এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • পাইয়ে দেবার ঘরানা

    সিদ্ধার্থ বরদারাজন লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৯ মে ২০১৪ | ৮৮১ বার পঠিত
  • নরেন্দ্র মোদী কোন আদর্শের লোক, তাঁর উত্থানের মাধ্যমে কী প্রমাণিত হয়? ২০০২ সালে মুসলিমবিরোধী হত্যাকাণ্ডের যে বোঝা গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর ঘাড়ে চেপে রয়েছে এখনও, তাই নিয়ে এইবারে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ সত্যিই ধর্মীয় বিভেদ বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে হয়। ধর্মগুরুদের মতই তাঁর যে সুবিশাল ভক্তবৃন্দ, সঙ্ঘ পরিবারের মধ্যে এবং দেশের বৃহত্তর মধ্যবিত্ত হিন্দু সমাজের মধ্যে, এটা গড়ে উঠেছে কারণ তিনি এমন একজন নেতা হিসেবে নিজের ইমেজ গড়ে তুলেছেন যিনি "মুসলমানদের সোজা রাস্তা দেখাতে" জানেন। এই সুবিশাল সমর্থনের মাঝে আপাতদৃষ্টিতে খুবই সহজ এবং অর্থবাহী একটা কাজ, তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বে থাকাকালীন গণহত্যার জন্য দুঃখপ্রকাশ করা,  তিনি অনায়াসে প্রত্যাখ্যান করে যেতে পারেন। এটি তাঁর অপারগতা নয়, আসলে তাঁর দার্ঢ্যই ফুটিয়ে তোলে।

    এবং তার পরেও, মোদীর উত্থান এবং আরও উত্থানের পেছনে কারণ কিন্তু তাঁর হিন্দুত্ববাদী ইমেজ বা অ্যাপিল নয়, যেমনটি ধর্মনিরপেক্ষ সমালোচকেরা দেখে থাকেন। মোদীর যেখানে পৌঁছবার ছিল, তিনি আজ সেখানেই পৌঁছেছেন, ক্ষমতার শীর্ষে, দেশ বেশি মাত্রায় কম্যুনাল হয়ে পড়েছে সেই কারণে নয় - কারণটা হল দেশের কর্পোরেট সেক্টর তাদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছে। প্রতিটা ওপিনিয়ন পোল মেপে বের করে ক্ষমতার পথে তিনি কতটা এগোলেন, সেই অনুযায়ী বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের ষাঁড় দৌড়য় গতিবেগ বাড়িয়ে। ফিনান্সিয়াল টাইমসে সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া একটি নিবন্ধে জেমস ক্র্যাবট্রি দেখিয়েছেন, আদানি এন্টারপ্রাইজ কী অসীম গতিতে লাভের সিঁড়ি বেয়ে উঠেছে - এদের শেয়ারের দাম গত এক মাসে ৪৫ শতাংশরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে সেনসেক্সে নথিভুক্ত হয়েছে মাত্র ৭% বৃদ্ধি। এর একটা কারণ এই পত্রিকায় ব্যাখ্যা করেছেন জনৈক ইকুইটি অ্যানালিস্ট, যে নিবেশকারীরা হয় তো আশা করছেন মোদী ক্ষমতায় এলে এই আদানীদের হাতে থাকা বিতর্কিত মুন্দ্রা পোর্টের প্রচুর উন্নতিসাধন হবে, যদিও এর পরিবেশগত ছাড়পত্র নিয়ে জটিলতা আছে। "অতএব বোঝাই যাচ্ছে, একবার মোদী এবং আদানীদের সুনজরে পড়লে এইসব জটিলতা কেটে গিয়ে ছাড়পত্র পেতে মোটেই বেশি সময় লাগতে পারে না," তিনি বলেছেন।

    "ছাড়পত্র" শব্দটা শুনতে নিরীহ মতন, আসলে এর প্রকৃত অর্থ হছে মোদীর ইচ্ছামত ধনের প্রসার যে কোনওদিকে - সমান্তরালভাবে, মাঠে ঘাটে, উল্লম্বভাবে, মাটির ওপরে বা নিচে, এবং পরোক্ষভাবে, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দাবি মেনে নেবার মাধ্যমে, ইনসিওরেন্স এবং খুচরো বিপণন ক্ষেত্রে। আর যদি পরিবেশ সংক্রান্ত নিয়মকানুন, মানুষের জীবনযাত্রা, কৃষিজমি বা কোনও গোষ্ঠীর অস্তিত্ব এই প্রসারণের পথে বাধা সৃষ্টি করে, তা হলে তাদের ছিঁড়েখুঁড়ে উন্নয়ন নিজের রাস্তা করে নেবে, সরকারের প্রত্যক্ষ মদত এবং সহযোগিতায়। কঠোর সিদ্ধান্ত নেবার এই ক্ষমতাই মোদীকে এত জনপ্রিয় একটি আইকন করে তুলেছে ভারতীয়দের কাছে - এবং আন্তর্জাতিকভাবেও, বিশেষত বড় বড় বণিকগোষ্ঠীর কাছে।

    কেন এবং কীভাবে দেশের সেরা বিজনেসম্যানেরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা কংগ্রেসের থেকে মুখ ফিরিয়ে মোদীর সমর্থক হয়ে গেলেন, তা খুঁজতে গেলে ভারতীয় রাজনীতির মূলে বয়ে চলা জীবনের ছন্দের দেখা মেলে। কিন্তু তার সঙ্গে এটাও দেখার বিষয় যে এই একদেশদর্শিতা এক অভূতপূর্ব সংকট তৈরি করেছে, তাৎক্ষণিক পাইয়ে দেবার খেলা ক্রমশ তার স্বাভাবিক সীমানা ছাড়িয়ে ফেলেছে। নিও-লিবারাল পলিসি এবং লাইসেন্স রাজ অবসানের ফলে কম্পানিগুলো যে সুবিধে ভোগ করতে শুরু করেছিল, এবং সরকারের যে লাভ হবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল কোম্পানিগুলোর থেকে, তা ক্রমশ বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। মাদ্রাজ স্কুল অফ ইকোনমিক্‌সের এন এস সিদ্ধার্থনের মতে, বর্তমান ব্যবসায়িক পরিবেশে মুনাফা ম্যানুফ্যাকচারিং-এর মাধ্যমে ঘটছে না, ঘটছে সরকারের মদতে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন করে। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের প্রকাশিত রিপোর্টের কিছু অংশ তুলে ধরে তিনি দেখিয়েছেন, যদিও কয়লা আর টুজি স্পেকট্রামের অ্যালোকেশনের দুর্নীতিতে কোম্পানিগুলোর প্রচুর লাভ হয়েছে, আসলে কিন্তু লাভ হয়েছে কোম্পানিগুলোর "প্রেফারেন্সিয়াল অ্যালটমেন্টে"র ফলে, যে ধরণের অ্যালটমেন্ট না হলে হয় তো কোম্পানিগুলো সাদাসিধাভাবেই ব্যবসা করতে থাকত - বড় কোনও লাভের মুখ তারা দেখত না। এই প্রাকৃতিক সম্পদ কিন্তু শুধুই কয়লা বা টুজি স্পেকট্রামেই সীমাবদ্ধ নয়, এমন কি জল আর জমিও এর মধ্যে আছে। আর এই সবের মধ্যে উঠে আসছে মোদী-বিবৃত নতুন কর্পোরেট ভারতের পোস্টার বয় গৌতম আদানীর মুখ, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর উত্থানের সাথে সাথে যিনি অবিলম্বেই দেশের সর্বাধিক আলোচিত বিজনেসম্যান হিসেবে পরিগণিত হতে চলেছেন।

    জানুয়ারি ২০০৯-এ অনুষ্ঠিত "ভাইব্র্যান্ট গুজরাত"-এ দেশের দুই মুখ্য বিজনেসম্যান, অনিল আম্বানী, যিনি তখন মুকেশ আম্বানীর সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম নিয়ে ধুন্ধুমার যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন, এবং সুনীল মিত্তল, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য মোদীর সমর্থনে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। "নরেন্দ্রভাই গুজরাতের প্রভূত উন্নতি করেছেন এবং (কল্পনা করুন) তিনি দেশের দায়িত্ব পেলে কী করে ফেলবেন।" অনিল আম্বানী বলেন, "গুজরাত তাঁর নেতৃত্বে সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করেছে, একবার কল্পনা করুন ভারত কোথায় পৌঁছে যাবে যদি উনি দেশ চালনার দায়িত্ব পান ... তাঁর মতন লোকই দেশের পরবর্তী নেতা হবার যোগ্য।" ভারতী গ্রুপের প্রধান সুনীল মিত্তল বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মোদী গুজরাতের সিইও হিসেবে পরিচিত, কিন্তু আসলে তিনি সিইও নন। তিনি কোনও কোম্পানি চালাচ্ছেন না, তিনি একটি রাজ্য চালাচ্ছেন, এবং তিনি দেশ চালাবারও ক্ষমতা রাখেন।" টাটাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তিনিও মোদীর প্রশংসা করে বলেন, "আমার মতে গুজরাতের মত রাজ্য আর একটিও নেই। মোদীর নেতৃত্বে গুজরাত অন্য যে কোনও রাজ্যের তুলনায় এ দেশের মাথা এবং কাঁধস্বরূপ।" আবারও "ছাড়পত্রের" সহজলভ্যতা সেখানে প্রশংসিত হল। ইকোনমিক টাইমস লিখল, "সাধারণত কারখানার জন্য জমির ছাড়পত্র পেতে, মিস্টার টাটা জানান, যে কোনও রাজ্যের লাগে ৯০ থেকে ১৮০ দিন। গুজরাতে আমি ন্যানো কারখানার জন্য জমি পেয়েছি মাত্র দু'দিনে।"

    এর দু'বছর পরে, ২০১১র ভাইব্র্যান্ট গুজরাত সম্মেলনে একই রকমের প্রশস্তিবাক্য শোনা গেল, এইবার মুকেশ আম্বানীর মুখে, "গুজরাত এক সোনার বাতিদানের মত ভাস্বর, এবং এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব নরেন্দ্র মোদীর মত একজন ভিশনারি, এফেক্টিভ এবং প্যাশনেট নেতার। আমরা এমন একজন বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গী এবং কঠোর সিদ্ধান্তবাদী নেতা পেয়েছি যিনি স্বপ্নকে সাকার করবার ক্ষমতা রাখেন।" ২০১৩তে আবার অনিল আম্বানীর পালা এল, "অনিল আম্বানী মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাজার রাজা আখ্যা দিলেন", ইকোনমিকস টাইমস লিখল, "এবং উপস্থিত দর্শকবৃন্দকে অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রীকে স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিয়ে সম্মান জানাতে। জনতা সানন্দে তা মেনে নিল"। প্রশস্তিগায়কদের মধ্যে আরও একজন উঁচুদরের বিজনেসম্যান ছিলেন। যদি সেখানে "মোদী ফর পিএম" শ্লোগান শোনা না গিয়ে থাকে, তা হলে বুঝে নিতে হবে, শ্লোগান দেবার দরকার ছিল না, কর্পোরেট ইন্ডিয়া তাদের পছন্দের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই একমত হয়ে গেছিল।

    পেছনের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যাবে এই যে রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক গলাগলির এমন নিদর্শন, এর শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে, নীরা রাডিয়া টেপ কেলেঙ্কারি দিয়ে। টুজি স্পেকট্রাম নিয়ে সিএজির নাটকীয় পর্দাফাঁস সবার সামনে তুলে ধরল কীভাবে বড় বিজনেসম্যান, রাজনীতিক, পলিসি-মেকার এবং গণমাধ্যম একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে। সুপ্রিম কোর্ট সিএজির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রাকৃতিক শক্তির লুঠতরাজ বন্ধ করতে সক্রিয় হবার ফলে, আপাতত সহজ "ছাড়পত্র" মেলার দিন শেষ হয়ে এসেছে। এই সময় থেকেই কর্পোরেট ইন্ডিয়া মনমোহন সরকারকে দোষারোপ করে এসেছে - আগে যার থেকে তারা বেশিমাত্রায় উপকৃত হয়েছিল - এখন তাকে বিদ্ধ করল পলিসি-স্থবিরতা, সিদ্ধান্তহীনতা এবং অনৈতিকতার দোষে।

    যেহেতু রাডিয়া টেপে তাঁর নাম এসেছিল, স্বাভাবিকভাবেই এই দলে রতন টাটাকে নেতৃত্ব দিতে হয়েছিল, চেতাবনি দিতে হয়েছিল - ভারত ক্রমে "ব্যানানা রিপাবলিক" হয়ে উঠছে। ভারতের অন্যতম সুবৃহৎ সংস্থাগুচ্ছের একচ্ছত্র অধিপতি সরকারের দিকে আঙুল তুলে বললেন, সরকার ইন্ডাস্ট্রিকে অনুকূল পরিবেশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছিলেন দীপক পারেখ, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ক্ষমতাশালী প্রধান, বলেছিলেন জমি অধিগ্রহণ এবং খনি আবণ্টনের মত ছাড়পত্রগুলি পাওয়া কঠিন হয়ে যাবার ফলে দেশের মূলধনের জোগান কমে যাচ্ছে। "যে কোনও বিজনেসম্যানের সঙ্গে কথা বলে দেখুন," টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট থেকে, "একটা কথা তিনি বলবেনই যে, 'সরকার স্থবির হয়ে গেছে। কূটনীতিক, ব্যাঙ্কার, সবাইই এখন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছে।' এর পরেই তিনি বলবেনঃ 'আমরা এখন আর ভারতে নয়, ভারতের বাইরে লগ্নি করতে ইচ্ছুক'।" ব্যবসায়ীবান্ধব কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শাদর পওয়ারও এই কোরাসে গলা মেলান।

    এটা ঘটনা যে এর পর থেকে ভারতের বাইরে ভারতীয় লগ্নি বেড়েছে, ২০০৯-১০-এর মন্দার সময়টুকু বাদ দিয়ে। কোনও কোম্পানী বিদেশে লগ্নি করে কিছু কারণের ভিত্তিতে। কেউ লগ্নি করে কয়লা বা তেল পাবার জন্য যা তার ভারতীয় ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখবে, কেউ আধুনিকতর প্রযুক্তির ফায়দা তোলার জন্য করে। ভারতীয় বাজারের সীমাবদ্ধতাও আরেকটা কারণ। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর হারুন আর খানের মতে, এক ধরণের ধারণা প্রচলিত আছে যে বিদেশে নিবেশ ঘটানো হয় দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দেশীয় নিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য কিন্তু দায়ী আসলে দেশের পলিসি এবং পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা।" কিন্তু দেশীয় নিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবার আরও জোরালো কারণ হচ্ছে জোগানের অপ্রতুলতা, এবং দেশজ চাহিদা, যা আসলে জনতার জমা খরচার ভারসাম্যের ওপর নির্ভর করে, নির্ভর করে নিবেশকারীর কনফিডেন্সের ওপর, এবং অর্থের অসম বণ্টন জনতার ক্রয়ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, যা দেশে নিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এক বিরাট ভূমিকা নেয়।

    মনমোহন সরকারের প্রথম দফায়, যতক্ষণ ভারতীয় অর্থনীতি বেশ উঁচু বৃদ্ধিমাত্রা রেখে চলছিল, বড় বড় ভারতীয় কোম্পানিগুলো একইসঙ্গে "নর্মাল" লাভ এবং "লোভনীয় মুনাফা" উপভোগ করে চলেছিল। কিন্তু ২০০৮এ আসা বিশ্বজোড়া অর্থনৈতিক মন্দা, সুদের হারে হ্রাস, রাডিয়াগেট নিয়ে সিএজির বিস্ফোরক উন্মোচন, জনতার অভিমত বদল, এবং ২০০৯ থেকে বেশিমাত্রায় জাগরূক আইনপদ্ধতি মিলে এই লাভজনক রেভিনিউ মডেলকে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করে। সেবি কর্তৃক সাহারা গ্রুপের কেচ্ছা উন্মোচন এবং সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক সাহারাশ্রী সুব্রত রায়ের জেল, আদালত অবমাননার শাস্তিতে, দেখিয়ে দিচ্ছে বড় ব্যবসায়ীদের জন্য লাভের পথ শীরে ধীরে বন্ধুর হচ্ছে। পরিস্থিতির সামাল দিতে মনমোহন সিং এবং অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম ব্যবসায়ী মহলে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের দিকে খেয়াল রাখছিলেন, এবং ইনভেস্টমেন্টের জন্য ক্যাবিনেট কমিটি তৈরি করে, পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস, পরিবেশ এবং বনমন্ত্রকের মত প্রধান মন্ত্রকগুলিতে কিছু ব্যবসাবান্ধব বদল এনে অসন্তোষ কমাবার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কর্পোরেট ইন্ডিয়ার বরফ তাতে গলে নি।

    সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর নাম যে পরিকল্পিতভাবে এবং নিশ্চিত পদ্ধতিতে জনমানসে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে, এটা এখন আর তত আশ্চর্য করে না। বড় মিডিয়ারাও, মালিক এবং কর্পোরেট স্পনসরদের সহায়তায়, মোদীকে তার নিশ্চিত লক্ষ্যের দিকে নর্মালাইজেশনের পথে নিয়ে যাবার ব্রতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মাত্র ন বছর আগে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং দাঙ্গা থামাতে তাঁর ব্যর্থতা সর্বত্র সমালোচিত হয়েছিল, যার প্রভাবে ইউপিএ সরকার ২০০৪ সালে এনডিএ-কে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। সমস্যাটা ছিল মোদী সম্বন্ধে এই গণমানসিকতা কীভাবে শহুরে মধ্যবিত্ত জনতার মন থেকে মুছে ফেলা যায় এবং ভারতের সমস্ত সমস্যার সমাধান একমাত্র মোদীর নেতৃত্বেই হতে পারে - এই ধারণা গেঁথে দেওয়া যায়। সেই জন্যেই "গুজরাত মডেল" নামের একটা মিথ-এর অবতারণা করা হয়। "আজ লোকে গুজরাতে চায়না মডেলে উন্নতির কথা বলছে", আনন্দ মাহিন্দ্রা, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার কর্ণধার বললেন ২০১৩ ভাইব্র্যান্ট গুজরাত সামিটে, "কিন্তু সেদিন দূরে নেই যখন লোকে গুজরাত মডেলে চীনে উন্নতির কথা বলবে।"

    মোদীর গুজরাতের তথাকথিত উন্নতির ফানুসের পেছনে লুকিয়ে থাকা সংখ্যাতত্ত্বের কারচুপি নিয়ে অনেক লেখা হয়ে গেছে এতদিনে। কিন্তু তাঁদের নেতাকে এইভাবে ভূয়সী প্রশংসায় ভূষিত করে কর্পোরেট ইন্ডিয়ার মুখেরা আসলে একটা ব্যাপারকেই নিশ্চিত করে দিচ্ছেনঃ মোদীর সবচেয়ে বেশি যে ব্যাপারটাকে তাঁরা পছন্দ করেন, সেটা হল "চাইনিজ মডেল"এর প্রতি তাঁর ভালোবাসা। কী এই চাইনিজ মডেল? এটা হচ্ছে সেই মডেল যেখানে জমি, খনি এবং পরিবেশ অধিগ্রহণ করার ছাড়পত্র জোগাড় করা জাস্ট কোনও ব্যাপারই নয়। এ সেই মডেল যেখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম সংক্রান্ত অপ্রিয় প্রশ্ন কখনও তোলাই হয় না, উত্তর মেলা তো পরের কথা। যেখানে জনতার ক্রমবর্ধমান মত গড়ে উঠছে দেশ থেকে ভ্রষ্টাচার নির্মূল করার উদ্দেশ্যে যা এখন কংগ্রেস দলের সমার্থক হয়ে উঠেছে, সেখানে কর্পোরেট ইন্ডিয়া সেই অর্থে এই ভ্রষ্টাচার নির্মূল করতে সেই অর্থে উৎসাহীই নয়।

    পাইয়ে দেওয়া এবং সুবিধার ভোগদখল এখন বড় বড় কোম্পানিদের ব্যবসা করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হয়ে দাঁড়িয়েছে - এক ধরণের "ভারতীয় মোড়কে মোড়া ধনতন্ত্র" - এবং তারা বড় আশা করে মোদীর দিকে তাকিয়ে আছে, তিনি এই মোড়কটিকে স্বীকৃতি দেবেন, দৃঢ়, স্থায়ী এবং নিশ্চিত পদ্ধতিতে। তারা এমনই একজন নেতা চায় যিনি ব্যবসার মুনাফার পথে মাথা তুলে দাঁড়ানো যে কোনও বিতর্ক, যে কোনও আইনি বাধা নিজেই ম্যানেজ করবেন, যে কোনও সময়ে। তাঁর অন্ধ এবং ধর্মান্ধ ভক্তের দল তাঁর দল সবসময়েই ভারি রাখবে, তাঁর বশে থাকবে; যেভাবে বশ করতে তাঁর পূর্বসূরী অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং লালকৃষ্ণ আদবানিও পারেন নি। নরেন্দ্র মোদী তাঁদের থেকে অনেক বেশি দৃঢ়চেতা এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তি। কর্পোরেট ইন্ডিয়া তাঁর ওপর নির্ভর করতে পারে, যে কোনও সমস্যার অভিমুখ তিনি নিরাপদ দিকে ঘুরিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখেন।

    পরিশিষ্টঃ এই লেখা যখন ছাপা হচ্ছিল, তখনই খবর আসে, এন কে সিং, কূটনীতিক-অধুনা-রাজনীতিক, যাঁর গলা রাডিয়া টেপে শোনা গেছিল - কোনও এক সংসদীয় বিতর্কে তিনি রিলায়েন্সের সপক্ষে আলোচনা ঘুরিয়ে দিচ্ছিলেন, তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন।

    (সিদ্ধার্থ বরদারাজন, দ্য হিন্দুর পূর্বতন সম্পাদক, সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ক্রিটিকাল থিওরি, নিউ দিল্লির সিনিয়র ফেলো)


    মূল লেখাঃ http://svaradarajan.com/2014/03/27/the-cult-of-cronyism/
    অনুবাদঃ শমীক মুখোপাধ্যায়


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৯ মে ২০১৪ | ৮৮১ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    অদ-ভূত!.. - Kasturi Das
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Amitava | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ০৭:৫৩87882
  • অনেক so called ইন্টেলেকচুয়াল দের ভাতের হাড়ি নরেন্দ্র মোদী কে গালাগালি দিয়েই চড়ে।
  • সিকি | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ০৮:০৯87883
  • চড়ুক না, তাতে অসুবিধে কী হল? :)
  • nmo | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ০৯:৩০87884
  • সব জলের মত ক্লিয়ার । কর্পোরেট পায়সা দিয়ে মোদীর পক্ষে হওয়া তুলিছে। ভোট ও কি দিচ্ছে। নাকি জনগণ কে ও পায়সা দেওয়া হয়েছে । আমি কিন্তু পায়নি। আমারটা কে মারলো ? তদন্তর দাবি করছি।
  • তাপস | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ০৯:৩৩87885
  • প্রতিক্রিয়া চোখে আঙুল দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে, সময়োপযোগিতা ।
  • de | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ০৯:৪৮87886
  • সুন্দর অনুবাদ - খুবই প্রাসঙ্গিক আলোচনা!
  • এমেম | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ১০:৩৬87887
  • অনুবাদ ভালো হয়েছে।

    এই জায়গাটা পরিষ্কার হল না -- 'তারা এমনই একজন নেতা চায় যিনি ব্যবসার মুনাফার পথে মাথা তুলে দাঁড়ানো যে কোনও বিতর্ক, যে কোনও আইনি বাধা নিজেই ম্যানেজ করবেন, যে কোনও সময়ে।'

    কী করে? দৃঢ়চেতা এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তি বলে?
  • Ekak | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ১০:৫৮87888
  • অনেক প্রশ্ন পাচ্ছে কিন্তু করে লাভ কতটা বুঝছিনা । গেস্ট রাইটার দের লেখা তে এই সমস্যা । এমন একটা ভার্ভারিক্কি "কাল্ত অফ ক্রোনিঈস্ম " নাম দিয়ে লেখাটা সেই থোর-বড়ি তে কেন গেল সেটা তো প্রথম প্রশ্ন ।
  • সিকি | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ১১:০৯87889
  • অমিত শাহ বা মোদী কীভাবে সিট বা সিআইডির হাত থেকে ক্লিনচিট পেল? দৃঢ়চেতা এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে?

    ব্ল্যাকমানি মামলায় সনিয়া গান্ধি, চিদু, এদের নাম আসে না কেন?

    প্রশ্নগুলো সহজ, আর উত্তরও তো জানা।
  • সিকি | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ১১:১২87890
  • গেস্ট রাইটার ঠিক নয়। নিজের ব্লগেই লিখেছেন, সেটাকে অনুবাদ করা হয়েছে অনুমতি নিয়ে।
  • sm | ***:*** | ০৮ মে ২০১৪ ১১:২২87891
  • শুনেছি চীন দেশে অনেক দুর্নীতি। বড় বড় বিলিয়ন পতির সম্খ্যা প্রচুর । এরাও প্রচুর দু নম্বরী করে। কিভাবে করে? টাকা পয়সা রাখে কোথায়? সেই সুইস ব্যাঙ্ক, আর ট্যাক্স ফাকি দেওয়া দ্বীপ গুলোয়? একটা আদ্যপান্তু কমিউনিস্ট দেশে কিভাবে চুরি করে বা হয়? ভারতের সঙ্গে মিল বা অমিল কোথায়?
  • KOUSHIK BUBAI | ***:*** | ০৯ মে ২০১৪ ১২:২৫87892
  • ASODHARON FOLLOW UP...kintu madam ekta soja bisoy jodi r-o soja kori..kore vabi...hotodoridro sadharon manush ba middle class manush jara tara either konokromey benche achhe or lorai kore chaliye jachhe ..tara sobai ektu valo thakr SWAPNO dekhe.er modhye kono AONYAI nai..eai SWAPNO tai Nrendra Modi Uske diyechhen..besh ekta Biswasjogy jaigai theke. Itai tar Karishma. R ekta baypar apner sob kotha mene niye-U eta bola jete pare J Gujrat-er Grass root level-a , Gram-a Gram-a Modi onek notun & Ovinobo prokolpo chalu korechhen , for details pls consul AnandaBazarPatrika of 4th or 5th May Bibek DebRoy likhechhen.
  • aranya | ***:*** | ১২ মে ২০১৪ ০৫:৫৬87893
  • ভাল লাগল লেখাটা। অনুবাদক হিসাবে শমীক-কে কুডোস
  • PM | ***:*** | ১২ মে ২০১৪ ০৭:১০87894
  • আমি ভাবলুম আবার কেউ পাই কে নিয়ে টই খুলল ঃ) বক্তব্য আর অনুবাদ দুই ভালো
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন