বার্লিনের রসিকতায় টীকার ভূমিকা শূন্য ; বার্লিন থাকে বার্লিনে , বার্লিনার কোথাও যায় না। এ পাড়া থেকে ও পাড়ায় বাসা বদল করাটাই গর্হিত কর্ম বিবেচিত হয় । বার্লিনের বাচনভঙ্গিতে মিশে আছে ফ্লেমিশ, ফরাসি, স্লাভ, ইহুদি তাদের মুখের ভাষা ও হাসির ঝলক নিয়ে ! কে কোথা হতে কবে এসেছে সে তর্ক নিরর্থক ; তার আধার কার্ড নেই, বাপ ঠাকুরদার জাতি ধর্মের কোন প্রমাণ পত্র নেই। তারা সবাই বার্লিনার । আমার পাঠকের সামনে বার্লিনের রসিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তাই কুশীলবের পরিচয়, স্থান, সময়টা সকাল না সন্ধ্যে এমত ধারাভাষ্যকে সম্পূর্ণ বর্জন করেছি ; একটি সমস্যা অবশ্য থেকেই যায় -বার্লিনের কৌতুক অনেকটা ভাষা নির্ভর , শব্দ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের এই মজার খেলার মূল আবেদন জার্মান ও ইদিশ ভাষাভাষীর কাছে । অন্য ভাষায় ‘ বার্লিন কৌতুক সঞ্চয়িতা’ নামক কোন গ্রন্থ চোখে পড়ে নি। সাধ্যমত চেষ্টা করেছি বার্লিনের মুখের ভাষার মজাকে বরানগর , শ্যামবাজারের রক অবধি পৌঁছে দিতে , যদিও মনে রাখতে হবে আপনার আমার চিত্ত বিনোদনের জন্য বার্লিনার কোন গল্প ফাঁদে না। সেই চিত্রনাট্যে ফোরগ্রাউনড , আবহসঙ্গীত, মেকআপ বা সেটের ভূমিকা নগণ্য , সকল রসের মূল তার সংলাপ। ... ...
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা অশ্ত্রু গঙ্গা বহমান তবু নাহি ভয় হবে জয়। জয় শেখ মুজিবুর রহমান। ... ...
জনগণ কি এই সবের ম্যান্ডেট দিয়েছিল ৫ আগস্ট? বলেছিল তোমরা সংবিধান বদলে দেও? বলেছিল দল গঠন কর? বলেছিল মুজিবের বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেও? তার কবরে ঝাঁপিয়ে পড়তে রউনা হও গোপালগঞ্জ? বলেছিল সমস্ত জঙ্গিদের ছেড়ে দেও? বলেছিল তোমরা ঝাঁপিয়ে পর হিন্দুদের বাড়ির উপরে? অথচ কথায় কথায় জুলাই আন্দোলন তাদেরকে সব কিছু করার ম্যান্ডেট দিয়েছে এমন কথা শোনায় এই নেতারা। এরা একটু লাইনে থাকলেই আমাদের মত লাখো মানুষকে কাছে পেত অনায়সেই। মুক্তিযুদ্ধ শুধু লীগের সম্পত্তি না, বঙ্গবন্ধু লীগের একার না। এইটাই তো মূল মন্ত্র ছিল। এক বাম নেতাকে এমন কথা বলতে দেখলাম গত দশ পনেরো বছর ধরে। অথচ তিনি এখন এই কথা বলেন না! তিনিও এদের সুরেই মুজিব আবার ক্যাডা বলেন! ভণ্ডামি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এদের। ... ...
বাংলাদেশী ভাষা বাংলা ভাষা নয়। এবং দিল্লি ফুলিশ, হনুমান অমিত এবং তাদের গুরুঠাকুর সঙ্ঘস্থানের মতে, বাঙালি বলে কিছু হয়না, বাংলা ভাষা বলে কিছু হয়না, এবং সবই বাংলাদেশী। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, এতো জ্ঞান আমার নেই। তা ভাবলাম, বাংলা ভাষা কোনটা, আর কোনটা নয়, এই নিয়ে আমার নতুন বন্ধু চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করা যাক। আমি প্রশ্ন করলাম। সে উত্তর দিলো। ... ...
বার্লিনার নবাব কে জবাব দেয় কারণ সে হাজির জবাব , অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করার বদভ্যাস তার নেই। তার ভাষা চোখা , নিশানায় নির্ভুল , উদ্ধত , হাই ডেসিবেল , স্মার্ট, কখনো তির্যক । দৈনন্দিন কথোপকথনের স্টাইল তার নিজস্ব , এর মধ্যে কৌতুক খুঁজে নেবার দায়িত্ব আপনার আমার, তার নয় । মুজতবা আলী সাহেব পেশাওয়ারের আহম্মদ আলীকে বলেন, এই সামান্য রসিকতায় আপনি এত প্রচুর হাসতে পারেন কি করে ? জবাবে তিনি বললেন, হাসি কি আর গল্পে ঠাসা থাকে? হাসি থাকে খুশ দিলে । বার্লিনারের বচন শুনে আমরা ঠা ঠা করে হাসতে পারি,সেটা আপনার আমার জিম্মেদারি। আমাদের মনোরঞ্জনের জন্যে বার্লিনার তার শব্দের মণি মুক্তো ছড়ায় না । সে তাই বলে যা তার মুখে , মনে আসে । বার্লিনের বাতাস রুক্ষ , তার কৌতুক শুষ্ক – ড্রাই হিউমর, যা সবিশেষ মেলে ব্রিটিশ হিউমরের সঙ্গে । বার্লিনের উদ্ধত দুর্বিনীত রসিকতা কোনো হুলিদাসকে মাথায় তুলে রাখতে একান্ত অনিচ্ছুক , কাউকে খাতির করা তার ধাতে সয় না , কখনো কোনো ডেকোরাম সে মানে না । তাই বার্লিনের বার, কফি হাউসের বক্র মন্তব্য কোনোখানে মিলে মিশে যায় আমাদের উত্তর কলকাতার চায়ের দোকানের , কুঠি ঘাটের আড্ডার সঙ্গে। বাকি দুনিয়া এর নাম দিয়েছে বার্লিনের কৌতুক , বেরলিনার ভিতস। রোমের ভাঙ্গা চোরা কলোসিয়াম দেখে গাইডকে বার্লিনার বলে, এ আর কি ? একবার বার্লিন এসে আমাদের খণ্ডহরগুলো দেখে যান । আমরা তার জন্যে পয়সা নিই না , টিকিটও লাগে না । ব্যাভেরিয়ার অপূর্ব হেরেন কিয়েম জের তীরে দাঁড়িয়ে নিজেই অভিভূত হয়ে গাইড বলেন , আহা , দেখুন কি আশ্চর্য সুন্দর এই নীল হ্রদ, দূরে সাদা বরফে মোড়া পাহাড়! বার্লিনার তাঁকে বলে , পাহাড় আর জলটাকে বাদ দিলে , এমন কি আহামরি ? পিসার হেলানো টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে সে বলে, আপনি আমাদের টি ভি টাওয়ারটা দেখেন নি বুঝি ? সেটা আরও হেলে গিয়েছে, চড়তে লিফট লাগে না। সুইস মাটারহর্ন দেখে বার্লিনার বলেছে, এর চারপাশে অনেক উঁচু পাথর আছে তাই কতটা উঁচু বোঝা যায় না। এই পাহাড়টাকে বার্লিনে বসিয়ে দিলে সেটা বোঝা যাবে । সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে নোংরা ধোঁয়া পড়া উ বান টানেলে ট্রেন ঢুকে পড়লে সে বলে, আঃ কি আরাম, এতক্ষণে মনে হল নিজের দেশে পৌঁছেছি । ... ...
প্রাণিরা কি আসন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দিতে পারে? একদলের মতে পরিবেশ প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকার জন্য প্রকৃতির বার্তা তাদের কাছেই আগে পৌঁছে যায় কারণ প্রাণিদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এমন গালভরা বুলিতে মোটেই সন্তুষ্ট নন। তাঁরা দাবি করেন প্রামাণ্য তথ্যের। এই নিবন্ধটি সেই সত্যের সন্ধান করে। ... ...
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এইটা নিয়ে বেশ সরব। তীব্র ভাষায় শুধু মাত্র বাংলায় কথা বলে দেখে ধরে ধরে বাংলাদেশে পাঠায় দেওয়ার সমালোচনা করেছেন তিনি। এইটা শুধু মমতা কেন করছে আর বাকিরা কেন চুপ করে রয়েছে তা আমার জানা নাই। এইটা নিয়ে তো রাজনীতি অন্তত পশ্চিমবঙ্গে থাকার কথা না। কিন্তু অবাক হয়ে দেখতে হচ্ছে যে তাই হচ্ছে। শাসক দলের কর্মকাণ্ড চোখ বন্ধ করে সমর্থন দেওয়ার যে রীতি প্রচলিত আছে তা এখানেও কাজ করে চলছে। অথচ এই বিষয় নিয়ে দলমত নির্বিশেষে এক থাকলে চেহারাটা অন্য রকম হতে পারত। গুজরাটে হাসান শাহর কথা লিখেছি ওপরে, তাঁকে সম্ভবত ধর্মের কারণে ধরে ফেরত পাঠিয়েছে, বাংলাদেশের মিডিয়া তেমনই প্রচার করেছে। যদিও তার পরিবার পশ্চিমবঙ্গের বলে সে জানিয়েছে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে? বীরভূমের বাসিন্দা আর্জিলা বিবি সুইটি বিবি ও দুই নাতি– ১৬ বছর বয়সী কুরবান শেখ ও ছয় বছরের ইমাম শেখকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে জানা যায় দিল্লীতে বাংলাদেশী বলে আটক হয়েছে তাঁরা। একই রকমের গল্প হচ্ছে সোনালি খাতুন, তার স্বামী দানেশ শেখ ও তাদের ছেলে সাবির শেখের। বীরভূমে বাড়ি তাদের। বাংলাদেশী বলে আটক! এই দুই পরিবারকে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে! এমন আরও কত কত নাম আছে। মুর্শিদাবাদের লোক আছে, পুরুলিয়ার লোক আছে। ভাষার কারণে বাংলাদেশে বিপদে পড়ছে। এমন একটা সময় যখন এই দেশে ভারতীয় নাগরিক এইটা খুব স্বাচ্ছন্দ্যকর তথ্য না। তাই তারা কেমন আছে, সুস্থ আছে না বিপদে আছে তা জানাও এখন সহজ না। বাংলাদেশের মিডিয়া পুশ ইন নিয়ে যতটা আগ্রহী, পুশ ইন হয়ে যারা আসল তাদের অবস্থা কেমন, কই আছে তা নিয়ে তাদের আগ্রহ কম। ... ...
ভাইরাল হওয়ার জন্য বুদ্ধি দরকার? কত বুদ্ধি আছে ভাই। এমন এমন সব কাজ করবেন যা কোনদিন কেউ করে নাই। মায়ের দাফনের সময় ডিজে পার্টির আয়োজন করলেন, ভালো ক্যামেরায় সব ধারণ করে ছোট ছোট রিলে মুক্তি দিলেন অনলাইনে! কিংবা আবহ সংগীত সহ বাপের লাশ দাফন! মিউজিক ভিডিওর মত করে বাপের লাশ নামানো দেখাইলেন, কোটি কোটি ভিউ! বা ধরেন কেউ আপনার বোনের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে, আপনি বাধা দিবেন? না। আপনি ভিডিও করুন। ভিডিওতেই রাগ করুন প্রচণ্ড, ওকে পাইলে ছিঁড়ে ফেলবেন, মাথা ভেঙ্গে দিবেন ইত্যাদি বলতে থাকুন। ভিউ নিশ্চিত। টাকা কামাই করা হচ্ছে মূল কথা, বাকি সব গৌণ। তার জন্য যদি আগুনে পোড়া শিশুকে দিশেহারা হয়ে দৌড়াতে দেখেন তখন দ্রুত ক্যামেরা চালু করুন, ভিডিও করুন। এই ভিডিও ক্লিপই আপনার ভাগ্য বদলে দিবে। কয়জনের কাছে আছে এমন ভিডিও? ভাগ্য দেবতা আপনাকে আজকে এখানে মোবাইল সহ উপস্থিত করেছে, আপনি তো ঘুমায় থাকতে পারতেন, বা আপনার মোবাইলে সময় মত চার্জ নাও থাকতে পারত, পারত না? সব মিলিয়েই তো মোক্ষম সুযোগটা পেয়েছেন আপনি, ভিডিও করবেন না? ছবি তুলবেন না? আশ্চর্য! ... ...
মেলায় একটা গোটা দেশ বিক্রি হলো , টুকরো টুকরো করে । চার হাজার লোকের অফিসে নির্ধারিত হলো দশ হাজার প্রতিষ্ঠান, পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের কাজ , বহু লক্ষ একর জমি জায়গার ভবিষ্যৎ মালিকানা । ছিল না কোন আপিল আদালত , ট্রাইবুনাল, কোন জবাবদিহির দায়িত্ব। বেসরকারিকরনের নামে পশ্চিমের পুঁজিপতিরা কিনলেন কিছু, মেরামত করলেন কিছু, বন্ধ হলো বাকি দোকান,কল কারখানা । পশ্চিম জার্মান সরকার যেদিন ঘোষণা করলেন পাশাপাশি দুই অর্থনীতির সহাবস্থান নয় ( পরবর্তী কালে চিনে যেমন ওয়ান কান্ট্রি টু সিস্টেমস দেখা গেছে ) দু দেশকে এক হতে হবে একই শর্তে, যা স্থির হবে রাজধানী বন শহরে । দুয়োরের আগল খুলে যাওয়ার পরে পূর্ব জার্মানি চেয়েছিল গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক রিফরম , তাঁদের মতন করে। তাদের কণ্ঠ রুদ্ধ হলোঃ সত্তর শতাংশের বেশি নাগরিক যারা এই পশ্চিমি স্টাইলের দেশ তৈরির হুকুমে সম্মতি ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা দিগন্তে কোন দুঃস্বপ্নের ইঙ্গিত দেখেন নি। ত্রয়হানড নামক ট্রাস্ট দফতর তখন সেলস লিস্টের জাবদা খাতা বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের ছোট বেলায় দেখেছি সারা বছর হরলালকার সেল লেগে থাকতো - প্রি পূজা সেল , পূজা সেল, পোস্ট পূজা সেল ! ত্রয়হানডের প্রাত্যহিক সেল চলল বছরের পর বছর। তাদের সঙ্কলিত ফাইলগুলিকে পাশাপাশি রাখলে তার দৈর্ঘ্য হবে দুশ কিলোমিটার,যার প্রায় অর্ধেক আজও প্রকাশিত হয় নি। তুলনামূলক ভাবে , চল্লিশ বছরে এক কোটি ষাট লক্ষ মানুষের ওপরে খবরদারি করে তৈরি পূর্ব জার্মান গোয়েন্দা এজেন্সি স্তাসির ফাইলের দৈর্ঘ্য পৌঁছেছিল ১৮০ কিলোমিটারে; নতুন জার্মান সরকার যার সামগ্রিক প্রকাশ আজও নিষিদ্ধ রেখেছেন । কিভাবে এই মহতী সেল যজ্ঞ আয়োজিত এবং পালিত হয়েছিল তার গল্প অনেক । যেমন থুরিঙ্গিয়ার পটাশ ( জার্মানে কালি ) মাইন , বিশফেরোডে। গ্রামে কোন পুরোহিত নেই, পুজো আচ্চার সঙ্কট দেখে আমার ঠাকুরদা তৎকালীন প্রথা মাফিক পদুমা গ্রামে একঘর বামুন প্রতিষ্ঠা করেন। এমনটা গ্রাম বাংলায় চালু ছিল। জার্মান সরকারের সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলের ( জার্মান তরঙ্গ) খবর পড়ে মনে হল বেশ কিছুদিন ধরেই পূর্ব জার্মানির শহর ও গ্রামে মানুষ প্রতিষ্ঠার ধুম পড়েছে । সেই আগের দিনের মতো ? সরকার রোটি কাপড়ার সন্ধান দেবেন , মকান মিলবে সস্তায়? ... ...
এনসিপির গোপালগঞ্জ সফর চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এবং এর রেশ বহুদূর পর্যন্ত যাবে আমার বিশ্বাস। এনসিপি এখন এইটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করবে। মুজিববাদকে কবর দিবে বলে আসছে ওরা, এর অর্থ হচ্ছে ৭২ সালের সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলা হবে, জুলাই সনদ ঘোষণা হবে। লাশ না পড়লে এই রাজনীতিটা তারা সহজেই করতে পারত। কিন্তু চারজনের লাশ, তাদের পরিবারের আহাজারি এখন পর্যন্ত ভারি হয়ে আছে পরিবেশ। রমজান নামের যে ছেলেটাকে মারছে তাকে পুলিশ ধরে রেখেছে এমন ভিডিও দেখা গেছে। পরে তাকে মৃত পাওয়া গেছে। যদিও এই সব জালিমদের হৃদপিণ্ডে বিন্দুমাত্র কাঁপন ধরায় না। আর্মির একটা ভিডিও দেখলাম, রাতে গোপালগঞ্জে কারফিউর সুযোগে রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে সম্ভবত। কারণ ভিডিওতে সেনা সদস্যরা উদ্যম নৃত্য করতে দেখা গেল! এইটা কবের কিংবা ফেক কি না জানি না। পেজটা আর্মির নানা খবরাখবর দেয়, তারাই দিয়েছে এই ভিডিও! কতখানি নিষ্ঠুর হলে এমন করা সম্ভব? ... ...
আগামীকাল ১৬ জুলাই হয়ত আরেকটা ম্যাসাকার হতে পারে। এনসিপি গোপালগঞ্জ যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সারজিস, হাসনাত মুজিববাদকে কবর দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে গোপালগঞ্জ যাচ্ছেন। গোপালগঞ্জে কালকে কী হবে তা বলা মুশকিল। যদি টুঙ্গি পাড়ায় ঢোকার চেষ্টা করে? যদি বঙ্গবন্ধুর কবর ভাঙার চেষ্টা করে? এরপরে কী হবে আমি জানি না। আবার একটা রক্তপাতের দিকে যদি দেশ এগিয়ে যায় আমি অবাক হব না। কোন পক্ষের রক্ত আমি জানি না। এখন তো সব তাদের হাতেই। এবার হয়ত রক্ত আরেক পক্ষের যাবে? এবার হয়ত রক্ত আমারও যাবে! আমি আসলেই জানি না কালকে তেমন কিছু হলে আসলে কেমন হবে পরবর্তী বাংলাদেশের চেহারা! সবাই শান্ত থেকে যদি এমন একটা হঠকারী আয়োজন শেষ করে আসতে পারে তাহলে ভালো। আর রক্ত দেখতে চাই না, কোন পক্ষেরই না। ... ...
আমরা এই নিয়েই আছি। আমাদের সামনে অন্ধকার। শালার আবাল জনগণ নিজের সামনে অন্ধকার এইটাও বুঝতে অনলাইনে খুঁজে। কেউ যখন বলে কই অন্ধকার, সব তো ঝকঝক করছে। খুশি হয়ে অন্ধকারে উস্টা খাইতে খাইতে বাড়ি ফিরে। আগের থেকে তিন চারগুণ বেশি দামের ইলিশ মাছ দেখে আসছে বাজারে। সেই গল্প করতে করতে ঘুমায় যায়। আমরা পণ করে বসে আছি আমরা চোখ খুলব না। আমরা নিয়ত পাকা করে বসে আছি ছাগলের চাষ অব্যাহত থাকবে এই দেশে। ছাগলের দেশে নোবেল ম্যান! কম্বিনেশন জবরদস্ত, তাই না? ... ...
এবার আরেকজনের গল্প বলি। জিজ্ঞাস করলাম সব ওইপাশ থেকেই আসে, এদিক থেকে কী যায়? ও এক আশ্চর্য পণ্যের কথা বলল। কমন যেগুলা তা তো জানিই, আমি শুনে আশ্চর্য হয়েছিলাম যে এখান থেকে ফগ বডিস্প্রে যায়! ধমক দিয়ে বলেছিলাম, আরে ধুর, ফগ তো ইন্ডিয়ান জিনিস, ওইটা এই পাস থেকে যাবে কেন? ও হাসতে ছিল। আমি ওর হাসি দেখেই বুঝে ফেললাম কাহিনী কী! আমাদের মহান চকের মাল! চকে তৈরি হয় না এমন প্রসাধনী এই দুনিয়ায় সম্ভবত নাই। সেই দুই নাম্বার জিনিস দুই নাম্বার পথে ভারতে যাচ্ছে! চকের এই স্প্রেয়ের চাহিদা না কি খুব বেশি ভারতে, মানে দুই নাম্বার ব্যবসায়ীদের কাছে। ... ...
পূর্ব জার্মানির নেতা মদরো বললেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চুরমার হয়ে যাওয়া দেশকে গত চল্লিশ বছর যাবত অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা যেখানে নিয়ে এসেছি সেখানে মানুষের দারিদ্র্য নেই। মানি আমাদের রাজনীতি ছিল অন্য, তেমনই বিক্রির বাজার , মুদ্রানীতি , প্রাতিষ্ঠানিক সংগঠন সবই আলাদা । জানি পশ্চিমি বাজারি লড়তে গেলে যে পরিমাণ অর্থ নিবেশ , ইনভেস্টমেন্ট প্রয়োজন সেটা আমাদের হাতে নেই । আমরা চেষ্টা করেছি জীবনযাত্রার মানকে উন্নত রাখতে, বিদেশি দেনার বোঝা নামিয়ে আনতে। ফলে ঘাটতি পড়েছে বিনিয়োগে । পশ্চিম জার্মানির তুলনায় আমরা বাজারি দক্ষতায় পিছিয়ে আছি, পথ পরিবর্তনের কাল এখন , অনেক কিছু শেখার আছে তবে আমাদের বিশ্বাস যদি আর্থিক সহায়তা এবং টেকনিকাল সহযোগিতা পাই, ধীরে হলেও আমরা সঠিক নিশানায় পৌঁছুতে পারি -আপাতত আমাদের এই দুই দেশ চলুক সমান্তরাল রেল লাইনের মতন , থাকুক আমাদের মুদ্রা মার্ক, অবশ্যই বদলে যাবে তার ম্যানেজমেন্ট , ফিস্কাল পলিসি । আমাদের মিলিত উদ্যোগে এই দুটি লাইন একদিন আর সমান্তরাল থাকবে না , মিলে মিশে এক হবে। পশ্চিম জার্মানির নেতা হেলমুট কোল বললেন, পাশাপাশি দুটো জার্মানি নয়, আমি চাই একটাই লাইন, একই শৃঙ্খলা, দুটি দেশ নয়,চাই একটি দেশ – এক জাতি এক প্রাণ একটা ! পুনর্মিলন , রি ইউনিফিকেশান। একই স্টাইলের ডেমোক্রেসি , বাজারি অর্থনীতি ,ব্যাঙ্কিং আর সবার আগে, একই মুদ্রা , কারেন্সি ইউনিয়ন ! ... ...
প্রতি বছর ১ জুলাই গুলশান দুইয়ে হোলি আর্টিজেন শহীদের স্মরণে তৈরি একটা ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হত। নিহত পুলিশ সদ্যসদ্যের জন্যই এইটা বানানো হইছিল। বিভিন্ন দূতাবাস যাদের নাগরিক মারা গেছে এই ঘটনায় তাদের লোকজন ফুল দিয়ে স্মরণ করত হোলি আর্টিজেন বেকারির ওই বাড়িটায়। মহান ৫ আগস্টের পরে হিযবুত তাহরীরের লোকজন ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এই ভাস্কর্য। দিয়ে খেলাফতের ঘোষণা সম্বেলিত পোস্টার লাগিয়ে দেয়। কোন দূতাবাস আর এবার সেই ৫ নাম্বার বাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে জান নাই। ইতালির দূতাবাসের একটা ছবি দেখা গেছে, তাঁরা দূতাবাসের ভিতরেই স্মরণ করেছে তাঁদের নিহত নাগরিকদের। কতখানি নতজানু মৌলবাদের প্রতি তার আরেকটা উদাহরণ না দিলেই না। চিন্ময় দাস প্রভুকে দেশদ্রোহী মামলায় আটক করা হইছে। কী করেছেন তিনি? কোথায় জানি ইস্কনের পতাকা জাতীয় পতাকার ওপরে লাগানো ছিল! এই হাস্যকর কারণে তাঁকে দিনের পর পর বন্দি করে রাখা হচ্ছে। জামিন আবেদনে আইনজীবী দেওয়া হয় নাই প্রথম দিকে। চট্টগ্রামে এই নিয়ে গণ্ডগোলে একজন আইনজীবী মারা গেছে। এখন সেই মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে চিন্ময় দাসকে! তিনি পুলিশ হেফাজতে থেকে ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলেছেন একজন আইনজীবীকে! আইনজীবী আলিফ হত্যার প্রধান আসামি চিন্ময় দাস! এই হল নোবেল জয়ী সরকার প্রধানের কাজকাম! ... ...
নিউ ইয়র্ক শহরে তুলকালাম কাণ্ড । প্রাক্তন স্টেট গভর্নর অ্যানড্রু কুয়োমোকে (Cuomo ) হারিয়ে আগামী নভেম্বর মাসে নিউ ইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন পেয়েছেন চৌতিরিশ বছর বয়েসের গুজরাতি মুসলিম যুবক জোহরান মামদানি । তাঁর পিতা হার্ভার্ডের পি এইচ ডি , কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর মাহমুদ মামদানি, মাতা কুড়ি বছর বয়েসে রাউরকেলা থেকে হার্ভার্ডে স্কলারশিপ বিজেতা ,স্বনামধন্যা চিত্র নির্মাতা মীরা নাইয়ার ( মিসিসিপি মাসালা , দি নেমসেক, মনসুন ওয়েডিং এবং অন্যান্য ) আমার কৌতূহল জাগলো অন্য কারণে। সম্পূর্ণ অনাবশ্যক তথ্য সংগ্রহ, তার তত্ত্বাবধান, ফ্যাক্ট চেকিং এবং সম্প্রচারে আমার নিষ্ঠা প্রগাঢ়। সিধু জ্যাঠাকে গুরু মেনে এসেছি; জানি মাঝে সাঝে আপাত অনাবশ্যক তথ্যও কাজে লেগে যায়। শিকা অকারণে ছেঁড়ে না। এবার আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হল এই যুবকের নামটির ওপরে - জোহরান কোয়ামে মামদানি। ফারসি জোহর শব্দের অর্থ আলো, জোহরান মানে উজ্জ্বল । কিন্তু কোয়ামে শব্দটি ইউরোপীয় বা ভারতীয় নয় , এটির মূল আকান , ঘানাইয়ান । জানা গেলো জোহরানের পিতা স্বাধীন ঘানার ( এবং আফ্রিকার) প্রথম প্রেসিডেন্ট কোয়ামে এনক্রুমার নামের স্মরণে পুত্রের মাঝের নামটি দিয়েছিলেন । ... ...
ওই সীমান্তে সন্ত্রাসী এসে ঢুকে মানুষ মেরে যায় আর আমাদের এই সীমান্তে ১৪ বছরের স্বর্ণা দাস গুলি খেয়ে মারা যায়। ভারতের সীমান্ত রক্ষীদের যোগ্যতা নিয়েও তো সন্দেহ করতে পারে কেউ। কেউ তো প্রশ্ন করতে পারে যে অমিয় ঘোষদের সব বীরত্ব শুধু ফেলানি আর স্বর্ণা দাসের মত কিশোরীদের সাথেই, অন্য দিকে মানুষ মরে ২৬ জন! ... ...
সেকালে ইন্টারনেট নেই, বাংলা কাগজে বিদেশ বলতে বিলেত আমেরিকার খবর ছাপা হয়, সি এন এন অনেক দূরে , ক্রিকেটের হাল হকিকত জানতে বি বি সি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে স্পোর্টস রাউনড আপ শুনি । তবু এরই মধ্যে দিন দুয়েক আগে আনন্দবাজার পত্রিকার পেছনের পাতায় সোমালিয়ার মোগাদিশুতে ছিনতাইকারিদের কবল থেকে লুফতহানসার একটি বিমান উদ্ধার করা গেছে বলে পড়েছি। আমার জানার কোন কথাই নয় যে ঠিক সেই দিনই প্রায় এক মাস আগে অপহৃত জার্মান এমপ্লয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের মাথা (বুন্দেসফেরবান্দ ডের ডয়েচেন ইন্দুস্ত্রি ) হানস মারটিন শ্লায়ারের মৃতদেহ একটি আউডি গাড়ির ভেতরে পাওয়া গেছে , মুলহাউসের পথে , ফ্রান্স/জার্মান সীমান্তে । তার মাত্র কয়েকমাস আগে, জুলাই মাসে, ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে ওবারউরসেলে ড্রেসনার ব্যাঙ্কের সি ই ও ইউরগেন পনটো নিহত হয়েছেন তাঁর বসার ঘরে। স্টামহাইম জেলখানায় আত্মহত্যা করেছেন তিনজন সন্ত্রাসবাদী বন্দি । এই সময়টাকে বলা হবে জার্মানির হেমন্ত । ভিসা পাওয়া গেল । ২০শে অক্টোবর , ১৯৭৭। পু: আমার কথা সেই হেমন্তের দিনগুলিতে যা দেখেছি , শুনেছি এ শুধু তারই বয়ান। আমি এক নিরীহ পথচারী , সামান্য নিরপেক্ষ দর্শক মাত্র । দূত এবং কথক অবধ্য। ... ...