করোনা কালে অতিমারির বাইরে ভিন্ন কিছু বিষয় দিয়ে আমার আলোচনার অবতারণা করি।
১২ ডিসেম্বর, ১৯৯১, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স সামার্স একটি গোপন নোট তৈরি করে সহকর্মীদের মধ্যে বিলি করেন, মতামত চান। ১৯৯২-এর ফেব্রুয়ারি মাসে বিখ্যাত পত্রিকা The Economist নোটটি প্রকাশ করে দেয় “Let Them Eat Pollution” শিরোনামে। নোটটির মোদ্দা কথা ছিল, ধনী বিশ্বের সমস্ত প্রাণঘাতী, দূষিত আবর্জনা আফ্রিকার মতো LDC (Less Developed Countries) বা কম উন্নত দেশগুলোতে পাচার করতে হবে। এজন্য একটি স্বাস্থ্যের যুক্তিও দিয়েছিলেন সামার্স। তাঁর বক্তব্য ছিল আমেরিকার মতো দেশে ১,০০,০০০ জনে ১ জনেরও যদি দূষিত বর্জ্যের জন্য প্রোস্টেট ক্যান্সার হয় তাহলেও এর গুরুত্ব আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে যেখানে ৫ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর হার ১০০০ শিশুতে ৫ জন তার চাইতে বেশি। এবং সেখানেই প্রথম বিশ্বের দেশের এই দূষণ পাচার করতে হবে, পাচার করতে হবে এই বিষাক্ত বর্জ্য। এরকম “চমৎকার ও অভিনব” ধারণার পুরস্কার হিসেবে ক্লিন্টন প্রশাসনে ৭ বছর U.S. Treasury Secretary পদে ছিলেন। সে মেয়াদ শেষ হলে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এসব পুরস্কারের কথা থাক।
আমরা যদি স্বাস্থ্যের চোখ দিয়ে দেখি তাহলে বুঝবো স্বাস্থ্যের জগতে দু’ধরনের নাগরিকত্ব (health citizenship) তৈরি হল। একটি পূর্ণ রাশি, আরেকটি ০ রাশি। আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও এরকম integer দেখা হয় – হয় ০ কিংবা ১। এখানে ভগ্নাংশের কোন জায়গা নেই। যেমনটা আজকের ভারতে এবং বিশ্বে দেখছি আমরা। স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের প্রশ্নটিতে আমাদের মনোযোগ দেবার প্রয়োজন এ জন্য যে বিশ্ব স্বাস্থ্যের দুনিয়ায় একজন বিশেষ নাগরিক নৈতিকভাবে স্বাস্থ্যের সমস্ত সুবিধে ভোগ করার অধিকারী, আবার “বিশেষ” আরেকজন এইসব সুবিধে ভোগ করার বাইরে – “স্বাস্থ্য আমার অধিকার” এই শ্লোগানের বাইরে। এরকম স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের অবস্থান থেকে মান্য জনস্বাস্থ্য গবেষক এবং দার্শনিক (যিনি social determinants of health-এর ধারণার প্রবক্তাও বটে) মাইকেল মার্মট প্রশ্ন করেন – “রোগীদের কেন চিকিৎসা করছো এবং যে পরিস্থিতিতে থেকে তাদের অসুখ শুরু হয়েছিল সেখানে আবার ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছ?” প্রশ্ন করেন সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর জন্য – “আমরা কি হয় একজন ব্যক্তি চিকিৎসক কিংবা ডাক্তার-সমাজ হিসেবে এর সাথে যুক্ত হবোনা?” (“Shouldn’t the doctor, or at least this doctor, be involved?”) (The Health Gap, 2016)
আমাদের দেশে এবং সমগ্র বিশ্ব জুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো করোনা-কাহিনী স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের এই দ্বিত্বতা প্রকট করেছে। ইউরোপ আমেরিকায় একভাবে প্রকটিত, ভারতবর্ষে আরেকভাবে। এরপরেও মূল করোনা আখ্যানে প্রবেশের আগে আমরা কয়েক দশক আগের আন্তর্জাতিক চিত্র একবার দেখে নেবো, বর্তমান সময়কে বোঝার জন্য। এ ইতিহাসের কয়েকটি মূল বিষয়কে প্রথম থেকেই আমাদের নজরে রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে।
(১) ১৯৮১ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ কংগ্রেসের ৩৪তম অধিবেশন বসেছিল জেনেভাতে, ৪-২২ মে, ১৯৮১ সালে। সে সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, “আমাদের অবশ্যই অসামান্য আধুনিক হাসপাতাল প্রয়োজন।” এরপরের কথা, “কিন্তু স্বাস্থ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছুতে হবে। কেন্দ্রাভিমুখী হবার বদলে প্রান্তাভিমুখী হবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা।” আরও বললেন, ”স্বাস্থ্য কোন পণ্য নয় যা পয়সা দিয়ে কেনা যায় কিংবা এটা কোন ‘সার্ভিস’ নয় যা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য হল জানার, বেঁচে থাকার, কাজে অংশগ্রহণ করার এবং আমাদের অস্তিত্বসম্পন্ন হবার চলমান একটি প্রক্রিয়া”। আরও বলেছিলেন, “আমাদের স্বাস্থ্যসেবা শুরু হবে সেখান থেকে যেখানে মানুষ রয়েছে, সেখান থেকে যেখানে রোগের সমস্যার শুরু”। আধুনিক সময়ের পূর্ণত পণ্যায়িত ঝকমকে, চোখ-ধাঁধানো স্বাস্থ্য পরিষেবার (স্বাস্থ্য নয় কিন্তু, এই ভুল করবেন না) যুগে ৪০ বছর আগের এ উচ্চারণ এবং উপলব্ধি বৈপ্লবিক বলে মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
(২) ক্লিনিক্যাল হেলথ তথা ব্যক্তির স্বাস্থ্য এবং পাব্লিক হেলথ তথা জনস্বাস্থ্য এ দুয়ের মাঝে বিস্তর ফারাক – দুটি আলাদা দর্শনের জগৎ। আমরা আমাদের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ৫-৭ বছর বা তার বেশি সময় ধরে যা শিখি তা হল একজন ব্যক্তি রোগীকে সবচেয়ে ভালোভাবে কি করে চিকিৎসা করা যায়। এখানে জনস্বাস্থ্য বা জনতার স্বাস্থ্য একেবারেই অনুপস্থিত। ফলে পাস করে বেরনো চিকিৎসক সমাজের মানসিক অবস্থানে এবং সামাজিক দর্শনে রয়ে যায় চিকিৎসকের চেম্বারে অথবা সরকারি কিংবা প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে রোগীর চিকিৎসার মাঝে ক্লিনিকাল হেলথের দুর্মর ছাপ। পাবলিক হেলথ এখানে দুয়োরাণী। একটা উদাহরণ হচ্ছে, এ মুহূর্তে ভারতে ৩০,০০,০০০-এর বেশি মানুষ মারাত্মক এবং মারণান্তক সিলিকোসিস রোগে ভুগছে। এ রোগ আমাদের প্রায় পড়ানো হয়না বললেই চলে। এ রোগ দরিদ্র হবার রোগ, দারিদ্র্যের অভিশাপের রোগ – পেটের দায়ে কৃষিতে সংকুলান না হবার জন্য খাদানে কিংবা অন্যত্র বিভিন্ন ক্রাশার নিয়ে কাজ করার রোগ। ক্লিনিকাল হেলথের শিক্ষা আমাদের কাছে এ রোগকে invisible, indiscernible করে রেখেছে। একে দৃশ্যমানতা বা visibility এবং শ্রুতিসীমা বা discernibility-র স্তরে তুলে আনার প্রচেষ্টা কি আমরা চালাবো? এরকম আরও অনেক রোগের কথা বলা যায়। প্রসঙ্গত, আমেরিকায় অ্যাসেবেস্টোসিস রোগে (সিলিকোসিস ধরনের একটি রোগ) বছরে প্রায় ৪০,০০০ মানুষ মারা যায়। এ নিয়ে নিউ ইংল্যান্ড জার্নালের (NEJM) মতো পত্রিকায় ১৫ আগস্ট, ২০১৯, সংখ্যায় বিশেষ প্রবন্ধ প্রকাশিত হল “A Most Reckless Proposal – A Plan to Continue Asbestos Use in the United States”। আমরা কবে পারবো এরকম এক পদক্ষেপ নিতে? আমেরিকায় ৪০,০০০ মানুষের জন্য মান্য মেডিক্যাল জার্নালে খবর হয়। আমাদের এখানে করোনার মতো অতিমারিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে অগণন মৃত্যুর মতো ঘটনা ছাড়া এসব “ফালতু” ও “অবান্তর” মৃত্যুগুলো আমাদের গোচরেই আসেনা। কোন পদক্ষেপ তো অনেক কষ্ট-কল্পিত ব্যাপার।
(৩) প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোন বিকল্প কোনভাবেই অধুনা ভারত সরকার প্রস্তাবিত Health and Wellness Centre (HWC) হতে পারেনা। ঐতিহাসিকভাবে জনস্বাস্থ্যের আতুর ঘর হল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অন্তত ২০০ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনে ও ধাপে এটা প্রমাণিত। এখানে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা হয়, চিকিৎসা হয় মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি রোগীর এবং আরও অনেক অবহেলিত রোগের, যাদেরকে অবহেলাভরে একটি নাম দেওয়া হয়েছে “tropical neglected diseases” বা “গরম দেশের অবহেলিত রোগসমষ্টি”। Do We Care গ্রন্থের সুপরিচিত বিশেষজ্ঞ লেখিকা সুজাতা রাও বলেন – “একটি হার্ট সার্জারি, কানের একেবারে অন্তর্ভাগে “ইমপ্ল্যান্ট” বসানো কিংবা সিজারিয়ান সেকশনের জন্য অর্থ পাওয়া সহজলভ্য, কিন্তু অর্থ সহজলভ্য নয় প্রয়োজনীয় এবং একেবারে প্রাথমিক ডায়াগ্নোসিসের জন্য, কিভাবে রোগ প্রতিরোধ করা যায় এ শিক্ষার জন্য, রোগ থেকে সেরে ওঠার পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য, বৃদ্ধদের দেখাশোনা এবং যত্নের জন্য, স্কুলে স্বাস্থ্যরক্ষা এবং বয়ঃসন্ধির যত্নের জন্য, অথবা communicable (যেমন ডায়ারিয়া, টিবি, শ্বাসকষ্টের রোগ) কিংবা non-communicable (যেমন ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক) রোগগুলোর যে সরাসরি কারণ (যেমন দূষিত পানীয় জল, দূষিত পরিবেশ বা বায়ু) সেগুলোকে আয়ত্তে আনার জন্য, কিংবা অর্থের জোগান নেই অ্যাক্সিডেন্টের চিকিৎসার জন্য, অর্থ নেই সামান্য জ্বরের চিকিৎসার জন্য, অর্থ নেই সাপে কাটা রোগীর জন্য – যে বিষয়গুলো দরিদ্র মানুষের জন্য নিতান্ত গুরুত্বপূর্ণ”। (পৃঃ ২৪-২৫) HWC এখানে নিরুত্তর। আমরা HWC চাইনা, চাই উপযুক্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, যা ১৯৪৮-এ “ভোর কমিটি”-র রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছিল এবং সাম্প্রতিক কালে শ্রীনাথ রেড্ডির সুপারিশে যা জোর দিয়ে বলা হয়েছে।
(৪) ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (UHC) এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্য - এই দুটি ধারণার মাঝে ফারাক আছে। UHC-তে ধরে নেওয়া হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো যে পরিষেবা দেবে মানুষকে তার জন্য মানুষ স্বাস্থ্যের জন্য ইন্সিউরেন্স থেকে টাকা পাবে। কিন্তু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর ভিত্তিই ছিলো “equitable access to basic health services” অর্থাৎ, স্বাস্থ্যের বুনিয়াদি সুযোগের জন্য সবার সমান প্রবেশাধিকার থাকবে। এবং এর জন্য ব্যয় বহন করবে রাষ্ট্র, রোগীকে কোন ব্যয় বহন করতে হবেনা। অর্থাৎ, স্বাস্থ্য কি সরকারি বা বেসরকারি ইন্সিউরেন্সের আওতায় আসবে? হাঙ্গরের মতো হাঁ করে রয়েছে বহুজাতিক ইন্সিউরেন্স কোম্পানিগুলো। একবার যদি স্বাস্থ্য সুরক্ষার রাষ্ট্রীয় কবচ সরিয়ে দেওয়া যায় তাহলে সরকারের তরফে ঢাকঢোল পিটিয়ে সরকারি ইন্সিউরেন্সের কথা বলা হলেও শেষ অব্দি তা বেসরকারি ইন্সিউরেন্সের হাতেই চলে যাবে।
এখানে ইংল্যান্ডের সুবিদিত ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কথা একবার স্মরণ করা যেতে পারে। ১৯৪৮ সালের জুন মাসে ইংল্যান্ডের প্রতিটি বাড়িতে একটি লিফলেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। লিফলেটে বলা হয়েছিল –
Your new National Health Service begins on 5th July. What is it? How do you get it?
It will provide you with all medical, dental, and nursing care. Everyone—rich or poor, man, woman or child—can use it or any part of it. There are no charges, except for a few special items. There are no insurance qualifications. But it is not a "charity". You are all paying for it, mainly as taxpayers, and it will relieve your money worries in time of illness. There are no insurance qualifications. But it is not a “charity”. You are all paying for it, mainly as tax payers, will relieve your money worries in time of illness. এর পরে আর বলার কি থাকতে পারে?
ল্যান্সেট পত্রিকায় ২৪ আগস্ট, ২০১৯-এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ জানাচ্ছে – ২০১৮-তে সবচেয়ে বেশি রেভেন্যু দেয় এরকম ১০০টি সংস্থার ৬৯টি কর্পোরেট সংস্থা, ৩১টি সরকারি সংস্থা। (“From primary health care to universal health coverage – one step forward and two steps back”, Lancet, August 24, 2019, pp. 619-621) পূর্বোক্ত প্রবন্ধে দুটি মনোযোগ দেবার মতো পর্যবেক্ষণ আছে – “UHC, প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিপরীতে, রোগের ক্ষেত্রে যেগুলো সামাজিকভাবে নির্ধারণ করে সেই “social determinants of health” এবং কমিউনিটি অংশগ্রহণের ব্যাপারে একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে থাকে”। এবং “”কেয়ার” বা যত্নের পরিবর্তে “কাভারেজ” (coverage) এই শব্দটি স্বাস্থ্যের সীমায়িত পরিসর বোঝায়, এবং বোঝায় যে একটি ইন্সিরেন্স স্কিমে কতগুলো নাম (সবার নাম নয়) তালিকাভুক্ত হবে। আরও বিপজ্জনক হল “UHC-র ইন্সিউরেন্স-নির্ভর মডেলকে প্রোমোট করা হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যের জন্য কম অর্থ বরাদ্দ এবং অন্যান্য জনস্বাস্থ্যের প্রোগ্রামকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করে”। প্রসঙ্গত মনে রাখবো ভারতের স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় এত ঢক্কানিনাদের পরেও জিডিপি-র ১-১.৫%-এর মধ্যে। ভারতের জনসংখ্যা ১৩০ কোটির বেশি। এবার মাথাপিছু গড় ব্যয় কতো হিসেব করুন। শুধুমাত্র চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে প্রতি বছর গড়ে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে চলে যায় – এ সংখ্যা ইংল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার প্রায় কাছাকাছি। (National Health Policy 2017, 2015)
(৫) ১৯৭৮-এর আলমা-আটার ঘোষণাপত্রে স্পষ্টত “New International Economic Order (NIEO)”-এর ধারণা উচ্চারিত হয়েছিলো। দেশের সম্পদ বিতরণের ব্যাপারেও সেখানে আলোচনা হয়েছিলো। স্বাভাবিকভাবেই এরকম দৃষ্টিকোণ থেকে মেডিক্যাল সিলেবাসও তৈরি হচ্ছিলো। পরিস্থিতি বদলের সাথে সাথে মেডিক্যাল সিলেবাস এবং শিক্ষার ধরণও বদলে যাবে। এবং বদলে যাচ্ছে মুক্ত বাজার এবং পণ্যায়িত স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে।
২১ নভেম্বর, ২০১৮-তে NEJM (New England Journal of Medicine)-এ প্রকাশিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধের শিরোনাম – “Disease and Famine as Weapons of War in Yemen”। প্রবন্ধটি শুরু হচ্ছে এভাবে – How can the medical community take stock of the humanitarian disaster in Yemen? কিভাবে পৃথিবীর মেডিক্যাল সমাজ ইয়েমেনে যে মানবিক বিপর্যয় চলছে তার বিবেচনা করবে?
কোথায় ইয়েমেন? মধ্য এশিয়ার এক ফালি দেশ – রেড সি, আরব সাগর এবং সৌদি আরব দিয়ে ঘেরা। ২০১৬ থেকে ইয়েমেনের মানুষ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, জীবনহানি, শিশুমৃত্যু, কলেরা, দুর্ভিক্ষ, কলেরার মতো মহামারী প্রত্যক্ষ করছে। ইয়েমেন গৃহযুদ্ধ চলছে। কেন চলছে? কোন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক কারণে এ যুদ্ধ আমার এ প্রবন্ধের বিবেচ্য সেটা নয়। সে আলোচনা অন্য পরিসরে আবার কখনো সুযোগ পেলে করা যাবে। আমাদের আলোচনার জন্য এটুকু তথ্য আপাতত প্রয়োজনীয় যে ইয়েমেনীদের একাংশের যে প্রতিরোধ সংগ্রাম তার বিরুদ্ধে একসাথে জোট বেঁধেছে সৌদি আরব, আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স। অর্থনৈতিক অবরোধ এবং সমস্ত প্রচেষ্টা চলছে ঐটুকু দেশকে গুঁড়ো করে দেবার জন্য।
NEJM-এর লেখাটিতে ফিরে আসি। লেখার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে আমরা জানছি ২০১৮-র অগাস্ট মাসে একটি স্কুল বাসের ওপরে সামরিক বিমান হানায় ৫০ জনেরও বেশি খুদে স্কুল ছাত্র মারা গিয়েছে। কিন্তু “woefully underreported relative to the magnitude of the ongoing crisis” – বর্তমানে যে পরিমাপের সংকট চলছে তার তুলনায় করুণভাবে এ নিয়ে প্রায় কোন রিপোর্ট নেই। এরপরে প্রবন্ধে একটি অমোঘ মন্তব্য রয়েছে – “এরকম অবহেলা আমাদের সামগ্রিক সংবেদনশীলতা যে বিবশ হয়ে পড়েছে (numbing of our collective sensitivity) তা বড়ো দগদগে করে দেখায়।” কোথায় রাখবো আমরা মানবাত্মার এবং আমাদের মরমী অস্তিত্ব ভুলুন্ঠিত হবার অপমান? একই ঘটনা কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ইরাকে দেখেছি, দেখেছি সিরিয়াতে, দেখেছি আফগানিস্তানে। আমাদের যাপনে আর চৈতন্যে হয়তো কখনোই কষাঘাত করেনি। পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন!
স্মরণে রাখবো ১৯শে অগাস্ট হল World Humanitarian Day – বিশ্বমানবতা দিবস! জানুয়ারি, ২০১৭-তে ল্যান্সেটে প্রকাশিত “Malnutrition in Yemen: an invisible crisis” শিরোনামের প্রবন্ধ থেকে আমরা জানছি – ১ কোটি ৪৪ লক্ষ মানুষ মারাত্মকভাবে খিদের অসুখ অপুষ্টিতে ভুগছে, ৩৭০,০০০ ইয়েমেনি শিশু ভয়ঙ্কর অপুষ্টিতে আক্রান্ত। UNICEF-এর হিসেব অনুযায়ী প্রায় ১ কোটি (সঠিক হিসেব ৯৯০,০০০০) শিশুর কোন না কোনরকম “nutrition assistance” প্রয়োজন। ইয়েমেন খাদ্যের মূল্য বেড়েছে ৫৫%, জিডিপি-র সংকোচন হয়েছে ৩৩%। ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭-এ ল্যান্সেটে প্রকাশিত আরেকটি প্রবন্ধ – “Millions in need of humanitarian assistance in Yemen” – খুব স্পষ্ট করে জানালো – “The Saudi-led coalition, which has received logistical and intelligence support from the UK, the USA, and France, closed air, land, and sea access on Nov 6”। একটি ক্ষুদ্র দেশকে সমস্ত দিক থেকে অবরুদ্ধ করে ফেলা হচ্ছে কেবলমাত্র উচিৎ শিক্ষা দেবার জন্য। সমস্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা, রোগ-মোকাবিলার প্রক্রিয়া এবং মাধ্যম, জলের ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হবার ফলে প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে শিশু মারা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হবার আরো কিছু ধারাবাহিক ফলাফল আছে – (১) হাসপাতালে জেনেরাটর চালানো যাচ্ছেনা, (২) কোন আইসিইউ বা ইমার্জেন্সি ব্যবস্থা চালানো যাচ্ছেনা, (৩) ভ্যাক্সিন এবং ওষুধ সরবারাহের জন্য যে cold chain দরকার তা রক্ষা করা যাচ্ছেনা। এর দরুণ কোন প্রতিষেধক টীকা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখানে জোর দিয়ে উল্লেখ করতে করোনা অতিমারি আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অপ্রতুলতাকে এমন নগ্নভাবে প্রকট করেছে যে রুটিন টীকা দেওয়ার যে কর্মসূচী তা স্থগিত আছে, করোনার ধাক্কায় ক্রনিক অসুখে অনান্য রোগীরা চিকিৎসার নিয়মিত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে – ইয়েমেনের যুদ্ধ ছাড়াই।
আর ইয়েমেনে নিষ্ঠুরভাবে আরোপিত যুদ্ধের ফলাফল? যেখানে ২০১৫-তে কোন ডিপথেরিয়া রোগী ছিলনা সেখানে ২০১৮-তে ৪৮ জন ডিপথেরিয়া রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে, ৩০০০-এর বেশি হামের রোগী (মৃত্যুর সংখ্যা ২০-র বেশি), নিউমোনিয়া এবং পোলিও সংক্রমণের আশঙ্কা গভীরভাবে দানা বাঁধছে। বোধহয় নিয়তির পরিহাস! ৮ জানুয়ারি, ২০১৯-এর আনন্দবাজার পত্রিকার খবর অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে হামে মৃত্যুর সংখ্যা ১৮। এবং স্বাভাবিকভাবেই সেটা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এবার সংখ্যাতাত্ত্বিক তুলনায় আসা যাক – পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১০ কোটি জনসংখায় ১৮ জনের মৃত্যু, আর যুদ্ধবিক্ষত ইয়েমেনে ৩ কোটি মানুষের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ২০-র বেশি।
এখানে আমাদের নিশ্চয়ই মনে পড়বে হ্যাফডান ম্যালারের নেতৃত্বে ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাশিয়ার আলমা-আটা-য় গ্রহণ করা Declaration of Alma-Ata – International Conference on Primary Health Care”-এর কথা যেখানে প্রথম WHO-র তরফে বিশ্ববাসীর সংহত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা (comprehensive primary health care) সুনিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে “২০০০ সালের মধ্যে সকলের জন্য স্বাস্থ্য”-র শ্লোগান গৃহীত হয়েছিল। আলমা-আটা সনদের ১০ নম্বর ধারায় যা বলা হয়েছিল তার মূল কথা ছিল – পৃথিবীর দূরতম প্রান্তের স্বাস্থ্যের সুযোগহীন মানুষটির জন্যও প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে হবে। এবং এজন্য যুদ্ধ ও যুদ্ধাস্ত্রের পরিবর্তে স্বাধীনতা, শান্তি, দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা এবং নিরস্ত্রীকরণের নীতি গ্রহণ করতে হবে যার মধ্য দিয়ে একটি দেশের সুষম বিকাশের জন্য আরো বেশি মানবসম্পদ সৃষ্টি হতে পারে।
১৯৫০-৭০-র দশক জুড়ে বিশ্বরাজনীতিতে দ্বিমেরু বিশ্বের জীবন্ত উপস্থিতি ছিল। প্রবল পরাক্রান্ত, আগ্রাসী ও মুক্ত পুঁজি এবং সাম্রাজ্যবাদের মুখোমুখি দাঁড়ানোর মতো ভিন্ন একটি আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অস্তিত্ব – সমাজতান্ত্রিক বলে যার উপস্থিতি ছিল জনমানসে। দ্বিমেরু বিশ্বের উপস্থিতির জন্য রাজনৈতিক এবং সামাজিক একটি পরিসর তৈরি হয়েছিল যাকে বলতে পারি “তৃতীয় পরিসর”। বিশ্বের মানুষের স্বাভাবিক আশা-আকাঞ্খা এবং দাবী নিয়ে দর কষাকষির ক্ষমতা বেশি ছিল। পরবর্তীতে একমেরু বিশ্বের উদ্ভব এসবকিছুকে পরিপূর্ণভাবে বিনষ্ট করে দেয় – আজকের ভারত এর একটি প্রোজ্জ্বলন্ত উদাহরণ। এ সময়েই পৃথিবী জুড়ে শ্লোগান উঠেছিল – স্বাস্থ্য আমার অধিকার।
এরকম একটা প্রেক্ষাপট মাথায় রাখলে আজকের করোনা অতিমারি যে বিশ্ব পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে তা বুঝতে সুবিধে হবে। ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত (জুন ১৫, ২০২০) একটি প্রবন্ধে (COVID-19: rethinking risk) বলা হয়েছে – “The SARS-CoV-2 pandemic is forcing us to face the fact that progress towards the Sustainable Development Goals is fragile, as those populations on the path towards leaving poverty are now at increased risk of falling behind.” অস্যার্থ, Sustainable Development Goals-কে বড়ো ভঙ্গুর দেখাচ্ছে। দরিদ্রদের সাথে নিয়ে আমাদের যে অগ্রগতি এ পথে হবার কথা ছিল সেখানে যাদের নিয়ে এগনোর কথা ছিল তারা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে। কারণ? ঐ একই প্রবন্ধে বলা হল – “An increased understanding of risk factors, including the effects of social determinants and their interplay, provides an opportunity to target mitigation strategies and helps to allay the popular misconception that everyone is at equal risk of severe illness.” অর্থাৎ, করোনা অতিমারিতেও সবাই একইরকমভাবে আক্রান্ত হবেনা। যাদের ক্ষেত্রে রোগের সামাজিকভাবে নির্ধারক শক্তিগুলো (social determinants) সঠিকভাবে ফলপ্রসূ হয়না – যেমন, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলতর শ্রেণী বা যারা চাকরি, বাসস্থান, খাদ্য এধরনের সামাজিক সুযোগ-সুবিধের ক্ষেত্রে বঞ্চিত – তাদের মধ্যে এ রোগের আক্রমণ বেশি দেখা যাবে। পৃথিবী জুড়ে হয়েছেও তাই। আমেরিকা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার মতো দেশগুলোতে সর্বত্র একই চিত্র।
করোনা অতিমারির সময়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার অসামান্য গুরুত্ব আমাদের সবার দৃষ্টিপথ, শ্রুতি এবং ভাবনার ক্ষেত্রপথের একেবারে বাইরে চলে যাচ্ছে। অতি উচ্চ মুল্যের আইসিইউ পরিষেবা, উচ্চচাপের অক্সিজেনের ব্যবস্থা, ECMO ইত্যাদি জন মানসিকতায় ক্রমশ গ্রাহ্য হয়ে উঠছে, মান্যতা পাচ্ছে। মনে ক্ষোভ পুষে রেখেও সাধারণভাবে মানুষ চাইছে বেশি দামের রেমডেসিভিরের চিকিৎসা – নিতান্ত কমদামের এবং একমাত্র “improved survival” ঘটাতে পারে ডেক্সোমেথাসোনের চিকিৎসা নয়। চিকিৎসকেরাও এই সোশ্যাল সাইকি বা গণমানসিকতার বশে থাকছেন বেশিরভাগ সময়েই। বাজারের, মিডিয়ার এবং বিজ্ঞাপনের দুর্মর শক্তি উভয়কেই নিয়ন্ত্রিত এবং প্রভাবিত করছে। ফলে চিকিৎসা আরও বেশি করে হাই-টেক হয়ে উঠছে, ভার্টিকাল প্রোগ্রামের দিকে ঝুঁকছে। এবং ক্রমাগত ঝুঁকবে।
আমাদের পরবর্তী আলোচনা জুড়ে করোনা অতিমারি-উত্তর পৃথিবীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা, রাজনৈতিক বিন্যাস, অর্থনৈতিক চিত্র এবং কর্পোরেট পুঁজির সম্ভাব্য পরিবর্তন হতে যাচ্ছে তা আমরা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো। বুঝতে চাইবো কিভাবে বিশ্বজোড়া মুনাফার উদগ্র বাসনা করোনা ভাইরাস বাসস্থান বদলে মানুষের তার নতুন ঠিকানা হিসেবে পেয়েছে। বুঝতে চাইবো কেন এ ভাইরাস এবং এ ধরনের ভাইরাস থেকে আমাদের মুক্তি নেই। কর্পোরেট বিশ্ব প্যান্ডোরাস বক্সের ঢাকনা খুলে দিয়েছে।
আমরা একটু পেছন ফিরে ইতিহাসের দিকে তাকালে স্মরণ করতে পারবো গত শতাব্দীর শেষের দিক থেকে কর্পোরেট বিশ্ব এবং আন্তর্জাতিক পুঁজি পরস্পর-সংযুক্ত একটি পণ্য শৃঙ্খল (commodity chain) গড়ে তুলতে থাকে। এর শৃঙ্খলের মধ্যে উৎপাদন অঞ্চলকে (যাদের অবস্থান প্রধানত দক্ষিণ গোলার্ধে) জুড়ে ফেলা হয় যেখানে পণ্য ভোগের, লগ্নীর এবং পুঁজির সঞ্চয়ের পরিমাণ সবচেয়ে শিখরে সেই উত্তর গোলার্ধের ‘প্রভু’ দেশগুলোর সাথে। বেলামি ফস্টারের ধারণানুযায়ী (“COVID-19 and Catastrophic Capitalism” – Monthly Review, 1.06.2020), এরকমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে উৎপাদনের নিয়ন্ত্রণ শুধু “global labor arbitrage” থেকে নয়, “global land arbitrage” থেকেও হয়। এবং জমি এবং প্রকৃতিকে উন্মত্তের মতো ব্যবহার করার ফলে বিভিন্ন জুনোটিক রোগ (অর্থাৎ, প্রাণী দেহে বাস করা ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া) মানুষের বসবাসের অঞ্চলে এবং মানুষের শরীরের মধ্যে বাসা বাঁধছে – অ্যান্থ্রোপোজুনোটিক হয়ে উঠছে।
একটু বিশ্লেষণ করে বললে – (১) যে নতুন, সর্বশক্তিমান এবং সমগ্র বিশ্বব্যাপী পণ্য শৃঙ্খল গড়ে উঠছে সেটা অতিমারির চালক হিসেবে কাজ করছে, (২) প্রাথমিকভাবে বিক্ষিপ্ত কিছু অঞ্চলে এধরনের রোগগুলো জন্ম নিলেও পণ্যের বাজারের চলনের নিয়মে (যেখানে ট্যুরিজমও একটি পণ্য) ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বজুড়ে (করোনায় ২১৫টি দেশ আক্রান্ত), (৩) পুঁজির নিজস্ব গঠনেই বারেবারে অতিমারির সৃষ্টি হবে, (৪) আন্তর্জাতিক “অ্যাগ্রোবিজনেস” বা কৃষিপণ্যের ব্যবসা পৃথিবীর প্রতিটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের জমি, বাস্তুতন্ত্র এবং জনজীবনকে বেঁধে ফেলেছে, ধ্বস্ত করেছে।
এসমস্ত কিছুর সম্মিলিত পরিণতিতে আমাদেরকে আজ শিখে নিতে হবে ভাইরাসের সাথে সহবাস করার কৃৎ-কৌশল এবং মানসিক প্রস্তুতি। সুবিঝ্যাত নেচার পত্রিকায় (৬.০৮.২০২০) “The Pandemic’s Future” শিরোনামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সে প্রবন্ধের শুরুতে বলা হচ্ছে – “June 2021. The world has been in pandemic mode for a year and a half. The virus continues to spread at a slow burn; intermittent lockdowns are the new normal. An approved vaccine offers six months of protection, but international deal-making has slowed its distribution. An estimated 250 million people have been infected worldwide, and 1.75 million are dead.”
প্রসঙত উল্লেখ করবো শে দেশগুলোর কথা যেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা জীবন্ত ও জোরদার থাকার জন্য করোনাকে রুখে দিতে পেরেছে। এর মধ্যে কিউবার নাম সবার কাছেই পরিচিত। কিন্তু বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের ভূমিকা। NEJM-এ প্রকাশিত হচ্ছে (৭.০৮.২০২০) “Successful Elimination of Covid-19 Transmission in New Zealand”। নিউজিল্যান্ড মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (NZMA) মুখপত্রে প্রকাশিত হচ্ছে সম্পাদকীয় “New Zealand’s elimination strategy for the COVID-19 pandemic and what is required to make it work”। এখানে বলা হচ্ছে – “New Zealand society has made a large ‘upfront’ sacrifi ce in pursuing an elimination strategy. Its actions in the coming weeks will decide if this goal can be achieved. To justify this sacrifi ce we need to put maximum effort into giving this intervention the best possible chance of success. These are uncharted waters for public health.”
আসুন, আমরা প্রহর গণি! এই তমসার প্রহরকে চিরে দেখার চেষ্টায় এই নান্দীমুখ।
Daruun sir.
Khub bhalo lekha
প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত ও রক্ষা করতে ই হবে। "স্বাস্থ্য আমার অধিকার'"_এই দাবি আদায় করতে সচেতন নাগরিক দের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষ কে সামিল করতে হবে। কঠিন কাজ কিন্তু নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য চেষ্টা করতে
হবে।
প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত ও রক্ষা করতে ই হবে। "স্বাস্থ্য আমার অধিকার'"_এই দাবি আদায় করতে সচেতন নাগরিক দের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষ কে সামিল করতে হবে। কঠিন কাজ কিন্তু নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য চেষ্টা করতে
হবে।
সমৃদ্ধ হলাম।ধন্যবাদ।
সমৃদ্ধ হলাম।ধন্যবাদ।
সমৃদ্ধ হলাম।ধন্যবাদ।
সমৃদ্ধ হলাম।ধন্যবাদ।
শুধুমাত্র করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে জানাই, রেমডেসিভিরের ব্যবহার কিন্তু এখনও routine নয়। আমার হাসপাতালে মাইল্ড সিম্পটমের কোনো রুগীর চিকিৎসা রেমডেসিভির দিয়ে হয় নি। আমারও নয়।
অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি লেখা, তবে একটা কথা বোধহয় আমাদের মনে রাখতে হবে। ১১ই মার্চ থেকে পৃথিবীটা বদলে গেছে, তার একটাই কারণ - এই অসুখটা সম্বন্ধে আমরা এখনও খুব একটা বেশি কিছুই জানি না। শুধু ওষুধ বা চিকিৎসার কথা নয়, অসুখটার biological behaviour এখনও অনেকাংশে ধোঁয়াশা!
ফলে আমাদের preparedness কতটা হতে হবে, versus আমাদের প্রস্তুতি এখন কোন অবস্থায়, সেটাও আমরা পুরোপুরি জানি না! যেমন, ECMO centre কটা থাকবে, সেখানে শুধু কোভিড ছাড়া অন্য কোনো রুগীর চিকিৎসা হবে কি না, তাও আলোচনা হওয়া উচিত।
Dear Joyonto -- what can I add.!!! ....I first give my bear hug to your for your sense of belonging and still sailing your lonely ship -- tearing itself with steady grip on its rudder wheel in the choppy sea of mad.mad humanity infected with VIRUS of CHRONY CAPITALISM. I am not sure whether our GREAT CIVILIZATION will benifit itself gulping your ELEXIR. Congratulation is not sufficient for you... nkm
Very well written Jayantada. True, prevention is better than cure but cure is more profitable than prevention. For me this pandemic is an oytcome of relentless human greed and mankind is slowly and certainly sinking into this blackhole.
সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ!
ডাঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্যকে ধন্যবাদ মহামারি বা অতিমারি নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য।
একটা সময়, অর্থাৎ বছর দশেক আগেও NRHM এর মাধ্যমে অনেক রাজ্যের অনেক জেলায় এদিকে কাজ এগোচ্ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই কাজও বন্ধ হবার পথে অর্থবরাদ্দ না থাকায়।
স্বাস্থ্যব্যবস্থাও বেসরকারীকরণের পথে এগুচ্ছে।
মনে হয় সাধারণ নাগরিকদের স্বার্থে সরকারের নতুন করা ভাববার সময় এসেছে।
দারুন স্যার।
লেখাটি পড়ে হৃদ্ধ হলাম