এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • কলকাতায় থিয়েটারের টিকিটের দাম ও বিতর্ক

    SEPA লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ অক্টোবর ২০১৩ | ১২০৬ বার পঠিত
  • বড় বেশী লিখে ফেলেছি। কষ্ট করে পড়ে মত জানালে ভাল লাগবে। এবং আগেই বলে রাখি এ আমার অশিক্ষিতপটু মত। আমাদের এক বন্ধু টিকিটের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের সমালোচনার জন্য আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি একটি মত দিয়েছেন। অ্যাকাডেমিতে নাটকের শো হলে কতটা খরচ বিজ্ঞাপন নিয়ে তা জানিয়েছিলেন আমাদের থিয়েট্রিক্স এর পাতায়।

    নাম না করেই (যেহেতু এ বিষয়ে তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়নি তাই) তাঁর মতটা শুধু জানাচ্ছি প্রথমে। তিনি একজন দায়িত্ববান নাট্যকর্মী ও পরিচালক। তাঁর মতকে পূর্বপক্ষ হিসেবে রেখে আমার ব্যাক্তিগত মত জানাচ্ছি। এবং সেই উপলক্ষে আপনাদের কথা শুনতে চাইছি।
    _____________________________________________________________

    পূর্বপক্ষ।। একাডেমি অফ ফাইন আর্টসে একটি মঞ্চাভিনয়ের আনুমানিক খরচ কত সেটা কি আপনারা জানেন?
    হলভাড়া, আলোর খরচ, মঞ্চসজ্জা, রূপসজ্জা, আবহ, আনন্দবাজারে সবথেকে ছোট মাপের ২টি বিজ্ঞাপন (দয়া করে 'ডিস্ট্যান্ট মার্ক্সিজমের' আশ্রয় নিয়ে বলবেন না - 'আনন্দবাজার কেন? প্র্যাক্টিক্যালী এটা প্রমানিত যে, দর্শকরা আনন্দবাজারে বিজ্ঞাপণ দেখেই নাটক দেখতে আসেন, অন্যান্য বহু প্রচেষ্টা পূর্বে অসফল প্রমানিত হয়ে গেছে্), দলের সদস্যদের সামান্য জলখাবার, আশারিং চার্জেস, টিপস (দিতে হয়- না হলে অনেক অসুবিধা হয়), ইত্যাদি নিয়ে, খুব কম করেও ২৭০০০০-৩০০০০ টাকা। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া হয় ৫০ টাকা টিকিটের দাম করলে সবার সুবিধা হবে- তাহলে একটি শো এর খরচা তুলতে খুব কম করে হলেও ৫৪০-৬০০ দর্শক দরকার। এই ৬০০ দর্শক প্রতিটা শো-এ শুধুমাত্র আনন্দবাজারে ৩সেম বাই ১ কলাম এর বিজ্ঞাপন দেখে আসবে কি? বাস্তবে কি সেটা সত্যিই সম্ভব? বোধহয় না। দর্শকের কানের কাছে বা চোখের ওপর বারবার ধাক্কা না মারলে সে জানতেই পারেনা নাটকটির অস্তিত্বের কথা। একটি প্রযোজনার ৫-৬টা শো না হলে তার গুণগত মান সম্পর্কেও দর্শকের ধারনা করা সম্ভব নয়। তাহলে প্রথম শো থেকে ৬০০ দর্শককে টেনে আনতে হলে বেশ ব্যায়সাধ্য প্রচার দরকার- অর্থাৎ আরো অনেক বিজ্ঞাপণের (টাকার) প্রয়োজন।
    এটা শুধুমাত্র একটি শো এর খরচের পরিপ্রেক্ষিতে কথাটা বললাম। প্রযোজনাটি মঞ্চস্থ করার আগে তার একটি বিশাল খরচ থাকে প্রস্তূতিপর্বে। হিসেব করে দেখা গেছে আজকের দিনে একটি প্রযোজনা ঠিক করে বানাতে [আবার বলে বসবেননা যেন- মিনিমাম সেট, লাইট নিয়ে কাজ করুন। এটা একটি বোকাবোকা কথা। সারা পৃথিবীর প্রসেনিয়াম থিয়েটার দেখুন। ইন্টারনেট হাতের কাছেই রয়েছে। একটি প্রযোজনা (পড়ুন জাস্টিফিকেশন অফ এ টেক্সট অর কনসেপ্ট ফ্রম দ্য ডিরেক্টররস পারস্পেক্টিভ) যা ডিমান্ড করে, সেটা দিতেই হবে- সেটাই মিনিমাম, তার নীচে কিছু হয়না; যাঁরা বলেন এমন কথা তাঁরা হাতেকলমে কোনদিন কিছু করেননি বলেই হাওয়ায় কথা ছোঁড়েন] খুব কম করে হলেও ২ লাখ টাকা লাগে।

    এবারে একটু সাধারণ গণিতের আশ্রয় নেওয়া যাকঃ

    প্রযোজনা বানাতে খরচ ঃ ২ লাখ টাকা
    বছরে অন্ততঃ ১২ টি অভিনয়ের খরচঃ ৩.৬০ লাখ টাকা
    এই নিয়মিত থিয়েটারের কাজ চালানোর জন্য খুব কম করে হলেও ৩-৪টি ফুল টাইমার ছেলে বা মেয়ের প্রয়োজন। তাদের সংসার চালাতে হয়। অতএব তাদের হাতে সামান্য কিছু টাকা দিতে হবে। যদি ৫০০০/- টাকা প্রতিমাসে প্রতিজনকে দিতে হয় (আজকের দিনে কলকাতা শহরে একটি পরিবার টিঁকে থাকতে গেলে এটুকু নিশ্চয়ই চাই, কি বলেন?) তাহলে সারা বছরে আরো ২.৪০ লাখ টাকার প্রয়োজন।
    তাহলে মোট বাৎসরিক খরচ এই হিসাবে - (কম করেই ধরলাম)- ২+৩.৬+২.৪ = ৮ লাখ টাকা।

    ১২টা শো এ টিকিট বিক্রি করে (৫০ টাকা হারে) ৮ লাখ টাকা তুলতে ১৬০০০ দর্শক প্রয়োজন। একাডেমিতে মোট সীটই আছে ৭০০। প্রতিটি শো হাউসফুল হলেও ৮৪০০ র বেশি লোক হবেনা। বাকি টাকাটা আসবে কোথা থেকে? কল-শো এ বেশিরভাগ দলই বিশেষ কিছু লাভ করতে পারেনা যে সেখান থেকে ভর্তুকি দেবে। তাহলে? একটাই ভরসা সরকারী গ্রান্ট। সবাই সেটা পায়না। আর যে যত বেশি পায়, তার খরচও তত বেশি (ফুলটাইমারের সংখ্যা বাড়ে, খরচও বাড়ে, শো এর সংখ্যাও বাড়াতে হয়)। তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে টিকিটের দাম বাড়ানো ছাড়া গতি নেই।

    পাশাপাশি আরো একটা কথা-

    ৩০-৪০টা জ্যান্ত মানুষ পরিশ্রম করছে- সেখানে টিকিটের দাম বাড়লে এত বৈপ্লবিক কথা উঠে আসে, কিন্তু সিগারেটের দাম বাড়লে ত খাওয়া বন্ধ করে দেননা? ৩০-৩৫ টাকা দিয়ে চিকেন রোল কিনে খা্‌ন, এই যে ১৮ তারিখ থেকে মেট্রোর ভাড়া বাড়বে- তাতেও চাপবেন, অথচ কটা মানুষের পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিতে এত আপত্তি কেন?
    এটা অনেকটা বাড়িতে বউ পিটিয়ে পাড়ায় সমাজসেবী হবার মত প্রচেষ্টা বলেই আমার মনে হয়।

    তবে হ্যাঁ, কেউ কেউ সত্যিই এই খরচটা কুলিয়ে উঠতে পারেননা, কিন্তু নাটক দেখার ইচ্ছা আছে। তাঁদের জন্য বলছি, সরাসরি গিয়ে দলগুলির সঙ্গে কথা বলুন। আমার বিশ্বাস বেশিরভাগ থিয়েটার দলই আপত্তি করবেনা এমন নাট্যপ্রেমী মানুষদের কমপ্লিমেন্টারী দিতে। প্রসঙ্গত জানাই, আমাদের প্রতিটি নাটকে আমরা দল থেকে ১০জন মানুষের জন্য কমপ্লিমেন্টারী রেখে দিই নিয়মিত নাট্যানুরাগী (অথচ যাঁর আর্থিক সামর্থ্য নেই কেনার) এমন মানুষের জন্য। আপনাদের মধ্যে যদি কেউ এমন থাকেন তিনি বিণা দ্বিধায় আমাদের যে কোন শো (নিজস্ব) এর ১/২ঘন্টা আগে আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। তবে, আপনারা যখন মোবাইল বা ল্যাপটপে ফেসবুক করার মত সামর্থ্য রাখেন, তখন আপনাদের সামর্থ্যহীন ভাবাটা বোধহয় আমার ভুলই হবে। সে যাই হোক, কেউ নাটক ভালবাসেন বলে দেখতে চাইলে আমি অন্ততঃ খুশীই হব। কমপ্লীমেন্টারী দিতে আপত্তি করবনা- এটুকু গ্যারান্টিড।
    __________________________________________________________

    আমার কথা
    _______

    ১) অ্যাকাডেমিতে সকল দল শো করতে পায় না। এর বাইরের হলগুলোর মধ্যে রবীন্দ্রসদন ও গিরিশ ছাড়া বোধহয় খরচ অনেকটাই কম হলভাড়ার। অ্যাকাডেমি এখন ১০ হাজার হলে সুজাতা ৩ হাজার। নিশ্চই অ্যাকাডেমির মানের না সে হল। কিন্তু এই জাতীয় দুটো হলের মধ্যের খরচ ধরে মোটামুটি গড় করলে বোধহয় ছবিটা আরেকটু ঠিকঠাক আসে।
    হল= ৫০০০
    লাইট= ১৫০০
    মঞ্চসজ্জা (সেট ও প্রপার্টিজ) = ১৫০০(নিজেরা বানালে অনেক বেশী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এবং এটা এমন একটা কস্ট যে শো বেশী হলে একসময়ে 'জিরো'তে পরিণত হয়। বানাতে ধরা যাক ২০০০০ লেগেছিলো। ১০টা শো নিজস্ব হলে ২০০০; কলে ৩০/৪০ হাজার করে পেলে এবং অন্তত ৬টা কল পেলে উঠে আসে সবটাই। আবার না পেলে এবং না বানিয়ে ভাড়া নিলে বেশী মোটামুটি এমন হয় খরচ। আমি বানিয়ে নিই বলে সব সময় ভাড়াটা জানি না)
    মেক আপ= ১০০০
    কস্টিউম= (ভাড়া নিতে হলে/ না নিলে, মানে দৈনন্দিনের হলে কিছু নেই/ বানাতে হলে একটা সময় পরে কমে যায়) ১৫০০
    সাউণ্ড= ১৫০০ (প্লেয়িং কস্ট সমেত)
    মিউজিক= প্রাথমিকে রেকর্ডিং করতে হলে ১০ থেকে ১৫০০০, শো বাড়লে 'জিরো কস্ট'-এ যায় = ১০০০
    বহন খরচ= আলো ও সেট আলাদা আলাদা। ধরা থাকে তাদের মধ্যেই বেশীরভাগ সময়।
    অন্যান্য= খাওয়া+টিপস= ২০০০ ধরলাম
    টিকিট ছাপানো= ৫০০ (সাদা-কালোয়)

    তাহলে বিজ্ঞাপণ ছাড়া মোটামুটি ১০৫০০-মতন।

    আনন্দ বিজ্ঞাপণ ৩/১ ধরে বোধহয় ৮৫০০ টাকা। তাহলে ১৯০০০/২০০০০ ধরলাম। তাও কস্টিউম, সাউণ্ড, মিউজিক খরচকে নিজেরা সামলানোর রাস্তা কিছু আছে। বিশেষ মেক আপ না থাকলে নিজেরা করা যায়। এ ছাড়া শো বোর্ড ফ্লেক্স হলে অনেকগুলোর জন্য খরচ কমে।

    উপরের খরচগুলো আমার নিজস্ব কাজ করার অভিজ্ঞতা। সেট, মিউজিক, কস্টিউম, মেক আপ নিজেরা আমরা করে থাকি। কিছুটা সুবিধে হয়। যা হোক এই হিসেবে বছরে প্রযোজনার ব্যয়, বারোটা শো-তে ২,৪০,০০০ টাকা।

    প্রস্তুতিতে ব্যয় নিয়েও দু একটা কথা বলি। ফুলটাইমারকে দল থেকে টাকা দেওয়া হয় এমন দল খুব কম। স্যালারি গ্র্যান্ট্র ছাড়া ক্বচিৎ কদাচিৎ কেউ কেউ দিয়ে থাকেন। বেশী সময় দেওয়া লোক সাধারণত ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে। দলের কাজে যাতায়াতের ও খাওয়াদাওয়ার জন্য অল্প কিছু দল অনেক সময় খরচ দিয়ে থাকে। সেটা আমার দেখায় মাসে তিন চারজনকে দিলেও ১০০০ টাকার বেশী না। আমি কোনো গ্র্যান্ট বা সাহায্য ছাড়াও এক সময়ে দলে টাকা দিতাম কয়েকজনকে। ২০০৬ থেকে ২০০৫ সাল। কাউকে কাউকে নিয়মিত, কাউকে কাউকে অনিয়মিত। সব মিলিয়ে মাসে দেখতাম ৮০০০ থেকে ১০০০০ টাকা। এখনো যখন দিতে হয় তাতে গড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪৫০০ টাকা মতন। নিজের রোজগার থেকে দিতে হয় বলে এক পরিমাণ সর্বক্ষণ ধরে রাখতে পারি নি। কিন্তু এখন অব্দি খুব কম দলকেই এই টাকা গ্র্যান্ট ছাড়া আমি দিতে দেখেছি বা শুনেছি।

    এর বাইরে সারা বছর ঘর ভাড়া বাবদ গড়ে ১০০ টাকা করে ধরলে সপ্তাহে ৩ দিন ধরে চার/পাঁচ সপ্তাহের মাস অনুযায়ী ৩৬০০ থেকে ৪৫০০ টাকা। বছরে ৪০০০ গড় ধরলে ৪৮০০০ টাকা। আমাদের কাজে থিয়েটার ছাড়াও আলাদা আলাদা করে ক্লাস চলে নাট্যইতিহাস থেকে বিবিধ কলা সংলগ্ন বিষয়ের। ওয়ার্কশপ চলতো ২০০৯ অবদি। কাঠ থেকে কাঁচ নানান দ্রব্যের সেট-এ ব্যবহার শেখার ও হাতেকলমে বানানোর। আলোর ব্যবহার জানার জন্য আলো কেনা ও তার ব্যবহার। মেক আপ ও কস্টিউম ইত্যাদির কাজ। বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার শেখা, নাচের ক্লাস, মাইমের ক্লাস। ভিডিওগ্রাফি শেখাও একটা অংশ ছিল এর। সব মিলিয়ে সে সময়ে লাগতো বছরে ৩ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ। পরে বন্ধুদের সাহায্যে বেশ কিছুটা কমাতে পেরেছিলাম। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় কাজ শিখিয়ে যেতেন বলে কম হত খরচ।

    কিন্তু এটা নিয়মিত সব থিয়েটার দলে হয় না আমি জানি। গোটাটাই চলতো দলের দু একজনের উপরে নির্ভর করে। এখন আবার সে কাজ কিছু কিছু শুরু হয়েছে। সহায়তা বন্ধুদের পাচ্ছি বলে খরচ নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু প্রত্যক্ষত প্রযোজনা বাড়াতে খুব বেশী সংখ্যক দল কি আছেন যাঁরা এই মডেলে কাজ করেন? আমি এখনো বেশীরভাগ জায়গাতেই দেখি, নিয়মিত মহড়া হচ্ছে নাটকের, তার মাধ্যমেই প্রস্তুতি হচ্ছে। সেট, আলো, মিউজিক, কস্টিউম, মেক আপ সব নিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাইরে থেকে প্রযোজনার সময়। আমার মনে হয় একটু নিজেরা খাটলে অনেকটা খরচ ভবিষ্যৎ-এ কমে। সবচেয়ে বড় কথা এই শিক্ষাগুলো থিয়েটার কর্মীর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন বলেই মনে হয়।

    ২) টিকিটের দাম বাড়া নিয়ে বিতর্কটা আজকের না। নান্দীকার যখন প্রথম ৬০ টাকা টিকিট করলো তখনো তীব্র সমালোচনা উঠেছিল। সেই থেকে কয়েকটা কথা। একটি টেক্সট ঠিক কি চাইবে এটা নির্দেশক অনুসারে পৃথক। ইন্টারপ্রিটেশন-এর প্রশ্ন। প্রযোজনা ধরার সময় আমার সামর্থ্য অনুযায়ী ধরলে বোধহয় সেটাকেও সামলানো যায়। উদ্দেশ্য এখানে একটা খুব বড় বিষয়। আমি বিদেশী প্রযোজনার ক্ষেত্রেও কিন্তু এই ফারাকটা খুব বেশী করে দেখেছি। কিউবার একটি দল বেকেট করেছেন দুটো চেয়ার কয়েকটা চায়ের পেটির বোর্ড দিয়ে। আবার বেকেট করছে ব্রিটেনের একটি কোম্পানি, তারা গোটা মঞ্চটায় ক্যানভাস ও লেজারের ব্যবহারে বিপুল খরচে গিয়েছে। এটা তো কে কি ভাবে প্রযোজনা করবেন তাঁর তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী ও আদর্শের বিষয়। কেউ যদি বিপুল ব্যয়ে করেন তাতেও তাঁর আদর্শ, না করলেও তাঁর/ তাঁদের আদর্শ!

    বিজ্ঞাপনে আনন্দ অদ্বিতীয় এটা আগের সময়েও বলা হত, এখনো হয়। তবে আমি নিজের সংগঠন করার পর থেকে এখনো ওটা ছাড়াই কাজ কিছুটা করে দেখেছি শো-তে দর্শক হচ্ছে। ইন ফ্যাক্ট ইন্টারনেট-ই আমাকে অনেক দর্শক দিয়েছেন। এটাকে বাড়ানো যায় কি ভাবে সেটা ভাবা দরকার বোধহয়। বর্তমানে এক সময় আমি কাজ করতাম এমন দল বিজ্ঞাপণ দিয়েছেন এবং টানা দেওয়ার পরে সাফল্য পেয়েছেন। কিছু দলকে আমি জানি যাঁরা প্রযোজনার আগে স্প্ল্যানেড থেকে শিয়ালদা চষে ফেলেছেন লিফলেট দিয়ে দিয়ে। কলকাতার বাইরে হ্যাণ্ড মাইকে প্রচার একটা বড় কাজ।
    এবারে অভিনেতা ও দলের কর্মীদের যদি এই কাজে আটকে যেতে হয় তাহলে কি করে প্রযোজনা প্রস্তুতি হবে এমন প্রশ্নও এসেছে। আমরা তার মোকাবিলা করেছি, করছি। সমস্যা হয়, কিন্তু সামলানোও যায়।

    ৩) গ্র্যান্টটা নিয়ে বোধহয় কিছু কথা স্পষ্ট বলা দরকার। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতাতেই জানি গ্র্যান্টের জন্য যে টাকা পাওয়া যায় তা খুব কম না।

    স্যালারি গ্র্যান্ট-
    আর্টিস্ট= ৬০০০ টাকা মাসে= ৭২০০০ টাকা বছরে ( দল পিছু যদি ২ জন অন্তত হন তাহলে ১,৫৪,০০০ টাকা। এর মধ্যে বেশ কিছু দলে আমি স্পষ্ট জানি/ শুনেছি আর্টিস্ট মাসে ১৫০০ পান ভাউচার সই করে, বাকী অন্যত্র যায়। এটা অবশ্য আর্টিস্ট সংখ্যা ও প্রাপ্য টাকা দিয়ে হিসেবে হবে না। কেন না লিনিয়ার না ইক্যুয়েশনটা! যত বড় সংগঠন ও প্রভাব তত সংখ্যা ও টাকা বেশী। তার মধ্যে আর্টিস্ট হিসেবে টাকা কাটা না না কাটা আছে। কাজেই জটিল হিসেব।)

    গুরু/নির্দেশক= ১০০০০ টাকা মাসে= ১২০০০০ বছরে

    প্রোডাকশন গ্র্যান্ট= বছরে ৫ লাখ টাকা অবধি/ প্রয়োজনে বাড়তেও পারে মন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে

    এটা শুধু সেন্ট্রালের। রাজ্যের গ্র্যান্টও আছে। কিছু কিছু সংগঠন ৩৫০০০ টাকা করে পাচ্ছেন এ বছর রাজ্য সরকারের নীতি অনুযায়ী। এ ছাড়া আছে কর ছাড় গ্রুপ থিয়েটার সার্টিফিকেট-এর সুবাদে। অভিজ্ঞতায় জানি সেই সার্টিফিকেটও কারোর ক্ষেত্রে আটকে দেওয়া হয়।

    সে যাই হোক, এখানে যে কথাটা বলার তা হল স্যালারি গ্র্যান্ট বহু সময়েই যাঁর নামে আসছে তিনি পাননি এমন আমি খুব পরিস্কার করেই জানি। স্বল্প কিছু টাকা হাতে নিয়ে ভাউচারে সই করে দিয়ে থাকেন। নির্দেশকদের কেউ কেউ বেশ ভাল চাকরী করেন বলে নিজেদের নামের টাকাটা দলকে দিয়ে দেন।

    ***সাধারণ ভাবে যদি তাহলে খরচের হিসেব ধরি,

    ২,৪০,০০০+২,০০,০০০= ৪,৪০,০০০ টাকা+ বিজ্ঞপন ব্যয় ১০২০০০ (আনন্দতে ৮৫০০ গুণ ১২ টা বিজ্ঞাপণ ধরে)= ৫,৪২,০০০ টাকা

    প্রোডাকশন গ্র্যান্ট পেলে এর অনেকটা আসে। স্যালারি গ্র্যান্ট সঙ্গে পেলেও আরো বেশী। এর পরে শো থেকে আয়। খুব কম করে হলেও আসে। কল শো পেলে আয়। শো থেকে কালেকশন গড়ে ১০০ টাকার টিকিটে ৩০০ জন করে ১০ টা ধরলে ৩০০০০০ টাকা। আনুমানিক বললাম। বড় কাগজে বিজ্ঞাপণ দিলে সে রিভিউ করে এবং সচরাচর খারাপ বলে না। ব্যবসা মার খায় বলেই শুনেছি নইলে। কাজেই দর্শক সে রিভিউ পড়ে আসেন। থিয়েটারটি তেমন না হলে চারটে পাঁচটা শো মোটামুটি। মান থাকলে বা টান থাকলে কিন্তু বেশ কিছু শো হয়। কখনো তা কয়েক বছরে ৪০/৫০ টাও। এবং তার গড় উপার্জন ও কল শো-র উপার্জন মিলিয়ে বেশ একটা টাকা। বিশেষ করে কলের সংখ্যা বাড়লে তো টাকার অঙ্কও বেশ বাড়ে। কেউ কেউ শুনেছি ২৫০০০ ব্যয়ের প্রযোজনায় ৬০০০০ টাকাও নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে হলে যাতায়াত থাকা খরচ বাদে সে রেট ৭০, ৮০ তেও যায়।

    এ ছাড়া শ্যুভেনিয়র বানানোটা একটা পুরোনো রীতি। বছরে একবার বের করলে, সদস্যরা একটু ইনফ্লুয়েনশিয়াল হলে তাতে ন্যূনতম ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ওঠে। বেশীটা বেশ বেশী হতে দেখেছি। কেউ কেউ স্পনসর নিয়েই কাজ করেন। সেখানেও আয় আছে। কেউ কেউ প্রযোজক নিচ্ছেন আজকাল। তিনিও অনেক সময়েই বেশ থোক টাকা দিচ্ছেন। সেই অনুযায়ী প্রযোজনা ডিজাইন হচ্ছে। কাস্টিং-এ স্টার ভ্যালু থাকলে টাকা উঠছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে।

    তাহলে স্যালারি+প্রোডাকশন গ্র্যান্ট+কল ৪ টে অন্তত ব্যয় বাদ দিয়ে+শ্যুভেনির+হল= ৭২০০০+৪,০০০০০+৪০০০০+৫০০০০+৩০০০০০=৮,৬২০০০
    [স্যালারিতে কেটে নেওয়া টাকা ধরে। শ্যুভেনিরে ছাপার খরচ বাদ দিয়ে। স্টার ভ্যালু ও বিজ্ঞাপন ও ভাল রিভিউ নিয়ে হল ধরছি। এটা যাঁরা বড় এবং টাকা পান তাঁদে হিসেব আনুমানিক। ছোটদের নেই। মাঝারীদের এর আর্ধেক ধরা যায় আয়। তাও ৩ লক্ষ ধরলাম। বাকী ভর্তুকি বা অন্য সূত্রে ব্যবস্থা করার চেষ্টা এঁদের করতে হয়। তবে এর অনেকটাই বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে অনুমান, যেহেতু স্পষ্ট তথ্য কেউ দেন না।]

    গ্র্যান্ট না পেলে/ নিলে গোটাটাই পকেট থেকে। আবার প্রযোজনা তেমন না হলে বিজ্ঞাপণ দিয়েও কিছু হয় না।

    ছোট সংগঠনে কিন্তু দেখেছি টাকা দেবার উপায় নেই। সেখানে সদস্য চাঁদা বাবদ সারা বছরে সাকুল্যে ১০-১২ হাজার আয়। ছোট মঞ্চে স্বল্প ব্যায়ে প্রযোজনা করলে খুব বেশী হলে ৬০০০ থেকে ৮০০০ টাকা তাঁরা ব্যয় করতে পারেন। বিজ্ঞাপন নেই। প্রযোজনার সংখ্যা সব মিলিয়ে বছরে ৫/৬ টা। কল অনেক সময়েই ৩/৪ টা। বা একটিও কল নেই। তখন নতুন নাটক। বা আবার টাকা জোটার অপেক্ষা।

    এখানে টিকিটের দাম বাড়াটা সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে এর মধ্যে কোন কোন বিষয়ের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে বাড়ছে। খুব কম দল স্পষ্ট করে জানান যে তাঁরা গ্র্যান্ট পাচ্ছেন কি না! পেলে কি কি পাচ্ছেন! অনেকেই পাচ্ছেন সরকারী গ্র্যান্ট। বেসরকারী গ্র্যান্টও পাচ্ছেন। টিকিটের দামও বাড়াচ্ছেন। শো স্পনসরও নিচ্ছেন। শ্যুভেনিয়র, কল শো-তে বেশ বড় রেট করছেন। তারপরেও তাঁরা বলছেন খরচে কুলোচ্ছে না।

    এঁদের অনেকেরই নির্দিষ্ট সেট এলিমেন্ট, কস্টিউম এলিমেন্ট একাধিক প্রযোজনাতে কাজে লাগছে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। একাদিক্রমে অন্তত বছর দুই কস্টিউমে, সেট-এ ন দশ বছর কাজে লাগছে। নিশ্চই বোঝা যাচ্ছে যে তাতে টাকা পুষিয়ে বাড়তি হয়। মিউজিক ও রেকর্ডিং ঘুরয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার, নিজেরা কিছুটা শিখে লাইভ বাজানোর মধ্যে দিয়ে সাশ্রয় এগুলোও আছে। অভিনেতারা দু একজন বাদ দিলে সদস্য ও চাঁদা দিয়ে থাকেন। তারমানে টাকা নেন না, দেন।

    তাহলে ঠিক কি হচ্ছে এটা? ছোট দল টিকিটের দাম বাড়াতে সাহস করবে না। তার যে দর্শক সে দাম বাড়ালে যাও বা জন কয়েক আসেন আসবেন না। দামটাতো বাড়াচ্ছেন বড় দলেরা। এঁদের মধ্যে কজন গ্র্যান্ট পান না? বা কখনো পাননি? এক আধ বছর ব্যাতিক্রম হয়, সব বছর না। মধ্য পরিধিতে থাকা দলগুলোর এতে অসুবিধে হয় জানি। তাঁদের কখনো সখনো গ্র্যান্ট জোটে। কিন্তু তাঁদের সদস্যদের অর্থনৈতিক জোরও কম না। বেশ কিছু শক্তিশালী সদস্য সাধারণ ভাবে থাকেন। স্বল্প দল ব্যাতিক্রম।

    আমার দেখা অনুযায়ী এখানেও তিনটে স্তর এখন। একটা বেশ শক্তিশালী। অন্যটার কিছু নেই। ধুঁকছে। মাঝখানে দোলাচলশীল। শক্তি হতেও পারে, উবেও যেতে পারে।

    এত কথা কিন্তু ঠিক টিকিটের দাম বাড়ানো নিয়ে শুধু না। পরিপ্রেক্ষিত সাজানো নিয়ে। দাম বাড়ানোতে বেশ কিছু দর্শক যাঁরা নেট এ আছেন, সিগারেট, মদ, শপিং মল, গাড়ি ইত্যাদিতে অভ্যস্ত তাঁদের সমস্যা হবে না। আবার এখানেই কিছু মানুষ আছেন যাঁদের নিয়্যে আমরা নিয়মিত কাজ করি, তাঁদের একাংশের জন্য ছাড় প্রচুর দিতে হয়। নিয়মিত দলীয় কাজ হোক কি বাইরে ওয়ার্কশপ। আমরাই কেউ না কেউ যে সে খরচ বহন করি তার স্বাক্ষ্য এই কম্যুনিটিতেই মজুদ। এবং আমাদের ক্ষেত্রে কোনো সদস্য চাঁদা ছাড়া আয় নেই।

    সে কথা থাক। মফস্বলের এবং এই শহরের এক শ্রেণীর দর্শককে আমি চিনি। তাঁরা নিয়মিত থিয়েটার দেখতেন এ সময়ে। তাঁরা এখন বলেন যে গাড়ি ভাড়ার খরচ কুলিয়ে থিয়েটার দেখা তাঁদের আর সম্ভব না। এঁরা আইটি সেক্টর না। এঁরা ডাক্তার-উকিল-প্রফেসর-লেকচারার নিদেনপক্ষে স্কুল মাস্টার না। বেসরকারী অস্থায়ী কাজের লোক। রিটায়ার্ড কেউ কেউ। সরকারী কর্মচারী, ঘরের লোক অনেক। এঁরা একসময়ে ভীড় করতেন। সারা রাত লাইন দিতেন নান্দীকার উৎসবে। পদ্মা-গঙ্গাতেও আসতেন। এঁরা আসছেন না।

    এবং বন্ধু আমি জানি আপনি এঁদের যে কাউকে আপনার কাজ এমনিই দেখাবেন। এঁদের আপনি ভালবাসেন। কিন্তু কথাটা আপনার শুধু না। কথাটা টিকিটের দামেরও না। এই থিয়েটারের এককালের লয়াল দর্শকরা কই গেলেন সব? কথাটা অ্যাকাডেমিমুখী নাট্যচর্চা-ও। অন্যান্য হলেদের দূরবস্থারও। মুক্তাঙ্গনের কমিটেড দর্শক নেই। সুজাতা, যোগেশের কেউই নেই। তপন মন্দের ভাল। তাও কমিটেড কেউ নেই।

    আঞ্চলিক সেই দর্শক যাঁরা বাজার যাবার সময় হলের সামনে শো বোর্ড দেখে যেতেন। ঠিক করতেন কোনটা দেখবেন কবে! উত্তরে গিরিশ টিমটিম। মধুসূদন মঞ্চ দক্ষিণে এখনো তার নিজস্ব দর্শক বানাতে পারেনি। আমরা যারা শহরের নানা প্রান্তে কাজ করি তারা সকলে আঞ্চলিক ও কমিটেড দর্শক নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। বেশী বেশী করে বিজ্ঞাপণ ও পুঁজি নির্ভর হচ্ছি। থিয়েটারের বক্স অফিস থাকলে দেখা যেত এর ফল হচ্ছে!

    সব প্রযোজনা তার খরচ টিকিট বাড়িয়ে তুলতে পারছে? কটা পারছে? আগেও তো তাই হত! সব প্রযোজনা টাকা ফেরত পেত না। গত কুড়ি বছর বড় ছোট দলে কাজ করার সুবাদে তাই তো দেখছি। সমাধান কি? বেশী পুঁজি নির্ভর হয়ে স্টার+বাজার+কনটেন্ট থেকে ফর্মের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কমিয়ে নিরাপদ হওয়া? নামকরা কাহিনীকার, নামকরা অভিনেতা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা, নাকি অন্য পথ?

    যে কেউ যে পথ নিন তাতে আমার কোনো বিরোধ নেই। প্রশ্ন থাকবে মাত্র। ইচ্ছে হলে সে প্রশ্ন তাঁরা শুনবেন, না হলে শুনবেন না। আমি অল্প বুঝেছি। তাতে বারবার মনে হয় আজকে যখন আমাদের থিয়েটারের সোনালী সময় বলে শম্ভু-অজিতেশ-উৎপল ত্রয়ীর নাম করি, সঙ্গে রুদ্রবাবু, বিভাসদা, অশোকদা, মনোজদা এমন সব নানা মানুষ, তখন ভাবি কেমিস্ট্রিটা কি ছিল যে সেটা সোনালী সময় হল?

    এঁরা তো কেউ স্টার হয়ে মঞ্চে আসেননি। এসে হয়েছেন খ্যাত। অনেক সময় লেগেছে। সিনেমা, টেলিভিশন গ্রাস করেনি সবটা তখনো। করলে কি পারতেন না? পরের পর আন্দোলন কি থিয়েটারকে সাহায্যও করেনি কিছু ক্ষতি করার পাশাপাশি? মধ্যবিত্তর জন্য কাজ হয়েছে। শ্রমিক-কৃষকের কাছে গিয়েছে খুব কম কাজ। সে নিয়ে কথা বলছি না। কিন্তু মধ্যবিত্তই তো এসেছে। রবীন্দ্রনাথ, সার্ত্র, বাদল সরকার, মোহিত চট্টোপাধ্যায়, বেকেট, শেক্সপীয়র, ইউজিন ও নীল, ইওনেস্কু, গিরিশ কারনাড, বিজয় তেন্ডুলকর, মহেশ এলকুঞ্চওয়ার, পিরানদেল্লো - এমন সব কত কত কাজ দেখে গিয়েছেন। আপনার কাজ দেখেছেন। তাহলে আজ তাঁরা সেই ভাবে নেই কেন? যখন নেই তখন কি আমরা শুধু দাম বাড়িয়ে এর মোকাবিলা করবো নাকি অন্যান্য কিছু ভাবনা লাগবে? এটা একটা দুটো দলের সমস্যা তো আর না!

    সামগ্রিকভাবে দেখা বোধহয় জরুরী যে কেন হচ্ছে এমন! কেন এতদিনও বড় দল কাজ করতে পারে শুধু ছোট পারে না। তাহলে ছোট শুধু ছোট হয়েই থাকবে চিরকাল? বড় দল অর্থ সাহায্য পেয়েও দাম বাড়িয়ে আরো মুনাফা করবেন? পরীক্ষা-নিরীক্ষা কোথায় হচ্ছে? যাকে তাঁরা বলছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা তা কি সত্যিই তাই?

    অন্যান্য আঞ্চলিক থিয়েটার ফর্মের ভাষা, বিদেশী প্রযোজনার ভাষা আনা সে সব তো বহুকাল হচ্ছে। আমি জানি না বন্ধু, এর মধ্যের কোন কাজটা দেখে আপনি বলবেন যে সত্তর আশিতে এমন কাজের নমুনা নেই! লোকাঙ্গিক থেকে অজিতেশ-ও নিয়েছেন অকাতরে। মঞ্জরী আমের মঞ্জরী, পাপপূণ্যে প্রচ্ছন ছিল সে আঙ্গিক। তিন পয়সার পালাতেও ছিল। নিয়েছেন উৎপলবাবু। বিদেশী থিয়েটার থেকে বাদল সরকার, শম্ভু বাবু নিয়েছেন। উৎপল দত্ত, অজিতেশ আছেনই। বিভাসদা নিয়েছেন সোয়াইক গেল যুদ্ধে, লোকাঙ্গিক নিয়েছেন মাধব মালঞ্চীতে। চাকভাঙ্গা মধুতে। এমনকি লালদাও কোরিওলেনাসে চমৎকার কিছু কাজ দিয়েছেন। বিদেশী ও এ দেশীয় মিশ্রণের। কিম্বা প্রয়াত রমাদা। সব ছেড়ে দিচ্ছি, টেম্পেস্টটাতেই তো জমিয়ে দিয়েছিলেন, শেক্সপীয়র নিয়ে ফরাসী ব্যালের ভাবনার মতন। ব্রডওয়ের ছাঁচ সেই ইচ্ছেগাড়ি (আ স্ট্রীট কার নেমড ডিসায়ার থেকে) থেকে অসামান্য কাজে লাগানো। তাহলে এখনও চড়া সুরের লোকাঙ্গিক কেন এখানকার মঞ্চে? বড় দলের কাজে? কিম্বা এন এস ডি-র রাজভোজ জাতীয় কাজ বা অগ্নিবর্ষা অথবা শাওণ কি এক রাতের ছাঁচ কেন নতুনদের কাজে? আমরা কি থেমে যাচ্ছি?

    ছোট দলকে দেখছি চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কিন্তু সত্যিই তাঁদের বড় বিড়ম্বনা। অর্থ, কলাকুশলীদের প্রস্তুতি সব নিয়ে! আমিও ছোট সংগঠনের মানুষ। চাইলেও অনেক কিছু পারি না। বড়রা পারেন। আমরা শিখতাম। এখন বড়দের দেখছি কি? তাঁরা তেমন ভাল কাজ না করলে মানুষ কম আসবেন এটাই স্বাভাবিক না কি? টিকিটের দাম বাড়িয়ে সে ক্ষতি কি পূরিত হবে?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ অক্টোবর ২০১৩ | ১২০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ন্যাড়া | ***:*** | ১২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:২৫47577
  • লেখাটা ইনফর্মেটিভ। খরচাপাতির হিসেব থেকে ভায়াবিলিটির আন্দাজটা প্রয়োজনীয়। যেটা পড়ে খুব ভাল লাগল, স্টা হল হাতকলমে নাটকের নানান জিনিসপত্র শেখানোর ওয়ার্কশপ আর নাটকের ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান ইত্যাদির আলোচনচক্র চালান। শুধু ফলিত আঁকড়ে থেকে বেশিদূর যাওয়া যায় না। এখানে দুটো বক্তব্য আছে।

    প্রথম, যে কোন নাট্য-সংগঠকই এই অর্থকরী সমস্যার সামনে দাঁড়ান। অধিকাংশই যেটা বোঝে, সেটা উৎপল দত্ত করে দেখিয়েছেন। কমার্শিয়াল থিয়েটার লিজ নিয়ে চালান। হলের ভাড়া কমে যায়, বিজ্ঞাপনের ভাড়া কমে যায় - কারণ লোকে জানে লিটিল থিয়েটার দেখতে আমাকে মিনার্ভায় যে তে হবে বা মিনার্ভায় গেলে লিটিল থিয়েটার দেখা যাবে। এর ছোট মাপের জিনিস ছিল অ্যাকাডেমির দিন ভাগ। রোববার আর বেশপতিবার বহুরূপী, মঙ্গলবার নান্দীকার, বুধবার চেতনা - বাকিরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ইত্যাদি। এ আমি আশির দশকের কথা বলছি। দিনগুলো ভুলভাল হতে পারে, তবে মোদ্দা এই। মনে হায় আজ আর এরকম হবে না। কারণ দলের সংখ্যা - বিশেষতঃ নামী দলের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।

    দ্বিতীয় বক্তব্য কিঞ্চিৎ দার্শনিক - এত নাটক করে হবে কী? আমার এখনও বিশ্বাস যে ঠিকভাবে নাটক পার্ট-টাইমে অ্যামেচারিশভাবে করা চলে না। পূর্ণসময়ের জন্যে করতে গেলে সেখানে থেকে ভদ্রস্থ আয়ের ব্যব্স্থা করতে হবে। সেটা রেপার্টারি ধরনের ফ্রেমওয়ার্ক ছড়া সম্ভব নয়। এখন রেপার্টারিতে তো এত লোক নাট্যকর্মে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারবে না। আর সেখান থেকেই মনে হয়, সত্যি কি এত লোকের নাটক করার দরকার আছে? আমাদের নাটকের সিনটা অনেকটা লিটিল ম্যাগাজিনের মতন হয়ে পড়ছে না কি? অক্ষম, ভুষিমালে ৯৫% পূর্ণ? যাঁরা নিজেদের আনন্দের জন্যে বা নিজেদের শেখার জন্যে (যাতে পরে বড় দলে, সিনমায়, টিভিতে অভিনয় পেশা হিসেবে নিতে পারেন) তাঁরা কেন পয়সা দিয়ে নাটকের দলে নিজেদের আনন্দের বা শিক্ষার খোরাকি দেবেন না?

    তৃতীয় একটা ব্যাপার আছে। এখনকার অবস্থাটা আমি জানিনা, কিন্তু আগে স্টেজ ছিল সিনেমা আর টেলিভিশন অভিনেতার অ্যাক্টিং স্কুল। তো নাটক কি সিনেমা বা টেলিভিশনের সঙ্গে এরকম কোন ব্যব্স্থা করতে পারে না, যাতে এই অ্যাক্টিং স্কুল চালানোর ফি হিসেবে নিয়মিত টাকা তার দেয়?
  • SEPA | ***:*** | ১২ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৪৯47576
  • ***"২০০৬ থেকে ২০০৫ সাল।"

    এটা হবে ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল।

    দু;খিত।
  • শুদ্ধ | ***:*** | ১৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:১৩47578
  • ন্যাড়া,
    একবার চেষ্টা করেছিলাম নিজস্ব একটা জায়গা গড়ার। একটা ইন্টিমেট থিয়েটার স্পেস। নানা কারণে সে প্রোজেক্ট ফেল করেছে। ইচ্ছে আছে। জানি না কি হবে! তবে হলে কিন্তু অনেক কমানো যায় এই খরচ। অ্যাকাডেমিতে আর হবে না। গোটা কলকাতায় একটা মাত্র মানের থিয়েটার হল থাকলে কি আর হয়!

    পূর্ণসময়ের জন্য নাটক করার ব্যবস্থা আমাদের দেশে সত্যিই কি সম্ভব? অন্তত এই অবস্থায়? পূর্ণ সময়ের জন্য অন্যান্য মাধ্যমের শিল্পীও কি খুব বেশী? অন্য কোনো না কোনো আর্থিক সাহায্য ছাড়া টিকে আছেন এমন মানুষ কিন্তু সব ,মাধ্যমেই কম। এমনকি নিতান্ত চাকরীতেও এখন একজনের উপার্জনে কুলোচ্ছে না ন্যূনতম স্বচ্ছল জীবন। দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর মধ্যেই কাজ করতে হবে যে!

    এক সময়ে খুব আপশোষ হত গোটা সময়ের নাট্যকর্ম করার জন্য অর্থ নেই বলে। এখন আর হয় না। লোকসংস্কৃতির শিল্পীদের জীবন আমাকে একটা বিচিত্র শিক্ষা দিয়েছে। সারা বছরের আট/ ন মাস মাঠে কাজ করেন, তিন/ চার মাস করেন তাঁদের শিল্পচর্চা। সকলে করেন এমন না। ছৌ শিল্পীদের দলে দেখেছি অনেকেই সারা বছর কাজ করছিলেন। এখন পারছেন না। বেশ কিছু ক্ষেত্রে শো পাচ্ছেন না। ওইসব অঞ্চল ভরে গিয়েছে রগরগে গান ও নাচের টিমের ফাংশন-এ। এবং এটাও বেড়েছে মাওবাদীদের আনাগোণার পর থেকে। গভীর রাতে মূলবাসী অঞ্চলগুলোতে এখন বছরে অন্তত বারো বার মাইক বেজে চলে উদ্দাম। কলকাতা, আসানসোল, আশেপাশের কিছু গান-নাচের টিম সেখানে গান করেন। যা অত্যন্ত স্থুল যৌনতায় ভরপুর। নাচের জন্য মেয়েরা প্রায় নগ্ন। সক্কলে জানে, কিন্তু বন্ধ হবার রাস্তা নেই। ছৌ, অহিরা, টুসু, ভাদুর শিল্পীরা আমন্ত্রণহীন। সরকারী মেলা ছাড়া গ্রামীণ শো থেকে তাঁরা উচ্ছিন্ন প্রায়। কিন্তু যাঁরা অন্যান্য কাজের সঙ্গে করছেন তাঁরা পারছেন। তাঁরা কিন্তু প্রয়োজনে নিজেরাই করছেন। অল্প সংখ্যক দল হলেও এঁরাই মূলত টিকে থাকছেন।

    একই অভিজ্ঞতা আমার সুন্দরবন সংক্রান্ত ক্ষেত্রেও। আমি আমার মতন বুঝে নিয়েছি আমাকে যা আছে তার মধ্যেই কাজ করতে হবে। এবং সত্যি বলতে সে কাজ শুধু করার জন্য করলেও হবে না। আয়োজন যত সীমিতই হোক না কেন, রাঁধতে আমাকে হবে উচ্চাঙ্গের। সেখানে ফাঁকি পরলে হবে না। তাই যথাসম্ভব খাটি ও খাটাই।

    আর দ্বিতীয় কথায় বলি, একদম সত্যি কথা। তবে অনেকগুলো আরো কথা আছে। একটু একটু করে লিখবো।
  • π | ***:*** | ১৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:২৩47579
  • ' সরকারী মেলা ছাড়া গ্রামীণ শো থেকে তাঁরা উচ্ছিন্ন প্রায়।' এটাও তো চিন্তার আর ভাবার মত বিষয়। সরকারি শো চাপিয়ে না দিলে মানুষ নিজে থেকে এসব দেখতে আর পছন্দ করছেন না ? মানে, হিন্দি গান নাচের শো চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাই দেখছেন , এমন তো নয়। দুটোর মধ্যে চয়েস দিলেও এইসব লোকায়ত শিল্পকলা ছেড়ে হিন্দি নাচ গান দেখছেন। এটা কেন হচ্ছে ?

    আর একটা কথা, নাটক নিয়ে এত খাটাখাটনি হবে, পরিশ্রম করা হবে, সেটা এরকম বেগার কেন হবে ? এটা কেন দিন গুজরানের উপায় হবেনা , এটা আমারো প্রশ্ন। টিকিটের দাম বাড়াটা কোন সমাধান হতে পারে না, তবে কি সরকারি গ্রাণ্ট বাড়া উচিত ? নাকি সেখানে আবার বাধ্যবাধকতার প্রশ্ন এসে যাবে ?
  • π | ***:*** | ১৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:২৮47580
  • মানে, আমার প্রথম প্রশ্নটা হল, লোকশিল্প মার খাচ্ছে, হিন্দি নাচ গান দেখতে বেশি পছন্দ করছেন বলে, লোকায়ত ফর্মের নাচগান দেখায় উৎসাহ পাচ্ছেন না বলে, দেখে তেমন আনন্দ পাচ্ছেন না বলে নাকি হিন্দি নাচ গান বেশি হচ্ছে, লোকশিল্প সেভাবে হবার সুযোগই পাচ্ছে না বলে ?

    অন্যভাবে বললে, হিন্দি নাচ গান যে বেশি দেখছেন, সেটা বেশিমাত্রায় হচ্ছে, 'চাপিয়ে দেওয়া' হচ্ছে বলে, নাকি সেটার চাহিদা আছে বলেই বেশিমাত্রায় হচ্ছে?

    হ্যাঁ, টিভি, সিনেমা রিয়েলিটি শো দিয়ে এই হিন্দি নাচগানের চাহিদা তৈরি করা হচ্ছে কিনা সেই প্রশ্নও উঠবে। আমার প্রশ্ন , চাহিদা কি সবসময়েই নির্মাণ করা হয় ?

    আর, তাহলে সমাধান কী ? অন্যরকম শিল্পের চাহিদা 'তৈরি' করা ?
  • lcm | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৩২47589
  • বোঝো! উদাহারণ দিতে স্টার-দের নাম এনে ফেলল। অজিতেশ, শিশির ভাদুড়ি...

    আর গান। শ্রীকান্ত/লোপামুদ্রা তো স্টার শিল্পী, টিভিতে গানের কম্পিটিশনে তৃতীয় স্থানাধিকারীর-ও গান থেকে উপার্জন, নান্দীমুখের ছোট অভিনেতার থেকে বেশী।

    খুব কম লোক নাটক দেখে। তার কারণ কিন্তু এই নয় যে ভালো নাটক হয় না। ভালো নাটক হলেই লোকে দেখে না। বাজে সিনেমা হলেও লোকে দেখে। বাজে গানের কনসার্ট পয়সা দিয়ে শোনে।

    একটা কারণ হল শহরের কমার্শিয়াল থিয়েটারের অবলুপ্তি। এক সময় কিন্তু স্টার, তপন থেটার -- এসব দিয়েই কিছু মানুষের জিবীকা চলত। শিশির ভাদুড়ী নয়, এই ধরো লাইটম্যান, প্রম্প্টার -- এদের ঐ বেস্পোতি/শনি/রবি-র শো দিয়েই চলত। ফাইন্যান্সিয়ালি ফিজিব্‌ল একটা ইন্ডাস্ট্রি ছিল। আঁতলামোর গুঁতো খেয়ে এখন সেসব গেছে, এখন শুধুই আকাদেমি। অথচ কমার্শিয়াল/প্যারালাল মার্জ করেই এক্সপেরিমেন্ট হতে পারত।
  • শুদ্ধ | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৩৪47590
  • নানা মতামত পড়ছি এবং ভাল লাগছে। একে একে কয়েকটা কথা লিখে ফেলি।
    পাই, ওখানে চয়েস নেই। তবে গানটা ক্ষেত্র বিশেষে বাংলা, ক্ষেত্র বিশেষে হিন্দি। সে সব গান কোথায় কম্পোজ হয়, কোথায় রেকর্ড এও এক চমৎকার ব্যাপার। একটা নমুনা দিই।

    'লাল বেলুন দাদা হলদে বেলুন
    দেখে কিনুন দাদা দেখে কিনুন,
    জোর করে টিপলে দাদা ফেটে যাবে
    আসতে করে টিপলে দাদা আরাম পাবে
    ছোট ছেলে পেলে দাদা ভুলে যাবে
    তোমার মত পেলে দাদা মজা পাবে'

    এই গানটা এমন নাচের অনুষ্ঠানের একটি হিট গান। গানের সঙ্গে একেবারে হুবহু কথা অনুযায়ী এর অভিনয় হয় মঞ্চে। নাচের তালে তালে। এবং জামাকাপড় খসতে থাকে। এর রেকর্ডিং হচ্ছে কলকাতার ছোটোখাট স্টুডিওতে। কিম্বা মফস্বলে গজিয়ে ওঠা কিছু স্টুডিওতে। এ বারে যেখানে বাংলা বোঝে মূলবাসীরা সেখানে এগুলো চলছে, হিন্দি যেখানে বোঝে সেখানে অন্যগুলো।
    কথা হচ্ছে মহুয়া বাড়িতে বানালে পুলিশে ধরে, জুলুম করে। কিন্তু বাংলা ও চোলাই-এর বোতল সমস্ত হাটে রমরম করে বিক্রি হয়। সেই চোলাই খেয়ে এই অনুষ্ঠানের ভীড়ের উত্তেজনা নিশ্চই বলতে হবে না। আর এ সব অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা আঞ্চলিক ক্লাব যাদের পেট্রনও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই একেক মূলবাসী, অনেক সম্পত্তি করলেন/করেছেন। বাকীদের পয়সা নেই। তারা এখন বাড়িতে মহুয়া কালেভদ্রে বানাতে পারলে সেই খেয়েই মত্ত থাকে। নাচেগায় না। বড় অনুষ্ঠান করা তো স্বপ্নের বিষয়। তার মধ্যে গ্রামকে গ্রাম লোক চলে যাচ্ছে জন খাটতে। কোথায় লোক? কোথায় টাকা? আর যে সব অঞ্চলের কথা বলছি সেখানে টেলিভিশন কিম্বা ভিডিও হল দিয়ে বিশেষ চাহিদা তৈরী করা যায় না। টেলিভিশন নেই বললেই চলে। ভিডিও হল যা আছে তাতে চলে পর্নোগ্রাফি। খুব বেশী হলে দু একটা বাংলা-হিন্দি। অতএব ওখানে চাপানোটাই কারণ।

    এলসিএম, একটা কথা বিশেষ করে বলছি। আপনার অনেকগুলো কথা সত্যি। ভাল থিয়েটার হলে লোক কম আসবে এমন হতেই পারে। হচ্ছেও। তবে পেশাদার থিয়েটারের লোকদের জীবন কিন্তু থিয়েটারের টাকায় চলতো না। লাইট, সাউণ্ডের লোক ছেড়েই দিন, নাট্যকারের জীবনও চলতো না। কদিন আগে আমরা বিধায়ক ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করেছিলাম। সেখানে তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র গ্রাফিক বর্ণনা দিয়ে গেলেন আয়-ব্যায়ের। অনেক কুশলী ও খ্যাতিমান অভিনেতাকেও সে আমলের আমি জানি পেশাদারী থিয়েটার দিয়েও বাঁচতে পারেননি। সে আমলে লাইট সাউণ্ডের কলাকুশলীদের হাল আরো খারাপ ছিল। এখন যাও বা একাধিক কাজ করতে পারে, তখন করলে কাজটাই থাকতো না। মাইনে দিয়ে হলে যাদের রাখা হত তারা বাড়ির ইলেক্ট্রিসিয়ান থেকে নানা কাজ করে চালাতেন। বা অচল হতেন। অজস্র কর্মী এইভাবে পরিবার সমেত ডুবেছেন। আমি তার কিছু দেখেছি, কিছু শুনেছি। কাজেই আঁতলামোর গুঁতোতে এখন একটু হলেও সুযোগ বেড়েছে।

    পেশাদার থিয়েটার বন্ধ হয়েছে, সে ভাল কি মন্দ সে কথা অন্যত্র। কিন্তু ওটা সোনার দিন এমন না। আর হ্যাঁ, এটাও না। কেন না এখানেও খুব স্বল্প অর্থ বেশীরভাগের। দু একজন এখন স্যান্ট্রোও কিনেছে। পুরোনোদের অনেকেই এখানে মরেছেন কষ্টে। নতুনদের কেউ কেউ তার চেয়ে অবস্থা ভাল। বিশেষ করে শেষ দশ বছরে অনেকটা বদলেছে।

    বাকী কথা আবার পরে লিখবো।
  • কল্লোল | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০১47581
  • শুদ্ধর সাথে নানা সময়ে পুরো সময়ের সাংষ্কৃতিক কর্মী ইত্যাদি নিয়ে ছেঁড়া ছেঁড়া কথা হয়েছে। আমার মতও শুদ্ধর মতের কাছেই।
    লোকশিল্পীরা হাতের কাছে বড় অনুকরণযোগ্য উদাহরণ। জীবিকা ও ভালোবাসা আলাদা হলেই ভালো হয়। তার মানে এই নয় যে যারা গান গেয়ে, নাটক, ফিল্ম করে জীবিকা নির্বাহ করেন করেন, তারা ভুল করেন।
    ধরুন, কথার কথা, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ওনার সাক্ষাতকারে পড়েছিলাম, উনি এই যে এতো নানান উদ্ভট ফিল্ম করেন/করেছেন, সেগুলো থেকে জীবিকা ও ভালোবাসা নির্বাহ হয়েছে। ভালোবাসা বোলে তো নাটক। বছরে একটা নাটক করতেন, আরাম করে, আনন্দ করে।
    শম্ভু মিত্র আর বিজন ভট্টাচার্য ছাড়া আর কেউই শুধু নাটকের জন্য সারাক্ষণের কর্মী ছিলেন না। অজিতেশ, উৎপল, রুদ্রপ্রসাদ, বিভাস চক্রবর্তি, মনোজ মিত্র, মেঘনাদ, নীলকন্ঠ, অরুণ সকলেরই একটা মোটামুটি সংসার চালানোর মতো জীবিকা ছিলো। তারপরেও তারা অসম্ভব ভালো সৃষ্টি করে গেছেন।
    আমার জানা যাঁরাই সারাক্ষণের সাংষ্কৃতিক কর্মী হতে গেছেন, তারা সকলেই ব্যাতিক্রমহীনভাবে হারিয়ে গেছেন। শম্ভু মিত্র বোধ হয় বহুরূপী থেকে একটা মাসোহারা পেতেন। আমার ধারনা বিজনদা ও ঋত্বিক নিজেদের প্রতি অবিচার করেছেন।
    এখানে প্রকাশ বেলোয়ারির সাথে কাজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, শুধু টাকা রোজগারের জন্য এতো রকম কিছু করতে হয় যে নাটকে সময় কম পড়ে যায়। অথচ ওর নাটক দেখতে ২০০ থেকে ৫০০টাকার টিকিট কেটে শো প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ লোক হয় - এই ব্যাঙ্গালোরেই। সে বড় তে-এঁটে মানুষ। নাটক থেকে না নিজে টাকা নেয়, না অভিনেতাদের টাকা দেয়। টাকা খরচ করে সেট, হল ভাড়া, সাজ, মেক আপ ও সঙ্গীতে (সব সময় নয়)। তার পরে যা সামান্য থাকে (বেশীরভাগ সময়ে থাকে না), তা শেষ শোয়ের পর সেই নাটকের সাথে যুক্ত সবার জন্য পান-ভোজনে যায়। ব্যস ব্যালেন্স শিট মিলে গেলো। ইদানিং ম্যাড্রাস কাফের পর, বম্বে ডাকছে। সে না না করছিলো (সে ম্যাড্রাস কাফের সময়েও করেছিলো), আমরা কতিপয়, যারা ওর উপর রাগ করতে পারি, তারা মহা চ্যাঁচামিচি করে রাজি করিয়েছে। আশা করি এবার থেকে আরামে/আনন্দে নাটক করতে পারবে।
    এখানে নাটকের খরচ নিয়ে পরে আসছি।
    নাসিরুদ্দিন অনেকদিন ধরেই সিনেমার পয়সা দিয়ে নাটক করেন। ওদের সুবিধে হিন্দি আর ইংরাজিতে করেন তাই সারাভারতেই ডাক পান। আর সাংঘাতিক নামডাকের দরুন লোকে ৪ থেকে ৭ লাখ টাকা দিয়েও ওদের নাটক করায় ও টিকিট আর স্পনসরশিপ থেকে টাকা উদ্বৃত্ত হয়।
  • lcm | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০৫47582
  • নাটক আর কটা লোকে দেখে, তাই দিয়ে কি আর জীবিকা হয়।
  • সে | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:২৭47583
  • এই সমস্যার কথাতো গ্রুপ থিয়েটারের লোকেরা (ইন্‌ক্লুডিং বহুরূপী, নান্দীকার) সেই ষাটের দশক থেকেই বলে আসছেন। এঁদের আশা ছিলো বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে এঁদের নিজেদের হল হবে। সেসব আদৌ হয়েছে কি?
  • কল্লোল | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:২৮47584
  • সে তো এক ফিল্ম ছাড়া কোন কিছু দিয়েই জীবিকা নির্বাহ হয় না। কিন্তু আবার হয়ও তো। ধরুন শ্রীকান্ত আচার্য বা লোপামুদ্রা। গান গেয়েই তো চালাচ্ছে। এরা আলাদা করে আর কিছু করে না বোধ হয়। শ্রীকান্তের কথা অন্তত জানি, শুধু নিজে নয়, আরও গোটা ছয়/সাতেক মানুষের সংসার (আংশিক হলেও)চলে শ্রীকান্তের গানে। হ্যাঁ এদের বউ বা বর রোজগার করে হয়্তো।
    সেটা একটা অপশন হতে পারে। একজন সংসার চালায়, অন্য জন শিল্প করে।
  • কল্লোল | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৩০47586
  • কারুর কারুর নিজের হল আছে তো। সায়কের আছে। তারপরেও মেঘনাদ পুরো সময় ধরে অধ্যাপনা করেছে।
  • সে | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৩০47585
  • কেন হবে না? অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু অভিনয় দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন (হ্যাঁ যাত্রা করতেন, তো?)।
  • সে | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৪১47587
  • সমস্যাটা বোধহয় অন্যত্র।
    RSC তে যারা অভিনয় করেন (সরি, কোলকাতা নয় স্ট্র্যাটফোর্ডের কথা বলছি, কিন্তু অভিনেতারা তো অভিনেতাই) এঁরা খুব বেশি উপার্জ্জন তো করেনই না, ছুটিও তেমন পান না। খুব সাধারণ জীবন যাত্রা। সংসার করবার সময় ও নেই অনেকের।
    আবার এঁদের মধ্যেই অনেকে টিভিতে (সিরিয়ালে) করেন। সেখানে টাকা আছে। হলিউডেও যান কারণ নাম হয়ে গেলে ডাক আসে। তখন টাকা পয়সা ভালোই উপার্জ্জন হয়।
    কিন্তু শুধু অর্থোপার্জনের জন্যে কেউ থিয়েটারে আসে না। যে আসে সে ভুল করছে। অর্থোপার্জনের জন্যে হাজারটা অন্য পেশা আছে। ব্যবসা, আইটি, ওকালতি, ডাক্তারি, ব্যাঙ্কার, ... থিয়েটারের অভিনয় নয়। পশ্চিমের দেশ পূবের দেশ কোনোখানেই থিয়েটারের অভিনয় ওয়েলপেইড জব নয়। স্বাধীনতাও খুব খুব কম। নিজের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছুই প্রায় থাকে না। এঁরা ফুলটাইমার।
    আর কোলকাতার যে নাটকের কথা বলা হচ্ছে (মাফ করবেন সিল্ভুপ্লে) সেসবের মান অত্যন্ত সাবস্ট্যান্ডার্ড। অধিকাংশই বিদেশি নাটকের রিমেক।
  • সে | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:০৪47588
  • শিশির ভাদুড়িও সম্ভবতঃ শুধু অভিনয় দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
  • lcm | ***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৫৭47591
  • শুদ্ধ,
    এখন অবস্থা আগের থেকে ভালো হলে তো ভালো কথা।
    পেশাদারি থেটারের অবলুপ্তি নিয়ে যা লিখেছি তা ঠিক আমার কথা নয় - কিছুদিন আগে কোথায় যেন পড়লাম (সৌমিত্র চ্যাটার্জি বোধহয়) এই হাহুতাশ। সেখানে লিখেছিল যে এককালে থিয়েটার করে ব্যবসা হত - তপন থিয়েটারে নহবৎ সপ্তাহে তিনদিন - নাকি পাঁচ বছর ৯০% হাউসফুল গেছে। জানি না সত্যি কি না।
  • কল্লোল | ***:*** | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৩৬47592
  • ব্যাঙ্গালোরে ১৪হাজার টাকায় ৫টা শো হয়ে যায় রঙ্গশংকরায়। লাইট যা আছে, তাতে ভাড়া করার দরকার পড়ে কচ্চিৎ। প্রেক্ষাগৃহের মান ভারতের শ্রেষ্ঠতমগুলির একটি। ৩০০ আসন।
    টিকিট সাধারণতঃ ১০০টাকার। তেমন তেমন দল হলে, ৩০০টাকা অবধি দেখেছি।
    তবে নাসিরের নাটক এখানে হয় না। তার জন্য বেশী আসনের প্রেক্ষাগৃহ চাই। অন্ততঃ ১০০০ আসনের। তাতে টিকিট হয় ২০০০/১৫০০/১০০০/৫০০টাকার। টিকিটের জন্য হাপিত্তেশ কত্তে হয়।
  • শুদ্ধ | ***:*** | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ১০:৩২47593
  • lcm, এখন অবস্থা আগের চেয়ে ভাল মানে কিন্তু ভাল যাকে বলে তা না। ওই জন্যেই লিখেছি কয়েকজন করে খাচ্ছে, বাকীরা তথৈবচ। তবে চাইলে কাজ অনেক জায়গায় করতে পারে, এই অব্দিই।
    সাক্ষাৎকার বিষয়ক কিছু বলতে গেলে একটু ভেতরের কথা কইতে হয়। সে থাক! আজ সে ক্ষেত্র না। তবে একটা সহজ প্রশ্ন ভাবুন। যদি নহবৎ সপ্তাহে তিনদিন পাঁচ বছরে ৯০% করে ব্যবসা দিতে সক্ষম হয়েই থাকে তাহলে প্রযোজক কি উন্মাদ যে আর করলেন না কিছু? সাক্ষাৎকার বড় ভাল জিনিস। প্রশ্ন-টশ্ন না করাই ভাল সেখানে। হা হা হা হা হা...

    কল্লোলদা, দলের নিজস্ব জায়গা থাকলে এটাই হওয়ার কথা। রানিং ক্যাপিটাল দিয়েই লড়া যায়। ইনফ্রাস্ট্রাকচারটাই গড়ে উঠলো না যে আমাদের।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন