এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বই

  • ওলন্দাজ জাদুকর আর সেই মেয়েটি

    প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
    আলোচনা | বই | ২৯ জুলাই ২০০৭ | ১০৩০ বার পঠিত
  • গ্রিয়েট নামের মেয়েটি আনাজপাতি কেটে গুছিয়ে রাখছিলো। পেঁয়াজ, লাল-বাঁধাকপি, লীক, গাজর, শালগম। সব্জির টুকরো রঙ মিলিয়ে চক্রাকারে সাজিয়ে রাখে সে। শালগম আর পেঁয়াজের মৃদু সাদার পাশে , লাল-বাঁধাকপির সান্দ্র বেগুনি। চক্রের মাঝখানে চাপা আগুন রঙের গাজরের চাকতি।

    সবকিছুর রঙ খেলিয়ে নিয়েছে মেয়েটি। আর্টিস্ট দেখে নিচ্ছিলেন, মেয়েটি রঙ খেলাতে জানে। কিন্তু আর্টিস্টের স্টুডিও'য় বসে রঙ মেশানোর খেলায় মেয়েটিকে নেওয়া হবে না, কারণ আর্টিস্টের দরকার এক কাজের মেয়ের-- যে স্টুডিও'র কোনো জিনিষ, আসবাবপত্র, ঈজেল, রঙের বাটি না-এলোমেলো করে ঝাঁটপাট দিয়ে পারবে আর রোজ সকালে আর্টিস্টের বউ-এর শেমিজ, ছেলের কাঁথাকানি, বিছানার চাদর, লেপের ওয়াড় ইত্যাদি সাবান কাচবে, ইস্তিরি করবে। আর, প্রতিদিন বাজার থেকে বীফের টুকরো, সসেজ বা হেরিং কিনে আনবে।
    গ্রিয়েটের মাইনে হয় দিনে আট স্টিভার। ষোলো বছরের গ্রিয়েট দু'নম্বর পরিচারিকা হিসেবে চাকরি পায় আর্টিস্টের বাড়ী। তানেকে নামের মেয়েটি তো আছেই, যে রান্নাটান্না দ্যাখে, বাড়ীর গৃহিণী কাতারিনা আর তার মা, মারিয়া তিনস-এর ফাই-ফরমাস খাটে।

    এই ভাবেই ছোটো ছোটো অনুপুঙ্খমুখী বাক্যে শুরু হয়ে যাচ্ছে, ট্রেসি শেভালিয়েরের বই, ' গার্ল উইথ আ পার্ল ইয়ারিং'। খুব জনপ্রিয় হয়েছে বইটি। কারণ, স্টাইলটি পরীক্ষিত এবং সফল। ইতিহাসের কথাপাত্রদের নাও, একটি সরল অথচ মনোযোগ ধরে রাখার মতন গল্পের কাঠামো বানাও, সমাজ-সংস্কৃতির ডিটেলগুলি নিপুণ ভাবে বজায় রাখো,অ্যাম্বিয়ন্সের রঙ-ঢঙ মিশিয়ে দাও--- এবং লিখে ফেল।
    ট্রেসি ঠিক তাই করেছেন। এবং সফল হয়েছেন।

    অবধারিত ভাবে বইটি উঠে এসেছে সেলুলয়েডে। সিনেমাটি যাতে হলিউডজাত পণ্যে পরিণত না হয়, তার জন্য ট্রেসি সিনেমাসত্ত্ব দিয়ে দেন এক ছোটো , ভিন্নরুচির ব্রিটিশ ফিল্ম কোম্পানীকে। একটি বেশ সুরুচির, দেখনযোগ্য পিরিয়ড ফিল্ম হিসেবে নামও হয় গার্ল উইথ আ পার্ল ইয়ারিং-এর। পশ্চিমী সিনেয়াস্ত-রা এই ধরণের সিনেমা মাঝেমাঝে বেশ ভালো বানিয়ে নেয়। সতেরোশো শতকের মেয়েদের শেমিজের ছাঁট কেমন হত, বাড়ির জানলায় কেমন পর্দা ঝুলতো, খাবার টেবিলের রুটি-কাটার ছুরি বা দুধ ঢালবার জাগ কেমন হত--- সব বেশ বইপত্র-মিউজিয়ম-আর্কাইভ ঘেঁটে তুলে আনতে পারে।
    বইটির দিকে যাই। সেই মেয়েটি, গ্রিয়েট-- তার মুখে গল্প, আর সে-ই কথানায়িকা।
    দু'টি মেঘলা দুপুর, বা তেমন হলে একটি স্তিমিততারকার রাত্রিতে পড়ে শেষ হয়ে যায়। সরল বই, কিন্তু একটি বিশুদ্ধ চোরা টান আছে।

    এবার বইটিকেও ফেলে রেখে আর্টিস্টের দিকে যাই। ট্রেসির গল্পে যে- আর্টিস্টের বাড়ীতে গ্রিয়েট পরিচারিকা হিসেবে নিযুক্ত হল।
    আর্টিস্ট হলেন সতেরোশো শতকের য়োহানেস ভারমিয়ের। যিনি উত্তরোত্তর একই সঙ্গে আবিষ্কৃত হচ্ছেন, এবং পুনরাবিষ্কৃত হচ্ছেন। আরেক ওলন্দাজ মাস্টার, রেমব্রন্ট-এর থেকেও যিনি এগিয়ে যাচ্ছেন জনপ্রিয়তায়। কুড়ি বছরের শিল্পীজীবনে গোটা পঁয়তিরিশেক ছবি এঁকেই। বেশ ম্যাজিকের মতন ব্যাপার। কারণ য়োহানেস ভারমিয়ের একজন জাদুকর। আলো-ছায়ার জাদুকর, রঙের জাদুকর। পার্সপেক্টিভের জাদুকর।

    বই বা সিনেমা ছাড়াও জন মাইকেল মনটিনাস, আর্থার হুইলক, রবাট উয়ের্তা-রা নানান কৌণিক ব্যাখানে সামনে আনছেন ভারমিয়েরের ছবির আনুসাঙ্গিক প্রেক্ষাপট। যেমন, সতেরোশো শতকের ওলন্দাজ রুচি, মধ্যবিত্তের অবস্থান ও রকেটগতির সমৃদ্ধি, ঐ সময়ে উত্তর ইয়োরোপে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি--প্রভৃতি অনুসঙ্গগুলি।
    এই অবকাশে ভারমিয়েরের হল্যান্ডের ছবির দুনিয়াকে একটু দেখে নেওয়া যাক। সতেরোশ'র শুরু থেকেই ওলন্দাজী ছবির বাজারে যে ভরা কোটালের বান এল, তার ধরণ একটু আলাদা। আগের শতকে রেনেসাঁসের হাওয়ায় ছবি আঁকার আদল এমনিতেই বদলে গিয়েছিলো। যিশু-মেরি-দেবদূত ইত্যাদি অমর্ত্য আইকনদের পৃথিবীর জলবাতাসে মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিয়ে। তবুও দেদার আঁকা হচ্ছিলো গির্জাঘরের দেওয়ালে বাইবেলের থীম। কিন্তু এর বেশ আগে থাকতেই উত্তর ইয়োরোপে অন্য ইডিয়মের ধাক্কা লেগেছে। এদিকের ছবিগুলি হয়ে উঠছে ইতালি-নির্ধারিত ইমেজারির বাইরে, 'জরা হঠ্‌কে'। হল্যান্ড হয়ে দাঁড়ালো এই নবীন শৈলীর প্রধান আখড়া। বাজার-অর্থনীতির প্রবল প্রসার,শিল্পী-কারিগরদের কর্মঠ গিল্ডগুলি, এবং সর্বোপরি, উত্তরে হু হু করে ছেয়ে যাওয়া জন ক্যালভিনের প্রোটেস্টান্ট নীতি-- যাতে পরিশ্রমের মূল্যে বেঁচে থাকার আনন্দের এবং ছোটো ছোটো জীবনমুহূর্তগুলি তৈরি করার একটা দিক আছে-- এই ধরণের 'জঁরা পেন্টিং'-এর আধারশিলা রাখলো।
    সাধারণের ঘর, সাধারণ আমোদ, প্রতিদিনের কাজকর্ম হয়ে দাঁড়াতে লাগলো ছবির বিষয়। বাড়ির মেয়েদের চিঠি-লেখা, গান-বাজনা করা, সাজগোজ, বসার ঘরে গল্পগাছা করা, লেস বোনা, পরিচারিকাদের রান্নাঘরের কাজ-- সব আসতে লাগলো ক্যানভাসে। মধ্যবিত্তের অন্দরমহল হয়ে দাঁড়ালো ছবির প্রধান ইডিয়ম। ভারমিয়েরের সময়, সতেরোশো'র মাঝামাঝি-- এটাই চলছে। প্রৌঢ় রেমব্রন্ট থেকে পিটার দ্য হোঘ, রাউসডেল -- সবাই এমন আঁকছেন।
    ভারমিয়ের এদের মধ্যে থাকতে থাকতেই, আর 'ঘরোয়া' ছবির খেলা খেলতে খেলতেই হয়ে উঠলেন ভালো রকম আলাদা। মফস্‌সল শহর ডেলফ্‌ট-এ সারা জীবন-ই কাটিয়েছেন। বড় শহর, আর্মস্টারডাম বা দি হেগ-এর দিকে এক পা-ও বাড়াননি। ডেল্‌ফ্‌ট, ছোটো শহর। ছোটো শহর যেমন হয়, সরল মহিমা আর দু'একটি উৎকেন্দ্রিকতা নিয়ে গড়া। হল্যান্ডের অন্যান্য শহরের মতন ক্যানালের নেটওয়ার্কে ঘেরা, একটি বড় বাজার, দু'টি গির্জা। আউডে কের্ক আর নিউয়ে কের্ক। নিউয়ে কের্ক-- বা 'নবীন গির্জায়' ভারমিয়ের ব্যাপটাইসড হন।

    এইবার সেই মেয়েটিকে দেখা যাক।
    ভারমিয়েরের পিয়েস দ্য রেজিস্তন্স -- গার্ল উইথ আ পার্ল ইয়ারিং। মুক্তোর দুল পরা, নীল-হলুদ কাপড় মাথায় ওরিয়েন্টাল স্টাইলে জড়িয়ে যে দর্শকের দিকে তাকিয়ে আছে। এ যেন ছবি নয়, ছবির অতীত কিছু। কিশোরী মেয়েটি, যে ঘাড় বেঁকিয়ে, ঠোঁট অল্প ফাঁক করে ভাসা-ভাসা চোখের সন্মোহনে পৃথিবীর ছবিপ্রেমিকদের এত বিস্মিত, মুগ্ধ করে রাখে-- সে কে?
    ট্রেসির বইতে এই মেয়েটি গ্রিয়েট। কিন্তু এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই, তা ট্রেসি নিজেই জনিয়েছেন। শুধু কথাকারের কল্পনা মাত্র। যে-কল্পনার আধারে একটি বই লেখা যায়, আর কিছু নয়। কিন্তু যারা দলিল-দস্তাবেজ ঘাঁটতে ভালোবাসেন, আর্কাইভকে ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলেন, সেই ধরণের ভারমিয়ের-উৎসাহীরাও পারেননি এই মেয়েটিকে চিনে নিতে। হতে পারে কি সে ভারমিয়েরের বড় মেয়ে , মারিয়া? কিন্তু ষোলোশো ষাট-পঁয়ষট্টিতে, যখন ছবিটি ভারমিয়ের এঁকেছেন বলে ধারণা, মারিয়া বছর বারোর। ছবির মেয়েটি আরো একটু বড়। এবং ছবিটি সেন্স্যুয়াল। ভেজা ঠোঁটের অল্প ফাঁক করা ভঙ্গীতে, ঘাড় বেঁকিয়ে তাকানোয়। মেয়েটি যেন অন্য কেউ, সে যেন পার্থিব নিশ্চয়তার নয় ... সে যেন অন্য কেউ।
    বলা যেতে পারে ,এই ' জ্য ন সে পা ক্যোয়া'--- এই রহস্যময় আলগা আবেদনের জন্যই এই ছবিটি এইরকম মিথ-এ দাঁড়িয়েছে। ছবিটির আরেক নাম তাই 'উত্তরের মোনালিসা'।
    ছবিটি অনেককাল হারিয়ে গিয়েছিলো। বহুদিন পরে খুঁজে পাওয়া গেল এক শিল্পরসিকের কাছে। ১৮৮২ থেকে গার্ল উইথ আ পার্ল ইয়ারিং খুব যত্নের সঙ্গে রেখে দেওয়া আছে, দি হেগের মওরিৎসহাস মিউজিয়মে।

    কিভাবে আঁকলেন ভারমিয়ের, এই মেয়েটিকে?
    রঙ, আলোছায়া, কম্পোজিশন, পার্সপেক্টিভ আর ... আর ... বিশুদ্ধ ম্যাজিকে।
    সবুজাভ কালো পটের মাঝখানে মেয়েটির মুখ। তার সাদা কলার দেওয়া বাদামী-হলুদ জামার অংশটি একটু দেখা যাচ্ছে। মাথায় নীল আর হলুদ কাপড়ের একটি এক্সোটিক হেডড্রেস , কানে মুক্তোর টিয়ারড্রপ। এই মুক্তোটি যে আসল মুক্তো নয়, নেহাতই ঝুটো কাচের, তা নিয়ে আর্ট হিস্টোরিয়ানরা মন্তব্য রেখেছেন। কিন্তু ঝুটো হলেও দুলটি মুক্তাবর্ণের। বেশ বড়ো আকারের এই মুক্তাপ্রতিম দুলটি থেকে যে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে, তার আভা লেগেছে মেয়েটি চোয়ালে। ভারমিয়ের খুব বেশী ব্যবহার করতেন, আলট্রা মেরিন ব্লু--যা লাপিজ লাজুলি গুঁড়ো করে নিজেই বানাতেন। মেয়েটির হেডড্রেসে রয়েছে অমন আলট্রা মেরিন ব্লু। ভারমিয়েরের সব ছবিতেই আলো-ছায়ার মায়া, এই ছবিতে যা তুলনাহীন। যা ছবিতে দিয়েছে এক মৃদু উজ্জ্বলতা, স্বচ্ছতা -- মেয়েটির মুক্তোর দুলের মতন ছবিটি থেকে চাপা আলো বিচ্ছুরিত হতে থাকে।

    মেয়েটির ছবিটি ছোটো। লম্বায় সাড়ে সতেরো ইঞ্চি, প্রস্থে পনেরো ইঞ্চির কিছু বেশী। এর মধ্যেই পুরোপুরি ভাসাভাসি হয়ে আছে ভারমিয়ের-ম্যাজিক। মেয়েটির মুখে, কপালে, ঠোঁটে, মুক্তোর দুলে আলো-ছায়ার রেখাগুলি একবার মিশছে, একবার দূরে হারিয়ে যাচ্ছে। যেন একটি মেঘ-ভাঙা সকাল-- মাঝেমাঝে ঝিকিয়ে উঠছে, মাঝেমাঝে স্থিমিত হচ্ছে।
    পণ্ডিতরা বলছেন, এই আলোছায়ার ব্যাপারটি ভারমিয়ের এত কুশল ভাবে ধরতে পেরেছিলেন একটি ডিভাইসের সাহায্যে। ডিভাইসটি হল, ক্যামেরা অবস্কিউরা -- যা বর্তমান ক্যামেরার আদিপুরুষ। সতেরোশো শতকে হল্যান্ডে ছবির জগতের মতন বিজ্ঞানের দুনিয়ায় ও একটি মোড় ঘোরার সময় আসে। অপটিক্স নিয়ে বেশ ভালো রকম কাজ শুরু হয়ে যায়। ভারমিয়েরের শহর, ডেলফ্‌ট-এর আরেক নিবাসী লেউয়েনহুক, বানিয়ে ফেলেছেন মাইক্রোস্কোপের একটি খসড়া, সতেরোশো শতকের মধ্য-ষাটে। তার তলায় দেখছেন প্রাণকণা ... লোহিতকণিকা। লেউয়েনহুক ভারমিয়েরের সুহৃদ ছিলেন আন্দাজ করা যায়, কারণ আর্টিস্টের মৃত্যুর পর হঠাৎ আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে পড়ে যাওয়া পরিবারটির সম্পত্তির একটা হিসেবনিকেশ করে দেন লেউয়েনহুক। ভারমিয়ের এঁর কাছেই কি পেয়েছিলেন ক্যামেরা অবস্কিউরা? বিজ্ঞানমনস্কতার তেজী হাওয়ায় সতেরোশো শতকের ওলন্দাজ শিল্পীরা নিশ্চই এই নবীন কৌশল শিখে নিয়েছিলেন। ক্যামেরা অবস্কিউরা এই ভাবেই শিল্পীদের স্টুডিও'য় ঢুকে পড়লো। এই ক্রমশ: জনপ্রিয় হওয়া প্রযুক্তিটি কাজে লাগিয়েই হয়তো ভারমিয়ের মুক্তোর দুল পরা মেয়ের ছবিতে, আর অন্য ছবিতেও আনতে পেরেছিলেন ফোটোগ্রাফিক রিয়েলিটি।
    কিন্তু এ-জন্য ভারমিয়েরের তুলির আঁচোড়ের রহস্যময়তা , বা মায়া কিছু কমে না, কারণ ক্যামেরা অবস্কিউরায় ধরা ছবিটি ক্যানভাসের ছবির রেফারেন্স হয়ে থাকে মাত্র। রঙের খেলাটেলাগুলো খেলা হয় ক্যানভাসের ওপরে, এক খুব, খুব বুদ্ধিমান আর্টিস্টের আঙ্গুল দিয়ে।

    ট্রেসির বইটির দিকে আরেকবার চলে যাই।

    স্পষ্টতই, লেখক ভারমিয়েরের ছবিগুলি, বিশেষত: গার্ল উইথ আ পার্ল ইয়ারিং-এর প্রগাঢ় সংবেদনশীলতায় আপ্লুত হন। বলতে গেলে, এইজন্যই বইটি বেশ ব্যক্তিগত। যেন লেখক সাড়ে তিনশো বছর পেছিয়ে গিয়ে ভারমিয়েরের তিনতলার স্টুডিও'য় ঢুকে পড়ছেন। স্টুডিও'র টেবিলে কাতারিনার মুক্তোর গয়নার বাক্স, সিংহের মুখ খোদাই করা কাঠের চেয়ার, একপাশে রাখা ক্যামেরা অবস্কিউরা। আবার রান্নাঘরে তানেকের রুটি-কাটার ছুরি, দুধের জাগ ... মাংসের দোকানের সামনে প্যাচপ্যাচে কালচে রক্তের কাদায় ছড়িয়ে দেওয়া কাঠের গুঁড়ো ... আউডে ল্যাঙ্গেনডাইকে-র রাস্তায়, ভারমিয়েরের বাড়ির সামনে খালে মালপত্র নিয়ে বাজারমুখী নৌকোগুলি ... এই সবের মাঝখানেও এক-একবার দাঁড়িয়ে পড়ছেন লেখক।
    ইচ্ছে করেই বাক্যবিন্যাস সরল রেখেছেন। কাহিনিটি তাই ভারী ইমেজের আড়ালে পাথর-চাপা না পড়ে আগাগোড়া থেকে যায় সংবেদী।

    মুক্তোর দুল ভারমিয়েরের মেয়েটির মুখে যেমন আভা তৈরি করেছে, ইতিহাসের আবহও ট্রেসি শেভালিয়েরের কাহিনিটির শরীরে এক ছায়াসম আভা রেখে গেছে।

    জুলাই ২৯, ২০০৭
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৯ জুলাই ২০০৭ | ১০৩০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন