এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • রবি রেখা

    PRABIRJIT SARKAR লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১১৭ বার পঠিত
  • কলেজে পড়ার সময় আমায় সাহিত্য পেয়েছিল। তখন অর্থনীতি অনার্সের পড়া কম পড়ে সাহিত্য চর্চা করতাম। একটা ছোট পত্রিকা বার করতাম। এম এ পড়তে গিয়ে আর চালাতে পারলাম না পত্রিকা। মূলত career গড়ার তাগিদে। সেদিন খুঁজে পেলাম এই গল্পটা। আমাদের ওই পত্রিকা ছাড়া কলেজ ম্যাগাজিনেও মনে হয় বেরিয়েছিল। অনেক কষ্টে এখানে টাইপ করলাম। করতে করতে অনেক কিছু বাদ দিলাম টাইপ করার শ্রম কমাতে।

    রবি রেখা

    'নাঃ। আর ভালো লাগে না জীবনটা'-ঘুণে ধরা ঝাঁঝরা কাঠের ভেঙে পড়ার শব্দ যেন বেজে ওঠে অর্ধেন্দুর হতাশা ভরা কণ্ঠে। ওর পুরো নাম অর্ধেন্দু দাস। আমার কলেজ সহপাঠী। খ্যাপাটে ধরণের। কেউ ওকে ঠিক পছন্দ করে না। না, বলতে ভুল হয়ে গেল। পছন্দ করে না ওর খ্যাপামি। বাস্তববর্জিত ওর আচার আচরণ। আমি অবশ্য ওর সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। ও বড়ই উদার, বিশেষত বন্ধুর উদরপূর্তির ব্যাপারে। আমাকে তো মাঝে মাঝেই ঘোষ কেবিনে নিয়ে গিয়ে চপ কাটলেট খাওয়ায়। চপ কাটলেটের প্রতি সুগভীর মমত্ববোধের বশে কিনা জানি না, ওর প্রতি কেমন যেন এক টান অনুভব করি। অন্যান্য দিনের মত সেদিনও ঘোষ কেবিনের এক পাশে একটা চেয়ার দখল করে আছি চপ নিধনের মহৎ কর্মে প্রবুদ্ধ হয়ে। মুখোমুখি অর্ধেন্দু। উসকো খুস্কো চুলে মূর্তিমান হতাশা।

    'কেন? আবার কী হল?'-একটা বেয়াড়া চপকে কায়দা করতে করতে কর্তব্যবোধবশত: প্রশ্নগুলো ছুঁড়ে দিলাম। ওদিক থেকে কোন সাড়া নেই। অগত্যা চোখ তুলে তাকাই। নিবিষ্ট মনে অর্ধেন্দু নিজের ডান হাতটা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে। কাজেই দক্ষিণহস্তকৃত্য স্থগিত অনির্দিষ্টকালের জন্য। ওর প্লেটের আধ খাওয়া চপগুলো যেন চেয়ে আছে মহানির্বানের প্রত্যাশায়। আমার প্রশ্ন ওর কর্ণকুহরে প্রবেশ করেছে কিনা বোঝা গেল না। কর্ণদ্বারে আঘাত করেছে নিশ্চয়ই। তবে কানের ভিতর দিয়ে 'মরমে' প্রবেশ করেনি।

    'কিরে, অত খুঁটিয়ে কী দেখছিস?'-আমার অসহিষ্ণু জিজ্ঞাসা। কোন উত্তর নেই। আচ্ছা বিড়ম্বনায় পড়া গেল তো! চপ সৎকারে বিরত হই। কিছুক্ষন সব চুপ চাপ। এই নৈ:শব্দ‌ বড়ই অস্বস্তিকর। আমার অনন্ত প্রতীক্ষা কতক্ষণে ও নিজেতে ফিরে আসবে।
    'বুঝলি সুধাময়, আমার বাঁচাটা নিরর্থক-futile..' হতাশাজর্জর কণ্ঠে বেজে ওঠে অর্ধেন্দু।
    'হঠাৎ তোর এই আবিষ্কার!'-ওর কথার মাঝে বিস্ময়ের ছলে আমি খোঁচা দি'।
    'কি হবে বেঁচে থেকে?' - আমার খোঁচাকে তোয়াক্কা না করে বলে যায়, 'বাঁচা মানে বাঁচার মত বাঁচা।...'
    ওঃ কি যন্ত্রনা! বাঁচা নিয়ে এই বাচালতা না শুনে পালাতে পারলে বাঁচি। শুধু চপের লোভে চুপচাপ শুনে যাই। চপ গলাধঃকরণের বদলে বেচাল বাচালতা শুনে যাওয়া বিড়ম্বনা ছাড়া আর কী?
    'বাঁচা মানে কি কোনরকমে একটা চাকরি যোগাড় করে দশটা-পাঁচটা ডিউটি করে বাদুড় ঝোলা হয়ে বাড়ি ফেরা আর বউয়ের সঙ্গে খুনসুটি?'
    অর্ধেন্দু বেশ উত্তেজিত হয়ে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ফেলে। তারপর আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আবার শুরু করে।
    'আমি বাঁচা বলতে বুঝি যে বাঁচা চিরন্তন, যে বাঁচা শাস্বত, যে বাঁচা ...'- চিরন্তনের আর কোন প্রতিশব্দ চট করে ওর মুখে এলো না। সেই সুযোগে আমি বলে উঠলাম: 'তুই বড় উত্তেজিত মনে হচ্ছে। ব্যাপারটা কী?'
    'উত্তেজিত হবার কি আছে? অনেকদিন ধরেই এই কথাগুলো বুকে জমে আছে।'
    'আর আজ সেই কথা নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গ?'- পরিবেশ হালকা করার জন্য টিপ্পনি কাটি।
    'তুই ভেবে দেখ এইযে আমি জন্মেছি, একদিন কলেজের পাঠ চুকিয়ে দিয়ে সংসারধর্ম প্রতিপালন করব, তারপর বুড়ো হয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে একদিন পৃথিবীকে গুড বাই জানিয়ে চলে যাব। কেউ মনে রাখবে না একদিন অর্ধেন্দু দাস বলে কেউ এসেছিল পৃথিবীতে।'
    এসব দার্শনিক কথা আমার ভাল লাগে না। কে এসব ভাবে? ভেজাল তেল মাথায় মেখে এমনি চুল উঠে যাচ্ছে। তার উপর এসব উটকো চিন্তা করে আর জীবনের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে চুল ছিড়ে মাথায় টাকলামাকান মরুভূমি বানাবো নাকি! নৈব নৈব চ।
    'কী রে, আজ চপ স্পর্শ করবি না পণ করেছিস নাকি?'-কথার মোড় ঘোরাতে শেষ চেষ্টা করলাম।
    ও সম্বিত ফিরে পেয়ে দ্রুত চপ শেষ করল। আমিও। কিন্তু ভবি ভুলবার নয়।
    'এরকম জীবন চাইনি, চাইও না', আগের কথার খেই ধরে ওর জীবন বিচিন্তা এগিয়ে চলে, 'আমি মরার পর আমার নামের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই, মানে চেয়েছি। কিন্তু কিছুই হবে না'।
    শেষ কথাটা আর্তনাদের মত শোনাল।
    'কি করে বুঝলি কিছু হবে না? এখনতো সবে উনিশ বছর। আরো তো কত বছর তোর জীবনের বাকি আছে।'
    অর্ধেন্দু নিরুত্তর। বেশ কিছুক্ষন কেটে গেল।
    'আরে তোর প্লেট খালি! দ্যাখ কান্ড।' এতক্ষন পর অর্ধেন্দু বস্তু জগতে ফিরে আসে। বয়কে ডেকে দু প্লেট কাটলেট অর্ডার করল। কাটলেটের অপেক্ষায় দুজনে চুপচাপ।
    'তুই হাত দেখায় বিশ্বাস করিস'- হঠাৎ ওর প্রশ্ন।
    'বিশ্বাসও করি না আবার অবিশ্বাসও করি না'-আমার উত্তর।
    'সে আবার কেমন কথা!'- অর্ধেন্দু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
    আমি খোলসা করে বলার চেষ্টা করি।
    'আমি এমন কিছু প্রমাণ পাইনি যে বিশ্বাস করব। আবার অবিশ্বাস করব সেরকম ভাবে খতিয়ে দেখিনি।'
    আসলে আমার খেয়ে দেয়ে অনেক কাজ আছে। সব ব্যাপার নিয়ে মাথা মাথা ঘামাই না। অর্ধেন্দুর কাছে এসব চেপে যাই।
    'আমি বিশ্বাস করি', অর্ধেন্দু জোরের উপর বলে চলে,'সব কিছু এ প্লাস বি হোল স্কোয়ারের ফর্মুলা দিয়ে প্রমাণ করা না গেলেও পামিস্ট্রি ভুল নয়।'
    আমাকে অবিশ্বাসী ঠাওরে অর্ধেন্দু কামান দাগে। আমি আর কি করি? পেটেন্ট করা মুচকি হাসি রেখে চুপচাপ শুনে যাই। কথায় কথা বাড়ে।
    'জানিস? আমাদের কুলগুরু আমার বাবার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হাত দেখে আগে ভাগে বলে দিয়েছিলেন।'
    কথাগুলো বলে অর্ধেন্দু একটু থামল, তারপর আমার প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভেদী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বোঝবার চেষ্টা করে বলল, 'এরপর তুই আমায় হাত দেখায় অবিশ্বাস করতে বলিস?' -অর্ধেন্দু আমার চোখে চোখ রাখে। তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে ওকে প্রশমিত করি- 'কাটলেট এসে গেছে। গরম গরম খেয়ে নে।'
    দুজনে কাটলেট খেতে খেতে কথা বলতে থাকি।
    'তুই জানতে চেয়েছিলি না আমি কি করে আমার কিছু হবে না জেনেছি?'
    -অর্ধেন্দু আমার প্রশ্নের জবাব দিতে চায়।
    'ও হ্যাঁ। কী করে?' -আমি আগ্রহ প্রকাশ করি।
    'আমার হাতে রবির ক্ষেত্রটা ভাল নয়। হাতে কোন রবি রেখা নেই। কাজেই কোন খ্যাতি প্রতিষ্ঠা ছাড়াই চলে যেতে হবে পৃথিবী ছেড়ে'। অর্ধেন্দুর মুখ কাঁচু মাচু।
    'ধ্যাৎ। রবি মানে তো সূর্য। রবি রেখাই বা কি?' আমার অবিশ্বাসী প্রশ্ন।
    'আরে বুদ্ধু! রবি খ্যাতি আনে। বিখ্যাত হস্তরেখাবিদ কিরো স্পষ্ট বলেছেন হাতে সুস্পষ্ট রবি রেখা না থাকলে বুঝতে হবে জীবনটা নামহীন খ্যাতিবিহীন অগৌরবের হবে। বুঝলি?' অর্ধেন্দু বুঝিয়ে চলে।
    'বুঝলাম। কিন্তু কোথায় কোন রেখা থাকলো না বলেই কি জীবনটা ব্যর্থ হয়ে যাবে? আমারতো মনে হয় প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ তার নিজের হাতে।' জোর দিয়ে বলি।
    'তোর কথা সত্যি। তবে পুরো নয়। আংশিক। প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ তার নিজের হাতের রেখায়। শুধু হাতে নয়।' অর্ধেন্দু বলে চলে,'জানিস? প্রতিটি বিখ্যাত ব্যক্তির হাতে রবি রেখা থাকে। রবীন্দ্রনাথের হাতেও প্রমিনেন্ট রবি রেখা ছিল।'
    'তাই বলে হাতে রবি রেখা নেই বলে সে চেষ্টা করেও বিখ্যাত হতে পারবে না? আমি মানতে পারলাম না।' আমি লজিক আওড়াই।
    'পামিস্ট্রি ছেলে খেলা নয়। এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে'- অর্ধেন্দু প্রায় গর্জে ওঠে।
    আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারলাম না। হাত দেখে ভবিষ্যৎ বলা! তার আবার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি? আজকাল সবই বিজ্ঞানের নামে চলে। গরুর হিসু রোজ খেলে কোন রোগ হয় না যারা বলে তারাও তাদের বিশ্বাসের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে দাবি করে।
    'অবাক হচ্ছিস তাই না?' আমার মনটা পড়ে নিয়ে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে অর্ধেন্দু বলে চলে,'একদিন বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীদের একথা স্বীকার করতে হবে, এই আমি বলে রাখছি।'
    'কি সেই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি? বলেই ফেল না। শুনে ধন্য হই'-আমার কথায় ব্যঙ্গের আভাস।
    আমার উপর ঠান্ডা দৃষ্টি বুলিয়ে প্রফেসরী কায়দায় অর্ধেন্দু শুরু করে ওর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ। পামিস্ট্রির নিগূঢ় তত্ত্ব।
    'আমাদের মস্তিস্কের inner সেন্স ভবিষ্যৎ দেখতে পায়। আমাদের বাহ্যজ্ঞান সেটা দেখতে পায় না। হাতের চেটোয় যে আঁকিবুকি তা ওই inner সেন্সের সাংকেতিক প্রতিফলন। সিসমোগ্রাফের আকিবুঁকির মত।'
    'উরিববাস, এত সব জানলি কি করে?'-কিছুটা সত্যি আর কিছুটা ভান করা বিস্ময় নিয়ে বলে উঠি। অর্ধেন্দুর মুখে বিজয়ীর হাসি।
    'তোদের মতো তো আর উন্নাসিক নই যে যা কিছু প্রাচীন তাকেই কুসংস্কার বলে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করব আর নিজেকে আধুনিক আল্ট্রা মড ভেবে আত্মপ্রসাদ লাভ করব? এই বিষয় নিয়ে রীতিমত পড়াশুনা করেছি।' অর্ধেন্দু গর্বিত ভাবে বলে চলে,'এই যে হাতের চেটোয় যে সব আকিবুঁকি দেখছিস এগুলো আমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মস্তিস্কের বুলেটিনকে প্রকাশ করছে। আমি যে সব টের পাই না মস্তিষ্ক তা আগে ভাগে জেনে নিয়ে হাতের রেখায় তার নির্দেশ রেখে দিয়েছে।'
    'ভাবতে অবাক লাগে আমরা আমাদের জীবনপঞ্জী নিজের হাতে নিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছি,' বলে চলে অর্ধেন্দু, 'অথচ জানি না ভবিষ্যতে কি ঘটবে। ভবিষ্যতের সুখ কল্পনায় মশগুল আমরা কেউ কেউ। মনে বড় বড় আশা আর হাতের রেখায় নির্দেশ এক অনুজ্জ্বল ভবিষ্যতের। এই যেমন ধর তুই....।'
    ' আমি? বলে যাও গুরু, বলে যাও', বেশ ব্যঙ্গের সুরে বলি। চেপে রাখি উৎকণ্ঠা।
    'বড় উচ্চাশা তোর। তোর পর্বতপ্রমাণ উচ্চাশা প্রসব করবে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ সমান মুষিক। এই তোর বিধিলিপি।' অর্ধেন্দু জোরের উপর নিদান দিল।
    চমকে উঠলাম। অর্ধেন্দু কি অন্তর্যামী? আমার যে বিরাট উচ্চাশা খ্যাতিমান কবি হবো। ছোট বেলা থেকেই এই বাসনা মনে মনে লালন করছি। স্কুল ম্যাগাজিনে দু একটা কবিতা ছাপিয়ে অ-কবি সাধারণের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছি। দু চারটে পত্রিকাতে লেখা পাঠিয়েছি। জবাবী খামে সেগুলো ফেরতও এসেছে। তাতে দুঃখিত হলেও আশা ছাড়িনি। কারণ জানতাম বহু খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকদের প্রথম জীবনে এমন ঘটেছে। কিন্তু অর্ধেন্দু বলে কি! ওর কথাগুলো শক্তিশেল বাণের মত বুকে গিয়ে লাগলো। মনের ভাব গোপন করে হেসে বললাম, 'তুই আবার অন্তর্জামী হলি কবে? কি করে বুঝলি আমার উচ্চাশা আছে আর সেটা পূরণ হবে না?'
    'তোর অগোচরেই এক সময়ে তোর হাতটা আমি স্টাডি করে ফেলেছি। তোরতো হাতে রবিরেখা নেই অথচ তার হাত বলছে তুই বড় উচ্চাকাঙ্ক্ষী।' অর্ধেন্দু জোরের উপর বলল।
    'রবি রেখা কোথায় থাকে দেখি?' - কৌতুহল আর দমন করতে না পেরে ডান হাতটা এগিয়ে দি।
    'এই যে', অর্ধেন্দু অনামিকার ঠিক নীচের এলাকা হাতের চেটোয় দেখিয়ে বলল, 'এই এলাকা রবির ক্ষেত্র। এখান থেকে রবি রেখা নীচে নেমে যায়। স্পষ্ট দীর্ঘ রবি রেখা জীবনে ধন সম্পদ সুখ খ্যাতির ইঙ্গিত দেয়। তোরতো হাতে রবিরেখার কোন চিহ্ন নেই। কাজেই তোর ভবিতব্য সাদামাটা হরিপদ কেরানির জীবন', -হাড় জ্বালানি হাসি অর্ধেন্দুর মুখে।
    'রবি রেখা নাই বা থাকল। কি যায় আসে তাতে? চেষ্টায় কেষ্ট মেলে।' ম্লান হেসে বললাম। মনের মধ্যে খচ খচানি রয়ে গেল।
    অনেকক্ষন দুজনে চুপচাপ। বয় এসে বিল দিয়ে গেল। আজ আমি পে করি বলে টাকা বার করার ভান করলাম। রোজকার মত অর্ধেন্দু হা হা করে উঠল। ওই টিপস আর দাম দিল।
    আমার ম্লান মুখ খেয়াল করে অর্ধেন্দু বলল,'সকালে হাতের রেখা বেশি স্পষ্ট হয়। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে নিজের হাত নিজে ভাল করে
    দেখিস। ' ওর কাছে একটা হাত দেখার চটি বই ছিল। সেটা দিল পড়তে।
    বাড়ি এসে বইটা পড়ে ফেললাম। হাতের সব আকিবুঁকির মানে জানলাম। এরপর রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ডান হাতে খুঁজে চলি রবি রেখা।
    ও: পাগলামীটা সত্যিই বড় সংক্রামক।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন