পেরু নামক একটা দেশে বেরিয়ে এলাম দশ দিন। মাচু পিচু তো দেখা হলোই। আর দেখলাম পেরুর গ্রাম, শহর, আধা শহর। পেরুতে কোথাও জঞ্জাল নেই, প্লাস্টিক নেই। ... ...
এককালে পশ্চিম বঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে দুর্গা পুজার আসরে বসত পালাগান, শিবায়ন। বাংলায় সম্ভবত বেশ কিছু পালাকার একসময় শিবায়ন, মনসামঙ্গল এইসব পালাগান লিখে গেছে। এখন আর সাবেকী দুর্গাপুজাতেও আর এরকম আসর বসতে দেখা যায়না। শিবায়ন গানের কিছু স্মৃতিকথা এই পর্বগুলিতে রইল। ... ...
বার্লিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ আলাপ হল পরের বছর , ড্রেসনার ব্যাঙ্কের কল্যাণে। আমি কোন এক দূর দেশের মানুষ , ক্রমশ ভাষার জড়তা কাটিয়ে, দেশটাকে চিনবার চেষ্টা করে গেছি , কিছুটা কাজে কিছু অকাজে খানিক সময় কাটিয়েছি বার্লিনে । প্রায় পাঁচ দশক কাটল; আজও হয়তো আচ্ছন্ন হয়ে আছি সেই শহর এবং তার ইতিহাসের একটা বিচিত্র সময়ের মোহে। নির্দ্বিধায় বলতে পারি টাইম মেশিনে চড়ার সুযোগ পেলে আমি যেতাম ১৯২০ থেকে ১৯৩২ সালের বার্লিনে । রোদিকা আমার এই স্বপ্ন যাত্রার মূলে কুঠারাঘাত করে অবশ্য বলেছে ১৯৩৩ সালের ২৯শে জানুয়ারি সেখান থেকে পালানোর টিকেট সেই টাইম মেশিনে পাওয়া যেতো না ! ... ...
ইতিহাস ঐতিহ্য প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে? জেনজি মনে করে এগুলার কোন মূল্য নাই? নেপালে সিংহ দরবার পুড়িয়ে দিয়েছে। এখান থেকেই বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি। এমন একটা জায়গা পুড়িয়ে দিল! জেনজির কাছে এগুলার মূল্য নাই, তাই এগুলা থাকলেই কী না থাকলেই কী? আমরাও একই সূত্রে হারিয়ে ফেলব আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য? মুক্তিযুদ্ধের সময় আন্দ্রে মালরো বিশ্ব ব্যাপী জনসমর্থন আদায়ে নিরলস কাজ করেন। তিনি প্রয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ গ্রহণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশে। তিনি আসনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে আজকে শিবির জয় উল্লাস করছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে বলেন আমি কথা বলছি পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র এমন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মৃতের সংখ্যা জীবিতদের থেকে বেশি! এখানেই উল্লাস করছে একাত্তুরের পরাজিত শক্তিরা। আর আমাদেরকে বলা হচ্ছে এইটাই এখন থেকে সত্য! অতীত ভুলে যাও ... ...
কেন যখন এক্সেভেটর দিয়ে ৩২ নাম্বার গুড়িয়ে দেওয়া হল তখন আপনাদের মুজিব প্রেম জেগে উঠল না? একজন একটা কথাও বলতে পারলেন না? একটা ছোট্ট পোস্ট? একটু নিন্দা? আজকে শোক প্রকাশ করাটা একটু বিলম্বিত হয়ে গেল না? এই শোক তো যেদিন ৩২ নাম্বার গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেদিনই জানানো উচিত ছিল আপনাদের। কেন দেরি করলেন? কিসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন? আবার প্রশ্ন, ভয় পাচ্ছিলেন? মেরুদণ্ড কই? বাঁধনের আবার কিসের ভয়? সে আজকে শোক জানাতে পারল আর যেদিন ৩২ নাম্বার ভাঙা হল সেদিন পারল না? সেদিন শোক জানানোর মত কিছু হয় নাই? ... ...
বার্লিনের রসিকতায় টীকার ভূমিকা শূন্য ; বার্লিন থাকে বার্লিনে , বার্লিনার কোথাও যায় না। এ পাড়া থেকে ও পাড়ায় বাসা বদল করাটাই গর্হিত কর্ম বিবেচিত হয় । বার্লিনের বাচনভঙ্গিতে মিশে আছে ফ্লেমিশ, ফরাসি, স্লাভ, ইহুদি তাদের মুখের ভাষা ও হাসির ঝলক নিয়ে ! কে কোথা হতে কবে এসেছে সে তর্ক নিরর্থক ; তার আধার কার্ড নেই, বাপ ঠাকুরদার জাতি ধর্মের কোন প্রমাণ পত্র নেই। তারা সবাই বার্লিনার । আমার পাঠকের সামনে বার্লিনের রসিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তাই কুশীলবের পরিচয়, স্থান, সময়টা সকাল না সন্ধ্যে এমত ধারাভাষ্যকে সম্পূর্ণ বর্জন করেছি ; একটি সমস্যা অবশ্য থেকেই যায় -বার্লিনের কৌতুক অনেকটা ভাষা নির্ভর , শব্দ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের এই মজার খেলার মূল আবেদন জার্মান ও ইদিশ ভাষাভাষীর কাছে । অন্য ভাষায় ‘ বার্লিন কৌতুক সঞ্চয়িতা’ নামক কোন গ্রন্থ চোখে পড়ে নি। সাধ্যমত চেষ্টা করেছি বার্লিনের মুখের ভাষার মজাকে বরানগর , শ্যামবাজারের রক অবধি পৌঁছে দিতে , যদিও মনে রাখতে হবে আপনার আমার চিত্ত বিনোদনের জন্য বার্লিনার কোন গল্প ফাঁদে না। সেই চিত্রনাট্যে ফোরগ্রাউনড , আবহসঙ্গীত, মেকআপ বা সেটের ভূমিকা নগণ্য , সকল রসের মূল তার সংলাপ। ... ...
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা অশ্ত্রু গঙ্গা বহমান তবু নাহি ভয় হবে জয়। জয় শেখ মুজিবুর রহমান। ... ...
জনগণ কি এই সবের ম্যান্ডেট দিয়েছিল ৫ আগস্ট? বলেছিল তোমরা সংবিধান বদলে দেও? বলেছিল দল গঠন কর? বলেছিল মুজিবের বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেও? তার কবরে ঝাঁপিয়ে পড়তে রউনা হও গোপালগঞ্জ? বলেছিল সমস্ত জঙ্গিদের ছেড়ে দেও? বলেছিল তোমরা ঝাঁপিয়ে পর হিন্দুদের বাড়ির উপরে? অথচ কথায় কথায় জুলাই আন্দোলন তাদেরকে সব কিছু করার ম্যান্ডেট দিয়েছে এমন কথা শোনায় এই নেতারা। এরা একটু লাইনে থাকলেই আমাদের মত লাখো মানুষকে কাছে পেত অনায়সেই। মুক্তিযুদ্ধ শুধু লীগের সম্পত্তি না, বঙ্গবন্ধু লীগের একার না। এইটাই তো মূল মন্ত্র ছিল। এক বাম নেতাকে এমন কথা বলতে দেখলাম গত দশ পনেরো বছর ধরে। অথচ তিনি এখন এই কথা বলেন না! তিনিও এদের সুরেই মুজিব আবার ক্যাডা বলেন! ভণ্ডামি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এদের। ... ...
বাংলাদেশী ভাষা বাংলা ভাষা নয়। এবং দিল্লি ফুলিশ, হনুমান অমিত এবং তাদের গুরুঠাকুর সঙ্ঘস্থানের মতে, বাঙালি বলে কিছু হয়না, বাংলা ভাষা বলে কিছু হয়না, এবং সবই বাংলাদেশী। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, এতো জ্ঞান আমার নেই। তা ভাবলাম, বাংলা ভাষা কোনটা, আর কোনটা নয়, এই নিয়ে আমার নতুন বন্ধু চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করা যাক। আমি প্রশ্ন করলাম। সে উত্তর দিলো। ... ...
বার্লিনার নবাব কে জবাব দেয় কারণ সে হাজির জবাব , অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করার বদভ্যাস তার নেই। তার ভাষা চোখা , নিশানায় নির্ভুল , উদ্ধত , হাই ডেসিবেল , স্মার্ট, কখনো তির্যক । দৈনন্দিন কথোপকথনের স্টাইল তার নিজস্ব , এর মধ্যে কৌতুক খুঁজে নেবার দায়িত্ব আপনার আমার, তার নয় । মুজতবা আলী সাহেব পেশাওয়ারের আহম্মদ আলীকে বলেন, এই সামান্য রসিকতায় আপনি এত প্রচুর হাসতে পারেন কি করে ? জবাবে তিনি বললেন, হাসি কি আর গল্পে ঠাসা থাকে? হাসি থাকে খুশ দিলে । বার্লিনারের বচন শুনে আমরা ঠা ঠা করে হাসতে পারি,সেটা আপনার আমার জিম্মেদারি। আমাদের মনোরঞ্জনের জন্যে বার্লিনার তার শব্দের মণি মুক্তো ছড়ায় না । সে তাই বলে যা তার মুখে , মনে আসে । বার্লিনের বাতাস রুক্ষ , তার কৌতুক শুষ্ক – ড্রাই হিউমর, যা সবিশেষ মেলে ব্রিটিশ হিউমরের সঙ্গে । বার্লিনের উদ্ধত দুর্বিনীত রসিকতা কোনো হুলিদাসকে মাথায় তুলে রাখতে একান্ত অনিচ্ছুক , কাউকে খাতির করা তার ধাতে সয় না , কখনো কোনো ডেকোরাম সে মানে না । তাই বার্লিনের বার, কফি হাউসের বক্র মন্তব্য কোনোখানে মিলে মিশে যায় আমাদের উত্তর কলকাতার চায়ের দোকানের , কুঠি ঘাটের আড্ডার সঙ্গে। বাকি দুনিয়া এর নাম দিয়েছে বার্লিনের কৌতুক , বেরলিনার ভিতস। রোমের ভাঙ্গা চোরা কলোসিয়াম দেখে গাইডকে বার্লিনার বলে, এ আর কি ? একবার বার্লিন এসে আমাদের খণ্ডহরগুলো দেখে যান । আমরা তার জন্যে পয়সা নিই না , টিকিটও লাগে না । ব্যাভেরিয়ার অপূর্ব হেরেন কিয়েম জের তীরে দাঁড়িয়ে নিজেই অভিভূত হয়ে গাইড বলেন , আহা , দেখুন কি আশ্চর্য সুন্দর এই নীল হ্রদ, দূরে সাদা বরফে মোড়া পাহাড়! বার্লিনার তাঁকে বলে , পাহাড় আর জলটাকে বাদ দিলে , এমন কি আহামরি ? পিসার হেলানো টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে সে বলে, আপনি আমাদের টি ভি টাওয়ারটা দেখেন নি বুঝি ? সেটা আরও হেলে গিয়েছে, চড়তে লিফট লাগে না। সুইস মাটারহর্ন দেখে বার্লিনার বলেছে, এর চারপাশে অনেক উঁচু পাথর আছে তাই কতটা উঁচু বোঝা যায় না। এই পাহাড়টাকে বার্লিনে বসিয়ে দিলে সেটা বোঝা যাবে । সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে নোংরা ধোঁয়া পড়া উ বান টানেলে ট্রেন ঢুকে পড়লে সে বলে, আঃ কি আরাম, এতক্ষণে মনে হল নিজের দেশে পৌঁছেছি । ... ...
প্রাণিরা কি আসন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দিতে পারে? একদলের মতে পরিবেশ প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকার জন্য প্রকৃতির বার্তা তাদের কাছেই আগে পৌঁছে যায় কারণ প্রাণিদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এমন গালভরা বুলিতে মোটেই সন্তুষ্ট নন। তাঁরা দাবি করেন প্রামাণ্য তথ্যের। এই নিবন্ধটি সেই সত্যের সন্ধান করে। ... ...
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এইটা নিয়ে বেশ সরব। তীব্র ভাষায় শুধু মাত্র বাংলায় কথা বলে দেখে ধরে ধরে বাংলাদেশে পাঠায় দেওয়ার সমালোচনা করেছেন তিনি। এইটা শুধু মমতা কেন করছে আর বাকিরা কেন চুপ করে রয়েছে তা আমার জানা নাই। এইটা নিয়ে তো রাজনীতি অন্তত পশ্চিমবঙ্গে থাকার কথা না। কিন্তু অবাক হয়ে দেখতে হচ্ছে যে তাই হচ্ছে। শাসক দলের কর্মকাণ্ড চোখ বন্ধ করে সমর্থন দেওয়ার যে রীতি প্রচলিত আছে তা এখানেও কাজ করে চলছে। অথচ এই বিষয় নিয়ে দলমত নির্বিশেষে এক থাকলে চেহারাটা অন্য রকম হতে পারত। গুজরাটে হাসান শাহর কথা লিখেছি ওপরে, তাঁকে সম্ভবত ধর্মের কারণে ধরে ফেরত পাঠিয়েছে, বাংলাদেশের মিডিয়া তেমনই প্রচার করেছে। যদিও তার পরিবার পশ্চিমবঙ্গের বলে সে জানিয়েছে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে? বীরভূমের বাসিন্দা আর্জিলা বিবি সুইটি বিবি ও দুই নাতি– ১৬ বছর বয়সী কুরবান শেখ ও ছয় বছরের ইমাম শেখকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে জানা যায় দিল্লীতে বাংলাদেশী বলে আটক হয়েছে তাঁরা। একই রকমের গল্প হচ্ছে সোনালি খাতুন, তার স্বামী দানেশ শেখ ও তাদের ছেলে সাবির শেখের। বীরভূমে বাড়ি তাদের। বাংলাদেশী বলে আটক! এই দুই পরিবারকে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে! এমন আরও কত কত নাম আছে। মুর্শিদাবাদের লোক আছে, পুরুলিয়ার লোক আছে। ভাষার কারণে বাংলাদেশে বিপদে পড়ছে। এমন একটা সময় যখন এই দেশে ভারতীয় নাগরিক এইটা খুব স্বাচ্ছন্দ্যকর তথ্য না। তাই তারা কেমন আছে, সুস্থ আছে না বিপদে আছে তা জানাও এখন সহজ না। বাংলাদেশের মিডিয়া পুশ ইন নিয়ে যতটা আগ্রহী, পুশ ইন হয়ে যারা আসল তাদের অবস্থা কেমন, কই আছে তা নিয়ে তাদের আগ্রহ কম। ... ...
ভাইরাল হওয়ার জন্য বুদ্ধি দরকার? কত বুদ্ধি আছে ভাই। এমন এমন সব কাজ করবেন যা কোনদিন কেউ করে নাই। মায়ের দাফনের সময় ডিজে পার্টির আয়োজন করলেন, ভালো ক্যামেরায় সব ধারণ করে ছোট ছোট রিলে মুক্তি দিলেন অনলাইনে! কিংবা আবহ সংগীত সহ বাপের লাশ দাফন! মিউজিক ভিডিওর মত করে বাপের লাশ নামানো দেখাইলেন, কোটি কোটি ভিউ! বা ধরেন কেউ আপনার বোনের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে, আপনি বাধা দিবেন? না। আপনি ভিডিও করুন। ভিডিওতেই রাগ করুন প্রচণ্ড, ওকে পাইলে ছিঁড়ে ফেলবেন, মাথা ভেঙ্গে দিবেন ইত্যাদি বলতে থাকুন। ভিউ নিশ্চিত। টাকা কামাই করা হচ্ছে মূল কথা, বাকি সব গৌণ। তার জন্য যদি আগুনে পোড়া শিশুকে দিশেহারা হয়ে দৌড়াতে দেখেন তখন দ্রুত ক্যামেরা চালু করুন, ভিডিও করুন। এই ভিডিও ক্লিপই আপনার ভাগ্য বদলে দিবে। কয়জনের কাছে আছে এমন ভিডিও? ভাগ্য দেবতা আপনাকে আজকে এখানে মোবাইল সহ উপস্থিত করেছে, আপনি তো ঘুমায় থাকতে পারতেন, বা আপনার মোবাইলে সময় মত চার্জ নাও থাকতে পারত, পারত না? সব মিলিয়েই তো মোক্ষম সুযোগটা পেয়েছেন আপনি, ভিডিও করবেন না? ছবি তুলবেন না? আশ্চর্য! ... ...
মেলায় একটা গোটা দেশ বিক্রি হলো , টুকরো টুকরো করে । চার হাজার লোকের অফিসে নির্ধারিত হলো দশ হাজার প্রতিষ্ঠান, পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের কাজ , বহু লক্ষ একর জমি জায়গার ভবিষ্যৎ মালিকানা । ছিল না কোন আপিল আদালত , ট্রাইবুনাল, কোন জবাবদিহির দায়িত্ব। বেসরকারিকরনের নামে পশ্চিমের পুঁজিপতিরা কিনলেন কিছু, মেরামত করলেন কিছু, বন্ধ হলো বাকি দোকান,কল কারখানা । পশ্চিম জার্মান সরকার যেদিন ঘোষণা করলেন পাশাপাশি দুই অর্থনীতির সহাবস্থান নয় ( পরবর্তী কালে চিনে যেমন ওয়ান কান্ট্রি টু সিস্টেমস দেখা গেছে ) দু দেশকে এক হতে হবে একই শর্তে, যা স্থির হবে রাজধানী বন শহরে । দুয়োরের আগল খুলে যাওয়ার পরে পূর্ব জার্মানি চেয়েছিল গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক রিফরম , তাঁদের মতন করে। তাদের কণ্ঠ রুদ্ধ হলোঃ সত্তর শতাংশের বেশি নাগরিক যারা এই পশ্চিমি স্টাইলের দেশ তৈরির হুকুমে সম্মতি ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা দিগন্তে কোন দুঃস্বপ্নের ইঙ্গিত দেখেন নি। ত্রয়হানড নামক ট্রাস্ট দফতর তখন সেলস লিস্টের জাবদা খাতা বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের ছোট বেলায় দেখেছি সারা বছর হরলালকার সেল লেগে থাকতো - প্রি পূজা সেল , পূজা সেল, পোস্ট পূজা সেল ! ত্রয়হানডের প্রাত্যহিক সেল চলল বছরের পর বছর। তাদের সঙ্কলিত ফাইলগুলিকে পাশাপাশি রাখলে তার দৈর্ঘ্য হবে দুশ কিলোমিটার,যার প্রায় অর্ধেক আজও প্রকাশিত হয় নি। তুলনামূলক ভাবে , চল্লিশ বছরে এক কোটি ষাট লক্ষ মানুষের ওপরে খবরদারি করে তৈরি পূর্ব জার্মান গোয়েন্দা এজেন্সি স্তাসির ফাইলের দৈর্ঘ্য পৌঁছেছিল ১৮০ কিলোমিটারে; নতুন জার্মান সরকার যার সামগ্রিক প্রকাশ আজও নিষিদ্ধ রেখেছেন । কিভাবে এই মহতী সেল যজ্ঞ আয়োজিত এবং পালিত হয়েছিল তার গল্প অনেক । যেমন থুরিঙ্গিয়ার পটাশ ( জার্মানে কালি ) মাইন , বিশফেরোডে। গ্রামে কোন পুরোহিত নেই, পুজো আচ্চার সঙ্কট দেখে আমার ঠাকুরদা তৎকালীন প্রথা মাফিক পদুমা গ্রামে একঘর বামুন প্রতিষ্ঠা করেন। এমনটা গ্রাম বাংলায় চালু ছিল। জার্মান সরকারের সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলের ( জার্মান তরঙ্গ) খবর পড়ে মনে হল বেশ কিছুদিন ধরেই পূর্ব জার্মানির শহর ও গ্রামে মানুষ প্রতিষ্ঠার ধুম পড়েছে । সেই আগের দিনের মতো ? সরকার রোটি কাপড়ার সন্ধান দেবেন , মকান মিলবে সস্তায়? ... ...
এনসিপির গোপালগঞ্জ সফর চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এবং এর রেশ বহুদূর পর্যন্ত যাবে আমার বিশ্বাস। এনসিপি এখন এইটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করবে। মুজিববাদকে কবর দিবে বলে আসছে ওরা, এর অর্থ হচ্ছে ৭২ সালের সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলা হবে, জুলাই সনদ ঘোষণা হবে। লাশ না পড়লে এই রাজনীতিটা তারা সহজেই করতে পারত। কিন্তু চারজনের লাশ, তাদের পরিবারের আহাজারি এখন পর্যন্ত ভারি হয়ে আছে পরিবেশ। রমজান নামের যে ছেলেটাকে মারছে তাকে পুলিশ ধরে রেখেছে এমন ভিডিও দেখা গেছে। পরে তাকে মৃত পাওয়া গেছে। যদিও এই সব জালিমদের হৃদপিণ্ডে বিন্দুমাত্র কাঁপন ধরায় না। আর্মির একটা ভিডিও দেখলাম, রাতে গোপালগঞ্জে কারফিউর সুযোগে রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে সম্ভবত। কারণ ভিডিওতে সেনা সদস্যরা উদ্যম নৃত্য করতে দেখা গেল! এইটা কবের কিংবা ফেক কি না জানি না। পেজটা আর্মির নানা খবরাখবর দেয়, তারাই দিয়েছে এই ভিডিও! কতখানি নিষ্ঠুর হলে এমন করা সম্ভব? ... ...
আগামীকাল ১৬ জুলাই হয়ত আরেকটা ম্যাসাকার হতে পারে। এনসিপি গোপালগঞ্জ যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সারজিস, হাসনাত মুজিববাদকে কবর দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে গোপালগঞ্জ যাচ্ছেন। গোপালগঞ্জে কালকে কী হবে তা বলা মুশকিল। যদি টুঙ্গি পাড়ায় ঢোকার চেষ্টা করে? যদি বঙ্গবন্ধুর কবর ভাঙার চেষ্টা করে? এরপরে কী হবে আমি জানি না। আবার একটা রক্তপাতের দিকে যদি দেশ এগিয়ে যায় আমি অবাক হব না। কোন পক্ষের রক্ত আমি জানি না। এখন তো সব তাদের হাতেই। এবার হয়ত রক্ত আরেক পক্ষের যাবে? এবার হয়ত রক্ত আমারও যাবে! আমি আসলেই জানি না কালকে তেমন কিছু হলে আসলে কেমন হবে পরবর্তী বাংলাদেশের চেহারা! সবাই শান্ত থেকে যদি এমন একটা হঠকারী আয়োজন শেষ করে আসতে পারে তাহলে ভালো। আর রক্ত দেখতে চাই না, কোন পক্ষেরই না। ... ...
আমরা এই নিয়েই আছি। আমাদের সামনে অন্ধকার। শালার আবাল জনগণ নিজের সামনে অন্ধকার এইটাও বুঝতে অনলাইনে খুঁজে। কেউ যখন বলে কই অন্ধকার, সব তো ঝকঝক করছে। খুশি হয়ে অন্ধকারে উস্টা খাইতে খাইতে বাড়ি ফিরে। আগের থেকে তিন চারগুণ বেশি দামের ইলিশ মাছ দেখে আসছে বাজারে। সেই গল্প করতে করতে ঘুমায় যায়। আমরা পণ করে বসে আছি আমরা চোখ খুলব না। আমরা নিয়ত পাকা করে বসে আছি ছাগলের চাষ অব্যাহত থাকবে এই দেশে। ছাগলের দেশে নোবেল ম্যান! কম্বিনেশন জবরদস্ত, তাই না? ... ...