এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • এক কোণঠাসা সময় ও মোহন মুদীর জবানবন্দি।

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৯ আগস্ট ২০২৫ | ৩৪৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • এক কোণঠাসা সময় ও মোহন মুদীর জবানবন্দি।

    আজ অনেকদিন বাদে স্টেশন লাগোয়া সদর বাজারে গিয়েছিলাম। তিন দশকের‌ও বেশি সময় আগে প্রথম যখন এই অঞ্চলে আবাসিক হয়ে আসি, তখন আমাদের কাছে এই বাজারের পরিচয় ছিল ‘বড়ো বাজার’ বলে। আমরাই অবশ্য এমন নাম দিয়েছিলাম, তার অনেকটা ছড়িয়ে থাকা পরিসর, আর হরেক কিসিমের বিপণির জটলা দেখে। এক সময়ের ধীরে ধীরে বদলাতে থাকা জন-জীবনের আমূল পরিবর্তন হয়েছে বিগত তিন দশকে। সেই কবেই সাবেকি পঞ্চায়েত ব্যবস্থার খোলস ছেড়ে মিউনিসিপ্যালিটির ঝাঁ চকচকে মোড়কে আপাদমস্তক মুড়ে নিয়েছে আমাদের ছোট্ট শহুরে জনপদ। জেলা সদরের নাকের ডগায় থেকে নিজস্ব ভঙ্গিমায় সে নিজের পক্ষ বিস্তার করে চলেছে প্রতিদিন। গ্রামের খোলস ছেড়ে শহরের শামলা গায়ে আঁটতেই ধরধরিয়ে বিকাশের প্রলেপ পড়েছে তার ওপর। সবাই বেজায় খুশি।

    কয়েক দিন ধরেই বড়ো বাজারে যাওয়ার ইচ্ছেটা মনের মধ্যে পাক দিচ্ছিল। তাই সাঁঝবাতি ঝলমল করে আলো দেওয়া শুরু করতেই বেড়িয়ে পরলাম। বেশ কিছুদিন পরে এখানে এলেও বাইরের চাকচিক্যে তেমন পার্থক্য প্রথম দর্শনে মালুম হলোনা। চেনা কিছু দোকানপাটের ঝাঁপ বন্ধ রয়েছে বলে মনে হলো। আজকাল পুরনো ব্যবসাপত্রর টিকে থাকার লড়াই খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। পুরনো প্রজন্মের হাত ধরে একটু একটু করে মাথা তুলে দাঁড়ানো দোকানগুলোতে এখন নতুন মানুষজনের ভিড়। ছোটখাটো ব্যবসা এখন হয়ে উঠেছে রীতিমতো লড়াইয়ের ক্ষেত্র।

    গুটিগুটি পায়ে চাল পট্টির ভেতর দিয়ে ঢুকে পড়লাম। সরু রাস্তা, তার দু পাশে লম্বা সারিতে পরপর চালের দোকান। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত থরে থরে বস্তা লাট দিয়ে সাজিয়ে রাখা। একপাশে বস্তার ভিড় বাঁচিয়ে সামান্য পরিসরে দোকানের কর্ণধার ও সহযোগী কর্মচারীর বসার জায়গা। সন্ধ্যা নেমেছে। দোকানে দোকানে জল ছিটিয়ে উঁচু কুলুঙ্গিতে রাখা লক্ষ্মী গণেশের মূর্তির সামনে ধূপধুনো দেখানোর পর্ব চলছে। ধূপ-গুগ্গুলের ভেসে আসা গন্ধ নাকে আসতেই, মনের ভেতর একটা পবিত্র ভাব জাগে।

    চাল পট্টির মহল্লা পার হলেই পৌঁছে যাওয়া যায় মাছের বাজারে। সন্ধের ঢল নেমেছে,তাই এখানে সকালের গুঁতোগুঁতি নেই। বিকেলে টাটকা মাছের আমদানি হয় বলে অফিস ফেরতা বাবুরা একবার ঢুঁ মেরে যায় এখানে। তেমন‌ই কিছু ব্যস্তবাগীশ মানুষের ইতস্তত ভিড় নজরে পড়ে। ভরা বর্ষাতেও বাজারে ইলিশের জোগান বেশ কম। ছোট ছোট ইলিশের বড়ো দাম। তাই খানিকটা নজরদারি করে পাশ কাটিয়ে ঢুকে পড়ি সবজি বাজারে।

    সন্ধের বাজারে হাঁক ডাক কম। তবে চেকনাই বেশি। দুপুরের গাড়িতে নতুন তরতাজা সবজি এসেছে দূরদূরান্তের হাট থেকে – বনমালিপুর, গাদামারা, আওয়ালসিদ্ধি, দেগঙ্গা, কামদেবপুর – মানচিত্রে এইসব ছোট ছোট জায়গাকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল, অথচ এইসব এলাকায় সবজির পসরা শহুরে বাজারগুলোতে আলো ছড়িয়ে রাখে। বাদ গেল আরও কিছু নাম। আর একটা ছোট্ট বাঁক পেড়িয়েই দুটো দোকান পরে আমার ঈপ্সিত গন্তব্য – মোহন মুদীর মুদিখানা। পোশাকি নাম অন্নপূর্ণা ভাণ্ডারকে আড়ালে রেখে নতুন নামেই এখন পরিচয়।

    খানিকটা তফাৎ থেকেই মোহনবাবু নজরবন্দি করে ফেলেছেন আমাদের। আর দেখতে পেয়েই চোস্ত ঢাকাইয়া অ্যাকসেন্টে প্রায় চিৎকার করে বলে ওঠেন – “আয়েন দাদা,আয়েন। কতদিন পরে আমাগো দর্শন দিলেন। রতন! টুল দুইটা বাইর কইরা দে। আগে বয়েন, জিরাইয়া নেন। বেচাকেনা পরে হ‌ইবো।” শেষের কথাকটি কানে যেতেই আমি যেন আমার অতিপরিচিত এক মফস্বল শহরের স্টেশন বাজারের সীমান্ত পেরিয়ে সেই সুদূর কাবুলের বাজারে পৌঁছে গেলাম। সৌজন্যে অবশ্যই আদি ও অকৃত্রিম কথাকার সৈয়দ মুজতবা আলী – “ আপনি হয়তো ভাবছেন যে, দোকানে বসলে কিছু একটা কিনতেই হয়। আদপেই না। জিনিসপত্র বেচার জন্য কাবুলী দোকানদার মোটেই ব্যস্ত নয়। কুইক টার্নওভার নামক পাগলা রেসের রেওয়াজ প্রাচ্যদেশীয় কোনো দোকানে নেই। এক আশ্চর্য গদাইলস্করী চাল।” গল্পের এমন আঁকাবাঁকা পথে ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াতেই যে এখানে আসা। গিন্নি মহোদয়ার অবশ্য অত অপেক্ষার সময় নেই। বাস্তবের শান বাঁধানো পথেই চলতে অভ্যস্ত তিনি। মনের সেই অসহিষ্ণুতা টের পেতেই বলি – “ক‌ই ! তোমার ফর্দটা দাদাকে দাও।” ফর্দটা হাতে নিয়ে এক ঝলক তাতে চোখ বুলিয়ে ছেলের দিকে এগিয়ে দেন মোহনবাবু। আমরা আবার দু চার কথা শুরু করি।

    এই মুহূর্তে মোহনবাবুর মতো ছোটো ব্যবসায়ীরা খুব ভালো নেই। কিরানা বাজারে এখন শক্তিশালী হাঙরদের দাপাদাপি। মোহনবাবুর সঙ্গে কথোপকথনের সূত্রে এই বিষয়ে অনেক কথাই উঠে আসে এক এক করে। এই মুহূর্তে অবশ্য মোহনবাবুই একক বক্তা, আমি একান্ত নির্বিবাদী এক শ্রোতা। অনেকসময় মৌন শ্রোতা হয়ে থাকলে বিস্তর নতুন কথা জানা যায়। সেই আপ্তবাক্য মনে পড়তেই আরও খানিকটা সতর্ক হয়ে যাই। মোহনবাবুর কথা অনুসারে – ফেলে আসা কোভিড কাল হলো এক বড়ো সময় বিভাজিকা। মোহনবাবুর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা এই কথাটা যে অত্যন্ত মূল্যবান তা অস্বীকার করার মতো মানুষ হয়তো সহজে মিলবে না, যদিও সেই সময়কাল পার হয়ে আমরা আবার কিছুটা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নিজেদের অভ্যস্ত করে তুলেছি ধীরে ধীরে। প্রায় দু বছরের জন্য প্রাক্ কোভিড কালের জীবন যাপনের বিষয়টিকে অচ্ছুৎ করে রাখার ফলে শুধু বিক্রেতারাই নন আমরা সাধারণ ক্রেতারাও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

    বাড়ি থেকে দুই পা বেরিয়ে সশরীরে বাজারে আসাটাই তখন হাজারো বিধিনিষেধের কারণে প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যা হলো যে রোগটা ছিল অত্যন্ত সংক্রামক এবং প্রাণঘাতী। আমাদের পরিচিত বহু পরিবার উজাড় হয়ে গেছে ঐ সময়ে। বাজার হাট বন্ধ, সাথে সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ফরমান ডেকে এনেছিল এক আশ্চর্য বিচ্ছিন্নতা। লকডাউনের কারণে নিজেদের দোকানপাট বন্ধ করে বাড়িতেই বসে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন মোহনবাবুর মতো বিপুল সংখ্যক ছোট ও মাঝারি কারবারি। মোহনবাবু হতাশ কন্ঠে বলেন – “আমি ছোট ব্যবসায়ী, তবুও এই দোকানকে ঘিরেই আবর্তিত হয় আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। অথচ আমাদের সেই কর্মব্যস্ত জীবনটাই যেন কেমন করে ব্রেক কষা গাড়ির মতো হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল।” সমস্যার প্রভাব ছিলো সর্বাত্মক। শুধু মোহনবাবুর মতো ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন জীবন ওলটপালট হয়ে গেল তা নয় -স্কুল কলেজ, অফিস কাছাড়ি, কল কারখানা – সর্বত্রই এক অবস্থা। এক সামান্য অণুজীব পরিবর্তিত অবস্থার সদ্ব্যবহার করে অসামান্য বিপজ্জনক হয়ে উঠলো। দুনিয়া জুড়ে আমরা সবাই প্রাণভয়ে ত্রস্ত হলাম। পারস্পরিক সমস্ত বিভিন্নতাকে সরিয়ে রেখে আমরা সবাই তখন এক নৌকার স‌ওয়ারী।

    বিপর্যয় আর অতিমারির মধ্যে যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে তা যেন সহসা বুঝতে পারলো গোটা দুনিয়া। সাস্ কোভিড-১৯ ভাইরাস জীবনঘাতী হ‌ওয়ায় প্রাণহানির আশঙ্কা জেঁকে বসলো আমাদের প্রত্যেকের মনে। এই স্থবির সময়ের বৃত্ত থেকে বাইরে বেরিয়ে আসাটা সবার কাছেই খুব প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ায় মানুষ বিকল্প হিসেবে ই-কমার্সের পথে হাঁটতে বাধ্য হলো। বেঁচে বর্তে থাকতে গেলে হাজারো উপকরণের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। আর সেগুলো সংগ্রহ করতে মানুষের মরীয়া হয়ে ওঠার মধ্যে অস্বাভাবিকতা নেই। বড়ো বড়ো কোম্পানিগুলো এই পরিস্থিতির অপেক্ষাতেই ছিল। মানুষের পাশে থাকার তাড়নায় পাতা ভরা বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁরা খদ্দের ধরতে নেমে পড়লো। মোহনবাবুর মতো ছোটখাটো কারবারিদের কাছে বাজারে এমন আকস্মিক প্রতিযোগীদের অনুপ্রবেশের মোকাবিলা করার কোনো সাধন‌ই মজুত ছিল না। একথা ঠিক যে অতিমারির প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই ‘মল’কেন্দ্রিক বিপণন ব্যবস্থার প্রচলন হয়েছে এদেশে। নবীনতর প্রজন্মের শহুরে মানুষের একটা অংশ কেনাকাটার জন্য সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। এর প্রভাব মোহনবাবুদের মতো দোকানিদের ওপর একদম পড়েনি তা নয়, তবে তার প্রভাব অনলাইন ব্যবসার মতো আগ্রাসী ছিলনা। ফলে ছোট ব্যবসায়ীরা অতটা আতঙ্কিত হননি। কিন্তু অতিমারি পর্বের লড়াই অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে তাঁদের পক্ষে। এর ফলে বাজারী লড়াইয়ের ময়দান থেকে রণেভঙ্গ দিতে বাধ্য হলেন মোহনবাবুর মতো অসংখ্য ছোট, আর মাঝারি ব্যবসায়ী ও উৎপাদকেরা। ক্রেতাদের অন্দরমহলে পৌঁছে যাওয়া ই-পরিষেবা একটা জোর ধাক্কা দিলো। কাজ হারিয়ে হঠাৎ এক চরম অবস্থার শিকার হলেন বহু মানুষ।

    “মুখে না বললেও, আমরা বেশ বুঝতে পারছিলাম যে আমাদের পায়ের তলা থেকে মাটি ক্রমশই সরে সরে যাচ্ছে। আমাদের অসহায়তা বাড়ছিল। সরকার, বিশ্বপথে সবার সাথে সমান তালে চলার ইচ্ছেতে আমাদের মতো পিছনের সারিতে থাকা কারবারিদের কথা বেমালুম ভুলে গেল। অবশ্য তেমন উপায় ছাড়া আর কি বা করার ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে ?” -- মোহনবাবু স্পষ্টতই ভেঙে পড়েন।

    অতিমারির অবস্থা দূরে সরিয়ে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনাটা খুব জরুরি ছিল। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিনিষেধ লাগু থাকার কারণে দূর নিয়ন্ত্রিত লেনদেন ব্যবস্থার প্রচলন অনিবার্য হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে ই-বাণিজ্যের ব্যবস্থা ছাড়া কোনো গত্যন্তর ছিলোনা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ফরমান গোটা ব্যাপারটাকে আরও দূরতিক্রম্য করে তুললো। মুখে মুখোশ এঁটে স্বাভাবিক হ‌ওয়া যায়? প্রত্যক্ষ ব্যবসায়িক লেনদেন স্থগিত রাখার ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। মরীয়া হয়ে সরকারের তরফ থেকে অনলাইন বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো শুরু হয় রীতিমতো ঢাক ঢোল পিটিয়ে। সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় হু হু করে বাড়তে থাকে অনলাইন বাণিজ্য। একটা স্মার্টফোন আর কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপসের মাধ্যমে অতিমারির সময় প্রায় স্থবির হয়ে যাওয়া বাজারে নতুন জোয়ার এলো। খুলে গেল বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা, যার প্রভাবে দ্রুত বদলে গেলো আমাদের বহুদিনের চেনা অন্তরঙ্গ যাপনের রীতি পদ্ধতি, বেচাকেনার সহজ সমীকরণ। রাস্তায় রাস্তায় বাড়লো ডেলিভারি বয়দের ছোটাছুটি। কোম্পানির ছাপ লাগানো ঢাউস সাইজের ব্যাগ পিঠে ঝুলিয়ে তারা আমাদের প্রয়োজনের উপকরণগুলোকে বাড়ির দুয়ারে পৌঁছে দেওয়া শুরু করায় একদিকে যেমন উপকরণগুলো সহজে আমাদের নাগালে এসে গেল অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির পালে এসে লাগলো নতুন হাওয়া।

    ই–ব্যবস্থার ঢালাও আয়োজনের ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে সাথে অভাবনীয় বদল এলো মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক যাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই। একে একে চলে এলো ই-স্কুলিং, ই-ক্লাশরুম, ই-পেমেন্ট, ই-ব্যাঙ্কিং,ই-কমার্স, ই-হেল্থ এর মতো যান্ত্রিক সব ব্যবস্থা। আমরা সবাই এক নতুন জীবনের আস্বাদ পেতে শুরু করলাম। সত্যি কথা বলতে কি এসবের সঙ্গে দ্রুত নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার মতো পুঁজি ও সামর্থ্য মোহনবাবুদের একদমই ছিলোই না।

    তাই হতাশা আর ক্ষোভ থেকে আক্ষেপ করে তিনি বলেন — “সরকার তো ডঙ্কা বাজিয়ে ঘোষণা করেই খালাস। ঘোষিত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আমরা নিজেদের কতটা মানিয়ে নিতে পারছি বা আদৌ মেলাতে পারছি কিনা তা দেখার দায়িত্ব সরকারের নেই। কতগুলো এ্যাপ নির্ভর ব্যবস্থার দৌলতে আমাদের পেছনে ফেলে নব্য বাণিজ্য ব্যবস্থা রাতারাতি কায়েম হয়ে গেল।” বুঝতে পারি এই কথাগুলো তিনি বলছেন এক চরম কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে। আসলে পরিস্থিতি এমন দ্রুত গতিতে বদলে যাবে তা আগেভাগে অনুমান করতে পারেননি মোহনবাবুর মতো অনেক ব্যবসায়ী মানুষ। বুঝতে পারিনি আমরাও। সমস্যাটি এখানেই।

    বাজারের ওঠানামার সঙ্গে মোহনবাবুর পরিচয় বহুদিনের। তিনি জানেন নদীর জোয়ার ভাটার মতো ব্যবসায়ের‌ও ওঠানামার পর্ব রয়েছে; কিন্তু এ যেন গুঁতিয়ে লাইন থেকে বের করে দেওয়া। চেনা লোকজন‌ও যে রাতারাতি অচেনা হয়ে উঠবে তা ভাবেননি কখনও। বাজারের মুদি দোকানের বাঁধা খদ্দেররা সুযোগ বুঝে ভিন্ন ব্যবস্থার স্বাদ পেতে শুরু করায় বাজারে এইসব মানুষের ভিড় কমতে থাকে লক্ষণীয় হারে। যে সমস্ত মানুষ গুটিগুটি পায়ে লম্বা ফর্দ হাতে মাস পয়লা দোকানে দোকানে হাজির হতেন,তাঁরাও চট জলদি ই-ব্যবস্থার শরিক হতে বাধ্য হলেন। মোহনবাবুদের শূন্যতা বাড়লো। বাড়ছিল অস্তিত্বের সংকট।

    আরও একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো এই সময়ের মধ্যে। তা হলো বাজারে ক্রেতা হিসেবে Gen Zএর বৈপ্লবিক অভ্যুদয়। এই বিষয়টাকে তো ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয় কোনোভাবেই। এই ক্রেতারা চলনে বলনে ভাবনে কথনে পূর্ববর্তীয় Gen X দের থেকে একেবারেই আলাদা। এদের সর্বক্ষণের সঙ্গী স্মার্টফোন। এই প্রজন্ম তাঁদের পূর্বজদের থেকে অনেক অনেক যন্ত্রকুশলী। এঁরা অনলাইন বাণিজ্যে অত্যন্ত অভ্যস্ত। এঁরা রাম দুই করে নোট গুণতে চায়না। কোড স্ক্যান করে পলকেই লেনদেন সেরে ফেলায় বিলকুল সিদ্ধহস্ত। এঁরা বাজারমুখী নয়, ই–কমার্সমুখী। মোহনবাবুরা এদের সেবা করার সুযোগ‌ই পেলেন না! বরং এঁরা মোহনবাবুদের এড়িয়ে অন্য ডালে বাসা বাঁধলো।

    মোহনবাবুর পর্যবেক্ষণ – অতিমারির সময় আমাদের ঘরোয়া কর্তৃত্বের ব্যাটনের হাতবদল হয়েছে নীরব বিপ্লবের মতো। রোগের প্রকোপ থেকে সিনিয়রদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে এই টেক সেভি জেনারেশন। তাছাড়া এখনকার ফ্ল্যাট বা গেটেড সোসাইটিতে সঞ্চয়হীন, উপার্জনহীন সিনিয়র সিটিজেনরা প্রায় ব্রাত্য। সৌভাগ্যক্রমে গুটিকয় তেমন মানুষ থাকলেও তাঁদের অবস্থা এখন অনেকটাই ‘অ্যান্টিক শো পিসের’ মতো। হাতে ব্যাগ ঝুলিয়ে যে সব প্রৌঢ়, প্রবীণ মানুষদের বাজারে আসতে দেখা যেত, তাঁরা ডোডো পাখির মতো প্রায় ড্যানিশ। সংসারের নতুন প্রজন্মের কাণ্ডারিদের ঘুরে ঘুরে বাজার করার সময় নেই। এদের সকলেই ‘ই-মার্কেটিং’ এ অভ্যস্ত। হাতে থাকা মোবাইলেই যদি সব পেয়েছির দেশের হদিস মেলে তাহলে আর বাজারে যাওয়া কেন? অতিমারীর সময়ের আগে থেকেই এই সব ক্রেতাদের হারিয়েছিলেন মোহনবাবুরা। বিক্রিবাট্টায় তখন থেকেই ভাঁটার টান। সেই ট্রাডিশন এখনও চলছে। শুকিয়ে যাচ্ছে এই মোহন মুদীর দল। ফোন তুলে মুখ খুলতে যা দেরি, আরব্য রজনীর সেই জিনের মতো নিমেষেই সব এনে হাজির করবে একালের জিন আর জিনিরা আপনার দুয়ারে। কে আর পায়ে হেঁটে বাজারে আসবে বলুন। খদ্দের ছাড়া ব্যবসা হয়? বাজার জমে?

    মোহনবাবু মনে করেন বাজারে নগদ লেনদেন কমে আসাটাও তাঁদের ব্যাবসার এই অবনতির জন্য দায়ী। নতুন সময়ের ছেলেপিলেরাতো ট্যাকে পয়সা গুঁজে হাট বাজার করতে অভ্যস্ত‌ই নয়। পেয়িং অ্যাপের বোতাম টিপে দশ বিশ টাকার হিসেব মেটায়। এই ব্যবস্থা ছোট ব্যবসায়ীদের কারবারের ভিতটাকেই একেবারে নড়বড়ে করে দিয়েছে। আমাদের দেশের মতো বহু স্তরায়িত মানুষের দেশে ক্যাশ লেস্ লেনদেন অভিপ্রেত নয় বলে মনে স‌ওয়াল করেন তিনি। প্রথম প্রথম খুব সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাঁকে। এখন সবার দেখাদেখি ওই নকশা কাটা বোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন, ছবির ছাপ মোবাইল ফোনে তুলে নিয়ে বিল মেটাচ্ছে খদ্দেরদের একটা অংশ। নোট বাতিলের ধাক্কায় প্রায় শুয়ে পড়েছিলেন। এখনও সোজা হয়ে দুই পায়ের ওপর দাঁড়াতে পারেননি। তবে এই ব্যাপারটা খানিকটা সামলে নিয়েছেন তিনি। মোহনবাবুর স্বীকারোক্তি – দশ মিনিটের মধ্যে সব জিনিস খদ্দেরের হাতে তুলে দিতে পারবো না। আর বাড়িতে পৌঁছে দেবার মতো সাপ্লাই চেইন আমাদের নেই। আর এখনতো ই কমার্সের বদলে কুইক কমার্সের জমানা! তাই আমরা আমাদের মতো করেই বাজারে টিকে থাকার লড়াইয়ের জন্য গুটি সাজাচ্ছি।

    তাহলে চলছে কী করে? মাঝেমাঝে এই প্রশ্নটা আমাকেও কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। এঁদের চলছে কী করে? হয়তো এই দেশটাই মোহন বাবুদের এখনো পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছে, একেবারে লোপাট হয়ে যেতে দেয়নি। নেতা মন্ত্রীরা ভাষণ দেন – দেশের মানুষের চমৎকার উন্নতি হয়েছে। ঠিক কথা। তবে এমন বিকাশের ফল দেশের ১৪২ কোটি মানুষের কাছে সমান ভাবে পৌঁছয় নি। ফলে ঐ ঝাঁ চকচকে বিকাশের আড়ালে প্রায় অন্ধকারেই রয়ে গেছে একটা বড়ো অংশের মানুষ। সরকারের অবহেলার শিকার হলেও এরাই হলো মোহন বাবুদের প্রাণভোমরা। মাটির কাছাকাছি থাকা এইসব খেটে খাওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হয়তো কম, তবে এদের জন্যই বাজার এখনও হারিয়ে যেতে দেয়নি মোহন বাবুদের। এইসব পরিবারের রোজগেরে মানুষদের অনেকেই অতিমারীর সময় কাজ হারিয়েছেন। বাধ্য হয়েছেন নতুন পেশা বেছে নিতে, তবে ময়দান ছাড়েননি। এদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই মোহন বাবুদের মতো অনেককেই এখনও চাগিয়ে রেখেছে, যদিও লড়াই এখন খুব কঠিন। এদের ভরসাতেই তাঁরা এখনও লড়ে যাচ্ছেন দাঁতে দাঁত চেপে।

    একটানা কথা বলে বেশ হাঁপিয়ে উঠেছিলেন মোহনবাবু। পাশে রাখা জলের বোতল থেকে ঢকঢক করে খানিকটা জল গলায় গড়িয়ে দেন। নিজের মনের ভেতর জমে থাকা ব্যথা ভরা কথাগুলো বলতে পেরে বেশ আত্মতৃপ্ত মনে হয় তাঁকে। মুখে একগাল হাসির ঢেউ তুলে বলেন - “আপনারে দেইখা অনেক কথা ক‌ইয়্যা ফেলাইলাম। অত্যাচার করলাম আর কি! মাঝে মধ্যে আইলে দুই চার কথা ক‌ইতেপারি মন খুইল্যা। আইজকাল আপনি মনের কথা ক‌ওনের মানুষ পাইবেন না, ঘরেও না বাইরে‌ও না। আসলে আমাগো মনে কোনো কথাই নাই। বেবাক অখন থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়।”

    মোহনবাবুর ছেলে বেশ করিৎকর্মা। ফর্দ মিলিয়ে সব জিনিসপত্র দিয়ে পরিপাটি করে বাবার হাতে ফর্দটা ধরিয়ে দেয়। মোহনবাবু ব্যস্ত হাতে দাম বসাতে থাকেন। মোহনবাবুর ছেলে একালের অভ্যাস মতো জিজ্ঞেস করে – “কাকু, পেমেন্ট কি গুগল পে হবে ?” আমি হাসতে হাসতে বলি - “এতো কথা বলার পর ওই অ্যাপ পেমেন্ট করলে কথাগুলোর মজাটাই মাটি হয়ে যাবে। আমি নগদেই বিল মেটাবো।” সবাই একসঙ্গে হেসে উঠি। এই খোলা মনের হাসিটাই হয়তো মোহনবাবুদের লড়াইয়ের সবথেকে বড়ো ইউ.এস.পি.।

    সোমনাথ মুখোপাধ্যায়।
    আগস্ট ১৭.২০২৫
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২৯ আগস্ট ২০২৫ | ৩৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২৫ ২২:৫৪733738
  • "যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে রইব কতো আর"!
    কথা কও , কথা কও।
    কইরে আবার মানুষ কই! 
    কিছু বলব বলে এসেহিলেম। 
  • Somnath mukhopadhyay | ২৯ আগস্ট ২০২৫ ২২:৫৭733739
  • মন খুলে বলুন রঞ্জন দা। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:29b0:a5f9:330a:***:*** | ২৯ আগস্ট ২০২৫ ২২:৫৯733740
  • ভাল লেখা 
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২৫ ২৩:১৮733743
  • লেখা চমৎকার।  বিশ্লেষণও সঠিক। আপনার আমার জেনারেশনের লোকের হাত ধরে পুরনো সিস্টেম -- বিক্রেতা ক্রেতার মানবিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভিত্তিক লেনদেনের দিন--  ফিরিয়ে আনা কঠিন। আমরা অবয়বহীন আকারহীন লেনদেনে অস্বস্তি বোধ করি। বসে দুটো পরাণের কথা কইতে চাই।
     
    কিন্তু জেন জি তা চায় না। তারাই বড় লেভেলের উপভোক্তা, সংখ্যায় বেড়ে চলেছে। আমরা কমতির দিকে।
    তাহলে সমাধান?
    জানা নেই। কিন্তু মনটা খারাপ হয়ে যায়। 
     
    আমার কলেজের দিনে ভিলাইনগরে পরিচিত মুদি দোকানে মাসকাবারে লিস্ট দিয়ে এলে এবং আগের বিল নগদে পেমেন্ট করে দিলে ওরা এক দু'ঘন্টা পরে রিকশা করে মাল বাড়িতে পৌঁছে দিত। মাড়োয়ার থেকে বাপ-ছেলে এসেছিল লোটা আর পাঁচশো টাকা সম্বল করে। এই সিস্টেমে ফুলে ফেঁপে বিশিষ্ট নাগরিক হোল।
    কিন্তু আজকে সেই ম্যাজিক রিপিট হয় না।
     
    ব্যাংকে কাস্টমারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠত। এখন ডিজিটাল পেমেন্ট আর এটিএমের দিন। ড্রাফট ব্যাপারটা উঠেই গেল। পোস্ট অফিসে ইনল্যান্ড ও কার্ড বোধহয় উঠে গেছে। টেলিগ্রাম অফিস বন্ধ।
    এ আই এর চোটে আইটি পাশ ছেলেরা চাকরি হারাচ্ছে।
     
    জানি না, আগামী দিনে টেকনোলজির মারের সামনে আমাদের পরিচিত সমাজের চেহারা কী হবে! একটা নাম না জানা অবয়বহীন ভয় আমায় কুরে কুরে খায়।
  • Somnath mukhopadhyay | ২৯ আগস্ট ২০২৫ ২৩:৪৬733746
  • এতো মন খুলে কথা বলার জন্য রঞ্জন দা কে নমস্কার জানাই। টেকনোলজি মানুষের মনের ওপর খবরদারি করতে চায়। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো এই , যে প্রযুক্তি মানুষের‌ই তৈরি। সমাজ বদলাচ্ছে দ্রুত গতিতে, বদলে যাবে আরও অনেক। আমাদের মতো প্রবৃদ্ধ মানুষেরা টিকে থাকবো মিসিং লিঙ্ক হয়ে। একসময় হয়তো মোহন মুদীর মতো আমরাও নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবো।
    ভালো থাকবেন সবসময়।
  • পলি মুখার্জি | 2405:201:8000:b11b:218e:1685:33a9:***:*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২০733812
  • কোণঠাসা সময়ের কথা পড়ে সত্যিই মনটা ভারি হয়ে গেলো।ঐ সময় কেড়ে নিয়েছে আমার একাধিক প্রিয়জনকে। সাথেসাথে আমাদের জীবনেও নেমে এসেছিল গভীর অনিশ্চয়তা। মোহম মুদী একা নন, আরও বহু সংখ্যক মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিলকুল নড়বড়ে হয়ে গেছে আমাদের জীবনের অসংখ্য বণিয়াদ।
    লেখক আমাদের স্মৃতির সরণিতে পরিক্রমায় নিয়ে গিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।
  • সৌমেন রায় | 2409:40e1:10cb:2cbd:8000::***:*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৩০733818
  •  কালের নিয়মে অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তন ।কিছুই করার নেই। মোহন মুদির উত্তরসূরিরা ধীরে ধীরে বহুজাতিক  কোম্পানির কর্মচারীতে পরিণত হয়ে যাবে। এটা আর একধরনের পরাধীনতা।
     তবে এখনও সে সময় আসতে বাকি আছে। কারণ ভারতবর্ষের  জনগণের একটা বৃহৎ অংশ এখনো দোকানে গিয়েই কেনে। যতদিন এরা আছেন চলুন আপনার মত প্রবীণ আর আমার মত প্রাক প্রবীণরা জীবনের আনন্দ চেটে পুটে নিয়ে নিই।
  • বর্নালী | 2402:3a80:42ec:1c45:478:5634:1232:***:*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:২২733829
  • কথা বলার লোক পাওয়া খুব মুশকিল। মুঠো ফোন আমাদের সব কেড়ে নিয়েছে। কোভিড মানুষ দের একা থাকতে শিখিয়ে ছে। পুরাতন জিনিস ফিরে পাওয়া কঠিন। 
  • Mridul | 2409:408c:ad05:e39b::554b:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০১733831
  • Lekhata idaningkaler bodle jawa manusher vabdharonar prekkhapote onoboddo.
    Technology er gutoy abohoman kal dhore chole asa manusher alapcharita, samajik melamesa, nirvejal adda thomke darache business minded materialistic mentality er kache. Sei purono anondogulo jano beche thakar thikana khonje jiboner ses muhurto obdhi.
    Er moddhe jara ei notun somoyer sathe paa melate parche tarai sudhu survive korte parche r  bakira hariye jache onishchoyotar govir andhokare. E jano thik darwin er Survival of the fittest er nirmom bichar jekhane ponner daam manuser thekeo besi.
    Kichu bochor age ekta cinema dekhechilam , naam SONKOR MUDI, sekhaneo ekirokom prekhapot chilo, notun shopping mall culture asay etodin dhore chole asa mudir dokane tala pore.Karo pous mas to karo sarbonas.
    Khub e pathetic situation, but ei ratrace er duniyay tike thakte hole ei emotion tyag kore nijeke update rakhtei hbe, somoyer nirmom chakay purono abeg protiniyoto pise jache.
    Gacher sakhay purono ful jhore jay ,tar jaygay ase notun kuri. Notun somoyer motoi. Sudhu parthokko holo ei j sei kurite notun praner sonchar o hoy. Kintu ei notun technology er zamanay process khub fast holeo ta boroi pranhin.Amra protiniyoto mechanical life er dike egochi.
    Apnar ei lekhay bodle jawa poristhiti r tate generation gap ja mainly driven by technology,tar e jibonto chobi uthe eseche.
    Ekkothay osadharon lekha.

     
  • দিয়ালী চট্টরাজ | 45.25.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:১৫733840
  • শেষ টা খুব ভালো, বেশ রিলেট করতে পারলাম। ই-কমার্স, অনলাইন ট্র্যান্সাকশন নেশায় আমরাও মশগুল কিনা!! 
  • Santwana Bhowmik | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:০১733923
  • আমাদের উচিত দুটো ব্যবস্থাই টিকিয়ে রাখা।
     
    দুটোরই অনেক সুবিধা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন