এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  বই-কথা কও

  • দারিদ্র্য-বঞ্চনা-যন্ত্রণাময় জীবন থেকে উঠে আসা উপলব্ধির বল্গাহীন প্রকাশ

    মীরাতুন নাহার
    পড়াবই | বই-কথা কও | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ | ২৬৫৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • বাইশটি নিবন্ধের সংকলন। লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। অতিকথন ও যুক্তি-তথ্য বিন্যাসে কিছু গরমিল সত্ত্বেও, এ গ্রন্থ জুড়ে রয়েছে এমন কিছু চাঁছাছোলা সত্য যা যতবার বলা যায় এবং যত মানুষকে বোঝানো যায় ততই ভালো এবং তা অতিশয় জরুরি। পড়লেন মীরাতুন নাহার


    বইয়ের নাম—জীবনের ডানদিক বামদিক। বইয়ের প্রায় পুরো প্রচ্ছদ জুড়ে লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বড়োসড়ো একখানি ছবি। প্রথম দর্শনেই পাঠকের মনে হবে, এটি লেখকের জীবনকাহিনি। পাতা উলটে সূচিতে চোখ পড়তেই বোঝা যাবে, সেটি নির্ভেজাল ভুল। বইটি আসলে বাইশটি নিবন্ধের একটি ভারী মাপের সংকলন। আর-একটু এগিয়ে ‘ভূমিকা’ পড়ার পর কোনো নাম দেখতে না পেয়ে আবার এক দফা থমকে যাওয়া! ভূমিকা কে লিখেছেন জানা গেল না! তবে এটুকু বোঝা গেল যে, তিনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি আলোচ্য বইটি যিনি লিখেছেন সেই মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে সাহিত্য-সংস্কতির জগতের ‘নামি-দামি’ সকল ব্যক্তিত্বের ধরা-ছোঁয়ার সীমানার বাইরের মানুষ বলে গণ্য করেছেন। নিজেও তিনি ধরা দেননি। আড়ালে থেকেছেন। অথচ আমরা জানি, সচেতন পাঠক মাত্রেরই একটি বিশেষ ভূমিকা থাকে এবং সেটি হল, একজন আবিষ্কারকের ভূমিকা। বই পড়া শুরু করার আগেই কয়েকটি ব্যাপার তাকে জেনে-বুঝে নিতে হয়, সেই ভূমিকা গ্রহণ করে। এই বইটির ক্ষেত্রে তাকে প্রথমেই বেশ কিছু হোঁচট খেতে হয় সম্ভবত পরে বড়ো রকমের ধাক্কা খাওয়া সামলাতে হবে বলে। ‘ভূমিকা’টিতে ‘সাহাদাত মান্টো সাহেবদের’ উল্লেখও ভাবনায় ফেলে দেয়। বর্তমান পাঠক ভাবতে থাকেন, যে-কোনো ব্যক্তির নামোল্লেখের ক্ষেত্রে আর-একটু সংবেদনশীলতা কাঙ্ক্ষিত বলেই তো মনে হয়! এর পর চোখে পড়ল ‘আমার বক্তব্য’। পাঠকের আশা-তরঙ্গ উদ্‌বেল হল, এটি নিশ্চয়ই লেখকের ভূমিকা! অনামা ব্যক্তির ভূমিকা পড়ে যা মেলেনি তা নিশ্চয়ই এটিতে মিলবে। পাঠক এগোতে থাকলেন। জানতে পারলেন, এটি একটি অভিভাষণ। কিন্তু কোথায়, কবে, কাদের আহ্বানে এটি পাঠ করা হয়েছিল সেসব তথ্য মিলল না। তবে জানা গেল, বক্তৃতার বিষয়—“ভারতীয় ইতিহাস ও রাজনীতিতে সমীকরণ”। সুদীর্ঘ একটি অভিভাষণ—বলা ও পড়া দুয়েরই জন্য বেশ গুরুগম্ভীর ও সময়সাপেক্ষ তো বটেই, তদুপরি মোটেই সহজপাচ্য নয়। ইঙ্গিত স্পষ্ট হল যে বইখানির পাঠোদ্ধারে সময়ের দাবি এড়ানো যাবে না কোনোমতেই। তবুও আবিষ্কারের বড়ো মারাত্মক নেশা। সেই নেশার টানে পাঠের পথে নেমে পড়া গেল। কী মিলল এবার তার তহবিল খোলা যাক।



    মনোরঞ্জন ব্যাপারী একজন লেখক। তিনি নিজের এই পরিচয়টি নিজে ভালোভাবেই জানেন এবং অপরকে জানাতেও ভালোবাসেন। লেখক হিসেবে তিনি সম্যক পরিচিতিও লাভ করেছেন। ভয়াবহ দারিদ্র্য-দুঃখ-কষ্ট-লাঞ্ছনা-বঞ্চনা-যন্ত্রণা ভরা তাঁর জীবনে তাঁর এই প্রাপ্তি বা অর্জন দুর্মূল্য। তবে আলোচ্য বইটি পড়তে পড়তে বারংবার মনে হয়েছে, তিনি লেখার সুখে লিখে যান অনর্গল কথা বলার মতো ভঙ্গিতে। পাঠকের কথা যেন তিনি ভুলে যান। তিনি যেন লেখেন না, কথা বলে চলেন সামনে বসা শ্রোতাদের পানে চেয়ে দেখতে দেখতে। তাই পাঠকদের প্রতি সুবিচার করার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে এক-একটি সুদীর্ঘ নিবন্ধ লেখেন এবং বিভিন্ন বিষয়বস্তুর মোড়কে বস্তুত তিনি একই কথা বলে যেতে থাকেন। যাকে সংক্ষেপে দুটি ভাগে বিভক্ত করা যায়—এক. তিনি তাঁর অন্তরের মধ্যে স্তূপীকৃত হয়ে থাকা জ্বালাযন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন নানা ভাষাশৈলী প্রয়োগ করে। দুই. নিজের ব্যক্তিজীবনের বঞ্চনার সঙ্গে দেশের অধিকাংশ দেশবাসীর বঞ্চিত জীবনের বাস্তবতাকে মিলিয়ে দিতে চেয়েছেন এবং তাদের মুক্তির মন্ত্র উচ্চারণ করতে চেয়েছেন। প্রচুর ঐতিহাসিক তথ্য তিনি উপস্থাপন করেছেন। কিছু বহুপরিচিত ব্যক্তিত্বকে তিনি তাঁর জীবনে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছেন, আবার কাউকে কাউকে নিন্দাযোগ্য হিসেবে মত প্রকাশ করেছেন। বাস্তবসম্মত নয় এমন কিছু অভিমতও তিনি ব্যক্ত করেছেন। লাগামছাড়া তাঁর লেখনী। উদ্দাম তার গতি যার সঙ্গে তাল মেলানো সকলের পক্ষে সম্ভব না-ও হতে পারে। তাঁর আত্মপ্রত্যয় এবং আত্মপ্রকাশের রকমসকমও কোনো বাধাবিপত্তি মেনে চলে না। দেখা যায়, ‘বাংলা দলিত সাহিত্য-অনুসন্ধান’ নামক নিবন্ধে তিনি তাই তাঁর নিজের সাহিত্যসৃষ্টির নাতি-লম্বা তালিকা পেশ করেছেন আরও অনেক ‘দলিত লেখক’-এর সাহিত্যকীর্তি জানানোর পাশাপাশি, যদিও তাঁরা সকলেই নিষ্ঠা সহকারে দলিত সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে জীবন যাপন করেছেন, এমনটি নয়। কেউ কেউ চূড়ান্ত ব্রাহ্মণ্যবাদী দলের যুক্তিহীন স্তাবক প্রাণীতে পরিণত হয়েছেন পরিণত-বয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও। লেখক অন্যের দোষদর্শনে পারঙ্গম হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের ছাড় দিয়েছেন দেখে বিস্মিত হতে হয়। এমন সব ধাক্কা সামলে নিয়ে চলার পর যা কিছু মিলল হিসেবের খাতায় সেগুলি এবার নিরীক্ষণে আনা যেতে পারে। আগে জমার হিসেবে নজর দেওয়া যাক—

    ১. তিনি ব্রাহ্মণ্যবাদ ও বর্ণবাদের প্রবল বিরোধিতা করেছেন। বিরোধিতার অস্ত্র হিসেবে তিনি তীব্র বিদ্বেষ-শ্লেষ-ঘৃণা-কটাক্ষ-নিন্দা-কঠোর সমালোচনাকে ব্যবহার করেছেন কোনোপ্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব প্রকাশ না করে।

    ২. তিনি নিজে কার্ল মার্কস ও বাবাসাহেব আম্বেদকরের মতবাদে বিশ্বাসী এবং তাঁর সেই বিশ্বাস প্রগাঢ় এবং অটল।

    ৩. দেশের কিছু ব্যক্তিমানুষের তিনি অকপট প্রশংসা করেছেন স্পষ্ট ভাষায়, যাঁদের মধ্যে দুটি নাম সকলের ঊর্ধ্বে স্থান পেয়েছে—মহাশ্বেতা দেবী ও শংকর গুহ নিয়োগী।

    ৪. সকলে যাঁদের মহৎ জীবনের অধিকারী বলে গণ্য করেছেন, তেমন কিছু মানুষকে তিনি অবলীলায় অভিযোগের বাণে বিদ্ধ করেছেন তথ্যপ্রমাণ পেশ না করে। শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, জিশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ, হজরত মোহম্মদ তাঁদের মধ্যে উজ্জ্বল কিছু নাম।

    ৫. দেশের কিছু মানুষকে একই সঙ্গে তিনি বরণীয় বলে গণ্য করেও তীক্ষ্ণ সমালোচনা-নিন্দা নিক্ষেপ করতে গিয়ে স্ববিরোধিতা দোষকে বিন্দুমাত্র গ্রাহ্য করেননি। তাঁদের মধ্যে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের নাম নজর কাড়ার মতো।

    ৬. মরিচঝাঁপি ও দণ্ডকারণ্যে ঘটে যাওয়া ইতিহাস স্বীকৃত রাজনৈতিক নেতাদের পরিকল্পিত নিষ্ঠুরতম অমানবিক কর্মকাণ্ডের তিনি নিজে ভুক্তভোগী হয়ে সে তথ্য পরিবেশন করেছেন যার ঐতিহাসিক মূল্য অপেক্ষা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার নিরিখে পেশ করা প্রতিবেদনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সেক্ষেত্রে তাঁর লেখনী বিভিন্ন দলীয় নেতাদের বর্বর, নৃশংস, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য কাণ্ডকারখানার নিন্দায় কালি ঝরিয়েছে অকৃপণ চিত্তে। তাঁদের নামোল্লেখেও জড়তা দেখায়নি বিন্দুমাত্র।

    ৭. পিছিয়ে পড়া, অনবরত মার খেয়ে যাওয়া বর্ণ, জাতি, সম্প্রদায় থেকে উচ্চ অবস্থানে উঠে আসা মানুষদের ক্ষমতা ও অর্থ-লোলুপতার তিনি প্রবল নিন্দায় মুখর হয়েছেন এবং তাদের এমন ভূমিকা দলিত শ্রেণির দুঃখমোচনের সম্ভাবনাকে সুদূরে মিলিয়ে দিতে সহায়ক হয়েছে—এমন বাস্তব সত্য পেশ করেছে তাঁর লেখনী রাখ-ঢাক না রেখে।

    ৮. দলিত মেয়েদের জীবনযন্ত্রণা চিত্রায়ণে তাঁর লেখনী যত নরম সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে, ঠিক তার বিপরীতধর্মী কঠোরতা প্রকাশ পেয়েছে স্বাধীনতাকামী নারীবাদী, ধর্ষক এবং ধর্ষকের ভূমিকায় সক্রিয় পুলিশদের প্রতি। হিংসাস্ত্র ব্যবহারের অকপট সমর্থনে মুখর হয়েছে তাঁর লেখনী। সে পরামর্শ তিনি দিয়েছেন বিবিধ অপরাধ এবং দমনমূলক ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করার কৌশল হিসেবে।

    ৯. মতুয়া নামক ধর্ম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দুটি নাম—হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুর। লেখক তাঁদের ব্যর্থতার হেতু নির্ণয় করেছেন এবং মতুয়াদের কঠোর সমালোচনা করে তাদের অদূরদর্শিতা ব্যাখ্যা করেছেন নিজের মতো করে ব্রাহ্মণ্যবাদবিরোধী হিসেবে।

    ১০. দলিতদের বহু দোষ তিনি দেখিয়েছেন নানা দিক থেকে। দেশভাগকেও দায়ী করেছেন দলিত জীবনের অকথ্য, অসহনীয় চিত্র ভাষায় আঁকতে গিয়ে। আবার তিনিই লিখেছেন গভীর বিশ্বাসে—‘দলিতরা জাগছে।’ বাংলার দলিতদের সম্পর্কে সেই আশা তিনি প্রকাশ করেছেন স্পষ্ট ভাষায়। সেই তিনিই আবার হতাশার্ত হয়ে পড়েছেন—তাঁর ‘স্বপ্ন বুঝি দিবাস্বপ্ন হয়েই রয়ে যায়!’

    অতি সংক্ষেপে ‘জীবনের ডানদিক বামদিক’ পাঠে জমার হিসেব এটুকুই পেশ করা গেল বর্তমান পাঠকের তরফে। বাকি থাকছে জমার হিসেবে কিছু তথ্যপ্রমাণ তাঁর রচনা থেকে তুলে ধরা এবং সেই সঙ্গে না-পাওয়ার হিসেব মেলানোর আন্তরিক প্রয়াস। এবার সে প্রয়াস গ্রহণে লিপ্ত হওয়া যাক।

    লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী জানিয়েছেন, তাঁদের পদবি ছিল মণ্ডল। তাঁর বাবার ব্যবসায়ী হওয়ার আন্তরিক প্রয়াস সম্পূর্ণ ব্যর্থ হলেও একমাত্র প্রাপ্তি ঘটে ‘ব্যাপারী’ পদবিটুকু। জীবনের বদল ঘটেনি তাতে কিছুই। কেবল ‘মণ্ডল’ হয়ে গেল ‘ব্যাপারী’। অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট–জ্বালা-যন্ত্রণা যেমন ছিল সেসব বাড়ল বই কমল না কিছুমাত্র! অতঃপর তিনি নিজেকে ‘ইন্ডিয়া’ ও ‘হিন্দুস্থান’ নামের দুটি রাষ্ট্রের কোনোটিরই নাগরিক ভাবেন না। ‘ভারত’ নামের দেশটির মধ্যেই দুটি রাষ্ট্র নির্মিত হয়ে গেছে। তিনি কেবল ‘ভারত’কেই জেনে সেই দেশটির যে শ্রেণির মানুষদের ‘গলায় গামছা থাকে’ ‘সেই শ্রেণির প্রতিনিধি’ বলে জানেন নিজেকে এবং সেই বেশেই হাজির হন সর্বত্র। তিনি তাতে গর্ব বোধ করেন এবং অন্যরা তাঁকে বাহবা দেন।

    দেশের গণতান্ত্রিকতা সম্পর্কে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন—সংবিধান প্রদত্ত দেশের প্রতিটি মানুষের ‘সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রগুলোতে সমান অধিকার’ আছে কি? আছে কি ‘খাদ্য বস্ত্র শিক্ষা বাসস্থান চিকিৎসা এবং সম্মান’ পাওয়ার সমানাধিকার? আছে কি ‘বাক-স্বাধীনতা—যেটা গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার’? সেই রাষ্ট্রব্যবস্থা যার জন্য ‘সামরিক-আধাসামরিক বিশাল বাহিনী’ ‘পুষতে হয়’ এবং সেকারণে দেশের মোট রাজস্বের ৬০ শতাংশ ব্যয় হয়ে যায় এবং ‘লক্ষ কোটি মানুষকে অনাহারে রাখতে হয়’—তাঁকে পীড়িত করে। তিনি দেশীয় সেই রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দেশের ভোটব্যবস্থাকে তিনি জুয়া খেলার সঙ্গে তুলনীয় বলেছেন। মন্তব্য করেছেন, ‘এই যে ভোটব্যবস্থা এটা এমন ভাবে নির্মিত যে কোনও সৎ লোক চাইলেও ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না।’

    দেশীয় শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কেও তিনি তীব্র নঞর্থক অভিমত প্রকাশ করেছেন—‘তুমি শিক্ষিত—তোমার দ্বারা আর কোনও শ্রমের কাজ শোভন নয়। তুমি অনেক উচ্চ হয়ে গেছ। তাই সে শ্রমিক কৃষককে মেহনতী মানুষকে শ্রমজীবনকে অবজ্ঞা করতে শেখে।’ এইরূপ শিক্ষাব্যবস্থার দ্বারা ‘সিকি শিক্ষিত’ মানুষ তৈরি হয়। তাদের ‘মগজ সক্রিয়’ থাকলেও ‘হৃদয় মন ভোঁতা করার যাবতীয় উপাদান আছে এই শিক্ষায়’। ধর্ম সম্পর্কে বলেছেন নির্দ্বিধায়—‘ধর্ম সর্বদেশে সর্বকালে রাজতন্ত্রের সহায়ক’ রূপে কাজ করেছে। রাজনীতির ব্যবসায়ীদের ক্ষমতা-লোলুপতা, কোটি কোটি টাকার কারবারি নেশা, অসহায় দেশবাসীর শোষণ-বাসনা ইত্যাদির তীব্র নিন্দায় মুখর হয়েছে তাঁর লেখনী। ক্ষমতাসীন কোনো দলের নেতানেত্রীদের তিনি রেহাই দেননি নিন্দাবাণ নিক্ষেপ করা থেকে। তাঁর তীব্র সমালোচনার লক্ষ্য থেকে বাদ পড়েনি তথাকথিত নারী-স্বাধীনতাকামী নারীবাদী, সমাজবিরোধী ধর্ষক, পীড়ক শ্রেণিভুক্ত পুলিশ এবং ধার্মিকদের ভগবানও। ভগবান সম্পর্কে কিশোর বয়সেই তাঁর মনে প্রশ্ন জেগেছিল— যিনি এই বিপুল বিশ্ব ‘মুহূর্তের ইচ্ছায়’ সৃষ্টি করতে পেরেছেন তিনি দুঃস্থ মানুষের ‘পেটে ভাত, পরিধানের একটুকরো কাপড়, বাসযোগ্য ছোটো একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন’ তো চাইলেই! ‘তবু কেন করেন না!’ সদুত্তর পাননি সারাজীবনে। অতঃপর নাস্তিক বনে গেছেন। তাই অক্লেশে লিখে ফেললেন অগণিত ভক্তের ভগবান সম্পর্কে—‘তিনি কিছু গুরুগোঁসাইয়ের উপর মানুষকে ধর্মপথে আনবার ভার দিয়ে কোথায় কোন ক্ষীরসাগরে দু’পাশে দু’খানা হিরোইন নিয়ে আধশোয়া-আধবসা, আধো ঘুম-আধো জাগরণে আছেন।’

    রাজনীতিকে তিনি ‘বিনা পুঁজির আর বিনা যোগ্যতার সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা’ বলে চিহ্নিত করেছেন। ‘ভদ্রলোকের সমাজ’কে তিনি চিনে নিয়েছেন এভাবে—‘উচ্চবর্ণের উচ্চলোক আর নিম্নবর্ণের উচ্চলোক নিয়ে’ গড়ে ওঠে ভদ্রলোকের সমাজ— ...জোঁকের মতন ছোটোলোকদের শ্রম-ঘাম শুষে ফুলে-ফেঁপে ওঠে।... ‘ভদ্রলোক শ্রেণির কেউ কেউ যেমন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-অধ্যাপক-আমলা জাতীয় পেশা পছন্দ করেন, কেউ কেউ বেছে নেন ওপরে ওঠার শর্ট কাট পথ—রাজনীতি’ যাকে তিনি স্পষ্ট উচ্চারণে ‘লাভজনক ব্যবসা’ বলেছেন। বস্তুত দেশের সকল প্রকার ব্যবস্থাপনা ও রাষ্ট্রব্যবস্থাপকদের কাণ্ডকারখানা তিনি বোঝার সম্যক চেষ্টায় কসুর করেননি এবং সকল ক্ষেত্রের গলদ আবিষ্কার করে সেসব ঘটন পটীয়সীদের রেয়াত করতে চাননি কোনোমতেই। করেননি যে তা-ও দেখা গেল।

    কিন্তু সব ছাড়িয়ে তাঁর লক্ষ্যমাত্রা যেখানটিতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে আক্রমণ শানানোর জন্য সেটি হল ব্রাহ্মণ্যবাদ ও বর্ণবাদ। তাঁর নিজ ব্যক্তিজীবনের অবিশ্বাস্য রকমের কষ্টকর অভিজ্ঞতা তাঁকে যত জ্বালা-যন্ত্রণায় জর্জরিত করেছে সেসবের অনুপুঙ্খ বর্ণনা তিনি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তাঁর প্রাপ্তির দিকটুকু দেখার মতো পরিমিত সময় হয়তো পাননি অথবা পেয়েও চেয়ে দেখেননি বলে সে সত্যটুকু না-বলা রয়ে গেছে তাঁর সুদীর্ঘ, জ্বালাভরা অথচ সুলিখিত নিবন্ধগুলিতে। বর্তমান পাঠকের দৃষ্টিতে সে ফাঁক ধরা পড়েছে এবং সেটি হল বিভিন্ন অভবানীয় বঞ্চনাদগ্ধ জীবনের বিচিত্র যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতা তাঁকে তাঁর বিভিন্ন স্তরের দেশ ও দেশবাসীর কিছু না পাওয়া এবং সব পাওয়ার বাস্তবতা চিনতে শিখিয়েছে। যাঁরা প্রথম শ্রেণিভুক্ত তাঁদের সীমাহীন যন্ত্রণা যেমন, তেমনি কেন, কীভাবে, কাদের দ্বারা তাঁদের জীবনে কিছু না পাওয়ার কষ্ট নেমেছে, সুদীর্ঘ সময়কাল ধরে, তা-ও তিনি বুঝে নিতে পেরেছেন বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত হয়ে, বিভিন্ন চিন্তাবিদের ভাবাদর্শ অনুসরণ করার সুযোগ পেয়ে, কিছু মহান মানুষদের সান্নিধ্যলাভের সৌভাগ্য লাভ করে এবং নিজ ‘মগজের’ সক্রিয়তা ও নিজস্ব পর্যবেক্ষণ শক্তির দৌলতে।

    যে মানুষটি লিখে চলেন—‘আমার মা বাবুবাড়ি বাসন মাজত, বাপ খাটতো জনমজুর। আমার বাল্যকাল কেটেছে চাকরবাকর খেটে।’—সেই মানুষটির দেখা-জানা-বোঝার ক্ষমতা ছিল তাই নিবিড় ব্যথা পেয়েছেন যেমন, তেমন ‘জীবনের ডানদিক বামদিক’ কেবল নয়, সব দিক দেখে ফেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ফলে শেষপর্যন্ত কলমের মুখে খুলে দিতে হয়েছে অব্যক্ত যন্ত্রণা যেমন, তেমনি জীবনকে আদ্যান্ত বুঝে নেওয়ার খোলামেলা হাব-ভাব, প্রকাশভঙ্গি ও অ-মিষ্ট কথনের ঝরনাধারা!

    তাঁর বিষয় নির্বাচনে আপাত-বিভিন্নতা থাকলেও তাঁর বলার কথার সব ধারা গিয়ে মিশেছে একই খালে এবং সেটি হল, ব্রাহ্মণ্যবাদ ও বর্ণবাদের হাত-ধরাধরিতে সৃষ্ট নিম্নবর্ণের শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষদের উপর অকথ্য অত্যাচারের অফুরন্ত চক্রান্তাধার। লেখক নিজে সেই অশেষ ষড়যন্ত্রের অসহায় শিকার হওয়ার দুর্ভাগ্যপীড়িত একজন ভারতবাসী। তাতে তাঁর বুকে বিষ জমা হয়েছে দীর্ঘ সময়কাল ধরে। সেই বিষ তিনি তাঁর লেখায় উদ্‌গিরণ করেছেন অনর্গল, বিবিধ নিবন্ধের পরিসরে। বিষয়ের বিভিন্নতা তাতে হারিয়ে গিয়েছে প্রায়, একটি অভিন্ন বিষয়বস্তু বা বলার কথার অন্তরালে। যে বাস্তব সত্য তাঁর বুকে বিষজ্বালা অধিকতর অসহ্য করে তুলেছে সেটি হল, নিম্নবর্গ থেকে উঠে উঁচুতে স্থান করে নিয়ে উচ্চবর্ণের সারিতে বসে না-পাওয়া শ্রেণির মানুষদের কষ্ট ভুলে গিয়ে নিপীড়ন-যন্ত্রকে আরও বেশি সক্রিয় করার কাজে মদত দিয়ে চলেছে যে নিম্ন-চিত্তের, উচ্চবিত্তধারী মানুষগুলো—তাদের বিবেকহীনতা। লেখকের নিরীক্ষণে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব পাওয়া এই সত্য নিখাদ এবং নির্মম। দেশের পনেরো শতাংশ মানুষ দেশের সব কিছু ভোগদখলে রেখে পঁচাশি শতাংশকে চিরবঞ্চিতের শ্রেণিতে ঠেলে রাখবে—এই তথ্য যতবার বলা যায় এবং যত মানুষকে বোঝানো যায় ততই ভালো এবং অতিশয় জরুরি। লেখক সেটি করেছেন। সচেতন পাঠকমাত্রের হিসেবে এটি নতুন প্রাপ্তি না হলেও নতুন মোড়কে ‘পাওয়া’, নিঃসন্দেহে। এবার কিছু অতৃপ্তির খতিয়ান অতি সংক্ষেপে বলে নিয়ে বর্তমান পাঠকের লেখার গতি থামানো যাক। ক-টি কথা মাত্র—

    এক. লেখক নিজেকে ‘শঙ্কর গুহ নিয়োগীর লোক’ বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি তাঁর অনুসরণে দলিত শ্রেণির মানুষদের মুক্তি ঘটবে ‘সমান্তরাল সমাজ’ গঠনের দ্বারা—এই মন্ত্র উচ্চারণ করেছেন সংশয়হীন বিশ্বাসে। সে তো বিবেকবান দেশবাসীর সকলেরই কাম্য ও জানা সত্য। এবং সে সত্যও আজ অজানা নেই যে, বঞ্চিত শোষিত জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-বিপ্লব-বিদ্রোহ গড়ে তোলার মধ্যেই রয়েছে সেই গঠনমূলক কাজের সূত্রধারা। পাঠকের জমার খাতায় এটুকু মিলেছে। কিন্তু হিসেবের গরমিল ঘটছে যে প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে সেটি হল, লেখক শেষপর্যন্ত লেখাকেই মাধ্যম বেছে নিয়েছেন ‘কিছু মানুষের’ গলার নলি কাটার ইচ্ছে পূরণ করতে না পেরে। শংকর গুহ নিয়োগীর শিষ্যত্ব গ্রহণ তাহলে তাৎপর্য লাভ করল কি?

    দুই. তিনি বাবাসাহেব আম্বেদকরের অন্ধ ভক্ত নন। তিনি তাঁর একজন জ্ঞানবান ভক্ত কেননা তিনি তাঁর ত্রুটিগুলিও যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করেছেন, সমালোচনা করেছেন খোলাখুলি। অতি প্রশংসনীয় তাঁর এইপ্রকার যুক্তিবাদিতা। কিন্তু তবুও তাঁর এই গরমিল গোল বাধায়। তিনি নিজেকে গামছা গলায় শ্রেণির প্রতিনিধি ঘোষণা করে ‘গামছা গলার জাত থেকে টাই বাঁধা জাতে উঠে গেছে’ যারা তাদের তুমুল নিন্দা করেছেন। প্রশ্ন ওঠে তিনি নিজে তাহলে ‘গামছা-পন্থী’ হয়ে সরে গেলেন কি টাই বাঁধা বাবাসাহেবের দেখানো পথ থেকে? আসল কথা হল পোশাকে কী এসে যায়! কাজই তো সব!

    তিন. এই জমার হিসেবে কোনো ভুল নেই যে তিনি নিপাট মার্কসপন্থী ভারতবাসী। মার্কস যেমন বলেছিলেন, ‘দোহাই তোমাদের! আমি মার্কসবাদী নই!’ তিনিও তেমনি লিখেছেন, ‘আমি মার্কসবাদ সম্পর্কে এত কথা বলছি, কিন্তু এদেশে ঘোষিত মার্কসবাদী সম্পর্কে একটাও ভালো কথা বলতে পারব না।’ কেন? উত্তর মিলল—‘এরা ঘোরতর আম্বেদকর বিরোধী।’ তিনি অতঃপর উভয় মনীষীর মতবাদের সমন্বয়সাধন করার প্রয়াস গ্রহণ করেছেন স্বেচ্ছায়। সাধুবাদ প্রাপ্য তাঁর। গরমিল তবু থেকে যায়। তিনি দোষদর্শিতা নামক নিজ বৈশিষ্ট্যের এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটিয়েছেন। মার্কসকে তাঁর কলমের খোঁচা বিঁধতে পারেনি। অথচ একচক্ষু হরিণের মতো মার্কস সাহেব কেবল মানুষের দ্বারা মানুষের শোষণকে দেখেছেন, প্রকৃতির পীড়নে সর্বহারা মানুষের কষ্ট তাঁর মনে দাগ কাটেনি!

    চার. মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য পাঠককে মহা গরমিলের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়ায়। লেখক জানিয়েছেন যোগেন্দ্রনাথ নিজে পালিয়ে নিজ দেশ পাকিস্তান থেকে পরদেশ ভারতে এসেছিলেন। আসার আগে দেশবাসী হিন্দুদের অভয় দিয়ে বলেছিলেন, তারা যেন দেশ না ছাড়ে। তাঁর এইপ্রকার বিশ্বাসঘাতক ভূমিকার কথা বলেও তিনি বলেছেন, যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল বাংলার দলিতদের মুক্তিদাতা।

    পাঁচ. জিশু, বুদ্ধ ও মোহম্মদ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, তাঁরা দাসপ্রথার বিরুদ্ধে কিছুই বলেননি বা করেননি! একথার সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ তিনি দেননি। এত গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তোলার ক্ষেত্রে সেটি পাঠকের জন্য একটি গুরুতর গরমিল তৈরি করে বইকি!

    কথায় কথা বাড়ে। সে পথে চলতে নারাজ হয়েও বহু কথা বলা হয়ে গেল বর্তমান পাঠকের পক্ষ থেকে! তবুও শেষ গরমিলের কথা বলেই থামা যাক—

    ‘লেখক’ শ্রেণিভুক্ত হওয়ার জন্য গর্ব বোধ করা লেখক-কথিত ‘ভদ্রলোক’-দেরই একচেটিয়া ‘চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য’। লেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারী যেন সে সত্যকে মিথ্যে প্রতিপন্ন করেছেন তাঁর লেখা আলোচ্য নিবন্ধ সংকলনটিতে—মনে হয়েছে আলোচক বইপ্রেমিকের!




    জীবনের ডানদিক বামদিক
    মনোরঞ্জন ব্যাপারী
    ঋতবাক
    মুদ্রিত মূল্য: ৫৫০ টাকা
    প্রাপ্তিস্থান: কলেজস্ট্রীটে দে'জ, দে বুক স্টোর(দীপুদা)


    বাড়িতে বসে বইটি পেতে হোয়াটসঅ্যাপে বা ফোনে অর্ডার করুন +919330308043 নম্বরে।


    গ্রাফিক্স: মনোনীতা কাঁড়ার

    এই বিভাগের লেখাগুলি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করে 'পড়াবই'এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ | ২৬৫৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন