ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি : অবশেষে মুক্তমনা ব্লগার ও বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যা মামলায় জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি অভিজিতকে হত্যার হুমকিদাতা ফারাবির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার), আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির, মো. আরাফাত রহমান ও শফিউর রহমান ফারাবি।
এদের মধ্যে মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির শুরু থেকেই পলাতক।
মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, নাস্তিকতার অভিযোগ এনে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা, অর্থাৎ এ মামলার অভিযুক্তরাসহ মূল হামলাকারীরা সাংগঠনিকভাবে অভিজিতকে নৃশংসভাবে হত্যা করে । স্বাধীনভাবে লেখালেখি ও মত প্রকাশের জন্য তাকে নিজের জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয়। অভিজিতকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল, মত প্রকাশের স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করা। আর সে কারণে এ মামলার আসামিরা কোনো সহানুভূতি পেতে পারে না।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুক্তমনা ব্লগ সাইটের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে আ কুপিয়ে জখম করে জঙ্গিরা। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী বন্যা আহমেদও আহত হন।গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অভিজিৎ।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগ গণবিস্ফোরণ থেকে ছাত্র-জনতা একাত্তরের ঘাতক রাজাকার-মৌলবাদ গোষ্ঠির বিচারের দাবির পাশাপাশি ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার নিষিদ্ধের দাবি তোলে। এই আন্দোলন দমনে সে সময় থেকে সিরিজ ব্লগার হত্যা শুরু করে জঙ্গিরা।
এদিকে, অভিজিতের স্ত্রী, অনলাইন গ্রুপ থিংকবাংলার প্রতিষ্ঠাতা, মুক্তমনা লেখক বন্যা আহমেদ আগেই ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় তার আস্থা নেই। তাই অভিজিৎ হত্যার সুষ্ঠু বিচার তিনি আশা করেন না। গত ৬ বছরে এই হত্যার তদন্ত ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশের তদন্ত সংস্থা তার সাথে কোনো যোগাযোগই করেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বন্যা।
অবশেষে, ৬ বছর পর
ধামাচাপাই প্রায়, সরকারের মুখ রক্ষা। নাটের গুরু মেজর জিয়া আরও ডজনখানেক ব্লগারের গলা কেটে অনেক আগেই পগারপার!
"অভিজিৎ রায়ের ৬ জন হত্যাকারীর বিচার হলো আজ। এই বিচার অভিজিতের বাবা অজয় রায় দেখে যেতে পারেননি। মাও পারেননি। ৬ বছর লাগলো বিচার হতে। আনসারউল্লাহ বাংলা টিম নামের নতুন জিহাদি সংগঠনটির কিছু জিহাদিকে হাতকড়া পরাতে ৬ ঘণ্টা লাগার কথা ছিল। বিচার হতে ৬ দিন লাগার কথা ছিল, ৬ বছর নয়।
তসলিমা,
শেষ বাক্যে খানিকটা একমত, মৌলবাদের উৎস বন্ধ করার পাশাপাশি চাই ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, অন্যথায় জিহাদ, ধর্মান্ধতা, উগ্র মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি বন্ধ করা মুশকিল।
আবার গলা কেটেও অভিজিতদের কন্ঠ রোধ করা যায় না, এ এক চেতনার নাম, যার মৃত্যু নাই!
আপনাকে ধন্যবাদ
ওপরের পোস্টটা ফেসবুক থেকে কপি-পেস্ট | তসলিমা আজ পোস্ট করেছেন রায়ের পরে |
তসলিমা নাসরিন? আর আপনি?
যাহোক, প্রথম মন্তব্যটিতে পুরো নয়, আংশিক সত্য রয়েছে বলে চণ্ডালের অভিমত।
এছাড়া আরেকজনের কপি-পেস্ট মন্তব্যের বদলে নিজস্ব মত পেলেই ভাল হতো।
হ্যাঁ তাসলিমা নাসরিন | ওনার মতামত প্রাসঙ্গিক মনে হলো তাই কপি-পেস্ট করলাম | আমার মতামত নেই | আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু জানি না |
সংযুক্তঃ মুক্তমনা ব্লগ সাইটে বিবৃতি থেকে
"আমরা স্পষ্ট বলছি যে, বাংলাদেশ সরকার কেবলমাত্র অভিজিৎ রায় এবং অন্যান্য লেখকদের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের ধরতে ব্যর্থ হয়নি, বরং ধর্মনিরপেক্ষতা প্রসারের ক্ষেত্রে বাক-স্বাধীনতা রোধ করেছে এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় প্রচলিত ছিল অসাম্প্রদায়িক আধ্যাত্মিক মানবতাবাদ, যা দিক হারাচ্ছে সরকারের অদূরদর্শী ও হঠকারী নীতির ফলে। আমরা বিশ্বাস করি, দীর্ঘদিন থেকে দেশটির ইসলামীকরণ ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের মূল সংবিধানের মতাদর্শগত প্রতিশ্রুতিকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করছে এবং জঙ্গীবাদিদের উত্থান ঘটিয়েছে যার ফলে হত্যা করা হয়েছে অভিজিৎ রায় সহ জাতির অনেক সূর্যসন্তানকে।"