কলমে : দীপাঞ্জয় ঘোষ
ঠিক কীভাবে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির রাজনীতিকে মান্যতা পাইয়ে দেন, খেয়াল করুন।
National Medical Commission এ প্রস্তাবনা অনুযায়ী MBBS এর অন্তিম বর্ষের পরীক্ষার পর আবার একটা MCQ পরীক্ষা হবে, যার নাম NEXT1। এই NEXT1 এ পাশ করলে তবেই ইন্টার্নশিপে জয়েন করতে পারবে মেডিকেল ছাত্ররা। অর্থাৎ, ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষায় পাশই যথেষ্ট নয়, দিতে হবে আরো একটা পরীক্ষা। তাতে অকৃতকার্য হলে আবার ৩মাস পর দেওয়ার সুযোগ হবে।
এবার একবছরের rotatory internship এর পর আবার একটা পরীক্ষা হবে, যার নাম NEXT2। এবার NEXT1 এ প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে মেডিকেল ছাত্ররা MD, MS এর মতো নানাবিধ স্নাতকোত্তর পড়াশোনায় প্রবেশ করতে পারবে, তবে তার জন্য NEXT2 পাশ করতে হবে। কারণ NEXT2 পাশ করলে তবেই মিলবে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট।
অর্থাৎ, ব্যাপারটা সীতার অগ্নিপরীক্ষার মতো, বারবার দিতেই হবে।
এবার খেয়াল করুন, গতকাল ডাক্তার অনিকেত যে ৫৯জনের কথা বললেন, যাদের খাতা দেখলে ১০০এ ১০ও আসবে না, সেটা একটা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এ থেকে বিজেপি অবশ্যই NEXT এর পক্ষে বলার ন্যারেটিভ পাবে এবং সেটা অস্বাভাবিকও নয়। উপরন্তু যারা NEXT এর বিরোধীও ছিলেন, তারাও এমতাবস্থায় NEXT কে সমর্থন করা ছাড়া উপায় পাবেন না।
NEXT চালু হলেই সবকিছু দুর্নীতিমুক্ত হবে, একথা ভাবা ভুল। গতবারের NEET এর রেজাল্ট, আশা করি, কেউই ভুলে যাননি। একদিকে যেমন NEXT এর চাপে ছেলেমেয়েদের মধ্যে কাজ শেখার আগ্রহ কমবে, অন্যদিকে বাড়বে কোচিং সেন্টার তথা অ্যাপের রমরমা বাজার। যাঁতাকলে পড়বে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা।
সম্পূর্ণ চিত্রটা খেয়াল করলে বুঝবেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলের কিছু লুম্পেনকে বাঁচাতে গোটা স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যবস্থার এক চরম বাণিজ্যকরণকে আপাত যৌক্তিক করে দিচ্ছেন মানুষের দৃষ্টিতে। পুঁজিবাদকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন তিনি।