এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অপর বাংলা

  • বাংলাদেশ অভ্যুত্থান ও পশ্চিমবঙ্গঃ ঠিক কি ঘটছে দু’পার বাংলায়?

    স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
    অপর বাংলা | ১১ আগস্ট ২০২৪ | ৩৪৭২ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৯ জন)

  • ছবি: রমিত চট্টোপাধ্যায়

    বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব যে ‘হয় আওয়ামী নয় বিএনপি-জামাত’ এই দ্বি-মেরু চক্কর থেকে দেশকে বের করতে চাইছেন, তা পশ্চিম বাংলার অধিকাংশের কাছেই স্পষ্ট নয়

    গত ৫-ই অগাস্ট বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর মুর্তি ভাঙ্গার দৃশ্য টেলিভিশনের পর্দা ও সামাজিক মাধ্যমে দেখার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের একাংশের মানুষের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগের সঞ্চার হয়েছে।

    মুজিব-কন্যা আবার দেশছাড়া, বঙ্গবন্ধুর মুর্তির ঘাড়ে উঠে মাথায় প্রস্রাব করছে কেউ, মারছে চটি দিয়ে, বুলডোজার গর্দান নামিয়ে দিচ্ছে কোনও মুর্তির, জ্বলছে ধানমন্ডির সেই বাড়ি যেখানে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে – প্রতিটা ছবি যেন বুকে শেল বেঁধায়। এ হামলা বঙ্গবন্ধুর ওপর হামলা, এ হামলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর হামলা, যে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে পশ্চিমবাংলার বাঙালির বুক গর্বে ভরে ওঠে। যে মুজিবের “আমরা যখন মরতে শিখেছি, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না” পশ্চিম বাংলার বাঙালি আজও ভোলেনি। যে মুজিব শুধু দেশনায়ক নন, শহীদও।

    পশ্চিম পাড়ের বাঙালি কিন্তু এই কথা জানেননি যে ২০২৪-এর জুলাই-অগাস্ট ছাত্র আন্দোলনেও “আমরা যখন মরতে শিখেছি, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না” চেতনা নিয়েই বুলেটের মুখোমুখি হয়েছিল হাজার হাজার তরুণী-তরুণ। তাঁদের অনেকেই অনুপ্রেরণা নিয়েছিলেন ইমতিয়াজ মাহমুদের কবিতার লাইন থেকেঃ “রক্ত দেখলে বাড়ছে সাহস।”

    প্রশ্ন হল, কেন ৫-ই অগাস্টের আগে বাংলাদেশ নিয়ে এই উদ্বেগ জন্মায়নি, যখন মুজিব-তনয়ার নির্দেশে মাত্র তিন সপ্তাহে তিনশ’র ওপর মানুষের মৃত্যু হয়, যার অধিকাংশই ছাত্র ও তরুণ? কেন কেউ জানলনা যে গণহত্যায় মেতে উঠেছিলেন শেখ হাসিনা?

    কেন পশ্চিমবঙ্গে ভাইরাল হয়নি আবু সাঈদের বুক চিতিয়ে গুলি খাওয়ার ছবি? প্যাকেট ভর্তি জলের বোতল হাতে ঘুরতে থাকা মীর মুগ্ধ, ‘কারো পানি লাগবে, পানি?’ জিজ্ঞেস করতে করতে যে পুলিশের গুলিতে মরে গেল, তাকে কেন চিনলনা পশ্চিম বাংলা? কেন জানলনা সেই রিকশাওয়ালার কথা যে গুলিতে মৃতপ্রায় কোনও যুবককে রিকশায় তুলতে গিয়ে দেখেন এ তাঁরই ছেলে? কেন জানলনা যে মারা গেছে শুধু তরুণ-তরুণী নয়, কিশোর কিশোরীও? কেন জানলনা যে দলে দলে অভিভাবকরা রাস্তায় নেমে এসেছিলেন পুলিশের মুখোমুখি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য?

    এর একাধীক উত্তর আছে, আমি আপাতত শুধু প্রধান দুটি কারনই উল্লেখ করছিঃ

    প্রথম কারণ, ভারত ও পশ্চিম বাংলার মূল ধারার গণমাধ্যম মানুষকে হাসিনার অত্যাচারের কথা জানায়নি। দ্বিতীয়, হাসিনার পদত্যাগের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশের চিত্র ও সংবাদে পশ্চিম বাংলায় সামাজিক মাধ্যম ভরিয়ে দেওয়ার মত কোনও সংগঠিত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, যা হাসিনা-পতনের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক শক্তি করছে।

    এই পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে কিছু গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় সাম্প্রদায়িক শক্তি ব্যাপক ভুয়ো সংবাদও প্রচার করে, যথা ব্যাপক হিন্দু নির্যাতনের খবর। ঘটনা তো ঘটেছেই, তার ওপর রং চড়ছে। ক্রিকেটার মাশরাফি মোর্তাজার বাড়িতে হামলার খবর লিটন দাসের বাড়ি হামলার ঘটনা বলে প্রচার করা হয়। পুরনো ছবি ভিডিও ভুল প্রেক্ষিতে ছড়িয়ে রবীন্দ্রনাথের মুর্তি ভাঙ্গা হয়েছে বলে প্রচার করা হয়। আওয়ামী লীগের অনেকেই আক্রান্ত হন কিন্তু বেছে বেছে হিন্দু পরিবারগুলির খবরই ভেসে ওঠে।

    এর ফলে, মানুষ হঠাৎ জানতে পারেন যে বাংলাদেশ আবার মুসলিম মৌলবাদীরা দখল করে নিয়েছে, যারা হাসিনাকে তাড়িয়েছে, মুজিবের মুর্তি ভেঙ্গে বাড়ি পুড়িয়েছে, আর এবার হিন্দুদের তাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।

    এই প্রেক্ষিতে তাই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর উল্লেখযোগ্য দিকগুলি উল্লেখ করছি।

