এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • বঙ্কিমের বাঙ্গালা : দেড়শ বছর পর একটা শিক্ষাসফর

    Irfanur Rahman Rafin লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৭ জুন ২০২২ | ৪২১৩ বার পঠিত
  • ১৮৭৪ সাল থেকে ১৮৮৪ সালের মধ্যে বঙ্গদর্শন ও প্রচার‘এ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলার ইতিহাস বিষয়ে চারটি প্রবন্ধ লেখেন। সম্প্রতি সেগুলো জড়ো করে প্রকাশ করেছে স্পার্ক। প্রবন্ধ চারটি, যথাক্রমে —
     
    ১ বাঙ্গালার ইতিহাস
    ২ বাঙ্গালার কলঙ্ক
    ৩ বাঙ্গালার ইতিহাস সম্বন্ধে কয়েকটি কথা
    ৪ বাঙ্গালার ইতিহাসের ভগ্নাংশ কামরূপ-রঙ্গপুর
     
    ততদিনে পলাশী কাণ্ডের শতবর্ষ পার হয়ে গেছে। সিপাহীদের পরাজয়ে অবসান ঘটেছে মুঘল আমলের, আর ভারতবর্ষে শুরু হয়েছে মহারাণী ভিক্টোরিয়ার রাজত্ব। প্রবন্ধগুলো পড়ার সময় কনটেক্সটটা মাথায় রাখতে হবে।
     
    ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’ শুরু হয়েছে হাহাকারের মধ্য দিয়ে। সকলেরই ইতিহাস আছে, শুধু বাংলার ইতিহাস নাই। এর কারণ বঙ্কিম খুঁজে পেয়েছেন ‘দেব ভক্তিতে’, আর ‘গর্বের অভাবে’; বাঙালি তাঁর নজরে ‘হতভাগ্য জাতিদিগের মধ্যে অগ্রগণ্য’।
     
    উদ্যমী বঙ্কিম তাই ‘বাঙ্গালার ইতিহাসের উদ্ধার’-এ নেমেছেন। সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন ‘বাবু’ রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়। একটা ‘বাল্যপাঠ্য পুস্তক’ নিয়ে।
     
    মুখোপাধ্যায়ের সহযোগিতা নিয়ে চট্টোপাধ্যায় যে-ইতিহাস উদ্ধার করলেন, তার সারকথা হল এই, এককালে সিংহল-যবদ্বীপ-বালিদ্বীপ সব বাঙালির উপনিবেশ ছিল। এমনকি উত্তর ভারতেও ছিল এই জাতির উপনিবেশ। তাই তারা ‘ক্ষুদ্র জাতি’ হতে পারে না।
     
    কিন্তু কেনো বঙ্কিমের এত বড় হওয়ার সাধ? অনুমান করা যায়, ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনজাত হীনম্মন্যতা! বাঙালি যে ব্রিটিশের চেয়ে কম কিছু নয়, দখলদারিত্বে সমান সমান, তা প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে গেছিলেন বঙ্কিম।
     
    পাঠানদের ব্যাপারে আপাতদৃষ্টিতে অপেক্ষাকৃত উদারতা দেখিয়েছেন তিনি। স্বাধীন পাঠানদের শাসনকে বাঙালির জন্য আশীর্বাদ ভেবেছেন। যথার্থই দাবি করেছেন, এটা বাংলার শিল্প সাহিত্যের উৎকর্ষের কাল ছিল, স্থাপত্যেও উৎকর্ষের সাক্ষ্য দেয় গৌড় বা পাণ্ডুয়া।
     
    কিন্তু এই উদারতার পেছনে আসলে কী আছে? সেটা বুঝতে হলে পরাধীনতা বলতে বঙ্কিম কী বুঝতেন সেটা আগে বুঝতে হবে আমাদের! তো, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পরাধীনতা সম্পর্কে ঘোষণা করছেন —

    “রাজা ভিনজাতীয় হইলেই রাজ্যকে পরাধীন বলিতে পারা যায় না।”

    কেন যায় না?

    “সে সময়ের জমিদারদিগের যেরূপ বর্ণনা দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাতে তাঁহাদিগকেই রাজা বলিয়া বোধ হয়; তাঁহারা করদ ছিলেন মাত্র।”

    বঙ্কিমের বিশ্বাসে বাংলায় পাঠান শাসনেও যেহেতু স্থানীয় জমিদাররাই (এদের ধর্মীয় পরিচয় একটু পরেই পাব) রাজা ছিলেন, তাই মুঘল সম্রাট জালালুদ্দিন আকবরের অধীনস্ত হওয়ার সময় থেকেই বাংলার প্রকৃত পরাধীনতার শুরু, এই রায় দিচ্ছেন তিনি। আবেগমথিত ভাষায় মুঘলদের অর্থনৈতিক শোষণের সমালোচনা করছেন, যদিও তারচে শতগুণ বেশি শোষণ করা ব্রিটিশদের ব্যাপারে নিশ্চুপ থেকেছেন। বলছেন, “মোগলই আমাদের শত্রু, পাঠানই আমাদের মিত্র”

    এই ‘আমরা’ কারা?

    দ্বিতীয় প্রবন্ধ ‘বাঙ্গালার কলঙ্ক’-এ এর জবাব পাই।

    এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি এরকম দুটি লাইন,

    “… বাঙ্গালি মুসলমান কর্তৃক পরাজিত হইয়াছিল…”

    “… বাঙ্গালি পাঁচশত বৎসর মুসলমানের অধীন ছিল…”

    চতুর্থ প্রবন্ধ ‘বাঙ্গালার ইতিহাসের ভগ্নাংশ কামরূপ-রঙ্গপুর’-এ দেখছি,

    “বাঙ্গালির দেশ, মুসলমানেরা কখনোই একচ্ছত্রাধীন করিতে পারেন নাই।”

    পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, বঙ্কিমের বোধে এই ‘আমরা’ হচ্ছেন বর্ণ হিন্দুরা, ‘বাঙ্গালি’ বলে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আসলে এঁদেরকেই বুঝিয়েছেন।

    তবু কারো মনে যদি সন্দেহ রয়ে যায়, সেটি দূর করে দেবে তৃতীয় প্রবন্ধ।

    এখানে এসে বাঙালিকে নিম্নরূপে সংজ্ঞায়িত করছেন বঙ্কিম,

    “আত্মজাতিগৌরবান্ধ, মিথ্যাবাদী, হিন্দুদেষী মুসলমানের কথা যে বিচার না করিয়া ইতিহাস বলিয়া গণ্য করে, সে বাঙ্গালি নয়।”

    ঐতিহাসিক মিনহাজের সমালোচনা করছেন বঙ্কিম এই ভাষায়,

    “… সেই গোহত্যাকারী, ক্ষৌরিতচিকুর মুসলমানের স্বকপোলকল্পনের উপর তোমার বিশ্বাস।”

    বঙ্কিম যে বাঙালি বলতে বর্ণ হিন্দুদেরকে বুঝতেন, মুসলমানদেরকে ভাবতেন তাদের ওপর উৎপীড়ন চালান ভিনজাতি, তার পক্ষে আর কোনো প্রমাণ পেশ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। অবশ্য পাঠানরা ভিনজাতি হলেও বঙ্কিমের নজরে মিত্র, কারণ তাঁর বিশ্বাসে এঁরা হিন্দু জমিদারদের (বঙ্কিমের ভাষায় ‘রাজা’) কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন নি, এই ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন মুঘলরা। বঙ্কিমের বিশ্বাস ভুল, মুঘল শাসনেও প্রশাসনিক উচ্চপদগুলো যে বর্ণ হিন্দুদেরই দখলে ছিল, আজকে তা সর্বজনস্বীকৃত ঐতিহাসিক সত্য।

    শুধু জাতিধারণায় না, বঙ্কিমের ভাষাধারণায়ও ঝামেলা আছে।

    দেখতে পাই তৃতীয় প্রবন্ধের এক জায়গায় লিখেছেন,

    “বাঙ্গালা ভাষা আত্মপ্রসূতা নহে। সকলে শুনিয়াছি, তিনি সংস্কৃতের কন্যা; কুললক্ষণ কথায় কথায় পরিস্ফুট। কেহ কেহ বলেন, সংস্কৃতের দৌহিত্রীমাত্র। প্রাকৃতই এঁর মাতা। কথাটায় আমার বড়ো সন্দেহ আছে। হিন্দি, মারহাট্টা প্রভৃতি সংস্কৃতের দৌহিত্রী হইলে হইতে পারে, কিন্তু বাঙ্গালা যেন সংস্কৃতের কন্যা বলিয়া বোধ হয়।”

    কেন ‘বড়ো সন্দেহ’ আছে বাংলার প্রাকৃতকন্যা হওয়ায়? কেন ‘বোধ হয়’? ভাষাতাত্ত্বিক কারণ দর্শালেও সেটাই কি আসল কারণ?

    উনিশশতকে রেসিস্ট ইওরোপিয়ানরা নিজেদেরকে ‘আরইয়ান’ মনে করত। জার্মান ম্যাক্স মুলার সেসময় একটা প্যাঁচ লাগান। আদি হিন্দুশাস্ত্রে আর্য শব্দটি আবিষ্কার করেন তিনি, এবং সিদ্ধান্ত টানেন, এই আর্য হচ্ছে সংস্কৃতে ইওরোপের আরইয়ান‘র প্রতিশব্দ। সংস্কৃতকে একটি আর্য ভাষা মনে করা হয়। প্রাকৃত জনসাধারণের ভাষা। তাই বঙ্কিম বাংলাকে বানাতে চেয়েছেন সংস্কৃতের কন্যা। উদ্দেশ্যটা অত্যন্ত পরিষ্কার, জাতির মত ভাষা প্রশ্নেও ব্রিটিশকে ঠেস দেয়া, যেন সাহেবদের সমীহ আদায়ে সুবিধা হয় বাবুদের।

    তবে মুসলমানদের সবাই যে বহিরাগত নন, সেটা স্বীকার করে নিচ্ছেন বঙ্কিম, কৃষিজীবী মুসলমানকে ‘দেশীয় লোক’-এর মর্যাদা দিচ্ছেন।

    তৃতীয় প্রবন্ধের একেবারে শেষে এসে লিখছেন তিনি,

    “এখন তো দেখিতে পাই, বাঙ্গালার অর্ধেক লোক মুসলমান। ইহার অধিকাংশই যে ভিন্ন দেশ হইতে আগত মুসলমানদিগের সন্তান নয়, তাহা সহজেই বুঝা যায়। কেননা ইহারা অধিকাংশই নিম্নশ্রেণির লোক — কৃষিজীবী। […] দেশীয় লোকের অর্ধেক অংশ কবে মুসলমান হইল? কেন স্বধর্ম ত্যাগ করিল? কেন মুসলমান হইল? কোন জাতীয়েরা মুসলমান হইয়াছে?”

    বঙ্কিম এই প্রবন্ধ শেষ করেছেন এই বলে, “বাঙ্গালার ইতিহাসে ইহার অপেক্ষা গুরুতর তত্ত্ব আর নাই।” এই লাইনটা পড়ে রীতিমতো কৌতূহল জাগে! বাংলার ইতিহাসে অনুসন্ধান করার মত চিত্তাকর্ষক বিষয়ের অভাব নাই (একটা বিশাল তালিকা বঙ্কিম নিজেই দিয়েছেন এই প্রবন্ধটিতে), তার মধ্যে মুসলমানদের এই ‘স্বধর্ম ত্যাগ’-ই কেন সবচে ‘গুরুতর তত্ত্ব’ মনে হল এই সৃষ্টিশীল কথাসাহিত্যিকের কাছে?

    চতুর্থ প্রবন্ধ মূলত কামরূপ আর রঙ্গপুর নিয়ে। এই প্রবন্ধে বঙ্কিম একটা কৌতূহলউদ্দীপক দাবি তুলেছেন৷ সেটা হল ঐতিহাসিকভাবে বাঙ্গালা অখণ্ড ছিল না। ভিন্ন ভিন্ন ‘অনার্য জাতির’ দেশের সমষ্টি ছিল। এই দেশগুলোকে জোড়া লাগিয়ে বাঙ্গালা বানাল কারা? বঙ্কিমের বিশ্বাসে, ‘আর্য’-রা। তারা ‘এক ধর্ম, এক ভাষার’ জোরে সবাইকে এক করে ‘আধুনিক বাঙ্গালায়’ পরিণত করল।

    এই শেষ দাবিটা বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আজকের বাংলাদেশকে এক ধর্ম (ইসলাম) আর এক ভাষার (বাংলা) দেশ হিশাবে দেখার রাষ্ট্রপ্রকল্প খুব প্রবলভাবেই হাজির আছে। ইন্ডিয়াতেও ক্ষমতাসীন দলের শ্লোগান ‘হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তানে’ দেশটিকে এক ধর্ম (হিন্দুধর্ম) আর এক ভাষার (হিন্দি) হিশাবে দেখার রাষ্ট্রপ্রকল্প বর্তমান, যার আছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ওপর পড়বে না, এমন আশা বাতুলতা। এই দুয়ের শেকড়ই আমরা পাচ্ছি বঙ্কিমের রাষ্ট্রচিন্তায়। তাঁর ইতিহাস ভাবনায়। যা আবার তৈরি হয়েছে কলোনিয়াল কলকাতায় বসে। দুর্ভাগ্যবশত আমরা এখনো ‘বঙ্কিমের বাঙ্গালা’-য় বাস করছি, ধর্ম আর জাতি নিয়ে আমাদের আধিপত্যশীল ভাবনা রেসিস্টই রয়ে গেছে।
     
