রশ্মি কেঁপে ওঠে।।
(১)
~~~~
সবাই বলেছে, “সামনে এগিয়ে যাও”
পথের বাঁকে বাঁকে চিকণ পাথর
কেমন সুন্দর ঝোরা পুতুল খেলে
জল আনে, কাপড় আনে
কেমন সুন্দর তার তুলতুলে মুখ, বড় বড় চোখ
পাথরের গা ধুয়ে দ্যায়
পাথরের গা মুছে দ্যায়
এগোতে এগোতে বাড়ির পাশে থামি
আঙুল ছুঁতেই খুলে যায় দ্বার
সিঁড়িগুলি গুণে গুণে ছাদে এসে উঠি
সেখানে অখন্ড প্রসারতা খেলে, পোকাদের জমায়েত হয়
দূর দূর গাছ থেকে পাতারাও আসে
এসব কীসের প্রস্তাব ভাবতে ভাবতে
পূবাকাশে ডানা মেলে চাঁদ
যেন প্রার্থনা সভা
যেন দড়ি ছিঁড়ে নেমে আসে ঝুলন্ত আকাশ
পছন্দের তারাটির জন্য আমরা গাই
পছন্দের উজ্জ্বলতার জন্য আমরা প্রার্থনা করি, তবু
কারো কারো মনে পড়ে যায়
সিড়ির নিচের ঘরে আসবাবগুলি
আমাদের ফিরে আসার অপেক্ষায়
সময় কাটায়
(২)
~~~~
তোমাকে তো চলে যেতে হয়
এক উঠোনের থেকে আরেক উঠোনে
তোমার শিশুসুলভ পদছাপ মিলিয়ে যাওয়ার ক্ষণে
আমগাছের ছায়া দিয়ে আমি ছুটে যাই
আমগাছের নিচে তুমি সামান্য দাঁড়িয়ে
আমাকে সান্ত্বনা দাও
একটা লালনীল আলো জ্বলা গোলক
একটা লালঝুঁটি মোরগ, এসবই সান্ত্বনা
বাড়ির কাঁদোলে ফিরে এসে দেখি
দোপাটি গাছ খুব মাতামাতি করছে
তার মাথা উপচে উঠছে ফুলে
তার পাশে আলোর গোলক ঘুরিয়ে দিই
তার নিচে মোরগ ছেড়ে দিই
দোপাটি গাছের নিচে কখনো মোরগ ডাকলে বুঝি
দূরে বহুদূরে আনন্দ প্রভাতে
তুমি পুনর্বার কোনো উঠোন পেরিয়ে যাচ্ছ
(৩)
~~~~
চারদিকে মন্ত্রোচ্চারণ হচ্ছে
অথচ তোমার কান্না থামে না
তুমি নক্ষত্রপুঞ্জের ওপর রাগ কর
তুমি মন্ত্রোচ্চারণের শব্দে ভয় পাও
কিন্তু তোমার ঝুমঝুমি কেউ কেড়ে নেয়নি
তোমার ঝুমঝুমি প্রজাপতি হয়ে
গাছেদের ফুল মিলিয়ে দেয়, রামধনু হয়ে
মাটি ও আকাশের মধ্যে সেতু গড়ে তোলে
নিজেকে ক্রমশ ভেঙে ক্ষুধার্ত পিঁপড়ের মুখে এগিয়ে দ্যায় আর
তার বাঁধা সুতো তোমার মুঠোর মধ্যে
ছিঁড়ে থেকে যায়
(৪)
~~~~
দীর্ঘ বিরতির পরে, ঝরে পড়া পাতাদের স্তূপে
আমাদের দেহ জেগে ওঠে ফের
আমাদের জ্ঞান ফিরে আসে
যাবতীয় সম্পর্কের স্মৃতি
পরস্পরের দিকে হাত বাড়িয়েছি, তবু এখন শীতের কালে
খেলা আর জমে না সেভাবে
মাঠের আলের পাশে বড় ক্লান্ত রোদ
ঝুঁকে পড়ে দুজনের মুখের উপরে
আমরা সংসর্গহীন, স্থির শুয়ে দেখি
আমাদের সেদিনের পুরানো ঝুমঝুমি
কিশলয় খুঁজে ফেরে
গাছের শাখার বুকে