আমাদের বাড়ির গ্যারাজে একটা ড্রাগন আছে | আমি তার কথা প্রতিদিন সবাইকে শোনাচ্ছি |
একদিন আপনি, মানে সুধী পাঠক, দীনের কুটিরে পদার্পণ করলেন এবং ড্রাগন-দর্শনের অভিলাষ প্রকাশ করলেন | আমি আপনাকে গ্যারাজে নিয়ে গেলাম, আপনি বললেন, "ড্রাগন কই?" আমাদের বাড়ির গ্যারাজে একটা ড্রাগন আছে | সুধী পাঠক একদিন (মানে আষাঢ়এর বাইশে) আমার
অশরীরী ড্রাগন, চোখে দেখা যায় না |
"ও তাই নাকি? তাহলে একটা ইনফ্রা রেড ক্যামেরা নিয়ে আসছি, তাহলে ওর heat signature ধরা পড়বে !"
না, ও আলোর ইনভিসিবল স্পেকট্রামও absorb করে নেয় | ইনফ্রা রেড বা আলট্রা ভায়োলেট বা এক্স রে ফোটোগ্রাফি দিয়ে ওর ছবি তোলা যাবে না |
"আচ্ছা, মাটিতে ভালো করে যদি পন্ড'স ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে রাখি? পায়ের ছাপ পড়বে!"
না ও weightless ; সারাক্ষণ বাতাসে ভেসে থাকে | মাটিতেই নামে না, পায়ের ছাপ পড়বে কি করে?
"ও, তাই বুঝি? আচ্ছা, আগুনের নিশ্বাস ছাড়ে?"
বাহ্, ছাড়বে না? ড্রাগন বললাম না?
"ওকে, তাহলে ধোঁয়া তো দেখা যাবে?"
না অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু দেখতে পাইনি | ওর আগুন স্মোকলেস |
"খাইসে! মহা বিটকেল ড্রাগন তো? তাহলে একটা ক্যালরিমিটার আর একটা ম্যাক্সিমাম মিনিমাম থার্মোমিটার এনে রাখছি | উত্তাপের ডিফারেন্স থেকে আগুনের ব্যাপারটা বোঝা যাবে |"
বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, ওর আগুনে কোনো উত্তাপ নেই | থার্মোমিটার দিয়ে টেস্ট করলেও বোঝা যায় না |
এখন সুধী পাঠক প্রশ্ন তুলতেই পারেন, এমন অশরীরী, নিরুত্তাপ, ধোঁয়া-বিহীন ড্রাগনকে সত্যি ড্রাগন বলা যায় কি না, কিন্তু আমি অটল! বলছি না, ড্রাগন রয়েছে? আপনি কেমন ভদ্রলোক, মশাই, যে আমাকে মিথ্যুক বলছেন?
আসলে, কন্সপিরেসি থিওরির ব্যাপারটা এইরকমই| আপনি যতই সুযুক্তি দিয়ে আমার কথাটা প্রমাণ করবার চেষ্টা করেন, আমি ততই এমন সব যুক্তি খাড়া করি, যার কোনো উত্তর দেওয়া সম্ভব নয় |
এবং শেষ মেশ ব্যাপারটা দাঁড়ায় 'আপনি বলছেন, আমি বলছি' মার্কা একটা তর্কে |
আজকের করোনা ভাইরাস অতিমারীর ক্ষেত্রেও সেই একই ব্যাপারগুলো খাটে; বাজারে অনেকগুলো কন্সপিরেসি তত্ত্বের জোয়ার চলছে, চায়ের দোকান, পাব, শুঁড়িবাড়ি ইত্যাদির এক্সপার্টরা সেগুলো সম্বন্ধে নানা হাড় হিম করা ফতোয়াও দিয়ে চলেছেন | মুশকিল হয়, যখন সেই কন্সপিরেসি থিওরীগুলো চায়ের দোকানের গন্ডি পেরিয়ে জনগণমনসে দাগ কাটতে আরম্ভ করে | সেটা আমাদের করোনীল (বাবা রামদেব উবাচ), পাঁপড় ভাজা, অথবা অতলান্তিকের পরপারে Bolsanaro বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্পোদ্গার শুনলেই বোঝা যায়|
কারণ তখন, সবারই ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বাড়তে আরম্ভ করে |
তাহলে দেখা যাক পয়লা নম্বরের তত্ত্বের :
# ১ | করোনা ভাইরাস চীনের তৈরী একটি জৈবিক অস্ত্র|
ব্রিটেনের দক্ষিণ পন্থী কাগজ ডেইলি এক্সপ্রেসএ এই খবরটি আবার বার হয় ২০শে জুন | "আবার" বলতে বাধ্য হচ্ছি, কারণ এই খবরটা ট্রাম্প বলার আগের থেকেই বাজারে চলছে| তবে এবার এই কথাটি বলেছেন টোরি পার্টির এম পি টোবিয়াস এলউড | আর ট্রাম্প, মাইক পম্পেও ইত্যাদিরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছেন যে তাঁদের কাছে নাকি অকাট্য প্রমাণ আছে যে চীন এই করোনা ভাইরাস ল্যাবরেটরিতে তৈরী করেছে, অস্ত্র হিসেবে|
অবশ্য প্রমাণ চাইলে পাবেন না, কারণ এটা নাকি ন্যাশনাল সিকিউরিটির ব্যাপার ! (ওই ড্রাগনের পদচিহ্নের মতোই)| ভয় হয়, যখন একজন সিনিয়র ডাক্তারকে ফোন করে শুনলাম, "কি, এই ভাইরাসটা ওই চীনাগুলোর তৈরী তো?"
আমি bioweaponeer নই, কিন্তু ৯/১১র পরে, বিশেষত আমেরিথ্রাক্স ইন্সিডেন্টের পর, আমাদের হসপিটালের CNBR রেসপন্স টিমের মেম্বার হিসেবে, রাসায়নিক ও জৈবিক যুদ্ধ সম্মন্ধে কিছু পড়াশোনা ও কোর্স আমাকে করতে হয়েছিল | তখন জানতে পেরেছিলাম যে জৈবিক অস্ত্রগুলো অত্যন্ত unpredictable | আর হলিউড-বলিউড-টলিউডের সবচেয়ে বড় 'এফ' গ্রেড ফিলিম ডিরেক্টর-ও এমন জৈবিক অস্ত্রের কথা ভাববে না যার প্রতিষেধক তার নিজের হাতে নেই !
দেখা যাক একটি সত্যিকারের জৈবিক অস্ত্রের ব্যাপার |
১৯৭৯ এর 2 এপ্রিল, বর্তমান Yekaterinburg (তৎকালীন Sverdlovsk ) শহরে একটি মিলিটারি রিসার্চ ফেসিলিটি থেকে অস্ত্ৰীকৃত (weaponised কথাটার বাংলা অনুবাদের ব্যর্থ চেষ্টা!) anthrax এর স্পোর হঠাৎই ফিল্টারের তোয়াক্কা না করে হাওয়ায় বেরিয়ে আসে| শখানেক মানুষ মারা যান|
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্তালিনগ্রাদে সোভিয়েত সৈন্যরা জার্মান সৈন্যদের দিকে tularemia (Bacillus tularensis ) স্প্রে করেছিল | কিন্তু হাওয়ার দিক বদল হবার ফলে তারা নিজেরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে | জৈবিক অস্ত্রের মুশকিলটা এইখানেই | ভালো করে তাগ করে ছোঁড়া যায় না | (এই ঘটনাটি কর্নেল কানাতিয়ান আলিবেকভ, বর্তমানে কেন আলিবেক তাঁর Bioweapns বইতে বর্ণনা করেছেন| কেন আলিবেক সত্যিকারের জৈবিক অস্ত্র তৈরী করেছেন সোভিয়েত ইউনিয়নএ থাকাকালীন )
ওপরের দুটো উদাহরণ থেকেই বুঝতে পারবেন যে জৈবিক অস্ত্রগুলো অত্যন্ত লটখটে | ঠিক ঠাক কাজ করবে কি না বলা মুশকিল | এই ভাইরাসটা কিন্তু তেমন নয় ! লক্ষ কোটি বছরের ক্রমবিবর্তনের ফলে জন্ম হয়েছে এর | এবং এই জাতীয় ভাইরাস প্রকৃতিতে আরো অনেক আছে | সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জাও এই ধরণের ভাইরাস |
কিন্তু আমরা আর আমেরিকানদের অনেকেই চীন কে আমাদের শ্ত্রু বলে দেখি, তাই এই ধরণের ত্বত্ত্বে বিশ্বাস করতে আমাদের আটকায় না ! কিন্তু এই সার সত্যটি আমার ওই সিনিয়র ডাক্তারটিকে বোঝাবে কে ??
#২ | উহানের ল্যাবে অস্ত্র তৈরী হচ্ছিলো না; ওখানে ভাইরাস সংক্রান্ত ভালো কাজই হচ্ছিলো, কিন্তু চীনের ল্যাব এর ব্যবস্থা তো খুব ভালো নয়, তাই ভাইরাসটা হঠাৎ ছড়িয়ে পড়েছে!
এই গুজবটাও ভালোই চলছে, মানে মার্কেটে পাবলিক ভালোই খাচ্ছে | অর্থাৎ, রিসার্চ আবার চীনেগুলো কি করবে, ওসব করবে সাহেবরা; আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, এই সব জায়গায় !
যেন বংকুবাবুর বন্ধু গল্পে শ্রীপতিবাবুর সেই কথাটা ! "অন্য গ্রহ থেকে যদি কোনো প্রাণী আসে, তারা সাহেব, তারা সাহেবদের দেশেই আসবে |"
এবার দেখা যাক সত্যিকারের বিজ্ঞানীরা ব্যাপারটা সম্মন্ধে কি বলেন | নেচার পত্রিকার মেডিসিন বিভাগের এই পেপারটি নভেল করোনা ভাইরাস সম্মন্ধে মোটামুটি প্রামাণ্য বলেই ধরে নেওয়া যায় | পেপারের সম্পূর্ণ রেফারেন্সটাই তুলে দিলাম |
দ্য প্রক্সিমাল অরিজিন অফ সার্স-কভ-২ | [Nature Medicine volume 26, pages 450–452(2020)]
পেপারটিতে পরিষ্কার ভাবে দেখানো হয়েছে যে নভেল করোনা ভাইরাস সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবেই উদ্বুদ্ধ হয়েছে | শুধু তাই নয়, এই ভাইরাস যে ক্রম বিবর্তনের মাধ্যমে বাদুড়ের মধ্যে জায়গা খুঁজে নিয়েছে, সে সম্বন্ধেও সন্দেহের অবকাশ নেই |
নিন্দুকেরা প্রশ্ন তুলবেন, "তাহলেও ওই শালা চীনে গুলোরই দোষ! ঐসব বাদুড় ফাদুর না খেলে ও সব কি হতো?"
এটারও সঠিক উত্তর আছে, তবে কন্সপিরেসি তত্ত্বের বিশ্বাসীদের মনে কি দাগ কাটবে? ১৯৮০ সালের পর থেকে চীন ক্রমান্বয়ে বন জঙ্গল ধ্বংস করেছে "উন্নতির" উদ্দেশ্যে | শুধু চীন নয়, পৃথিবীর সব দেশই এক দোষে দোষী ! যার ফলে উষ্ণায়ন বাড়ছে, পোলার আইস ক্যাপ গলে যাচ্ছে, ইত্যাদি ইত্যাদি (গ্রেটা ঠুনবের্গের "How Dare ইউ" স্পীচ পশ্য) | এর ফলে বন্য পশুপাখিদের পরিধিটা (যাকে বলে habitat ) ক্রমশই কমে যাচ্ছে | ফলং, এই ধরণের সংক্রমণ - আমাদের দেশে ও ইন্দোনেশিয়ায় নিপাহ, অস্ট্রেলিয়ায় হেন্দ্রা, চীন এবং আরো কিছু প্রাচ্যের দেশে SARS , এবং এখন নভেল করোনা ভাইরাস | পোশাকি ভাষায় এই জাতীয় সংক্রমণকে বলা হয় spillover zoonotic infection |
তাই মনে হয়, আমাদের প্ৰয়োজন জাতিবিদ্বেষী (xenophobic ) ও ধর্মবিদ্বেষী অবৈজ্ঞানিক প্রচারের সম্মুখীন হলে একটু ভেবে দেখা ! ইন ফ্যাক্ট, এই যুক্তি মানলে, নিপাহ'কে বলতে হয় ভারতীয় ভাইরাস, মের্স'কে UAE ভাইরাস..... যেমন ট্রাম্প এই অসুখটিকে চাইনিজ ভাইরাস, কুং ফ্লু , ইত্যাদি নামে বিভূষিত করে চলেছেন |
# ৩ | সব কিছুই আসলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দোষ; ওরা চীনাদের থেকে পয়সা পায়, তাই আসল খবর চেপে যাচ্ছে |
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনেক দোষ আছে, (আফ্রিকায় এবোলা মহামারীর সময় গড়িমসি দেখলেই বোঝা যায়), কিন্তু এই ব্যাপারে WHO মোটামুটি যেমন যেমন খবর পেয়েছে, তেমনই ব্যবস্থা নেবার কথা বলেছে | দেখা যাচ্ছে যে জানুয়ারী মাসের দশ - এগারো তারিখ অবধি চীন সত্যিই কোভিড সংক্রান্ত খবর চেপে যাবার চেষ্টা করেছিল, এবং তার জন্য WHO তাদের ভর্ৎসনাও করেছে | কিন্তু ১৪ই জানুয়ারী থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সব সময়েই up to date খবর দিয়ে গেছে | মুশকিল হচ্ছে, পশ্চিম বিশ্বের দেশগুলি, (ইউরোপ, আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমস্ত উপদেশ অস্বীকার করেছে, যার ফলে আমরা দেখছি "বিশ্ব জোড়া মৃত্যু মিছিল" ক্রমশ চলতেই থাকছে | WHO 'র কোনো এনফোর্সমেন্ট এর ক্ষমতা নেই, তাই তাঁরা যা খবর পান তার ভিত্তিতেই কাজ করতে বাধ্য| ইতিমধ্যে ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফান্ডিং তুলে দিয়েছেন, কাজেই ধরে নেওয়া যেতে পারে যে আমাদের কাছে ইনফরমেশন পৌঁছতে আরো বেশি অসুবিধে হবে|
এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো| যাঁরা "চীনের ভাইরাস, চীনের ভাইরাস" করে আকাশ ফাটাচ্ছেন তাঁদের জানাই, এখনো পর্যন্ত চীন হচ্ছে প্রথম দেশ যারা এই ভাইরাস এর জেনেটিক ম্যাপিং সম্পূর্ণ করেছে; চীন সর্বাগ্রে কি ভাবে কোয়ারেন্টাইন করতে হয় তার হদিশ দেখিয়েছে, সবশেষে, আমরা এখনো (with minor variations ) চীনের ডাক্তাররা যে চিকিৎসা পদ্ধতি দেখিয়েছেন তাই অনুসরণ করছি!
গোমূত্র, পাঁপড়ভাজা, করোনিল, ইন্ট্রাভেনাস ব্লিচ, ইত্যাদি ব্যাপারগুলোর মধ্যে আর যাচ্ছি না! হাইড্রোক্সিকলোরোকুইন, এজিথ্রোমাইসিন ইত্যাদি ব্যাপারগুলো ঠিক কনস্পিরেসির মধ্যে পড়েনা, তাই সেগুলোও কাঁধে কাকে 'ইয়ে' করলে যেমন টোকা মেরে ফেলে অস্বীকার করা যায়, তেমনই করছি | কিন্তু শেষ একটা ব্যাপার না লিখেই পারছিনা |
# ৪ | করোনা ভাইরাসএর পুরো ব্যাপারটাই ভুয়ো, ওটা শুধু বড় বড় ফার্মা কোম্পানির গুজব, ভ্যাকসিন বিক্রি করবার জন্যে |
শুধু তাই নয়, এর মধ্যে নাকি জর্জ সোরোস আর বিল গেটসের হাত আছে! এই ভ্যাকসিন গুলোর মধ্যে নাকি ন্যানো-পার্টিকেল মিশিয়ে বাজারে ছাড়া হবে, যাতে সারা বিশ্বের মানুষের ওপর নজরদারি করা যায় ! এই থিওরিটি প্রধানত পশ্চিম দুনিয়ার ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলনের সদস্যদের ছড়ানো |
এই অসুখটিতে বিশ্বের প্রতিটি দেশ আক্রান্ত হয়েছে, সারা বিশ্বে প্রায় সাত লক্ষ লোক মারা গেছেন, বিশ্বের অর্থনীতি রসাতলে গেছে ! তার পরেও এতো কষ্ট করে ভ্যাকসিনের মধ্যে ন্যানো মলিকিউল ঢোকাতে হবে কেন? একবার একটা দোকানের পাশ দিয়ে গেলে তারপর স্মার্ট ফোনে বিজ্ঞাপনের ঠ্যালায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে, তার পরেও বিল গেটসকে এতো কষ্ট করতে হবে?
বালাই ষাট !
কন্সপিরেসি থিওরির সমস্যা হচ্ছে, ব্যাপারটা সর্বব্যাপী, এবং মুখরোচক | তদুপরি, প্রমাণ ইত্যাদির কোনো ধার-ই ধারেনা, শুধুই অন্ধ বিশ্বাস আর গুজবের ওপর নির্ভরশীল | তাই মনে হয়, এই বিপদের সময় আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দ্বান্দ্বিক চিন্তার - যাকে বলতে পারি ক্রিটিকাল থিংকিং | তাই, প্রশ্ন করুন, প্রশ্ন করুন, প্রশ্ন করুন!! আমিও তাই করি | সত্যি করে বিজ্ঞান মনস্ক লোকেরা প্রশ্নকে ভয় পান না - তাঁদের কাছে প্রশ্নের উত্তর সব অবস্থাতেই পাবেন |
আর ওই ড্রাগনটা? ওকে ভয় পাবেন না; ওর নিঃশ্বাসের আগুনে আমাদের কিস্যু হবেনা |
রেফারেন্স :
১ | দেয়ার ইজ এ ড্রাগন ইন মাই গ্যারেজ | কার্ল সাগান
২ | ডেইলি এক্সপ্রেস ২০ জুন
৩ |The proximal origin of SARS -CoV -2 . Nature Medicine
৪ | বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা : করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত গাইডলাইন |
৫ | Pseudoscience and COVID 19 - we have had enough already . Timothy Caulfield ; Nature . 27 April 2020 |
৬ | রিয়েল প্যাট্রিয়টস আস্ক কোয়েশ্চনস | কার্ল সাগান |
অনেক বানান ভুল আছে, প্রুফ-রিডিংএও ভুলভ্রান্তি হয়েছে।
দোষ আমারই। সুধী পাঠক নিজগুণে মার্জনা করবেন!
ভবিষ্যতে যাতে এমন গুবলেট না হয়, তার জন্যে যথাসাধ্য সাবধান হব।
লেখাটার শুরুতে যখন ড্রাগনের গল্পটা পড়ছিলাম, তখন করোনা ভাইরাসকেই আমার সেই ড্রাগনটা মনে হচ্ছিল। কোন কিছুই প্রমাণিত নয়। "সর্দি হয়েছে" - "ওটা করোনার সিম্পটম" "শ্বাসকষ্ট হচ্ছে" - "করোনার সিম্পটম", " ঘুম আসছে না" - করোনার সিম্পটম, "পায়খানা হচ্ছে না" - করোনা হতে পারে, "জ্বর হয়নি, কাশি সেরে গেছে" - অ্যাসিম্পটোম্যাটিক হতে পারে, "কিছুই হচ্ছে না" - সম্ভবতঃ অ্যাসিম্পটোম্যাটিক - অর্থাৎ গ্যারেজে ড্রাগনটা আছেই। গাড়ির চাকার দাগও ড্রাগনের ঠেলায়, তেলের গন্ধও তারই কারসাজি।
পরে অবশ্য দেখলাম উল্টোটাও সত্যি হতে পারে। যে ড্রাগন দেখা যায় না সে যে কোথায় গিয়ে বসে থাকে বলা খুব কঠিন
S।
ওই যে বললাম, বিদেহী, ভাসমান, নিরুত্তাপ ড্রাগন!
কিন্তু ড্রাগন আছেই! গ্যারেজের মধ্যেই আছে। আপনি দেখতে পান না, সেটা আপনার সমস্যা!
যেমন নেচারের পেপার সম্বন্ধেও বলা হয়েছে, "চীনেরাই পয়সা খাইয়ে করিয়েছে।"
বড়েস, সেই ড্রাগনটিকেই তো খুঁজে ফিরছি - শ্রয়ডিঙ্গারের ড্রাগন
চমৎকার হয়েছে। যুক্তি বেশ ভালো। বানান নিয়ে তো আজকাল কেউ ভাবে না। পরীক্ষায় ভুল বানান লিখলে নম্বর কাটা যায় না, তাই সেটা দরকারি নয়। মনে রাখতে হবে পৃথিবীর সব রাজনৈতিক নেতা, যে কোনো ঘটনা(বা অঘটন) কে শুধু নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করে থাকেন। তাই এতো theory . যতই যুক্তি দিন না কেনো, মানুষ সেটাই বিশ্বাস করবে, যা সে বিশ্বাস করতে চায়। ড্রাগন থাকুক বা না থাকুক বাস্তবে, মগজে থাকলেই লোক মানবে।
Khub bhalo laglo article ta Rajarshi... Dragon er concept ta unique... Aro lekho...