এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • কংগ্রেসের আর.এস.এস প্রেম

    Barnali Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৪২৪ বার পঠিত
  • কলকাতা মহেশতলায় এক ফল বিক্রেতা মুসলমানের ব্যবসার স্থানে তুলসি গাছ আরএসএস পুঁতে দিয়েছে যাকে কেন্দ্র করে অশান্তি হয়েছে অঞ্চলে। অনেকে পুলিশ প্রশাসনকে দোষ দিয়েছেন। কিন্তু তারা কি করবে? কারণ, দেশের আইন বলছে, *সকলের জন্য সমান আইনের* নিয়ম মেনে মানুষের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করা যাবে না। ফলে আজ না হয় ফল বিক্রেতার চত্বরে তুলসী গাছ বসেছে, কাল যদি কোনো মসজিদে তুলসী গাছ লাগানো হয়, পুলিশ সেটাও দ্রুত থামাতে পারবে কি? যেমন পারেননি দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু, তর্কাতীতভাবে যিনি ধর্মনিরপেক্ষ, যিনি সাম্প্রদায়িকতাকে মনে প্রাণে ঘৃণা করতেন। রাতের অন্ধকারে আর.এস.এস এর দুষ্কৃতিদের রামলালার মুর্তি বাবরি মসজিদের বসিয়ে দেওয়ার পর সেটাকে বাইরে ফেলে দিতে পারেননি তিনি। সেই দাঙ্গা পীড়িত দেশে তাঁকে সন্তর্পণে পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল বা আজও মহেশতলা থানার পুলিশকে দুবার ভাবতেই হয়, যে তারা কারুর ধর্মীয় আবেগে আঘাত দিয়ে ফেলছেন না তো? তার কারণ দেশের আইন খুব সুনির্দিষ্ট করে বলেনি যে সবলের আবেগ আর দুর্বলের আবেগ এক নয়। সবল আর দুর্বলের মধ্যে তফাত করতে না পারার ব্যামো হল সংসদীয় গণতন্ত্রের বহু একচোখা যুক্তিকাঠামোর মধ্যে অন্যতম। যে যান্ত্রিকতার ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করেছিল সবলের হিংস্র দল, আর.এস.এস। এই লেখার উদ্দেশ্য, সেই ছিদ্রান্বেষণ।
     
    মালব্য গোষ্ঠীর বিপুল আধিপত্য

    আর.এস.এস বা হিন্দু মহাসভার সদস্যরা কংগ্রেস দলের পদাধিকারী হতে পারতেন, সুভাষ বসুর বিশেষ প্রচেষ্টায় ১৯৩৪ সালে সেটা নিষিদ্ধ হয়। মদন মোহন মালব্য বা লালা লাজপত রাই, এনারা ছিলেন হিন্দু মহাসভার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দ্বিজাতি তত্ত্বের ঘোরতর প্রবক্তা, এবং নেহরু রিপোর্ট-গোল টেবিল বৈঠক পর্যন্ত তাদের গোষ্ঠীর প্রভাব অপরিসীম, আর তার পরে কংগ্রেসের সদস্য না হয়েও জায়াকার, আর সনাতনী কেল্কার, মুঞ্জেদের প্রভাব দেখে আমরা বিস্মিত। গত সংখ্যায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের বেঙ্গল প্যাক্টের ধর্মনিরপেক্ষ মডেল নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। যে মডেল কে মেনে নেননি কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের প্রথম সারির ধর্মনিরপেক্ষ নেতারা। এমনকি তাঁর স্বরাজ দলেই অন্যান্য প্রদেশে এই নিয়ম মানা হয়নি। তবে কি অবাঙালি কংগ্রেসী মাত্রেই সাম্প্রদায়িক এমন কোনো তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি? অসম্ভব সেটা কারণ বিপিনচন্দ্র পালকে ধর্মনিরপেক্ষ সাজানোর কোনো উপায় নেই। তাছাড়া মোতিলাল নেহরু, জহরলাল নেহরু, গোখেল, দাদাভাই নায়রোজি, মৌলানা আজাদ মনে প্রাণে ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন। এতটাই যে এনারা কেউই ধর্মের সাথে রাজনীতি মেশাতে রাজি ছিলেন না। যদিও মহাত্মা গাঁধীর রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠা লক্ষ্য ছিল, আবার গোহত্যা বন্ধ করতে গাঁধী-তিলকদের প্রচেষ্টাও উল্লেখযোগ্য, কিন্তু গান্ধীজী আর.এস.এস বা মুসলিম লীগের ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের বিপক্ষে ছিলেন। তাছাড়া গান্ধীকে দুষলে অনুসীলন সমিতি, যুগান্তর থেকে শুরু করে মাস্টার্দা সূর্য সেনকেও সাম্প্রদায়িক বলতে হয়। অথবা মুসলিম লীগ তৈরী হওয়ার এক বছরের মাথাতেই সুরাট অধিবেশনে চরমপন্থী নাম নিয়ে যে দল বেরোলো তাদের মধ্যে যে হিন্দুত্বের রাজনৈতিক চর্যা ছিল অথবা ভিন্নভাবে বললে নরমপন্থীদের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের যে অভিযোগ ছিল, তাদেরও সাম্প্রদায়িকতা বলতে হয়। এভাবে কংগ্রেসের উপর আরএসএস, হিন্দু মহাসভার প্রভাব প্রমাণিত হয় না। আবার বিপরীতটাও সত্য। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর সাথে মুসলিম নেতাদের কতটা বন্ধুত্ব ছিল বা গান্ধীজীর সাথে জিন্নাহ-র কতটা সুসম্পর্ক ছিল, সেসব দিয়েও তাঁদের ধর্মনিরপেক্ষতা যাচাই হয় না। দুটোই বিচার হয় রাজনৈতিক পরিসরে আর তাই নিঃসশয়ে বলা যায় যে ধর্মনিরপেক্ষতার কষ্টিপাথরে ১৯১৬ সালের লীগ কংগ্রেস চুক্তির পুরোধা গান্ধীজি আর তিলক পাশ করে গেছিলেন। এই ঐক্য ইংরেজ ভাগ কর শাসন কর নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখাতে পেরেছিল। তাছাড়া নোয়াখালী দাঙ্গায় গান্ধীজীর ভূমিকা এবং তৎপরবর্তী তাঁর আত্মবলিদান এদেশকে হিন্দু রাষ্ট্র হতে দেয়নি। 

    সকলের জন্য সমান আইন?
    কংগ্রেস নেতা মণিশংকর আইয়ার বলেছেন, নরসিঙ্ঘ রাও হচ্ছেন বিজেপির প্রথম প্রধানমন্ত্রী। এদিকে প্রণব মুখার্জীও জীবনে শেষবেলায় এসে অবলীলায় আর.এস.এস এর সম্মেলনে চলে গেলেন, আর.এস.এস কে অচ্ছ্যুৎ মনে করলে নিশ্চয়ই যেতেন না। সংসদীয় গণতন্ত্রের যান্ত্রিকতার সমস্যা হল সবল আর দুর্বলের আইনের তফাত করতে পারলেই আর.এস.এস এর মত মৌলবাদী শক্তি সেটাকে তোষণ আখ্যা দেয়। ফলে নীতিগতভাবে দুর্বলের প্রতি পক্ষপাতিত্বকে স্বীকার করতে না পারলে স্রেফ অন্যায় তোষণের উদ্দেশ্যেই শাহবানুর অধিকারকে অস্বীকার করতে হয় আর  ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ হিসেবে আবার সবলেরই সুবিধা করে মন্দিরের দরজা খুলে দিতে হয়। সংসদীয় গণতন্ত্রের আর এক যান্ত্রিক যুক্তির ফাঁদে পরে গোলওয়ালকরের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ভরসা করেছিলেন বল্লভভাই প্যাটেল, জহরলাল নেহরু। আর.এস.এস-র উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তাঁরা। আর.এস.এস-এর প্রতি দরদ এর কারণ নয়, কারণ নেহরু-প্যাটেলের জুটিই গান্ধী হত্যার পর আর.এস.এসকে নিষিদ্ধ করেছিল। মুখে শান্তি কথা বললেও আরএসএস যে তখন নিষিদ্ধ কম্যুনিস্ট পার্টির থেকেও জঙ্গী, তারা যে সংসদীয় গণতন্ত্রকে বিন্দুমাত্র মানে না এই বিশ্বাস বোধহয় ছিল না কংগ্রেস নেতৃত্বের। আবার ১৯৩৭ সালের সংযুক্ত প্রদেশের ভোটে ভাল ফল করে মুসলিম লীগের সদস্যদের লীগ সদস্য হিসেবে আঞ্চলিক সরকারে নিতে অস্বীকার করে কংগ্রেস প্রাদেশিক নেতৃত্ব। সত্যি তো, সংসদীয় গণতন্ত্রের নিয়মকে যান্ত্রিকভাবে মানলে কম আসন পাওয়া কোনো দলকে সরকারে নিতে কেউই বাধ্য নয়। কিন্তু এই ঘটনার বিষময় ফল হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গ হলে হিন্দু মুসলিম ‘সকলের সমান রাগ হবে, সমান আবেগ তৈরি হবে’ এমন ভাবার খেসারত দিয়েছিল দেশ, বঙ্গভঙ্গ হলে উঠতি মুসলিম নেতারা যে সুবিধা পেতেন তাকে মদন মালব্যের সভাপতিত্বে থাকা কংগ্রেস গ্রাহ্য করেনি। সাম্রাজ্যবাদ অনায়াসে 'বঞ্চিত' মুসলিম নেতাদের (অক্টোবর ১৯০৬) মুসলিম লীগ গঠন করতে পরামর্শ দিল। এই বিপদ আন্দাজ করার দায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (শিলাইদহে তাঁর জমিদারী ছিল) ছিল না, কিন্তু দায়িত্ব ছিল গোখেল-রাশবিহারী ঘোষ-সুরেন বাড়ুজ্যেদের মত রাজনীতিবিদদের।

    পশ্চিমি সংসদীয় গণতন্ত্রকে নকল করার রোগ

    ‘ভাগ কর শাসন করো’ নীতিকে প্রাঞ্জল ভাষায় বলেছিলেন পাঞ্জাব প্রদেশের বৃটিশ আমলা ম্যালকম হেইলি (১৯২৮), "হিন্দু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের সমস্যা হল তারা সরকারের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী শক্তি হতে চায়, আবার মুসলিম নেতাদের বিরুদ্ধেও নিজেদের আসন পাকা করতে চায়। ফলে আমরা যদি মুসলিমদের অধিকার কিছুটা হলেও মেনে নিতে পারি তবে তারা আমাদের সাথে থাকবে" প্রশ্ন হল, এই সাম্রাজ্যবাদী ফাঁদকে মোকাবিলা করার যোগ্যতা কি ছিল না কংগ্রেসের উদারপন্থী নেতাদের? নিশ্চয়ই ছিল। ভারতের মত বহু বৈচিত্র্যের দেশে ব্রিটিশ সংসদীয় গণতন্ত্রের নকল চলবে না, মানতেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ। এদিকে ঐ বছরই জহরলালের বক্তব্য  ছিল, ‘সাম্প্রদায়িকতা বিষয়টা যতটা না বড়, তার থেকে অনেক বেশী ফোলানো ফাঁপানো হচ্ছে। রুটিরুজি দুই সম্প্রদায়েরই সাধারণ ইস্যু। বিরোধ হোক, কিন্তু সেটা ধর্মের ভিত্তিতে নয়, শ্রেণীর ভিত্তিতে হোক। সাম্প্রদায়িকতার বিভেদ সেক্ষেত্রে এমনিই মুছে যাবে’ ২০, ৩০, ৪০ র দশক জুড়ে দেশে একের পর এক দেশ কাঁপানো রুটি রুজির সংগ্রাম হয়েছিল আর প্রতিটি সংগ্রামের পরই ঐক্যে ফাটল ধরানো বড় বড় হিংস্র দাঙ্গাও হয়েছিল। রুটি রুজির সংগ্রামকে গুরুত্ব দিয়ে জহরলাল নেহরু মোটেই ভুল করেননি, কিন্তু তারই সাথে দুর্বলের জন্য বিশেষ সুবিধার পক্ষে নীতিগত অবস্থান কংগ্রেস নিতে পারলে, আর *যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান* নিতে পারলে সেই রুটি রুজির সংগ্রামের ঐক্য আরো শক্তিশালী হতো। তথাকথিত ‘সাম্যের (ইউনিফর্মিটি)’ নামে আর.এস.এস দুর্বলকে সবলের দাসে পরিণত করতে চায়।

    সংসদীয় গণতন্ত্র ও গান্ধীজী

    গান্ধীজি সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের চমৎকার হিসেব করতে পেরেছিলেন। তিলক আর গান্ধীর নেতৃত্বে মালব্য গ্যাং-দের নাক শিঁটকানোকে ফুৎকারে উড়িয়ে ১৯০৯ সাল থেকে চালু হওয়া মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচকমন্ডলীর নীতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন করলো কংগ্রেস, লীগ কংগ্রেস ঐক্য গড়ে উঠলো। ইংরেজ ভাগ কর শাসন কর নীতি পিছু হঠলো। উদারমনস্ক মোতিলাল নেহরু বা সবে কংগ্রেসের অধিবেশনে যেতে শুরু করা জহরলাল নেহরুর কাছে ধর্মের সাথে রাজনীতিকে মিশিয়ে ফেলা যদিও অপছন্দের ছিল। কিন্তু এদেশে রাজনীতির সাথে ধর্মের বিচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে চালু করতে হলে প্রাথমিকভাবে যে সংখ্যালঘুদের বিশেষ কিছু অধিকার লাগে, প্রথম থেকেই সকলের জন্য সমান আইন হয় না, এটা নিশ্চয়ই তাঁরা বুঝেছিলেন, তাই গান্ধীর ফর্মূলাতে সায় দিয়েছিলেন। 

    কিন্তু আবার ফিরে এলো সকলের জন্য সমান আইনের ভ্রান্তি। অসহযোগ আন্দোলনের যৌথ কর্মসূচি হিসেবে ১৯২০ সালে দেশের প্রথম ভোট বয়কট করল কংগ্রেস-লীগ। মুসলিম লীগ নিজের প্রাপ্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলীর সুবিধা ভোগ করতে পারল না। লীগের জন্য না হলেও, চিত্তরঞ্জন দাশের মত কিছু নেতা কিন্তু ভোট বয়কটের সমর্থক ছিলেন না। একেবারে লোপ্পা ক্যাচ তুলে দেওয়া হল সাম্রাজ্যবাদের হাতে। খলিফাকে রক্ষার আবেগ স্তিমিত হতেই লীগের মধ্যে ঠকে যাওয়ার বোধ শক্তিশালী হল। ক্রমেই হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে মুসলিম প্রজার বিদ্রোহ সাম্প্রদায়িক চেহারা নিতে শুরু করলো,  হিন্দু মহাসভার নেতারা বলতে শুরু করলো যে কংগ্রেস মুসলিমদের ‘মাথায় তুলেছে’। মোপলাহ্‌ বিদ্রোহের আগুনে জন্ম হল আর.এস.এস-এর। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত স্বরাজ পার্টির জেতা আসনগুলো কংগ্রেসেরই হয়ে থাকলো অথচ লীগের ঝোলায় শূন্য। 

    বৃটিশ সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্ধ নকল

    প্রাদেশিক ক্ষমতা বৃদ্ধি শুরু হয়ে গেছে ১৯১৯ সাল থেকে। ৬/৭ টা প্রদেশে তখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা, ফলে প্রদেশগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে জড়িয়ে ছিল মুসলিম লীগের ক্ষমতাও। ইংরেজ 'ভাগ কর শাসন কর' নীতির মোকাবিলা করতে হলে কংগ্রেসের দিক থেকেই প্রদেশগুলোর ক্ষমতাবৃদ্ধির দাবী ওঠার কথা ছিল। মুসলিম সমাজকে কোনো জাতি হিসেবে না দেখেও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সাথে ধর্মনিরপেক্ষতার সম্পর্ক বুঝেছিলেন মৌলানা আজাদ। তিনি বুঝেছিলেন, কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা এদেশে চলবে না। ভারতে হিন্দু মুসলিম ঐক্য বজায় রাখতে হলে প্রদেশের হাতে ‘রেসিডুয়াল’ ক্ষমতা সহ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মূল দাবী কংগ্রেস তুলুক, এমনটাই তাঁর ইচ্ছা ছিল। অথচ সেই দাবী প্রথম তুললো মুসলীম লীগ ১৯২৮ সালে আর কংগ্রেস নেতৃত্ব সেটাকে মানল না। সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্ধ নকল করতে গিয়ে সকলের জন্য সমান আইন সহ আরও ৩টি বিপজ্জনক যুক্তি এবার প্রকট হল।

    ১) এক বিচিত্র যুক্তি হল দল আর জনতাকে বিচ্ছিন্ন ভাবা, unity from below, এই ইউটোপিয়া ইয়োরোপেও হিটলারের উত্থান ডেকে এনেছিল। যে জনতার ভোটাধিকার নেই তাদেরও এক ধরনের সমর্থন থাকে দলের নেতাদের প্রতি, এটাই বাস্তব। 'লীগই একমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রতিনিধিত্ব করে না, কংগ্রেসও করে, সুতরাং ওদের সমস্ত অন্যায় আবদার মানার দরকার কি'--- যত মুসলিম প্রভাবশালী অংশ কংগ্রেসের দিকে আসতে শুরু করলো ততই এই বোধ শক্রিশালী হল। জহরলাল নেহরু জিন্নাহকে চিঠি লিখছেন যে কংগ্রেস শুধু হিন্দু নয় মুসলিম, খ্রীস্টান সকলকেই প্রতিনিধিত্ব করে। কথাটা ভুল নয়। বাংলা, বিহার, পাঞ্জাব তো বটেই এমনকি বিভিন্ন মুসলিম রাজন্য বর্গও কংগ্রেসকে সমর্থন করছে তখন। নেহরুর ভাষণ শুনতে দূর দূরান্ত থেকে মুসলিম জনতা আসছে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদ পরিচিতি সত্ত্বার নোংরা রাজনীতি করতে পটু, যে মুসলিম অংশ কংগ্রেসের দিকেই ছিল তারা ক্রমেই ঘুরে যেতে শুরু করলো লীগের দিকে, বিশেষত ১৯৩৭ সালে কংগ্রেসের প্রাদেশিক সরকারগুলো সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড আর ১৯৩৯ সালে কংগ্রেসের সরকারগুলির পদত্যাগ করার পরে।  

    ২) ধর্মের সাথে রাজনীতি না মেশানোর আওয়াজ আরও জোরদার হল। এ আই সি সি বৈঠকে জহরলালই সবচেয়ে আগে পৃথক নির্বাচকমণ্ডলীর বিরুদ্ধে ভোট দেন। মোতিলাল নেহরু গান্ধীকে চিঠি লিখে বলেন, বাংলার আর পাঞ্জাবের মুসলিম নেতারা যখন পৃথক নির্বাচকমন্ডলীর বদলে যৌথ নির্বাচকমন্ডলী চাইছেন তখন সংযুক্ত প্রদেশের কিছু মুসলিম নেতার জন্য কেন আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে আপোষ করবো? সুভাষ বসু উচ্ছসিত ছিলেন পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী বাদ দেওয়া নেহরু রিপোর্ট নিয়ে, ‘এতদিনে হিন্দু-মুসলিম সমস্যার সমাধান হল’। সংসদীয় গণতন্ত্রের স্বাভাবিক যুক্তিতে নেতারা ভাবলেন, পাঞ্জাব-বাংলায় মুসলিম জনসংখ্যা বেশি, ফলে  তাদের সংরক্ষণ লাগবে না। কয়েক বছর আগেই চালু বেঙ্গল প্যাক্টের কার্যত  বিরোধিতা করে ফেললেন তাঁরা। অথচ কংগ্রেসের নেতা সাপ্রুর বক্তব্য ছিল, রাজনীতির সাথে ধর্মের এই মিশ্রণ পাপ, কিন্তু প্রয়োজনীয় পাপ আর জিন্নাহ বললেন কংগ্রেস দলটা বানিয়া বলেই ২৫% জনসংখ্যার জন্য ৩৩% সংরক্ষণ দিতে পারল না

    ৩) যুক্তয়াষ্ট্রীয় কাঠামো হলে, অঞ্চলে অঞ্চলে বর্বর রাজন্য বর্গ আরও শক্তিশালী হবে, এই ভাবনাও প্রবল ছিল কংগ্রেসের সমাজতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী নেহরু-সুভাষ বসুদের। তিরিশের দশকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই জমিদার, রাজন্য বর্গরা ক্রমেই হয় হিন্দু মহাসভা বা মুসলিম লীগের দিকে চলে যাচ্ছিল। কংগ্রেস সেই পর্যায় থেকে তাই সামন্ততন্ত্র বিরোধী অবস্থানটা আগের তুলনায় শক্তিশালী ভাবে নিচ্ছিল। যার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল নেতাজির সভাপতিত্বে হরিপুরা কংগ্রেস অধিবেশনে। অথচ বাস্তব হল, ধর্মীয় সংখ্যালঘু দুর্বল বলে তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা। সেই বিশেষ সুবিধা অতিসবল রাজন্য বর্গের পাওয়ার কথা নয়। ফলে প্রদেশের হাতে ক্ষমতা গেলেও রাজাদের বর্বর অত্যাচার নিষিদ্ধ করার পৃথক আইন আনতে কোনো বাধা ছিল না। সেটা তো হলই না বরং স্বাধীনতার পরে আমরা দেখলাম রাজন্য বর্গদের তোষণ করে দেশে অন্তর্ভুক্ত করা হল!  

    যৌথভাবে ভারতীয়রা কোনো সংবিধান প্রস্তাব পেশ করতে পারলো না। (মতিলাল)নেহরু রিপোর্ট ছিল ভারতের সংবিধান সম্পর্কে কংগ্রেসী প্রস্তাব যা সর্বদলের বৈঠকে চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল, জিন্নাহও যেখানে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে হিন্দু মহাসভা ও আর.এস.এস এর জায়াকার গোষ্ঠীদের দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিসদৃশ ছিল। তার আগে জিন্নাহ লীগকে দিল্লি অধিবেশনে পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে এনে তিনটি দাবীতে কেন্দ্রীভূত করেছিলেন। পাঞ্জাব আর বাংলার আসন সংরক্ষণ, তিনটি বিষয় ছাড়া বাকি সব বিষয় প্রদেশের হাতে দেওয়া আর সংসদে মুসলিমদের জন্য এক তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ। কিন্তু নেহরু রিপোর্ট দিল্লি প্রস্তাব মানলো না। ফলে গোল টেবিল বৈঠকে গেল লীগের তরফে ১৪ দফা প্রস্তাব।  ১৯২৯ সালে গান্ধী জিন্নাহ-র ব্যর্থ বৈঠকের কয়েকদিন পরেই আগস্ট মাসে, মুঞ্জে-গান্ধীর সাক্ষাৎকার থেকে সনাতনীদের দাপটের কিছুটা আভাস পাওয়া যায়,
    মুনজেঃ- জিন্নাহ-র সাথে আপনি আবার আলোচনা শুরু করলেন, শুনলাম আপনি নেহরু রিপোর্টে কিছু বদল আনতে চাইছেন, জিন্নাহ-দের ১৪ দফা দাবীকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছেন
    *গান্ধীজিঃ*- মনে হচ্ছে আপনি সঠিক তথ্যটা জানেন না। সরোজিনি আমাকে চাপাচাপি করলো জিন্নাহ-র সাথে দেখা করার জন্য, জিন্নাহ আমার সাথে দেখা করতে চাইলেও আমি সেটা প্রত্যাখ্যান করবো, আপনার কি তেমনই অভিপ্রায়?
    মুনজেঃ- এই অসুস্থ শরীরে সাবরমতি থেকে বম্বে গিয়ে আপনি কিন্তু জিন্নাহ-র গুরুত্ব বাড়িয়ে দিলেন। যা হিন্দুদের কাছে খুবই লজ্জাজনক। মুসলিমরা যাতে হিন্দুদের সাথে বোঝাপরা করে চলে তার জন্য হিন্দুরা যে চেষ্টা চালাচ্ছে সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হল এর ফলে।
    মহাত্মাঃ- আমি স্রেফ জিন্নাহ-র কথা শুনে এসেছি, নিজের কোনো কথা বলিনি, তাছাড়া আমি নিজেকে প্রতিনিধিত্ব করেছি, কারুর প্রতিনিধি হয়ে যাইনি।

    গান্ধীজীর কিন্তু এই কৈফিয়েত দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। গোল তেবিল বৈঠকে হিন্দু মহাসভার মতামত বলে এলেন মালব্য, ফিরেই তিনি কংগ্রেসের সভাপতি হলেন। এই পর্যায়ে গান্ধীজি নীতিগতভাবে পৃথক নির্বাচকমণ্ডলীর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেন, যদিও অস্পৃশ্যদের পরিপ্রেক্ষিতে। লীগও ক্রমেই মুসলিম আর.এস.এস হয়ে উঠলো। তাদের হারিয়ে যাওয়া সমর্থন যে ফিরে আসবে সেটা বোঝা গেছিল কংগ্রেসেরই মুসলিম নেতাদের (আনসারি, খালেজ্জুজামান, আজাদ) বিক্ষোভে। ১৯৩০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আন্সারি স্পষ্টই বললেন, “আমাদের কলকাতা অধিবেশনকে নিয়ন্ত্রণ করেছে জায়াকার, কেল্কার, মুঞ্জে। লখনৌতে যে জয় আমাদের হয়েছিল সেটা আমরা কলকাতায় হারালাম। লীগের দিল্লি প্রস্তাব মেনে নিলে এই দুর্দিন দেখতে হতো না। কার্যত নেহরু রিপোর্ট জায়াকারদের ফাঁদে পড়ে গেল।”  কিন্তু তাতেও লীগের দুশ্চিন্তা কাটলো না। যে ফজলুল হক ১৯৪০ সালে জিন্নাহর প্রস্তাব পেশ করেছিলেন তিনি সহ বাংলা আর পাঞ্জাবের মুসলিম নেতারা দুশ্চিন্তায় ছিলেন, এদেশে তাঁরা যতটা সুবিধা পেতে পারেন, পৃথক দেশে সংযুক্ত প্রদেশের মুসলিম নেতাদের সাথে প্রতিযোগিতায় সেটুকুও তারা পাবেন কি না। সুতরাং লীগও পৃথক দেশের প্রস্তাবকে ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে ঐক্যবদ্ধ দেশের শেষ ফর্মূলা ক্যাবিনেট মিশন স্বীকার করলো। কিন্তু ততদিনে কেল্কার জায়াকাররা ভয়ানক দাপট বেড়েছে আর ওদিকে ক্যাবিনেট মিশন ধর্মের ভিত্তিতে ৩ টে গ্রুপে প্রদেশ ভাগ করেছিল, তাই কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ নেতাদের মধ্যে ধর্মের সাথে রাজনীতি মিশে যাচ্ছে বলে বিভ্রান্তি রয়েই গেল। সাথে এলো আর এক নতুন যুক্তি। প্রথমে ক্যাবিনেট প্রস্তাব মেনে নিয়েও আচমকাই কংগ্রেস নেতৃত্ব বললেন, ‘আগে স্বাধীনতা, বিদেশীরা গেলে তবে দেশের কাঠামো ঠিক করবো আমরা।’ আম্বেদকার দুঃখ করে বলেছিলেন, কংগ্রেস চেয়েছিল একাই ক্ষমতায় থাকবে, রাজ্য আর কেন্দ্রের সম্পর্ক নিয়েই মূল বিভেদ ছিল দলগুলির মধ্যে, যা এক জায়গায় এলো না। আর.এস.এস -এর এটাই জয় হল।

    আজও ভারতের আঞ্চলিক দলগুলি জাতীয় দলে নীল রক্তের অভিজাত রাজনীতির শিকার হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী ২৬ শে জুন ২০২৫-কে সংবিধান হত্যা দিবস বলেছেন। তাদের রাগ তো হবেই। ইন্দিরা গান্ধী যে দেশের অন্যতম শত্রু হিসেবে আর.এস.এস -কে নিষিদ্ধ করার ফলে তাদের উত্থান ৪০ বছর পিছিয়ে গেছিল। এটাও কংগ্রেস আর.এস.এস সম্পর্কের ইতিবাচক দিক, যেটা ভারতের জনতা মনে রাখবে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৪২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৫৯734076
  • কত কিছু জানতাম না,  অনেক কিছুই ভুল জানতাম । আপনি আমার জন্য জানলা খুলে দিচ্ছেন বর্ণালি । আপনার কল্যাণ হোক। 
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৪৮734093
  • চমৎকার লেখাটির শুরুর দিকে 
    সংসদীয় গনতন্ত্র ও गांधीजी अध्याय এ 
    একবার 1909 লেখা হয়েছে l
    মনে হয় এটা typo,  1916 হবে l
    ওটা ছিল Lucknow pact , বা হিন্দু--মুসলিম চুক্তি l
    এটির কথা লেখিকা কয়েক বার বলেছেন l
     
    আমি খালি দুটো কথা   যোগ করতে চাই l
     
    এক,  ওই চুক্তিতে হিন্দু দের তরফে সাইন করেছিলেন তিলক , মুসলিম পক্ষে जिन्ना l
    তখনও जिन्ना কংগ্রেস সদস্য বলেই মনে হয় l
     
    দুই,  তিলক ও जिन्ना আজীবন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন l
    তিলক গ্রেফতার হলে তাঁর হয়ে কোর্টে দাঁড়ান ব্যারিস্টার जिन्ना l
    তিলক এর अकाल मृत्यु তে जिन्ना যে বক্তব্য রেখেছিলেন তাতে দুঃখ ও আবেগ ছিল অকৃত্রিম l
     
    কিছু ভুল বললে লেখিকা ধরিয়ে দেবেন l
  • raj | 2405:8100:8000:5ca1::10d:***:*** | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৫০734096
  • ফ্যাসিস্টদের কাজই তো বিরোধিদের ban করা।
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৫৮734102
  • स्टालिन বিরোধী নেতা দের লেখা প্রকাশ করতে দিতেন,  পত্রিকা চালাতে জনসভা করতে দিতেন l কাউকে জেলে ভরে দেয়ার কথা ভাবতেন  না l
  • কৌতূহলী | 103.249.***.*** | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১৭734109
  • ফ্যাসিস্টরা বিরোধীদের ওপর দমন পীড়ন চালায় এটা ঠিক। কিন্তু কনভারস ইজ নট ট্রু। বিরোধীদের দমন পীড়ন করে মানেই সে ফ্যাসিস্ট নয়। বহু নয়ন ফ্যাসিস্ত লিবারেল বা লেফট ব্লকেরও অনেকে বিরোধী মতকে রোধ করেছে , তার মানেই তাঁরা ফ্যাসিস্ত নয়। পেটিবুরজোয়া মিলিশিয়া তৈরী করে শ্রমিক আন্দোলনকে ভাঙা ,আর কোন নির্দিষ্ট কমিউনিটিকে টার্গেট করা ,এই দুটো ফ্যাসিস্টদের প্রধান লক্ষণ। বিরোধী মত দমন নয়
  • কৌতূহলী | 103.249.***.*** | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১৮734110
  • নয়ন ফ্যাসিস্ত লিবারেল --->নন ফ্যাসিস্ত লিবারেল
  • ফ্রিস্পিচ | 2405:8100:8000:5ca1::b1:***:*** | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৫734115
  • গুলাগে পাঠিয়ে দিলে আর ব্যান করার, জেলে ভরার দরকারও পড়বে না।
  • Ranjan Roy | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৫734256
  • সেকি Gulag! না না,  स्टालिन কাউকেই পাঠান নি l ওসব অপপ্রচার l
    উনি हिटलर এর সঙ্গে কোন চুক্তি করেন নি l হিটলার তো ফ্যাশিস্ত ! ওটা Molotov করেছেন,  स्टालिन জানতেন না l
    উনি ফিনল্যান্ড দখল করেন নি l
    Trotski हत्या একটা পাগলা লোক মেক্সিকো গিয়ে করেছিল l 
    Bukharin  , Jinoviev,  Kamenev দের উনি জেলে পুরে মৃত্যু দণ্ড দেন  নি l
    अदालत দিয়েছিল l রীতিমত বিচার করে l कोर्ट ওদের देशद्रोही বললে উনি কী করবেন?
    আইন তো আইনের পথেই চলবে l
  • Barnali Mukherjee | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৭734257
  • শ্রদ্ধেয় রঞ্জন রায় বাবু, ওটা 1909 সালের morley minto reforms এর কথা বলেছি দাদা। পৃথক নির্বাচকমণ্ডলীর সেই স্বীকৃতি কে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯১৬ সালে গ্রহণ করেছিল কংগ্রেস -- এটাই লিখেছি। হয়তো আমার বাক্য গঠনের দুর্বলতা। 
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন