এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক

  • আমি মোহনবাগানের মেয়ে  (পর্ব সাত)

    Sara Man লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | ১০ আগস্ট ২০২১ | ১০৮৮ বার পঠিত
  • ড. শারদা মন্ডল

    বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে আমার মাতামহের পরিবার, আর ছোটোপিসিদিদার পরিবারে শনির দশা শুরু হয়। ১৯২১ এ আমার বড়দাদু মানে শরৎ - কুমুদিনীর জ‍্যেষ্ঠপুত্র সতীশচন্দ্রের তেত্রিশ বছর বয়সে স্প‍্যানিশ ফ্লুতে অকস্মাৎ মৃত্যু থেকে এই বিপর্যয়ের শুরু। এই স্প‍্যানিশ ফ্লুতেই ১৯১৮ সালে মৃত্যু হয় চিকিৎসক আর জি করের। ১৯৯৮ সালে প্লেগ মহামারী তাঁর কাছে হার মানলেও, এবারে অন্য রূপে এসে মহামারী তাঁর প্রাণ কেড়ে নেয়। আমার মামার বাড়ির পরিবারে এর পর পুত্র শোকে শরতের মৃত্যু এবং আমার সেজদাদু সুরেন্দ্রনাথের অপঘাত মৃত্যু পরিবারটিকে দিশেহারা করে দেয়। স্বামী শরতের মৃত্যু কুমুদিনীর মাথা থেকে শোভাবাজার রাজবাড়ির ছায়া কিছুটা হলেও সরিয়ে দেয়, নাকি মুক্তি দেয়। কারণ রাজবাড়ির বিধবা ভাতা নামক মোটা মাসোহারা গ্রহণ করতে তিনি অস্বীকার করেছিলেন। কুমুদিনী স্বাধীন ভাবে ছোটোজামাইয়ের বাড়ির কাছে ফড়িয়াপুকুরে বাড়ি কিনে বসবাস শুরু করেন। পারিবারিক জীবনের বাইরে ১৯২১ এই তিনি, কামিনী রায়, লেডি অবলা বসু আরো অনেকের সঙ্গে মিলে তৈরি করেছেন বঙ্গীয় নারী সমাজ। কামিনী রায় সভানেত্রী। আলোকপ্রাপ্ত ঐ মেয়েদের দল তখন নারীদের ভোটাধিকারের জন্য ইংরেজ সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই লড়ছে। আর স্প‍্যানিশ ফ্লু অতিমারীর আবহেই দেশে তখন চলছিল কংগ্রেস ও গান্ধীজীর নেতৃত্বে বৃটিশ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০-২২)। আর ঐ সময়ে ১৯২০ তেই বাংলায় আর একটি ইতিহাস সৃষ্টিকারী দল ইস্টবেঙ্গলের জন্ম হয় - যার সঙ্গে মোহনবাগানের দ্বৈরথ একদিন অমরত্ব লাভ করবে। প্রিয়নাথ মিত্র রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটে তৈরি করেছিলেন অ্যাশক্রফ্ট হল। সেখানে ১৯২০ সালে ইংলিশ ফার্স্ট বুক প্রণেতা প‍্যারীচরণ সরকারের ছোটো ছেলে শিক্ষাবিদ বাবু শৈলেন্দ্র সরকার একটি স্কুল তৈরি করেন। নাম সরস্বতী ইনস্টিটিউশন। পরে অবশ্য ঐ ইস্কুল নতুন ঠিকানায় উঠে যায়, এখন যার নাম শৈলেন্দ্র সরকার বিদ‍্যালয়। প্রাক্তন রাজ‍্যপাল ও প্রধান বিচারপতি শ‍্যামল সেন এই ইস্কুলে পড়েছেন। এখন তিনি ওখানকার ম‍্যানেজিং কমিটির সভাপতি। কাছাকাছি এলাকায় প‍্যারীচরণের নিজের প্রতিষ্ঠিত একটি বালিকা বিদ‍্যালয়ও আছে। শরৎ কুমুদিনীর মধ‍্যম পুত্রবধূ মানে আমার মেজদিদা প‍্যারীচরণের বাড়ির মেয়ে। শিক্ষাবিদ প‍্যারীচরণ ছিলেন কুমুদিনীর দাদু ঋষি রাজনারায়ণ বসুর সহপাঠী, বন্ধু। সেই সূত্রেই হয়তো দুই পরিবারের আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।

    যা হোক মামার বাড়ির পরিবারের দুর্ভাগ্যের অবসান হয় না। মৃত্যু মিছিল চলতে থাকে। পুত্রবধূ সতীশ জায়া প্রতিমার মৃত্যু, বড়ছেলে সতীশের জ‍্যেষ্ঠ পুত্র মুকুল চন্দ্রের কৈশোরে অকাল মৃত্যু কুমুদিনীর মতো যোদ্ধাকে অন্তরে ক্ষইয়ে দিয়েছিল। খড়কুটো আঁকড়ে ধরতে কনিষ্ঠ পুত্র বিকাশচন্দ্রের বিবাহ দিয়েছিলেন। সেই বধূ ভারতীরও একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে মৃত্যু হয়। এই অবস্থায় খবর আসে ছোটো জামাই রবীন মিত্রের পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে অকাল মৃত্যু ঘটেছে। রবীনের বাবা প্রিয়নাথ মিত্র ব‍্যবসা বিষয়ে ছেলের ওপরে খুবই ভরসা করতেন। কারণ অন্য পুত্রদের একজন আইনজীবী। একজন ছোটোখাটো জীবনবীমা জাতীয় কাজে ব‍্যস্ত থাকতেন। রবীনের মৃত্যুর পরে কীর্তি মিত্রের ব‍্যবসার সাম্রাজ্য ধসে পড়ে। পাওনাদারেরা ছেঁকে ধরে এবং তারাই মোহনবাগান ভিলা নীলামে তুলে দেয়। শেষে ভূপেন বসু এবং নিমাইচরণ বসু তখনকার দেড়লক্ষ টাকায় ঐ সম্পত্তি কিনে নেন। রবীন মিত্রের এক পুত্র অশোক এবং এক কন্যা বিবি। কন‍্যাটি অ্যাপেন্ডিসাইটিসের বিষক্রিয়ায় বালিকা বেলায় মারা যায়। সব মিলিয়ে প্রিয়নাথ খুবই ভেঙে পড়েন। মোহনবাগান ভিলার একপাশে নয়নচাঁদ দত্ত স্ট্রিটে একটি ছোটো বাড়ি ছিল। ওখানে অফিস ছিল, খেলোয়াড়েরা চুক্তি পত্রে সই করতো, দরকার হলে থাকতো। সেই বাড়িতেই প্রিয়নাথ থাকতে শুরু করেন। শেষ জীবন তিনি ওখানেই অতিবাহিত করেন। শিলি দাদু বাকিদের নিয়ে বিডন স্ট্রিটের একটি বাড়িতে উঠে আসেন। ছোটো পিসিদিদা ওখানেই থাকতেন। দুটি পরিবারের এই বিপর্যয়ে মোহনবাগানের আকাশেও মেঘ জমে ওঠে। বৃহৎ সেন পরিবার এই বিপর্যয় কাটাতে তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে। মোহনবাগান আগেই শ‍্যামপুকুরের দুর্গাচরণ লাহাবাবুদের মাঠ ছেড়ে সেনবাড়ির লাগোয়া শ‍্যাম স্কোয়ারে উঠে এসেছিল। শুনেছি ঐ মাঠ প্রতিষ্ঠায় শোভাবাজার রাজবাড়ির কিছু ভূমিকা ছিল।

    ফেসবুকের পুরোনো কলকাতার গল্প গ্রুপে একজন লিখেছেন রাধাকান্ত দেবের দৌহিত্র আনন্দকৃষ্ণ বসু এবং তাঁর ভাই যোগেন্দ্র কৃষ্ণ বসুর তত্ত্বাবধানে শ‍্যাম পার্কের মাঠ প্রতিষ্ঠা হয়, তবে এবিষয়ে অন‍্য কোনো নথি পাই নি। এই আনন্দকৃষ্ণ বসুর কাছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ‍্যাসাগর আসতেন ইংরেজি শিখতে। যা হোক এইসব ঘটনার পর সেনবাড়ি অর্থাৎ ৪৪ নং রামকান্ত বোস স্ট্রিট হয়ে ওঠে মোহনবাগানের তৃতীয় অফিস। একদিকে ঐ বংশের ছেলেরা খেলা, সংগঠন, প্রশাসন সবেতে জড়িয়ে পড়েন, অন্য দিকে বড়জামাই শ্রীশচন্দ্র ওরফে ভূতনাথ সেন বা ভূতি বাবু কুমুদিনীকে তাঁর পরিবার সমেত নিজের আওতায় নিয়ে আসেন। পরিবারটি সেনবাড়ি লাগোয়া দাঁতি সেনের একটি বাড়িতে ভাড়ায় উঠে আসে। কুমুদিনী তখন কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর। ঐ সময়েই দাঁতি সেন নিজের শ‍্যালিকা লাবণ‍্যপ্রভার সঙ্গে কুমুদিনী পুত্র বিকাশ চন্দ্রের পুনর্বিবাহ দিয়ে সংসারটা আবার বসিয়ে দেন। বিকাশ-লাবণ্য আমার মায়ের বাবা মা। বিকাশের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ভারতীর পুত্র বিমানচন্দ্র তখন শিশু। দাঁতি সেনের বাড়িতেই আমার মামা সুজিতচন্দ্র, মা কৃষ্ণা (রাজকুমারী), দুই মাসি কাবেরী ও সুরভির জন্ম হয়। মোহনবাগান হারলেই মরে যাবে, যে বলতো, সে হল আবার মাসি কাবেরী। বিকাশচন্দ্রের পাঁচ সন্তান সেন বাড়ির ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বড় হতে থাকে। এই কারণেই তাদের জগৎটা মোহনবাগানময় হয়ে যায়। আমার সেজদাদুকে হাটখোলার দত্ত পরিবারে দত্তক নেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্রে ওটা আমার আর এক দাদুর বাড়ি। সেজদাদু যখন মারা যান, দিদা তখন কিশোরী, কোলে সদ‍্যজাত কন্যা। তিনিও এই সেনবাড়িকেই ভরসা মনে করতেন। একদিকে এই পরিবার মোহনবাগানকে বাঁচিয়ে যেমন বাংলার ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে, তেমনি জ্ঞাতিদের শত্রু না মনে করে, আপন করেছে। দত্ত, মিত্র, বোস সবাইকে বিপদের দিনে মানসিক আশ্রয় দিয়েছে। এই সুকৃতির ফলও এই বংশ পেয়েছে। বাকিরা যে যার মতো ছিটকে পড়লেও, আজও বাগবাজারের সেনেদের যৌথ পরিবারের মহিমা অক্ষুন্ন আছে। আমি ঠিক জানিনা, বাংলার আর কোন পরিবারের এতজন কর্তা ডাকনামে সুপরিচিত কিনা। কলকাতা হাইকোর্টের নথিতে দীনবন্ধু সেন ব্র‍্যাকেটে দাঁতি লেখা দেখে আমি তো তাজ্জব। এখন ঐ পরিবারের লোকসংখ্যা বেড়ে গেছে। অনেকেই অন‍্যত্র বাসস্থান ক্রয় করতে বাধ্য হয়েছেন। তবু আমি চাই ঐ সেনবাড়ি যেন স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে থাকে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১০ আগস্ট ২০২১ | ১০৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন