঘু'রা পিছিয়ে পড়া 'অপ্রেসড', ভোটব্যাঙ্ক আর দাঙ্গার বাইরে যাদের নাকি কোন ভূমিকা নেই - সেই লাইমলাইটের আলোয় অভিনয় দেখার আগে একটু অভিনেতাদের 'সত্যি' চেহারা জানার চেষ্টা মায় কিছু না। তবে পিছিয়ে পড়া এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর ইদানিংকালের শিক্ষিত-অশিক্ষিতের গন্ডি মুছে যে অস্তিত্ব বজায়ের, সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার চোরা ভীতি, তা কি একেবারেই নতুন?বোধহয় না। '৪৭ এর দেশ ভাগের সময়কার টেনশন আবার নতুন মোড়কে একাত্তর বছর পর ফিরে এসেছে দেশে, সৌজন্যে কেন্দ্রে বিজেপি জমানা।
    আচ্ছা, লোকসভায় নির্বাচিত মুসলিম প্রতিনিধিদের খতিয়ানে এবার একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক : ১৯৫২-২৫, ১৯৫৭-২৩, ১৯৬২ -২৬,১৯৬৭-২৮, ১৯৭১-২৮, ১৯৭৭-৩২, ১৯৮০-৪৯, ১৯৮৪-৪৫, ১৯৮৯-৩৩, ১৯৯১-২৯, ১৯৯৬-২৭, ১৯৯৮-৩৮, ১৯৯৯-৩২, ২০০৪ -৩৫, ২০০৯-২৮ এবং ২০১৪ য় ২২। ৭১ বছরের ইতিহাসে সংখ্যাটা সবচেয়ে কম, খুব কাকতলীয় নয় কি ব্যাপারটা কিংবা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো যেমন গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড,মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, ত্রিপুরা... কোথাও বিধানসভায় শাসক দলের তরফে একজনও মুসলিম সদস্য নেই, এ ঘটনাটাও বড্ড 'অতিরঞ্জিত', তাই না?
    ধরা যাক পুলিশসার্ভিসেসে অফিসার বা হাবিলদারের সংখ্যা কিংবা 'বর্ডারে জওয়ান পাহারা দিচ্ছে' দেশপ্রেমীদের কথা ভেবে আর্মিতেও যদি নজর রাখি, নিযুক্ত কর্মী/অফিসারের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম অনুপাতের ব্যাপক তারতম্য কিন্তু বড্ড চোখ টানে। ( "The Missing Muslim Army Officers" by Ali Ahmed, Economic & Political Weekly, January 27, 2018)

    তাহলে বাকি দলরা কি সবাই মুসলিমদের এই পিছিয়ে পড়া, অসুবিধা, সামাজিক অধিকার - এসব নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ‍্য করে এসেছে এতদিন ধরে? কোথাও কি 'ভোটব্যাঙ্ক' এর জন্য 'যতটুকু দরকার' তার বাইরে আলোচনা হয়েছে বিশদে? তাহলে আসাউদ্দিন ওয়াইসির মত বিজেপি মুদ্রার ওপিঠ মার্কা চরমপন্থী লোকজন যখন সে দাবি তোলে তাতে আপত্তি করি কেন? সেক্যুলারিজমের পাশাপাশি নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলার মত কোন মুসলিম নেতা এতদিনেও পাইনি কেন?
    এটা ভাবতে গেলেই একবার টাইমমেশিনে রিওয়াইন্ড করে যেতে হয় ১৯৪৭ এ, দেশভাগের সময়।
    মুসলিম লীগের তাবড় নেতারা যখন সেসময় পাকিস্তানের পক্ষে সওয়াল করছেন প্রাক্তন প্রিমিয়ার অফ বেঙ্গল, এইচ. এস. সুরাওয়ার্দিই ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভারতে থাকার পাশাপাশি ভারতীয় মুসলিমদের এবার থেকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তৎকালীন মুসলিম লীগের সদস্য মহম্মদ রাজা খান তাঁর আত্মজীবনী What Price Freedom এ সেসময়কার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারতীয় মুসলিমদের সম্পর্কে বলেছেন, "পাকিস্তান তৈরির কাজে জড়িয়ে পড়তে পড়তে তাঁরা আচমকা কোনও নেতা, কোনও সংগঠন ছাড়া দিশাহীন হয়ে পড়েন। তাঁদের পথ দেখানোর মত তখন কেউ নেই। এদিকে মিস্টার জিন্না নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর, করাচির দিকে পাড়ি দিচ্ছেন। লীগের বেশিরভাগ উচ্চপদস্থ নেতারা ধীরে ধীরে কেউ করাচি যাচ্ছেন, ভারতে আর কোন নেতা হিসেবে ভবিষ্যত নেই বুঝে পাকিস্তানে নতুনভাবে আখের গুছাতে, আর নয়তো বাকিরা পুরোপুরি অবসর নিয়ে নিয়েছেন। সমস্ত দেশের মুসলিমদের মধ্যে তখন একটা অজানা আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে, অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে। নিজেদের অধিকার বা রাজনৈতিক মনোভাব ছেড়ে তখন তাঁদের একটাই চিন্তা ছিল যাতে কোনভাবে নিজেদের জায়গায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুন্ন না হয়। রাজনীতি সম্পর্কিত সমস্ত চিন্তা তখন ওঁদের কাছে বিলাসিতা।"

    দেশভাগের পর দিল্লিতে মৌলানা আবুল কালাম আজাদের বক্তৃতায় মুসলিম রাজনীতির কোন প্রসঙ্গই ওঠেনি। ২৭ শে ডিসেম্বর, ১৯৪৭ এ লাখনৌয়ের বক্তৃতায় জড়ো হওয়া ৬০০০০ মুসলিমের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, " এখন ভারত যেহেতু স্বাধীন রাষ্ট্র অতএব আমাদের আর কোন রকম রাজনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত হওয়ার আর প্রয়োজন নেই।" যদিও অসাম্প্রদায়িক একটা দল গঠনের কথা তিনি বলেছিলেন কিন্তু সেটা আর কখনও হয়ে ওঠেনি। এদিকে তিনি মুসলিমদের রাজনৈতিক কাজ চালানোর জন্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া উচিৎ কিনা সে বিষয়েও খোলসা করেননি।
    সুরাওয়ার্দি তখন মুসলিমদের জানান কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার আগে 'গান্ধীর সিগন্যালের' অপেক্ষা করতে, কারণ তিনি তখনও দ্বন্দ্বে, "আমাদের কি সত্যিই মন থেকে স্বাগত জানানো হবে, আমাদের কি আদৌ বিশ্বাস করা হবে?"( The Times of India, December 27, 1947)
    লাখনৌ এ মুসলিম লীগের এই সভার পরেই বল্লভভাই প্যাটেলের অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। ১৯৪৮ এর ৬ই জানুয়ারি তিনি বলেন, "ভারতীয় মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বলছি, যে কোনও একটা অপশন পছন্দ করুন। যারা পাকিস্তান যেতে চান দয়া করে সেখানে গিয়ে শান্তিতে থাকুন আর হিন্দু মহাসভার কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা প্লিজ কংগ্রেসে যোগদান করুন।" (Bombay Chronicle, January 7, 1948) এরপরও কিন্তু আজাদ একটা বাক্যও ব্যয় করেননি।
    গান্ধীর মৃত্যুর পর ৩রা এপ্রিল, ১৯৪৮ এ সংবিধানের নতুন রেজোলিউশনে প্রস্তাবিত হয় , এবার থেকে কোন সাম্প্রদায়িক সংগঠন শুধুমাত্র ধর্মীয় সংস্কৃতি বা সেই ধর্মলম্বী মানুষদের আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে অংশীদার হতে পারবে, এর বেশি নয়।

    যাই হোক, রাজনৈতিক ইস্যুতে কংগ্রেস না লীগ - এই দ্বন্দ্বের তখনও কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। ১৯৬১ তে রাজা খান জানান মুসলিমদের সামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় করতেই এবার থেকে তারা নিজেদের অঞ্চল, মাদ্রাজ আর কেরালার নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী। তিনি বলেন, " সমস্ত ভারতে সংখ্যালঘু হিসেবে, না তো মুসলিমদের সংখ্যাগুরু ধর্মীয় সম্প্রদায়, না তো সংখ্যাগুরু রাজনৈতিক দলের সাথে মনোমালিন্য করে কোনও লাভ আছে।"১৯৫৯ এর সেই সময় ততদিনে রাজা খানরা কংগ্রেসের বিশ্বাসভাজক হিসেবে তৎকালীন বাম সরকারকে উল্টে প্রথম ক্ষমতায় আসে। যদিও দুই পার্টির বহু প্রতীক্ষিত মিলনতিথি পেরোলেও লীগ কোনও মন্ত্রীত্ব পায়নি, একমাত্র স্পীকারশিপ ছাড়া। কিন্তু আদতে লীগের এই উত্থানে মুসলিমদের কী লাভ হয়েছিল? একটাও রাজনৈতিক, সামাজিক, কোনও ইস্যুর কথা সামনে আনা হয়নি, তারা যে তিমিরে সে তিমিরেই : তখনও তারা দেশভাগ পরবর্তী আইডেন্টিটি ক্রাইসিস সামলাতেই ব্যস্ত। শুধুমাত্র লীগের যে নেতারা এতদিন রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন, কংগ্রেসের বাহবায় তাঁদের পায়ের জমি বেশ খানিকটা শক্ত হয়।

    ইসলামিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বিশিষ্ট অ্যাটর্নি সাইফ এক.বি. ত্যাবজি ১৯৫৫ নাগাদ উর্দু পেপার 'ইনকিলাব' এ পরপর আটখানা সিরিজ লেখেন, ভারতীয় মুসলিমদের অবস্থা প্রসঙ্গে। তার একটিতে তিনি মুসলিমদের নিজেদের আর্থ-সামাজিক মুলস্রোতে ঢোকার জন্য রাজনৈতিক সচেতনতাকে হাতিয়ার করার প্রেক্ষিতে বলেন, " মুসলিমদের নিজেদের স্বার্থেই রাজনীতিতে সক্রিয় হতে হবে। তবে শুধু এটুকু করলেই হবে না, শাসক দল অর্থাৎ কংগ্রেসের বিশ্বাসভাজন হতে হবে যাতে তারা প্রথম সারির প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে পড়ে। তাহলেই তারা সরকারি, কো-অপারেটিভ, রাজ্য সরকারের আওতায় থাকা সেক্টর, সব জায়গার চেয়ারম্যান/ ভাইস চেয়ারম্যান সিলেক্ট করতে পারবে আর মুসলিমদের প্রয়োজনের কথা ঠিকমত লোকজনদের কাছে জানানো যাবে।"
    কিন্তু এটাই খুব হতাশাজনক যে ত্যাবজির মত ওমন সেক্যুলার ও পন্ডিত ব্যক্তি মুসলিমদের এভাবে রাজনৈতিক স্বার্থ অন্বেষণের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারেননি। রাজনীতি তো শুধুমাত্র এমপ্লয়মেন্ট নয়, দেশের, সমাজের প্রতিটা ইস্যু এর মধ্যে পড়ে, সে ট্রেড ইউনিয়ন মুভমেন্ট হোক, বা কো-অপারেটিভ আন্দোলন বা মহিলা উন্নয়নমূলক কাজ বা হোক বাচ্চাদের হেল্থ ইস্যু কিংবা ছাত্রশিক্ষানীতি।
    এইভাবে রাজনীতিকে টুল হিসেবে ব্যবহারের বদলে যদি একজন সত্যিকারের নেতা থাকতেন যিনি প্রতিটা ইস্যু নিয়ে কথা বলার সাথে সাথে মুসলিমদের সামাজিক অবক্ষয়ের ব্যাপারেও মতামত রাখছেন, সেটা কিন্তু প্রকৃত 'মুভমেন্ট' হত।

    দেশ ছেড়ে এবার নিজের রাজ্যে ফিরে আসি। ১৯৭৭ থেকে ২০১১- দীর্ঘ ৩৪ বছর বামপন্থী শাসনকালে একবারের জন্যও মুসলিমদের নিজেদের 'অস্তিত্ব' নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে হয়নি। বাবরি মসজিদের ঘটনায়, যাতে অবশ্যই মুসলিম নেতাদের ভূমিকা ছিল একটা ঐতিহাসিক স্থাপত্যকে ভারতীয় স্থাপত্য হিসেবে না ভেবে 'আমাদের ঐতিহ্য, মুসলিমদের ঐতিহ্য' বলে গলা ফাটিয়ে দক্ষিণ চরমপন্থীদের উত্থানে প্রবলভাবে সাহায্য করার, সেসময় বাংলায় তেমন কোনও সন্ত্রাসের বীজ ছড়াতে পারেনি। অথচ ইদানিং 'উৎসব' এর অছিলায়, ফেসবুকের ছবির অছিলায় কত অনায়াসে দাঙ্গা হয়ে যায়, মানুষ মারা যায়। পুরোনো সেই দেশভাগ পরবর্তী অস্তিত্ব রক্ষার আতঙ্ক নতুন জুজু হয়ে থাবা বসিয়েছে 'সংখ্যালঘু'দের রুজি-রুটিনে। সেক্যুলার একটা দল দীর্ঘবছরগুলোয় 'প্রটেকশনিস্ট' হিসেবে ঢাল হয়েছিল। কিন্তু প্রথমের পেশ করা ডেটাগুলো শুধু এই বাংলায় বামদলের সৌজন্যে কি একটু ভাল হতে পারত না?
    ২০০৬ এর সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যগুলো পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, কেরালা, উত্তর প্রদেশের মধ্যে একমাত্র কেরালাতেই উন্নয়নের মাপকাঠিতে হিন্দু-মুসলিম তারতম্য কম। অথচ পশ্চিমবঙ্গেই শিক্ষা, কাজ, দারিদ্রের নিরিখে হিন্দু মুসলিমের তফাৎ সবচেয়ে বেশি।
    রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে সংখ্যার অনুপাতে ২০০৬ এ যে মুসলিম পার্সেন্টেজ ছিল ৩.৪% , ২০১৬ তে সেটা বেড়ে হয় ৫.৭% ( যদিও এটার পুরো ক্রেডিট দাঙ্গাপ্রিয় শাসকদলের না বামজমানার শেষের দিকে শুরু হওয়া কাজের ফল, তার স্পষ্ট তথ্য জানা নেই)। ২০০৬ এর তথ্য অনুযায়ী, সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে যেখানে মিন ইয়ার অফ স্কুলিং(MYS) ৩.৫৮ সেখানে মুসলিমদের জন্য সংখ্যাটা মাত্র ২.৫৮। হিন্দুদের মধ্যে সাক্ষরতার হার যেখানে ৭২.৪% মুসলিমদের সেটা ৫৭.৫%। অথচ বিহার, যেখানে সাক্ষরতার হার পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় অনেক কম, সেখানেও হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে এই শিক্ষাগত ফারাক প্রায় নগণ্য( হিন্দু : ৪৭.৯%, মুসলিম:৪২%)। গোটা ভারতে যেখানে মাধ্যমিক পাশ করা মুসলিম শতাংশ প্রায় ২৪, সেখানে রাজ্যে ঠিক অর্ধেক, ১২ শতাংশ মুসলিম ছেলেমেয়ে দশের গন্ডি পেরিয়েছে, হিন্দুদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা যেখানে প্রায় শতকরা ৩৮। গ্র্যাজুয়েশনের নিরিখেও দেশে যেখানে হিন্দু:মুসলিম শতাংশ ১৩:৫ রাজ্যে সে শতাংশ অনুপাত ১৪:৩।
    যদিও সাচার কমিটির এই রিপোর্টের পর বামসরকার কাজ শুরু করায় এই অনুপাতের বেশ অগ্রগতি চোখে পড়ে। ২০১১র সেনসাস ডেটা অনুযায়ী(^৬), মুসলিম সাক্ষরতার হার ৫৭.৪৭% থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৮.৭৪% । সমস্ত রাজ্যের ক্ষেত্রে যেখান সাক্ষরতার হার বেড়েছে ৭.৬২% সেখানে মুসলিমদের এই শতাংশ হার প্রায় ১১%।

    হালের রাজনীতির প্যাটার্নই হল সমস্ত মিডিয়া হাউস কিনে, আইটি সেলের ভাইটিদের মাথায় 'জয় শ্রী রাম'ফেট্টি ঠুকে ফেসবুকে খবর 'তৈরি' করে আসল সমস্যা থেকে জনগণের চোখ সরিয়ে ধর্ম-ধর্ম গুগলি খেলা। চরমপন্থীদের একটা করে 'কাজ' আর তার পরিবর্তে সেক্যুলার দলদের সম্প্রীতি রক্ষার জন্য নানারকমের কর্মসূচী, মানুষকে বোঝানো, আন্দোলন - এই হল স্ট্র্যাটেজি, যাই হোক না কেন আসল সমস্যা নিয়ে কথা বলার আগেই ডানে চাল চলবে আর বামেদের সেসব আবর্জনা পরিষ্কার করে মানুষকে সত্যি বোঝাতে হবে অর্থাৎ দক্ষিণের আগে ফেলা ঘুঁটির চালে প্রতিবার খেলার শুরুয়াৎ। অথচ স্বাধীনতার এত বছর পর, আমাদের, সমস্ত ভারতবাসীদের লড়াইটা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে না হয়ে সম্প্রীতির পক্ষে হওয়ার কথা ছিল। ধর্মের ট্রেন ট্র্যাক তুলে রেখে বাইরে একসাথে চলার কথা ছিল। কে 'হিন্দু' কে 'মুসলিম' জন্মসূত্রে পাওয়া এই পরিচয়ের ভারে আতঙ্কে দিন কাটানোর চেয়ে সবার হাতে হাত মিলিয়ে সামগ্রিক উন্নতিই তো লক্ষ হওয়া উচিৎ। ধর্ম পরিচয়ে দাগানো 'ভোট ব্যাঙ্ক' এর ওপর 'তোষণনীতি'র লাল সুতো পরানোর কেন প্রয়োজন যদি পিছিয়ে পড়াদের সামনে টেনে এনে মানুষ হিসেবে সবাই একসারিতে নাই বসতে পারি!

    (১.http://indianexpress.com/article/india/india-news-india/muslim-illiteracy-rate-india-census-report-education-3006798

    ২.http://indianexpress.com/article/explained/largest-share-of-non-workers-among-muslims-2840123

    ৩.https://www.census2011.co.in/data/religion/district/7-murshidabad-.html

    ৪. http://factchecker.in/the-myth-of-indias-muslim-population-rise

    http://www.indiaspend.com/cover-story/indian-population-growth-less-dependent-on-religion-more-on-development-80125/amp

    ৫.http://niti.gov.in/content/total-fertility-rate-tfr-birth-woman

    ৬. https://timesofindia.indiatimes.com/city/kolkata/Bengal-Muslim-literacy-rate-up-11-in-a-decade/articleshow/50387020.cms)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০১ এপ্রিল ২০১৮ | ২০৯৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    তোষণ - Zarifah Zahan
    আরও পড়ুন
    ফড়িং - Zarifah Zahan
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | ***:*** | ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৮62340
  • তথ্য দিলেই এই নিয়ে অন্যসময় হইচই করা লোকজন চুপ!!
  • Ishan | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৩62344
  • একটা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। পসিবিলিটি আর প্রোবাবিলিটি কি একই জিনিস? মানে অঙ্কের পরিভাষায়?
  • cm | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১০62345
  • “১৯৭৭ থেকে ২০১১- দীর্ঘ ৩৪ বছর বামপন্থী শাসনকালে একবারের জন্যও মুসলিমদের নিজেদের 'অস্তিত্ব' নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে হয়নি” ধন্যবাদ।
  • S | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৫৩62346
  • হুম। "গরীব হওয়ার পসিবিলিটি বাড়ে" টা "গরীব হওয়ার প্রোবাবিলিটি বাড়ে" হবে।
  • Ishan | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৩62347
  • আরে আমি ভুল ধরিনি। জানতে চাইছি।
  • cm | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:৩৫62348
  • ঈশেনবাবুর জন্য,
  • Ishan | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:৫৪62349
  • হয়ে গেল। লিং ধরিয়ে দিল।
  • Atoz | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:৫৮62350
  • এটা ভালো লিং। নাটকের।
  • সর্বশক্তিমান | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:১৪62341
  • আল্লাহ কি করছেন? তিনি ছাড়া আর উপাস্য নাই। তার ইশারা বিনা একটা পাতায় নড়তে পারে না। তিনি মুসলমানদের কি দিয়েছেন? শুধু জান্নাতে হুরী সম্ভোগের লোভ দেখিয়েই ...
  • S | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৪৫62342
  • কেউ জান্নাতে হুরী সম্ভোগের লোভ দেখায়, কেউ আচ্ছে দিনের লোভ দেখায়; যে যেমন পারে আরকি।
  • S | ***:*** | ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৫৩62343
  • লেখাটার তাৎপর্য বুঝলাম না। মানে এইসব তথ্য কি লোকে জানতো না? ভারতে কাস্ট সিস্টেমের সাথে শিক্ষা, আয়, উন্নতির ডিরেক্ট কোরিলেশন আছে। আর ভারতে এক্জন ব্যক্তি মুসলমান হলে তার অশিক্ষিত, গরীব হওয়ার পসিবিলিটি বাড়ে। এগুলোতো আমাদের জোকার মতন জায়্গায়ই প্রফেসাররা শিখিয়েছিলেন বহু আগে।

    আমারও ওরকম একটা খেলনা ট্রেনের খুব ইচ্ছে ছিলো ছোটবেলায়। কিন্তু খুব দামী শুনে আর আবদার করিনি।
  • জি | ***:*** | ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৫৬62351
  • আল্লাহ সবার দায় নিতে পারছে না বলেই তো ঘোর কলি কাল। নইলে তো বেশ বেহেস্তের আঙুর নয় আরবের খেজুরেই 'মুসলিম জনগণ' আঙুল চুষত। কাঁহাতক ইলিশ 'হিন্দু'দের মাছ বলে কান্নাকাটি করা জোকারগুলোর দাঁত খিঁচানোর দায় মানুষ হতে চাওয়া 'মুসলিম'দের পেছনে জুজু হয়ে ঘুরে বেড়ায়!

    তথ্য দিয়ে কিছু বোঝানোর দায় নেই। সেযুগের 'উপরের তলা'র প্রতিনিধিদের নিজেদের গা বাঁচানো দায় যুগের পর যুগ কেমন তালগোলে মুসলিম সমাজে প্যান্ডোরা বক্স হয়ে ঠেকেছে, সেটাই প্রসঙ্গের হালখাতা আর কি। পিছালো তো পিছালো, বাকি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পাল্টে যে হালের দশা হতে হবে, ভোটব্যাংকে আটকে থাকতে থাকতে 'বিনা টিকিটে পাকিস্তান যাত্রা' শোনার আশঙ্কায় দিন গুজরান হবে সেটা তো অনভিপ্রেত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন