এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • সৌদামিনীর ঘরে ফেরা - পর্ব ৭

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৬৭৭ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • ১১

    হাতের সব কাজ সেরে মৃগাঙ্কর মা, তাঁর শোবার ঘরে ঢুকে দরজায় খিল দিতে দিতে বললেন, “কি গো, তুমি এখনো ঘুমোও নি”?
    “না। তোমার এতো দেরি হল”?
    “তোমার সংসারের কাজ কিছু কম নাকি? তারপরে তোমার বেয়াইমশাই কাল ভোরে বেরোবেন। সেই সব যোগাড় যন্ত্র করতেই দেরি হল”।

    মৃগাঙ্কর বাবার মুখে মুচকি হাসি, তিনি বললেন, “অ। সবই আমার। আমার সংসার। আমার বেয়াইমশাই। তোমার কিছুই নয়, তাই না মিনু”?
    মৃগাঙ্কর মায়ের নাম মৃণালিনী। তাঁর স্বামী শশাঙ্ক আদর করে ডাকেন মিনু। মৃণালিনী ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে বললেন, “তুমি তো এই সংসারের কত্তা। আমি তোমার শ্রীচরণের দাসী। তোমার সংসারে আমি এসেছি তোমার আর তোমার সংসারের সেবা করার নিমিত্তে”।
    পাশ ফিরে বিছানায় কনুইয়ে ভর দিয়ে আধশোয়া হয়ে উঠলেন শশাঙ্ক। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখে আফগান স্নো লাগাতে থাকা স্ত্রীকে বললেন, “আজ তোমার খুব ফুরফুরে মেজাজ দেখছি, কি ব্যাপারটা কী”?
    “ছেলেটা বেশ কিছুদিন ধরে মনমরা ছিল। বৌমাকে পেয়ে, আজ কেমন খুশি হয়েছে, দেখলে না”?
    “কই আমি তো তেমন কিছু লক্ষ্য করলাম না। সন্ধেবেলা খোকা এসে পাশে বসল, আমি তেমন কিছু বুঝলাম না তো”?
    “ব্যাটাছেলেরা ওরকমই  হয়। তোমাদের ওসব চোখে পড়বে না। আমাদের চোখে সব ধরা পড়ে”।
    কথা বলতে বলতে মৃণালিনী বিছানায় এসে বসলেন, শশাঙ্কর পাশে। থুতনি ধরে মৃণালিনীর মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে শশাঙ্ক বললেন, “সেই জন্যেই তো তোমাকে চোখে হারাই, গো মিনু”।
    স্বামীর সোহাগে উচ্ছ্বসিত হলেও, মৃণালিনী ঝটকা দিয়ে মুখ সরিয়ে নিয়ে বললেন, “আহা, ঢঙ। আজ বাদে কাল নাতি নাতনীর মুখ দেখতে হবে, এখনো তোমার এত”?
    হা হা করে হাসলেন শশাঙ্ক, বললেন, “দিন দিন তুমিই বা এমন সুন্দরী, হচ্ছো কেন, মিনু? ইচ্ছে হচ্ছে, তোমাকে আরেকবার বিয়ে করে নতুন করে সংসার পাতি”।
    “বাবা রে, শখ দেখে আর বাঁচি না। আবার নতুন সংসার, রক্ষে করো, গো। যা পেয়েছি ভগবানের কৃপায় ঢের পেয়েছি। শুধু একটাই মনস্তাপ সর্বদা বেঁধে”।
    মৃণালিনীর এই কথায় শশাঙ্ক চিন্তিত হলেন, শংকিত মুখে জিজ্ঞাসা করলেন, “কি ব্যাপার বলতো? কিসের মনস্তাপ তোমার, মিনু”?
    “ঠাকুরঝিকে নিয়ে কী করা যায়, বলো তো”?
    “কেন, সে আবার কী করল? তোমাকে কিছু কুকথা বলেছে বুঝি? কালই সকালে আমি খুব বকে দেব তাকে”?
    “বোঝো। কুকথা কেন বলতে যাবে? ঠাকুরঝি আমাদের সেরকম মেয়েই নয়”।
    “তা হলে”?
    “আজ বসার ঘরে যে কাণ্ডটা করলে, তারপর সে যে ছাদে গিয়েছিল, সে খবর রাখো”?
    “না তো। কি করতে গিয়েছিল, ছাদে”?
    “মরতে। দৌড়ে উঠে গেল, তিন সন্ধেবেলায়। তখনই আমার সন্দেহ হয়েছিল। পিছু পিছু আমিও গেলাম নিঃশব্দে। দেখি মেয়ে এক কোণায় বসে খুব কাঁদছে। ভাবলাম একলা নির্জনে বসে কাঁদছে, কাঁদুক বুকটা হালকা হবে। কপালপোড়া মেয়েছেলের কান্না ছাড়া আর আছেটা কী? একটুপরে দেখি ঢক ঢক করে মাথা কুটছে দেয়ালে। ছটফট করছে জ্বালা যন্ত্রণায়”।

    মৃণালিনী বিছানায় শুলেন। শশাঙ্ক পাশে শুয়ে স্ত্রীর মুখের কাছে মুখ নিয়ে বললেন, “ওর তো কোন অভাব রাখিনি, মিনু। তাহলে ওর কিসের যন্ত্রণা”?
    “তোমরা ব্যাটাছেলেরা কোনদিন বুঝবে না, মেয়েরা কি চায়। তুমি ওর ভাত-কাপড় ছাড়া আর কোন অভাবটা মেটাতে পারবে? ওর নিজের একটা সংসার, সন্তান, স্বামীর সোহাগ, এসব অভাব মেটাতে পারবে? শুধু জামাকাপড়, আর দুবেলা দুটো ভাত হলেই মেয়েদের চলে না গো, মেয়েদের আরো অনেক কিছুর প্রয়োজন”।
    “তা ঠিক”। শশাঙ্ক মৃণালিনীর মুখের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হলেন, মিনু তার অভাগী ননদের জন্যেও এত চিন্তা করে?
    “আজ খোকা আর বৌমার সংসার দেখে তার কি মনে আসে না, যে তারও এমন একটা আদরের সংসার হতে পারত? আজ বাদে কাল বৌমার কোল আলো করে আসবে আমাদের খোকার সন্তান। ঠাকুরঝি তাদের নিয়েও খুব আনন্দ করবে, কিন্তু সারাদিনে অন্ততঃ একবার তো তার মনে হবেই, তারও এমন সন্তান হতে পারতো! নিয়তি তার থেকে সব ছিনিয়ে নিয়েছে”?
    “হুঁ, বুঝতে পারছি”। গভীর চোখে শশাংক তাকিয়ে রইলেন স্ত্রীর মুখের দিকে।
    “এই জ্বালায় যদি কোনদিন কোন অঘটন ঘটিয়ে বসে? যদি গলায় দড়ি দেয়। যদি ছাদ থেকে নিচেয় ঝাঁপ দেয়? কিংবা কোন হাঘরে মিনসের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বংশের মুখ পোড়ায়? আমাদের মুখটা কোথায় থাকবে, বলো তো”?
    “তুমি কিন্তু বড্ডো ভয় ধরিয়ে দিচ্ছ, মিনু”। মৃণালিনী স্বামীর কথায় হেসে ফেললেন। তাঁর উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে থাকা দেবতুল্য এই মানুষটিকে তিনি বড়ো ভালোবাসেন।
    হাত বাড়িয়ে তিনি স্বামীর চুলের মধ্যে বিলি কাটতে কাটতে বললেন, “তুমি কেন ভয় পাবে গো? ভয় পাক আমার শত্তুরে। তোমার এই দাসী রয়েছে কি করতে”?

    স্ত্রীর এই হাসিতে, হাতের স্পর্শে এবং তার এই কথায় বড়ো নিশ্চিন্ত হলেন শশাংক। তিনি জানেন তাঁর মিনু নিশ্চই কোন উপায় ঠাউরেছে। ভাগ্যহীনা বিধবা বোনের জন্যে তাঁর ব্যথা কিছু কম নয়, কিন্তু সে ব্যথার অনেকটাই ভাগ করে নিয়েছে তাঁর স্ত্রী। স্ত্রীর প্রতি অদ্ভূত ভালোবাসা তাঁর মনে সঞ্চার হতে থাকল। তিনি হাত বাড়িয়ে স্ত্রীর কপাল থেকে সরিয়ে দিলেন আলগা চুলের গুছি। তারপর একহাতের তালুতে স্ত্রীর গালটি ধরে মুখটি ফিরিয়ে নিলেন নিজের দিকে, তারপর স্ত্রীর অধরে ডুবিয়ে দিলেন নিজের ঠোঁট।

    কতক্ষণ পরে শশাংক মুখ তুললেন, স্ত্রীর চোখে চোখ রেখে টের পেলেন, তার সমর্পণের বাসনা। ধীরে ধীরে তিনি উন্মোচন করতে লাগলেন অত্যন্ত ভালোবাসার স্ত্রীকে। মৃণালিনী নিজেকে সমর্পণ করতে করতেও অস্ফুট স্বরে বললেন, “ঠাকুরঝি, আজকাল প্রায়ই কাশী যাবার কথা বলছে। বাবা বিশ্বনাথের সেবায় সারাজীবনটা কাটিয়ে দেবে। সেখানে তার পুজো আচ্চার সাধনা, সংসারের মায়ামোহতে বার বার ছিঁড়ে যাবে না। পাঠিয়ে দাও না।”
    স্ত্রীকে উন্মুক্ত করে শশাংক নিজেকেও উন্মুক্ত করতে করতে বললেন, “তাই হোক, পাঠিয়েই দাও। তাতেই যদি ও মনে শান্তি পায়, পাক না। মানি অর্ডারে মাসে মাসে একশটা টাকা পাঠিয়ে দেব, হাত খরচের জন্যে”।
    “এখনই বলো না কিছু। খোকা কলকাতা যাক, তারপর বলো”।
    “খোকা তো কাল সকালেই বেরিয়ে যাচ্ছে। যাচ্ছে না”?
    মৃণালিনী তাঁর উন্মুখ শরীরে স্বামীকে দুই বাহু বন্ধনে টেনে নিয়ে, মায়াবী দৃষ্টি হানলেন স্বামীকে, বললেন, “যাবে কি? আমার কিন্তু মনে হয় না”।
    “কেন, কেন? যাবে না কেন? হপ্তার শুরুতেই অফিস কামাই করাটা কোন কাজের কথা নয়”।
    “এতদিন পরে, বৌমা ফিরেছে, তাও কাল ছেলেকে আপিস পাঠাবে?” চোখ ও ঠোঁটের নিপুণ ভঙ্গীতে মৃণালিনী কিছু ইঙ্গিত করলেন। শশাংক এতক্ষণে ইশারাটা বুঝতে পারলেন, উন্মুক্ত স্ত্রীকে আদর করতে করতে, হাসি মুখে বললেন, “যেমন বাপ, তেমন ছেলে বলছ? অবাক হয়ে যাই, মিনু, তোমার সব দিকেই নজর”?
    স্বামীর আদরে জেগে ওঠা মৃণালিনী, নিজের নগ্ন বুকে চেপে ধরলেন স্বামীকে, কানে কানে বললেন, “এও জানি, ঠাকুরঝি কান পেতেছে ওদের বন্ধ জানালায়”। স্ত্রীর শরীরে পূর্ণ অবগাহনের আগে, শশাংক বললেন, “মেয়েটা কিছুই পেল না, এই জীবনে। বড়ো দুখী মেয়েটা”।

    ১২

    আজ সকালে বিশেষের ঘুম ভাঙল একটু দেরিতেই। প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। কাল রাত্রে খাওয়ার পরও কথা বলতে বলতে অনেকটা রাত হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া সকালের বাস জার্নি, বিকেলে অনেকটা হাঁটাহাঁটিতে খুব ক্লান্তও হয়ে পড়েছিল। ঘরে ফিরে বিছানায় শোয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সে গভীর ঘুমে ডুব দিয়েছিল। আজ ঘুম ভেঙে খুব ফ্রেশ লাগছে। চটপট রেডি হয়ে হীরালালজির ঘরে গিয়ে শুনল, হীরালালজি বেরিয়ে গিয়েছেন, ফিরতে ফিরতে বেলা সাড়েএগারোটা, বারোটা হবে।

    বিশেষ নিচেয় নেমে এল। প্যাসেজ পেরিয়ে বারান্দায় এসে দেখল কেউ নেই। বুড়িরা সব বেরিয়ে গিয়েছে ভিক্ষায়, খিচুড়ি খেয়ে দুপুরে ফিরবে। কালকে যে বুড়িটাকে সে খাইয়েছিল, সেও কি যেতে পেরেছে? বিশেষ ঘরের বন্ধ দরজা ঠেলে দেখল, বুড়ি বসে আছে, তার বিছানায়। বাকি সব বিছানা পাট করে সাজিয়ে রাখা দেওয়াল ঘেঁসে। বিশেষ গুনে দেখল, মোট ষোলোটা বিছানা, বুড়িরটা নিয়ে। বুড়ির বিছানার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল, “বুড়ি, আজ কেমন আছো? আজকেও বেরোও নি”?
    বুড়ি চিনতে পেরে একগাল হাসল ফোগলা মুখে, বলল, “চলতে পাআআআরি না। বসেই আছি। ওরা যদি কেউ খিচুড়ি আনে” বিশেষ জিজ্ঞাসা করল, “না আনলে”? বুড়ি কোন উত্তর দিল না। হয়তো উত্তর দেবার কিছু নেই।
    বিশেষ বলল, “বাইরে বসবে? নিয়ে যাবো”?  বিশেষ নিচু হয়ে জিজ্ঞাসা করল। বুড়ি ঘাড় নেড়ে জানাল, হ্যাঁ।

    বিশেষ কালকের মতোই তুলে আনল বুড়িকে, বারান্দায় এনে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিল। কালকে বুড়ির যা অবস্থা ছিল, আজ ততটা খারাপ নয়। কালকে রাত্রের ভরপেট খাদ্যে, বুড়ি অনেকটাই জোর পেয়েছে। হয়তো কিছুদিন আরো টিকে যাবে বুড়ি। বুড়ি কিছু বলছে না, শুধু তাকিয়ে আছে বিশেষের দিকে। সকালের আলোয় বুড়ি আজ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে বিশেষকে। বিশেষ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞাসা করল, “কিছু খাবে? খিদে পেয়েছে”?
    বুড়ি ঘাড় নাড়ল, না, বলল, “খিদেএএএএ নেই। কাল কতদিন পরে ভাত খেলাম”।
    বিশেষ বুড়ির সামনে হঠাৎ উবু হয়ে বসল, বুড়ির হাঁটুতে এক হাত রেখে জিজ্ঞাসা করল, “বুড়ি, তোমার বাড়ি যেতে ইচ্ছে হয়”? বুড়ি খুব জোরে মাথা নাড়ল, না।
    “কেন? ইচ্ছে হয় না, ছেলেরা, নাতিরা কেমন আছে, দেখতে”?
    বুড়ি আবারও ঘাড় নাড়ল, দুই হাত উলটে বলল, “আমার আবার ছেলেপুলে ছিল কোথায়?”।
    “তাও। ধরো তোমার বাড়ি, তোমার গ্রাম, শহর, দেখতে ইচ্ছে হয় না? কোথায় ছিল তোমার বাড়ি”?
    “ওরা আমাকে তাড়িয়ে দিল। আমার বাড়ি নেই, আমার গ্রাম নেই”।
    “কারা”?
    বুড়ি উত্তর না দিয়ে ছানি পড়া ঝাপসা চোখে তাকিয়ে রইল উঠোনের ওপাশে পেয়ারা গাছটার দিকে।
    অনেকক্ষণ পর অস্পষ্ট জড়ানো গলায় ধীরে ধীরে বলল, “আমাদের বাড়িতে ওর চেয়েও বড়ো একটা পেয়ারা গাছ ছিল। এখনো আছে কিনা কে জানে। খুব পেয়ারা হতো। ছোটবেলায় খুব দৌরাত্ম্যি করতাম গাছটার ওপর। কষটা, ডাঁশা, পাকা কোন পেয়ারাই ছাড়তাম না। আর ছিল একটা আম গাছ। খুব আম হতো, কিন্তু টোকো। পেকে হলদে হয়ে গেলেও তার গা থেকে টক ছাড়ত না। আমও খেতাম। রান্নাঘর থেকে নুন আর লংকারগুঁড়ো যোগাড় করে মজিয়ে...”।

    বুড়ির ফোগলা মুখে জিভের নাড়াচাড়ায় বিশেষের মনে হল, সে স্বাদ আজও যেন তার জিভের কোথাও লেগে আছে। বিশেষ জিজ্ঞাসা করল, “তারপর”?

    “তারপর আর কি? আমার বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের কদিন আগে খুব কেঁদেছিলাম। আমার ওই গাছ দুটোকে ছেড়ে অন্যের বাড়ি চলে যেতে হবে বলে। মেয়েদের তো পরের বাড়িতে যেতেই হয়। সব মেয়েই যায়। আমিও গেলাম। সানাই বাদ্যি। ভিয়েন বসল বাড়ির পিছনে। কদিন বাড়ি ভরে উঠল আত্মীয় কুটুম্বে। সবাই বলল তোর কপাল খুব ভালো, রে সদু। এমন শ্বশুরঘর কটা মেয়ে পায়! আমিও আনন্দে নেচে নেচে বেড়াতে লাগলাম খুব। বিয়ের দিন শ্বশুরবাড়ির তত্ত্ব দেখে সবাই উথলে উঠল। তোর শ্বশুরের কি উঁচু নজর রে, সদু? দেখেছিস কেমন মাছ পাঠিয়েছে! কত শাড়ি, মিষ্টি, মন্ডা মেঠাই, দই। সে সব শুনে গর্বে আমার মাটিতে পা পড়ে না। বিয়ে হল, সাঁঝের বেলা। ছাদনা তলায় কত হাসি ঠাট্টা আমোদ আহ্লাদ। শুভদৃষ্টিতে পান পাতার আড়াল সরিয়ে বরের মুখ দেখে বুকটা ভরে গেল। আহা এমন আমার বর, এতো রাজপুত্র। বাসর ঘরে সারা রাত কেটে গেল, নানান আমোদে, নানান খুনসুটিতে। সকাল হতে সবাইকে প্রণাম করলাম, অনেক কান্নাকাটি করলাম। তারপর শয্যাতুলুনির টাকা মিটিয়ে আমি উঠলাম পাল্কিতে, বর চলল গরুর গাড়িতে।

    শ্বশুরবাড়িতে পা দিতেই গ্রামের যতো মেয়ে বউ এল নতুন বউ দেখতে। গয়নাতে, শাড়িতে সেজেগুজে আমি তখন যেন রানি। সবাই এসে বলতে লাগল, আমাদের মন্টুর কি ভাগ্য, এমন চাঁদের মত বউ কজনার ভাগ্যে জোটে! অই দ্যাখ, আমি আবার স্বামীর নাম বলে ফেললাম। স্বামীর নাম যে মুখে আনতে নেই”। বুড়ি বিশেষের মুখের দিকে তাকিয়ে ফোকলা মুখে একগাল হাসল, বলল, “আমার আবার স্বামী, তার আবার নাম করা, না করা”?

    রুদ্ধ নিশ্বাসে বিশেষ বুড়ির কাহিনী শুনছিল। তার চোখের সামনে প্রত্যেকটা চরিত্র আর ঘটনা যেন জীবন্ত ধরা দিচ্ছিল। সে অধৈর্য হয়ে বলল, “তারপর”?

    “তারপর আর কি, বাছা? কাল-রাত্রি পার করে পরের দিন বউভাত। দুপুরবেলা বাড়ির যত বড়োরা বসল। আমার দাদা, ভাইপো খোকাও ছিল। আমার হাতের দেওয়া অন্ন খাবে বলে। চওড়া লালপেড়ে পাটের শাড়ি, হাতে, কানে, গলায় গয়না। সিঁথিতে ডগডগে সিঁদুর, কপালে সিঁদুরের টিপ। বড়োরা আমার আচার আচরণ দেখে বলতে লাগল, বৌমা আমাদের সাক্ষাৎ অন্নপুন্না। আমার বুক ভরে উঠতে লাগল গর্বে। মনে হতে লাগল এই আমার সংসার। জন্ম জন্ম ধরে মেয়েরা যে সংসারের জন্যে শিবের থানে হত্যে দেয়, পুজো দেয়, এই আমার সেই ভরা সংসার।

    বউভাতের সব কাজ কম্ম, আমোদ খুনসুটি গুটিয়ে আমরা আমাদের ঘরে গেলাম মাঝরাত পার করে। অচেনা সেই সুন্দর পুরুষের সামনে লজ্জা কাটিয়ে কথাবার্তার সময় যখন এল, ততক্ষণে ভোর হয়ে এল, বাইরে শোনা যাচ্ছিল কাকপক্ষির ডাক। আমি বেরিয়ে এলাম। বেরিয়ে আসার আগে আমার সেই স্বামী আমায় জড়িয়ে ধরে বলেছিল, এ রাত্রে তো কোন কথাই হল না, আজ রাত্রে কিন্তু আমরা সারারাত অনেক গল্প বলবো। কিন্তু সে রাত.. সে  রাত তো আর কোনদিন এলই না”।

    বুড়ি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। মনে মনে হয়তো ধুলো ঝেড়ে পরিষ্কার করে নিচ্ছিল তার স্মৃতি। বিশেষের দিকে তাকিয়ে বুড়ি একগাল হেসে জিজ্ঞাসা করল, “এসব কথা শুনে তোর কী হবে, বলতো বাছা? এ মরা বুড়ির কথা শুনতে তোর ভালো লাগছে”?
    “তোমার কথা কেউ কোনদিন শোনেনি। শুনতে চায়নি। আমি শুনছি, বুড়িমা তুমি বলো”।

    “তাআআআ বটে। কত দিনের কত কথা জমে ছিল বুকের ভেতর...।  তোর মতো কেউ কোনদিন...।  সেদিন সকালে দাদা খোকাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। বিকেলে আমার স্বামী গেল বন্ধুদের সঙ্গে তাদের তাসের আড্ডায়। পাছে আড্ডার বন্ধুরা তাকে খোঁটা দেয় – বউ পেয়েই আমাদের সবাইকে ভুলে গেলি, মন্টু? সেখান থেকে বেশ একটু রাত করে ফেরার পথে তাকে সাপে ডাঁশল। জাত সাপ। একবন্ধু দৌড়ে এসে খবর দিতে, বাড়ির লোকরা ধরাধরি করে যখন তাকে নিয়ে এল, তার তখন শেষ অবস্থা। এমন সুস্থ সবল জলজ্যান্ত সুন্দর মানুষটা এত সহজে মরে গেল? আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি আমার ঘরের দরজায় নির্বাক পাথরের মতো দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। উঠোনে শোয়ানো আমার স্বামীর দেহের উপরে আছড়ে পড়ে কাঁদছে, আছাড়িপিছাড়ি খাচ্ছে, আমার শাশুড়ি, ননদ সবাই। হঠাৎ আমার সেজজা, আমার দিকে আঙুল দেখিয়ে বললে, ওই যে, ওই সেই রাক্ষুসি, ডাইনি, পিচেশ, ওই খেয়েছে ছোট ঠাকুরপোকে। অন্য দুই জা এসে আমাকে উঠোনে টেনে নামালো। আমার শরীর থেকে খুলে নিলে সমস্ত গয়না, জল দিয়ে ঘষে ঘষে তুলে দিলে আমার সিঁথির সিঁদুর, কপালের রাঙা টিপ। ঠুকে ঠুকে ভেঙে দিল হাতের শাঁখা-পলা। সে কি আক্রোশ তাদের। আমি পাথর হয়ে পড়েই রইলাম উঠোনে। আমার অনেক ভাগ্য করে পাওয়া স্বামীকে ওরা শ্মশানে নিয়ে গেল, বলহরি হরিবোল আওয়াজ দিতে দিতে”।

    বুড়ি মুখ তুলে একবার দেখল বিশেষের দিকে, ভুরু কুঁচকে কিছু বোঝার চেষ্টা করল, তারপর আবার বলতে শুরু করল, “তিনদিনের মাথায় সব মিটে গেল। আমার এই সংবাদ পেয়ে আমাকে দেখতে এসেছিল দাদা। দাদাকে দেখে আমি ভেঙে পড়লাম কান্নায়। দাদা কিই বা বলবে, কিই বা সান্ত্বনা দেবে, আমাকে। আমার শাশুড়ি আর বড়ো ভাসুর দাদাকে বলল, আমার আর ওই বাড়িতে একদিনও ঠাঁই হবে না। আমি ডাইনী, আমি পিশাচ। এ বাড়ির যা অমঙ্গল হয়েছে, তারপরে আর কোন অমঙ্গল তারা চায় না। পোড়াকপালি ছোটবোনকে দাদা আবার ফিরিয়ে আনল বাপের বাড়ি।

    কিন্তু ছদিন আগে যে মেয়েটা তার বাপের বাড়ি ছেড়েছিল, আজ সেই মেয়েটাও তো আর আগের মেয়ে নয়। সে বাড়িও আর তার আগের বাপের বাড়ি নয়। সে মেয়ে এখন কপালপোড়া হতভাগী বিধবা। বিধবাদের দিয়ে কোন মঙ্গল কাজ হয় না। তার স্পর্শে সর্বদাই অকল্যাণ। আমাকে নিয়ে সংসারে ঠোকাঠুকি, কান্নাকাটি, বকাবকি চলছিলই। কিন্তু বিপদ শুরু হল দাদার ছেলের বিয়ের পর। নতুন বউ এল দাদার ঘরে। বৌদির মনে হল, তার ছেলের নতুন সংসারে পিসিমার অমঙ্গলের আঁচ এসে লাগছে বারবার। আর সহ্য করা গেল না কিছুতেই। গ্রামের কিছু বুড়ি সেবার দলবেঁধে তীর্থে বেরিয়েছিল, তাদের সঙ্গে আমি চলে এলাম কাশীতে। কাশী জায়গাটা দেখার ইচ্ছে আমার যে ছিল না তা নয়। আমার ইচ্ছে ছিল দু চারমাস থেকে আবার বাড়ি ফিরে যাবো।

    আমার কোন ইচ্ছেই পূরণ হবার নয়, এটাই বা কেন হবে? কাশীতে একটা আস্তানা ঠিক করে আমাকে রেখে, সেই তীর্থযাত্রীর দল চলে গেল এলাহাবাদের দিকে। বলে গেল, তীর্থযাত্রার শেষে ফেরার পথে তারা আমাকে নিতে আসবে। ছমাস গেল, একবছর ঘুরে গেল, কেউ এল না। যে আস্তানায় থাকতাম, তার বাড়িওলার নামে মাসে মাসে টাকা আসত। কত টাকা জানি না। কোন মাসে সে আমার হাতে তুলে দিত তিরিশ, কোন মাসে চল্লিশ। বাকি টাকাটা সে নাকি বাড়ি ভাড়া হিসেবে কেটে নিত।

    বছর দুই কি আড়াই হবে, ঠিক মনে নেই, এভাবে চলার পর আর চলছিল না। দাদাকে চিঠি লিখলাম। আমার এখানে মন টিকছে না, দাদা। তোমার দুটি পায়ে পড়ি, অভাগী ছোট বোনটাকে ক্ষমা করে দাও। আমি বাড়ি যাবো, টাকা পাঠাও। পাঁচমাসের মধ্যে পরপর চারবার। কোন উত্তর পেলাম না। এদিকে আমার বাড়িওয়ালা বলল, গত তিনমাস নাকি কোন টাকা আসেনি, আমাকে ঘর ছেড়ে দিতে হবে। বাড়িওয়ালা একদিন সকালে সত্যি সত্যি আমাকে ঘর থেকে বের করে দিলে। রাস্তায় ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলে আমার সামান্য যা কিছু জিনিষপত্র ছিল।

    জিনিষপত্র গুছিয়ে, কী করবো, কোথায় যাবো, ভাবছি। গঙ্গার ঘাটে আরো কজন বেধবার সঙ্গে আলাপ হল। তাদের দশাও আমারই মতো। তারা বললে, চল বেন্দাবন যাই। বেন্দাবনে নাকি মন্দিরে কেত্তন গাইলে খেতে দেয় দুবেলা। নামগানে পাপ খণ্ডে যাবে, তার সঙ্গে পেটটাও ভরবে। কাশীতে তাদের আস্তানায় দিন তিনেক থেকে, আমরা রওনা হলাম বেন্দাবন। বাস, সেই থেকেই চলছে এই বেন্দাবন বাস। তা প্রায় পঞ্চাশ পঞ্চান্ন বছর তো হলোই, বেশিও হতে পারে। অত আর মনে রাখতে পারি না রে”।

    বুড়ি চুপ করে গেল। আগের মতোই দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে রইল বিশেষের মুখের দিকে তাকিয়ে। মাথা নিচু করে বিশেষ শুনছিল। এখন মুখ তুলে তাকাল বুড়ির দিকে। ভাবলেশহীন বুড়ির ভাঙাচোরা মুখে কোথাও কোন দুঃখ, বিশেষের নজরে এল না। চোখের কোণায় এতটুকু জলও জমে ওঠেনি। কত বয়েস হবে এখন বুড়ির, আশি, নব্বই? পঞ্চাশ বছর ধরে একটা মড়া জীবনকে যে ঘষটে টেনে নিয়ে চলেছে মৃত্যুর দিকে। তার অন্তরে অভিমান, দুঃখ, শোকের ছায়া কল্পনা করাও অন্যায়।

    বিশেষ আবার বুড়ির কাছে মুখ নিয়ে গেল, জিজ্ঞাসা করল, “বুড়িমা, তোমার সেই গ্রামের নাম কি? কি নাম তোমার সেই দাদার”?
    বুড়ি হেসে ফেলল এবার হে হে করে। এমন হাসি বহুকাল হাসেনি। এ ছোঁড়াটা তো বেশ। বুড়ি ভাবল। কাল রাত থেকে ছোঁড়াটা কিসের জন্যে তার পেছনে লেগে আছে, বুড়ি বুঝতে পারছে না। এর আগেও তার জীবনে দু একজন এমন দয়া দাক্ষিণ্য দেখিয়েছে। দু একদিন খাইয়েছে। শীতের চাদর কিনে দিয়েছে। কিন্তু এত কথা কেউ বলেনি। কেউ জিজ্ঞাসা করেনি তার জীবনের কথা। বুড়ি হাসি মুখে বলল, “কী করবি জেনে”?

    “কিচ্ছু না, কী আর করবো। তোমাকে কি ফিরিয়ে দিতে পারবো, তোমার সেই গ্রাম, সেই বাড়ি ঘরদোর? তোমার সেই ফেলে আসা জীবন? এমনি”।
    “গ্রামের নাম কুসুমপুর, দাদার নাম শশাংক। আমি কপালপোড়া সদু, সৌদামিনী”।

    ১৩

    গত আড়াই বছরে মৃণালিনীর জীবনে অনেক ঝড় বয়ে গেছে। তাঁর বয়েস আড়াই নয় বেড়ে গেছে দশ বছর। তাঁর মাথার চুলে পাক ধরেছে। শরীরেও দেখা দিয়েছে ভাঙনের লক্ষণ। তাঁর কপালে দুশ্চিন্তার বলিরেখা স্থায়ি আস্তানা গেড়েছে। মাত্র মধ্য চল্লিশেই তাঁকে এখন দেখলে বুড়ি মনে হয়। বাংলার ঘরে মেয়েরা অবিশ্যি কুড়িতেই বুড়ি হয়, এমন প্রবাদ আছে। কিন্তু এই কবছরে তাঁর এই আকস্মিক পরিবর্তন চোখে না পড়ে উপায় নেই।
     
     
    (আগামী পর্বে সমাপ্য..)

     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৬৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন