'রমণীসিরিজ'; নামেই বোধগম্য এই কাব্যসিরিজের চরিত্র রমণীসংকুল। বিভিন্ন যুগের বিভিন্ন নারীদের নিয়ে, তাঁদের ছক ভাঙার গল্প, প্রথাকে উপেক্ষা করার সাহস মূলত উপজীব্য। ... ...
ঘরবন্দী স্মৃতিকথন -- ছোটবেলায় যে বাড়িতে ভাড়া থাকতাম, সেটি ছিল টালির ছাউনির দু'কামরার ঘর। বারান্দা প্লাস্টারের। তার ওপর সিমেন্টের সর নেই। এবড়ো খেবড়ো হেতনেয় বসে চলত হুটোপুটি। খানিক পা ঘষলেই চামড়ায় সরু সরু দাগ পড়ত...সমান্তরাল; যেন স্কেল দিয়ে মাপজোখ করে কেউ বুঝি খোলস থেকে কয়েক পরত রং তুলে নিয়েছে। তিন হাত উঁচু সেই বারান্দার পাশেই ছিল ঘেঁটু ফুলের জঙ্গল। ... ...
আচ্ছা, এই হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দেওয়াতে ক'টা কথা মনে হল। মোদীজির সবই মাস্টারস্ট্রোক, তাই তেনার অসীম ক্ষেমতায় মেরা দিমাগ কি বাত্তি জ্বল হি গ্যয়া। ... ...
পরশু প্রায় কিলোমিটার পঁচিশেক পেরিয়ে যখন জলঙ্গী পৌঁছাই, রাস্তায় বার তিনেক আটকে থেকেছি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুশপুতুল দাহন আর প্ল্যাকার্ড হাতে মৌন মিছিলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ক্রমশ বিপরীতমুখী হয়েছে রাস্তায় গাড়ি আটকে ইঁট ছোঁড়াছুঁড়ির ঘটনায়।
অথচ আমি জানি, সাধারণ মানুষকে হ্যারাস করে 'কাটার বাচ্চা আর মোল্লার দল হিংসা ছড়াচ্ছে' বলে বেড়ানো দু'মুখো কালসাপের ভুবনজোড়া ফাঁদে পা না দেবার মতন সাধারণ বোধবুদ্ধি আপামর 'আন্দোলনকারীর' নেই, সেটা হতে পারে না। তবু সেটাই হয়েছে... হচ্ছে। কারণ 'চতুরের ছলের অভাব হয়না'। ... ...
'মুসলিম তোষণ' তেমন কিছু জটিল ব্যাপার নয়। সারাবছর 'এ তারে ত্যালাইছে আর ও তার ভাগের মাখন ঝেঁপেছে' বলে ফুটেজ খাওয়ার আগে বেমক্কা কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি হলে 'ওজু ও হাতে'র আঙুল থেকে যে ক'ফোঁটা পানি ভোটের গামলায় পড়ে, তাহারে সজোরে লাথানোর ধক রাখে একমাত্র ভক্তদল। এনারা যতই হুপহাপ শব্দে হাততালি থুড়ি বগল বাজান না কেন, দেশে থেকেই দেশের লোককে চাবকে-ভয় দেখিয়ে-মুখে ঠুঁসো গুঁজিয়ে মাতারানীর শিং নাচিয়ে উদুম মারার পর দেশভক্তি শেখাতে আসতে খুলির ভেতর কিলোখানেক গোবরের সাথে কয়েক ছটাক গোমূত্রের সাথে মাস্তানির জম্পেশ কম্বি লাগ ... ...
বেশ কিছুদিন এই :লেখালিখি'র কচকচানিতে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া হয়নি। নেওয়া হয়নি বলতে ইচ্ছে ছিল ষোল'র জায়গায় আঠারো আনা, এমনকি, যখন আমাদের জুমলাবাবু 'কচি' হতে হতে তেল-পয়সা সবাইকেই ডুগডুগি বাজিয়ে বুলেট ট্রেনে ওঠাচ্ছেন তখনও আমি 'ঝালিয়ে নেওয়া'র সুযোগকে কাঁচকলা দেখিয়ে ভেবেছি, 'কী যায় আসে! একদিন তো মরেই যাব!' তবে, আমরা হলাম গিয়ে হুজুগে বাঙালি, জুতো সেলাই মায় চণ্ডীপাঠ : স্পিরিটে-ইন্টেলেক্টে তিতলি। অগত্যা যেই মুহূর্তে জুমলাবাবুর চ্যালাচামুন্ডাগণ সদর্পে জানান দিয়েছেন 'গুরু পূজ্যতে' ব্যাপারটাকে কাটিয়ে দিলে 'জিও ... ...
ভরা জৈষ্ঠ্যের গরমে খানিক উনুন সেঁকা ফিলিং আসছে ক'দিন, সাথে মাঝে মাঝেই আঁচে নব্বইকালীন বেড়ে ওঠার সূক্ষ্ম রোম্যান্টিসিজমে কয়লার গুল দেওয়া উল্টেপাল্টে ঘামাঘামি ট্র্যাপিংস। জনগণের সিকিম-দার্জিলিং ডায়েরির নামে বরফে ঢাকা ছবির গায়ে লাইক পুজো পেত্যয় দিতে গিয়ে মানসচক্ষের ঠান্ডায় যখন হ্যাঁচ্চো তোলার জোগাড়, ওদিকে আঙুল, ভিরমির নামে ফ্রেমে লটকানো মালা গলায় তোলার জোগাড় ঠিক তখনই এই ১৫ ঘন্টা পেটের ইঁদুরকে র্যাটাটুলের রেমি বানানোর মাসিক উৎসবকালে উপায়ান্তর না দেখে সোজা পাড়ি দিয়েই দিলাম জাকারিয়া স্ট্রিট।
< ... ...
গত এক সপ্তাহ ধরে জোরকদমে নীতি পুলিশগিরির প্রতিবাদে ফেবু উত্তাল, তবু তার সপক্ষে বা বিপক্ষে আমি কিছুই পোস্টাইনি নিজের দেওয়ালে। না মানে, এই ভুরি ভুরি জনগণের প্রত্যেককেই যে প্রতিটা বিষয়ে চোয়াল খুলে ভারী ভারী জ্ঞান ফলিয়ে ভার-চুয়াল জগৎ উদ্ধার করতে হবে, তার কেউ মাথার দিব্যি দেয়নি তবু বাঙালি যখন, স্রোতে গা ভাসান না হোক দু'-এক চিমটে জলও যদি কথা প্রসঙ্গে গায়ে ছেটাতে না পারি তো এ জীবনই বৃথা।
তা যাগ্গে, যা বলছিলাম আর কি, কিছু মানুষের হঠাৎ বচ্ছরভর ধম্মো-ধম্মো সুড়সুড়ি, লাল কেল্লা মায় গোটা দেশ বিকিয়ে দেওয়া ... ...
ছোটবেলায় বেশ একখানা খেলনা রেলগাড়ী ছিল। প্রথমে লম্বা মইয়ের মতন ট্র্যাকখানা পেতে তারপর চাবি ঘুরিয়ে তিন কামরার গাড়ীটা ছেড়ে দিলেই বেশ ঘসঘসিয়ে সেটি দম ফুরোনো অব্দি হেলতে দুলতে ঘুরপাক খেত ট্র্যাকে। যখনই কান্নাকাটির জন্য ওয়ার্ম আপ করব ভেবে হাত-পা গোটাতে শুরু করতাম ঠিক সে সময়ই আম্মি আলমারির মাথা থেকে টেনে সটান মেঝেতে বসিয়ে দিত গাড়ীটা। আমি তখন চুপ, দুনিয়া রসাতলে গেলেও ঘাড় ঘুরিয়ে জায়গা বদলে মিনি পুশ-আপ দেওয়ার কথা কস্মিনকালে ভাবার আলসেমি করতাম না।
তা আমাদের এখনকার দশা হল ঠিক সেই ছোটবেলা মার্কা। রেলগাড় ... ...
দুপুরের খাওয়ার পর আম্মি একটা মাদুর পাতত খড়খড়ি মেঝের ওপর। শুকনো, শক্ত মেঝে, কীসের তৈরি মনে নেই তবে লাল বা ছাই কোনো সিমেন্টেরই প্রলেপ ছিলনা তাতে : যেন কত জন্মের দুঃখ বুকে গেঁথে কঠিন বটের ঝুরির পেছনে লুকিয়ে থাকা পলেস্তরাখসা রাজমন্দির দাঁত ভেঙে পড়ে আছে। মাদুরের ওপর ক্লান্ত শরীরখানা এলিয়ে দিলে আপনিই ঘুম নেমে আসত আম্মির চোখে। আমি অবিশ্যি শুতাম পাশে, আম্মির আঁচলে মুখ ডুবিয়ে তাল পাতা হাতপাখার শরীর ভেদ করে মিহি হাওয়ার আবেশ নেব বলে। চৈত্রের দুপুরে লোডশেডিং ছিল সেকালের স্থাবর সম্পত্তি। আমার যদিও সে হওয়াছা ... ...