এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • শকুন্তলার বিলাত যাত্রা

    JAW লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ১২০৯ বার পঠিত
  • পর্ব-১

    কিয়ৎ দিন পরে কণ্ববাবু হরিদ্বার তীর্থ হইতে প্রত্যাগমন করিলেন। একদিন তিনি বারান্দায় বসিয়া চা পান করিতেছেন এমন সময় একটি উড়ো SMS আসিল।

    'কন্বদা, NRI দুষ্মন্ত বসু শীতকালে দেশে আসিয়াছিলেন, শকুন্তলার
    সহিত তাহার নলবনে আলাপ, ফোন নম্বর চালাচালি, ভিক্টোরিয়ায় গমন,
    বকখালি ভ্রমন, এবং কালিঘাটে গিয়া মালাবদল সকলই সম্পন্ন
    হইয়াছে অতি দ্রুত। শকুন্তলা তৎসহযোগে প্রেগন্যান্ট ও হইয়াছেন।'

    কণ্বদা ইহা অবগত হইয়া এবং তাহার অগোচরে ও সম্মতি ব্যতিরেকে বিবাহ
    কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে বলিয়া, বিন্দুমাত্র রোষ বা অসন্তোষ প্রদর্শন
    করিলেন না; বরং যৎপরোনাস্তি প্রীত হইয়া কহিতে লাগিলেন যে, আমার পরম সৌভাগ্য যে শকুন্তলার এতদিনে হিল্লে হইয়াছে, কানাকড়ি মাত্র খরচা
    করিতে হয় নাই এবং neighbour's envy অর্থাৎ NRI পাত্র মিলিয়াছে। অনন্তর তিনি প্রফুল্ল বদনে শকুন্তলাকে কহিলেন, বৎসে। তোমার কেচ্ছা অবগত হইয়া আমি অত্যন্ত খুশী হইয়াছি, আমার ঘাড় হইতে বোঝা নামিয়া গিয়াছে বিনা
    খরচে, স্থির করিলাম তোমায় শীঘ্র লন্ডন পাঠাইয়া দিবো দুষ্মন্তর কাছে,
    বাচ্চা সেখানে পয়দা হইলে, সেখানকার নাগরিক হইবে, অতএব.........

    ( দেড় মাস পরে..... )

    প্রস্থানসময় উপস্থিত হইল, দমদম NSCBI বিমান বন্দর ( ব্যাটারা
    এমনই আহাম্মক, শুধুমাত্র নেতাজী সুভাষ নামকরন করিলে কি ক্ষতি হইতো? , পরম পূজ্য নেতাজী এখন একটি acronym মাত্র !) হইতে রাত্র দুই ঘটিকায় প্লেন ছাড়িবে, পাড়ার জোজোদার ট্যাক্সি আসিবে শীঘ্র, পাশের ফ্ল্যাটের অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা সর্বক্ষণ উহার সহিত বকবক করিতেছে; উহাকে সাজাইয়া দিলো, যেন সত্য সত্যই পতিগৃহে যাইতেছে, আসলে ১২ ঘন্টা প্লেনে থাকিবার পর থোবড়াখানি যে প্রবল বর্ষণের পর কলিকাতার রাস্তার জলে ভেজা, চামড়ার জুতার ন্যায় হইয়া যাইবে তাহা বিস্মৃত হইয়াছে উভয়েই।

    কণ্বদা শোকাকুল (?) হইয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন, অদ্য শকুন্তলা
    যাইতেছে, যাক বাঁচা গেল, বড়ই জ্বালাইতেছিল, বিনা পয়সায় এমন NRI
    পাত্র পাইব কখনও স্বপ্নে ভাবি নাই, আমার এই আশ্রমের এমন কি বা আয়,
    আজিকাল সকলে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়িতে চাহে, কেই বা তপোবনে আসিয়া অধ্যয়ন করিবে । তাছাড়া এ আমার পালিতা কন্যা, নিজের কন্যা হইলে অন্য কথা। টিন এজার কন্যাদের মস্তিস্ক অবধাবন করা স্বয়ং ফ্রয়েড ব্যাটার ও অসাধ্য
    ছিল, আমি তো সামান্য ইশকুল মাস্টার, তাও আবার বাংলা মিডিয়াম। আপদ
    বিদায় হইতেছে, ইহা অত্যন্ত সুখের।

    এইসব ভাবিতেছেন তথাপি তাঁহার চক্ষু বাষ্পবারিতে পরিপূরিত হইতেছে, কন্ঠরোধ হাইতেছে, না জানি মধ্যবিত্ত সংসারীরা এই সময় কি দুঃসহ ক্লেশ
    ভোগ করিয়া থাকে, বিশেষতঃ যখন সর্বস্ব সঞ্চয় ক্যাশ যৌতুক দিতে ও
    পাড়ার বন্ধু ও অপোগন্ড আত্মীয়দের ভোজন করাইতে নিঃশেষ করিতে হয়!

    বুঝিলাম স্নেহ অতি বিষম বস্তু, সে স্নেহ পদার্থ (fat) হউক অথবা
    পেয়ারই(হিন্দী) হউক!

    অনন্তর সকলে গাত্রোত্থান করিলেন। শকুন্তলা সকলকে hug করিলেন, এবং
    প্রিয়ংবদাকে কহিলেন, সখি ! দুষ্মন্তকে দেখিতে যাইতেছি কিন্তু পাড়া
    ছাড়িতে মন করে না, মোড়ের ঐ ফুচকার দোকান কি লন্ডনে পাইবো, যখন
    ক্লাবের পাশ দিয়া কলেজ যাইতাম, সকলে ড্যাব ড্যাব চক্ষে গিলিত, সিটি দিত, মুখে
    লাজ দেখাইলে কি, অন্তরে পুলকিত হইতাম, এসব কি সেখানে পাইবো? লালমুখোরা তো
    পুঁছিবেই না আর বাকী রহিল সিলেটি রেস্টুরেন্টওয়ালারা; ধুৎ কেউ কি সাধে
    সেখানে যায়। বইমেলা, নন্দনে গুলতানি মিস করিব আর মেগা সিরিয়াল ও দেখিতে
    পাইব না!

    কন্বদা কহিলেন, বৎসে আর কেন বিলম্ব কর, প্লেনের টাইম হইতেছে, আজকাল আবার
    দুই ঘন্টা পূর্বে পৌঁছিতে হয়। দ্বারপ্রান্তে সিঁড়ির উপর শয়নরতা টুনি (
    বেড়াল) কে দেখিয়া শকুন্তলার হৃদয় উদ্বেলিত হইয়া উঠিল, গৌতমীকে কহিল, মাতা ইহাকে রোজ উচ্ছিষ্ট দিতে ভুলিও না, টুনির ও আমারই মত দশা, ইহার বাচ্চা হইলে তাহাদিগকে দেখভাল করিয়ো। এই বলিয়া শকুন্তলা রোদন করতে লাগিলেন।

    এইরূপ নানা কারণে বিলম্ব দেখিয়া শার্ন্গরব কন্বদাকে কহিলেন, ভগবান, আর ধ্যানাচি করিবেন না, যাহা বলিবার এইস্থানে বলিয়া প্রতিগমন করুন। কন্ব তখন গাড়ী বারান্দার তলায় দন্ডায়মান হইয়া শার্ন্গরবকে কহিলেন,
    বৎস! আমি সামান্য ইশকুল মাস্টার, তুমি শকুন্তলাকে সামনে রাখিয়া দুষ্মন্তকে আমার এই আবেদন জানাইবে-আমি সামান্য ফ্ল্যাটবাসী, তুমি
    পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, তুমি অনেক ডোনেশান দিয়া ভর্তি হইয়াছিলে , তোমার পিতার
    অনেক দু নম্বরী রোজগার ছিল, দেশে আসিয়া শকুন্তলার সহিত খুব ফস্টিনস্টি
    করিয়াছো, তাহার অনবধানতার সুযোগ লইয়া বকখালি অবধি গিয়াছো, এখন নিজ দায়িত্ব পালন করো। শকুন্তলা BA পার্ট ওয়ান দিয়াছে, সে ভাল টাইপ করতে পরে, তাহাকে কোন কাজ জুটাইয়া দিয়ো, সে তোমার গলগ্রহ হইবে না, সে উত্তম রন্ধনপটিয়সী, চিকেন বিরিয়ানী তে অদ্বিতীয়া। তুমি ঠকিবেক না।
    ইহার পর মহর্ষি শকুন্তলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, বৎসে, এক্ষণে তোমারেও কিছু উপদেশ দিব। তুমি পতিগৃহে গিয়া দুষ্মন্ত বাবাজীর খেয়াল রাখিবে,
    তাহার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যত শীঘ্র সম্ভব জয়েন্ট করিয়া লইবে, সেই হেতু
    ছলাকলার সাহায্য লইয়ো , আমি পিতা হইয়া অধিক আর কি বলিব।

    Domestic violence রিপোর্ট করিবার নিমিত্ত emergency টোল ফ্রী নম্বর
    মুখস্থ করিয়া লইয়ো, পাছে দুষ্মন্ত বাজে ব্যবহার করেন। স্মরণ রাখিয়ো ঐ দেশে পুলিশকে ঘুষ দেয়া অত সহজ নহে। অতঃপর কন্ব বলিলেন মাতা গৌতমী এবার কিছু গুঢ় কথা বলিবেন।
    গৌতমী কহিলেন , বাছা নোট করিয়া লওঃ

    ১) কখনও ই বরের গায়ে শ্লেষ বা শ্লেষ্মা ঝাড়িবে না, টিসু ব্যবহার করিবে।
    ২) বিপদে আপদে কোন বন্ধু না পাইলে লন্ডনের সুচেতনাকে ফোন করিয়ো,
    মোবাইলে তাহার নম্বর রাখিয়ো; সে দয়াবতী, পঞ্চকন্যার প্রতি তাহার
    পক্ষপাত সুবিদিত, তুমি ষষ্ঠ কন্যা বনিয়া যাও।
    ৩) দুষ্মন্তর প্রতি খেয়াল রাখিয়ো, যে যতই বলুক, এই সব বঙ্গসন্তান একেবারে
    নিষ্কর্মা, চা করিতেও পারেনা, মনে রখিবে a man's heart is accessible through his stomach., তবে খাদ্যে অতিরিক্ত স্নেহ মিশ্রণ করিয়া সরাসরি হৃদয় অধিকার করিবার বিপদ স্মরণে রাখিও। কোলেস্টেরল ইত্যাদি মধ্যে মধ্যে চেক করাইয়ো।

    আর কি বলিবো। বিপদে পড়িলে শ্রী শ্রী ১০৮ ভুতোদাকে ও স্মরণ করিতে পারো, তাহার
    দিদি এবং দাদাগন সারা পৃথিবীতে ছড়াইয়া আছেন, কে জানে কে কখন
    কাজে আসে।

    ক্রমে ক্রমে, যাত্রার সময় হইল, জোজোদার ট্যাক্সি আসিয়া গিয়াছে, শকুন্তলা
    উচ্চৈস্বরে ক্রন্দন করতে লাগিলেন , সেই তোড়ে তাহার নাসিকা বন্ধ হইয়া গেলো,
    তিনি ভ্যাড় ভ্যাড় করিয়া রুমালে নাক ঝাড়িলেন, এবং সক্কলকে টা টা করিলেন।

    .. চলবে।
    ------------------------------------------

    নিবেদনঃ লেখাটি বেশ কয়েক বছর আগে বালা তে প্রকাশিত হয়, তখনকার বেশ কিছু নিয়মিত লেখকদের নাম এদিক সেদিকে উল্লেখ করা আছে, অবশ্যই মজা করে। পুরোটাই কপি পেষ্ট করে দেয়া হলো কোনরকম এডিটিং এর ঝামেলা না পুইয়ে। আশা করি তাদের নামোল্লেখ মার্জনা করবেন, আগের বারের মতই।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ১২০৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    এখন - Kunal Basu
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • JAW | ***:*** | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৬:৪৪73984
  • শকুন্তলার বিলাত যাত্রা- পর্ব ২

    কণ্ব কহিলেন, বৎসে, এইবার তো তোমায় যাইতেই হয়, আমাকে ও সখীদিগকে আলিঙ্গন কর। শকুন্তলা অশ্রুপূর্ণ নয়নে কহিলেন, অনসুয়া ও প্রিয়ংবদা কি আমার সহিত আসিবে না? কণ্ব কহিলেন, না বৎসে, ইহাদের বিবাহ হয় নাই, তোমাকেই তোমার স্বামী ঘরে লইবেন কিনা তাহার ঠিকঠিকানা নাই, আবার সঙ্গে এই ডবকা সখী গণ! তুমি সত্যই আশ্রমবালিকা! নিজের পায়ে কুঠারাঘাত করিতে চাও? বাঙ্গালী পুরুষদের শ্যালিকা প্রীতির কথা সর্বজনবিদিত, ভিসিডিতে সীমাবদ্ধ দেখ নাই?

    গৌতমী তোমার সহিত যাইবেন; তদুপরি ভাড়ার কথাও তো ভাবিতে হইবে, নাকি! শকুন্তলা পিতাকে আলিঙ্গন করিয়া , মাখো মাখো স্বরে কহিলেন, তাতঃ তোমায় না দেখিয়া কেমন করিয়া প্রাণধারন করিব। এই বলিতে বলিতে তাহার দুই চক্ষে এবং তদ্সহ নাসিকা দিয়া ধারা বহিতে লাগিল। গৌতমীর উপদেশ স্মরণ করিয়া শকুন্তলা এই বার ভ্যানিটি ব্যাগ হইতে টিসু বাহির করিয়া তাহাতে .............।
    কণ্ব মনে মনে কহিলেন; বাছা এখন এমন কহিতেছ, নব বিবাহিতদের দিন ক্ষন, মাস তারিখ, সকাল সন্ধ্যা কিছুই খেয়াল থাকে না, পিতা তো কোন ছার! ভাগ্য ভাল, তোমার শ্বশ্রুমাতা নাই, নতুবা পিতাকে কেবলমাত্র স্মরণ করিতে আরও যৌতুকের নিমিত্ত।

    গৌতমী কহিলেন, আর নয়, দেরী হইয়া যাইতেছে। তখন তিন সখী একত্রে রোদন করিতে লাগিলেন। প্রিয়ংবদা কহিলেন, যদি রাজা তোমায় চিনিতে না পারেন তাহা হইলে এই ভিডিও ক্লিপ তাহাকে দেখাইও। তোমার মঙ্গলার্থে বকখালির রিসর্টের বেয়ারাগণকে ঘুষ দিয়া ইহা সংগ্রহ করিয়াছি। লজ্জার কোন অবকাশ নাই। তুমি তো সরল বিশ্বাসে তাহাকে তন মন সবই দিয়াছো। সে যদি অস্বীকার করে তখন কোথায় যাইবে? এখনও আমাদের দেশে সিঙ্গল মাদারের মহা হ্যাপা। তুমিতো আর আর নামকরা টিভি ষ্টার নও যে সকলে তোমায় মাথায় তুলিয়া নাচিবে।

    এইরূপে বিদায় লইয়া শকুন্তলা ট্যাক্সিতে উঠিলেন দমদমের উদ্দেশ্যে।
    কণ্বদা ফ্ল্যাটের দরজায় কিয়ৎক্ষন দাঁড়াইয়া ভাবিতে লাগিলেন, ইহা কি ঠিক হইলো, যদি সে ব্যাটা অস্বীকার করিয়া বসে! এই শীতকালীন পরিযায়ী পাখীদের ন্যায় NRI দেরকে বিশ্বাস নাই, ইহারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে। এত বড় বড় বাত কারণ ডলার ভাঙ্গাইলে ৪০ দিয়া গুণ হয়, তিষ্ঠ বৎসে, সেদিন আর বেশী দুরে নয়, গুণ করিবার কষ্ট লাঘব হইবে অতি সত্বর, গুণিতক পঞ্চাশ হইতে এখন চল্লিশ হইয়াছে। এই ফুটানির বেলুন শীঘ্র চুপসাইয়া যাইবে, জয় মা তারা! জয় আইটি, জয় কল সেন্টার, জয় JEE!

    ( চলবে)
  • Abhyu | ***:*** | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৯:৪২73985
  • বেশ!
  • nina | ***:*** | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৫:৫৭73989
  • চলুক চলুক----
  • JAW | ***:*** | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৭:৫৩73986
  • শকুন্তলার বিলাত যাত্রা- পর্ব ৩

    অবশেষে দীর্ঘ উড়ানের পর হীথরো বিমানবন্দরে অবতরণের কাল উপস্থিত

    হইল। শকুন্তলা সাগ্রহে প্রতীক্ষা করিতেছেন কখন তিনি টার্মিনালে যাইবেন; পতি

    সকাশে মিলিত হইবার জন্য যত না বিচলিত তার চাইতে নিকটতস্থ বাথরুমই

    তাঁহার কাছে অধিকতর কাম্য।

    প্লেনের ঐ ঘুপচি Loo! উফঃ পেট ফাটিয়া যাইতেছে যেন! আসল কারণ তিনি

    সামান্য Claustrphobia তে ও ভোগেন, যে জন্য ও মুখো হন নাই। অধিক বয়স

    অবধি বিবাহ না হইবার কারণে আজকাল সকল ছেলে মেয়েরা, থুড়ি, যুবক

    যুবতীরা, ডবল থুড়ি, মানুষ মানুষীরা অল্পবিস্তর এই রোগে ভুগিয়া থাকেন,

    রোগ একই, অনুসঙ্গ বিভিন্ন- কেহ চায়ের টেবিলে তুফান তোলেন, কেহ বা বাইক লইয়া

    সল্টলেকের রাস্তায় চক্কর মারেন, অথবা পকেটে BPO জনিত কিঞ্চিৎ নগদের

    আমাদানী থাকিলে লং ড্রাইভ নামক নিরুদ্দেশের পথে ঘুরিয়া থাকেন। !

    ইমিগ্রেশান কাউন্টারে শকুন্তলার কোন সমস্যাই হইল না; আজকাল শিল্পা

    শেঠিনীর দৌলতে সারা যুক্তরাজ্যে (সরি, ইউকে তে) ঘাঘরা ও চোলির জয়জয়কার,

    বিশেষতঃ ১৭ ঘন্টা বায়ুভ্রমণের পর শকুন্তলার আলুলায়িত ঘন

    কেশদাম, ঘুম ঘুম চোখ - তাহা যে কোন কাউন্টারকর্মীর হৃদ্কম্প

    ঘটাইবার পক্ষে যথেষ্ঠ। ( যদি ও চোখের কোণে সামান্য পিঁচুটি, কিন্তু

    তাহা কে আর লক্ষ্য করে!) সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র। ঘটে কি আছে না আছে

    তাহা অপ্রাসঙ্গিক।

    নিরাপত্তার প্রতি কলা দেখাইয়া বিনা চেককরতঃ আশ্রমবালিকার পাসপোর্টে

    দুম শব্দে ষ্ট্যাম্প পড়িল। ভাগ্যিস,ইহা ২০০৮ সাল, নতুবা ভাবিতে অবাক

    লাগে, সম্ভবতঃ Powell সাহেবের আমলে পতির সহিত মিলিত হইতে আসা ভারতীয়

    উপমহাদেশের মহিলাদের নিমিত্ত virginity Test এর প্রস্তাবনাও হইয়াছিল

    একসময়!

    অতএব , W E L C O M E।

    কিন্তু কাস্টমস অত সহজে ছাড়িল না, এক দশাশই গ্রীকমহিলা দিৎ দ্যাত

    করিতে করিতে শকুন্তলার সব জিনিষপত্র তন্ন তন্ন করিয়া তলাশী করিল।

    শকুন্তলার কোনদিকে হুঁশ নাই, টুপ করিয়া দুই গিগা বাইটের thumb drive

    মেঝেতে পড়িয়া গেল। হায়রে কপাল, বকখালির ভিডিয়ো ক্লিপ যে একমাত্র প্যার

    কি নিশানি! যদি দুষ্মন্ত বসু অস্বীকার করেন, তখন কি বলিয়া প্রমাণ দিবে?

    NRI মানেই ধর্মপুত্র নয়! যদি বাঁকিয়া বসে?

    শকুন্তলাদি অবশ্য তদীয় ভ্রাতা শ্রী শ্রী ১০৮ এর ফোন নম্বর ও ইমেল

    ঠিকানা সযত্নে তাহার বটুয়ার মধ্যে রাখিয়াছেন, অগতির গতি ভুতোবাবাজী

    থাকিতে কিবা ভয়, ডানদিকে বাঙলা না আসা হইতে সর্বপ্রকার সমস্যার

    সমাধান যে তাহার বাঁয়া হাত কা খেল।

    দুর্ভাগ্য বুঝি শকুন্তলার পিছু ছাড়েই না।

    (চলবে)
  • ম্যামি | ***:*** | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৯:৩৮73987
  • ক্যা বাত!
  • জারকভ | ***:*** | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১০:২৮73988
  • জমছে।
  • JAW | ***:*** | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:১২73990
  • শকুন্তলার বিলাত যাত্রা- পর্ব ৪

    কলিকাতা হইতে আসিবার পর দুষ্মন্ত বসু বড়ই মনঃকষ্টে আছেন, কর্মে মতি নাই, ঘনঘন Generalia Melancholia তে আক্রান্ত হইতেছেন , সংসার শূন্য বোধ হইতেছে, অকারণে মাথা ঝিমঝিম করিতেছে, নিজের মনে অজান্তেই হাসিতেছেন এবং মাঝে মধ্যে দীর্ঘশ্বাস ও ফেলিতেছেন। এমন ধারা দেখিয়া তাঁহার পড়শী ও বন্ধুগণ বলাবলি করিতে লাগিল, 'এ ব্যাটার এমন অবস্থা কি প্রকারে ঘটিল, এ তো জাত খেলুড়ে, ইহার এবম্বিধ মতিভ্রম!'

    আসলে দুষ্মন্ত কিছুতেই শকুন্তলার কথা ভুলিতে পারিতেছেন না, বারে বারে সেই অপাপবিদ্ধা (?) আশ্রমবালিকার মুখ ভাসিয়া উঠিতেছে মনের জানালায়।
    আহা, কি রূপের ঘটা। Penelope Cruz এর মুখায়ব, কেমন যেন হালকা দুঃখী দুঃখী ভাব; সেই যে বুদ্ধদেব বসু বলিয়া গেছেন,সে সুন্দরী, যে বিষাদময়ী, সেই প্রকার; মুখের হাসি রানির ন্যায় (of Mukherjee variety) , আর দৃপ্ত চলন- সপ্তপদীর রিনা ব্রাউনকেও হার মানায়; ওষ্ঠাধর অ্যাঞ্জেলিনার ন্যায় টসটসে, সর্বোপরি Cindy Crawfordএর ন্যায় বিউটি স্পট মুখের বামদিকে শোভায়মান। ফিগার ইত্যাদির জন্য শ্রীপঞ্চমীর শ্লোক যথা "কুচযুগ ..........., পর্য্যাপ্ত নহে, গঙ্গাজলে গঙ্গা পূজিবার জন্য আদিকবির শ্লোক ই একমাত্র ভরসা- তন্বী শিখরদশনা ...........bla, bla, bla.

    সমস্যা হইল, শকুন্তলা লজ্জাজনিত আবেগবশতঃ দুষ্মন্তকে তাহার মোবাইল নম্বর দেন নাই; 'প্রভু আপনার নম্বর আমার কাছে রহিল, আমার পিতা আপনার সহিত যোগাযোগ করিবেন'। ইতোমধ্যে পুন্যঃসলিলা টেমস এবং দুষণবাহিত গঙ্গা দিয়া অনেক জল বহিয়া গিয়াছে, ক্ষণিক মতিভ্রমের জন্য দুষ্মন্ত তাঁহার উচ্চাশা বিসর্জন দিতে রাজী নহেন, কত ভাবিয়াছিলেন যে দেশ হইতে ডাক্তার বিবাহ করিয়া ঘরে তুলিবেন, National Health Serviceএ ঢুকাইয়া দিতে পারিলেই পাউন্ডের ছড়াছড়ি, সোসাইটিতে ইজ্জৎ বাড়িবে,
    লোকাল বেঙ্গলী অ্যাসোসিয়েশানের প্রেসিডেন্ট বনিবেন, মোটা চাঁদা দিয়া দুর্গাপূজার সময় ছড়ি ঘুরাইবেন, ইত্যাদি কত কি! অথচ.......!

    নাঃ, ছেঁদো ভাবনামুক্ত হইতে হইবে, প্রেম ভালবাসার ন্যায় বায়বীয় ধ্যানধারণা দ্বারা কোনপ্রকার জাগতিক আকাঙ্ক্ষা সিদ্ধ হয় না; no more শকুন্তলা। আজকাল পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলি হইতে ঝাঁকে ঝাঁকে সুন্দরী তন্বীরা লন্ডনে আসিতেছে; অতএব শকুন্তলার চিন্তা মাথায় থাকুক, কদ্যপি মনে নয়। রাজকন্যার কথা ভিন্ন, কিন্তু রূপসী,স্বাস্থ্যবতী কন্যার অভাব পড়ে নাই। নিদেনপক্ষে escort service তো আছেই। Mercedes E-class বাহন, Surrey Hills এ প্রাসাদোপম ম্যানসন ই অধিকতর কাম্য; সরি, bad luck শকুন্তলে!

    + + + + + + + +

    স্থানঃ হীথরো অ্যারাইভাল লাউঞ্জ

    'বাব্বাঃ বাঁচা গেল'। চোখে মুখে জল দিয়া, ফ্রেশ হইয়া বাথরুম হইতে বাহির হইবার পর শকুন্তলা উবাচ। এতদিনে গোপাল ভাঁড়ের গল্পের সারার্থ হৃদয়ঙ্গম হইল, বাল্যকালে পিতা কণ্ব যখন গোপালদার গল্প পাঠ করিয়া শুনাইতেন তখন প্রত্যয় জন্মে নাই, ইহার জন্য বিলাত আসিতে হইল!

    ইমিগ্রেশান হইতে বাহির হইবার পর গৌতমী কহিলেন, বাছা শকুন্তলে, এইবার তো জামাতাকে ফোন করিতে হয়, কেহ তো রিসিভ করিতে আসে নাই। এক্ষণে কি হইবে। তোমাকে সে তাহার মোবাইল নম্বর দিয়াছিল, দেখ একবার, কেন সে বিলম্ব করিতেছে। এখানেও কি ভি আই পি রোড নামক স্বর্গসড়ক রহিয়াছে?

    "সখী, ভাবনা কাহারে বলে, যাতনা কাহারে কয়" দুষ্মন্ত বসুর মোবাইলে রিংটোন বাজিতেছে, উফ` সাতসকালে একি বিড়ম্বনা, কাল অধিক রাত্রি অবধি পার্টি ছিল; হ্যালো?
    শকুন্তলার গলার স্বর বুঁজিয়া আসিতেছে লজ্জায় ভয়ে, চক্ষু জলে ভরিয়া আসিতেছে, নাসিকা ভ্যাড় ভ্যাড় করিতেছে - হায় রে কপাল! শেষ অবধি, লজ্জা ঘেন্নার আর কিছু অবশিষ্ট রহিল না।
    প্রভূ, আমি শকুন্তলা, আপনার কুন্তলা।

    সরি, রং নাম্বার এবং কটাক করিয়া ফোন রাখিবার শব্দ!

    শোকে , দুঃখে, রাগে শকুন্তলা প্রায় মূর্চ্ছা গেলেন, payphone এর রিসিভার হাত হইতে পড়িয়া গেল, সে মেঝের উপর নতমস্তকে বাকরহিত অবস্থায় বসিয়া পড়িল, মাতা গৌতমী আসিয়া তাঁহার কোলে শকুন্তলার মস্তক আঁকড়াইয়া ধরিলেন; স্থানকাল পাত্র জ্ঞান ভুলিয়া দুইজনে উচ্চৈস্বরে ক্রন্দন করিতে লাগিলেন।

    স্বল্পকাল পরে গৌতমী কহিলেন, বাছা, শ্রী শ্রী ১০৮ ভুতোবাবাজীর দেয়া নম্বরে কতিপয় মজলিশীগনকে ফোন করিয়া দেখ, যদি কেহ আশ্রয় দিতে রাজী হয়েন নতুবা এই বিদেশ বিঁভুয়ে কোথায় যাইব; তদুপরি এই প্যাঁচপ্যাঁচে বৃষ্টির দেশ! কি ছ্যাঁচড়া শীত রে বাপু!

    কিন্তু হায়, দুর্ভাগ্য শকুন্তলার পিছু ছাড়িতে চাহে না, মজলিশী বন্ধুনীগণ পিছাইয়া গেলেন স্বভাবতই, কে আর সাধ করিয়া এই জ্বলন্ত আগুনের খাপরা আপনার ঘরে তুলিতে চাহে। দেশ ও দশের চিন্তা কম্পূটার স্ক্রীন ও কীবোর্ডে সীমিত থাকাই শ্রেয়।

    দুইজনে একে অন্যের কাঁধে মাথা রাখিয়া স্তব্ধ হইয়া বসিয়া রহিয়াছেন, আর আপনার ভাগ্য ও প্রজাতির প্রতি গালিবর্ষণ করিতেছেন নিরন্তর।

    লন্ডনে West End এর জনপ্রিয় Greater Indian Restaurant এর মালিক ওসমান সাহেব ও তাঁহার মেমসাহেব স্ত্রী মার্গারেট কিয়ৎক্ষণ ধরিয়া এই রমণীদ্বয়কে লক্ষ্য করিতেছেন। ওসমান এই দৃশ্য দেখিয়া অভিভূত; তিনি প্রায় চল্লিশৎ বর্ষ লন্ডনে আছেন, কপর্দকশূন্য অবস্থায় মাত্র ১৭ বৎসর বয়সে এই দেশে আসিয়াছিলেন, আজ ভাগ্যলক্ষ্মী তাঁহার প্রতি সুপ্রসন্ন, তিনি সিলেটি; অসমীয়া ও বাংলা ভাষায় এখন ও সমান পারদর্শী। এককথায় দয়ার শরীর, বাঙ্গালী দেখিলে তাঁহার হৃদয় উদ্বেলিত হইয়া উঠে।
    'মা জননী, কাইনত্যাসো ক্যান? কি হইসে?'
    সকল কথা অবগত হইয়া তিনি তাহাদিগকে আপনার গৃহে লইয়া গেলেন।
    মার্গারেট মেম হইলে কি হইবে, তাহার স্বামীর এইপ্রকার পরোপকারের বিষয়ে সে অভ্যস্ত। সে জানে হাজার হইলেও এই স্বামী তাহাকে স্থায়ী গৃহস্থালী দিয়াছে, তাহার অন্যান্য চেনা পরিচিত বন্ধুরা যে কতবার স্বামীর মডেল চেঞ্জ করিয়াছে তাহার ইয়ত্তা নাই। বাঙ্গালী ও বাঙ্গালা ভাষার প্রতি তাহার স্বামীর দুর্বলতা সে সস্নেহে প্রশ্রয় দিয়া থাকে; দুর্বলতা তো অন্য রমণীর প্রতি নহে, তাহা হইলেই তো চিত্তির!

    (আরও কিছুদূর গড়াবে)

    --
  • শিবাংশু | ***:*** | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:২৭73991
  • রায়সাহেব কালিদাস, স্বাগত....
    :-)
  • Sibu | ***:*** | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৯:২৩73992
  • এই জন্য কাজের ফাঁকে গুরু কত্তে নেই। হঠাৎ দেখি Genitalia Melancholia। মানে কিরে বাবা!!

    দু'বার চোখ রগড়ে দেখলাম Generalia Melancholia।
  • JAW | ***:*** | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৯:৪৩73993
  • পর্ব ৫

    তিন মাসাধিক কাল গত হইয়াছে, ওসমান দম্পতির গৃহে শকুন্তলা ধীরে

    ধীরে ধাতস্থ হইয়াছেন। শকুন্তলার আগমনে এই পরিবার আনন্দে উচ্ছ্বল।

    রমরমে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা, সাউথল্যান্ডের ন্যায় আপমার্কেট পাড়ায়

    বাড়ী, BMW গাড়ী; অনেক লর্ড, এম পি মহোদয়গণ তাঁহার নিয়মিত

    খরিদ্দার, পরম ঈশ্বর ওসমান সাহেবের কোন সাধই অপূর্ণ রাখেন নাই।

    দুঃখ কেবল মাত্র একটি, মার্গারেটের ক্রোড় খালি, মেম হইলেও মাতৃসত্তা

    সারাক্ষণ হাহাকার করিতে থাকে। শত আইভি এফ কোন ফল দেয় নাই। শকুন্তলার

    আগমন এবং অনাগত সন্তান তাহার সেই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করিয়া দিয়াছে।

    ছোট মোজা, পুলওভারে কাপবোর্ড ক্রমে ক্রমে ভরিয়া উঠিতেছে, মনের সুখে

    মার্গারেট উল বুনিয়াই চলিয়াছেন। আর মাত্র চারিমাস, সেপ্টেম্বরে ডেট

    দিয়াছেন ডাক্তার(মিসেস) বৃষ্টি দে, তিনিও বাঙলাদেশী, মাত্র বছর দুয়েক

    ইউ কে তে আসিয়াছেন। এই ক্ষেত্রে শকুন্তলার ইংরাজী ভাষায় ব্যুৎপত্তির উপর

    বিন্দুমাত্র ভরসা নাই মার্গারেটের। কোনপ্রকার কম্যুনিকেশান গ্যাপ যেন না

    হয়। যদি ও শকুন্তলার ইংরাজী শিক্ষার ব্যাপারে তিনি কঠোরহস্ত, এমনকি ওসমান

    সাহেবের সহিত ও বা`ঙলায় কথা বলিতে দেন না। বেচারী ওসমান সাহেব!

    মার্গারেট চান শকুন্তলাকে মাজিয়া ঘষিয়া রীতিমত স্মার্ট বানাইতে,

    লন্ডনস্থ বঙ্গস্‌গণ যেন অঙ্গুলী চুষিতেই রহে যায়। হালার পো হালা

    দুষ্মন্ত, তু যায়েগা কঁহা! তুনে ঘুঘু দেখা, লেকিন ফাঁদ নেহি!

    শকুন্তলার শিক্ষার কোন ত্রুটি রাখেন নাই। হরেক রকম বিউটি স্যালনে লইয়া

    যান উহাকে, অল্প বিস্তর বলরুম নাচের তালিম চলিতেছে। আসলে উহার কাহিনী

    শুনিবার পর হইতেই ওসমান দম্পতি রাগে দুঃখে ফুঁসিতেছেন। শকুন্তলার প্রতি

    তাঁহাদের অসীম মমতা। একে আশ্রমবালিকার সারল্য তদুপরি দুষ্মন্তের

    বিশ্বাসঘাতকতা!

    অবশ্য অপাপবিদ্ধা (?) শকুন্তলা একটি কাজ ঠিকমত করিয়াছিলেন;

    বকখালির সেই মাখো মাখো দিনগুলির সময় দুষ্মন্তকে দিয়া তাহার spouse

    ভিসার সকল ফর্মে সই করাইয়া লন। সকল ভালোবাসাতুর ইডিয়টের ন্যায়

    দুষ্মন্ত ও তখন গদগদ স্বরে উবাচ, " ভো ভো, কুন্তলে, তোমা বিনা আমি

    বিলাতে কি প্রকারে জীবন ধারণ করিব, তুমি সত্বর বৃটিশ হাইকমিশনে আবেদন

    করিয়ো' ইত্যাদি। অধিকাংশ ছেলেরাই এই সময়ে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়,

    কার্য্যকারণ বিস্মৃত হইয়া সকল প্রকার প্রতিশ্রুতি দিয়া ফেলে। পাশ ফিরিবার

    পরই তাহা বেমালুম ভুলিয়া যায় এবং অনুশোচনা করে, 'এ ম্যাঁয়নে কেয়া

    কিয়া!'

    গৌতমী প্রায় এক মাস হইতে চলিল কলিকাতায় প্রত্যাবর্তন করিয়াছেন, তাঁহার

    টুরিষ্ট ভিসার মেয়াদ ফুরাইয়া আসিয়াছিল। ওসমান দম্পতির আতিথেয়তা

    এবং শকুন্তলার প্রতি উভয়ের কন্যাসুলভ স্নেহের প্রকাশ তাহার মনে কোন

    দ্বিধা রাখে নাই। শকুন্তলাও সম্প্রতি spouse visa হেতু কিছু ভাতা পাইতে

    শুরু করিয়াছেন, সর্বতোভাবে আশ্রয়দাত্রীর প্রতি নির্ভরশীল নহেন। বৃটিশ

    সরকার উদার, কিন্তু স্বামী তাহাকে অস্বীকার করিয়াছে বলিয়া তো সে ক্ষেত্রে

    নাক গলাইতে পারেন না, ইহা বোধকরি স্বামী স্ত্রীর personal space এর অন্তর্গত।

    তন্মধ্যে হাড্ডি বা পাশবালিশ হইতে গেলে যত সিভিল লিবার্টিয়ান আছেন সব

    একযোগে হা রে রে শব্দে ছুটিয়া আসিবেক এবং সরকারের মুন্ডপাত করিবেক।

    তোমার প্রবলেম তুমি সামলাও বাপু, আমরা ভাতা দিয়া খালাস, ভাতারের

    কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে পারিব না।

    ওসমান দম্পতী গৌতমীকে আশ্বাস দিয়াছেন যে শকুন্তলার ও তাহার অনাগত

    সন্তানের মঙ্গলের সমস্ত দায়িত্ব তাদের উপর সঁপিয়া তিনি নিশ্চিন্তে দেশে

    ফিরিতে পারেন। একে তো ভিসার ঝামেলা তদুপরি কণ্ব ও দুই দুইটি কন্যা অনসুয়া

    প্রিয়ংবদাকে ছাড়িয়া আসিয়াছেন, মন তো ব্যাকুল হইবেক।

    ওসমান সাহেব ও বসিয়া নাই, তাঁহার রেগুলার কাস্টোমার মিস্টার ব্রাউন, KT,

    CIE, OBE, অনারেবল মেম্বর অফ দি হাউস অফ কমনস এবং লর্ড মেঘনাদ

    রাক্ষসকে শকুন্তলার বিষয়ে অবহিত করিয়াছেন; হাজার প্রচেষ্টা স্বত্বেও

    বকখালির অভিজ্ঞান, সেই ভিডিয়ো ক্লিপ সম্বলিত Thumb Drive উদ্ধার

    করিতে সক্ষম হন নাই। ইমিগ্রেশান কাউন্টারের কর্মিনী সেই ঢিপসী মুটকী

    আলেকজান্ডার দি গ্রেটের নাতনী উহা নিশ্চয়ই ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করিয়াছে,

    বেচারী জানিতে পারিল না কি অমূল্য রত্ন সে হেলায় হারাইল; অন্তত এক উইকএন্ড

    জামাল জরিনার প্রেমের নিভৃত দৃশ্য উপভোগ করিতে বঞ্চিত হইল। এই বয়সে

    তাহা কম উপাদেয় হইত না।

    + + + + + + + + +

    মার্গারেট শকুন্তলাকে একটি ইউনিসেক্স জিমেও ভর্তি করিয়া দিয়াছেন, উদ্দেশ্য

    দ্বিবিধ। এক, আজকাল advanced stage অবধিও মহিলারা রীতিমত শারীরিক

    ব্যায়াম করেন প্রসব বেদনা স্বল্প লাঘব করিবার নিমিত্ত; দুই জিমে গিয়া

    অন্যান্য শিক্ষার্থিনীদের সুন্দর অঙ্গ সৌষ্ঠব দেখিয়া শকুন্তলা যদি নিজের

    শরীর সম্পর্কে সচেতন হন। দুষ্মন্ত বধের নিমিত্ত প্রস্তুত হইতে হইবে, পেটে

    তিন ভাঁজ দড়ি , ঘাড়ে গর্দ্দানে এবং হাতীর পায়ের মত বাহু লইয়া তো কাজ

    চলিবে না! কালীঘাটের পটের গোলগাল বিবি বা রাফায়েলের ম্যাডোনার দিন

    গত হইয়াছে, এ যুগে পপি ম্যাডোনা অথবা আমাদের homegrown বি পূর্বক

    প পূর্বক আশা ধাতুর ঘঙ হইলেন আরাধ্যা দেবী। অতএব......... লাগে রহো

    শকুন্তলা!

    শকুন্তলা অবশ্য হারিবার পাত্রী নহেন, লজ্জার মাথা খাইয়া তদীয়

    ভ্রাতা শ্রীমান ভুতোকে ইমেল ভেজিয়াছেন। যেন তেন প্রকারেণ অভিজ্ঞান

    উদ্ধার করিতেই হইবে। শ্রী শ্রী ১০৮ ভুতো কম্পুটার গুলিয়া খাইয়াছে, সে lost

    data recovery এবং data সংক্রান্ত disaster management এ পারদর্শী।

    শকুন্তলাদির বার্তা পাইয়া সোজা কলিকাতায়। বাঙ্গালী ভাই বোনের এই মধুর

    সম্পর্ক আজকাল বিলুপ্ত প্রজাতি। বারুইপুর হইতে তাহার সাগরেদ শ্রীমান

    বুনান ও হাজির; দুই অর্বাচীন কণ্বদার বাড়ী গমন করিল। কণ্বদা তো হাতে

    চাঁদ পাইয়াছেন। এইবার বাকী দুই কন্যার ও বুঝিবা বিনা পয়সায় হিল্লে হইতে

    চলিয়াছে। গৌতমী তো শকুন্তলার বৃত্তান্ত সমুদায় বলেন নাই। এই ভোলা

    ভালা মানুষটিকে তো তিনি চেনেন।

    জনগণ, ইহার পরের অংশ A মার্কা, নিজ দায়িত্বে পড়িবেন। দৃশ্যটি এই প্রকার,

    তিনতলার ফ্ল্যাটের কোণের ঘর, দুই পাশে দুইটি খাট পাতা, মাঝখানে

    কম্পুটার টেবিল, জানালা দিয়া একটি ডোবা দেখা যাইতেছে, তাহার পাড়ে একটি

    হেলা কদম্ব বৃক্ষ, বৈশাখের সকাল, পর্দা সামান্য টানা যাহাতে স্ক্রীনে

    রিফ্লেকশান না পড়ে। কেমন বুঝিতেছেন? এবং দুই তরতাজা যুবক ও দুইটি

    ডাঁসা কন্যা, কম্পুটারের উপর হুমড়ি খাইয়া পড়তঃ একের পর এক sent মেল

    ইত্যাদি দেখিয়া যাইতেছে। অবিবাহিতা যুবতীর sent মেল ফোল্ডার, ইহার অধিক

    অম্লমধুর চাটনী এই ক্ষণভঙ্গুর বিশ্বে আর কি হইতে পারে। ভুতো খুট খাট

    করিয়া বোতাম টিপিয়া যাইতেছে, শ্রীমান বুনান যথাসম্ভব গম্ভীর হইয়া

    দাদাগিরি করিতেছে- ঐখানে যা, নাঃ নাঃ আগের পাতায়, উফ, কি যে করিস, হুঁ এবার

    মার, সি কোলন ব্যাক শ্ল্যাস বকখালি ডট ইন্টিমেট ডট.... নাউ ফাইন্ড। ধ্যেৎ,

    কি যে করিস, শ্লেষ বা শ্লেষ্মা নয় , শ্ল্যাস রে বাবা। ঘেন্না পিত্তিও নেই!

    দুই সাগরেদের নিশ্বাস তো বন্ধ হইবার উপক্রম, বিশেষ রূপে attachment গুলি অতি

    মনোহর।

    আহারে চুলোয় যাক বকখালির ভিডিয়ো, "এই search যদি না শেষ হয়!"

    কণ্বদা ছোঁড়া দুটির জন্য গরম গরম জিলিপি ও সিঙ্গাড়া আনাইয়াছেন,

    তাহা সাবাড় করিতে করিতে বুনান ভুতোর পায়ে একটি মৃদু ঠোক্কর মারিল,

    ভাবখানা এই, সিঙ্গাড়ার কিবা প্রয়োজন ছিল, দুই দুইটি মাংসের সিঙ্গাড়া তো

    গৃহেই বিরাজমান। ঘ্রাণেন অর্দ্ধ ভোজনম......।

    গৌতমী ছাড়িবার পাত্র নহেন, তিনি আর ভুল করিতে নারাজ, চায়ের পর তাড়া

    দিতেছেন বারংবার, কই গো বাছারা, পাওয়া গেল? এ তো দেখছি বসের ও

    বাড়া,হে বকখালি দেখা দাও, আর দেরী করিয়ো না, ওঁ বকখালি, সজনেখালি,

    খালি নয় এবার পূর্ণ হও, মান ইজ্জৎ যে যায়, ওঁ নম কম্পুটার দেব্যায় নমঃ।

    হিট অ্যান্ড এন্টার। Lo and behold, ঐ হোথা দেখা যায় bakkhaali.wmv। এই ভুতো,

    ভলুমটা জিরো কর রে, বেটা আহাম্মক। দেড়মিনিটের ক্লিপ, মোবাইলে তোলা, কিন্তু,

    The অভিজ্ঞানম শকুন্তলম!

    ইউরেকা, ইউরেকা। গৌতমী মাসীইইই, কোথায় গেলে গো, পাওয়া গেছে এ এ এ ।

    (চলবে)
  • JAW | ***:*** | ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৮:৫৫73994
  • শকুন্তলার বিলাত যাত্রা – পর্ব ৬

    "কতামালামেখ কতামালামেখ কোতায় তোমাল বালি' আউড়েই যাচ্ছে ছোট্ট

    ভরত- কুমারী শকুন্তলার পুত্র। তিনি পুত্রকে যথাসম্ভব বাঙ্গালা ছড়া,

    গল্প বলেন । তাঁহার ইচ্ছা পুত্র বাঙ্গালা শিখুক , আঁতেল বনুক, রবীন্দ্র

    সঙ্গীত শিখুক , কবিতা লিখুক। মানে সাধারণ বাঙালী মায়ের যা সাধ, আর

    কি। পরে ফরসা গোলগাল একটি মেয়ের সাথে বিবাহ দিবেন এবং নববধুটির জিনা

    হারাম করিবেন।

    মার্গারেট আদ্যপ্রান্ত মেমসাহেব, তিনি বর্ত্তমান লইয়াই ব্যস্ত, ভবিষ্যৎ

    লইয়া কচাকচি তাঁহার জাতির স্বভাবে নাই। Live today- তাহাদের

    মূলমন্ত্র। বাগানে হিন্দোলা বসাইয়াছেন তাঁর আদরের নাতিটির জন্য। Surrey

    Hills এর প্রাসাদোপম বাটী এতদিনে ভরা ভরা লাগিতেছে। লন্ডনের চির

    সবুজ পরিবেশ, তায় গ্রীষ্মকাল, ব্যাকইয়ার্ডে চেরীফুলের সমারোহ, দোলনায়

    দেবশিশুসম নাতি দুলিতেছে, ঈশ্বর সত্যই মঙ্গলময়!

    দেখিতে দেখিতে তিন বৎসর উত্তীর্ণ হইল। ওসমান দম্পতির গৃহ কানায় কানায়

    পূর্ণ। শুধু শকুন্তলারই হৃদয় ধু ধু মরু। দুষ্মন্তের প্রত্যাখান তিনি

    কিছুতেই ভুলিতে পারেন না। সরল বিশ্বাসে তন মন সকলি উৎসর্গ করিয়াছিলেন;

    তাহার এই পরিণতি! পাড়ার জোজোদাদের ভাষায় মাঝে মাঝে বলিতে ইচ্ছা

    করে, "শালা, শুয়ারের বাচ্চা' । "আমাকে লইয়া মজা লুটিবার নিমিত্ত ছল

    করিয়াছিলি?' বুক ফাটিয়া যাইতেছে কিন্তু নীরবে অশ্রুজল ফেলা ভিন্ন আর

    কি করিতে পারেন, তাহাকে যে এখনও প্রস্তুত হইতে হইবে, অনেক কিছুই যে শিখিবার

    বাকী।

    মাতা গৌতমীর ইমেলে পাঠানো সেই ভিডিয়ো ক্লিপের কথাও শকুন্তলা বিস্মৃত

    হন নাই। ভুতো আর বুনান একটু কাটছাঁট করিয়া বকখালি.wmv

    হইতে বকখালি1. বানাইয়া দিয়াছে, তাহাতে কেবল দুষ্মন্তেরই মুখ

    দৃশ্যমান। ( প্রসঙ্গতঃ ওস্তাদদ্বয় এক্কেবারে বিনা পয়সায় সার্ভিস দিয়াছে,

    এইপ্রকার কম্পুটারি এডিটিং এর প্রয়োজনে বারংবার আসিতে তাহাদের যে

    বিন্দুমাত্র দ্বিধা নাই সেকথা বলিতে ভুলে নাই!)

    ওসমান সাহেব একবার ইঙ্গিত করেন যে ক্লিপটি YouTube এ চড়াইয়া দিবেন।

    শকুন্তলা তাহাতে সম্মতি দেন নাই। তাহা তো বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়া সহবাস

    টাইপের ঘটনা হইবে। তিনি যে সত্য সত্যই আর্যপুত্রকে ভালবাসিয়াছিলেন।

    ++++++++++++++

    বেচারী দুষ্মন্ত! বেশী দাঁও মারিতে গিয়া এখন অথৈ জলে। ডাক্তার

    পাত্রী দূর অস্ত। বঙ্গললনারা আজকাল NRI মোহে ভোলেন না তেমন, দেশে ঝি

    চাকরানী, মায় রাঁধুনীও মেলে, বি দ্যাশে গেলে তো দশমহাবিদ্যা নিজেকেই

    শিখিতে হইবে, রাঁধুনী,চাকরানী, জমাদারনী, আয়া, বাজারসরকারনী,

    পা-টিপুনী , শয্যাসঙ্গিনী সর্বকার্যেই পারদর্শিনী হইতে হইবে। ধুৎ, কেবল

    মুর্খরাই আজকাল বিদেশের নামে নাচে। এই কলিকাতাতেই তো সর্বসুখের আয়োজন

    রহিয়াছে; ঝাঁ চকচকে মল, হেন গার্ডেন তেন গার্ডেন নামে বহুতল, gated

    কমুনিটি, নতলার জানালা দিয়ে কলকাতাকে সত্যই মোহময়ী লাগে।

    আর, আই টি র দৌলতে মাসে মাসে পঞ্চাশ ষাট তো জলভাত, তেঁতুলতলা

    ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পাশ করা ছানারাও পায়। নিদেনপক্ষে সরকারী

    চাকুরেও মন্দ কি, যদি ঠিকমত জায়গায় পোস্টিং হয়! সেথায় তো সবই বাঁয়া

    হাত কি খেল!

    অতএব সামান্য ইঞ্জিনীয়ারিং পাশ NRI দুষ্মন্তদের দিন গত, তবে সাবির

    ভাটিয়া টাটিয়া হইলে অন্য কথা। সে আর কজনই বা হয়! বয়স্য মাধবের

    কাছে এই সব দুঃখের কাহিনী ঘ্যান ঘ্যান করিতেছিলেন তিনি।

    এদিকে শকুন্তলার স্মৃতি ও মনের মধ্যে দগদগে, বকখালি, মন্দারমণির সেইসব

    রগরগে দিনগুলি!

    সাদা মহিলা chase করাও অত সহজ কর্ম নয়, সেখানে বীরভোগ্যা

    বসুন্ধরা, হাতে উল্কি, পেটে সিক্স প্যাক - এদেরই জয়জয়কার। pubএ যাওয়াও বেশ

    খরচ সাপেক্ষ, ভাল গাড়ী স্পোর্টস মডেল শস্তায় মেলে না; আর এইসব ব্যতিরেকে

    কেহ তোমার দিকে ফিরিয়াও তাকাইবে না। এবং তদুপরি সর্বক্ষণ ডিভোর্সের ভয়, এই

    গেল তো সেই গেল। এই সুখ সত্যই পদ্মপত্রে নীর!

    সকল শুনিয়া মাধব কহিলেন, তিষ্ঠ বৎস, বুঝিয়াছি তুমি Generalia

    Melancholia তে ভুগিতেছ, ইহার একমাত্র ঔষধ, রঙ্গীন পক্ষিনীদর্শন।

    অ্যালবার্ট হলে জলসা আছে আগামী শনিবার ,বাঙলা গানবাজনা হইবে,

    চলো ঘুরিয়া আসি।

    (চলবে)
  • nina | ***:*** | ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৫:৫২73996
  • ক্যা বাৎ---চলুক চলুক----
  • Biplob Rahman | ***:*** | ০৮ মার্চ ২০১৪ ১২:৪৩73995
  • উরি বাপরে! -:)
  • JAW | ***:*** | ১৩ মার্চ ২০১৪ ১০:১৩73997
  • শকুন্তলার বিলাত যাত্রা – পর্ব্ব ৭

    অবশেষে সেই দিন সমাগত। ওসমান সাহেব বিষয়ী মানুষ, শকুন্তলার

    প্রথম জলসার যাহাতে সম্যক প্রচার হয় তাহার নিমিত্ত কার্পণ্য করেন নাই।

    যত ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট, এশিয়ান মুদীর দোকান, হাজারো ফ্যাকশনের বাঙালী,

    বাঙলাদেশী, ভারতীয়,পাকিস্তানী ক্লাব, অ্যাসোসিয়েশান, লোকাল বাঙলা,

    ভারতীয় রেডিও সবেতেই বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করিয়াছেন। শকুন্তলাও তিল তিল

    করিয়া এইদিনটির জন্য প্রস্তুতি লইয়াছেন গত তিন চারি বৎসর ধরিয়া।

    উফ, সেইসব দিনগুলির কথা ভাবিলে বুক ফাটিয়া যায়, অশ্রু সামাল দেয়া

    কষ্টকর হইয়া পড়ে; প্রায় একাকী এই পান্ডববর্জিত দেশে, পেটে বাচ্চা,

    একপ্রকার পরাশ্রিত তিনি। ওসমান ও মার্গারেট যতই সাহস দিন না কেন,হাজার

    হাজার বৎসরের সংস্কার- পিতৃপরিচয়হীন সন্তানের জননী হইবার যে লজ্জা,

    তাহা সর্বদা অন্তঃসলিলা ফল্গুর ন্যায় বিদ্যমান। নাই নাই করিয়াও তো তাহাকে

    কিছু পার্টিতে যাইতে হয়, ওসমান গৃহেও পার্টির বিরাম নাই, বন্ধুবৎসল

    মানুষ

    তাহারা দুইজনেই।

    "আমার বর অমুক, আমার বর তমুক", "জানো নীতা, আমার কর্তা না- একেবারে

    অপদার্থ, ডিম সিদ্ধ করিতেও জানে না, অথচ কত বড় ইঞ্জিনীয়ার সে!' এইসব

    সোহাগী কথাবার্তা, কূটকচালি শুনিতে শুনিতে শকুন্তলারও ইচ্ছা জাগে -

    আহা রে, তিনি যদি আজ পাশে থাকিতেন! সেই কন্দর্প্যকান্তিকে দেখিয়া এইসকল হেঁদি

    পেঁচিগণ হিংসায় খাক হইয়া যাইত।

    শকুন্তলা আন্দাজ করিতে পারেন নাই আজ সন্ধ্যায় যে পরীক্ষা দিতে যাইতেছেন, কয়েক

    পুরুষ পরে পুরুবংশের আর এক নারী প্রায় একই কারনে অগ্নি প্রবেশ করিবেন।

    সমাজ, সংস্কার বদলাইতে এত দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন!

    + + +

    ১৫ ই জুন,শনিবার, স্থান অ্যালবার্ট হল, সন্ধ্যা সাত ঘটিকা।

    লন্ডনের গ্রীষ্ম বড়ই মনোরম। দীর্ঘ শীতের অবসানে সকলেরই ফুরফুরে

    মেজাজ, শনিবার তায় বাঙলা জলসা, কলিকাতা হইতে গত বারের সফরে আনীত

    বমকাই বা গাদোয়াল অথবা বালুচরী শাড়ীটি দেখাইবার এবং পরনিন্দা

    পরচর্চা করিবার আবার একটি সুযোগ আগত। কানাঘুষা মারফত

    শকুন্তলা বৃত্তান্ত কাহারও অজ্ঞাত নহে। বিশেষতঃ বাঙলালাইভ ডট

    কম এর সৌজন্যে ভুবনময় বাঙালী diaspora, শকুন্তলা সম্পর্কে অবহিত, এই

    রসালো কাহিনী তো পড়িতেই পায় না!

    সামনের দিকের সারিতে মজলিশের চাঁইগণ উপবিষ্টা; বুখারেষ্টের যুথী,

    ম্যানচেষ্টারের ব্ল্যাকরোজ। হামবুর্গ হইতে দেবলীনা, ওদিকে হল্যান্ডের

    ডালিয়াদি নীল সিল্কে শোভাবর্ধন করিতেছেন। ভাইরাস শেল কোম্পানীর কাজের

    ফাঁকে হাজির। মজা দেখিবার সুযোগ কেহ ছাড়িতে চাহে! ইউ এস হইতে আটলান্টিক

    পাড়ি দিয়া মিনিয়াপোলিসের দোলা ওরফে রাঙাপিসি, ফিলাডেলফিয়ার নিনারায়-

    এক্কেবারে চাঁদের হাট বসিয়াছে যেন।

    হিমাদ্রী আসিতে পারে নাই, সে দিল্লী ছাড়িয়া স্বর্গে উর্বশীর নাচন কোঁদন

    দেখিতেও রাজী নহে। তবে হ্যাঁ, শ্রী শ্রী ১০৮ ভুতো এবং Earl অফ বারুইপুর

    কেদ্দানি করিয়া একটি ওয়েবক্যাম ফিট করিবার বন্দ্যোবস্ত করিয়াছে ষ্টেজের

    সামনে। বুনানের পকেট এখন ভারী, আটলান্টা হইতে উড়িয়া আসিয়াছে

    এই কারণে। উৎসাহী মজলিশীগণ কম্পুটারের সামনে অনিমেষ চক্ষু বসিয়া

    আছেন। ডিবাসু , বৈশাখী, অপর্ণা চ্যাটাইতেছেন বটে কিন্তু মন পড়িয়া

    আছে সেইখানে- কখন ঘন্টা বাজিবে।

    শ্রীমতি বৃষ্টি আকাশ গাঙ পরিত্যাগ করতঃ রুজভেল্ট নগরে ২১ ইঞ্চি

    স্ক্রীনের সামনে হুমড়াইয়া পড়িয়া আছেন। কিকি সম্প্রতি জেমসের প্রতি

    পুনঃপ্রসন্ন, তাহার সর্বদোষ ক্ষমা করিয়া দিয়াছেন এবং শকুন্তলার

    মঙ্গল কামনার্থে সকাল হইতে উপবাসও পালন করিতেছেন। আহারে, কালে কালে কি

    হইল!

    ট্রিপল A, অর্থাৎ অধীশ, অরিন্দম ও অমিত কাজের ফাঁকে ফাঁকে ওয়েবক্যামের

    জানালায় উঁকি দিতেছেন, আর যে দেরী সয় না।

    বলিতে দ্বিধা নাই, মাননীয় সম্পাদকও তাহার সম্পাদকসুলভ

    গাম্ভীর্য্য পরিত্যাগ করিয়া আম মজলিশীদের ন্যায় কম্পুটারের স্ক্রীন

    খুলিয়া প্রতীক্ষারত।

    + + +

    অনুষ্ঠান শুরু। পাশের giant স্ক্রীনে কলিকাতার দৃশ্য দেখানো হইতেছে,

    ঠিকমত আবহ সৃষ্টির নিমিত্ত, আরে ব্যাকগ্রাউন্ডের মাহাত্ম্য কে না জানে;

    গঙ্গার উড়ু উড়ু বাতাসে কত কি না হয় মুহূর্তের অসাবধানতায়! হাওড়া

    ষ্টেশনের বড় ঘড়ি দেখা গেল, যাহার নীচে আদি অনন্তকাল ধরিয়া প্রেমিক

    প্রেমিকাগণ (থুড়ি, b/f, g/f গণ) অ্যাপয়েন্টমেন্ট করেন। কত যে সুখদুঃখের

    সাক্ষী ঐ ঘড়ি।

    ও, আসল কথা বলিতেই ভুলিয়া গিয়াছি, দুষ্মন্ত বসু ও তাহার সাগরেদ মাধব

    হলের এক কোনে আসন গ্রহন করিয়াছেন। গুহ্য কথাটি অপ্রকাশিত কেনই বা থাকে।

    ওসমানের সহিত মাধবের বহুদিনের বন্ধুত্ব। মাধব দুষ্মন্তের সকল কাহিনী

    অবগত আছেন। যে কারণে উহাকে ভুজুং ভাজুং দিয়া এই জলসায় ধরিয়া

    আনিয়াছেন, ব্যাটাচ্ছেলেকে একটু শক ট্রিটমেন্ট না দিলে বুঝিবে না সে কি

    হারাইয়াছে।

    শুরুতেই যথারীতি বাচ্চাদের প্রোগ্রাম- আমাল সোনাল বানলা, আমি তোমায়

    ভালো বাছি।

    ধনধান্যে পুছপে ভলা আমাদেল এই বছুন্ধলা.....

    তারপর, এ কী!

    দেখা গেল, ছোট্ট খেলনা ধুতি পরিহিত একটি ক্ষুদে শিল্পী ধীর পায় রাজসিক

    ভঙ্গীতে স্টেজে আসিল। স্বর্গ হইতে দেবশিশুর আগমন যেন। কি রূপ, দর্শকদের

    মাঝ থেকে, " ও লে লে , ওলে বাবা লে, আয় একটু গাল টিপে দি" গুঞ্জন শোনা গেল।

    জনগণ বলিয়া দিতে হইবে কি, এই আমাদের প্রিয় ভরত?

    নমছ্কার, আমি শকুন্তলাপুত্র ভরত।

    " গোল্লা ছুতেল গোল্লা গুলো

    কোতায় যেন হালিয়ে গেল..

    ........."।

    দর্শকগণ উচ্ছ্বসিত, তুমুল করতালি থামিতেই চাহে না আর।

    দুষ্মন্তের কেমন যেন মনে হইতে লাগলো, ইহাকে তিনি কোথায় যেন দেখিয়াছেন, ।

    কোথায়, কোথায়, কোথায় দেখিয়াছেন ?

    সামান্য বিরতি, এরপর মেন প্রোগ্রাম। চিচিং ফাঁক হইতেই দেখা গেল

    বিষাদময়ী এক অসামান্যা রূপসী কীবোর্ডের সামনে। টুঁ শব্দটি নেই,সারা

    হল নিস্তব্ধ; কেবল তিনি একের পর এক গান গাহিয়াই চলিয়াছেন।

    এমন বাদরে সখা তুমি কোথা...।।

    তুম মুঝে ইউঁ ভুলা না পাওগে....।।

    কেয়া হুয়া তেরা ওয়াদা....।।

    কত দিন দেখিনি তোমায়.......।।

    তুমি শুনিতে চেয়ো না আমার মনের কথা.......।।

    এবং সবশেষে

    ও যে মানে না মানা...।।

    আমার সকল নিয়ে বসে আছি....।।

    এসো এসো আমার ঘরে এসো....।।

    গান শেষ হব হব, এমন সময় স্ক্রীনে ভেসে উঠলো বকখালির হোটেলের সেই

    লবি, দূরে উচ্ছ্বলিত গঙ্গার দৃশ্য, একে একে। (প্রসঙ্গতঃ মজলিশীগণের কেহই

    কিন্তু নীতিঘটিত কারণে চোখ বুঁজেন নাই, ড্যাব ড্যাব করিয়া প্রতীক্ষা

    করিতেছেন, বকখালি.><wmv আসিল বলিয়া; সরি, নো কিচ্ছু, ওসমান সাহেব

    ঘরের কেচ্ছা বাহির করিবার মত নির্বোধ নন।)

    এতক্ষণে দুষ্মন্তের টনক নড়িল, তিনি কি করিবেন , ইতস্তত করিতেছেন; ব্যাপার

    সাপার দেখিয়া মাধব উহাকে একটি রাম সাইড কিক মারিলেন সকলের অগোচরে।

    গুটি গুটি পায়ে মন্ত্র মুগ্ধের মত দুষ্মন্ত স্টেজের দিকে আগাইয়া গেলেন, সারা

    হল স্তব্ধ, সুযোগ দেখিয়া আলো ওয়ালা তাহাকে ফোকাস করিতে লাগিল ; স্টেজে উঠিয়া

    শকুন্তলা সমীপে সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত হইলেন। মার্গারেটের উপদেশ মনে

    পড়িতেই শকুন্তলা মনে মনে কহিলেন, বিড়াল মারিবার ইহা প্রশস্ত মুহূর্ত;

    ইঙ্গিত করিতেই দুষ্মন্ত সারা পৃথিবীকে সাক্ষী রাখিয়া কান ধরিয়া ওঠ বস

    করিতে লাগিলেন। শুরু করিবা মাত্রই শকুন্তলা তাহাকে জড়াইয়া ধরিলেন- অনেক

    হইয়াছে, আর কষ্ট দিয়ো না আমায়। আবহসঙ্গীতে," ওগো তুমি যে আমার" এবং

    সুদূর হায়দারাবাদে বুম্বার সিটি দিবার ঘটা - চিঁ--ইই।

    শকুন্তলা পরম আবেশে চক্ষু মুদিয়া ভাবিতেছেন, এবার আমিও বলিতে পারিব, "

    জানিলে সোমদত্তাদি, আমার বর এত সরল এবং অপদার্থ যে ..... খাইতেও শেখে

    নাই, বেচারা।'

    + + +

    আবহ সঙ্গীতে " বাজে বাজে রম্য বীণা' বাজিতেছে, শকুন্তলা, ভরতকে ক্রোড়ে

    লইয়া স্বামীসোহাগিনীর ভঙ্গীতে খিল খিল করিয়া হাসিতেছেন, আনন্দের চোটে

    তাহার নাক বন্ধ হইয়া গেল, তিনি দেশ কাল এবং গৌতমীর উপদেশ ভুলিয়া সিল্ক

    শাড়ীর আঁচলেই ভ্যাড় ভ্যাড় করিয়া নাক ঝাড়িলেন। হায়রে, আশ্রম বালিকে,

    এই সব বিশেষ বিশেষ কর্মে সূতীর রুমালই যে শ্রেয় তাহাও তিনি শিখেন নাই।

    ( যাত্রা সমাপ্ত)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন