এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ছোটবেলার পুজো

    ঋক আর কিছুনা লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ১০২০ বার পঠিত
  • আয়োজন বড় জরুরী। এই যে পুজোর আগের আয়োজন, মাঠে প্যান্ডেলের বাঁশ, রেডিওতে পুজোর অ্যাড, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, নিউমার্কেট হয়ে পাড়ার দোকানগুলোয় মানুষের গুঁতোগুঁতি, ফাঁকা জংলা মাঠে কাশ ফুল, এসব আয়োজন করে দিয়েছে পুজোর। এখন বৃষ্টি আসুক না আসুক কিচ্ছু আসে যায়না, আনন্দ হবেই। আনন্দের জন্য আয়োজন তাই বড় দরকার, সে আয়োজন বুঝিয়ে দেয় কেউ কোথাও অপেক্ষা করছে, অনেকটা যত্ন ভালোবাসা যেন ওই আয়োজনেই লুকিয়ে থাকে, মা খেতে দেয় যেমন আয়োজন করে, পরিপাটি ভাত তরকারি গুছিয়ে, লেবুর ফালি দিয়ে, সেই আয়োজনের প্রয়োজন।
    আজ যখন আসছি অফিসে, হঠাৎ করে টেম্পারেচার কমে গেলো, সব কিছু উন্মুখ, আকাশে ঘনশ্যামের ফাঁকে বিদ্যুৎ এর মুচকি হাসি....সে সময় রেডিওতে আশ্চর্যভাবে বাজছে 'তেরে হি তো পিছে পিছে বরসাত আয়ি...'
    সে আয়োজন উপেক্ষা না করে এক ফোঁটা দু ফোঁটা....ঝমঝম।
    লোকে বিরক্ত হয়ে গেছে বৃষ্টিতে জানি তবু প্রতিবার এই যে আকাশ কালো করে বিদ্যুৎ চমক, গাছপালা গুলোয় উন্মুখ প্রত্যাশা আর সে অমোঘ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৃষ্টির আগমন....প্রেমটা পুরোনো হয়েও হয়না যে এদের...

    পুজো এসে গেছে সে আয়োজন করে গেলাম ...ছোটবেলার গল্প , একটু একঘেয়ে একটু গ্যাদ্গ্যাদে নস্টালজিক, তা নিত্যনতুন চমকে মন মাঝে মাঝে চেনা গলি ধরে সে ভরসসায় দিয়ে গেলাম।

    *********************************************************************************************************
    কোনো কিছুর জন্যই নির্দিষ্ট অপেক্ষা ভারী চমৎকার হয়। মানে যে জিনিস আসবেই জানি বা হবেই জানি শিগগির সেরকম জিনিস এর অপেক্ষা। যেমন পুজোর মাস খানেক আগে থাকতে পুজোর অপেক্ষা। পুজো আসছে বলে আমার ছোটবেলার গল্পো মনে পড়ছে এবং শোনাতেও । আমার ছোটবেলা কেটেছে গাছপালা পুকুর মাঠ মানুষ জন দিয়ে। তাই বোধহয় এ সবকটা আমি আমি এখনো এত ভালোবাসি। হ্যাঁ ইনক্লুডিং মানুষ। আমি ক্যাবে উঠি কি ফেসবুকে বকবক করতে আমার আপত্তি নাই।জানতে শুনতে দেখতে আমার ভারী ভালোলাগে।
    ছোটবেলার কথা বলছিলাম না। আমার ছিলো মস্ত যৌথ পরিবার। জ্যাঠা জ্যেঠী কাকা কাকি দাদা দিদি ভর্তি। আমার বেশ মনে আছে আমাদের পেল্লায় একটা হাঁড়ি ছিলো ভাতের। মাঠে কাজ করতে আসা বা এদিক সেদিক সব মিলিয়ে জনা ত্রিশ জনের রান্না হতো। শুনতে ভালো বোধ হলে কি হয় খানিক বড় হয়ে টের পেয়েছি সে কি ঝঞ্ঝাট এর জিনিস। তবে সে এক মস্ত ব্যাপার বাপস। ভাতের ফ্যান গালার জন্য একটা নির্দিষ্ট উঁচু জায়গা থাকত, দুজন মিলে ওই মস্ত হাঁড়িটা নিয়ে হেলিয়ে দিতো কি এক কায়দায়। তারপর একটা জাঁতাও ছিলো আর শিলনোড়াটা একটা ফিক্সড জায়গায় বসানো থাকত। না দুটো শিলনোড়া থাকত একটা আমিষ মানে পিঁয়াজ রসুন বাটা হবে একটা নিরামিষ পোস্তো ফোস্তোর জন্য। আর আমাদের জেলে একজন নির্দিষ্ট ছিলো, মানে সবারই থাকত কিনা জানিনা তবে আমাদের বামুন, নাপিত আর জেলে নির্দিষ্ট ছিলো। নাপিত মানে হরেনকাকা আসত আমাদের ন্যাড়া করে দিতে
    । তবে মাছধরাটা একটা বিরাট ব্যাপার ছিলো। ভোরবেলা শংকর জেলে মানে আমার শংকর কাকা আসত, হাঁক দিতো, গ্রামের দিকে সকাল তাড়াতাড়ি হয়। লোকজন সব জড়ো হতো। তারপর সেই মাছ ভাগ বাটোয়ারা করে কেটে ধুয়ে প্রত্যেকের জন্য ঠিক করা.... সে এক যজ্ঞ্যি! ওই সময় মা জ্যেঠিমাদের কাছে গেলে কপালে দুঃখু থাকত। মাছ ফাছ তাই মোটেও রোজ ধরা হতো না। ওই বিশেষ দিনেই। বাকি কেনা। ছোটবয়েসে অত কিছু বুঝতাম না অবশ্য। বাড়ির ছোট ছিলাম, আমার বড় জ্যেঠু ছিলেন আমার দাদুর মতন, মানে আমার বড় জ্যেঠতুতো দিদি আমার মা এর বয়েসি ফলে আমার ঠাকুমা ঠাকুর্দার অভাব আমার বড় জ্যেঠু যাঁকে বাবুজি বলতাম তিনি আর বড় জ্যেঠিমা মেটাতেন। আমি ইশকুলে ভর্তি হবার আগে আমার বড় জ্যেঠিমার কাছে দুপুরে গপ্পো শুনতে যেতাম। সব রূপকথা আর ভূত। জানলার বাইরে একটা আতা গাছ ছিলো, সারা বছরে একটা বা দুটো আতা হয়ত ফলত আর পাশেই ছিলো একটা জামরুল গাছ। কি মিষ্টি জামরুল ফলত। পিছনের পুকুর জাম গাছ, জামরুল গাছ আর কি কি সব গাছ ছিলো আর ওইটেই ছিলো আমার কল্পনার রাজত্ব। ওই পুকুরটায় ডুব দিলেই আমি জানতাম সেইই পাতালপুরি পৌঁছব। রাজকন্যার থেকে ও বয়েসে তলোয়ার বেশী ইন্টারেস্টিং ছিলো।আমাদের পাড়া মানে আমাদের জ্ঞাতিরাই। সেইরকম সম্পর্কিত এক দাদা আমায় ধনুক বানিয়ে দিতো। এক কাকা আমায় গুলতি ছোঁড়া শিখিয়েছিলেন সে অবশ্য অনেক পরে, আরও বড় হয়ে। শীতকালের সকালে আর সন্ধ্যেবেলা আমাদের বাড়ির সামনে সবাই আগুন পোহাতো। আমিও যেতাম। আর বাবুজি আমায় নিয়ে মটরশুঁটি ক্ষেতে নিয়ে যেত আমিও তছনছ করতাম সারা মাঠ দাপিয়ে বেরিয়ে। আর ফেরার সময় একটা বাপুজি কেক বরাদ্দ ছিলো । কার কোলে পিঠে চড়ে থাকতাম সারাক্ষন কে জানে তবে মাকে আমার খালি রাতেরবেলা ঘুমোতে যাবার সময় ছাড়া লাগতই না।
    আমাদের দক্ষিনবাড়ির যে মাঠটা, ওই যে তারপর যে খালটা দেখা যায় ওপাড় টা কত কি যে হতো! আমার খাল পেরোনো মানা ছিলো একা একা নইলে আমি জানি ওখানে সাপের মাথার মণি ঠিক পাওয়া যাবে খুঁজলে। আর সেই যে মধুসূদন দাদার ভাঁড় সেও কি এখানে এত মেলা লোকের মধ্যে মিলবে নাকি। ওখানেই পাওয়া যাবে।
    গুপী বাঘার ক্যাসেট বাজতো ছুটির দিন দুপুরে শুনতে শুনতে বা আনন্দমেলা কি অন্য কোনো বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়তাম বা জেগে থাকতাম।বিকেলবেলা ফুটবল ম্যাচ থাকত। রোদ না পড়লে বেরোনোর অনুমতি ছিলো না, মা এর নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে টের পেলে এক পা এক পা করে বেরোতে গেলেই মা উঠে পড়ত আর আমি বাথরুম যাচ্ছি বলতাম। ঝাঁ ঝাঁ দুপুরের প্রতি টান কি তখন থেকেই কি জানি। আমাদের টিউবওয়েল এর হ্যান্ডেল ধরে ঝুলতাম, খিড়কির দরজা বন্ধ থাকত তাই পিছনের পুকুরের দিকে যেতে পারতাম না। কিন্তু আমাদের বাড়ির পিছনে আর একটা দরজা ছিলো, গরু গুলো কে ওই রাস্তা দিয়ে বের করা হত তা সবাই আমায় গরু বলত বলেই বুঝি ওই দরজার প্রতি টান ছিলো, ওখান থেকে বেরিয়েই আমতলা, গরুগুলো ওখানে বাঁধা থাকতো, ফোঁস ফোঁস নিশ্বাস ফেলত। ওদের মধ্যে একটা একটু শিং নেড়ে তাড়া করত বাকি সবকটা শান্ত মনে জাবর কাটত। আমতলা পেরোলেই ইঁটপাঁজা, ওইখানে সাপের খোলস মিলত কিন্তু ওই ছায়া ছায়া জায়গাটা আমার ভারী পছন্দ। ওইটে ছিলো আমার রাজপ্রাসাদ, আর খড়ের গাদাটা আমার দরবার। ভারি কুটকুটে আমার সিংহাসন কিন্তু সিংহাসন তো বটে।
    রথের দিন আমাদের ঠাকুরের কাঠামো পূজো হত। তারপরেই সেই ম্যাজিক অপেক্ষা। রোজ রোজ ইশকুল যেতাম আর দেখতাম খড়ের ঠাকুরের গায়ের মাটি পড়লো, মুণ্ডু আলাদা করে হবে। দো মেটে হবে এবার। আকাশের রঙ এর খেয়াল করিনি তবে মেঘ গুলো বেজায় ফূর্তি করতো। আমিও গাড়ি দাদা নিতে আসার আগে এক কলি হিন্দি গান গেয়ে নিতাম। আমাদের বাড়িতে হিন্দি গান গাওয়ার অর্থ ছিলো সে বখে গেছে। মেজদাদা জানলে তো হয়ে গেলো, স্কেল দিয়ে দেবে হাতের মধ্যে। হ্যাঁ মারধোর করার অনুমতি নিতে হতনা কারোর থেকে তবে মারলেই কাকা(আসলে জ্যাঠা আমি কেন জানিনা কাকা বলি) বা কাকি বা ফুলদিদি বা খুকুদিদি বা কেউ না কেউ এসে বকে দিতো আর মেজজ্যাঠা গুড়কাঠি কিনে দিত। গুড়কাঠি কি ভালো খেতে ।
    তারপর একদিন প্যান্ডেল বাঁধা শুরু হতো। আমি ইশকুল থেকে ফেরার পর খেলতে যাওয়া ফেলে ঠাকুর গড়া আর প্যান্ডেল গড়া দেখতাম। তারপর চব্বিশ বাইশ করতে করতে মহালয়া চলে আসত।
    মহালয়া তো চলে এলো। ভাবলে অবাক লাগে এত্ত গাছ পালা চারদিকে ছিলো কিন্তু একটাও শিউলি গাছ ছিলো না। শিউলি গাছ ছিলো স্কুলে, হস্টেলে থাকতে সকাল বেলা পড়া পড়া খেলতাম যখন দেখতাম গাছের তলাটা সাদা আর হলুদের কম্বিনেশনে ছেয়ে গেছে। কিন্তু কোনো পল্লী বা শহুরে বালা সে ফুল আমায় দেবার যুগ্যি মনে করেনি কখনওই। যাকগে কৈশোর না আমার ছোটবেলার কথা হচ্ছিলো। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়ার থেকে আমাদের টিভিতে দেখানো মহালয়া নিয়ে বেশী উৎসাহ থাকত। তখন কালার টিভি এসে গেছে, রংচঙে যুদ্ধ দেখতে ভারী ভালোলাগত। মেজজ্যেঠু আবার চারটের সময় উঠবেই আর চালাবেই। সত্যি বলতে কি, আমি এই বয়েসেও মহালয়া শুনতে বসলে একটা করে নতুন গান আবিষ্কার করি। যাই হোক ওই রেডিওর মহালয়া নিয়ে আমাদের একদমই উৎসাহ ছিলো না তাই শুনতামও না। আমাদের মানে আমার এক কাকা থাকত হিন্দমোটরে, সেই খুড়তুতো ভাই, দিদিরা আমার বয়েসী ছিলো তারা আসত, তারপর দিদিভাই মানে সব থেকে বড় দিদির ছেলে মেয়েরাও আমার বয়েসি তারাও আসত। এছাড়া আমার দিদি তো আছেই। পাড়ার ছেলেদের সাথে বিকেলে মাঠে যা খেলা হতো অন্যসময় তেমন বন্ধুত্ব ছিলো না। তার একটা কারণ তারা বেজায় শক্তপোক্ত ছিলো, আমি প্যাংলা দুর্বল সে লড়াইতে হেরে ঘরে ফিরতাম। তাছাড়া আর একটা কারন ছিলো গ্রামের দিকে লোকজনের মুখের ভাষা অত রেস্ট্রিক্টেড ছিলো না, এখনো নেই অবশ্য।তারা ওই বয়েসেই অনায়াসে খিস্তি দিতো আমিও সে জিনিস শিখে বাড়িতে বলে বেশ অভূতপূর্ব অভ্যর্থনা পেয়েছিলাম বলে বেশ মনে আছে। ফুলদিদি কলেজ থেকে ফিরে আমার জন্য আনা সন্দেশটা অব্দি লুকিয়ে দিতে পারেনি । ছোড়দি মানে আমার দিদি পর্যন্ত বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলো। সেবার যখন মা ওকে ঘরে খাটের পায়ার সাথে বেঁধে রেখেছিলো কে বাবুজিকে ডেকে এনেছিলো হ্যাঁ, এই শর্মাই তো নাকি। কোন আক্কেলে তুই মাকে বলতে গেলি " ম্যা ম্যা বাবু না **** বলেছে "!! যাকগে সে শোধ আমি নিয়েছিলাম এক খাবলা চুল তুলে এনে। সে অন্য প্রসঙ্গ। যা বলছিলাম, তা আশেপাশের ছেলেপুলেদের সাথে পূজোর সময় খেলার কোনো মানা ছিলো না। খালি মারামারি না করলেই হলো। মারামারি মূলত আমার ভাগনের সাথেই হতো অবশ্য। ঠিক বেছে বেছে যে সোজা প্যাঁকাটি টা আমি তুলে আনবো ব্যালেন্স করে আঙুলের ডগায় নিয়ে ঘুরবো বলে সেইটিই ওনার চাই। না পেলেই চিলচিৎকার করবে। ও আবার কি! আর আমি বাড়ির ছেলে ওরা নাকি কুটুম মানুষ ওদের দিয়ে দেওয়াই উচিতকর্ম। কই মামাবাড়ি আমি যখন যাই পাপুদা যখন বাজি ফাটায় আর আমায় বলে তুই বাচ্ছা ওদিকে গিয়ে দাঁড়া তখন তো কারোর উচিতকর্ম এর কথা মনে পরেনা। হুহ।
    তো মহালয়ার সময় যেটা দেখানো হত টিভিতে সেটা আবার ষষ্ঠী বা সপ্তমীর দিন দেখানো হত। অসুরের ওই ডায়লগ আর হাসিটা আমি ওর মধ্যে তুলে ফেলতাম। আমাদের অসুরের উপর বেশী শ্রদ্ধা ছিলো মনে হয়, গায়ের সবুজ রংটার জন্য কি? নইলে আমরা যখন নিজেদের মহালয়া করতাম ওই টিভির মতো অসুরের পার্টটা করার জন্য এমন লড়াই হবে কেন? আমাদের চার জনের মূল যে দলটা ছিলো তাতে মেয়ে কেউ ছিলোনা বলেই বোধহয়, আর সে বয়েসে নিজের পুরুষত্ব সম্পর্কে আমরা চার জনেই বেশ সচেতন ছিলাম দেবত্ব লাভের জন্যও সে বিসর্জন দিতে নারাজ ছিলাম। মহালয়ার পরেও স্কুল খোলা থাকত কিন্তু সে খালি সময় নষ্ট করা। আমি তখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম কাকারা আর দিদিরা কবে আসবে। চতুর্থীর রাতেই সব জড়ো হতো। মামাতো দাদা দিদি আর মাসতুতো দাদারাও আসতো কিন্তু ওরা ঢের বড় ছিলো তাই তাদের আমার তাদের নিয়ে কোনোরকম উৎসাহই ছিলো না। ওরা বোকার মতন না খেলে দিনরাত গান শুনতো আর আড্ডা মারতো। আমাদের ওদিকে ঘেঁষতে অব্দি দিতোনা। আমরাও থোড়ি পাত্তা দিতাম। মা মাসি জ্যেঠি দিদিদের আলাদা দল ছিলো ওদিকেও যেতাম না কি বকতে পারে বাবা। বাবা কাকারা কোথায় থাকত কে জানে এমনিতেই বাবাই এর সাথে আমার যোগাযোগ ওই রাতের বেলা গরম রসগোল্লায় আর সকাল বেলা আপিস যাবার সময় বাবাই এর পাত থেকে এক গাল খাওয়ায় ও একখানা করে লাল নোট ( দু টাকার নোট, পাঁচ টাকার নোট দিতে গেলেও আমি দুটাকাটাই নিতাম ওই লালের মোহে !! অথচ আমি কমিউনিজম বা ধর্মের ষাঁড় কিছুতেই তেমন শ্রদ্ধাশীল না!) পাওয়ায়। পূজোর সময় সে ভদ্রলোককে দরকার পড়তো খালি ক্যাপ ফুরিয়ে গেলে। এমনিতে ওই চতুর্থী বা পঞ্চমীর দিন মেজদাদা বন্দুক ক্যাপ সব এনে দিতো কিন্তু সে তো কেমন করে জানি এক দিনের মধ্যেই নেই হয়ে যেত।
    ঠাকুরের গায়ে গর্জনতেল মাখানো আর ডাকের সাজ হতো পঞ্চমীর দিন। চোখ আঁকাও ওইদিন রাতেই হতো বোধহয়, তারপর তো ঘিরে দেওয়া হত বোধনের আগে দেখতে দেওয়া হত না। কিন্তু ওই যে ফিনিশিং টাচটা দেওয়া হত ওই সময় আমরা সবাই হাঁ করে বসে থাকতাম আর আমাদের এক্সপার্ট কমেন্ট দিতাম। এবারের অসুরটা কেমন রোগাটে হয়েছে না? ক্লাবের ঠাকুরের ময়ূর টা দেখেছিস যেন সব পালক ঝরে যাবে এক্ষুনি। আর সাপটা আমাদের ঠাকুরেরই সেরা। সিংহটা বেশী ভালো হয়েছে না ইঁদুর সে নিয়ে আমাদের খুব গন্ডগোল হতো। কেন জানিনা দুগগা ঠাকরুন ছোটদের কাছে তেমন ইয়ে পেতেন না তার অস্ত্র শস্ত্র বরং বেশী আকর্ষণীয় ছিলো। একবার মহালয়াতে হেমা মালিনী দুর্গা হয়েছিলো, আমাদের জ্বলে গিয়েছিলো দেখে। মানে এটা একটা কথা হলো হ্যাঁ সারাক্ষণ নেচে যাবে সে আবার কি। একটা যুদ্ধ নেই ভালো, গল্পো নেই ভালো!! যত্তসব!! এর চেয়ে সেই যেবার কুমিরে মহিষাসুরের বাবা না কাকা কাকে টেনে নিয়ে গেছিলো সে বরং ঢের ভালো হয়েছিলো। এরকম সব কর্মব্যস্ত ভাবেই পঞ্চমীর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামত। বড়দের অত্যাচারে অত্যাচারিত আমরা ঝুলন্ত হয়ে ( মানে হেঁটে স্বেচ্ছায় তো আর যেতাম না

    অষ্টমীর সকাল মানে উপোস, অঞ্জলি, বাবাই এর দেওয়া জামা প্যান্ট পরে বেলপাতা ছুঁড়ে ঠাকুরের পায়ে দেওয়া এই ছিলো ছোটবেলায়। সন্ধিপুজো যদি অঞ্জলির আগে পড়ে তাহলে আলাদা ব্যাপার। সক্কাল সক্কাল কাকচান বকচান করে দৌড়ে ঠাকুরদালানে। মা, জ্যেঠিমা, কাকিমা, দিদিরা (আমার কিছু দিদি আছে যারা মা এর বয়সী), সবাই গিয়ে বসে গেছে, কচি কাঁচারা পরের ব্যাচ। অঞ্জলী দিয়েই ফের খেলা। এদিকে বাড়িতে বাড়িতে লুচি ভাজার গন্ধ। হ্যাঁ সপ্তমী অষ্টমীর দিন আমাদের নিরামিষ হয়। গাড়িদাদাকে আসতে বলা হয়েছে দুদিনই। দুপুরে মা থালায় করে লুচি নিয়ে আসছে, পিছনে টেঁপিদিদির মা বিভিন্ন সব তরকারির বাটি থালায় করে। জল আসন আগেই পাতা, গাড়িদাদা বসেছে, আমি খাটের উপর থেকে হেঁটমুন্ডু হয়ে দেখছি। মাকে বড্ড ভালো লাগে এইসময়টা, কেমন কপালে ঘাম লেগে সিঁদুর আর পুজোর টিপটা মিলেমিশে গেছে, গলার হারটা দুলছে নীচু হয়ে খাবার দেবার সময়। ছোটবেলায় মা এর আঁচলের চাবির আওয়াজ, চুড়ির আওয়াজ সব মিলিয়ে মা আসলেই বুঝতে পারতাম, আর পড়া ফেলে গল্পের বই পড়াটা লুকিয়ে ফেলতাম। বাইরে থেকে অরিত ডাকছে খেলতে যাবার জন্য, এদিকে গাড়িদাদাকে ফেলে চলে যাওয়াও যাবে না, মা আরো কাকে কাকে সব খেতে। আমি টিউবওয়েল থেকে জল এনে এনে দিচ্ছি। ফাঁক পেয়েই দে দৌড়। দুপুরবেলায় ঠাকুরচত্বরটা ফাঁকা ফাঁকা, আমরা চটাং চটাং করে ঢাক পেটাচ্ছি আনাড়ি হাতে। এম্নিতে দেয়না কিন্তু নেহাত বাবুদের ছেলেদের না করা যায়না। সন্ধ্যেবেলা সন্ধিপুজো হবে। ১০৮ পদ্মফুল চাই। ১০৮ টা বেলপাতা দিয়ে মালা হবে। ১০৮ খানা প্রদীপ জ্বালাতে হবে। সব কিছুর প্রস্তুতি অনেক কিন্তু পুজোর সময় খুব কম। অষ্টমী আর নবমীর সন্ধিক্ষনে সব অর্ঘ্য নিবেদন করতে হবে, না হলেই সব বৃথা। মাধঅবো আর আরেকজন পুরোহিত ওই সময়টা পরীক্ষা দেবার মতো করে মন্ত্র বলে যায় একমনে কোনোদিকে মন না দিয়ে, ঢাকিদের ঢাক বাজানো বন্ধ ও সময়, স্রেফ মন্ত্রোচ্চারণ আর ঘন্টা নাড়ার আওয়াজ। ধুনোর ধোঁয়ায় মন্ত্রের আওয়াজে সবার এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ঘোর এনে দিতো। ওঁং হ্রিং সিং কালিকায় নমঃ না কি যেন বলত, আসলে তো কালীমূর্তি এনে পুজো হতো তার। ক্ষ্যামের পুজো না কি যেন বলত চলতি কথায়। চণ্ডিকা পুজো। তারপর মাধঅবো ইশারা করলেই একসাথে ঢাক ঢোল বেজে উঠতো আর ওদিকে বোম গাছে আগুন ধরানো হতো, সন্ধিপুজোর আরতি শুরু হতো।
    অষ্টমীর সন্ধ্যেবেলার আরতিটা হয় প্রায় ঘন্টাঘানেক ধরে কি তারো বেশী। খেয়াল থাকেনা ঘড়ির। ঢাকি পুরোহিত সবাই তালে তালে মজে গেছে, দুর্গার মুখের গর্জন তেল চিকচিক করছে, ওই বুঝি পলক ফেলে। আমরা খেলছি তারপরের বড় হতে আড্ডা। অষ্টমীর রাতেই বোধহয় পারিবারিক একটা অনুষ্ঠান হতো, ভালো মনে নেই। গান আবৃত্তি নাচ এইসব আর কি।
    নবমীতে সকাল বেলা মাছ ধরতে আসতো , সে কথা আগেই লিখেছি। নবমীতেই তো যজ্ঞ হয় । নবমীর সন্ধ্যে থেকেই বিষাদ। দশমীর প্রনাম একটা বিরাট ব্যাপার । আমরা চার জন বেরোতাম প্রনাম করতে , সব্বাই বড় আমাদের থেকে , মিষ্টি খেতে খেতে ক্লান্ত হয়ে যেতাম । দু একটা জালি মিষ্টিও মুখে পড়তো , মানে তেল তেল গন্ধ হয়ে যাওয়া নাড়ু বা নিমকি । মুখে পুরে পাইপাই দৌড় ফেলার জন্য । যারা ঠাকুর ভাসান দেবে সেই সব বড় দাদারা , বড় মানে অনেক বড় আমাদের থেকে তারা নেশাগ্রস্ত।অত বুঝতাম না , খালি দেখতাম তাদের কথাবার্তায় তারা বাদে সবাই হাসছে । আচ্ছা নেশাড়ু আর পাগলে খুব তফাৎ নেই না? সিঁদুর খেলা হয় বরন কনকাঞ্জলির (চলতি নামে বলত কোনাকাঁচুলি) পর । বাবুজি দুর্গার কানে কানে বলে দিতো পরের বছর আবার আসে যেন শিবঠাকুরকে লুকিয়ে। বরন করে মা আঁচলে ভাপ এনে আমাদের মাথায় বুকে ছুঁইয়ে যাচ্ছে , ওদিকে নাচানাচি হচ্ছে । আমার মন খারাপ করছে একটু, ঘুমও পাচ্ছে ।তারপর তো এক, দুগগা মাইকি জয় আর আসছে বছর আবার হবে আর গাছবমার আওয়াজে পরের বছরের অপেক্ষা শুরু।

    ছোটবেলার পুজো নিয়ে লিখতে লিখতে কখন ওই সময়টায় ফিরে গেছিলাম, বাড়ি ভরা আত্মীয়, খেলাধুলো হইহুল্লোড়....আনন্দ অকারণ, দুঃখ গুলো সে সময়ের মাপে খুব বেশী, কিন্তু স্থায়িত্ব কম ছিলো, চড়চাপড় খেয়ে, কিংবা আছাড় খেয়ে কষ্ট হতো বটে বইতে হতো না। পুজোর পর অরিত রন্টিরা ফিরে গেলে কষ্ট হতো খুব, একাদশীর দিন ফাঁকা মন্ডপটা তাকানো যেতোনা স্রেফ কিন্তু তারপর আবার কিছুদিন পর সব ঠিক হয়ে যেত। হেমন্তের হাল্কা শীতে মা এর আঁচল এর নীচে গুটিশুটি মেরে শুয়ে, উমার( বড় জ্যাঠাইমা) সাথে লুডো অষ্টাকুট (একখান খেলা প্যাঁকাটি দিয়ে) খেলে, শীতকালে মাঠে সর্ষেফুল, শিশির মেখে, কচি অপুষ্ট মটরশুঁটি চিবিয়ে, সন্ধ্যেবেলা পুরোনো বাড়ির লোডশেডিং এ উমার কাছে গল্প শুনে বা বাবুজির স্টেথেস্কোপ মিছিমিছি কানে গুঁজে। বড় হওয়ায় আক্ষেপ আমার নেই, এমন ছোটবেলা ছিলো বলেই হয়ত, বুড়ো কখনই হবো না বলে হয়ত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ১০২০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • R. Boyal | ***:*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০১59295
  • খুব সুন্দর লেখা।
    কিন্তু ইয়ে, মানে ছোটবেলার পুজো, মানে আপনি তো এখনো বেশী বড় হননি। মানে এরকম কোন কথা নেই যে অল্প বড়দের ছোটবেলা থাকবে না, আর বুড়ো হতে অনেক দেরী, কিন্তু না হয়ে আর যাবেন কোথায়।

    তবে সেসব পরের কথা, লেখা খুব ভালো লাগলো।
  • ঋক আর কিছুনা | ***:*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৩৪59296
  • অনেক ধন্যবাদ দুজনকেই :) হিজিবিজি লেখা ধৈর্য্য ধরে পড়েছেন কমেন্ট করেছেন , মন ভালো হয়ে গেলো ।

    ইয়ে বয়স বাড়লেও বুড়ো না হবার সোজা উপায় তো সুকুমার রায় শিখিয়েই গেছেন সেই কবে ^_^
  • Santanu | ***:*** | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৪৩59294
  • অসাধারন। ছবির মতো লেখা। ছোটবেলা মনে পডে গেল
  • Arindam | ***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:৪৬59297
  • আপনার ছেলেবেলা মনে বেশ দীর্ঘ - ঈ এর জন্ম দিচ্ছে! ঃ) এই বুড়ো বয়সেও।
  • ঋক আর কিছুনা | ***:*** | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:২০59298
  • হাহাহা , ধন্যবাদ :D
  • ঋক আর কিছুনা | ***:*** | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৭59300
  • ধন্যবাদ মুনিয়া :)
  • Munia | ***:*** | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১২:৩৯59299
  • কত সমৃদ্ধ ছোটবেলা. কি সুন্দর স্মৃতি!
    ভাগ্যিস এক বন্ধু লিংক পাঠালো. তাইতো পড়তে পেলাম!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন