এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  প্রথম পাঠ

  • ডাক্তারি পড়তে মেধার চেয়ে বাপের ট্যাঁকের জোর যদি গুরুত্বপূর্ণ হয়...

    স্বপ্নময় চক্রবর্তী
    পড়াবই | প্রথম পাঠ | ০৬ জুন ২০২১ | ৩২১৬ বার পঠিত
  • স্বাস্থ্যব্যবস্থার নিরঙ্কুশ বাণিজ্যায়ন। সামাজিক অভিভাবক থেকে মুনাফা-তাড়িত পরিকাঠামোর প্রতিনিধি হিসেবে চিকিৎসকদের ভূমিকার বিবর্তন। চরম সরকারি উদাসীনতা ও দুর্নীতি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’— এই লক্ষ্য থেকে রাষ্ট্রের পশ্চাদপসরণ। ভারতের স্বাস্থ্যপরিষেবার অযুত সমস্যা। ও তারই মধ্যে কিছু বিরল সাফল্যের উদাহরণ। একটি বই। পড়লেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী


    প্রথমেই বিষাণ বসুকে ধন্যবাদ জানাই কারণ গণস্বাস্থ্য সম্পর্কিত উদ্বেগ, অভিযোগ এবং সমাধান-দিশারি সুচিন্তাজাত লেখাগুলির কয়েকটা দুই মলাটের মধ্যে রাখার কথা ভেবেছেন এবং ধানসিড়ি প্রকাশন এটি ছেপেছেন। এটি এসময়ে বড়ো প্রয়োজনীয় ছিল। আর এই লেখাগুলি আমাকে উসকে দিল স্মৃতি রোমন্থনে। আমার এখন বয়স যেহেতু প্রায় সত্তর, গত ষাট বছরের স্মৃতিসম্ভার রয়েছে আমার কাছে। সেই স্মৃতিতে রয়েছে গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শহরের মেডিকেল কলেজ, ব্যর্থ নকশাল আন্দোলন পরবর্তী সদা-স্বপ্ন-দেখা কিছু মানুষের চেষ্টায় গণবিজ্ঞান ও গণস্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে ওঠা। এটা একটা আলাদা প্রবন্ধের বিষয় হতে পারে, উপন্যাসের, যদি বেঁচে থাকি, হয়তো লিখব, তখন হয়তো এই বইটাও আমার সহায়ক হবে। তবে সেই সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ক্ষীণ হয়ে আসা স্রোতধারায় নিশ্চয়ই কিছুটা জলসঞ্চার, ফলত শক্তিসঞ্চয়। বিষাণ বসু জনদরদি চিকিৎসকমণ্ডলীর শুভ প্রয়াস কার্যক্রমের শরিকও কিছুটা। এই প্রবন্ধ নিবন্ধগুলির উৎস কিন্তু সেই শুভ প্রয়াস, ও প্রয়াসী মন।



    শহিদ হাসপাতাল। ছত্তিসগড়ে দল্লি-রাঝরা শহরে ১৯৮০-র দশকে শঙ্কর গুহ নিয়োগীর উদ্যোগে, স্থানীয় শ্রমিক, জনসাধারণ ও চিকিৎসকদের একত্র প্রয়াসে গড়ে ওঠা এই হাসপাতাল বিকল্প স্বাস্থ্যপরিষেবা-ভাবনার উজ্জ্বল উদাহরণ।


    আমি আমার বালক বয়সের কথা একটু বলি। বাগবাজারে থাকতাম ভাড়াবাড়িতে। একজন এল এম পাস ডাক্তার, ‘শর্মা ডাক্তার’ নামে খ্যাত, তাঁর কাছে বাড়ির সবাই যেত শুধু রোগ-ব্যাধির সমস্যার জন্যই নয়, পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্যও। কী পড়া উচিত, এরকম পরিবারে বিয়ে দেওয়া উচিত কি না, ইত্যাদি বিষয়ে উপদেশও নেওয়া হত। চিকিৎসক ছিলেন অভিভাবক। সমাজের উচ্চাসনে স্থিত চিকিৎসকদের গত পঞ্চাশ বছরের যে সামাজিক সম্মানের হ্রাস তার মূল কারণ হল স্বাস্থ্যকে পণ্যে পরিণত করা এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার বাণিজ্যায়ন। বিভিন্ন লেখায় এই কথাটিই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছেন বিষাণ। প্রথম প্রবন্ধটির নাম ‘বাজার-পুঁজি-মুনাফা, নব্য-উদারপন্থী স্বাস্থ্যনীতি বনাম সবার জন্য স্বাস্থ্য’। বেশ লম্বা শীর্ষনাম, এবং নামেই মালুম এখানে লেখক কী বলতে চান।

    আমি এখানে দাগ দিতে চাই ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ বাক্যবন্ধটির তলায়।

    ১৯৭৮ সালে সেসময়ের সোভিয়েত রাশিয়ায় বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রতিনিধিদের একটা সম্মেলন হয়েছিল। তখন ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই স্লোগানটা তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে নিহিত আছে—স্বাস্থ্য একটি মানবিক অধিকার। রাষ্ট্র যদি সুস্বাস্থ্যের ব্যবস্থা না করে সেটা রাষ্ট্রের অন্যায়। মানুষকে যতটা সম্ভব নীরোগ থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।

    অনেক দেশ কিছুটা হলেও তাদের নাগরিকদের জন্য এরকম ব্যবস্থা নিয়েছে। সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর অধিকাংশেই স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভালো ছিল, এখনও কিউবাতে ভালো। সমাজতান্ত্রিক দেশ না হয়েও ইউরোপের বেশ কয়েকটা কল্যাণকামী রাষ্ট্র (রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষায় যাদের ‘ওয়েলফেয়ার স্টেট’ বলা হয়) দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অনেকটাই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা হয়নি। আমাদের দেশে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা, মূলত নিজেদের বাঁচাতে। কলকাতা শহরেই গড়া হয়েছিল এসব। আমার বালকবেলায় আমার টনসিলের জন্য বাবা আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যেতেন। বাড়িতে কাঁকড়াবিছের উপদ্রব ছিল, অনেকের মতোই আমাকেও হুল ফুটিয়েছে। সোজা আর জি কর। আমার জন্ম আর জি করে। আমার ভাইবোনদেরও ওখানে। ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় লোহাতে তার জড়িয়ে বিদ্যুৎচুম্বক তৈরি করতে গিয়ে বিশ্রী ভাবে শক খেয়ে আর জি কর। আমাদের আত্মীয়স্বজনেরা জটিল চিকিৎসার জন্য আমাদের বাড়িতে এসে থাকতেন, কারণ আর জি কর। সরকারি হাসপাতালে মানুষের আস্থা ছিল। তখন নার্সিংহোম দেখিনি। হয়তো দু-চারটে ছিল, ওসব ছিল অতি বড়োলোকদের ব্যাপার।



    ব্রিটিশ উদ্যোগে তৈরি আর.জি. কর হাসপাতালের (তদানীন্তন নাম বেলগাছিয়া মেডিক্যাল কলেজ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ৫ জুলাই, ১৯১৬। (বাঁ দিক থেকে) আর এন মুখার্জি, মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, পাইকপাড়ার সিংহ বাবু, লর্ড কারমাইকেল, আর ডি মেহতা, এম এন ব্যানার্জি, ডাঃ আর. জি. কর, নবাব শামসুল হুদা, সার্জেন জেনারেল এডওয়ার্ড্‌স


    আবার গ্রামীণ হাসপাতালও দেখেছি, যখন আমি ভূমি সংস্কারের চাকরিতে গ্রামে ছিলাম। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ বলতে তখন সাদা বড়ি সালফা ডায়জিন আর লাল এলকালি মিক্সচার। চুলকানি হত খুব, তাই ভেজলিনে মেশানো স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। ডাক্তারবাবুর সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল। ওঁর কাছে শুনতাম, যা পড়ানো হয়েছে, তা মানতে গেলে মুশকিল হবে। সাদা বড়ি খেতে হয় দিনে দুটো করে দু-বার। পাঁচ দিনে কুড়িটা। কম্পাউন্ডার বলছে যা সাপ্লাই, কুড়িটা লিখলে লোকজন ওষুধই পাবে না। পাঁচ দিনে পাঁচটা লিখুন। ঠিকঠাক স্টেরিলাইজ না করা যন্ত্রপাতি দিয়ে রাজীব গান্ধির কোটা পূরণের ভ্যাসেকটমি, টিউবেকটমি। নার্স পোস্টিং মাত্র একজন। ছুটি নিলে কম্পাউন্ডারই ডাক্তার। জমাদারকে স্যালাইন চালানো শিখিয়ে নিতে হয়েছিল। সেরকম হাসপাতাল আমার দেখা। এবং দীর্ঘদিন ধরে চলেছে। কিন্তু এজন্য ডাক্তারবাবুকে মার খেতে হয়নি। এখন হাসপাতালগুলির অবস্থা অনেকটাই ভালো, কিন্তু শহরের সঙ্গে অনেক বৈষম্য। গ্রামের হাসপাতালের ডাক্তারদের এখনও তেমন মারধোর খেতে হয় না— যতটা শহরের ডাক্তারদের। সেই কারণগুলি খুঁজে পেয়েছি বিষাণের বইটি পড়ে।

    প্রবন্ধগুলির কয়েকটি লিখিত বক্তৃতার পাণ্ডুলিপি, কয়েকটি সোশ্যাল সাইটের ব্লগ, কিছু কিছু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি, রোগী-চিকিৎসক সম্পর্ক, নতুন সরকারি স্বাস্থ্যনীতি, অসুখবিসুখ নিয়ে বিকল্প ভাবনা, চিকিৎসাব্যবস্থার সংকট, ক্যানসারের প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে মোট তেরোটি রচনা আছে। কয়েকটি স্বল্পায়তন। সম্ভবত ওগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ব্লগ।

    ‘স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি’ প্রবন্ধে উনি দেখিয়েছেন, বাইরে থেকে যা যা দুর্নীতি মনে হয়, সেটা তো হিমশৈলের চূড়া। যেমন ট্রাফিক পুলিশকে হামেশা হাত পেতে ঘুষ নিতে দেখি, কিন্তু এর চেয়ে অনেক বেশি দুর্নীতি ঘটে চোখের আড়ালে। আমাদের গভীরে যেতে হবে। এই যে স্বাস্থ্যবিমা। এটা তো বিমা কোম্পানিগুলিকে পয়সা পাইয়ে দেওয়া। যদি বিমার টাকা স্বয়ং সরকার দেবে বলে, সেটাও তো জনগণের টাকা কর্পোরেটকে পাইয়ে দেওয়া। বরং সেই টাকায় নতুন নতুন সরকার চালিত হাসপাতাল হতে পারত, মেডিকেল কলেজ হতে পারত। এসবই তো দুর্নীতি।



    কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ার্ড


    ডাক্তারি পড়তে গেলে মেধার চেয়ে বাপের ট্যাঁকের জোর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। দুর্নীতি মাপার মিটার থাকলে এসবেই বেশি পয়েন্ট উঠত। ওষুধের দামের কথা ভাবুন। হাসপাতালের মধ্যে বা আরও কোথাও জেনেরিক নামে ওষুধ বিক্রির ব্যবস্থা হল, ভারত সরকার জনৌষধি কার্যক্রম করার পর রিটেল চেন তৈরি করেছে, ওখানে বাজারের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ দামে ওষুধ পাওয়া যায়। এতে সরকার মোটেই ভরতুকি দেয় না। তা সত্ত্বেও ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানিগুলি ভালোই লাভ করে। বহু আন্দোলনের ফলশ্রুতি এই জেনেরিক ওষুধের রিটেল দোকান। কিন্তু আজও জেনেরিক প্রেসক্রিপশন আবশ্যিক নয়। ৩৭০ ধারা রদের তুলনায় একটা সুস্থ স্বাস্থ্যনীতি তৈরি করা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়—বলেছেন বিষাণ। রাষ্ট্রসংঘ সারা বিশ্বের কাছে আর্জি জানিয়েছিল, ২০০০ সালের মধ্যেই শেষ হোক ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ কর্মসূচি। ভারতও এই লক্ষ্যে মন্দ এগোচ্ছিল না। কিন্তু সব উলটোপালটা হয়ে গেল। স্বাস্থ্যনীতির অন্যতম উপদেষ্টা হলেন মুকেশ আম্বানি। তারপর যা হওয়ার হচ্ছে। বিষাণ ২০০২ থেকে ২০১৭ বিভিন্ন নীতি, আইন ও বাজেট খুঁটিয়ে পড়েছেন এবং দেখাচ্ছেন নতুন স্বাস্থ্যনীতিতে ভালো কথার অভাব নেই, কিন্তু নেই সদিচ্ছা। শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ কীভাবে স্বাস্থ্যসূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বিষাণ তার কিছুটা আভাসও দিয়েছেন।
    একটা ব্যাপার আমার বেশ ভালোলাগল, সেটা তাঁর উদার মানসিকতা। অনেক আধুনিক চিকিৎসক ‘বিকল্প’ চিকিৎসাকে অশ্রদ্ধার চোখে দেখেন— সেটাও একটা কুসংস্কারই বলব। বিষাণ রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক চিকিৎসার ব্যাপারটা অবহেলা করেননি। ওষুধ কোম্পানির বাণিজ্যিক স্বার্থগুলি আগলে রাখার লবি যেমন আছে, আবার আয়ুর্বেদ নিয়ে ব্যবসা করা শক্তিশালী লবিও আছে। সবাই মুনাফাই চাইছে। এর মাঝখানে থেকে সাধারণ মানুষ কীভাবে প্রাকৃতিক শুশ্রূষা পেতে পারে, তার কিছুটা দিশা দেখিয়েছেন বিষাণ।

    বিষাণ ক্যানসার সম্পর্কিত অসুখের বিশেষজ্ঞ। সুতরাং তাঁর লেখায় ক্যানসার প্রসঙ্গ আসা স্বাভাবিক। এর আগে স্থবির দাশগুপ্তর বিভিন্ন লেখায় ক্যানসার এবং তার নিরাময়জনিত নানা সমস্যা এবং এ রোগকে কেন্দ্র করে ‘খেলারামের খেলা’ (খেলারাম মানে বোঝাই যাচ্ছে পুঁজি) নিয়ে চিন্তা উদ্রেককারী এবং জনদরদি লেখা পড়তাম। বিষাণও লিখেছেন। এই গ্রন্থে ক্যানসার বিষয়ক দুটি লেখা আছে। একটি লেখা ক্যানসার প্রতিরোধ বিষয়ে। কত বছর ধরে কত বিজ্ঞান সংগঠন এবং বিজ্ঞান পত্রপত্রিকা খাবারে নির্বিচারে রং মেশানো নিয়ে বলে যাচ্ছে, পাথর খাদান নিয়ে বলে যাচ্ছে, কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ে বলে যাচ্ছে, কিন্তু উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ধূমপান ও তামাকজাত সামগ্রী বিপণনের ব্যাপারেও তাই। ব্যবসায়ীদের স্বার্থই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের চেয়ে বড়ো। সুতরাং ব্যক্তিমানুষকেই সচেতন হতে হবে, যতটা পারা যায় কার্সিনোজেনিক পদার্থ এড়িয়ে চলতে হবে, একই সঙ্গে কণ্ঠ ছাড়তে হবে জোরে। অন্য লেখাটির নাম বেশ দীর্ঘ। বিষাণ এত বড়ো বড়ো নাম পছন্দ করেন কেন? আরও ছোটো কিন্তু আকর্ষক এবং অর্থবহনকারী নাম দেওয়া যেত। নাম দিয়েছেন—ডক্টর্স ডাইলেমা: চিকিৎসক ও রোগী মুখোমুখি বসিবার... অন্ধকার... ।

    এই লেখাটিতে বিষাণ ক্যানসার রোগীদের সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়ার করুণ কথা লিখেছেন। চিকিৎসায় প্রচুর খরচা হয়ে যাওয়ার কারণে সন্তানের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া, এইসব আছে, কিন্তু আর-একটি কথাও আছে, প্রকৃত চিকিৎসক হয়ে হাল ছাড়া যায় না। লড়াই চালাতে হয়। এই লড়াই নানাবিধ।

    আমাদের এই লড়াইয়ে ইতিহাস আছে। আমার মনে আছে নর্মান বেথুন জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের কথা, সুখময় ভট্টাচার্য, জ্ঞানব্রত শীল, ড্রাগ অ্যাকশন ফোরামের কথা, সুজিত দাস অ্যাসোসিয়েশন অফ ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স, মনে আছে জুনিয়ার ডাক্তার ফেডারেশন, মনে আছে অমিয় হাটি, তাপস ভট্টাচার্যদের স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিন, অরুণ সেন, পশুপতিনাথ চট্টোপাধ্যায়, বিপ্লব হালিমদের স্টুডেন্টস হেলথ হোম, পুণ্যব্রত গুণ, ব্রজ রায়, গণবিজ্ঞান সমন্বয় কেন্দ্র, বাংলাদেশের ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিনায়ক সেন, শহিদ হাসপাতাল, শ্রমজীবী-কৃষক মৈত্রী হাসপাতাল, শ্রমজীবী হাসপাতাল—সবটাই একটা বাজারকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যের বিকল্প প্রতিবাদ প্রবাহ। এর মধ্যে ব্যক্তি হিসেবে বিষাণ যেমন আছেন, আরও আছেন অনেকেই, তাঁদের কাউকে কাউকে চিনি, মনে মনে শ্রদ্ধা করি। বিষাণরা আলাদা ভাবে হয়তো বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত।

    এবার আমার একটা ব্যক্তিগত আপসোসের কথা বলি। আমি গত তিন বছর ধরে একটা উপন্যাস লিখেছি, নাম হবে ‘গণমিত্র’। তিন প্রজন্মের চিকিৎসক এবং চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে উপন্যাসটি। এই বইটি যদি আগে পেতাম ঋণ স্বীকার করে কাজে লাগাতাম।





    কিনে আনা স্বাস্থ্য, বাজার-পুঁজি-মুনাফা আর আপনি
    বিষাণ বসু
    ধানসিড়ি
    মুদ্রিত মূল্য : ২২৫ টাকা
    প্রাপ্তিস্থান: কলেজস্ট্রিটে দে'জ, দে বুক স্টোর(দীপুদা)


    বাড়িতে বসে বইটি পেতে হোয়াটসঅ্যাপে বা ফোনে অর্ডার করুন +919330308043 নম্বরে।



    গ্রাফিক্স: মনোনীতা কাঁড়ার
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ০৬ জুন ২০২১ | ৩২১৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sharmistha Das | 106.196.***.*** | ০৬ জুন ২০২১ ১৫:২০494649
  • বইয়ের লেখক ও সমালোচক উভয়ের বক্তব্য, একটা পথের দিশার ভাবনাকে আরো শক্তপোক্ত করল ।।

  • Anindita Roy Saha | ০৬ জুন ২০২১ ১৭:০৪494659
  • “ডাক্তারি পড়তে গেলে মেধার চেয়ে বাপের ট্যাঁকের জোর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়।”


    সঠিক বুঝলাম না। পশ্চিমবঙ্গের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষাও কি দুর্নীতির কবলে? নাকি বেসরকারী মেডিকেল কলেজের কথা বলা হচ্ছে? 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন