এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • গুটিবসন্তের টীকাঃ মহামারীর বিরুদ্ধে মানুষের লড়াইয়ের ইতিহাস - পর্ব ১

    ডাঃ জয়ন্ত দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১৩ জুন ২০২০ | ৪০৬৬ বার পঠিত
  • পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩ | পর্ব ৪

    প্রথম অধ্যায়


    কথারম্ভ


    আমরা এখন একটা সারা পৃথিবীব্যাপী মহামারির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। মহামারীর কারণ একটি ভাইরাস। রোগটার নাম কভিড-১৯, আর ভাইরাসটির নাম নভেল করোনা ভাইরাস, বা সার্স-কভ-২। এই ভাইরাসের উপযুক্ত ওষুধ নেই, টিকা নেই, তাই আমাদের আতঙ্কের সীমাও নেই। এতদিনে আমরা জেনে গেছি অতীতে এরকম মহামারি হয়েছিল।



    • একশ বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লুতে বিশ্বে ৫ থেকে ১০ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল; তখন তার কোনো ওষুধ বা টিকা ছিল না।
    • ছ’শ বছরের বেশি আগে ইউরোপের অর্ধেকের বেশি মানুষ প্লেগে মারা গিয়েছিল।
    • আর দেড়’শ বছর আগে ভারতে প্লেগে মারা গিয়েছিল প্রায় এক কোটি মানুষ—এরও কোনো টিকা বা ওষুধ তখন ছিল না।
    • তবে ১৯৭০-এর আগে পর্যন্ত এতাবৎ ইতিহাসে সব থেকে বেশি মানুষ মেরেছে গুটিবসন্ত বা স্মলপক্স। বিংশ শতকে গুটিবসন্ত মারা গেছে ত্রিশ কোটি মানুষ, তার আগে এরোগে যে কত মরেছে তার লেখাজোকা নেই। অথচ এখন গুটিবসন্ত অতীতের ধূসর স্মৃতিমাত্র।

    কী করে এমন হল? মনে রাখবেন, গুটিবসন্তের মতো কোভিড-১৯ হল একটি ভাইরাসঘটিত অসুখ যা শ্বাসের মধ্যে দিয়ে ছড়ায়।


    আজ থেকে মাত্র ২২০ বছর আগে গুটিবসন্তের কোনো ওষুধ ছিল না (এখনও তেমন নেই), কোনো ‘টিকা’ ছিল না। মৃত্যুহার ছিল মোটামুটি ২৫% থেকে ৩০%। খেয়াল রাখবেন কোভিড-১৯ এর মৃত্যুহার সর্বত্রই ১০% এর নীচে। এমনকি খুব বয়স্কদের মধ্যেও এই হার শতকরা ২০ এর নীচে। (অবশ্য গুটিবসন্তের দুটি ধরন ছিল, তার মৃদু ধরনটিতে মৃত্যুহার কম ছিল, সেটা কম হতো, আর সেটা নিয়ে তেমন রেকর্ডও নেই। তাই তাকে হিসেব থেকে বাদ দিচ্ছি।) বাচ্চাদের গুটিবসন্তে মৃত্যুহার ছিল ২৫% থেকে ৫০%। আজ থেকে একশ বছর আগেও এদেশে পাঁচ-সাত বছর অন্তর গুটিবসন্তের তীব্র মহামারি হত। প্রবাদ ছিল, ‘শীতলাদেবী’-র একবার আগমন দেখেনি যে বাচ্চা, তাকে পরিবারের পুরো সদস্য হিসেবে ধরবে না, একটা বসন্ত মহামারি কাটালে তারপর শিশুর ভবিষ্যৎ ভাবা যেতে পারে। রোগী বেঁচে গেলেও মুখে কুৎসিত দাগ হয়ে যেত আর অন্ধ হত অনেকেই—পঞ্চাশ বছর আগেও এদেশে অন্ধত্বের একনম্বর কারণ ছিল গুটিবসন্ত। আর এখন আমরা করোনা নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত।


    এখন গুটিবসন্ত বিদায় নিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত এই একটিমাত্র অসুখকে আমরা চিরদিনের মত পৃথিবী থেকে বিদায় করতে পেরেছি। কোভিদ-১৯ এর মতো গুটিবসন্ত ছিল একটি ভাইরাসঘটিত অসুখ। আরেকটি রোগকেও আমরা পৃথিবী থেকে প্রায় দূর করে দিয়েছি, পোলিও। সেটাও ভাইরাসজনিত। (পাদটিকা ১ দেখুন) অথচ পোলিও বা গুটিবসন্তর ভাইরাস মারার মতো কোনো কার্যকর ওষুধ নেই।


    কীভাবে গুটিবসন্ত দূর করা গেল? তা থেকে আজকে করোনা ভাইরাস দূর করার ব্যাপারে কোনো শিক্ষা নেওয়া যায় কি? কোয়ারান্টিন, লকডাউন আর আজ ক্লোরোকুইন, কাল এজিথ্রোমাইসিন, পরশু ফ্যামোটিডিন, তারপরের দিন হোমিওপ্যাথি বটিকা—এরকমভাবে কি কোনো মহৌষধ আবিষ্কার আর রোগ নির্মূল কোথাও কোনোদিন হয়েছে? বিজ্ঞান এগনোর সাথে সাথে ওষুধ ও টিকা আগের চাইতে ঢের তাড়াতাড়ি আবিষ্কার করা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তার সীমা কোথায়? আর পরাধীন দেশে সাহেবদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা—এর বাইরে দেশীয় কোনো উদ্যোগ কাজে লেগেছিল কি?


    গুটিবসন্ত নির্মূল করার ইতিহাস থেকে হয়তো কিছু শিক্ষা পাওয়া যেতে পারে। তবে কিনা, ইতিহাসের প্রথম শিক্ষা হল,অতীতের ঘটনা হুবহু একভাবে আরেকবার ঘটে না



    পর্ব ১


    ইন্টারনেট ঘাঁটতে গিয়ে দেখলাম, ১৭৫৭ সালে এডোয়ার্ড জেনার নামে এক বালককে গুটিবসন্তের ‘টিকা’ দেওয়া হল।


    সেকি কথা? এডোয়ার্ড জেনার নিজেই তো গুটিবসন্তের টিকার আবিষ্কর্তা! আর ১৭৫৭ সাল মানে পলাশির যুদ্ধের বছর, তখন জেনার নেহাত শিশু, টিকা আবিষ্কার হবে এর চল্লিশ বছর পরে। তাহলে? তাহলে কি জেনার জন্মানোর আগেই গুটিবসন্তের টিকা চালু ছিল? কিন্তু তা কী করে হয়? জেনারের টিকা থেকেই তো টিকাকরণের প্রথম শুরু। শুধু গুটিবসন্ত কেন, কোনো টিকাই ছিল না জেনারের টিকা আবিষ্কারের আগে। টিকার ধারণাই ছিল না, এমনই লেখে আমাদের ইতিহাস বইতে, ডাক্তারি বইতেও। জেনার হলেন টিকাকরণের জনক,Father of vaccinology।


    তাহলে কী, সেটা পরে বুঝব। আপাতত আমরা চলি জেনারের সঙ্গে, জেনারের সময়ে। তখন ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা সর্বত্র গুটিবসন্ত এক ভয়াবহ রোগ, আর কলম্বাসের পর স্প্যানিশ লুটেরাদের কল্যাণে আদি আমেরিকানরা দলে দলে মারা পড়ছে এই রোগে। তবে তার দু’হাজার বছর আগেও মানুষ জানত যে এই রোগটা একবার হলে পুনরায় হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই প্রাচীন মিশরেও আগে রোগ হয়েছে শুধুমাত্র এমন কাউকেই রোগীর যত্নের জন্য ডাকা হত। এ থেকে ধারনা হল, আচ্ছা, কৃত্রিম উপায়ে কোনোভাবে রোগ ঘটিয়ে দিলে কেমন হয়? কৃত্রিম রোগ কি স্বাভাবিক রোগের মতই ভয়ানক হবে? আজ থেকে কয়েকশো বছর আগে ভারত, চীন বা মধ্যপ্রাচ্যে চিকিৎসকেরা নিশ্চয় এটা নিয়ে ভেবেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ঠিক কী ভেবেছিলেন তা জানার কোনো উপায় আজ নেই। তবে নীরোগ মানুষের দেহে গুটিবসন্তের ‘রস’ প্রবেশ করিয়ে কম ভয়াবহ রোগ ঘটানো ও সেভাবে ভয়াবহ রোগের হাত থেকে বাঁচার পদ্ধতি চীন ও ভারতে অন্তত কয়েক শতাব্দী ধরে চালু ছিল।


    প্রাচীন এশিয় পদ্ধতির গুটিবসন্ত টিকা ইউরোপ-আমেরিকায় পৌঁছেছিল, আর বালক জেনার-এর নিজের হাতে যে টিকা দেওয়া হয়েছিল, সেটা এই টিকা-ই। তবে পরে এই টিকা ইতিহাসে স্বীকৃতি পায়নি। তুরস্ক হয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় এই পদ্ধতি পৌঁছানোর ইতিহাস আমরা জানি। কিন্তু চীন বা ভারতে এশিয় টিকার ইতিহাস অনেকটাই লোককথা থেকে জানা গেছে, আর জানা গেছে ইউরোপীয়দের লেখা থেকে।


    আমরা এখানে একে টিকাকরণ বলছি বটে, কিন্তু টিকার ইংরেজি হল ভ্যাক্সিন। ল্যাটিন ভাষায়vacca মানে গরু, গরুর দেহ থেকে প্রথম গুটিবসন্তের টিকা তৈরি হয়েছিল বলেই সেটার নাম vaccine। প্রথমে ভ্যাক্সিন মানে কেবল গুটিবসন্তের টিকা ছিল। পরে ঐ একই নীতিতে কাজ করা অন্য রোগের টিকাগুলোকে একই নামে, অর্থাৎ ভ্যাক্সিন বলে ডাকা হতে লাগল—যেমন পোলিও ভ্যাক্সিন—যদিও সেগুলো তৈরিতে গরুর কোনো ভূমিকা ছিল না। ভারতীয় ‘টিকা’ কথাটার আদি অর্থ বিশেষভাবে দাগ দেওয়া, যেমন রাজার কপালে রাজটিকা।



    গুটিবসন্তের কাহিনী


    দশহাজার বছর আগে কৃষি শুরু হবার সময় গুটিবসন্ত জন্ম নেয়। মিশরে তিন হাজার বছরের পুরনো মমিতে এর চিহ্ন দেখা গেছে। ভারতবর্ষে এই রোগ অত্যন্ত পুরাতন বলে ভাবা হয়। সুশ্রুত সংহিতা বা চরক সংহিতায় ‘মসূরিকা’ নামে সম্ভবত এই রোগেরই উল্লেখ আছে, তবে এই সংহিতাদুটিতে এই রোগকে তেমন গুরুতর বলা হয়নি, তাই মসূরিকা সত্যিই গুটিবসন্ত কিনা সে নিয়ে সন্দেহ আছে। হয়তো ২০০-৫০০ সাধারণ পূর্বাব্দ নাগাদ (BCE), যখন ঐ সংহিতাদুটি সংকলিত হয়, তখন ভারতে গুটিবসন্ত তেমন বেশি ছিল না, বা কোনো কারণে তার আক্রমণ তেমন ভয়াবহ ছিল না। তাবে সাধারণাব্দ (CE) নবম শতকে সংকলিত ‘মাধবনিদান’ গ্রন্থে এই রোগের যে বিবরণ পাওয়া যায় তাতে মনে হয় সেসময় গুটিবসন্ত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। চীনদেশে এরোগ বহুদিনের, এবং ভারতের মতো চীনেও এর দেশীয় পদ্ধতিতে ‘টিকাকরণ’ চালু হয়েছিল।


    এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের যেখানে যেখানে জনবসতি ছিল তার সর্বত্র এই রোগ বহু শতাব্দী ধরে ছিল। কিন্তু কলম্বাসের আমেরিকা আগমনের আগে পর্যন্ত আমেরিকা বাকি পৃথিবীর থেকে আলাদা হয়ে ছিল, আর আমেরিকাতে এই রোগ আসেনি। এখন যেমন কোভিড-১৯ অতিমারি এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তখনও মানুষের মাধ্যম ছাড়া গুটিবসন্ত ছড়াতে পারত না। তাই ১৪৯২ সালে কলম্বাস আমেরিকায় আসার পরে স্প্যানিশ নাবিক ও সৈন্যদের হাত ধরে গুটিবসন্ত রোগ নতুন বিশ্ব, অর্থাৎ দক্ষিণ এবং উত্তর আমেরিকাতে ছড়িয়ে পডল।


    আমেরিকা মহাদেশে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ার সময় একটা জিনিস লক্ষণীয় ছিল। মহামারী হলেও স্প্যানিশ নাবিকরা সবাই আক্রান্ত হত না, আর আক্রান্ত হবার পরে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠত। কিন্তু আমেরিকার আদিম অধিবাসীদের শরীরে রোগের বীজাণু একবার শরীরে ঢুকে গেলে প্রায় প্রত্যেকেই রোগে আক্রান্ত হত এবং রোগের ভয়াবহতা বেশি হত, আর অধিকাংশই মারা পড়ত। কেন এমন হতো? গুটিবসন্তের বীজাণু স্পেনে বহুদিন ছিল, ফলে অনেক নাবিক বা সৈন্যের এ-রোগ আগে হয়েছিল। তাতে শুধু সেই নাবিক বা যোদ্ধা গুটিবসন্ত থেকে বাঁচত তাই নয়, তার দলে থাকা অন্য মানুষের সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যেত—একে বলে হার্ড ইমিউনিটি। অন্যদিকে আমেরিকান আদি অধিবাসীগণ পুরুষাণুক্রমে এই বীজাণুর সংস্পর্শে আসেনি, ফলে তাদের কারো আগে রোগ হয় নি, প্রতিরোধ-ক্ষমতাও গড়ে ওঠেনি, হার্ড ইমিউনিটি-র প্রশ্নই ওঠেনা। আবার গুটিবসন্ত নিয়ে অভিজ্ঞতা ছিল বলে স্প্যানিশরা চিকিৎসার নামে রোগীর ক্ষতি করত না, কিন্তু আদি আমেরিকানরা রোগটি সম্পর্কে অপরিচিত থাকায় রোগ হলে ভুল চিকিৎসা করে রোগীর ক্ষতি করত। স্প্যানিশদের সাধারণ স্বাস্থ্য ও খাবারদাবার তুলনায় ভাল ছিল, আর স্বভূমিচ্যুত আদি আমেরিকানরা অপুষ্টিতে ভুগত। এর ওপরে ছিল তাদের দাস বানানো ও ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মধ্যে গুটিবসন্ত ছড়ানো।


    প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ অতিমারীর ক্ষেত্রে এই হার্ড ইমিউনিটি-র ধারণাটি প্রয়োগের কথা আসছে। বলা হচ্ছে, লকডাউন ইত্যাদি করে রোগের ছোঁয়া বাঁচিয়ে সাময়িক লাভ, লকডাউন খুললে ভাইরাস পুরোদমে ছড়াবে। অনেকে বলছেন, কোভিডে আক্রান্ত হলে বয়স্কদের মৃত্যু-সম্ভাবনা বেশি, কমবয়সীদের মধ্যে এই রোগ হতে দেওয়া যেতে পারে। অবশ্য তাদের বয়স্ক মানুষের থেকে দূরে থাকতে হবে। কমবয়সীদের মধ্যে মূলত মৃদু রোগ হবে, মৃত্যু তেমন বেশি হবে না। এভাবে দেশের অন্তত ৬০% মানুষের একবার কোভিড রোগ হয়ে গেলে, বাকিরাও ‘হার্ড ইমিউনিটি’ (Herd immunity)-র সুবিধা পাবেন। ফলে এরপর সহজে রোগ হবে না, আর বড় মহামারি আটকানো যাবে।


    যেহেতু আজ থেকে মাত্র দুশো কুড়ি বছর আগেও গুটিবসন্ত রোগের কোন উপযুক্ত চিকিৎসা ছিল না এবং টিকাও ছিলনা, তাই ভারতবর্ষে ইউরোপে বা পৃথিবীর সর্বত্রই এই রোগ মহামারি হিসেবে দেখা দিত, এবং তাকে নিয়ন্ত্রণ করার কোন উপায় জানা ছিল না। তবে মানুষ নিশ্চেষ্ট ছিল না। হার্ড ইমিউনিটি নিজে নিজে গড়ে উঠত। আবার ভারত ও চীনদেশে গুটিবসন্তের ‘টিকা’ কমবেশি চালু ছিল, সেটাও ইমিউনিটি তৈরি করত। গুটিবসন্তের গুটির রস থেকে মালমসলা নিয়ে এই টিকা দেওয়া হত। আজ আমরা জানি, এর অর্থ হল গুটিবসন্তের ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করানো। ফলে টিকা নেবার পরে দেহে গুটিবসন্তর লক্ষণ দেখা দিত, কিন্তু সাধারণত সেটা স্বাভাবিক গুটিবসন্তের চাইতে কম ভয়াবহ হত। টিকার ফলে গুটিবসন্ত হয়ে রোগী মারা যাবার ঘটনা অল্প হলেও ছিল। টিকা বা ইমিউনাইজেসন-এর যে ইতিহাস আমরা পড়ি, তাতে এই এশীয় ‘টিকা’ অস্বীকৃত। জেনার-এর কাউপক্স টিকা দিয়েই টিকা-র শুরু ধরা হয়। জেনার ও দেশীয় টিকা, এদুটো নিয়ে কথা বলতে গেলে টিকা নিয়ে দু-চার কথা জানা দরকার।


    টিকা কাকে বলে? বীজাণুঘটিত অসুখ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের শরীরে, মূলত রক্তে, কিছু কোষ আছে। যখন কোনো বীজাণু/জীবাণু, তা ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাক-ভাইরাস যাই হোক, শরীরে ঢোকে, তখন এই দেহকোষগুলি বহিরাগত শত্রুকে মারার মতো রাসায়নিক তৈরি করে, মূলত অ্যান্টিবডি। প্রথমবার বীজাণু ঢুকলে তাকে শত্রু বলে চিনে ঠিকঠাক অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সময় লাগে, কিন্তু শরীর সেই বীজাণুকে চিনে রাখে, যেন পুলিশের খাতায় নাম-ওঠা দাগি আসামি। ঐ একই বীজাণু পরে আবার শরীরে ঢুকলে খুব দ্রুত সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আমরা বলি শরীর ঐ বীজাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। এইজন্যই একবার গুটিবসন্ত হলে দ্বিতীয়বার তা হয় না।


    টিকা এই সুযোগটাকে কাজে লাগায়। পুরনো পদ্ধতিতে টিকাকরণে গুটিবসন্তের বীজাণুই সরাসরি শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হত, তাতে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা আসত। কিন্তু ওরকম টিকা দেওয়া নিরাপদ ছিল না। টিকার গুটিবসন্তের বীজাণু থেকে গুটিবসন্ত রোগই হত, তবে তা কম মারাত্মক হত। জেনার যে টিকা আবিষ্কার করলেন তাতে ভারতীয় পদ্ধতির মতো সুস্থ মানুষের চামড়া ফুঁড়ে বীজাণু ঢুকিয়ে দেওয়া হত, তবে সেটা গো-বসন্তের বীজাণু। (চীনে গুটিবসন্তের বীজাণুসমেত দেহরস শুকিয়ে তার গুঁড়ো নস্যের মতো নাকে নেওয়া বেশী প্রচলিত ছিল)। ভাবা হয়, গো-বসন্ত আর গুটিবসন্ত এ-দুটো রোগের ভাইরাসের গঠন কাছাকাছি, তাই মানুষের শরীর গো-বসন্ত ভাইরাসের বিরুদ্ধে যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে সেটা গুটিবসন্তের ভাইরাসকেও মেরে ফেলে। অবশ্য এটা খানিক আন্দাজি কথা, গো-বসন্তের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা শারীরিক প্রতিরোধ গুটিবসন্তকে আটকাবে কেন সে ব্যাখ্যা মেলা শক্ত—একে এক আকস্মিক সৌভাগ্যই বলতে হবে। তবে এ নিয়ে অন্য মতও আছে, তা পরে আলোচনা করা যাবে।


    গো-বসন্তের জীবন্ত ভাইরাস আমাদের শরীরে ঢুকিয়ে দিলেও তা তেমন রোগ সৃষ্টি করতে পারে না—প্রতিটি প্রাণীর শরীরে রোগ ঘটানো ভাইরাস সাধারণত আলাদা (পাদটিকা ২ দেখুন)। এই যে বীজাণু (বা তার অংশ) শরীরে ঢুকিয়ে শরীরকে দিয়ে তার প্রতিরোধ তৈরি করা, একে বলে সক্রিয় প্রতিরোধ টিকা। যেমন মুখে খাবার পোলিও টিকা—এতে থাকে জ্যান্ত পোলিও ভাইরাস, কিন্তু বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই ভাইরাসের আক্রমণ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়। পোলিও টিকার আরেকটা রকম আছে, তাতে মৃত পোলিও ভাইরাস ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। আবার টিটেনাস ব্যাকটেরিয়া মেরে তার দেহাংশ দিয়ে টিটেনাস-এর টিকা বানানো হয়।


    নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধ টিকাতে সরাসরি অ্যান্টিবডি ব্যবহার করা হয়। যেমন জলাতঙ্কগ্রস্ত পশু তেমনভাবে কামড়ালে কেবল সাধারণ সক্রিয় প্রতিরোধ টিকা যথেষ্ট নয়, তার সঙ্গে জলাতঙ্ক-ভাইরাস মারার অ্যান্টিবডি ইঞ্জেকশন করে দিতে হয়। রোগ হবার আগেই দেওয়া হচ্ছে, এবং অ্যান্টিবডির মাধ্যমে কাজ করছে, তাই এটাও টিকা, কিন্তু নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধ টিকা।


    গুটিবসন্তের ল্যাটিন নাম Variola (ভ্যারিওলা)। জেনার-এর টিকার আগে গুটিবসন্তের রস দিয়ে যে টিকাকরণের পদ্ধতি ছিল, তা ভারতে টিকা নামে পরিচিত হলেও, ইউরোপে ডাক্তারি পরিভাষায় তার নাম ছিল Variolation (ভ্যারিওলেশন), অর্থাৎ গুটিবসন্ত ঘটানো, Immunization (ইমিউনাইজেশন) বা অনাক্রম্যতা তৈরি নয়।



    গোয়ালিনীর গর্ব আর জেনার-এর হাতে টিকার দাগ


    ইংরেজ চিকিৎসক এডওয়ার্ড জেনার গুটিবসন্তের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ নিয়ে বহুবছর ধরে ভাবছিলেন। তাঁর ছোটবেলায় এক গোয়ালিনীর মুখে শুনেছিলেন— “আমার গুটিবসন্তের ভয় নেই, কেননা আমার গো-বসন্ত (কাউপক্স) হয়ে গেছে।” এ-কথাটা যে ইংরেজ বা ইউরোপীয় ডাক্তাররা কেউ জানতেন না, তা কিন্তু নয়। অনেকেই জানতেন। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে তাঁরা তেমন তলিয়ে ভাবেননি। কেন ভাবেননি সেটা আমরা পরে দেখব। তার আগে “টিকা আবিষ্কার” জিনিসটা কী সেটা একবার দেখি।


    ইংরেজ গোয়ালা-গোয়ালিনীদের ’বিশ্বে’ গো-বসন্ত হলে গুটিবসন্ত হয়না, এটা সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। অথচ তার কৃতিত্ব কেউ পায়নি। কোনটা বিজ্ঞান আর কাদের হাতে পড়লে সাধারণ জ্ঞান বিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত হয়ে ওঠে, আপাতত আমরা সে প্রশ্নে ঢুকছি না। । শুধু লক্ষ্য করব, গোয়ালাদের এই জ্ঞান কোনো ব্যক্তিগত আবিষ্কার ছিল না, ছিল গোষ্ঠিগত জ্ঞান। এই গোষ্ঠিগত জ্ঞান ছিল বলে গোয়ালারা গো-বসন্ত আছে এমন গরু হয়তো ইচ্ছে করেই ঘাঁটত যাতে নিজের শরীরে গো-বসন্ত হয়। এই জ্ঞান তখনও ওদেশের চিকিৎসক সমাজের ছিল না। অন্যদিকে, শরীরে গুটিবসন্ত রোগের বীজাণু চামড়া কেটে প্রবেশ করালে মৃদু গুটিবসন্ত হয়ে মারাত্মক বসন্তের হাত থেকে রেহাই মেলে, এটাও ছিল আরেক গোষ্ঠিগত বা ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান, যা ভারত-চীন থেকে খুব সম্ভবত তুরস্ক হয়ে ইউরোপে ঢুকেছিল। সে-জ্ঞানটিও কিন্তু বিজ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত ছিল না, এমনকি টিকাকরণের মূলনীতির সঙ্গে সম্পূর্ণ মিললেও একে টিকা বলে ডাকাই হল না। ভাষা বড় জটিল জিনিস।


    আমরা এবার জেনার-এর কাহিনীতে আসি। তিনি গোয়ালা-গোয়ালিনীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং পর্যবেক্ষণ করে নজর করলেন যে, এদের অনেকের চামড়ায় ছোট গুটি মত বেরোয়, সামান্য একটু রোগ হয় এবং তা সেরে যায়, কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হয় না। তিনি দেখলেন, দুধের বাঁটের কাছে গরুরও এই ধরনের কিছু গুটি হয়। এই রোগটি হলো কাউপক্স বা গো-বসন্ত। জেনার ভাবলেন, আচ্ছা, এই গো-বসন্তের রস চামড়া কেটে শরীরে ঢুকিয়ে দিলে কেমন হয়?


    ১৭৯৬ সাল, মে মাসের এক দিন। সারা নেমস (Sarah Nelms) নামে এক তরুণী গোয়ালিনীর হাতে একটা গো-বসন্তের গুটি দেখে রেখেছিলেন জেনার। সেই গুটি থেকে রস (তখনকার ভাষায় লিম্ফ) নিয়ে জেমস ফিপস (James Phipps) বলে আট বছরের এক বালকের হাতে জেনার টিকা দিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে বিখ্যাততম টিকা। কয়েকদিনের মধ্যে ছেলেটির একটু জ্বর হল, বগলে সামান্য ব্যথা। ন’দিনের মাথায় তার ঠাণ্ডা বোধ হতে শুরু করল, আর খিদে কমে গেল। কিন্তু পরের দিন তার শরীর প্রায় সুস্থ। এর দু’মাস পরে জেমস ফিপস-এর শরীরে জেনার গুটিবসন্তের রস প্রবেশ করিয়ে দিলেন—এটা অবশ্য কোনো নতুন পদ্ধতি নয়, ভারত-চীন-তুরস্ক হয়ে ইংল্যান্ডে আসা ভ্যারিওলেশন পদ্ধতি। তারপর অধীর প্রতীক্ষা। কোনো রোগলক্ষণ দেখা দিল না।


    তথ্যসূত্র
    1. বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থার ওয়েবসাইট দ্রষ্টব্য, https://www.who.int/biologicals/vaccines/smallpox/en/
    2. Edward Jenner and the history of smallpox and vaccination, Stefan Riedel, Baylor University Medical Center Proceedings, 2005, Volume 18 (1), Page 21-25. .https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC1200696/ accessed on 7 May, 2020.
    3. Vaccine epidemiology: A review. Chandrakant Lahariya. Journal of Family Medicine and Primary Care, 2016 Jan-Mar; https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4943153/

    পাদটিকা


    ১। কুষ্ঠরোগও প্রায় নির্মূলের পথে। এটা ব্যাক্টেরিয়াঘটিত, কোনো কার্যকর টিকা নেই। সমস্ত রোগীকে দ্রুত সনাক্ত করে ওষুধ খাইয়ে এই অসাধ্যসাধন হচ্ছে।


    ২। কোভিড, সার্স, বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু এসব ভাইরাস পশুপাখি থেকে পরিবর্তিত অর্থাৎ মিউটেটেড হয়ে মানুষে এসে রোগ সৃষ্টি করছে। ফলে এক প্রাণীর রোগ তৈরি করা ভাইরাস অন্য প্রাণীতে রোগ করতেই পারে না, এমন নয়।


    পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩ | পর্ব ৪
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৩ জুন ২০২০ | ৪০৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sumit Bhowmick | 103.217.***.*** | ১৩ জুন ২০২০ ১৩:৪১94262
  • Very good informational scientific story.  Explained in a lucid way..

    -- Sumit Bhowmick 

  • একলহমা | ১৩ জুন ২০২০ ২৩:২৮94277
  • ভালো লাগছে পড়তে‌ পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

  • এলেবেলে | 202.142.***.*** | ১৪ জুন ২০২০ ০০:৫৬94284
  • চেয়েছিলাম এই লেখাটা যেন এখানে পর্বে পর্বে আসে। খুবই মনোজ্ঞ আলোচনা। উপস্থাপন ভঙ্গিও অনবদ্য। লেখাটা শেষ হলে শেয়ার করব নানা জায়গায়। আপনি যে শেষ অবধি লেখাটা এখানে দিলেন, এই কারণে অজস্র ধন্যবাদ।

  • Subhankar Mukherjee | ১৭ জুন ২০২০ ১২:৫১94399
  • খুব তথ‍্যমুলক একটি সমৃদ্ধশালী লেখা

  • শিবাংশু | ১৮ জুন ২০২০ ১২:১২94428
  • ধন্যবাদ ড. দাস। পরের পর্বের অপেক্ষা রইলো।
  • ইয়ে | 2402:3a80:c9a:bf6a:2f6a:8d0e:a835:***:*** | ১৮ জুন ২০২০ ২১:২৫94444
  • তারপর? 

  • অনিন্দিতা | 146.196.***.*** | ১৯ জুন ২০২০ ১৫:৫৯94456
  • ভালো লাগল। মনে আছে আমাদের মাধ্যমিক পাঠক্রমের দুটি অনবদ্য পাঠ্যাংশ- লুই পাস্তুর ও Jenner the conqueror of smallpox. পরবর্তী পর্বে আরো কাহিনীর আশা রইল। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন