‘স্টোরি’র খোঁজে
খুব সকাল। ট্রেনের লেডিজ কামরা। ভিড়ে ভিড়াক্কার। ভিড়ের ফাঁক ফোঁকরে ট্রেনের মেঝেয় বসেই ঘুমে ঢুলে পড়ছে কেউ কেউ। পুরনো রঙচটা শাড়ির প্রান্ত কোমরে জড়ানো। এখানে ওখানে রাখা বড় বড় ঝুড়ি, কাঁচা কলাপাতায় ঢাকা। এইসব মলিন শাড়ির আশেপাশে উজ্জ্বল মেয়েরাও। কেউ যাবে কোনও অফিসে, কেউ থলে হাতে ছুটবে ‘কাজের বাড়ি’, কেউ ঝুড়ি নিয়ে বসবে ব্যস্ত রাস্তার পাশে।
ট্রেন ছুটছে শিয়ালদা অভিমুখে।
একটা সম্মিলিত গুনগুণ কানে ধাক্কা দিচ্ছে। মাঝে মাঝে ট্রেনের হুইসল আর গতির শব্দও। কোনও স্টেশন এলে হুড়মুড় করে নামা ও ওঠা চলছে। বালিগঞ্জ আসতেই ভিড় খানিক ফাঁকা হয়।
সবাইকে নিঃশব্দে লক্ষ্য করছি। ভাবছি, কে হতে পারেন ‘স্টোরি’র চরিত্র। কে হতে পারেন সেই মেয়ে যাকে নির্বাচন বিষয়ে জিজ্ঞেস করা যায়।
গাছকোমর শাড়ি পরা এক মহিলা বেশ বড় একটা ঝুড়ির কাছে এসে দাঁড়ান। পাশে আরেকটা ছোট ঝুড়ি। হলদে পাড়, লাল-কালো বেবি প্রিন্ট মলিন শাড়ির ওপর কোমরে বাঁধা রঙচটা গোলাপি গামছা। লাল ব্লাউজের হাতার সেলাই অল্প খুলে গেছে। দুহাতে দুই ক্ষয়াটে সোনালী মেটাল চুড়ি। বাঁ হাতের বাজুতে বাঁধা রঙচটা ধাগা। মাথার চুল উল্টে ছোট্ট খোঁপা। অবাধ্য কুচো চুল কপাল ও কানের প্রান্তে ছড়িয়ে। তাঁকেই জিজ্ঞেস করা গেল, “দিদি, ঝুড়ি আপনার?”
“হ্যাঁ।”
“কী আছে?”
“পেয়ারা, কলা।”
“কিনে আনছেন?”
“হ্যাঁ গো। বারইপুর থেকে।”
“বেচবেন কোথায়?”
“বঙ্গবাসী কলেজের ওদিকে।”
“খুব ভারি! পঞ্চাশ কেজি তো হবেই?”
“তোমার ভারি লাগছে। আমার লাগে না।”
“আপনার সঙ্গে যাওয়া যাবে?”
“কী বলে মেয়ে! কী করতে?”
“আপনার সমস্যা করবো না। শুধু কথা বলবো।”
“অত কথা কইবার ফুরসৎ নাই।”
“আচ্ছা, কথা বলবো না। শুধু দেখবো। সঙ্গে যাই?”
ছোট ঝুড়ি থেকে কলার কাঁদি তুলে বড় ঝুড়ির ওপরে সাজাচ্ছেন মহিলা।
ট্রেন ছুটছে। ধুলোবালি নিয়ে ঢুকে পড়ছে হাওয়ার ঝাপটা। চুপচাপ তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে আছি সম্মতির প্রতিক্ষায়। চুপ করে কাজ করছেন তিনি। তারপরেও দাঁড়িয়ে আছি দেখে বিরক্ত হয়ে তাকালেন, “আমার পিছনে লাগিছো ক্যান? খেটি খাওয়া মানুষ, কাজে যাই...”
মোক্ষম যুক্তি। নিজেদের কাজের জায়গায় আমরা কী অনাহুত কাউকে প্রবেশ করতে দিই? চুপসে গেলাম। মহিলা বিরক্ত হয়ে বকেই চলেছেন। দু’তিনজন গাছকোমর-শাড়ি সহকর্মী তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। একজন ভদ্রমহিলা সিটে বসেছিলেন। তাঁকে ডেকে আনলেন, “খেটি খাওয়া মানুষের পিছনে লাগিছে। তুমি কথা কও। আমি অত কথা কইতে পারবোনি।”
ভদ্রমহিলা সিট ছেড়ে উঠে এলেন, “কী হয়েছে দিদি?”
“ওনাকে নিয়ে লিখবো ভাবছিলাম। রাজি না হলে তো...”
ভদ্রমহিলা কিছু উত্তর না দিয়ে বিরক্ত ও বকবক করে যাওয়া মহিলাকে বলেন, “তুই চুপ কর না।”
শিয়ালদা স্টেশন। মহিলা ঝুড়ি টানতে টানতে গেটের কাছে নিয়ে যান। কোমর থেকে গামছা খুলে পাকিয়ে মাথায় রাখেন। ঝুড়ি তোলেন গামছার ওপর। সাহায্য করেন সহকর্মীরা।
কুবুদ্ধি হানা দেয়। চুপ করে ছবি তুলে নিই? না থাক। ব্যক্তি সম্মতি ছাড়া ছবি তোলা কি ঠিক? ব্যক্তি পরিসরে হানা দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী নয়?
ভোটের কথা আর তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় না। ঝুড়ি মাথায় প্রবল ভিড়ের ভেতর দূরে চলে যেতে থাকেন মহিলা। ভোট আসে, ভোট যায়। ওই ভারি ঝুড়ি চেপে বসে থাকে তাঁর জীবনে। মান্য সমাজ বলে, বোঝা বইবার শারীরিক ক্ষমতা নেই মেয়েদের। সেকথা মনে করে হাসি। ভিড় স্টেশনে আমিও এগোই ‘স্টোরি’র খোঁজে।
কোলে মার্কেটে কয়েকজন
দৌড়। ধাক্কাধাক্কি। তার মধ্যেই জিনিসপত্র ভর্তি ভ্যান নিয়ে চেঁচিয়ে লোকজনকে সতর্ক করতে করতে ছুটে আসছে চালক। মুহূর্তে ভিড় সরে জায়গা করে দিচ্ছে। ভ্যানের পিছনে দৌড়চ্ছেন লুঙি পরা লোক। নেতাজীর আবক্ষ মূর্তির চারপাশ ঘেরা রেলিং। কতকগুলো কিসব ভর্তি বস্তা রেলিঙের ভেতর। বস্তায় শ্বেত পাথরের ফলক ঢাকা পড়ে গেছে। লাল প্রেক্ষাপটে সাদা মূর্তির মাথার ওপর অর্ধ গোলাকারে লেখা, ‘জয়তু নেতাজী’। মূর্তির ডানদিকে সেই অতি ব্যবহৃত বানী, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের...’। সেই স্বাধীনতা কি সত্যিই এলো? মূর্তির চাতালের কোণায় দাঁড়িয়ে ভাবতে ভাবতে দেখলাম তাঁকে।
পেঁপেওয়ালী
দুই ঝুড়ি ভর্তি পাকা পেঁপে। মাথায় ঘোমটা এক মহিলা। ঘোমটার দু’প্রান্ত কানের পিছনে প্যাঁচানো। ছ্যাঁতলা পড়া নীলচে হাওয়াই চপ্পল। পায়ের নখে কালচে ময়লা। হলদেটে সায়া ছাড়িয়ে বাঙালি স্টাইলে পরা শাড়ি খানিকটা উঠে গেছে। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে তাঁর দিকে এগোলাম।
“দিদি, একটু সময় দেবেন?”
“হ্যাঁ, বল।”
“আপনার কাজ নিয়ে লিখতে চাই। আপনার কথা জানতে পারি?”
“বল, কী জানবে?”
“আপনার নাম?”
“মমতাজ বিবি।”
“কোথা থেকে আসেন?”
“দক্ষিণ বারাসাত। গ্রাম মাসটিকারি।”
“কতদিন আসছেন?”
“আঠেরো বছর।”
“অল্প বয়সে শুরু করেছেন?”
“হ্যাঁ।”
“বিয়ের আগে?”
“না। বিয়ের পর। আমার ছেলের বয়স আঠেরো।”
‘আপনার?’
“আমার... চল্লিশের মতো হবে।”
“এখানে কখন আসেন?”
“রাত দশটায়। সকাল দশটায় যাই। রাত আটটায় বাড়ি থেকে বার হই। বাড়ি যেতে দুপুর বারোটা।”
“ঘুমান কখন?”
“বাড়ি গিয়ে।”
“রাতে পেঁপে কেনা হয়ে গেলে এখানে ঘুমান?”
“ঘুমানোর জায়গা থাকে না গো। লোকজন, মালপত্রে ভর্তি হয়ে যায়।”
“কটা থেকে বাজার বসে?”
“রাত দশটা থেকে।”
“ব্যবসা যখন শুরু করেন বাড়ির লোকেরা কিছু বলেনি? আপনার স্বামী?”
“না না। নিজে খেটে খাই। কী বলবে?”
“এই যে সারারাত থাকেন, কী খান?”
“চা, বিস্কুট।”
“আর কিছু খান?”
“না।”
“খিদে পায়?”
“না। বাড়ি গিয়ে খাই।”
“আর বাথরুম?”
“এখানে আছে। টাকা দিতে হয়।”
“দিনে কত আয় হয় বলা যাবে?”
“ওই কোনদিন চারশ/পাঁচশ, কোনদিন তিনশ। এখন বাজার খারাপ।”
“ভোট দেন?”
“হ্যাঁ।”
“ভোট দিয়ে কিছু বদল হল?”
“না না, যে কার সেই!”
“কেন ভোট দেন?”
“বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চারা বড় হয়েছে। কিছু যদি সুবিধা হয়।”
“যে নেতাকে ভোট দেবেন তাঁর কাছে কী আশা করবেন?”
“ব্যবসাটা যাতে বড় হয়।”
“ভাবি, ইন্টারভিউ হচ্ছে?”, পাশ দিয়ে ব্যস্ত হয়ে যেতে যেতে এক পুরুষ বলেন।
শব্দ করে হেসে ওঠেন ‘ভাবি’। ভ্যানের হর্ন, গাড়ির শব্দ, লোকেদের কোলাহলের ভেতর হারিয়ে যায় তাঁর হাসি। এভাবেই হয়তো তাঁর ‘আশা’ও যাবে হারিয়ে।
তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে এগিয়ে চলি।
ট্রাকের নীচে চারজন।
কোলে মার্কেট ঘুরতে ঘুরতে থমকে দাঁড়াই। এক বিশাল ট্রাকের নীচে চারজন। সামনে ফাটাফুটি সব্জি। ট্রাকের নীচে ঝোলানো মেটাল বালতি। মাথা ঠোক্কর খেতে পারে যে কোনও অসতর্ক মুহূর্তে।
কাছে যেতেই ফোঁকলা দাঁতে একগাল হেসে উঠলেন একজন। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কা কেটে গেল। উদ্দেশ্য বলতেই চার মহিলা রাজি। সমনা মণ্ডল (৫০), মরিয়ম গাজি (৪৫), কানন সর্দার (৫০), ভগবতী হালদার (৪৫)। ক্যানিং-এর বেলাগাজি, চব্বিশ পরগণার তেঁতুলবেড়িয়া, দক্ষিণ বারাসাতের করাবি, চম্পাহাটির সোলগোলিয়া থেকে আসেন। ফেটে যাওয়া, খানিক নষ্ট হওয়া সব্জি কুড়িয়ে বিক্রি করেন (এঁদের ভাষায় ‘খিঁচ মাল’)। এখন আগের মতো সব্জি কুড়াতেও দেয় না ব্যবসায়ীরা। কিছু টাকার বিনিময়ে এইরকম সব্জিও বিক্রি হয়। অগত্যা কিনতেই হয়।
ট্রাকটি ভিন রাজ্য থেকে বয়ে আনে বরফের মাছ। আনলোড করে ছাড়ার সময় হলে মালপত্র গুটিয়ে সরে যান মেয়েরা। ট্রাক চলে গেলে আবার বসেন। প্রত্যেকের আয় দিনে দেড়শ, দুশ। বাজার খারাপ গেলে তাও হয় না। রোজ আসে পুলিশের ‘হল্লা গাড়ি’। জিনিসপত্র গুটিয়ে লুকিয়ে পড়তে হয়। চলে গেলে আবার বসা।
লাল, হলুদ খালি ক্রেট সাজানো চলছে ট্রাকে। সামনের রাস্তায় গাড়ি, মোটরবাইক, সাইকেল, ভ্যান। লোকজন হাঁটছে, বাজার করতে এসেছে কেউ কেউ। গাড়ির শব্দ, লোকজনের চিৎকারে কান ফেটে যাওয়ার যোগাড়।
“বাড়িতে কে কে আছেন?”
সমনা: শাশুড়ি, মেয়ে, ছেলে, বর।
“বর কী করেন?”
“মদখোর, গাঁজাখোর। করে তো গালাগালি। আমাকে, বাচ্চাদেরকে।”
“কবে থেকে এখানে আসেন?”
“ওই... সাত/আট বছর বয়স থেকে। আমার মা শাক বিক্রি করতো। আমিও মায়ের সঙ্গে বিক্রি করতাম; শাকপাতা, হেলেঞ্চা শাক...। বাবা মারা গেছে আমার যখন পাঁচ বছর।”
“ভোট দেন?”
“হ্যাঁ।”
“কিছু সুবিধা হল?”
“হ্যাঁ, একটা ঘর করে দিয়েছে।”
“কারা দিল?”
“বিজেপি পার্টি।”
“রান্নার গ্যাসও দিচ্ছে সরকার। আপনার আছে?”
“না।”
“কিসে রান্না করেন?”
“কাঠকুটো।”
মরিয়ম গাজি শুরু করেন, “আমি খোঁড়া মানুষ। ছোটবেলায় অপারেশনের পর পা ছোটবড় হল। কী করবো? ওই নিয়েই... নাতিপুতি, ছেলেপিলে নিয়ে বাড়িতে ছ’জন। ছেলে জোগাড়ের কাজ করে। স্বামী মারা গেছে দশ,বারো বছর। মাটির ঘর। ওপরে টালি। চার বছর এখানে আসছি। আগে লোকের বাড়ি কাজ করতাম। কাজ করতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে...। কাজ ছেড়ে দিলাম।”
“ভোট দিতে যান?”
মরিয়ম, “আর কী করবো? যখুন থেকে ভোটার হইছি ‘তাঁদের’ উপ্কারের জন্য ভোট দিতে যাই। কিচ্ছু পাইনি; একটা ঘর না, টাকাপয়সা না কিচ্ছু না। ‘তাঁদের’ ছেলে, বউয়েরই হয় না আমাদের কি দেবে? মায়া, মায়া! মায়ায় ভোট দিতে যাই। দিতে হয় তাই...”
কানন সর্দার, “বাড়িতে ছেলে আছে, বর আছে। কাজ করে। ওই... যখন যা পায়। মিস্তিরি, মুনিষ। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ফাস্ট ট্রেন ধরে ভোরবেলা এখানে আসি। বাড়ি যেতে দুপুর পার। চা, বিস্কুট খেয়ে থাকি। বাড়িতে বর, ছেলে থাকলে রান্না করে রাখে। না থাকলে আমার কষ্ট...”
“ভোট দেন কেন?”
“ভোট দিতে হবে না, বল? গরীবের বেশি জ্বালা। বলে না, যেদিকে জল পড়বে সেদিকে ছাতা ধরবে না কেউ। যেদিকে পড়বে না সেদিকে ছাতা ধরবে। যাদের হচ্ছে তাদের খুব হচ্ছে। আমরাই কষ্ট করে রাস্তায় পড়ে মরছি। আমাদের কিছু হচ্ছে না। কিন্তু ভোট... ভোট তো দিতে হবে, দেশের ভোট...”
“নাহলে তো থাকতে দেবে না তো”, রাগে চেঁচিয়ে ওঠেন মরিয়ম।
“হ্যাঁ, থাকতে দেবে না।”, সমর্থন জানান কানন।
“একেবারে কচুকাটা...”, গলায় তর্জনী চালিয়ে বলেন মরিয়ম।
“হ্যাঁ।”
“মারামারি হবে। কডা লাশ পড়বে ঠিগ নাই।”
“আমাদের খুব কষ্ট হয়, পরিশ্রম হয় মা। সেই রাত থাকতে আসি, স্টেশনে আসতেই ভোর চারটে। তিনটে পনেরোয় বাড়ি থেকে বার হই... ভোট দিই... কী চাইবো বল দিখি... যাদের ভোট দিই তারা যদি নিজের থেকে কিছু না দেয়... কী চাহিদা করতে পারি? ভোট দিয়ে উন্নতি যাদের হচ্ছে তাদের হচ্ছে। আমরা মাঝখান থেকে ডুবে মরছি। দেশের নীতি তাই ভোট দিতে...”
বড় মেয়ের সঙ্গে থাকেন ভগবতী। আট’ ন বছর এখানে বসেন। তিন মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে গ্লাভস তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তাঁর কথায়, “একই গল্প। ভোট না দিলে তো গ্রামে থাকতে দেবে না।”
“আগেরবার দুটো করে ভোট দিয়ে নিয়েছে।”, মরিয়ম বলেন।
“কী করে? নখে তো রং লাগিয়ে দেয়?”
“হ্যাঁ(চোখ নাচিয়ে)... রং লাগায়নি। দুটো ভোট দিয়ে তারপর রং দিয়েছে। ভয়ে ভয়ে দিয়ে দিয়েছি। কী করবো? আমরা চাই আমাদের ভাতা হোক। কাজকর্ম ঠিক করে করতে পারি। কিন্তু কেলা... কেলা...” দু হাতের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ উঁচিয়ে বিশেষ ভঙ্গি করেন মরিয়ম।
“একটা সই করতে গেলে এ বলে তার কাছে যাও, সে বলে ওর কাছে যাও... নেতা, নেতা সব। আমরা পড়াশোনা জানি না। সব বুঝি না। কী করে কী হবে মা?”, আমেজ করে বিড়ি ধরান মরিয়ম। কয়েক টান দিয়ে এগিয়ে দেন সমনা মণ্ডলের দিকে।
সমনা ধোঁয়া ছাড়েন।
ধোঁয়ার সঙ্গে মিলিয়ে যায় চার মেয়ের আশা ভরসা। ভোট আসে, ভোট যায়। বড় ট্রাকের নীচে চার মেয়ে যেন এক প্রতীক-চিত্র হয়ে ধাক্কা দিতে থাকে চোখে। তাঁদের জীবন থেঁৎলে চলে যায় গণতন্ত্রের চাকা।