    আজকে আমরা অনেকেই গণতন্ত্রের কথা বলে থাকি। ধর্ম আর ভাষা প্রশ্নে এর মানে কী? বহুত্বকে ধারণ করা। এক দেশে বহু জাতির সহাবস্থানের পক্ষ নেয়া। ‘বঙ্কিমের বাঙ্গালা’-য় এই গণতন্ত্র পাওয়া যাবে না। সীমান্তের দুইদিকেই রেসিস্ট রাষ্ট্রচিন্তা প্রত্যাখ্যান করতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্রের দিকে এক কদম আগাব আমরা।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৭ জুন ২০২২ | ৪২১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2401:4900:3a01:c698:a4fe:553b:9547:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ০০:০৫508593
  • বঙ্কিম তো অনেক কিছুই লিখেছেন। সবকিছু নিয়েই তথ্যনিষ্ঠ আলোচনা প্রয়োজন।
    ইসলাম ও ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদ এক নয়। ইসলাম ধর্ম, ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদ অপরের ধর্মস্থান ধ্বংস করে, লুণ্ঠন করে বলপূর্বক ধর্মান্তরকরণের মাধ্যমে আধিপত্য সৃষ্টির অপপ্রয়াস। বঙ্কিম এই অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্রোধ প্রকাশ করেছেন, তাঁর এই ক্রোধ খুবই স্বাভাবিক।
  • দীপ | 2401:4900:3a01:c698:a4fe:553b:9547:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ০০:১০508594
  • আর বঙ্কিম যোগ্য ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা প্রদর্শনে কখনোই পরাঙ্মুখ নন। তাই ওসমান তাঁর কাছে পাঠানকুলতিলক, আয়েশা রমণীরত্নকুলস্বরূপা! এক‌ইভাবে রাজসিংহ উপন্যাসে মোবারক খাঁ উদারহৃদয় মহাবীর। পণ্ডিত মহোদয় বোধহয় এগুলো পড়ে ওঠার সময় পাননি!
  • দীপ | 2401:4900:3a01:c698:a4fe:553b:9547:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ০০:১২508595
  • "ফকির বলিল, বাবা! শুনিতে পাই, তুমি হিন্দুরাজ্য স্থাপন করিতে আসিয়াছ, কিন্তু অত দেশাচারের বশীভূত হ‌ইলে, তোমার হিন্দুরাজ্য সংস্থাপন করা হ‌ইবে না। তুমি যদি হিন্দু মুসলমানে সমান না দেখ, তবে এই হিন্দু মুসলমানের দেশে তুমি রাজ্যরক্ষা করিতে পারিবে না। তোমার রাজ্য‌ও ধর্মরাজ্য না হ‌ইয়া পাপের রাজ্য হ‌ইবে। সেই একজন‌ই হিন্দু মুসলমান সৃষ্টি করিয়াছেন। যাহাকে হিন্দু করিয়াছেন, তিনিই করিয়াছেন; যাহাকে মুসলমান করিয়াছেন, তিনিই করিয়াছেন। উভয়ে তাঁহার সন্তান, উভয়ে তোমার প্রজা হ‌ইবে। অত‌এব দেশাচারের বশীভূত হ‌ইয়া প্রভেদ করিও না। প্রজায় প্রজায় প্রভেদ পাপ। পাপের রাজ্য থাকে না।"
     
    - ("সীতারাম" উপন্যাস, বঙ্কিমচন্দ্র)
     
    এটাও কিন্তু বঙ্কিমের লেখা! প্রসঙ্গবিচ্ছিন্ন উদ্ধৃতি দিয়ে বঙ্কিমের অসামান্য প্রতিভার মূল্যায়ন সম্ভব নয়! তার জন্য বিস্তৃত আলোচনা প্রয়োজন! লেখক মনে হয় সেটাতে ইচ্ছুক নন।
  • দীপ | 2401:4900:3a01:c698:a4fe:553b:9547:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ০০:২৪508596
  • আর আর্য-অনার্য থিয়োরি এখন অচল, সুতরাং ওতে কিছু লাভ হবেনা।
     
    তা লেখকের বক্তব্য কি? পাঠান, মোগল আমলে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার হয়নি? মন্দির আক্রমণ হয়নি? বলপূর্বক ধর্মান্তরকরণ হয়নি? নাকি সেগুলো বললেই হিন্দুত্ববাদ এসে যায়?
  • দীপ | 2401:4900:3a01:c698:a4fe:553b:9547:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ০০:৪৩508597
  • পণ্ডিত কি বঙ্কিমের কমলাকান্তের দপ্তর, সাম্য, বঙ্গদেশের কৃষক প্রভৃতি গ্রন্থ পড়েছেন? না কি সেগুলোতে ঠিক সুবিধা হবেনা? 
    মহাভারতে বঙ্গদেশের হস্তীবাহিনীর উল্লেখ আছে। গ্রীক ঐতিহাসিক দের বর্ণনায় গঙ্গারিডি জনপদের বিপুল হস্তীবাহিনী ও পরাক্রমের উল্লেখ আছে। এই গঙ্গারিডি দক্ষিণবঙ্গ। পালবংশের আধিপত্য কনৌজ অবধি বিস্তৃত ছিল। বাংলার ব্যবসা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশে বিস্তৃত ছিল। এর কোনোটাই ভুল নয়। 
    লেখকের আগে ইতিহাস ঠিকমতো পড়া প্রয়োজন।
  • animesh | 2405:8100:8000:5ca1::534:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ০১:৩৫508600
  • চমৎকার লিখেছেন ইরফানুর। ধন্যবাদ।
    এই বইটি কোথায় পাওয়া যাবে যদি জানান খুব সুবিধা হয়। স্পার্ক কি কোনো প্রকাশক। অনলাইনে পাওয়া যাবে।
  • ,দীপ | 2401:4900:3a26:8678:187c:e5b0:b944:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ১০:০১508604
  • দীপ | 2401:4900:3a26:8678:187c:e5b0:b944:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ১০:০৪508605
  • দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ নিয়ে মহাকবির অসামান্য সৃষ্টি। লেখকের একটু পড়াশোনা প্রয়োজন।
  • দীপ | 2401:4900:3a26:8678:187c:e5b0:b944:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ১০:২৯508608
  • আর বঙ্গদেশের কৃষক প্রবন্ধে বঙ্কিম হাসিম শেখ ও রামা কৈবর্তের কথা অত্যন্ত সহমর্মিতা র সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। মনে করিয়ে দিয়েছেন এরাই বাংলার যথার্থ প্রতিনিধি, এদের উন্নতি না হলে দেশের কোনো উন্নতি নেই! মুষ্টিমেয় শিক্ষিত লোকের উন্নতি কখনোই দেশের উন্নতি নয়! 
    লেখক মনে হয়, এসব কিছুই পড়েন নি!
  • দীপ | 2401:4900:3a26:8678:187c:e5b0:b944:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ১০:৪০508609
  • আর উনিশ শতকের শেষ ও বিংশ শতকের শুরুতে বাংলাতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও সশস্ত্র বিপ্লবের অভ্যুদয়ের পিছনে বঙ্কিমের  প্রভাব অন্যতম কারণ। ব্রিটিশ পুলিশের রিপোর্টেই একথা বলা হয়েছে।
    লেখক এগুলো কিছুই পড়েননি!
  • দীপ | 2401:4900:3a26:8678:187c:e5b0:b944:***:*** | ০৮ জুন ২০২২ ১০:৪৫508612
  • ‘দুই চারিজন অতি ধনবান ব্যক্তির পরিবর্তে ছয় কোটি সুখী প্রজা’ দেশের মঙ্গল এবং শ্রীবৃদ্ধিকে সূচিত করবে। এবং এই ছয় কোটি প্রজার মধ্যে তিন কোটি হাসিম শেখ আর তিন কোটি রামা কৈবর্ত্ত।’
    (বঙ্গদেশের কৃষক)  
     
    ‘জীবের শত্রু জীব; মনুষ্যের শত্রু মনুষ্য ; বাঙ্গালী কৃষকের শত্রু বাঙ্গালী ভূস্বামী। ’
    (বঙ্গদেশের কৃষক)  
     
    ‘ মনুষ্যে মনুষ্যে সমান। কিন্তু এ কথার এমত উদ্দেশ্য নহে যে, সকল অবস্থার সকল মনুষ্যই, সকল অবস্থার সকল মনুষ্যের সঙ্গে সমান। নৈসর্গিক তারতম্য আছে; কেহ দুর্ব্বল, কেহ বলিষ্ঠ; কেহ বুদ্ধিমান্‌, কেহ বুদ্ধিহীন। নৈসর্গিক তারতম্যে সামাজিক তারতম্য অবশ্য ঘটিবে; যে বুদ্ধিমান্‌ এবং বলিষ্ঠ, সে আজ্ঞাদাতা; যে বুদ্ধিহীন এবং দুর্ব্বল, সে আজ্ঞাকারী অবশ্য হইবে। রুসোও এ কথা স্বীকার করিয়াছেন। কিন্তু সাম্যতত্ত্বের তাৎপর্য্য এই যে, সামাজিক বৈষম্য, নৈসর্গিক বৈষম্যের ফল, তাহার অতিরিক্ত বৈষম্য ন্যায়বিরুদ্ধ, এবং মনুষ্যজাতির অনিষ্টকর। যে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে, তাহার অনেকগুলি এইরূপ অপ্রাকৃত বৈষম্যের কারণ। সেই ব্যবস্থাগুলির সংশোধন না হইলে, মনুষ্যজাতির প্রকৃত উন্নতি নাই। ….. পৃথিবীর সুখে তোমার যে অধিকার, নীচকুলোৎপন্নেরও সেই অধিকার। তাহার সুখের বিঘ্নকারী হইও না; মনে থাকে যেন যে, সেও তোমার ভাই – তোমার সমকক্ষ। যিনি ন্যায়বিরুদ্ধ আইনের দোষে পিতৃসম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন বলিয়া, দোর্দ্দণ্ড প্রচণ্ড প্রতাপান্বিত মহারাজাধিরাজ প্রভৃতি উপাধি ধারণ করেন, তাঁহারও যেন স্মরণ থাকে যে, বঙ্গদেশের কৃষক পরাণ মণ্ডল তাঁহার সমকক্ষ, এবং তাঁহার ভ্রাতা। জন্ম, দোষগুণের অধীন নহে। তাহার অন্য কোন দোষ নাই। যে সম্পত্তি তিনি একা ভোগ করিতেছেন, পরাণ মণ্ডলও তাহার ন্যায়সঙ্গত অধিকারী।’
     (সাম্য, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)  
     
    ‘ মনুষ্যে মনুষ্যে সমানাধিকারবিশিষ্ট। স্ত্রীগণও মনুষ্যজাতি, অতএব স্ত্রীগণও পুরুষের তুল্য অধিকারশালিনী। যে যে কার্য্যে পুরুষের অধিকার আছে, স্ত্রীগণেরও সেই সেই কার্য্যে অধিকার থাকা ন্যায়সঙ্গত। কেন থাকিবে না?
    ........................
    ….লোকে সুশিক্ষিত হইলে, বিশেষতঃ স্ত্রীগণ সুশিক্ষিতা হইলে, তাহারা অনায়াসেই গৃহমধ্যে গুপ্ত থাকার পদ্ধতি অতিক্রম করিতে পারিবে। শিক্ষা থাকিলেই, অর্থোপার্জ্জনে নারীগণের ক্ষমতা জন্মিবে। এবং এ দেশী স্ত্রীপুরুষ সকল প্রকার বিদ্যায় সুশিক্ষিত হইলে, বিদেশী ব্যবসায়ী, বিদেশী শিল্পী বা বিদেশী বণিক্‌, তাহাদিগের অন্ন কাড়িয়া লইতে পারিবে না। শিক্ষাই সকল প্রকার সামাজিক অমঙ্গল নিবারণের উপায়।’
    (সাম্য, পঞ্চম পরিচ্ছেদ)  
     
     
     
    ‘ বাবা। শুনিতে পাই, তুমি হিন্দুরাজ্য স্থাপন করিতে আসিয়াছ, কিন্তু অত দেশাচারের বশীভূত হইলে, তোমার হিন্দুরাজ্য স্থাপন করা হইবে না। তুমি যদি হিন্দু-মুসলমান সমান না দেখ, তবে এই হিন্দু- মুসলমানের দেশে তুমি রাজ্য রক্ষা করিতে পারিবে না। তোমার রাজ্যও ধর্মরাজ্য না হইয়া পাপের রাজ্য হইবে। সেই একজনই হিন্দু-মুসলমানকে সৃষ্টি করিয়াছেন; যাহাকে হিন্দু করিয়াছেন তিনিই করিয়াছেন, যাহাকে মুসলমান করিয়াছেন, সেও তিনিই করিয়াছেন। উভয়েই তাঁহার সন্তান; উভয়েই তোমার প্রজা হইবে। অতএব দেশাচারের বশীভূত হইয়া প্রভেদ করিও না। প্রজায় প্রজায় প্রভেদ পাপ। পাপের রাজ্য থাকে না।' 
    (সীতারাম) 
     
    রক্ষণশীল হিন্দুত্ববাদী বঙ্কিমের কিছু লেখা!
  • r2h | 134.238.***.*** | ০৮ জুন ২০২২ ১১:৫৪508614
  • বঙ্কিম বা তাঁর সময়ের চিন্তাবিদদের এই ধারায় সমালোচনা বা তাঁদের রচনায় দিশা খোঁজা - দুটোতেই আমার মনে হয় সময়কে অস্বীকার করা হয়।

    জাতীয়তাবাদ শীর্ষক পাশ্চাত্য ধারনাটি কি তখন ভারতীয় উপমহাদেশে পরিস্কারভাবে দানা বেঁধেছিল? না হয়ে থাকলে আইডেন্টিটির খোঁজার ক্ষেত্রে ধর্মের একটা বড় ভূমিকা থাকবে সেটা খুবই স্বাভাবিক। মানবসভ্যতা চিরকালই আমরা-ওরা-র বৃত্তে ঘুরেছে, ক'দিন আগেও মোগলরা ছিল ওরা, আর মোগলদের সঙ্গে যারা ধর্ম শেয়ার করছে তারা ধর্মগতভাবে ওরা, আবার ভাষা, অঞ্চল, জীবনযাত্রার দিকে আমরা। শুধু মুসলমান নয়, নিম্নবর্ণের 'হিন্দু'রাও সদ্য আয়সাপায়ারিং ইংরেজি শেখা বাঙ্গালী ভদ্রলোকের কাছে 'আমরা' না। 'হিন্দু' ব্যাপারাটাই কি তখনো খুব আজকের মত?  
    ইংরেজরা আসার পর একদল নতুন ওরা, আবার ইস্ট ইন্ডিয়া কোং থেকে সরকারি শাসনে গিয়ে কী হবে খুব পরিস্কার তা না। আবার ধর্মীয় আইডেন্টিটির জন্যে শাসকগোষ্ঠী বহুকালই ওরা। ঘরের কাছে বিহার উড়িষ্যাও কী বাঙালীর কাছে স্বদেশী ছিল, যে দিল্লির মোগল শাসক 'আমরা' হবে?

    তো, চিন্তানায়ক বা চাড্ডি - আজকের কোন খোপেই উনবিংশ শতকের ভারতীয় বাঙালী চিন্তাবিদকে ফেলা, মনে হয় না ঠিক।

    নতুন কিছু না যদিও, এসবই জানা কথা।
  • r2h | 134.238.***.*** | ০৮ জুন ২০২২ ১২:০৮508615
  • এমনিতে '‘বঙ্কিমের বাঙ্গালা’-য় এই গণতন্ত্র পাওয়া যাবে না।' - এই কথাটার সঙ্গে আমি দ্বিমত নই।

    আমার একটাই জিনিস যোগ করার - সেরকম কিছু পাওয়ার আশা করা উচিত না, আর না পেলেও উনি ঠিক সঙ্কীর্নচিত্ত ধর্মান্ধ হয়ে যান না। অল ইনক্লুসিভ গণতন্ত্র, গণতন্ত্রে একজন উচ্চশিক্ষিত ভদ্রলোক ও একজন নিরক্ষর চাবাগানের শ্রমিকের একই রকম পার্টিসিপেশন - এই ধারনাই কি তখন স্বীকৃত হয়েছিল? আজকের গণতন্ত্র বা সাম্যবাদের টেলর মেড দিশা বঙ্কিমের লেখায় খুঁজলে তাঁর ওপর প্রত্যাশার চাপ একটু বেশি হয়ে যায়।
  • Ranjan Roy | ০৯ জুন ২০২২ ০০:২৮508624
  • একজন মানুষের জীবনে (লেখকও মানুষ) অনেক পর্ব থাকে, চিন্তায় লেখায় বাঁক বদল হয়। বঙ্কিম হোন কী রবীন্দ্রনাথ।
    রবীন্দ্রনাথের 'সাগরিকা' বা 'বলিদ্বীপ' কবিতা নিঃসন্দেহে " দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ নিয়ে মহাকবির অসামান্য সৃষ্টি"। কিন্তু এতে "যোগাযোগ" হল "সাংস্কৃতিক" এবং "বাণিজ্যিক",  কোথাও উপনিবেশের কথা নেই তো! দীপ কি সত্যিই ওইসব দেশে ভারতের থুড়ি বাঙালীর উপনিবেশের তথ্য পেয়েছেন? 
    আর বঙ্কিমের লেখায় বলা হচ্ছে বাঙালীর উপনিবেশের কথা। অনেকটা কবি সত্যেন দত্তের সেই "আমাদেরই ছেলে বিজয় সিংহ লংকা করিয়া জয়" গোছের। ওটা যেমনই ভুল, বঙ্কিমের উপনিবেশের দাবিও।
    দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় যাঁরা বাণিজ্যিক বা সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন তাঁদের মধ্যে কেউ বাঙালী ছিলেন? যতদূর জানি বেশির ভাগ দক্ষিণ ভারতের চেট্টিয়ার বা শ্রেষ্ঠী।
       রবীন্দ্রনাথের গানে আছে "দেশ-বিদেশে বিতরিছ অন্ন" । রবীন্দ্রনাথের সমকালে  বা তার আগে মুঘল আমলে কি  ভারত থেকে দেশ বিদেশে অন্ন যেত? জানিনা, তেমন পড়াশুনো নেই, কিন্তু জানার ইচ্ছে আছে। 
     আমার মতে বঙ্কিমের শ্রেষ্ঠ কাজ 'রাজসিংহ' উপন্যাসে ঔরংজীবকে সাদা কালো ভিলেন না করে মানবিক গুণসম্পন্ন করে চিত্রিত করা, সেটা ইতিহাস হোক না হোক।
     
     কিন্তু আনন্দমঠের শেষ হচ্ছে মুসলমান রাজত্বের অবসানে ইংরেজ বিজয়ের গুণগানে। 
    "এক্ষণে ইংরেজ  দেশের রাজা হইয়াছে"  বলে মহাপুরুষের  সুশাসনের আশা এবং বিদ্রোহের দরকার নেই বলা। সন্ন্যাসী বিদ্রোহের শেষ ইংরেজের রাজ্যস্থাপনের প্রশংসায়!
    "সীতারাম" এর শেষের দিকে শ্রী'র আঁচল উড়াইয়া ক্রমাগত যুদ্ধের জন্য উস্কানিতে মুসলমানদের জন্যে যে  ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে ট্যাঁ হেট স্পীচের নামান্তর।
    অথচ এই বংকিমই গোড়ার দিকে আয়েষা অ ওসমান সৃষ্টি করেছেন।
    পরিশেষে আমি হুতোর বক্তব্যকে ডিটো দিচ্ছি। ক্লাসিকের বিচার অমন একমাত্রিক হতে পারে না।
    বংকিমের সময়ের সমাজচিন্তা রাষ্ট্রচিন্তাকে আজকের ফ্রেমে ধরলে ভুল হবে।  এভাবে বিচ্ছিন্ন কোটেশন দিয়ে কারও সম্বন্ধে শেষ রায় দেওয়া যায়না। তবে বিভিন্ন সময়ে কিছু ঝোঁকের দিকে আঙুল তোলা অবশ্যই যায়।
     
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:০৭508628
  • বিজয় সিংহ তো লঙ্কায় রাজত্ব স্থাপন করেছিলেন। বৌদ্ধ গ্রন্থেই তো এর উল্লেখ আছে। অবশ্য করেছিলেন বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে, সেটা কোনো বীরত্বের কাজ নয়।
    তবে পলাশীর যুদ্ধ, টিপুর পরাজয় সর্বত্র‌ই ইংরেজরা বিশ্বাসঘাতকদের সাহায্য নিয়েছে।
    আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় উপনিবেশ মূলত চোলদের দ্বারা স্থাপিত। তবে এদের সঙ্গে বাঙালী ব্যবসায়ী, বৌদ্ধ শ্রমণদের যোগাযোগ ছিল। সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়েছে। এই মুহূর্তে আমার কাছে তথ্য নেই, পরে দেখে বলছি।
    তবে আঙ্কোরভাটের বিষ্ণুমন্দির, বোরোবুদুরের বৌদ্ধস্তূপ ভারতীয় সংস্কৃতির নিদর্শন।
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:০৭508627
  • বিজয় সিংহ তো লঙ্কায় রাজত্ব স্থাপন করেছিলেন। বৌদ্ধ গ্রন্থেই তো এর উল্লেখ আছে। অবশ্য করেছিলেন বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে, সেটা কোনো বীরত্বের কাজ নয়।
    তবে পলাশীর যুদ্ধ, টিপুর পরাজয় সর্বত্র‌ই ইংরেজরা বিশ্বাসঘাতকদের সাহায্য নিয়েছে।
    আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় উপনিবেশ মূলত চোলদের দ্বারা স্থাপিত। তবে এদের সঙ্গে বাঙালী ব্যবসায়ী, বৌদ্ধ শ্রমণদের যোগাযোগ ছিল। সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়েছে। এই মুহূর্তে আমার কাছে তথ্য নেই, পরে দেখে বলছি।
    তবে আঙ্কোরভাটের বিষ্ণুমন্দির, বোরোবুদুরের বৌদ্ধস্তূপ ভারতীয় সংস্কৃতির নিদর্শন।
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:০৭508626
  • বিজয় সিংহ তো লঙ্কায় রাজত্ব স্থাপন করেছিলেন। বৌদ্ধ গ্রন্থেই তো এর উল্লেখ আছে। অবশ্য করেছিলেন বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে, সেটা কোনো বীরত্বের কাজ নয়।
    তবে পলাশীর যুদ্ধ, টিপুর পরাজয় সর্বত্র‌ই ইংরেজরা বিশ্বাসঘাতকদের সাহায্য নিয়েছে।
    আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় উপনিবেশ মূলত চোলদের দ্বারা স্থাপিত। তবে এদের সঙ্গে বাঙালী ব্যবসায়ী, বৌদ্ধ শ্রমণদের যোগাযোগ ছিল। সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়েছে। এই মুহূর্তে আমার কাছে তথ্য নেই, পরে দেখে বলছি।
    তবে আঙ্কোরভাটের বিষ্ণুমন্দির, বোরোবুদুরের বৌদ্ধস্তূপ ভারতীয় সংস্কৃতির নিদর্শন।
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:০৭508625
  • বিজয় সিংহ তো লঙ্কায় রাজত্ব স্থাপন করেছিলেন। বৌদ্ধ গ্রন্থেই তো এর উল্লেখ আছে। অবশ্য করেছিলেন বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে, সেটা কোনো বীরত্বের কাজ নয়।
    তবে পলাশীর যুদ্ধ, টিপুর পরাজয় সর্বত্র‌ই ইংরেজরা বিশ্বাসঘাতকদের সাহায্য নিয়েছে।
    আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় উপনিবেশ মূলত চোলদের দ্বারা স্থাপিত। তবে এদের সঙ্গে বাঙালী ব্যবসায়ী, বৌদ্ধ শ্রমণদের যোগাযোগ ছিল। সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়েছে। এই মুহূর্তে আমার কাছে তথ্য নেই, পরে দেখে বলছি।
    তবে আঙ্কোরভাটের বিষ্ণুমন্দির, বোরোবুদুরের বৌদ্ধস্তূপ ভারতীয় সংস্কৃতির নিদর্শন।
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:১৩508629

  •  
           আ‌‌নন্দমঠ উপন্যাস প্রথমে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। এটি কোনো ঐতিহাসিক গবেষণাগ্রন্থ নয়, এমনকি ঐতিহাসিক উপন্যাস‌ও নয়। বঙ্কিমের কথানুযায়ী ইতিহাস এখানে প্রেক্ষাপট মাত্র। ইতিহাসের কাঠামোটুকু গ্রহণ করে বঙ্কিম নিজস্ব সৃষ্টি করেছেন। সত্যানন্দ, মহেন্দ্র, কল্যাণী, ভবানন্দ, জীবানন্দ,শান্তি প্রভৃতি চরিত্রগুলি কাল্পনিক, এদের কোনো বাস্তবিক অস্তিত্ব নেই। খুব স্পষ্টভাবেই আমরা বলতে পারি ইতিহাসকে পটভূমি রেখে বঙ্কিম নিজস্ব কল্পনার সাহায্যে এই উপন্যাসের নির্মাণ করেছেন। ইতিহাসের মূল কাঠামো অক্ষুণ্ণ আছে, বাকিটা ঔপন্যাসিকের কল্পনা। যদি এটি গবেষণাগ্রন্থ হতো, তাহলে এই গ্রন্থে তথ্যপ্রমাণ সব সঠিক কিনা তানিয়ে বিচার করা হতো। কিন্তু উপন্যাসের ক্ষেত্রে এই বিশ্লেষণের কোনো অর্থ নেই। সেখানে সাহিত্যিক ঊৎকর্ষ‌ই মূল বিবেচ্য।
    আনন্দমঠ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট ১১৭৫-৭৬ বঙ্গাব্দের অবিভক্ত বাংলাদেশ। পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে পরিবর্তন হয়েছে। বাংলার নবাব হয়ে মীরজাফর মসনদে বসে আছে বটে, কিন্তু তার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। সমস্ত ক্ষমতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে। কিন্তু রাজ্যরক্ষায় ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে কোম্পানি বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়, একমাত্র খাজনা আদায় ছাড়া তাদের আর কোনো চিন্তা নেই। কোম্পানির দেওয়ান মহম্মদ রেজা খাঁ ভয়ানক অত্যাচারের মাধ্যমে খাজনা আদায় করে চলেছে, গ্রামে গ্রামে তার কর্মচারীরা সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করে খাজনা আদায়ে বদ্ধপরিকর। আর ক্ষমতাহীন নবাবের হাতে রয়েছে রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্ব, যে নিজেই মসনদে বসে আছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনুগ্রহে। বাংলার ইতিহাসের এই মৌষলকাল "দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা" নামে কুখ্যাত। এই চূড়ান্ত মাৎসন্যায়ের ফলশ্রুতি ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ও সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ। বঙ্কিম এই পটভূমি গ্রহণ করে আনন্দমঠ উপন্যাসের সৃষ্টি করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই দ্বৈতশাসন ব্যবস্থার উপর বঙ্কিমের তীব্র ক্রোধ প্রকাশিত হয়েছে। এবিষয়ে আরেকটি তথ্য স্পষ্টভাবে বলতে হবে। বাংলার তদানীন্তন নবাব বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি- উভয় শাসক‌ই বিজাতীয়। এদের কারো সাথেই বাঙালী সমাজের বিন্দুমাত্র যোগাযোগ নেই। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলাকে শোষণ করে চলেছে, নির্বোধ মীরজাফর ও তার সহচরেরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্রীড়নক। উভয় শক্তির হাতেই বাংলা পরাধীন। এই দুই শক্তির প্রতি বঙ্কিমের তীব্র ঘৃণা আনন্দমঠ উপন্যাসে প্রকাশিত হয়েছে। দুই অশুভ শক্তির হাত থেকে বঙ্কিম বাংলাদেশের মুক্তি চেয়েছেন। 
     
                                               
     
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:১৭508630
  • আনন্দমঠ বঙ্গদর্শনে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবার পর থেকেই ব্রিটিশ রাজশক্তি বঙ্কিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। কর্মক্ষেত্রে তাঁকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, এমনকি তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়। এইভাবে একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে বঙ্কিম তাঁর হিতৈষী ও শুভানুধ্যায়ীদের পরামর্শে উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ শাসকদের সঙ্গে দেখা করে বুঝিয়ে বলেন যে আনন্দমঠ নবাবী আমলের অরাজক অবস্থা তুলে ধরেছে। এই উপন্যাসে ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করা হয়নি, বরং ব্রিটিশ শাসনের প্রশংসা করা হয়েছে। এই কথার সত্যতা প্রতিপন্ন করতে বঙ্কিম তাঁর গ্রন্থে বহু পরিবর্তন করেন। উপন্যাসের নামভূমিকায় তিনি লেখেন - রাজবিদ্রোহ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আত্মপীড়ন মাত্র, আর সন্তানদল (সত্যানন্দের অনুগামী বিদ্রোহীদল) সেই আত্মপীড়নে অংশ নিয়েছে। আর ইংরেজ রাজত্বে বাংলাদেশে সুখশান্তি পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
    ভূমিকার পথ অনুসরণ করে বঙ্কিম মূল উপন্যাসেও বেশ কিছু পরিবর্তন করেন। 'ইংরাজ' শব্দের পরিবর্তে 'যবন' বা 'নেড়ে' শব্দ প্রয়োগ করেন। ইংরাজকে আক্রমণের জায়গায় যবন বা নেড়েকে আক্রমণের কথা বলা হয়। উপন্যাসের মধ্যে বলা হয়, তখন (ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময়) অনিয়মের দিন, আর বর্তমানে অর্থাৎ ইংরেজ আমলে নিয়মের দিন। উপন্যাসের বিভিন্ন জায়গায় ওয়ারেন্ হেস্টিংসকে প্রশংসা করা হয়। এই পরিবর্তনগুলির মাধ্যমে বোঝানো হয় উপন্যাসে ব্রিটিশ শাসনকে প্রশংসা করা হয়েছে।
    উপসংহারে বঙ্কিম ঘটনাপ্রবাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধন করেন। প্রথম সংস্করণে বঙ্কিম এমনভাবে উপন্যাস শেষ করেন তাতে বোঝা যায় বঙ্কিম এই উপন্যাসের পরবর্তী sequel রচনা করতে চেয়েছিলেন। শ্রীশচন্দ্র মজুমদারের স্মৃতিচারণা থেকেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। বঙ্কিম তাঁকে বলেছিলেন তাঁর ইচ্ছা ছিল ১৮৫৭-৫৮ সালের মহাবিদ্রোহ নিয়ে উপন্যাস রচনা করবেন যাঁর কেন্দ্রীয় চরিত্র হবেন রানী লক্ষ্মীবাঈ। কিন্তু আনন্দমঠ প্রকাশিত হবার পর ব্রিটিশ সরকার তাঁর উপর চূড়ান্ত ক্ষিপ্ত, রানী লক্ষ্মীবাঈকে নিয়ে লিখলে আর রক্ষা থাকবে না। স্বাভাবিক ভাবেই বঙ্কিম এইসব অংশ উপসংহার থেকে বাদ দেন। এই পরিবর্তিত সংস্করণ ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে ব‌ই হিসাবে প্রকাশিত হয়। স্পষ্ট‌ই বোঝা যায়, তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের রাজকোষ থেকে বাঁচতে বঙ্কিম তাঁর উপন্যাসে এই পরিবর্তন করেছিলেন। 
     
                                  ‌ ‌ 
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:২৩508631
  • আর মোগল সাম্রাজ্যের পতনের পর গোটা দেশ জুড়েই মাৎসন্যায় চলতে থাকে। নিজেদের স্বার্থে ই ইংরেজকে এই মাৎসন্যায়ের অবসান‌ ঘটিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হয়। শিক্ষিত ভারতীয়দের এক বিরাট অংশ তাই ইংরেজ শাসনকে আশীর্বাদ মনে করতেন। রামমোহন‌ও তাই করেছেন। ১৮৫৭এর মহাবিদ্রোহের সময় শিক্ষিত বাঙালি সমাজ মহাবিদ্রোহের চরিত্র নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। তাঁরাও ইংরেজ শাসনকে আশীর্বাদ বলেই মনে করতেন, বঙ্কিম একা নন!
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:২৭508632
  • আর বঙ্কিম আনন্দমঠের পরবর্তী সংস্করণে ইংরেজ শাসনের সরাসরি বিরোধিতা করেন নি বটে, কিন্তু আনন্দমঠের মূল উদ্দেশ্য বুঝতে শিক্ষিত বাঙালি সমাজের ভুল হয়নি। সেজন্য‌ই ব্রিটিশ পুলিশের রিপোর্টেই বলা হয় বিপ্লবীরা আনন্দমঠের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত! এখানেই বঙ্কিমের সৃষ্টির সার্থকতা!
  • দীপ | 2401:4900:3a17:e84d:cbb7:dcb:19d5:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০১:৩৬508633
  • আর একটি কথা। ভারতের সাধারণ মানুষ চিরকাল অত্যাচারিত হয়েছে। কখনো তারা হিন্দু উচ্চবর্ণের দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছে, কখনো পাঠান-মোগলদের দ্বারা, তারপর ব্রিটিশদের দ্বারা চূড়ান্ত শোষিত হয়েছে। এখন তাদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে দুকানকাটা রাজনৈতিক নেতারা। একজন তথ্যনিষ্ঠ লেখককে সবকিছুই উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু পাঠান-মোগল আমলের অত্যাচারের কথা বললেই লেখক সাম্প্রদায়িক হয়ে যাবেন, এ তথ্য ঠিক হজম হলোনা!
  • বিদ্বেষ | 2405:8100:8000:5ca1::35:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০৪:২৬508636
  • আনন্দমঠ এ মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানো, তার মধ্যে থেকে কয়েকটি -
    *** ***
    "ভাই, এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধামাধবের মন্দির গড়িব?" [ ৩য় খণ্ড, ৮ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    সত্যানন্দ বলিলেন, “এত দিন যে জন্য আমরা সর্ব্বধর্ম্ম সর্ব্বমুখ ত্যাগ করিয়াছিলাম, সেই ব্রত সফল হইয়াছে, এ প্রদেশে যবন সেনা আর নাই, যাহা অবশিষ্ট আছে, এক দণ্ড আমাদিগের নিকট টিকিবে না, তোমরা এখন কি পরামর্শ দাও ?” [ ৩য় খণ্ড, ১২তম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    সেই এক রাত্রের মধ্যে গ্রামে গ্রামে নগরে নগরে মহাকোলাহল পড়িয়া গেল। সকলে বলিল, “মুসলমান পরাভূত হইয়াছে, দেশ আবার হিন্দুর হইয়াছে। সকলে একবার মুক্তকণ্ঠে হরি হরি বল।” [ ৪র্থ খণ্ড, ১ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    তখন ডাকিয়া সস্তানগণকে বলিলেন, “সন্তানগণ! ঐ দেখ, শিখরে প্রভু সত্যানন্দ গোস্বামীর ধ্বজ দেখা যাইতেছে। আজ স্বয়ং মুরারি মধুকৈটভনিসূদন কংশকেশি-বিনাশন রণে অবতীর্ণ, লক্ষ সস্তান স্তৃপপৃষ্ঠে। বল হরে মুরারে হরে মুরারে। উঠ ! মুসলমানের বুকে পিঠে চাপিয়া মার! লক্ষ সম্ভান টিলার পিঠে।” তখন হরে মুরারের ভীষণ ধ্বনিতে কানন প্রাস্তুর মথিত হইতে লাগিল। [ ৪র্থ খণ্ড, ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    তিনি বলিলেন, “তোমার কার্য্য সিদ্ধ হইয়াছে, মুসলমানরাজ্য ধ্বংস হইয়াছে। আর তোমার এখন কোন কার্য্য নাই। অনর্থক প্রাণিহত্যার প্রয়োজন নাই ।” [ ৪র্থ খণ্ড, ৮ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***

    আরও আছে - চাই ?
  • বিদ্বেষ | 2405:8100:8000:5ca1::35:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০৪:২৬508635
  • আনন্দমঠ এ মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানো, তার মধ্যে থেকে কয়েকটি -
    *** ***
    "ভাই, এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধামাধবের মন্দির গড়িব?" [ ৩য় খণ্ড, ৮ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    সত্যানন্দ বলিলেন, “এত দিন যে জন্য আমরা সর্ব্বধর্ম্ম সর্ব্বমুখ ত্যাগ করিয়াছিলাম, সেই ব্রত সফল হইয়াছে, এ প্রদেশে যবন সেনা আর নাই, যাহা অবশিষ্ট আছে, এক দণ্ড আমাদিগের নিকট টিকিবে না, তোমরা এখন কি পরামর্শ দাও ?” [ ৩য় খণ্ড, ১২তম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    সেই এক রাত্রের মধ্যে গ্রামে গ্রামে নগরে নগরে মহাকোলাহল পড়িয়া গেল। সকলে বলিল, “মুসলমান পরাভূত হইয়াছে, দেশ আবার হিন্দুর হইয়াছে। সকলে একবার মুক্তকণ্ঠে হরি হরি বল।” [ ৪র্থ খণ্ড, ১ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    তখন ডাকিয়া সস্তানগণকে বলিলেন, “সন্তানগণ! ঐ দেখ, শিখরে প্রভু সত্যানন্দ গোস্বামীর ধ্বজ দেখা যাইতেছে। আজ স্বয়ং মুরারি মধুকৈটভনিসূদন কংশকেশি-বিনাশন রণে অবতীর্ণ, লক্ষ সস্তান স্তৃপপৃষ্ঠে। বল হরে মুরারে হরে মুরারে। উঠ ! মুসলমানের বুকে পিঠে চাপিয়া মার! লক্ষ সম্ভান টিলার পিঠে।” তখন হরে মুরারের ভীষণ ধ্বনিতে কানন প্রাস্তুর মথিত হইতে লাগিল। [ ৪র্থ খণ্ড, ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    তিনি বলিলেন, “তোমার কার্য্য সিদ্ধ হইয়াছে, মুসলমানরাজ্য ধ্বংস হইয়াছে। আর তোমার এখন কোন কার্য্য নাই। অনর্থক প্রাণিহত্যার প্রয়োজন নাই ।” [ ৪র্থ খণ্ড, ৮ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***

    আরও আছে - চাই ?
  • বিদ্বেষ | 2405:8100:8000:5ca1::35:***:*** | ০৯ জুন ২০২২ ০৪:২৬508637
  • আনন্দমঠ এ মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানো, তার মধ্যে থেকে কয়েকটি -
    *** ***
    "ভাই, এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধামাধবের মন্দির গড়িব?" [ ৩য় খণ্ড, ৮ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    সত্যানন্দ বলিলেন, “এত দিন যে জন্য আমরা সর্ব্বধর্ম্ম সর্ব্বমুখ ত্যাগ করিয়াছিলাম, সেই ব্রত সফল হইয়াছে, এ প্রদেশে যবন সেনা আর নাই, যাহা অবশিষ্ট আছে, এক দণ্ড আমাদিগের নিকট টিকিবে না, তোমরা এখন কি পরামর্শ দাও ?” [ ৩য় খণ্ড, ১২তম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    সেই এক রাত্রের মধ্যে গ্রামে গ্রামে নগরে নগরে মহাকোলাহল পড়িয়া গেল। সকলে বলিল, “মুসলমান পরাভূত হইয়াছে, দেশ আবার হিন্দুর হইয়াছে। সকলে একবার মুক্তকণ্ঠে হরি হরি বল।” [ ৪র্থ খণ্ড, ১ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    তখন ডাকিয়া সস্তানগণকে বলিলেন, “সন্তানগণ! ঐ দেখ, শিখরে প্রভু সত্যানন্দ গোস্বামীর ধ্বজ দেখা যাইতেছে। আজ স্বয়ং মুরারি মধুকৈটভনিসূদন কংশকেশি-বিনাশন রণে অবতীর্ণ, লক্ষ সস্তান স্তৃপপৃষ্ঠে। বল হরে মুরারে হরে মুরারে। উঠ ! মুসলমানের বুকে পিঠে চাপিয়া মার! লক্ষ সম্ভান টিলার পিঠে।” তখন হরে মুরারের ভীষণ ধ্বনিতে কানন প্রাস্তুর মথিত হইতে লাগিল। [ ৪র্থ খণ্ড, ৬ষ্ঠ পরিচ্ছেদ ]
    *** ***
    তিনি বলিলেন, “তোমার কার্য্য সিদ্ধ হইয়াছে, মুসলমানরাজ্য ধ্বংস হইয়াছে। আর তোমার এখন কোন কার্য্য নাই। অনর্থক প্রাণিহত্যার প্রয়োজন নাই ।” [ ৪র্থ খণ্ড, ৮ম পরিচ্ছেদ ]
    *** ***

    আরও আছে - চাই ?
  • Amit | 121.2.***.*** | ০৯ জুন ২০২২ ০৪:৫৮508640
  • দেড়শো দুশো বছর আগের সমাজ-রাজনীতি-ধর্মের এলাইনমেন্ট কি আজকের দিনের সবকিছুর একুয়াল ? এনাদের লেখা এক একটা লাইন কে মাইক্রোস্কোপের তলায় রেখে রেখে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রমান করার চেষ্টা চলছে ? 
     
    কিন্তু ১৪০০ বছর আগে জন্মানো এক নবীর কোনো কিছু ভুল কাজ নিয়ে বললেই তখন গোটা ইসলামীক দুনিয়ায় ধর্মসঙ্কট বেঁধে যায় ? তখন তার যাবতীয় কুকাজের ঘোরানো প্যাচানো মোল্লামার্কা জাস্টিফিকেশন এসে হাজির হয় ? তখন সেটা বিদ্বেষ হয়না ? নাকি তখন সব জায়েজ ? বাকিরা সব ভুল ? শুধু একজনই ঠিক ? 
  • &/ | 151.14.***.*** | ০৯ জুন ২০২২ ০৫:১১508642
  • আরে একদিককে বলছে গোঁড়ামি, কুসংস্কার এইসব দূর করে উদার হয়ে সমন্বয়ের দিকে এগোতে আর অন্যদিককে ক্রমাগতঃ 'গোঁড়ামি ধরে রাখুন' মার্কা বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এটা অত্যন্ত অন্যায়, অসঙ্গত ও অসম্মানজনক। দু'দিককেই যদি গোঁড়ামি, কুসংস্কার দূর করার বার্তা দেওয়া না হয়, তাহলে আদৌ কোনো কাজ হবে কি?
  • Ranjan Roy | ০৯ জুন ২০২২ ০৬:১৬508643
  • বৌদ্ধ গ্রন্থে  যে বিজয় সিংহ উল্লেখিত তিনি কি আদৌ  বাঙালি?
    কথা হচ্ছে বাঙালি উপনিবেশ বেশ নিয়ে,  ভারত নিয়ে নয়। বঙ্কিম আনন্দ মঠে বাঙালি নিয়েই ভেবেছেন। তাই 'সপ্ত কোটি কণ্ঠ'।
    2 আনন্দ মঠ ইতিহাস নয়। উপন্যাস।  এখানে লেখার মাধ্যমে লেখকের মানস বেশি ফোটে। 
    3 নেড়ে বলতে মুসলমানদের বলা হয়েছে, আদৌ ইংরেজদের নয়। গ্রাম বাংলায় এবং গত শতাব্দীতে কলকাতায় মুসলমানদের নেড়ে বলা হত। 
    মাইকেল এর বুড়ো শালিক নাটকে দেখুন। 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন