সুবর্ণদা, অর্থাৎ ডা. সুবর্ণ গোস্বামীর বদলি হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন বলছে, রুটিন বদলি। দারুণ লাগছে শুনতে। সরকারি চাকরিতে রুটিন বদলি তো হবেই, সহজ সরল বিশ্লেষণ। ডা. সুবর্ণ গোস্বামীর কোন 'রুটিনে' বিগত দশবছরে ছয়বার বদলির অর্ডার বেরোয়, তা আমি জানি না। এইবার রীতিমতো ডিমোশন পোস্টিং।
কেবল মনে করিয়ে দিয়ে যাই, অভয়ার জন্য ন্যায়বিচারের দাবীতে যে আন্দোলন বহমান, তার ফলশ্রুতিতে কয়েকটি বাস্তুঘুঘু আধিকারিকের বদলি হয়েছিল। যাঁরা বদলি হয়েছিলেন, তাঁরা সম্মিলিতভাবে তাঁদের অপদার্থতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। একজন তো (পড়ুন মুখ্য স্বাস্থ্যসচিব) চূড়ান্ত অপদার্থতার প্রমাণ দিয়েও দিব্যি এখনো একই চেয়ারে এসে বসছেন। (সন্দীপ ঘোষ নামক স্বয়ং মহাপুরুষটির বদলির কাহিনী নিয়ে তো নতুন কথাঞ্জলি লেখা হয়ে যাবে, তাই আর এইখানে উল্লেখই করলাম না।)
তাঁদের কারো কিন্তু ডিমোশন হয়নি। একই র্যাংকের অন্য পদে বহাল করা হয়েছিল। বদলির অর্ডারের সময় সাংবাদিক সম্মেলনে হাসিমুখে বলা হয়েছিল, "আরে ও তো ওইখানেই যেতে চাইছিল, তাই পাঠালাম।"
ডিমোশন কার হল? বিচারের দাবীতে আন্দোলনে থাকা, প্রতিবাদে থাকা একজনের- যিনি সুষ্ঠুভাবে নিজের কাজ করে যাচ্ছিলেন।
সুবর্ণদার আগেরবারের বদলি আটকানোর জন্য স্থানীয় নেতা, মানুষজন সকলেই মিছিল করেছিলেন। প্রতিবাদ করেছিলেন বদলির।
এইবার এই অন্যায্য বদলির প্রতিবাদে কী হবে, জানি না।
কেবল এটুকু জানি, প্রতিবাদ করলেই, ডিমোশন বা হুমকি।
অপরাধ করলে, প্রাইজ পোস্টিং বা তথ্য প্রমাণ লোপাটে সর্বোচ্চ সাহায্য। সাথে ফ্রিতে মহাকাশ বিজ্ঞানের চর্চার ছিটেফোঁটাও মিলতে পারে।
বারংবার এই ঘটনা ঘটেছে। আগামীতেও ঘটবে। আগা এবং গোড়া, সবেই গলদ থাকলে এরকমই হয়।
যায় আসে, আবার আসেও না। কারণ, ডা. সুবর্ণ গোস্বামীরা যেখানেই যাবেন, প্রতিবাদ করবেন। লড়বেন, লড়তে শেখাবেন। গড়বা নাচা, ইউফোরিক হয়ে বাজে ছড়া লেখা, বাজে বকার ফাঁকে আর বালিচুরি-ত্রিপলচুরি-ট্যাব স্ক্যামের ফাঁকে সময় হলে এই নেতা-মন্ত্রীদের (ওদের তো আবার সবাই নেতা-নেত্রী) বোঝা উচিত, সবাইকে কেনা যায় না রে বাবা।
আপনারা কেবল মনে রাখবেন, ক্ষমতার ঔদ্ধত্য শেষ কথা বলে না। অন্যায্য বদলি করিয়ে মুখ বন্ধ করা যায় না। প্রতিবাদ হচ্ছে আর হবেও।
মনে রাখবেন, বিচারের দাবী এখনো ফুরোয়নি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফেরানোর দাবী এখনো ফুরোয়নি। এখনো ফুরোয়নি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবীর মাধ্যমে মেডিক্যালসহ সমস্ত কলেজ ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াই।
এ লড়াই চলবে। শেষতক।
#WE_DEMAND_JUSTICE