    ১) ১৪-ই জুলাই থেকে ৫-ই অগাস্ট এর মধ্যে ছাত্র বিক্ষোভ যে গণবিক্ষোভে পরিণত হল, তা শুধু ওই কয়দিনের ঘটনা প্রবাহের ফল নয়। ২০০৮-এ জনপ্রিয় ভোটে ক্ষমতায় আসার পর হাসিনা দেশে আর কখনও বিশ্বাসযোগ্য কোন নির্বাচন হতে দেননি। ২০১৩-র নির্বাচন বিরোধীরা বয়কট করে। এরপর ২০১৮-র নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ফলে বিরোধীরা আবার ২০২৪-এর নির্বাচনও বয়কট করে। আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে হাসিনা বিরোধীদের ছাড়াই নির্বাচন করিয়ে নেন। সেই তখন থেকেই বাংলাদেশের একাংশের মানুষ মনে করতেন, হাসিনার পতন একমাত্র গণঅভ্যুত্থানেই সম্ভব, কারণ শান্তিপুর্ণ পথে পরিবর্তনের কোনও সুযোগ তিনি রাখেননি।

    ২) পূর্ব বাংলায় সেকুলার-লিবারাল ও সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী শক্তি ও মতাদর্শের সংঘাতের ইন্তিহাস ১০০ বছরেরও বেশী পুরনো। যদিও কোনও কিছুই পুরিপুরি সাদাকালো নয়, তবু মোটের ওপর ১৯৪৭-এ জিতেছিল তাঁদের ধর্মীয় পরিচয়, ১৯৭১-এ জিতেছিল তাঁদের সাংস্কৃতিক পরিচয়। এরপর নানান ওলট-পালট হলেও বাংলাদেশ মূলত মুক্তিযুদ্ধ-চেতনা ও ধর্মীয় পরিচয়ের সংঘাতের আবর্তে ঘুরেছে।

    ৩) ১৯৭৫-এর অগাস্টে সামরিক অভ্যুত্থানে দেশের বাইরে থাকা হাসিনা ও তাঁর বোন রেহানা ছাড়া সপরিবারে মুজিব হত্যার পর মোটামুটি ১৫ বছর কেটেছে একের পর এক সেনা অভ্যুত্থান আর সামরিক শাসনে। এর মধ্যে দুই সেনা শাসক, জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ নিজেদের রাজনৈতিক দল গড়েন। জিয়া, যিনি নিজেও সেনা অভ্যুত্থানেই নিহত হন, বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি (বিএনপি) গঠন করেছিলেন। এরশাদের প্রতিষ্ঠিত পার্টি হল জাতীয় পার্টি। গত সাড়ে তিন দশকে বাংলাদেশ মূলত আওয়ামী লিগ ও বিএনপি এই দুই মেরুর রাজনীতিই দেখেছে। জাতীয় পার্টি ও নানান বাম দল গুলির উপস্থিতি মূলত পরিপার্শিক।

    ৪) বিএনপি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী নয়। জিয়া মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং রেডিও-তে জয়ের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শাসন কালেই মুজিব ঘাতকদের কেউ কেউ উঁচু পদ পায় ও কাউকে কাউকে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এই অভিযোগ আছে। জিয়ার স্ত্রী, খালেদা জিয়া বিএনপির নেত্রী হিসাবে ১৯৯১-’৯৬ ও ২০০১-’০৬ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শাসন করেন।

    ৫) বিএনপির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধিতার অভিযোগ আসে মূলত জামায়াতে ইসলামীর সাথে তাঁদের দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক জোটের কারণে। জামায়াত নেতারা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। রাজাকার ও আল বদরের মত কুখ্যাত ঘাতক বাহিনীর নাম জামায়াতের সাথেই সংশ্লিষ্ট।

    ৬) হাসিনা ১৯৮১-তে দেশে ফিরে আওয়ামী লিগের দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৯৯৬ থেকে ২০০১ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার পর আবার ২০০৮-এ জনপ্রিয় ভোটে ক্ষমতায় ফেরেন। এর পর থেকে বাংলাদেশে আর কোনও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হয়নি।

    ৭) ১৯৭০ ও ‘৮০র দশকেই আরেকটি বড় পরিবর্তন হয়ে গেছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানের চারটি মূল ভিত্তির একটি ছিল ধর্ম নিরপেক্ষতা, যেটি ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান মুছে ফেলেন। এর পর ১৯৮৮ সালে এরশাদ ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করেন।

    ৮) হাসিনার লড়াই সহজ ছিল না। তাঁকে শুধুই জামাতের মত মৌলবাদী সংগঠন নয়, ২০১৩-১৬ নাগাদ আল কায়দা ও আইসিস-অনুপ্রাণিত একাধীক জঙ্গি গোষ্ঠীর মোকাবিলা করতে হয়েছে। একসময় জামায়াতকে জব্দ করতে তিনি আরেক ধর্মীয় সংগঠন, হেফাজতে ইসলামের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন।

    ৯) কিন্তু সন্ত্রাস ও মৌলবাদ মোকাবিলার নামে তিনি ক্রমশ সমস্ত রকম রাজনৈতিক বিরোধিতার নাম ও নিশান মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। শুরু হয় গুম করে দেওয়া, ‘ক্রস ফায়ার’-এ বা ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যা; নানান অভিযোগে জেলে ঢোকানো। ২০১৭-সালে একটি রায়ে সরকারের সমালোচনা করার পর প্রধান বিচারপতি বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে কার্যত দেশ ছাড়া হতে বাধ্য করা হয়। এর পর থেকেই বিচার বিভাগের ওপর ক্রমশ গভীর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে আওয়ামী লিগ। পরে দুর্নীতির দায়ে তাঁর জেলের ব্যবস্থাও করে রাখা হয়।

    ১০) একের পর এক জেলে ঢোকানো হয়েছে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী থেকে রাজনৈতিক বিরোধী — সব ধরণের সমালোচককে। বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করা আইনকরে নিষিদ্ধ করা হয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যদের “মানহানীর” অভিযোগে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা করা বহু ব্যাক্তিকে কুখ্যাত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-এর মাধ্যমে জেলে ঢোকানো হয়।

    ১১) হাসিনা শুধু সব বিরোধীদেরই সন্ত্রাসী বা দুর্নীতিবাজ বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেননি, তাঁর আমলেই সৃষ্ট গুমঘর ‘আয়না ঘর’-এ গোপনে স্থান হয়েছে পুলিশ বা সেনা বাহিনীর হাতে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়া বিরোধী/সমালোচকদের। তাঁর আমলে পুলিশ, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশন – সবই দলদাসে পরিণত হয়। হাসিনার বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীনতা বারংবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে; আন্তর্জাতিক মানবাধীকার সংগঠনগুলি বারবার গলা তুলেছে। কিন্তু হাসিনা চলেছেন নিজের মত।

    ১২) এই পরিস্থিতিতে গত দুই-তিন বছর ধরেই হাসিনার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের পারদ ক্রমেই চড়ছিল। কিন্তু বিরোধীদলগুলিকে তিনি নেতৃত্বশূন্য করে ফেলেছিলেন। হাসিনার বজ্রকঠিন শাসন এড়িয়ে প্রভাবশালী কোনও গণআন্দোলন তাঁরা গড়ে তুলতে পারেননি।

    ১৩) ২০২৪-এর জুলাইতে চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণের বিরোধিতা করে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন হঠাৎ-ই তীব্র গতি পেয়ে যায় ১৪ তারিখ হাসিনার একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসম্মানসূচক মন্তব্যে। কোটা-বিরোধী আন্দোলনকারীদের তিনি কার্যত “রাজাকারের বাচ্চা” বলেন। এতেই আগুন জ্বলে। ছাত্র আন্দোলনের মূল কেন্দ্রে যারা ছিলেন, তাঁরা মূলত বাম-ঘেঁষা বা সেকুলার-লিবারাল। নিশ্চয়ই বিএনপির ছাত্র দল বা জামাতের ছাত্র শিবিরের সদস্য-সমর্থকরাও ছিলেন, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ তাঁদের হাতে ছিলনা।

    ১৪) গোটা আন্দোলনপর্ব জুড়ে, রাষ্ট্রশক্তির প্রবল নিপীড়নের মুখেও, একদিকে ছাত্ররা যেমন পিছু হঠেনি, তেমনি তারা বিএনপি বা জামাতের হাতেও আন্দোলনের রাশ যেতে দেননি। এই পরিস্থিতে বিরোধী দল গুলি ঠিক করে চুপচাপ ছাত্র আন্দোলনে কিছু লোক পাঠাতে, যাতে ভিড় বাড়ে। ছাত্ররা হাসিনাকে সরাতে সফল হলে তাঁরা ক্ষমতায় আসবেন, এরকমটাই তাঁরা আশা করেন।

    ১৫) পুলিশকে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে দেওয়া যদি হাসিনার বেপরোয়াপনার এক অন্তিম বহিঃপ্রকাশ হয়, তবে কফিনে শেষ পেরেক হল ৪ অগাস্ট সশস্ত্র আওয়ামী লীগ বাহিনীকে পুলিশের সাথে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া। ওই একদিনে একশ’র ওপর মৃত্যু হয়, যার তিন-চতুর্থাংশেরও বেশী হল লীগ কর্মী ও পুলিশের গুলিতে মৃত আন্দোলনকারী; বাকিরা গণপিটুনিতে নিহত পুলিশ ও লীগ কর্মী। ওই দিনের ঘটনাবলী মানুষের সহ্যের সব সীমা ভেঙ্গে দেয়। ৫ তারিখ ছাত্রদের ডাকে জমায়েতের ভিড়ের বহর দেখে সেনা-পুলিশ আর গুলি চালাতে অস্বীকার করায় হাসিনার খেলা সমাপ্ত হয়।

    ১৬) হাসিনা পদত্যাগ করে সটান দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় ছাত্রদের কাছে দুই নতুন চ্যালেঞ্জ আসে। এক দিকে ফের সেনা শাসনের সম্ভাবনা। আরেকদিকে বিএনপি-জামাত কর্তৃক ক্ষমতা দখল। সেনা-সমর্থনে বিএনপি-জামাত-জাতীয় দলের মিলিজুলি সরকারের সম্ভাবনাও ছিল। কিন্তু ছাত্ররা দৃঢ়তার সাথে এই সব সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করে বলে তারা যেহেতু রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে মাঠে নেমেছে, তারা সেনা শাসন বা অন্য আরেক ধরণের স্বৈরাচারী শাসন মানবে না। তারাই ঠিক করে দেবে অন্তরবর্তীকালীন সরকারের স্বরূপ কি হবে।

    ১৭) সোজা কথায়, যা কেউ ভাবেনি, ছাত্ররা এমন একটা সম্ভাবনা উপস্থিত করল – আওয়ামী লীগ আর বিএনপি-জামাত এই দ্বিমুখীনতার বিরুদ্ধে এক তৃতীয় সম্ভাবনা। তারা ঘোষণা করল, দ্যর্থহীন ভাবে, এক স্বৈরাচারের বিকল্প আরেক স্বৈরাচার নয়। তারা শুধু সরকার বদল নয়, গোটা কাঠামো ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দীর্ঘমেয়াদী বদল চান। মুজিব পরিবার, জিয়া পরিবার, এরশাদ পরিবার – এর বাইরে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলতে চান।

    ১৮) অন্তত ৮ই অগাস্ট পর্যন্ত, যেদিন ছাত্রদের মনোনীত তদারকি সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস, নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ যিনি নিজেও হাসিনার রোষের শিকার হয়েছিলেন, নতুন সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেন, ছাত্ররা সেনা-নিয়ন্ত্রিত সরকার ও বিএনপি-জামাত প্রভাবিত সরকার – দুই সম্ভাবনাকেই আটকে রাখতে পেরেছেন।

    ১৯) এর মধ্যে, ৫ তারিখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে, বাংলাদেশের সব থানা ও রাস্তা কার্যত পুলিশ শূন্য হয়ে যায়। গণপিটুনির শিকার হওয়ার ভয়ে পুলিশকর্মীরা আর থানা বা রাস্তায় থাকতে চান নি। এই সুযোগে কিছু দুষ্কৃতি ও মৌলবাদীরা হামলা চালায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যে, সংখ্যালঘুদের বাড়িতে, উপাসনালয়ে, সুফি মাজারে। টার্গেটের ধরণ দেখে মুসলিম মৌলবাদীদের ছাপই পাওয়া যায়। কিন্তু ছাত্র নেতৃত্ব প্রাথমিক ভাবে ঘোষণা করেছেন যারা যারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করছে/করবে, তারা সবাই আওয়ামী লীগ, তারা আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে চায়। আজ তারা সরাসরি মুসলিম মৌলবাদীদের নাম নিলেন না। কিন্তু লড়াই জারি রাখতে হলে তাঁদের জামাতের নাম এক দিন না একদিন নিতেই হবে।

    ২০) পুলিশশূন্য দেশে এই ছাত্র নেতৃত্ব বারবার ডাক দিয়েছেন পাড়ায় পাড়ায় কমিটি গড়ে মন্দির, গির্জা পাহারা দেওয়ার জন্য; রাত জেগে পাহারা দেওয়াও হয়েছে বহু জায়গায়। তারপরও, কোনও সামাজিক উদ্যোগের পক্ষেই পুলিশের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়। নৈরাজ্যে যা হওয়ার তাই-ই হয়েছে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পাঁচ তারকা হোটেলে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়, যার মধ্যে এক জন বাদে সবাই স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী-আন্দোলনকারী। হোটেল এক দফা ভাংচুর হওয়ার পর এক দল আন্দোলনকারী উৎসাহ বশে হোটেলটি দেখতে বা জিনিসপত্র হাতিয়ে নিতে উপরের তলাগুলিতে যখন উঠেছে, তখন আরেকদল বিক্ষোভকারী নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পুড়ে খাক হয়ে গেছে আন্দোলনের সক্রিয় সমর্থক, ‘জলের গান’ গানের দলের রাহুল আনন্দের বাড়ি ও অগণন অমুল্য বাদ্যযন্ত্র।

    ২১) হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ও তাঁদের একাংশের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসার প্রচেষ্টা সংবাদ, ছবি ও ভিডিও পশ্চিমবঙ্গে ভাইরাল হতে থাকে। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। ২০১৪-১৫ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মুসলিম মৌলবাদ, জঙ্গি কার্যকলাপের বাড়বাড়ন্তকে হাইলাইট করে পশ্চিম বাংলায় মুসলিম-বিদ্বেষ খুঁচিয়ে তোলার কাজ শুরু করে হিন্দু মৌলবাদী শক্তিগুলি। এরপর ২০১৮-১৯ থেকে মূলত বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক নাগরিকতা আইন (সিএএ) ও প্রস্তাবিত পঞ্জিকরণ কর্মসুচী (এনআরসি)কে সামনে রেখে ধর্মীয় মেরুকরণের কাজ শুরু হয়।

    ২২) ২০২৪-এর অগাস্টে কুচবিহার, জলপাইগুড়ি, নদীয়া সীমানা পার হয়ে ভারতে ঢোকার লাইনের ছবি ও ভিডিও আবার পশ্চিম বাংলার হিন্দু মৌলবাদীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। এই জন্যই ছাত্ররা যে স্বৈরাচার-বিরোধী ও মৌলবাদ-বিরোধী এক নতুন সরকার গড়ে তোলার কথা বলেছে, তার দ্রুত বাস্তবায়ন দুই পার বাংলার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। হাসিনা এখন অতীত। ছাত্রদের লড়তে হবে সেনার ক্ষমতা-প্রবণতা ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে। এটা ভুললে চলবে না, ওখানকার হিন্দু নির্যাতন দেখিয়ে এখানকার হিন্দু মৌলবাদীরা হাওয়া গরম করবে, আর সেটাকে দেখিয়ে আবার ওখানকার হুজুররা হাওয়া গরম করবে।

    ২৩) জামাতের বিপদ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ওয়াকিবহাল বলেই মনে হল। তাদের পছন্দের ইউনূস ঘোর হাসিনা বিরোধী হলেও বিএনপি-জামাতেরও পছন্দের ব্যক্তি নন, যদিও অনেকেই বলছেন, তিনি আমেরিকার বিশ্বস্ত। বাংলাদেশ নিয়ে গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অতিতৎপরতা অনেক কন্সপিরেসি থিওরির জন্ম দিচ্ছে। ‘ভারতের কলোনি’ হয়ে ওঠার যে ক্ষোভ অনেক বাংলাদেশীর মনে আছে, তেমনি আগামীতে মার্কিন কলোনি হয়ে ওঠার বিপদের সম্ভাবনাও তাঁরা কেউ কেউ ইতিমধ্যেই দেখতে পাচ্ছেন।

    ২৪) ছাত্ররা আশাতীত সাফল্য দেখিয়েছে। তার পরেও দৃঢ়তা দেখিয়েছে। স্বৈরাচার না মৌলবাদ, এই প্রশ্নের বাইরে স্বৈরাচার ও মৌলবাদ উভয়কেই দূরে রাখার যে প্রকল্প তারা ঘোষণা করেছে, তার সাফল্যের ওপর শুধু বাংলাদেশ নয়, দুই বাংলার পারষ্পরিক সম্পর্কও নির্ভর করছে। এসবের সাথে তাঁরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরও বিরোধিতা করতে পারবেন কিনা সেটা অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে যায়। কিন্তু তাঁরা যদি ‘৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা আবার ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেটাই হবে, আমার মতে, তাঁদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এরকম কোনও উদ্দেশ্যের কথা অবশ্য তাঁরা এখনও ঘোষণা করেননি।

    ২৫) এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আরেকটা কাজ করতে পারেন। যখনই কেউ মুজিব মুর্তি ভাংচুরের প্রসঙ্গ তুলে বলতে আসবে মুসলমানদের দেশ বাংলাদেশ এত খারাপ যে জাতির জনককেও ছাড়ে না, তাঁকে আগে একবার জিজ্ঞেস করে নেবেনঃ “আর ভারতের জাতির জনকের হত্যা বিষয়ে তোমার/আপনার কি মত?” তাঁরা যদি গান্ধী হত্যার তীব্র নিন্দা না করেন, বুঝে যাবেন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যাথা নেই; না তাঁরা স্রেফ বাংলাদেশকে ব্যবহার করে এদেশের মাটিতে নিজেদের বিষবৃক্ষের ফসল তুলতে চাইছেন।

    পাঁচ তারিখ হঠাৎ হাসিনা-পতনের পরের প্রশাসনিক শূন্যতার সুযোগে তিন-চার দিন দেশ জুড়ে ব্যাপক নৈরাজ্য চললেও নয় তারিখ থেকে পরিস্থিতি খানিক স্বাভাবিক হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন ব্যাপার হল, সব পক্ষ মাঠে নেমেছে। সংখ্যালঘুরা মাঠে নেমে প্রতিবাদ করছেন, “আমার মাটি ছাড়বো না, দেশটা কারোর বাপের না।” আওয়ামী লীগ রাস্তায় নেমে মিছিল করছে। বিএনপি মিছিল করছে। জামাতের ছাত্র শিবির মাঠে নেমেছে। শিবিরের মোকাবিলায় ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীরা মাঠে নেমেছেন। এই সবাই মাঠে থাকাটা গণতান্ত্রিক পরিবেশের আভাস দেয়, যা হাসিনা থাকাকালীন ছিল না।

    বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতার এখন উচিৎ, নতুন সরকারকে, নতুন নেতৃত্বকে প্রথম থেকে প্রশ্ন করা, প্রতিটি বিচ্যুতিকে প্রশ্ন করা, প্রথম থেকে চাপে রাখা, যাতে প্রশ্ন করা ও মাঠে নামার অধিকার আর হারাতে না হয়। সেই সঙ্গে প্রয়োজন সব ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ – যারা পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গুলি বা হামলার শিকার ও যারা ৫ তারিখের পর থেকে মৌলবাদী ও দুষ্কৃতি হানার শিকার। দলমত নির্বিশেষে সব পরিবারের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার মধ্যে দিয়েই এক প্রকৃত গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু হতে পারে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অপর বাংলা | ১১ আগস্ট ২০২৪ | ৩৪৭২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2402:3a80:1989:7eef:578:5634:1232:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৩:১৯536162
  • হাসিনার এই পরিণতি প্রত্যাশিত। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের স্বৈরাচার ও দুর্নীতি সাধারণ মানুষকে ক্ষুব্ধ করেছিলো, স্বাভাবিকভাবেই সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে। 
    কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থার উন্নতি তো হবেই না, বরং আরো অবনতি হবে। প্রথমে কিছুদিন সামরিক শাসন থাকবে, তারপর বিএনপি-জামাত ক্ষমতা দখল করবে। বাংলাদেশে বামপন্থীরা নগণ্য, বাংলাদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রিত করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
    হয়তো আরো পনেরো-কুড়ি বছর পর আরেক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে সেই অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটবে। 
    একশো বছর পরে কি হবে বলতে পারি না, তবে ধর্মান্ধ রাজনীতিই এখন ভারতীয় উপমহাদেশের ভবিতব্য।

    বাংলাদেশের এই আন্দোলনে ছাত্র যুবদের সামনে রেখে মৌলবাদী শক্তি ক্ষমতা দখল করেছে। ফরাসী বা রুশ বিপ্লবের আদর্শের সঙ্গে এরা কোনভাবেই তুলনীয় নয়। বাংলাদেশকে একটি ইসলামী দেশে পরিণত করাই এদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
  • দীপ | 2402:3a80:1989:7eef:578:5634:1232:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৩:২২536163
  • ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে তসলিমা এই মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লেখালেখি করছেন। কিন্তু আমরা তাঁর লেখাকে কোনো গুরুত্ব দিইনি। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গে তাঁর লেখাকে নিষিদ্ধ করে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়ানো হয়েছে! তখন আমাদের মহাবিপ্লবীরা চুপচাপ ছিলেন, কেউ তসলিমাকেই গালাগালি করছিলেন! আজ তসলিমার লেখার গুরুত্ব আমরা সবাই ভালোভাবেই বুঝতে পারছি!
  • দীপ | 2402:3a80:1989:7eef:578:5634:1232:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৩৪536164
  • গত পঁচাত্তর বছরে এক কোটিরও বেশি মানুষ পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে চলে এসেছেন। এই নিয়ে পণ্ডিত মহোদয়ের মতামত জানতে পারি?
    ২০২১  সালে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বাড়ি আক্রান্ত হয়, মন্দির ভাংচুর করা হয়। অন্তত চারজন মারা যান। সারা দেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের সময় আপনি তখন কি করছিলেন?
    টবের লেখায় হিন্দুত্ববাদ খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন?
  • দীপ | 2402:3a80:1989:7eef:578:5634:1232:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৩৮536165
  • বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়, কিন্তু আপনার ধান্দাবাজি আমাদের কাছে স্পষ্ট।
     
    বিগত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নানাভাবে আক্রমণ হচ্ছে। তসলিমার ফেসবুক প্রোফাইলে আছে। একটু কষ্ট করে দেখে নেবেন।
     
  • Guru | 2409:4060:e85:4f21:1a0d:bf82:14a:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৫৬536166
  • বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু বাঙালিদেরও কিন্তু এপার বাংলার প্রতিবেশী অহিন্দিভাষী রাজ্যগুলি যেমন বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড, অসম, ত্রিপুড়া নিতে অস্বীকার করেছে। কালকে নয়ডাতে মালদা ও মুর্শিদাবাদের মানুষদের উপরে "ঘুসপেটিয়া" অভিযোগে তাদের সেখানকার বস্তিতে আক্রমণ করা হয়েছে। সবের পিছনে এই সনাতনী হিন্দুত্ব। লেখককে ধন্যবাদ সঠিক কথাটা সহজভাবে বলবার জন্যে।
  • Guru | 2409:4060:e85:4f21:1a0d:bf82:14a:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৪:০৩536167
  • বাংলাদেশে সনাতনীদের সবচেয়ে বড় নেতা গোবিন্দ প্রামানিক বলেছেন যে ওখানে সাধারণ হিন্দুদের উপরে তেমন বড় অত্যাচার হয়নি। কাজেই শুকরশাবক দীপঃচাড্ডি কি বললো তাতে কার কি এসে যায়। আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্চে নয়ডাতে সনাতনীরা আমাকে বাঙালিদের আক্রমণ করেছে।
  • a | 2a0b:f4c2::***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৪৪536168
  • হ্যাঁ, বাংলাদেশীদের আচরণের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও সারা দেশে সন্দেহের মুখে পড়ছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়।
  • :) | 2405:8100:8000:5ca1::2c:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৫৪536169
  • Guru রসিক আছেন।
  • হেহে | 2a0b:f4c2::***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৫:৪৪536172
  • লিচ্চই নয়ডায় যে বাঙালিরা মার খাচ্ছে তারা মুসলমান।  তাইলে আর দিপচাড্ডি কি করবে? লাথখোর চাড্ডি বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্যই পোঁদ লাচাবে।
  • আসরাফুল ইসলাম | 2401:4900:16c6:d628:bd49:2d70:3e36:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ১৫:৫২536175
  • দীপ, লেখক ধান্দাবাজ নন, উনি অতি বাস্তব সত্য ঘটনা তুলে ধরেছেন। বরং আপনার কথাবার্তাই ধান্দাবাজি মূলক তসলিমার মতো। যিনি মুসলিম মৌলবাদ নিয়ে মিডিয়া গরম করেন অথচ ভারতে মুসলিম বিরোধী মব লিনচি্্ বুলডোজার নিয়ে চুপ। ধান্দাবাজ রায় ধান্দাবাজ দের রেফারেন্স টানে। 
  • শওকত | 37.***.*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ২০:২১536191
  • বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ একটি লেখা।
  • বিপ্লব রহমান | ১১ আগস্ট ২০২৪ ২০:৫৬536195
  • তথ্যবহুল লেখা উপস্থাপনার জন্য লেখককে সাধুবাদ। 
     
    তবে এতো সুন্দর পায়েসটি তলানিতে এসে ধরে গেল। অতি বিনয়ের সাথে বলছি, 
     
    লেখার শেষ প্যারায় প্রচণ্ড দ্বিমত। 
     
    "বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতার এখন উচিৎ" ব্লা ব্লা... 
     
    এই ছবকটি বোধহয় লেখা থেকে সম্পাদক মণ্ডলী বাদ দিলেও দিতে পারতেন। 
     
    ৩৬ জুলাইয়ে ক্ষুব্ধ, রক্তাক্ত, আগুনে পোড়া বিদ্ধস্ত, লাশের সংখ্যা গুনে ক্লান্ত, হতবিহ্বল ছাত্র-জনতার করণীয় তাদেরই ঠিক করতে দেয়া বোধহয় উচিৎ। বিশেষ করে প্রক্সি যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- পাকিস্তানি পরাশক্তির যখন প্রত্যক্ষ জয় হয়েছে, পিছু হটেছে ভারত ও চীন। 
     
    এই দুঃসহ ক্রান্তিলগ্নে কখন কী ঘটে যাবে, কিচ্ছু বলা যায় না। অনেক ধন্যবাদ 
  • সুশান্ত | 117.194.***.*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ২২:২৯536200
  • সুন্দর লেখা! কেবল মনে হল হাসিনা যে জামাতের চিরদিনের শত্রু নন এই কথারও উল্লেখ থাকা ভালো ছিল। এরশাদের দিনেই ইনি জামাতের সঙ্গে মিলে নির্বাচনে লড়েন, যখন বাকিরা বয়কট করে। এরশাদ গেলেও তিনি জামাতকে জোটে ডাকেন। জামাত লিগের সঙ্গে না এসে বিএনপির সঙ্গে এল বলেই শত্রু হয়ে গেল। 
     
  • X | 2405:201:9002:3020:a1b3:1c8e:b7ce:***:*** | ১১ আগস্ট ২০২৪ ২২:৩২536201
  • বাঙালগুলো দাবার বোড়ে - খেলাটা হচ্ছে আম্রিগা + চীন+ পাকিস্থান বনাম ভারতের মধ্যে
     
    খেলা এখনও অনেক বাকি
  • কাজি তাজিম | 78.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ০০:৪৬536202
  • এত স্বল্প পরিসরে এর চাইতে দারুন কিছু লেখা সম্ভব বলে আমি মনে করি। শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে কোটা তুলে দিলো ছাত্রদের দাবীর মুখে (তখন কিন্তু কোন কোর্ট বলেনি যে, এটা সংবিধান বা সরকারী ঘোষনার সাথে সাংঘর্ষিক)। যাই হোক ৭ জন মুক্তিযোদ্ধার ৩য় প্রজন্ম হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে হাইকোর্ট কোটা কে পূনর্বহাল করলো; ছাত্ররা শাহবাগ চত্বরে অহিংস আন্দোলন শুরু করলো। এর মাঝে শেখ হাসিনা চীন গেলেন ৫/৬ বিলিয়ন পাবার আশা করে কিন্তু যে কোন কারনে চীন চাংচুং করে বিদেয় দিলেন। দেশে নেমে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এসে ছাত্রদের এ আন্দোলনের কথা শুনে বললেন করতে থাকুক কতদিন করবে? 
     
    প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিক (আমি জানি তাকে সাংঘাতিক হিসেবে) প্রভাষ শেখ হাসিনারই চীনের কথা না জিজ্ঞেস করে ইনিয়ে-বিনিয়ে বললেন মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসুরীরা কোটা পাবে নাকি ....? উনি ঘিয়ে আগুন দিয়ে দিলেন। আর শেখ হাসিনাও বলে দিলেন মুক্তিযোদ্ধা উত্তরসুরীরা পাবো না তো কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? 
     
    রাজাকার বাংলাদেশীদের জন্য একটা জঘন্য গালি।. ছাত্রদের পালস না বুঝে এমন হঠকারী কথা বেফাঁস বলে দিয়ে একটা সুপ্ত আগ্নেয়গিরি কে নাড়া দিয়ে দিলেন। বাকী কাজটা করে দিলো দলের সম্পাদক ও.কাদের এই বলে যে   এই আন্দোলন ঠান্ডা করতে ছাত্রলীগই যথেস্ট। বাস আর যায় কোথা হেলমেটপরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা হামলে পড়লো আন্দোলনকারীদের ওপর, সেই সাথে দলীয় ক্যাডার থেকে নেয়া পুলিশ। নির্বিচারে হামলা শুরু হলো, হত্যার উদ্দেশ্য না থাকলে পুলিশ কেন মাথায়, মুখে গুলি করবে? স্নাইপার কেন ছাদ থেকে গুলি করবে,হেলিকপ্টার থেকে কেন গুলি করবে? এসবের সদুত্তর কবে পাবো আমরা জানি না। বিজিবি আনা হলো তাঁরাও মারলো নির্বিচারে। 
     
    এবার সুপ্রীমকোর্ট কে তারিখ আগিয়ে এনে কোটা সংস্কারের রায় বদলানো হলো কিন্তু ততক্ষনে দেরী যা হবার হয়ে গেছে। ছাত্ররা ৪০০ শতাধিক হত্যার বদলে সরকার কে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিলো যা আবারো সন্ত্রাস দিয়েই দমন করতে চাইলো। কিন্তু তারা কথনই ভাবলো না যে, সাঈদ কে গুলি করে হত্যার ভিডিও সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে গেছে  তারওপর ১২ বছরের ছেলেকে সাঈদ হত্যার আসামী হিসেবে গারদে পোরা হলো। ইন্টারনেট নিয়ে অনেক নাটক হলো। তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরো সরেস ১ কাঠি বাড়িয়ে বললো ছাত্ররা ড্রাগস গ্রহন করে আন্দোলন করছে। আর পুলিশ প্রধান বললো ১ জনের মারা যায়নি পুলিশের গুলিতে। সব প্রমান থাকার পরেও মিথ্যাচার চলতেই থাকলো। ১২ হাজারের ওপর গ্রেফতার করা হলো কদিনেই কিন্তু হীরকরানীর তোষামুদেরা তাকে পুরো আস্থায় রাখলো। ছাত্রলীগ ঘোষনা দিলো ৭ মিনিটে সব পরিস্কার করে দেবে ঐ দিনই মারা যায় শতাধিক ছাত্র, শিশু,গৃহিনী, দিন-মজুর, কর্মজীবি। যে আগুনটা খুব ভালভাবে মেটানো যেতো সেটা তারা কোন করলেন না তাঁরাই জানেন।
     
    এবার তুরুপের তাস সেনা বাহিনী আনতে হলো (সেনা প্রধান তাঁর আত্মীয় বিধায়); কিন্তু সাধারন সৈনিক'রা জনগনের ওপর গুলি চালাতে মানে হত্যা করতে অস্বীকার করায় দ্রুতই দাবার ছক বদলে যেতে লাগলো। ৪ তারিখেই তার ছেলে তাকে দেশ ছাড়তে বলে, ৫ তারিখে গনভবন ঘেরাও কর্মসুচী টাই তাকে তড়িঘড়ি পদত্যাগ ও দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।
     
    এর মাঝে অনেক কিছু হয়েছে যা এখানে সব লেখাও সম্ভব না। তবে আমি যতটুকু জানি শেষটা "হীরক রাজার দেশে" এর মতই হলো ~ দড়ি ধরে মারো টান 
     
    এটা আমার একান্তই নিজস্ব মতামত - তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি পত্রিকায়, সামাজিক মাধ্যমে ছাড়াও ফোন ছবি ভিডিও থেকে। কাউকে আমার বক্তব্য শুনতে আর মানতে হবে এমনটা না। আমার লেখার পক্ষে বিপক্ষে আপনার মতামত
    দিতে পারেন তবে আমি কর্মজীবি বিধায় উত্তর দিতে পারবো বলে মনে হয় না।
     
    আমরা সবাই নস্ট-নোংরা-ভ্রস্ট রাজনীতির "গোলাম" যেটা বাংলাদেশে হলো এটা আগেও হয়েছে। চসেস্কু  সাদ্দাম,গাজাফির পরিনতি কে আমরা ভুলিনি ঠিক তেমনিই ভুলিনি চে গুয়েভারা কে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনি আর করবেও না। আমরা তবুও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিইনা।
     
    পরিশেষে বলতে চাই এই ক্ষমতা চিরস্থায়ী না তা হলে ১৭৯৩ এর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত মতই চলতো ভারতবর্ষ। সেটাও হয়নি আর হয় ও না।
     
    ভাত না দিলে তরুন-যুবারা এভাবেই মানচিত্র খাবে যুগে যুগে।
  • বিপ্লব রহমান | ১২ আগস্ট ২০২৪ ০৬:৪৭536207
  • পুনশ্চঃ মাফ করবেন। এই লেখাটি দু-তিনবার পড়তে গিয়ে ২৪ নম্বর নোক্তায় রীতিমতো চমকে গেলাম। তথ্য-বিশ্লেষণের চেয়ে কল্পবিলাস বা শুভ কামনায় লেখকের আস্থা বেশি বলে মনে হলো। 

    "ছাত্ররা আশাতীত সাফল্য দেখিয়েছে। তার পরেও দৃঢ়তা দেখিয়েছে। স্বৈরাচার না মৌলবাদ, এই প্রশ্নের বাইরে স্বৈরাচার ও মৌলবাদ উভয়কেই দূরে রাখার যে প্রকল্প তারা ঘোষণা করেছে, তার সাফল্যের ওপর শুধু বাংলাদেশ নয়, দুই বাংলার পারষ্পরিক সম্পর্কও নির্ভর করছে।"

    তাই নাকি? এই গুরুতর তথ্যের দু'একটা সূত্র জানতে পারি কী? 

    বরং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। শিক্ষার্থীদের বেহাত আন্দোলনে ৩৬ জুলাইয়ের শুরু থেকে আঠালো ভাবে মিশে আছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছুপারুস্তম জামাত-শিবির। তারাই প্রক্সি যুদ্ধে এজেন্ট হিসেবে ভেতর থেকে খেলছে। 

    আর এখন অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপি-জামাত-শিবির-হেফাজতের প্রতিনিধিরাই রয়েছে। তাদের জোটবদ্ধ সখ্য প্রথম থেকেই প্রকাশ্য। মৌলবাদী ভাবধারার "দিগন্ত টিভি" র সম্প্রচার অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। রাজধানী ঢাকা এরই মধ্যে ছেয়ে গেছে হিযবুত তাহেরির খেলাফত প্রতিষ্ঠার আহ্বানসহ কালো-কমলা পোস্টারে। 

    "এসবের সাথে তাঁরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরও বিরোধিতা করতে পারবেন কিনা সেটা অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে যায়।"

    লেখক কী আটার কলের কাছে আখের রস চাইছেন? বাস্তবে যতই দিন গড়াচ্ছে ততোই সমীকরণ তীক্ষ্ণ হচ্ছে। ছাত্র-জনতার বেহাত আন্দোলনে জয়ী হয়েছে মার্কিন-পাকিস্তান পরাশক্তি, পিছু হটেছে ভারত ও চীনা পরাশক্তি। 

    খোদ দেশ পালানো পদত্যাগী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই স্পষ্ট বয়ানে দিয়েছেন মার্কিন আগ্রাসনের কথা ফাঁস, 
     
    'সেন্টমার্টিন-বঙ্গোপসাগরের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রেকে দিলে ক্ষমতায় টিকে থাকতাম: হাসিনা'

    https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/news-604641

    "কিন্তু তাঁরা যদি ‘৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা আবার ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেটাই হবে, আমার মতে, তাঁদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।"

    স্বপ্নে পান্তাভাত কেন? পোলাও-কোর্মা খাওয়াই ভালো! 
  • দীপ | 2402:3a80:196b:a539:678:5634:1232:***:*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৩:০৫536226
  • ইসলামীক মৌলবাদ সারা পৃথিবীর সমস্যা। ইরান, আফগানিস্তান আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি । বাংলাদেশ সেদিকেই যাচ্ছে! 
    এগুলো নিয়ে কথা বললেই ছাগুদের চর্মরোগ শুরু হয়! 
    তসলিমা দীর্ঘদিন ধরে এদের বিরুদ্ধে লিখে চলেছেন। তাই তসলিমার নাম শুনলেই এরা ক্ষেপে ওঠে!
  • দীপ | 2402:3a80:196b:a539:678:5634:1232:***:*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৩:০৭536227
  • ১৯৫১ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যা ৪.২১ কোটি, হিন্দু ৯২ লক্ষ। মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ।
    ২০২২ সালে বর্তমান বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬.৫ কোটি, হিন্দু ১.৩১ কোটি। মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ।
     অর্থাৎ বাহাত্তর বছরে মোট জনসংখ্যা বেড়েছে ৩.৮ গুণ; কিন্তু হিন্দুদের জনসংখ্যা বেড়েছে ১.৫ গুণের‌ও কম!!! 
     
     
    এগুলো নিয়ে আলোচনা করলেই ছাগুদের চর্মরোগ শুরু হয়!
  • dc | 2a02:26f7:d6c0:680d:0:71c1:faab:***:*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৪:০৪536228
  • আরে দীপচাড্ডি ঠিক সুযোগ পেয়ে বমি করতে শুরু করেছে
  • dhus | 91.203.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৪:২০536229
  • ইসলামিক মৌলবাদ আবার কি? সব CIA আর RSS এর চক্রান্ত।
  • :-) | 2001:1b60:3:221:4134:101::***:*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৫৩536232
  • .ইসলামি মৌলবাদএর গুঁতোয় দিপচাড্ডির অর্শ হয়ে গেছে।
     ধুসচাড্ডি দিপচাড্ডি উড়িশ্যার কেস নিয়ে বানী দিবে না?
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৫৪536233
  • শ্রদ্ধেয় দীপবাবু
    আপনি সম্ভবত আমার বয়জ্যেষ্ঠ ও উচ্চশিক্ষিত, তবু আপনার উদ্দেশ্যে এই অধমের কিছু বক্তব্য আছে, ধৃষ্টতা মার্জনা করবেন।
    ১) আপনার দাবি, আপনি আর তসলিমা বাদে কেউ বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবি তোলে না। এ শুধু ভুল না, মিথ্যা দাবি। আপনি সম্ভবত সবসময় উত্তপ্ত থাকেন বলে পোস্টটা মনে দিয়ে পড়েননি, পড়লে দেখতে পেতেন, এই পোস্টেরই ২৪ নং পয়েন্টে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ চাওয়া হয়েছে। তাছাড়া গুরুর পাতায় অনেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে, আর আপনার জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি, এখানকার সিপিএমও অফিসিয়ালি স্টেটমেন্ট দিয়েছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষা করার পক্ষে। তাই, আপনি আর তসলিমা বাদে কেউ বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে চিন্তিত নয়, এই মিথ্যাটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার।
    ২) সবসময়ে সবকটা টইতেই দেখেছি, আপনি ভীষণ মারমুখী ভঙ্গিতে মন্তব্য করেন। সবসময় মনে হয় যেন আপনি তপ্ত চাটুর মত ফুটছেন। এটা কেন? কাউকে কি মিষ্টি করেও দু কথা বলা যায় না? সবাইকে কি তেড়ে তেড়ে গিয়ে মন্তব্য করতে হবে? এই মারমুখী ভঙ্গির জন্য আপনার মতের সাথে কিছুটা একমত হওয়া লোকও ভয়ে আপনার বিপরীত দলে চলে যেতে পারে না কি? 
    ৩) আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হয়, আপনি ছাড়া সবাই ভণ্ড, সবাই মেকি ধর্মনিরপেক্ষ ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আপনি বিপরীত পক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে নিজেই ফয়সালা করে ফেললেন কে কীরকম, এটা অগনতান্ত্রিক চেতনা নয় কি? আর অগণতান্ত্রিক চেতনা থাকলে বাংলাদেশের হাসিনার কীরকম ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়, আমরা তো দেখলামই। তাই কারও সাথে দ্বিমত হলে তাঁর দিকে মারমুখী ভঙ্গিতে তেড়ে না গিয়ে তাঁকে বাড়িতে ডাকুন, তাঁর সাথে খোলাখুলি বসে আলোচনা করুন। সাথে আমার মত নিরপেক্ষ কাউকেও ডাকুন। তারপর সবাই মিলে আলোচনা করব, কে ঠিক, কে ভুল। সঙ্গে কিছু খানাপিনাও রাখবেন। আমার বেশি বায়নাক্কা নেই, মোগলাই আর পাঁঠার মাংসের ঝোল হলেই হবে। 
    দীপশিখা জ্বলুক, আমরাও চাই, কিন্তু সেই দীপশিখা যেন লঙ্কাকাণ্ড না বাঁধায়, সেটাও তো দেখতে হবে, তাই না? 
  • হে হে হে হে হে হে | 185.246.***.*** | ১২ আগস্ট ২০২৪ ১৫:১০536234
  • এবেরে দিপচাড্ডি ধ্যাদ্ধ্যাড় করে ইস্কিরিনশট চিপকে খিস্তাবে আমায় য্যাকন অমনি করে ত্যাকন আপনি কুতায় ছ্যালেন? কিন্তুক দিপচাড্ডিকে জিগ্যেস কর তসলিমাকে তাড়ানোর সময় তুমি কি কচ্চিলে বাপ? মিছিলে গেছিলে? কাগজে চিঠি লিকেছিলে? অন্যকিছু? ত্যাকন আর উত্তর নেইকো। আবার খিস্তাবে।
    তবে হ্যাঁ কোন দোকানের সাপ্লাই কেনে সেটা জানলে ভাল। কতটা টানলে সব্বদা চড়ে থাকে এইটে জানা যেত।
  • upal mukhopadhyay | ১৩ আগস্ট ২০২৪ ১০:১৩536284
  • বাংলাদেশকে  কী  করিতে  হইবে-  অংশটা  বাদ  দিলে  দারুণ  লেখা। 
  • Debu | 2603:8001:3300:691b:6a5e:7962:7720:***:*** | ১৪ আগস্ট ২০২৪ ২২:১৫536390
  • "X"
    "বাঙালগুলো দাবার বোড়ে - খেলাটা হচ্ছে আম্রিগা + চীন+ পাকিস্থান বনাম ভারতের মধ্যে
     খেলা এখনও অনেক বাকি ".
    একদম ঠিক বেশী কিছু বলতে চাইনা ,স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য কে ধন্যবাদ  ডকুমেন্টেশন টার জন্য জনসাধারণের জন্য এটাই খবর। 
    এবার দেখুন ভারত কি খেলবে  (ভারত এখন ভাল দাবা খেলে )
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন