

ত্রয়ী হয়সালা মন্দির - বেলুর , হালেবিদু , সোমনাথপুরা ... ...

যারা জানেন না তাঁদের জন্য জানিয়ে রাখি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আমার খালাত বোন। খালাত বোন বললে যেমন মনে হয় তেমন না কিন্তু আমাদের সম্পর্ক। জ্যোতির বড় হওয়া আমাদের উঠানে। খালা তখন আমাদের বাড়িতেই থাকে। আমাদের সাথে খেলতে খেলতেই জ্যোতি আজকের তারকা। আক্ষরিক অর্থেই আমাদের কোলেপিঠে করেই ওর বেড়ে উঠা। বাড়িতে মেয়ে শিশু আর না থাকায় জ্যোতির বড় হওয়াটা হয় আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলে। আমাদেরও একটা বল বয় দরকার ছিল, বল মেরে কারো বাড়িতে পাঠিয়ে দিছি, জ্যোতি দৌড়… বলার আগেই জ্যোতি তুফান বেগে ছুটে যেত। সবার শেষ ব্যাট দিতাম, ওইটার জন্যই বসে থাকত। লাস্ট ব্যাটার হিসেবে ওকে বলা হত তুই শুধু দাঁড়ায় থাকবি, উইকেট পড়তে দিবি না। ও দাঁত চেপে দাঁড়ায় থাকত। পায়ে বল লাগলেও একটু উশ আস করে আবার দাঁড়ায় থাকত। ব্যথায় যদি কান্না করে তাহলে তো আর আমরা ওকে খেলায় নিব না, তাই ব্যথা চেপে দাঁড়ায় থাকত। এই হল ওর শুরু। এরপরে বিকেএসপিতে ক্যাম্প, এরপরে ধীরে ধীরে শুধু ওর উত্থান। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া, এশিয়া কাপের ফাইনালে জ্যোতির দারুণ সেই ইনিংস, যাতে ভর করে প্রথম কোন বড় টুর্নামেন্ট জেতার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এর আগে পরে এখন পর্যন্ত নারী পুরুষ দল মিলিয়ে আর কোন কাপ জিততে পারে নাই। এরপরে অধিনায়কত্ব। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া, প্রথম বিশ্বকাপেই নজরকারা পারফর্ম করা, এরপরে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া। দেশের মাটিতে সিরিজ জেতা পাকিস্তানের সাথে, ভারতের সাথে সমতায় সিরিজ শেষ করা, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে তাদেরকে হারানো, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে হারানো এমন কত কত অর্জন। সবগুলার পিছনে জ্যোতির অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নাই। এমন করে জ্যোতি নিজেকে নিয়ে গেছে আলাদা উচ্চতায়। এবার ওর তারকা খ্যাতির বিপরীত চিত্র দেখার সুযোগ আসছে। দেখছে কত কুৎসিত হতে পারে দুর্বল বুদ্ধিমত্তার মানুষের হাতে প্রযুক্তি থাকলে কী করতে পারে তারা! ... ...

নির্বাচন নিয়ে নতুন যে তামাশা শুরু হয়েছে তা এক কথায় অনবদ্য! জামাত জোর গলায় গণভোট চাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে। বিষয় হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য। সংবিধান পরিবর্তন করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এই নিয়ে হ্যাঁ না ভোট। আমি প্রথমে এইটা নিয়ে খুব একটা ভাবি নাই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এইটা একটা মস্ত সুযোগ লীগের জন্য। এরা যে বিপুল আগ্রহ নিয়ে গণভোট চাচ্ছে তার কারণ হচ্ছে তারা ধরেই নিয়েছে হ্যাঁ জিতবে। আচ্ছা, যদি না জিতে? এই ভোটে তো কোন প্রার্থী নাই। তাই মানুষের ভোট দিতে সমস্যা কই? লীগের যা জনপ্রিয়তা আছে, সেই সাথে বর্তমান সরকারের যে সুপার ব্যর্থতা, তাতে না জিতে তো খুব স্বাভাবিক। তখন কী হবে? এর উত্তর একটা হচ্ছে তারা হ্যাঁ না ভোটকে সুষ্ঠু ভাবে হতে দিবে না। ওইটাকে কারুকাজ করে হ্যাঁ পাস করাবে। দুই নাম্বার হচ্ছে তারা এইটা নিয়ে ভাবেই নাই। এতে যে লীগের জনপ্রিয়তা প্রমানের একটা পথ তৈরি হবে তা সম্ভবত বুঝতে উঠতে পারেনি। আচ্ছা, লীগ কি বুঝতে পারছে এইটা একটা সুযোগ তাদের জন্য? তাদের তো দেখি না গণভোটের পক্ষে কথা বলতে। আমার মনে হয় বলয়া উচিত। ... ...

দুই সমস্যার সমাধান করল দু'জন। অমিত জানাল সামনে বড় শহর তেজপুর আসছে। সেখানে কিছু পোশাক কিনে নেওয়া যেতে পারে; কন্যা রাজী। আমাদের ছবি আর পরিচয় পত্র হোয়াটসঅ্যাপ করে ওর পরিচিতকে পাঠিয়ে দিল বিপুল, সে আমাদের আই এল পি বানিয়ে রাখবে। তাহলে আর কী? চালাও পানসি বেলঘরিয়া; থুড়ি, চালাও বাস ভালুকপং। অপূর্বকে সব জানিয়ে আমাদের ট্রাভেলার গাড়ি ফের ছুটে চলল অরুণাচলের দিকে। ... ...

টুকরো টুকরো আশ কথা পাশ কথা। আগে যখন হাতে লেখা হত, পেন আর নোটবুক , তখন একে ডায়েরি বলত, ইদানিং বোধহয় যা ইচ্ছে তাই বলে! ... ...

আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর সূত্র একটাই। শান্তিতে থাকা। শর্ত একটাই আপনার শান্তি যেন অন্যের অশান্তি না হয়ে যায়। ব্যাস, এখন আপনি যা ইচ্ছা করেন আর শান্তিতে থাকেন। একটাই জীবন, যতভাবে শান্তিতে থাকা যায় সেই চেষ্টাই হওয়া উচিত প্রধান চেষ্টা। শুধু শর্তটা মনে রাখলেই চলবে। ... ...

রবীন্দ্রনাথ_এবং_শেক্সপিয়ার হলেন দুই ভাষার দুই প্রথিতযশা সাহিত্যিক। শেক্সপিয়ারের নাটক এবং সনেট ও রবীন্দ্রনাথের গান, প্রবন্ধ, উপন্যাস এবং ছোটোগল্প তাঁদের স্ব স্ব ভাষার এক পরম সম্পদ; অনুবাদ করে নিলে অন্যভাষার সম্পদও বটে। তবুও তাঁদের মহাপ্রয়ানের পরে ঠিক সেই মাপের কাউকে আমরা পেলাম না। না পুরুষদের মধ্যে। না নারীদের মধ্যে। অনেকে কাছাকাছি গেছিলেন, যেমন #ঝা_পল_সার্ত্রের কথা বলতে পারি। যিনি নাটক, প্রবন্ধ, গান লিখতেন এবং পলিটিক্সেও দারুণভাবে অংশগ্রহণ করতেন। ‘Existentialism’ নামে একটি দর্শনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। হয়ত necessary & sufficient condition তৈরি হয় নি। একথা বলাই বাহুল্য যে উক্ত দুজনের কণামাত্র পেলেই আমাদের মানব জীবন সার্থক হয়ে যায়। এখন নানা জায়গাতেই আজকাল বিতর্ক সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে নানান বিষয়ে। সেই রকমই এই কাল্পনিক বিতর্ক সভাটি একজন অ-নারী এবং ‘আনাড়ি’ ও ‘দূর্বল’ পুরুষের নিবেদন ... ...

"শস্য নেই। যা আছে তা যৎসামান্য। শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি।" সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ লালসালু উপন্যাসে লিখেছিলেন। অত বছর আগে লেখা এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের জন্য শতভাগ প্রযোজ্য এই কথা গুলো। প্রতিটা শব্দ এখনকার জন্য প্রযোজ্য। আমরা এই সমাজেই বাস করছি। ... ...

১৯৭৭ সালে ঢাকার এক পুরাতন বইয়ের দোকানে ইংরেজি বই খুঁজতে খুঁজতে দেখা হয়ে যায় সেবার আরেক কিংবদন্তি শেখ আব্দুল হাকিমের সাথে। তিনি ধরে নিয়ে জান সেবার অফিসে, কাজীদার সাথে দেখা করাতে। কাজীদার নামে মাসুদ রানা দিয়ে শুরু। এরপরে কাজীদার আরেক ছদ্মনাম শামসুদ্দিন নওয়াব নামে জুলভার্নের অনুবাদ। এবং এরপরে ক্যানেথ অ্যান্ডারসনের শিকার কাহিনী নিয়ে বই জঙ্গল, যা প্রকাশ নিজের নামে রকিব হাসান। রবার্ট আর্থারের লেখা থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজের বই পড়ে তাঁর মনে হল ছোটদের জন্য এই বই বের করা যায়। জন্ম হল প্রথম আলো জরিপে শিশু কিশোরদের পড়া সবচেয়ে জনপ্রিয় সিরিজ তিন গোয়েন্দা। লিখলেন প্রথম বই তিন গোয়েন্দা। ... ...


পেরু নামক একটা দেশে বেরিয়ে এলাম দশ দিন। মাচু পিচু তো দেখা হলোই। আর দেখলাম পেরুর গ্রাম, শহর, আধা শহর। পেরুতে কোথাও জঞ্জাল নেই, প্লাস্টিক নেই। ... ...

এককালে পশ্চিম বঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে দুর্গা পুজার আসরে বসত পালাগান, শিবায়ন। বাংলায় সম্ভবত বেশ কিছু পালাকার একসময় শিবায়ন, মনসামঙ্গল এইসব পালাগান লিখে গেছে। এখন আর সাবেকী দুর্গাপুজাতেও আর এরকম আসর বসতে দেখা যায়না। শিবায়ন গানের কিছু স্মৃতিকথা এই পর্বগুলিতে রইল। ... ...

বার্লিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ আলাপ হল পরের বছর , ড্রেসনার ব্যাঙ্কের কল্যাণে। আমি কোন এক দূর দেশের মানুষ , ক্রমশ ভাষার জড়তা কাটিয়ে, দেশটাকে চিনবার চেষ্টা করে গেছি , কিছুটা কাজে কিছু অকাজে খানিক সময় কাটিয়েছি বার্লিনে । প্রায় পাঁচ দশক কাটল; আজও হয়তো আচ্ছন্ন হয়ে আছি সেই শহর এবং তার ইতিহাসের একটা বিচিত্র সময়ের মোহে। নির্দ্বিধায় বলতে পারি টাইম মেশিনে চড়ার সুযোগ পেলে আমি যেতাম ১৯২০ থেকে ১৯৩২ সালের বার্লিনে । রোদিকা আমার এই স্বপ্ন যাত্রার মূলে কুঠারাঘাত করে অবশ্য বলেছে ১৯৩৩ সালের ২৯শে জানুয়ারি সেখান থেকে পালানোর টিকেট সেই টাইম মেশিনে পাওয়া যেতো না ! ... ...

ইতিহাস ঐতিহ্য প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে? জেনজি মনে করে এগুলার কোন মূল্য নাই? নেপালে সিংহ দরবার পুড়িয়ে দিয়েছে। এখান থেকেই বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি। এমন একটা জায়গা পুড়িয়ে দিল! জেনজির কাছে এগুলার মূল্য নাই, তাই এগুলা থাকলেই কী না থাকলেই কী? আমরাও একই সূত্রে হারিয়ে ফেলব আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য? মুক্তিযুদ্ধের সময় আন্দ্রে মালরো বিশ্ব ব্যাপী জনসমর্থন আদায়ে নিরলস কাজ করেন। তিনি প্রয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ গ্রহণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশে। তিনি আসনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে আজকে শিবির জয় উল্লাস করছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে বলেন আমি কথা বলছি পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র এমন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মৃতের সংখ্যা জীবিতদের থেকে বেশি! এখানেই উল্লাস করছে একাত্তুরের পরাজিত শক্তিরা। আর আমাদেরকে বলা হচ্ছে এইটাই এখন থেকে সত্য! অতীত ভুলে যাও ... ...



কেন যখন এক্সেভেটর দিয়ে ৩২ নাম্বার গুড়িয়ে দেওয়া হল তখন আপনাদের মুজিব প্রেম জেগে উঠল না? একজন একটা কথাও বলতে পারলেন না? একটা ছোট্ট পোস্ট? একটু নিন্দা? আজকে শোক প্রকাশ করাটা একটু বিলম্বিত হয়ে গেল না? এই শোক তো যেদিন ৩২ নাম্বার গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেদিনই জানানো উচিত ছিল আপনাদের। কেন দেরি করলেন? কিসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন? আবার প্রশ্ন, ভয় পাচ্ছিলেন? মেরুদণ্ড কই? বাঁধনের আবার কিসের ভয়? সে আজকে শোক জানাতে পারল আর যেদিন ৩২ নাম্বার ভাঙা হল সেদিন পারল না? সেদিন শোক জানানোর মত কিছু হয় নাই? ... ...

বার্লিনের রসিকতায় টীকার ভূমিকা শূন্য ; বার্লিন থাকে বার্লিনে , বার্লিনার কোথাও যায় না। এ পাড়া থেকে ও পাড়ায় বাসা বদল করাটাই গর্হিত কর্ম বিবেচিত হয় । বার্লিনের বাচনভঙ্গিতে মিশে আছে ফ্লেমিশ, ফরাসি, স্লাভ, ইহুদি তাদের মুখের ভাষা ও হাসির ঝলক নিয়ে ! কে কোথা হতে কবে এসেছে সে তর্ক নিরর্থক ; তার আধার কার্ড নেই, বাপ ঠাকুরদার জাতি ধর্মের কোন প্রমাণ পত্র নেই। তারা সবাই বার্লিনার । আমার পাঠকের সামনে বার্লিনের রসিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তাই কুশীলবের পরিচয়, স্থান, সময়টা সকাল না সন্ধ্যে এমত ধারাভাষ্যকে সম্পূর্ণ বর্জন করেছি ; একটি সমস্যা অবশ্য থেকেই যায় -বার্লিনের কৌতুক অনেকটা ভাষা নির্ভর , শব্দ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের এই মজার খেলার মূল আবেদন জার্মান ও ইদিশ ভাষাভাষীর কাছে । অন্য ভাষায় ‘ বার্লিন কৌতুক সঞ্চয়িতা’ নামক কোন গ্রন্থ চোখে পড়ে নি। সাধ্যমত চেষ্টা করেছি বার্লিনের মুখের ভাষার মজাকে বরানগর , শ্যামবাজারের রক অবধি পৌঁছে দিতে , যদিও মনে রাখতে হবে আপনার আমার চিত্ত বিনোদনের জন্য বার্লিনার কোন গল্প ফাঁদে না। সেই চিত্রনাট্যে ফোরগ্রাউনড , আবহসঙ্গীত, মেকআপ বা সেটের ভূমিকা নগণ্য , সকল রসের মূল তার সংলাপ। ... ...

যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা অশ্ত্রু গঙ্গা বহমান তবু নাহি ভয় হবে জয়। জয় শেখ মুজিবুর রহমান। ... ...