এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব ২০১৪

  • গল্প মানেই মিথ্যে

    রূপঙ্কর সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | উৎসব ২০১৪ | ১৯ অক্টোবর ২০১৪ | ১০৩৮ বার পঠিত
  • কস্তুরী অপেক্ষায় ছিল, রায়বাবু আবার কখন অল্ট সিক্স ধরে লেজার এন্ট্রি দেখাবার ছুতো করে কনুই দিয়ে তার বুকটা ছোঁবেন। এবার কিন্তু তেমন কিছু হলনা। কস্তুরী নিজেকে বলল, ও সব মাল চেনা আছে, পুরুষ মানুষগুলো সব একরকম। চেষ্টায় ছিল, হাতটা পৌঁছয়নি। দেখবি? দাঁড়া আবার ডাকছি। – স্যার, শিফট এন থ্রী মারলে পারচেজ দেখাচ্ছে না তো। রায়বাবু মুখ ভেটকে তাকালেন, আঃ বড় বিরক্ত কর তো, তোমার কম্পিউটারের ডিপ্লোমাটা কি মুখ দেখে দিয়েছে? মুখটাও তো তেমন – যথেষ্ঠ অবমাননাকর কথাবার্তা। হারামজাদাকে কেউ শেখায়নি, যে মেয়েদের চেহারার প্রশংসা পারলে কর, না পারলে চেপে যাও। তাই বলে এমনি করে বলবে? কস্তুরী বলল, স্যার, এই প্রোগ্রামটা তো কোম্পানীর নিজস্ব। কম্পিউটার ক্লাসে তো এসব শেখায়না। একটু আসুন না –

    রায়বাবু এলেন। দেখি, একটু পিছিয়ে বস। এভাবে ঘাড়ের ওপর চেপে দেখানো যায়? একটা কাজ কর, তুমি একটু ওঠ তো। আমি বসে করছি, মন দিয়ে ফলো কর। এই শেষ, ভাল করে দেখে নাও। আমি কিন্তু আর ডাকলে আসব না। আমার গুচ্ছের কাজ পড়ে আছে। মনে হচ্ছে রাত্রে থাকতে হবে । কস্তুরী ভাবল ও, কনুই মেরে হচ্ছেনা, রাত্রে থাকার কথায় আসল ইঙ্গিত। বলল, স্যার আমাকেও কি রাত্তিরে – রায়বাবু বললেন, না না, ক্ষেপেছ নাকি, তুমি মেয়েছেলে, রাত্রে থাকবে কি, আমিও যে থাকবই এমন কথা নেই। দেখি, যদি নামিয়ে দিতে পারি, লাস্ট ট্রেনে বাড়ি যাব। নাও নাও, কথা না বাড়িয়ে শেষ করো। অনেক দেরি করে ফেলেছ অলরেডি।

    কস্তুরী ভাবল, মিলছে না, কিচ্ছু মিলছে না। লোকটা ফর্টি ফাইভ প্লাস, ছেচল্লিশ সাতচল্লিশ হবেই, চুলে কলপ করে, ঢুলুঢুলু চোখ, টুকটাক বোতল চালায় দেখলেই বোঝা যায়, প্রথম বারের কনুইটা তবে অ্যাকসিডেন্ট? না, এ হতে পারেনা। সে উঠে গলির দিকে যাচ্ছে, রায়বাবু বললেন, আবার কোথায় যাচ্ছ? তোমায় বোধহয় রাখতে পারবনা বেশিদিন। কস্তুরী বলল, না স্যার, একটু টয়লেট যাচ্ছি, এক্ষুনি আসছি। মেয়েদের টয়লেটে একটা বড়সড় আয়না আছে। বাড়িতে এমন আয়নার কথা ভাবাই যায়না। কস্তুরী নিজের মুখটা ভাল করে দেখতে লাগল।  চোখের তলায় আঙুল দিয়ে টানল, দুহাতের আঙুলগুলোর মাথা দিয়ে দুদিকের গাল ঠেলে তুলল, ঠোঁটের ওপর আঙুল বুলোল, আমি এত খারাপ দেখতে? না তো, তবে ব্যাটা এমন করে বলল –

    ন’টা বেজে গেছে, পাশে কিউবিক্‌ল থেকে মন্দিরাদি বেরিয়ে গেল। সিং আর অরূপ বেরোচ্ছে এবার। আনোয়ারা আর নতুন সাউথ ইন্ডিয়ান মেয়েটা কি একটা ইয়ার্কি মারতে মারতে খিলখিল করে যাচ্ছে গেটের দিকে। রায়বাবু আবার মুখ ভ্যাটকালেন, এটা অফিস না ফাজলামো মারানোর জায়গা – ইশ, ব্যাটার মুখ ভীষণ বাজে, মারানো ফারানো ভদ্রলোকের কথা? কস্তুরী বলল, স্যার, আমি যাই? রায়বাবু বললেন, যাবে? পাগলা নাকি? কাজ শেষ করেছ? তোমার এন্ট্রিগুলো কি আমার পিসি এসে করে দেবে? হাত চালাও হাত চালাও – কস্তুরী বলল, স্যার, এরপর বাস পাব না। রায়বাবু বললেন, পাবে পাবে, অনেক রাত অবধি বাস চলে। নাও, হাত চালাও ঝটপট। তোমার চাকরি থাকল কিনা তাই নিয়ে আমার বিশেষ চিন্তা নেই। তবে তোমার জন্য দেখছি এবার আমারটা যাবে।

    হাত চালাও বললেই তো আর চলেনা, কস্তুরী কী বোর্ডে আঙুল চালাতে চালেতে ভাবতে লাগল, দামানিয়া অ্যান্ড কোম্পানীর কাজটা ছাড়লাম কেন? মাইনে অনেক বেশি ছিল। হপ্তায় অন্ততঃ দুদিন মাছ খাওয়া যেত। কামাল বলে লোকটা পেছনে এসে দাঁড়াত প্রথম প্রথম। ক’দিন পর ঝুঁকে কাঁধে হাত দিয়ে এন্ট্রি বুঝিয়ে দিত। তারপর যেদিন কাঁধ থেকে হাত আস্তে আস্তে নীচে নামতে লাগল, কস্তুরী চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে গায়ের জোরে এক ধাক্কা দিয়ে একদলা থুথু মুখ থেকে থু – করে ছুঁড়ে দিয়েছিল তার মুখে। তারপর হনহনিয়ে বেরিয়ে এসেছিল অফিস থেকে। ইশ, পঁচিশ দিন মত কাজ হয়েছিল, মাইনেটাও পাওয়া যায়নি। সেদিন মেট্রোয় দামানিয়ার সঙ্গে দেখা। বলল, আরে লক্‌শমী, তুমি কাম ছোড়ে দিলে কেনো, একবার তো বোলবে কী পরেশানি? কস্তুরী বলল, আমি লক্ষ্মী নই। দামানিয়া কক্ষনো মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেনা, তাকাবার আরো কত জায়গা আছে, বলল, হাঁ হাঁ, তুমি বন্দনা, ইয়াদ হোলো। কোথাও জয়েন না কোরলে এসো একদিন –

    কস্তুরী বলল, স্যার, লেজার প্রায় শেষ, দশটা বেজে গেল। এখন না বেরোলে – রায়বাবু বললেন, প্রায় শেষ বলে বাংলায় কোনও কথা হয়না। তার মানে ওটা আমায় শেষ করতে হবে। কোম্পানী তো আমায় ছাড়বে না। ঠিক আছে যাও, কতদিন তোমার চাকরি আছে, ভগবানেরও জানা নেই বোধহয়। যাও যাও, বিদেয় হও। কেন যে এখানে মারাতে আসে সব – কস্তুরী খিস্তিটা হজম করল, লোকটা শুধু খিস্তিই দেয়। তাও ভাল। কিন্তু ভাল কি? কেন ভাল? গুঠখার পিকভর্তি সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে কস্তুরী ভাবল, কালাম না কামাল কী যেন নাম লোকটার, তার সঙ্গে অমন রিঅ্যাক্ট করলাম কেন? লোকটার নাম কমল হলে কি একই রকম করতাম? লোকটা একটু হাতের সুখ করত বড়জোর, ভরা অফিসে রেপ তো করত না আমায়। কার জন্য বাঁচাচ্ছি এই শরীর? বয়স কত হ’ল? এই প্রশ্নের উত্তরটা ইচ্ছে করে চেপে, ঠেসে, মনের তলায় গুঁজে দিতে দিতে এখন সত্যি কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতে পারবেনা তার বয়স কত। ডেট অফ বার্থ? ও সার্টিফিকেট দেখতে হবে।

    কস্তুরী এখন ফুটপাথ ধরে হাঁটছে। বাংলায় একটা কথা আছে, নিম্ন মধ্যবিত্ত। কস্তুরীর খুব হাসি পায় কথাটা শুনলে। এমন কিছু হয়ত এককালে ছিল, এখন নেই। বড়লোক আছে, মধ্যবিত্তও আছে কিন্তু তার আর নিম্ন নেই। কস্তুরীরা গরীব, নিতান্তই গরীব। কিন্তু যাদের গরীব বলা হয়, নানারকম আদিখ্যেতা করা হয়, তাদের সঙ্গে তফাৎ কী? তারা বস্তিতে থাকে, কস্তুরীরা প্লাস্টার না করা দেয়াল আর কব্জা ভাঙা জানলা নিয়েও একটা পাকা বাড়িতে থাকে। বস্তিতে তার বয়সী মেয়েটা হয়ত ক্লাস ফাইভ অবধি পড়েছে কর্পোরেশনের অবৈতনিক ইস্কুলে। কস্তুরী সোশিওলজিতে অনার্স নিয়ে গ্র্যাজুয়েট। বস্তির মেয়েটা, তার মা, তার বোন, সবাই বাবুদের বাড়ি বাসন মাজে, তার বাবা রিক্সো চালায়, সবাই মিলে মাস গেলে হাজার পনেরো চলে আসে ঘরে। কস্তুরীর একলার রোজগার এদের অর্ধেকও নয়। আগে সপ্তাহে দুদিন মাছ হত, এখন মাসে দু দিন। ওদের বস্তি হলেও ঘরে রঙীন টিভি, প্রত্যেকের হাতে মোবাইল, রবিবারে খাসির মাংস রান্নার গন্ধ। কস্তুরীরা নিম্ন মধ্যবিত্ত, গরীব না। পনেরই অগস্ট যখন ক্লাবে কম্বল দেয়, কস্তুরী মাকে ঠেলে , তুমিও গিয়ে দাঁড়াও না। একটা ছেঁড়া কম্বল দিয়ে দুজনের হয়? মা বলে, অগো নাম লিস্টি কইরা নিছে, আমারে দিব নিকি? 

    কস্তুরীর মা সিঁদুর পরে। কেন পরে তা সেই জানে। কস্তুরীর বাবা সেই যে লিলুয়ার কারখানা থেকে একদিন আর ফিরলনা, তারপর কত বছর কেটে গেল। ওই যে বস্তির মেয়েগুলো বাবুর বাড়ি বাসন মাজে, কস্তুরীর মাও মাজেনি নাকি? না মাজলে খেত কি? তবে কিনা নিম্ন মধ্যবিত্ত তো, ভদ্রলোক বলে কথা। পাড়ায় তো আর এসব করা যায়না, কস্তুরীর মা ট্রেনে চেপে চলে যেত নিউ আলিপুর। আর কস্তুরী ইস্কুল থেকে ফিরে সিঁড়িতে বসে ভাবত, আজকে আবার যদি প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগে ভরে ওরা দুটো পরোটা দেয় মাকে? খুব খিদে পাচ্ছে, খুব – এখন আর নিউ আলিপুর যেতে হয়না তাকে। কস্তুরী রোজগার করছে তো। কস্তুরী দেখল, বাসটা মোড় ঘুরছে, কিন্তু ওপারে স্টপ অবধি দৌড়ে গিয়ে ধরা যাবে? এটাই বোধহয় শেষ বাস। বাবাদের আমলে নাকি কোলকাতায় রাত বারোটা পর্যন্ত স্টেট বাস পাওয়া যেত। এখনও স্টেট বাস চলে শুনেছে কস্তুরী, তবে চোখে দেখেনি। প্রাইভেট বাসগুলোও রাত আটটা বাজলেই কোথায় উধাও হয়ে যায়। এটা যদি কোনোমতে ধরতে পারা যায় – কিন্তু এদিকের সিগনাল লাল হচ্ছেনা। রাস্তা পেরোব কী করে? বাসটা মোড় ঘুরছে, ঘুরে গেল, উফ্‌ সিগনাল তেমনি চিরসবুজ। বাসটা মোড় ঘুরেই গেল। এবার স্পীড তুলবে, দৌড়েও ধরা যাবেনা। কস্তুরী রাস্তা পেরোবার জন্য ছুট লাগাল। এখন গাড়ি একটু কমেছে বলে সবাই টপ গিয়ারে যাচ্ছে। ছুটন্ত কস্তুরীর পাশ দিয়ে কয়েকটা প্রাইভেট গাড়ি সাঁৎ করে বেরিয়ে গেল। চোখের কোন দিয়ে কস্তুরী দেখল একটা যমদূতের মত ছোট ট্রাক ঘাড়ের ওপর এসে পড়ল। ও ভেবেছিল পেরিয়ে যাবে, কিন্তু নিজের গতি আর ট্রাকের গতির বৈষম্যটা ধরতে পারেনি। কস্তুরী দুটো হাত দিয়ে কান আর মাথা চেপে ধরে ঘাড় কুঁজো করে দাঁড়িয়ে পড়ল রাস্তার মাঝখানে।

    ওই সময়ে কিছু ভাবা যায়? যারা ছোট ট্রাকে চাপা পড়েও বেঁচে গেছে, এমন কাউকে পেলে জিজ্ঞেস করা যেত। কিন্তু কস্তুরীর হঠাৎ মনে হল, যদি ট্রাকটার দিকে ফিরে, বুক চিতিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়াই, তাহলেও যেভাবে পিষে দেবে, এই যে ঘাড় ঝুঁকিয়ে, কান মাথা হাত দিয়ে চেপে দাঁড়িয়েছি, তাতেও তাই দেবে। কিন্তু মানুষ কী অদ্ভুত না?  ট্রাকের ড্রাইভার ব্রেকের ওপর সব শক্তি ঢেলে চাঁই চাঁই চাঁই আওয়াজ করে কস্তুরীর এক ইঞ্চি দূরে থামাতে পারল গাড়িটা। তারপর জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে, ইস্কুলের ক্লাস থ্রী থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলো খিস্তি শিখেছিল, পরিষ্কার উচ্চারণ করে সব গুলো দিয়ে দিল এক এক করে। কস্তুরী যেহেতু মরেনি, তাই খানিক হেসে নিল এই ভেবে, যে এর মধ্যে অনেকগুলো শুধু পুরুষমানুষের জন্য সংরক্ষিত। ওদিকে বাসটা কিন্তু চলে গেল।

    এখান থেকে বাড়ি কত কিলোমিটার হবে? পুরো কোলকাতাটার দৈর্ঘ প্রস্থই বা কত কিলোমিটার করে। হেঁটে চলে যাওয়া যায় নিশ্চয়ই। কেউ কেউ নিশ্চয়ই পারে। কিন্তু কস্তুরীর পারার কোনও চান্স নেই। তিনটের সময় বাড়ি থেকে আনা রুটি আর পটলভাজা দিয়ে টিফিন করেছে। অফিসের বাইরে কটা ফাস্ট ফুডের দোকান হয়েছে, কিন্তু সেখানে সে খায়না। প্রশ্নই নেই। ঐ দুটো রুটি ও পটলভাজায় যত ক্যালরি যুগিয়েছিল, তা খরচা হয়ে গেছে অনেকক্ষণ আগে। কস্তুরী মন্থর পায়ে হাঁটতে থাকে তবুও। আর তো কোনও উপায় নেই।

    রাস্তায় হাঁটতে থাকা মানুষ এখন একজনই। কোলকাতার ব্যস্ত জায়গাগুলো, বা নিশিযাপনের মত্ত আসরে নিশয়ই অনেক মানুষকে পাওয়া যাবে এত রাতেও। তবে এখানে কেউ নেই, কস্তুরী একা। হাঁটছে সে। একটা গাড়ি এসে দাঁড়াল পাশে। গাড়িটার কাঁচ তোলা। চালক কাঁচ নামিয়ে বাঁদিকে ঝুঁকে জিজ্ঞেস করল, কোথায় যাবেন? কস্তুরী একটা ময়লা হাসি হাসল। আমি জানি কী হতে যাচ্ছে। এটা হতই, শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু আমি আর পালাব না। বাস্তব থেকে পালানো যায় না। আর কথা হচ্ছে, পালাবই বা কেন? সেই প্রশ্নটা আবার, কার জন্য রাখছি এ শরীর, কেনই বা রাখছি? কোনও অর্থ আছে এর? কস্তুরী বলল, টালিগঞ্জ। সে এটা আশা করেনি, ড্রাইভারের আসনে থাকা লোকটি হাত বাড়িয়ে পেছনের দরজা খুলে দিল। এমনটা তো হয়না, শুনেছি সবাইকে সামনেই তোলে ওরা। চালাতে চালাতে কিছু করতে হলে তো পাশেই বসানো দরকার। তাহলে এ একা নয়, আরো লোকজন উঠবে মনে হচ্ছে। লোকটা বলল, টালিগঞ্জের কোথায়? কস্তুরী বলল, খালপাড়ে, ব্রীজের কাছে। ড্রাইভার বলল, অতদূর তো যাব না, চারু মার্কেটের কাছে ছাড়লে হবে? কস্তুরী ভাবল, চারু মার্কেট থেকে বাড়ি হেঁটে যাওয়াই যায়। কিন্তু যখন ছাড়বে, তখন কি হাঁটার অবস্থায় থাকব আমি? লোকটা বলল, আমি একটু ঘুরে যাব। আপনার অসুবিধে নেই তো? কস্তুরী বলল, ঘুরে মানে? লোকটা বলল, বাইপাস হয়ে যাব, আমার একটা কাজ আছে। এই বলে গাড়িটা মোড় থেকে পুরো ঘুরিয়ে নিল উল্টোদিকে।

    গাড়িটার কাঁচ তোলা, কারণ ভেতরে এ সি চলছে। কস্তুরী গা এলিয়ে দিল। খানিক আরাম করে নিই। হোক যা হচ্ছে, এটা একদিন হতই। শুধু ড্রাইভার যখন পেছনের দরজা খুলে দিল, তখন একটা সামান্য খটকা লেগেছিল। কিন্তু যখন সে উল্টোদিকে গাড়ি ঘুরিয়ে বলল, বাইপাস ঘুরে যাবে, তখন আর সন্দেহ রইল না। বাইপাস আরও নির্জন। বাড়িগুলো রাস্তা থেকে অনেকটা ভেতরে। ঘন গাছপালা। পুলিশ থাকে বটে, কিন্তু দশ ফুট দূরে দূরে নয়। একটু ভয়ও পেল কস্তুরী। বাইপাস নিয়ে যাচ্ছ কেন? যা করার এখানেই কোনও একটা গলিতে ঢুকিয়ে করতে পারে। গাড়ির মধ্যে তো। ওই নির্জনে নিয়ে যাবার অর্থ কী? মেরে ফেলবে না তো? কেন মারবে? আমি তো একে চিনিই না। তাহলে মারবে কেন? 

    গাড়িটা বাইপাসের কাছাকাছি চলে এসেছে, খুব জোরে যাচ্ছে ফাঁকা রাস্তায়। হঠাৎ কস্তুরীর চোখ গেল ড্যাশ বোর্ডের ওপর। আজকাল সব নানারকম চাইনীজ মূর্তি পাওয়া যায় আলো টালো সমেত। কেউ লাগায় গনেশ, কেউ লাগায় সাঁইবাবা। এখানে একটা ফ্রেমের মধ্যে কাবা শরিফের ছবি। চারদিকে আলো দেয়া, সেগুলো জ্বলছে আর নিভছে। ছবিটার ওপরে সোনালি অক্ষরে উর্দুতে কিসব লেখা। কস্তুরী কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল, আপনার নাম কী? লোকটার গলাটা বেশ গম্ভীর, বলল, কেন বলুন তো? কস্তুরী বলল, না, এমনি। লোকটা বলল, মোজাম্মেল। কস্তুরী একটু কেঁপে উঠল। তারপর ভাবল, আমি কী বোকা, মোজাম্মেল না হয়ে মানিক লাল হলে হের ফের হত কিছু? কস্তুরী বলল, জামাকাপড় খুলব? লোকটা হঠাৎ ঘাড় ঘোরাল। এমন ভাবে স্টিয়ারিং ঘুরে গেল, যে রাস্তায় অন্য গাড়ি থাকলে অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেত। সে বলল, মানে?

    কস্তুরী বলল, না, মানে, আমার বাইরে পরার সালোয়ার সেট মাত্র দুটো তো, একটা কেচে একটা পরি। যদি ছিঁড়ে টিঁড়ে দেন তো – এবার লোকটা ব্রেক মারল। সেই ছোট ট্রাকটার মতই চাঁই চাঁই আওয়াজ হল। তারপর আস্তে করে গাড়িটা ফুটপাথের ধারে নিয়ে এসে দরজা খুলে নেমে পুরোটা ঘুরে এপাশে এসে পেছনের দরজাটা খুলে ধরল, – নেমে যান। কস্তুরী বলল, আমি কিছু অন্যায় বললাম? আচ্ছা, আপনি ছিঁড়ুন টানুন, যা খুশি করুন, আমি আর কিচ্ছু – লোকটা আবার বলল, নেমে যান। এবার আগের বারের চেয়ে একটু জোরে বলল। কস্তুরী কেঁদে ফেলল, প্লীজ, আপনি – লোকটা আর একবার বলল, নেমে যান। এবার আরও জোরে।

    কস্তুরী ফুটপাথের ওপর দাঁড়িয়ে। পরিষ্কার আকাশে চাঁদ ঝলমল করছে। এটা একটা কালভার্ট মতন, একটু উঁচু জায়গা। তলা দিয়ে একটা খাল চলে গেছে। আসপাশে ঝুপসি ঝুপসি গাছ। দূরে যে কটা বাড়ি দেখা যাচ্ছে, সবকটাই অফিস বা ওই ধরনের কিছু। যতদূর চোখ যায় প্রাণের চিহ্ন নেই। কস্তুরী হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগল। কিছুক্ষণ কাঁদার পর বুঝল, তার কান্না শোনার কেউ নেই এখানে। তখন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদল আর একটু। তারপর ফুটপাথের ওপর বসে ফোঁপাতে লাগল, উঁ-উঁ-উঁ – একটা নেড়ি কুকুরকে দেখা গেল খানিক দূরে। সে খুব সন্দিগ্ধ ভাবে জরিপ করল নতুন প্রাণীটিকে। তার পর দুবার আস্তে ভুক করে আওয়াজ করে কাছে এল। কস্তুরীকে ভাল করে শুঁকল ক’বার। তারপর লেজ নাড়ল, আরও জোরে লেজ নাড়ল, ভীষণ জোরে লেজ নাড়ল, মুখ দিয়ে আহ্লাদি আওয়াজ বের করে কস্তুরীর গায়ের সঙ্গে গা ঠেকিয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে পড়ল।

    রাত ঢলে গেছে অনেকখানি। চাঁদ যেখানে ছিল তার থেকে অনেক দূরে চলে গেছে এখন। সে জায়গায় ঝকমকে তারা দেখা যাচ্ছে আকাশ জুড়ে। কস্তুরী মুগ্ধ হয়ে তারা দেখতে লাগল। রাত এত সুন্দর? আগে দেখিনি কেন? কস্তুরী মোবাইলের ঘড়িতে দেখল, রাত দুটো। অন্য কেউ হলে আর কিছু না হোক বাড়িতে একটা খবর দিত। ওদের বাড়িতে আর কোনও ফোন নেই। থেকেও লাভ ছিলনা। মা ফোন ধরতে পারেনা। বড় গাছগুলোর পেছনে কালভার্টের ওপাশ থেকে জড়ানো গলায় গান ভেসে এল, কে বিদেসি – মন উদাসি – বাঁসের বাঁসি – একটা লোক আসছে টলে টলে, মাতাল। নজরুলের গান গাইছে মানে, একেবারে ছোটলোক নয়। কিন্তু মাতাল কে বিশ্বাস কী? কস্তুরীকে দেখতে পেয়েছে। – কে তুমি বিদেসিনি? আমি চিনি গো চিনি – কস্তুরি বলল, অ্যাই অ্যাই, কাছে আসবেনা। যাও যাও – কুকুরটা ঘুম ভেঙ্গে উঠে ঘাউ ঘাউ করে তাড়া করল – ওরিয়ে বাওয়া, হাউন্ড অফ বাস্‌কারভিল – যাচ্ছি যাচ্ছি বাওয়া, ভিক্ষের দরকার নেই কুকুর সামলাও – বলে লোকটা কালভার্টের ওধারে গড়িয়ে পড়ে গেল।

    কস্তুরী ভয়ে ভয়ে দেখতে গেল। উল্টে পড়ে আছে, নড়ে না চড়েও না। মরে গেল নাকি? কুকুরটা চ্যাঁচাচ্ছে। কস্তুরী বলল, অ্যাই চুপ। আস্তে আস্তে কাছে গেল। এই যে, শুনছেন, শুনছেন, উঠুন না। কস্তুরী নীচু হয়ে দেখে, পিঠে হাত রাখে। না শ্বাস পড়ছে। কস্তুরী লোকটার বগলের তলায় হাত গলিয়ে দেয়। শুনছেন? উঠুন না, উঠুন – টানতে থাকে। এ লোকটাকে টেনে তোলা তার কম্মো নয়, তবু টানে, উঠুন না উঠুন। লোকটার বাহু চেপে ধরেছে হাত গলিয়ে। তার বুকে চেপে ঘষে যাচ্ছে লোকটার হাত, কিন্তু না তার তাতে কিছু এসে যায়, না মাতালটার। অনেক চেষ্টার পর নড়ল ব্যাটা। কস্তুরী কাঁধে ভর দিয়েই উঠল সে। উঠেই বলে, ও তুমি মেয়ে পুলিশ, তাই আমাকে ধরতে এসেছ? কিন্তু আমায় তো ধরতে পারবে না – বলে কস্তুরীর মুখের সামনে তর্জনী নাড়তে থাকে। তুমি মেয়ে পুলিশ, মেয়েদের ধরবে, আমি হলুম গিয়ে ব্যাটাছেলে। বিস্বাস হচ্ছেনা, দেখবে? বলে সে প্যান্টের জিপ টানে। কস্তুরী চেঁচিয়ে ওঠে, অ্যাই অ্যাই, একদম অসভ্যতা করবেনা, যাও – কুকুরটা মহা উদ্যমে আবার তাড়া করে – লোকটা আবার টলে টলে হাঁটে। তার গান ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় কালভার্টের ওধারে – নারী চরিত্র বেজায় জটিল – কিছুই বুঝতে পারবেনা – ওরা কোনও ল’ মানেনা – তাই ওদের নাম ললনা – বুঝলে অবলাকান্ত –

    কস্তুরী আবার এসে বসে কালভার্টের ফুটপাথে। কুকুরটাও ফিরে এসেছে। আকাশে  কয়েকটা কাক উড়ে যায় কা কা করে। কস্তুরী দেখে আকাশ ফিকে হচ্ছে। যেহেতু কালভার্টটা উঁচু যায়গায়, তাই আন্দাজে পুব দিক খুঁজে তাকায় কস্তুরী। ধীরে ধীরে লালচে হচ্ছে আকাশ। লম্বা, বেঁটে, নানা রকম বাড়িঘরদোরের মাঝখান দিয়ে টকটকে লাল সূর্য উঁকি মারে। কস্তুরী বলে – বাঃ। একটা পাঁউরুটির গাড়ি আসছে। দূরে একটা বাসও দেখা যাচ্ছে। এটায় করে অন্ততঃ রাসবিহারীর মোড় যাওয়া যাবে। কস্তুরী কুকুরটার মাথায় হাত বুলিয়ে দৌড়ে গিয়ে হাত দেখিয়ে বাস থামায়।

    টালিগঞ্জের আদিগঙ্গা এখন একটা পূতিগন্ধময় নর্দমা। যাঁরা শখ করে তার ধারে বাড়ি করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কস্তুরীর ঠাকুর্দাও ছিলেন। কড়া নাড়তেই ভীষণ রোগা মায়ের মুখ দরজায়। কস্তুরী ভাবল, একটা মুখে কত রকম ইমোশন, উৎকণ্ঠা, রাগ, ভয়, অভিমান, স্নেহ, পারবেন সোহিনী সেনগুপ্ত বা শাঁওলি মিত্র এই সবগুলো একসঙ্গে ফোটাতে? মা দরজা কিছুতেই পুরোটা খুলছেনা। – কই আছিলি কাইল রাতে? কস্তুরী বলল, রাস্তায়। মা বলল, কী হইছে তর? সইত্য কথা কবি। কী হইছে ক’? এইহানে খারা। আমি গঙ্গাজল আনতেয়াছি, মাথায় দিয়া কলঘরে যা। ছান কইরা বাইরবি। কস্তুরী বলল, আমার কিচ্ছু হয়নি মা, আমি যেমন ছিলাম তেমনি আছি মা। মা কাঁদতে লাগল, আমার ফুলের মত মাইয়াডা, কুত্তা শিয়ালের মুখে দিলাম গো – বিয়া দিতে পারি নাই দেইখা, বগোবান, আমারে তুইল্যা ন্যাও, ন্যাও কতবার কই। আমার আর বাচনের ইচ্ছা নাই। হায় হায় আমার ফুলের মত মাইয়া গো –


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১৯ অক্টোবর ২০১৪ | ১০৩৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • yashodhara raychaudhuri | ***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ১০:২৯88914
  • রুদ্ধশ্বাসে পড়লাম, এবং শেষটা কী হবে এই চিন্তাটা মাথার মধ্যে থেকে গেল শেষ লাইন অব্দিই। এটাই তো বিরাট পাওনা। বিষয়, হ্যাঁ , বিষয় একদম যেরকম পড়তে ইচ্ছে করে।।এই সময়ের এখনকার আমাদের পরিচিত মুখগুলির গল্প। মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত-গরিব নিয়ে অনেক আলোচনাই চলতে পারে, তবে এটা প্রবন্ধ নয় গল্প, তাই কোন প্রশ্ন না তুলে শুধুই উপভোগ করলাম। কিছুই হল না, কিছুই হল না, শরীর নিয়ে... এই চিন্তাটাই তো দারুণ সত্যি, দারুণ ধরাছোঁয়ার মত।
  • cb | ***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ১০:৪২88915
  • লাস্টের প্যারাটা পড়ে "একদিন প্রতিদিন" মনে পড়ে গেল আবার
  • রূপঙ্কর সরকার | ***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ১০:৫০88916
  • যশোধরা দেবী, যাঁরা নিজেরা অসাধারন লেখেন, তাঁদের এমন প্রতিক্রিয়া দেখলে মনে হয় লেখা সার্থক।
  • sosen | ***:*** | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৪৪88917
  • খুব ভালো লাগল লেখাটা। রূপঙ্করবাবুর অন্য লেখাগুলোর থেকে আলাদা। আমি আবার যশোদির থেকে একটু ভিন্নমত পোষণ করে বলবো-না, ঠিক এইরকম মানুষদের চারপাশে দেখিনা, বরং এই যে অ্যান্টিসিপেশন, সেগুলৈ সত্যি হয় বেশি-তাই এটাকে আমার একটা পরাবাস্তবতার গল্প মনে হল, যে রকম বাস্তবও আসলে একরকম ট্রমার মধ্যে ফেলে দেয়, অচেনার ছায়া কিভাবে মানুষকে বিপন্ন করে-কিভাবে আসলে আমাদের পৃথিবীর গতানুগতিকতার দৈন্য সরে গেলেও একটা বিভ্রান্তির জগত ই সৃষ্টি হয়। স্বস্তির নয়।
  • রূপঙ্কর সরকার | ***:*** | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:৪৭88918
  • সোসেন, - বুলস আই। :-)
  • সাঈদা মিমি | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৪:১২88923
  • এই গল্পটা আগে পড়িনি। দারুন লাগলো, দাদা। ভেবেছিলাম আপনার সাম্প্রতিক সব লেখা পড়েছি। কি ভুল! অনবদ্য লেখা, অন্যরকম।
  • রূপঙ্কর সরকার | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৪:৩১88924
  • সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
    রঞ্জন,
    কম লিখছিনা, বরং বেশি লিখছি। শুধু নেটে দিচ্ছিনা। কেবল পাইদি চাইলে এখানে দিই। সামনের জানুয়ারিতেই আমার নতুন বই - 'অপ্রাকৃত'। একটু অন্য রকম গল্প নিয়ে। :-)
  • Santanu | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:১৬88925
  • বা:
  • kumu | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:৩৩88919
  • দেরীতে পড়লাম।
    আমারো তাই মনে হল ,চেনারীতির বাইরের অলীক জগৎ,কিন্তু একটুকু শান্তি নাই।মায়ের একমাত্র সংলাপ গঙ্গাজল আনতেছি ইত্যাদি খুব মর্মস্পর্শী,এক অদ্ভুত শোধনপ্রয়াস।
  • কান্তি | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:৪৯88920
  • আপনার লিখনী সতেজ ও সজাগ থাকুক। পিছনে চাবুকের চাপা আওয়াজ পেলাম।
  • ranjan roy | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০৯:২১88921
  • সোসেনকে ক। রূপংকরদা, ইদানীং এত কম লেখেন কেন?
  • ঝর্না বিশ্বাস | ***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ১০:১৫88922
  • অনেকদিন পর একটা এমন লেখা রুদ্ধশ্বাসে পড়ে গেলাম...কোথাও কোনও খামতি নেই... কি দারুন ধরা পড়েছে চরিত্রগুলো... সাথে একটা অদ্ভুত প্রশ্ন জাগছিল পড়তে পড়তে ...ড্রাইভারের নাম "মোজাম্মেল" যে মেয়েটিকে ভুল প্রমানীত করল...!
    আসলেই আমাদের এই ধর্ম ভেদাভেদে এক অদ্ভুত ধারণা রয়ে গেছে...মানে ওরা মানেই খারাপ কিছু...

    সত্যিই হ্যাটস্‌ অফ টু দ্য রাইটার... খুব ভালো লেখা...
  • dd | ***:*** | ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ০৫:৩২88926
  • বাঃ বাঃ বাঃ
  • Samiran | ***:*** | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫১88927
  • মনে হল যেন কেউ বিশেষ কোন গোষ্ঠীকে তুষ্ট করার প্রয়াসে লিখেছেন।। "তবেঁ গল্প মানেই মিথ্যে" নাম করনের মাধ্যমে লেখক হয়ত সেই দায় থেকে মুক্তি চেয়েছেন।
  • b | ***:*** | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২০88928
  • সীতা কার মাসি টাইপের কমেন্ট দেখে বেশ ভালো লাগলো।
  • ধুরন্ধর ঝাঁট | ***:*** | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪২88930
  • আপনার অন্যতম সেরা লেখা এটা !
  • KAUSIK BHADURI | ***:*** | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০৫:০৬88931
  • নাঃ এই গল্পের শেষ ও "একদিন প্রতিদিনের" শেষ আলাদা। এই গল্পে বিশুদ্ধ সাহিত্যের অবতারণা বেশি। লেখকের মুখ্য উদ্দেশ্য, মনে হয় না,সামাজিক সমস্যায় আলোকপাত। এক অপূর্ব মুন্সিয়ানা কোথা থেকে যে এসে বুনে গেল গল্পটা সেইটাই আশ্চর্য!
  • একক | ***:*** | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০৬:৫৬88932
  • সামগ্রিক অবিশ্বাসের চাপা টেনশন টা ভালো লাগলো | লেজার এন্ট্রির ছুতো থেকে গঙ্গাজল একটা সুতো ।
  • kausik bhaduri | ***:*** | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ১২:৩৬88929
  • বেশ গল্পগল্প বুনোট। স্টোরি লাইনটা আগাগোড়াই ওয়েলমেইনটেইনড
  • Anjan | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ১১:৪১88933
  • রূপঙ্কর দা
    অনেক দিন পরে আপনার লেখা পড়লাম। কেন এত কম লেখেন বলুন তো।
    আপনার লেখা আবার পড়তে চাই খুব তারাতারি।
    অঞ্জন
  • de | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ১২:১৮88934
  • একদম অন্যরকম লেখা - খুব ভালো লাগলো -

    আচ্ছা - সেই ভূতবাংলোর লেখাটা শেষ হয়েছিলো?
  • ্রূপঙ্কর সরকার | ***:*** | ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৭88935
  • বেশ কিছুদিন নেটের বাইরে ছিলাম। তাই মন্তব্যগুলো পড়তে পাইনি।

    সবাইকে ধন্যবাদ।

    অঞ্জন, কম লিখিনা। পাইদি চাইলেই লেখা দিই। আসলে পাইদি চাইছেন কম :P

    de , হ্যাঁ শেষ হয়েছিল তো।
  • I | ***:*** | ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৮88936
  • অসাধারণ!
  • de | ***:*** | ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৮:৩৩88937
  • ভূতবাংলোর লিং টা পাওয়া যাবে প্লিজ? শেষটা মনে পড়ছে না পড়েছি কিনা!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন