এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সংবিধানের ৩৭০ ধারা নিষ্ক্রিয়করণ ও রাজ্য ভাগ প্রসঙ্গে

    দেশকাল ভাবনা লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৯৩১ বার পঠিত
  • [জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধান স্বীকৃত বিশেষ অধিকার বিলোপ ও রাজ্যটিকে ভাগ করার সংবিধান বিরোধী পদক্ষেপ আসলে দেশের বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার উপর আঘাত, বিজেপি’র হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার গেম প্ল্যান আলোচনা করলেন- রতন গায়েন।]

    ভারতের রাষ্ট্রপতি ২০১৯-এর ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০(১) ধারা মোতাবেক এক আদেশনামায় জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের ‘সম্মতিক্রমে’ কনস্টিটিউশন (অ্যাপ্লিকেশন টু জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর) অর্ডার ২০১৯ জারি করে ১৯৫৪ সালে ও তার পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতি জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত যেসব আদেশনামা জারি করেছিলেন তা বাতিল করেছেন এবং রাজ্যের ক্ষেত্রে সংবিধানের সব ধারাগুলি বলবৎ হ’ল বলে আদেশ দিয়েছেন। ঐ একই আদেশনামায় সংবিধানের ৩৬৭ ধারায় ৪ নম্বর উপধারা সংযুক্ত করে জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত বিষয়ে যেসব বিষয়ে রাজ্য বিধানসভা যা রাজ্য সরকারের অনুমোদন আবশ্যিক ছিল সেসব বিষয়গুলিতে রাজ্যের রাজ্যপালের সম্মতিতে পদক্ষেপ গ্রহণের বিধান দিয়েছেন। আদেশের ২(ডি) অনুচ্ছেদে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ বা ঐ ধারার কোন কোন বিষয় নিষ্ক্রিয় হবে সে বিষয়ে রাষ্ট্রপতির আদেশনামা জারির ক্ষেত্রে ৩৭০(৩) ধারায় ঐ রাজ্যের সংবিধান সভার অনুমোদনের যে বাধ্যবাধকতা ছিল তা সংশোধন করে রাজ্য বিধানসভার অনুমোদনেই তা করা যাবে বলে রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞপ্তি মারফত আদেশ দিয়েছেন।

    এখানেই মোদী সরকার থেমে থাকেনি। ‘দি জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্টেট রি-অর্গানাইজেশন বিল২০১৯’ সংসদের দুই সভাতেই অনুমোদন করিয়েছে। এই বিলে রাজ্যটিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে দ্বিখণ্ডিত করা হয়েছে- জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে গঠিত হবে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (ঊনিওন তের্রিতোর‌্য) এবং লাদাখ -টি হবে আরেকটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। প্রথমটিতে বিধানসভার সংস্থান রাখা হলেও দ্বিতীয়টিতে তা থাকবে না।

    রাজ্যসভায় বিরোধীদের সংখ্যাধিক্য থাকলেও বিজেপি কূটকৌশলে বিরোধীদের ছত্রভঙ্গ করে সহজেই দুটি পদক্ষেপেই রাজ্যসভার অনুমোদন আদায় করেছে। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তা সহজেই অনুমোদিত হয়েছে। বিরোধীদের সব ন্যায্য যুক্তিকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। কার্যত বাম-কংগ্রেস ও ডিএমকে ছাড়া অন্য বিরোধী দল কেউই স্বৈরতান্ত্রিক ও সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপগুলির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস মৌখিক বিরোধিতা করেও ভোটাভুটির সময় কক্ষত্যাগ করে কার্যত পদক্ষেপগুলিকে সমর্থন করেছে। তৃণমূল সুপ্রিমো তো এই পদক্ষেপগুলিতে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছাড়া অন্য কোন বড় বিচ্যুতি লক্ষ্য করেননি।

    বেয়নেটের মুখে কাশ্মীরবাসীকে দাঁড় করিয়ে, কাশ্মীর উপত্যকাকে সেনাবাহিনীর হাতে দিয়ে, সব রকম মোবাইল, ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে, মিডিয়ার কণ্ঠ রুদ্ধ করেই মোদী সরকার ক্ষান্ত হয়নি- রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সহ সব আঞ্চলিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা গোলাম নবী আজাদকে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, সিপিএম ও সিপিআই সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও ডি রাজা-কেও বিমানবন্দরে আটক করে ফেরত আসতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে ঈদ উৎসবে সামিল হতে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না বলে দেশবাসীকে দেওয়া তার ভাষণে আশ্বস্ত করলেও মানুষের রাস্তায় বেরোনোর কোন ব্যবস্থাই গৃহীত হয়নি। কার্ফু ও ১৪৪ ধারায় রাজ্যটিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

    এমতাবস্হায় ‘লৌহমানব’ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বভাবতই উল্লসিত। লোকসভাতেই তিনি ঘোষণা করেছেন যে সংবিধানে ৩৭০ ধারা যুক্ত করে নেহরু যে ‘ঐতিহাসিক ভুল’ করেছিলেন, রাষ্ট্রপতির ৫ আগস্টের বিজ্ঞপ্তিতে ঐ ধারাকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ফলে সেই ‘ঐতিহাসিক ভুল’ সংশোধিত হল। তাঁর আরও দাবি এই পদক্ষেপের ফলে জম্মু-কাশ্মীরের ভারত অন্তর্ভুক্তি সম্পূর্ণতা পেল।

    আমরা তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য বা রাজ্যভাগের সংবিধান বিরোধী বিষয়গুলি নিয়ে পরে আলোচনায় আসব। প্রথমেই আলোচনা করব দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে পৈশাচিক উল্লাস প্রকাশ করেছেন তা আসলে ইতিহাস বিকৃতি। গোপন অ্যাজেন্ডা পূরণই যে তার মূল উদ্দেশ্য সে কথাটিকে আড়াল করতে চাইলেও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির স্বপ্ন সফল হওয়ায় যে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন তা থেকেই তার গেম প্ল্যানটিকে আড়াল করা যাচ্ছে না।

    ।। ২।।

    ‘ঐতিহাসিক ভুল’ সংশোধন প্রসঙ্গে

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করার আগে চর্চা করে আসা উচিত ছিল যে কোন পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীরের ভারতভুক্তি ঘটেছিল এবং কোন শর্তে জম্মু-কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং ভারতভুক্তিতে স্বীকৃত হয়েছিলেন। এখন সকলেই জানেন যে ১৯৪৭ সালের ভারতের স্বাধীনতা আইনের ৭(১)(খ) ধারা বলে দেশের ৫৮৫টি দেশীয় রাজন্যবর্গ ভারত বা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত (অীদ) বা এইসব রাষ্ট্রের সাথে কোন এক বিশেষ রাজনৈতিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার অধিকার পেয়েছিল। এই বিধানে ৫৬৫ টি রাজ্য ভারতে অন্তর্ভুক্ত হলেও হায়দ্রাবাদ, জুনাগড় ও সর্ববৃহৎ দেশীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ভারতভুক্তির চুক্তিতে (ঈন্স্ত্রুমেন্ত ওফ আেস্সিওন) সম্মত হয়নি। জুনাগড়ের নবাব ভারতের সাথে ভৌগোলিক নৈকট্য ও রাজ্যের হিন্দু গরিষ্ঠ প্রজার বাস্তবতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানের সাথে অন্তর্ভুক্তি পত্রে সম্মতি ও পাকিস্তানের তা গ্রহণের পরেও সেখানে গণভোটের রায়ে জুনাগড় ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। হায়দ্রাবাদেও মানুষের বিক্ষোভ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে হায়দ্রাবাদ ভারতের সাথে যুক্ত থাকে। কিন্তু হিন্দুরাজা হরি সিং জম্মু ও কাশ্মীরের স্বাধীন সত্তায় অনড় থেকেও শেষ পর্যন্ত যখন পাক সেনার মদতে সশস্ত্র পুশতুন উপজাতি ও পুঞ্চের বিক্ষুব্ধ মুসলিমরা প্রায় শ্রীনগরের দোরগোড়ায় হাজির হয়, তখন শেখ আবদুল্লার সমর্থন নিয়ে মহারাজা ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পত্রে শর্তসাপেক্ষে ১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবর স্বাক্ষর করলে ভারতীয় সেনা ঐ দখলদারদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। বিদ্রোহীরা উপত্যকা থেকে পশ্চাদপসরণে বাধ্য হলেও রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে রাখে যা ‘পাক অধিগৃহীত কাশ্মীর(ওক)’ বা আজাদ কাশ্মীর নামে পরিচিত।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় অবগত নন (বা না জানার ভান করছেন) যে শেখ আবদুল্লা তখন রাজ্যটিতে কৃষকের দাবিদাওয়া, শিক্ষা, চাকুরি ও গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। দেশীয় রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে যে অল ইন্ডিয়া স্টেট পিপলস কনফারেন্স গঠিত হয়েছিল ১৯৪৬ সালে সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন জওহরলাল নেহরু এবং সহ-সভাপতি ছিলেন শেখ আবদুল্লা। ঐ সময় শেখ আবদুল্লার ‘নয়া কাশ্মীর’ দাবিপত্রের মূল কথা ছিল দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাজনের বিরোধিতা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষকদের ন্যায্য দাবি দাওয়ার পূরণ। আরও স্মরণ করা প্রয়োজন যে ভারতের কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে (৫।১১।৫১ সালে) এক ভাষণে শেখ আবদুল্লা বলেছিলেন যে “ভারতীয় কংগ্রেস বরাবরই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন দিয়েছে। গণতন্ত্রীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আমরা যদি ভারতে যোগদান করি তাহলে সামন্ততন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র মাথাচাড়া দিতে পারবে না। তাছাড়া গত চার বছর ভারত সরকার আমাদের অভ্যন্তরীণ অটোনমিতে হস্তক্ষেপ করেনি।” পরবর্তী সময়ে অটোনমির প্রশ্নে নেহরু বা ইন্দিরা গান্ধির সাথে মতভেদের কারণে তাকে অন্তরীণ থাকতে হলেও তিনি মূলগতভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করেননি। বস্তুত নেহরুর সাথে দীর্ঘ আলোচনার পরে যে দিল্লি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তারই ফলশ্রুতিতে ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতি তার আদেশনামায় ভারতীয় সংবিধানের বেশিরভাগ ধারার প্রয়োগ ঘটাতে সমর্থ হয়েছিলেন। সেইসময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেল নেহরুর বিরোধিতা করেছিলেন বলে কোন প্রমাণ নেই। তার সঙ্গে নেহরুর দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য ছিল এই যে শ্রী প্যাটেল হিন্দু রাজার সাথেই বেশি বোঝাপড়া করে এগোতে চেয়েছিলেন। ঘটনা প্রমাণ করেছে যে মহরাজা তাঁর দৌত্যে সাড়া দেননি। নেহরুর উদ্যোগেই শেষ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীর ভারতে অন্তর্ভুক্ত হতে পেরেছিল। যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথা বলা হচ্ছে তিনিও যখন নেহরুর ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি তার বিরোধিতা করেননি। পরে তিনি যে দৃষ্টিতে বিরোধিতা করেছিলেন সেটির সম্পর্কে আমরা পরে আলোচনা করব। বিজেপি’র উদ্দেশ্য হল নেহরু বনাম প্যাটেল বিরোধকে অতিরঞ্জিত করে প্যাটেলকে আত্মসাৎ করা ও নেহরুকে বর্জন করা। এমনই আত্মসাৎ করার চেষ্টা চলছে গান্ধি ও নেতাজীকে নিয়ে। কারণ স্বাধীনতা আন্দোলনে তাদের কোনো নায়ক নেই।

    দেশের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমমন্ত্রীর হয়তো বিস্মরণ ঘটেছে যে শেখ আবদুল্লা বা তার পরের প্রজন্ম ভারতভুক্তিতে কোন অনাস্থা জ্ঞাপন করেননি। অথচ তিনি তাঁদের সম্পর্কে কাশ্মীরের এক ‘উপভোক্তা’ পরিবার হিসাবে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন।

    নেহরু’র দৃষ্টিতে ৩৭০ ধারা ছিল কাশ্মীরের সাথে ভারতের যোগসূত্রের সেতু। তার স্থির বিশ্বাস ছিল যে এই ধারার মধ্য দিয়েই জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় হবে এবং মানুষের সন্মতিতেই এই ধারার বিলোপ ঘটবে। বস্তুত বিগত বছরগুলিতে রাষ্ট্রপতি তার ৪২টি আদেশনামায় সংবিধানের প্রায় সব ধারাই এই রাজ্যটিতে সম্প্রসারিত করেছেন। ৩৫৬, ৩৫৭ ও ২৪৯ ধারা সম্প্রসারিত হওয়ার পরে কার্যত ভারতের সংবিধান এই রাজ্যে প্রযুক্ত হয়েছে। ধারাটি বেঁচে ছিল এক প্রতীক হিসাবে। সেই প্রতীককে ধ্বংস করে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘ঐতিহাসিক ভুলের’ সংশোধন করেননি, বরং এরা ‘হিমালয়প্রমাণ ভুলের’ বোঝা দেশের উপর চাপিয়ে দিলেন।

    জম্মু ও কাশ্মীরের ভারতে অন্তর্ভুক্তির সম্পূর্ণতা প্রসঙ্গে

    ভারতের সাথে যে জম্মু ও কাশ্মীর যুক্ত হয়েছিল তা ছিল অখণ্ড জম্মু ও কাশ্মীর— যার ভৌগোলিক সীমারেখা তথাকথিত ‘আজাদ কাশ্মীর’ পর্যন্ত প্রসারিত। যে জম্মু ও কাশ্মীরের সংযুক্তিকে পূর্ণ ভারতভুক্তি বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন সেটি সেই কাশ্মীর নয়। তাই অন্তর্ভুক্তি সম্পূর্ণ হওয়ার যে কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন তা সঠিক নয়। এটি যে সঠিক নয় সেটি তার নিজের দেওয়া ঘোষণাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘পাক অধিগৃহীত কাশ্মীরের জন্য আমি প্রাণ দিতে প্রস্তুত’। তার কথাতেই স্পষ্ট যে কাশ্মীরের ভারতে অন্তর্ভুক্তি সম্পূর্ণ নয়। তিনি অবগত আছেন কিনা জানা নেই যে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভায় ২৪টি আসন পাক-অধিগৃহীত কাশ্মীরের জন্য শুন্য রাখা হয়েছে। কাশ্মীরবাসীর আশা একদিন ঐ এলাকাটিও জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্ত হবে। বস্তুত কাশ্মীর নিয়ে যে বিবাদ তা ঐতিহাসিকভাবে সত্য। নেহরুর দেওয়া ‘গণভোটের’ প্রতিশ্রুতি পালন যে পাকিস্তানের জঙ্গি মনোভাবের কারণে সম্ভব নয় তা নেহরুই চুড়ান্তভাবে স্থির করে দিয়েছিলেন। আর এই বিবাদের মীমাংসা কিভাবে হবে তাও নির্দিষ্ট করা আছে ১৯৭২ সালের ২ জুলাই তারিখে ইন্দিরা গান্ধি ও জুলফিকার আলি ভুট্টো স্বাক্ষরিত সিমলা চুক্তিতে। এই চুক্তিতে ভারত-পাক সমস্ত রকম বিরোধ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই করতে দু'পক্ষই সম্মত হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে ১৯৭১ সালে ১৭ ডিসেম্বরে যুদ্ধ বিরতির সময়কালে যে নিয়ন্ত্রণ রেখা নিদিষ্ট হয়েছে তা মান্যতা দিতে দুই পক্ষই অঙ্গীকারবদ্ধ এবং দুপক্ষই ভীতিপ্রদর্শন বা বলপ্রয়োগে বিরত থাকবে।

    এমতাবস্থায় জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির আগেই ‘আজাদ কাশ্মীরের’ দাবি যেন ছেড়ে দিয়েই খণ্ডিত জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ বলে মেনে নেওয়া হল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই সত্য অস্বীকার করতে পারেন কিন্তু বাস্তব যে ভিন্ন কথা বলে তা তাঁর শত অস্বীকৃতিতে মিথ্যা হয়ে যাবে না।

    মোদী-শাহ জুটির আসল লক্ষ্য কী?

    মোদী-শাহের আপাত যুক্তি হল এই পদক্ষেপগুলি উপত্যকায় হিংসা ও সন্ত্রাস বন্ধ করবে এবং ৩৭০ ধারার ফলে উন্নয়নের যা বাধা ছিল তা দূর হবে। ৩৭০ ধারার কারণেই হিংসা অব্যাহত আছে বা উন্নয়নের গতিপথ রুদ্ধ হয়েছে কথাটির মধ্যে কোন সারবত্তা নেই। ৩৭০ ধারা ও ৩৫ এ ধারার ফলে উপত্যাকাটি যে জমি হাঙরদের থেকে উপত্যাকার জমিকে বাঁচিয়েছেন, চাকুরি ক্ষেত্রে স্থানীয়দের যে বাড়তি সুবিধা ছিল সে কথা উল্লেখ করেননি। একথা সচেতনভাবেই উল্লেখিত হয়নি যে কাশ্মীরের মতো দেশের অনেক রাজ্যেই সংবিধান বিশেষ অধিকার প্রদান করেছে। ৩৭১ ধারায় নাগাল্যান্ড, হিমাচলপ্রদেশ, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, অন্ধ্র, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও গোয়ার মতো রাজ্যগুলিতে সংবিধানের বিশেষ সুবিধা সম্প্রসারিত আছে। এইসব রাজের বৈচিত্র বিবেচনায় জমির অধিকার, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং চাকুরীর ক্ষেত্রে স্থানীয়দের বিশেষ অধিকার আছে। রাজ্যের সাংবিধান সভা ও বিধানসভা যে রাজ্যটিকে দেশের সাথে একাত্ম করার কাজে অবদান রেখেছে সে কথা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই উল্লেখিত হয়নি। কেন বিজেপি-পিডিপি সরকারের আমলে উন্নয়নের জোয়ার আসেনি সে কথাও তারা উল্লেখ করেননি। তাদের সৎ সাহস থাকলে এটি স্মরণ করতেন যে ৩৭০ ধারা বলে গঠিত জম্মু ও কাশ্মীর গণপরিষদ ১৯৫১ সালে গঠিত হওয়ার পর ১৯৫৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের ভারতভুক্তিতে সীলমোহর দেওয়ায় নেহরু প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পালিত হয়েছে বলে নেহরু অভিমত প্রকাশ করেছিলেন। আরও স্মরণ করা প্রয়োজন আমরা যে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলেমনে করি তার উৎসও কিন্তু ঐ রাজ্যের সংবিধানে ঘোষিত বার্তা— ‘জম্মু ও কাশ্মীর ভারতীয় ইউনিয়নের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ’। আর ৩৭০ ধারা বিলোপর ফলে উপত্যকায় বেসরকারি লগ্নির জোয়ার আসবে, সে কথাটি যে সর্বৈব অসত্য তা সব মানুষই জানেন। সারা দেশে তো ৩৭০ ধারা নেই, কিন্তু মোদী জমানায় বেসরকারি লগ্নির প্লাবন আসেনি। বস্তুত দেশের অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষিতে মোদীর মতো বাকপটু প্রধানমন্ত্রী যে অসার যুক্তির অবতারণা করে ৩৭০ ধারা বিলোপের পক্ষে সওয়াল করেছেন তা হাস্যস্পদ বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তিনি যে দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও যুবদের কর্মহীনতা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এইসব বিপর্যয় সৃষ্টিকারী মেকি দেশপ্রেমের বাতাবরণ তৈরি করছেন সে সত্য গোপন রাখতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।

    কিন্তু এটাই মূল বিষয় নয়। মূল বিষয় হল মুসলমানদের স্থায়ীভাবে ‘অপর’ হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া উপত্যকার মধ্যে। মুসলিম জনগোষ্ঠীকে অবরুদ্ধ করে রেখে দেওয়া। বিজেপি ও তাদের পূর্ববর্তন দল জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ হিন্দুরাজ্যের স্বপ্নই ফেরি করে এসেছেন। নেহরুর ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করে জম্মু ও কাশ্মীরে প্রদত্ত বিশেষ সুবিধা নাকচ করার দাবি করেছেন। হিন্দুপ্রধান জম্মুকে স্বতন্ত্র রাজ্যের মর্যাদা দাবি করেছেন। মনে রাখতে হবে ১৯৪২-এ ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময়ে। শ্যামাপ্রসাদ মুসলিম লীগের সঙ্গে যৌথ মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ছিলেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একটিও আঙুল তোলেননি তিনি। মনে রাখা দরকার যে বিজেপি'র হিন্দুত্বের মন্ত্রদাতা সাভারকার জিন্নারও আগে দ্বিজাতি তত্ত্বের সওয়াল করেছেন। এহেন বিজেপি বর্তমান লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগে তাদের সেই স্বপ্ন সফল করতে ৩৭০ ধারার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ও রাজ্যভাগের ব্যবস্থা পাকা করেছে। গেরুয়া প্লাবনে দেশকে ভাসিয়ে দিয়ে ভারতবিজয় সম্পন্ন করতে চাইছে। বিজেপির এই বিজয় সম্পন্ন হলে ভারত নামক বহুমাত্রিক ভারতের যে ধারণা দেশের মানুষের হৃদয়ে জাগরুক আছে তা অবদমিত হবে। এই লক্ষ্যেই বিজেপি জন্মলগ্ন থেকেই অবিচল— এই সত্যটি যদি আমরা বিস্মৃত হই তাহলে আমরা বহু মত, বহু বর্ণ ও বহু ভাষার ভারতকে বাঁচাতে পারব না।

    তাই তৃণমূল নেত্রী বিষয়টিকে লঘু করতে এবং বিজেপি’র পদক্ষেপকে পরোক্ষে মান্যতা দিতে এমন গুরুতর বিষয়কে পদ্ধতিগত ত্রুটি অ্যাখ্যায় অভিহিত করেছেন।

    কেন পদক্ষেপগুলি সংবিধান বিরোধী

    পদক্ষেপগুলির সাংবিধানিক বৈধতা বিচার করার অধিকার সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু যে কোন মানুষের সাদা চোখে পদক্ষেপগুলি অসংবিধানিক বৈশিষ্ট্যগুলি চোখে পড়বে।

    এক, রাষ্ট্রপতির ৩৭০(১) ধারা আদেশনামায় ৩৭০ ধারার বিষয়গুলি রদ করতে ৩৭০(৩) ধারায় আবশ্যিক ‘বিধানসভা’ ও ‘গণপরিষদের’ সম্মতি এড়াতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে ৩৬৭ ধারার অনুষঙ্গ এনে ‘রাজ্যের বিধানসভা’ বলতে রাজ্যের রাজ্যপালকে বোঝানো হয়েছে। অনুরূপভাবে ‘গণপরিষদ’ বলতে ‘বিধানসভা' বোঝানো হয়েছে। ৩৭০(১) মোতাবেক আদেশে ৩৬৭ ধারার বিষয়গুলির ব্যাখ্যা করা যায় না। রাজ্যের বিধানসভা ও গণপরিষদের সম্মতি এড়ানোর উদ্দেশ্যেই এটি করা হয়েছে যা সংবিধানসম্মত নয়।

    দুই, রাষ্ট্রপতির আদেশে রাজ্য পালকে শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি, তাকে গণপরিষদের ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ক্ষমতাপ্রদান স্বৈরাচারী ও সাংবিধানিক ক্ষমতার অপব্যবহার।

    তিন, রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি তাঁর সম্মতির অর্থ দাঁড়ায় একটি সরকার আরেকটি সরকারের প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া। রাজ্যপালের আদেশকে ‘রাজ্য বিধানসভার সম্মতি’ বলে মান্যতা দেওয়া যায় না।

    স্মরণ করা যেতে পারে, বিজেপি-পিডিপি জোট সরকার ভেঙে যাওয়ার পর রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সাথে বিধানসভার নির্বাচন করা সম্ভব ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। এখন অনুমান করার যথেষ্ট ভিত্তি আছে যে মোদী-শাহ জুটি এমনই এক অগণতান্ত্রিক ও সংবিধান বিরোধী পদক্ষেপ নেওয়ার অপেক্ষায় ছিল লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে প্রথম সুযোগেই তারা তাদের পরিকল্পনামাফিক কাজ হাসিল করেছে। প্রসঙ্গত আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল ৩৭০ ধারাকে সাময়িক ব্যবস্থা হিসাবে চিহ্নিত করা তথ্যবিরোধী। পাঠকেরা স্মরণ করতে পারেন যে কাশ্মীরের গণপরিষদ ১৯৫৭ সালে রদ হয়ে গিয়েছে। এই রদ হওয়ার অর্থ দাঁড়ায় তারা ৩৭০ ধারার রদ চাননি, স্বাভাবিকভাবে এই ধারাটি স্থায়ী ধারায় পরিণত হয়েছে। তদুপরি জম্মু ও কাশ্মীরের হাইকোর্টের আদেশেও এই ধারাকে স্থায়ী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়েও ধারাটিকে স্থায়ী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কাজেই ধারাটিকে অস্থায়ী বলে যে প্রচার আছে তা সঠিক নয়। প্রায় সাত দশক ধরে চলে আসা এক সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে উড়িয়ে দিতে সংসদে সকালে প্রস্তাবটি পেশ করে বিকেলে অনুমোদন করিয়ে নেওয়াটা কোন সংসদীয় রীতি হতে পারে না।

    রাজ্যের নাম বদল ও সীমা পুনর্গঠন সম্পর্কে

    সংবিধানের ৩ ধারায় রাজ্যের নাম বদল বা সীমানা নির্ধারণের নির্দিষ্ট বিধান আছে। রাজ্যের নামকরণ বা সীমানা পুনর্নির্ধারত করা হবে সেই রাজ্য বিধানসভার প্রস্তাব আবশ্যিক। জম্মু ও কাশ্মীরের এত বড় রদবদলের ঘটনায় জনপ্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজন বোধ করলেন না। রাজ্যপালের মতের ভিত্তিতেই সংসদ সিদ্ধান্ত নিলেন; আর জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধানকে অগ্রাহ্য করতে তো পূর্বেই রাষ্ট্রপতির আদেশনামা জারি করে সেই গণতান্ত্রিক পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন। রাজ্য সংবিধানে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ ছিল যে, রাজ্যের এলাকার বা নামের কোন পরিবর্তন করতে হলে রাজ্য বিধানসভার অনুমোদন আবশ্যিক। আগেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মোদী-শাহের এত তাড়া যে নতুন করে বিধানসভা নির্বাচন করে রাজ্যের জনপ্রতিনিধিদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন তারা ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি।

    কোনো সাংবিধানিক নিয়ম না মেনে একটি রাজ্যকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা যে কতটা স্বৈরতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিরোধী তা বলাই বাহুল্য। এটি মান্যতা পেলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে যে কোন রাজ্যকেই কেন্দ্র খেয়ালখুশিমত ভেঙে দেবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশবাসীকে জানিয়েছেন যে জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তিনি বিধানসভার নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। এমন কর্তৃত্বসুলভ ঘোষণা ভারতের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অকল্পনীয়। তিনি যখন মনে করবেন তখন রাজ্য ভেঙে রদবদল করবেন—তার ইচ্ছাতেই নির্বাচন হবে। লাদাখের মানুষের কোন মতামত দেওয়ার অধিকার আছে বলে তিনি যেহেতু মনে করেন না, তাই সেখানে বিধানসভা থাকবে না। ভারতের অন্যতম মৌল বৈশিষ্ট্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বজায় রাখতে মোদী-শাহ জুটির এই স্বৈরাচারী পদক্ষেপকে প্রতিহত করা প্রয়োজন।

    ঘটনার ‘আকস্মিকতায়’ রাজ্যাসীর সাথে দেশবাসী স্তম্ভিত। প্রতিবাদ সংগঠিত হচ্ছে। কংগ্রেস ও বাম নেতাদের কাশ্মীরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সংসদও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত। এমতাবস্থায় প্রতিবাদকে রাস্তায় নামিয়ে আনা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। মিডিয়ার অপপ্রচারের পাল্টা প্রচারে তাদের কুৎসার জবাব দিতে হবে। এই কঠিন সময়ে বামেদের সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই-এর ময়দানে নেমে মানুষের কাছে প্রকৃত সত্য তুলে ধরার কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। রাস্তার প্রতিবাদী কণ্ঠ জোরদার হলে মানুষ আসল সত্যটি বুঝতে পারবে। মোদী-শাহ জুটির আসল 'গেম-প্ল্যান' সকলের কাছে পরিষ্কার হবে। পদক্ষেপগুলি যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রত্যাহৃত হচ্ছে ততক্ষণ লড়াই জারি রাখা বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির জরুরি আশু কর্তব্য।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৯৩১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৭47689
  • "এই কঠিন সময়ে বামেদের সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই-এর ময়দানে নেমে মানুষের কাছে প্রকৃত সত্য তুলে ধরার কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে"

    নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই। তা বামেরা সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই-এর ময়দানে কবে নামছে?
  • Amit | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৪47690
  • নাহ, হংকং এ গন্ডগোল ইমমেডিয়েটলি না থামলে ডিসি কে আর শান্ত করা যাবে না। :) :)
  • a | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৫২47691
  • বামেরা সর্বশক্তি দিয়ে দিলীপ ঘোষকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চলেছেন।
  • | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:০৫47692
  • লেখার ভঙ্গী কেমন একঘেয়ে বোরিং। পুরোটা পড়ে উঠতে পারলাম না।
  • A | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৭:২০47693
  • puro lekhai DC er comment tai mone dhorlo :-)

    Do -di r shonge ekmot - agroho niye porte shuru kore shesh korte parlam na
  • debu | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৯:৪৬47694
  • বালের যুক্তি দিয়ে লিখেছে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন