
এ বছর নবারুন ভট্টাচার্য্য র জন্মদিন উপলক্ষে সম্প্রতি তরুন সাংবাদিক-লেখক দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক লেখা লিখেছেন, নবারুণ এর সংগে পরিচিত বিভিন্ন মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। বেশিটাই গণমাধ্যমে, সামাজিক মাধ্যমে ইতমধ্যে প্রকাশিত। যাঁরা একেবারে তরুন লেখক দের লেখা পড়তে আগ্রহী, তাঁদের দৃষ্টিকোণ থেকে বামপন্থী সাংস্কৃতিক অবস্থান এর সমস্যাদি সম্পর্কে যাঁরা আলোচনার খবর নিতে চান, তাঁরা দেবর্ষি রচিত 'ভালোবাসাগুলি সেলিব্রিটি হয়ে গেছে' বইটির খবর নিতে পারেন। যাঁদের সংগে দেবর্ষি কথা বলেছেন, তাঁরা শুধুই সংস্কৃতি কর্মী বা প্রখ্যাত সৃজনশীলেরা নন, নবারুণের পরিচিত , স্বল্প পরিচিত কিন্তু কোনো না কোন ভাবে তাঁর আন্তরিক ব্যবহারের বা মূলতঃ তাঁর কাজ অধ্যয়নের স্মৃতি বহন করছেন, এরকম অনেক মানুষের সংগে এই কথোপকথন গুলি হয়েছে। ভাষাবন্ধন পত্রিকার নবারুণের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত স্মারক সংখ্যাটিতে আমার একটি মূলতঃ সাহিত্য কেন্দ্রিক প্রবন্ধ দেখে সম্ভবত কিছুটা আগ্রহ পেয়ে সে পত্রিকার সংগঠক গবেষক অধ্যাপক রাজীব চৌধুরী ও ভাস্কর ঘোষ মশাই দের মাধ্যমে দেবর্ষির সংগে আমার যোগাযোগ হয়, আলোচনা ও একটা হয়। দেবর্ষির অনুমতিক্রমে সেটির একটি লিংক এখানে দেওয়া হল।
b | 14.139.***.*** | ০৬ আগস্ট ২০২০ ১৮:১৪95970
দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় | 2401:4900:314f:5ac2:7852:8ef5:cdad:***:*** | ০৭ আগস্ট ২০২০ ০৯:২৫95975https://www.facebook.com/নবারুণ-কার্নিভ্যাল-110069750787692/
নবারুণ প্রসঙ্গে উপরের কথোপকথনটি আছে মাসখানেক ধরে দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়র করা " নবারুণ কার্নিভ্যাল" নামের ফেসবুক পেজে। দেখুন সকলে।
দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় | 2401:4900:314f:5ac2:7852:8ef5:cdad:***:*** | ০৭ আগস্ট ২০২০ ০৯:৩০95976@মামার বাড়ির আবদারঃ
নীচের নবারুণ কার্নিভ্যাল পেজের লিংকে গোটা আলোচনা লিখিত ভাবে আছে।
https://www.facebook.com/নবারুণ-কার্নিভ্যাল-110069750787692/
b | 14.139.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০২০ ০৯:৩৯95977আব্দারটি খুবই যৌক্তিক।
গুরুতে ভালমন্দ কিছু লেখা, যুক্তিতর্ক পড়তে আসি। এই লিংক, সেই লিংক ধরে ধরে লেখা পড়তে হবে নাকি! :/
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 2405:201:8802:c7b5:918c:a10f:6556:***:*** | ০৮ আগস্ট ২০২০ ০৮:৪৪96038
Ishan | ০৮ আগস্ট ২০২০ ১০:৩৯96041যাত্তারা। এটা ট্রানস্ক্রাইব যদি করাই হয়ে থাকে , অন্য জায়গায় তোলাও হয়ে থাকে, তো এখানে থাকবেনা কেন?
আর অলটারনেটিভ ঘরানার লেখক পাঠকদের জুকারবার্গ অ্যাফিনিটির কারণ, সত্যিই বুঝিনা।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২০ ১১:১৬96043
নীপা | 104.225.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২০ ১৭:৩৩96061
b | 14.139.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২০ ২৩:৫০96066
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২০ ২৩:৫৩96067এটা দেখামাত্র আমি সাউন্ডক্লাউড না কী যেন ছাইছাতা, খোলার চেষ্টা করেছিনু । বলা বাহুল্য, ব্যর্থ হয়েছি। ও যে কীভাবে খোলে এবং কেমনধারা শুনতে লাগে তা-ই জানি না! ফলত...
-- | 43.239.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২০ ০১:৩৫96068লিংক এ ক্লিক করলে কেন শোনা যাবে না বোঝা দায়। দিব্যি শুনছি। দেড়ঘন্টার অডিও।
ফেসবুকে --
খুবই সংক্ষিপ্ত
Debarshi Bandyopadhyay
July 12
তিন সপ্তাহ ধরে চলছে নবারুণ কার্নিভ্যাল। রোজ একের পর এক তাঁকে নিয়ে ইন্টারভিউ আপলোড হচ্ছে আমার দেওয়ালে। আজ বলছেন বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত। ভাষাবন্ধনে নিয়মিত লিখতেন বোধিসত্ত্ব। লিখতেন, আন্তর্জাতিক সাহিত্য নিয়েই। বিশ্বরাজনীতি আর সংস্কৃতির নিরিখে আরেকবার নবারুণকে ফিরে দেখলেন বোধিসত্ত্ব।
..….............
২০০০ সালের মাঝামাঝি থেকে নবারুণদার সাথে আলাপ। বাবা মৃণাল দাশগুপ্তের লেখা দিতে যেতাম ভাষাবন্ধনে। আড্ডা হত। জানতে চাইতেন কি বই পড়ছি। বাবা স্টেটসম্যনের পাতায় নবারুণ অনুবাদ করেছিলেন আগে। অন্ধ বেড়াল গল্পটি মূলত অনুবাদ করেন। বাবার একটা আগ্রহ ছিলই নানা লেখা পাঠের। তা থেকে খুঁজে খুঁজে নানা লেখা পড়তেন। নবারুণদার স্ল্যাং ব্যবহার আর দ্রোহ তাঁর বরাবর ভালো লাগত। সেভাবেই নবারুণদার পরিচয় পত্রিকার লেখাগুলি খুঁজে আনেন ও পড়েন।
বাবার লেখা দিতে গিয়ে নানা বিষয়ে কথা হত। আজ সেসব আড্ডা খুব মিস করি। কোনও একটা গল্প পড়ার পরেই আর ওঁকে জানাতে পারব না, আড্ডা হবে না এ বোধ আমায় খুব যন্ত্রণা দেয়। খুব কাছের তো ছিলাম না ওঁর। ছিলাম না আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ। তবু ওঁর চলে যাওয়া আজও আমায় কষ্ট দেয় খুব।
বাবা নবারুণদার প্রজন্ম। যারা সত্তরের পরাজয় দেখেছেন। দেখেছেন আশির পরাজয়ের যন্ত্রণা। তাই আগামী সময়ের বিরোধীতার স্বর বারবার নবীনদের মধ্যে খুঁজতেন নবারুণদা। মনে করতেন, তারা জিতবেই। তাই ভাষাবন্ধনে তাদের বেশি গুরুত্ব দিতেন। সত্তরের বন্ধুদের মারা যাওয়া, রাষ্ট্রের দাঁতনখ, ভাইকে মেরে ফেলা ভাইয়ের-নবারুণদাকে চিরতরে বিরোধিতার ব্যরিকেডে পরিণত করেছিল। চারপাশ নিয়ে কখনই তাই খুব স্বস্তি পেতে পারেননি তিনি, প্রতিষ্ঠানবিরোধীতা সত্ত্বেও।
একদিন বাড়িতে বাবার লেখা দিতে গেছি। দেখি বারান্দায় দাঁড়িয়ে একটা গরিব মেয়েকে ভিজতে দেখছেন। মুখে চোখে কষ্টের ছাপ। বললেন, "এরা কি অন্যায় করেছে যে স্বাধীনতার এত বছর পরেও একটা ছাতা জুটবে না?" আরেকদিন বলেছিলেন, "মাথানীচু করে হেঁটে যাওয়া মানুষকে দেখে যদি আহত না হই, তাহলে কিসের লেখক?"
৮০-৯০ দশক জুড়ে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। তখনও অনেকে নিশ্চয়ই বিকল্প সাহিত্য লিখছিলেন, কিন্তু সে লেখা ব্যপ্ত সমাজকে ধরছিল না। বাজারি অর্থনীতির কারণে সে অভিঘাতের ব্যপকতার অভাব ছিল। আর নবারুণ মানুষের কাছে পোঁছনোর তাগিদ বারবার অনুভব করছিলেন। তা প্রতিফলিত হচ্ছিল লেখায়। আমি নবারুণদাকে ক্লাসিকাল সাহিত্যিক বলেই মনে করি। শুধু ফ্যাতাড়ুর লেখক হিসেবে না। তবু একটা কুন্ঠা কাজ করে, ভুল ভাবে তাঁর লেখার ঐতিহ্যকে আমি এপ্রোপ্রিয়েট করে ফেলছি না তো!
আন্তর্জাতিক সাহিত্য বা রাজনীতির পাশেই সমসময়কে এড্রেস করা প্রবল তাড়না ছিল নবারুণদার। ৩০ থেকে ৭০ দশক পর্যন্ত লেখালেখিতে কমার্শিয়াল আর নন-কমার্শিয়ালের একটা ভাগ ছিল। কিন্তু তারপর সে ভাগ আরও বড়ো হয়ে যায়। এখানেই সত্তর দশক একটা মস্ত রোল প্লে করছে। রাজনীতির আভ্যন্তরীণ সমালোচনার ঐতিহ্য একটা নির্দিষ্ট জায়গায় চলে আসছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তার প্রকাশে জড়িয়ে যাচ্ছে ফরেন পলেসি। সাহিত্য তাই ব্যক্তি উন্নয়নে আটকে না থেকে রাজনীতির সমালোচনা হয়ে যাচ্ছে। জনপ্রিয় সাহিত্য আর মানবতাবাদী সাহিত্যের একটা মস্ত ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। আলাদা আলাদা গোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করছেন আলাদা আলাদা লেখক। সে সঙ্গে নারীবাদ-উত্তর আধুনিকতা-যৌনতার বিষয়গুলি এসে সেকেল বামমনস্কতার ফাঁকগুলো চিহ্নিত করে দিচ্ছে।
মোটামুটি ১৯৬৯-৭০ থেকে লিখছেন। এর অনেক পরে ১৯৭৯ এ এক চাষির গল্প লিখছেন। বুড়া কাহারের গল্প। কিন্তু বাকি লেখক জীবন এক ধরনের ওভারলুকড আর্বান মাইনরিটিকেই এড্রেস করছেন তিনি। কিন্তু করছেন স্বকীয় ধারায়। কারণ শহর বলতেই খারাপ একটা ধারণা চালু ছিল। মানে, গ্রামের সমাজের উপর চাপানো একটা ব্যবস্থা যা অপরাধমূলক। এছাড়া, শহর মানেই এক ধরনের স্খলন। অথচ কলোনি পত্তনের আগে প্রাক-কলোনি আরবানিটির একটা ইতিহাস আছে। অর্থাৎ, বড় শহরের জমায়েতের ভেতরের প্রান্তিকতা। ডস্টয়ভস্কি যাদের বলছেন, "এক্সিডেন্টাল ট্রাইব"। সেখানে সহাবস্থানের ধারণা থেকে কমিউনিটি তৈরি হচ্ছে থাকতে থাকতে। আগে থেকে কমিউনিটি ভেবে তৈরি হচ্ছে না। নবারুণদা এই গোটা আইডেনন্টিটি-পরিবেশ-বাম ঐতিহ্য বা রাজনীতিকে রাজনীতির তাড়না থেকে এড্রেস করছেন বারবার।
আসলে সবকিছুই বুঝতে পারছিলেন তিনি। নিজেকে ক্রমাগত ভাঙছিলেনও। সমকালের লেখকদের প্রতি সম্মান রেখেই স্বতন্ত্র ভাবে লিখছেন। তাই অনন্য রায় সমগ্র ছাপছেন। মানুষের সামনে আবার তুলে ধরছেন তাঁকে। তাঁকে ভাবাচ্ছে, এজেন্সির ধারণা। অর্থাৎ, নতুন এ সময়ের রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করবে কে? সে সময় সপ্তাহ পত্রিকায় লেখা এক গল্পে, এক গরিব মানুষের কথা লিখছেন, যিনি গাড়ির শো-রুমের কাচ ভেঙে দেয়। সমকালের বামপন্থার সাথে এ গল্প মিলে যাচ্ছে। তেমনি কর্মহীন যৌবনকে নিয়ে ফ্যাতাড়ু লিখছেন। আবার লিখছেন চিতামানুষ বা মহাযানের আয়না। সেখানে পাচ্ছি এক ইন্ডিভিজুয়ালের যন্ত্রণা। তাঁর নীরব প্রতিবাদ। এখানে তাঁর সাথে রোবার্তো বোলানোর মিল পাই। এ প্রতিবাদের ধরণ অভিনব। অর্থাৎ, অন্তর্ঘাত।
সমসাময়িক হবার কারণেই সম্ভবত বোলানো আর নবারুণ দুজনেই সরকারী বা প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠা বামপন্থাকে তীব্র সমালোচনা করছেন। নতুন ধারায় লড়াইয়ের কথা ভাবছেন। স্বপ্নভঙ্গের একটা ওভার রাইডিং অনুভূতি। যেমন করে ভাবছেন ইলিয়াস। মার্কেজ পরবর্তী লেখক এরা। তাঁদের লেখা তাই মার্কেজের থেকে সরে এসে সবটা প্রতিবেদনধর্মী হচ্ছে না। নতুন এক ধরনের ইন্ট্রোস্পেকশন এবং রি-অর্গানাইজেশন খুঁজছেন বোলানো ও নবারুণ।এখানে তাঁরা সারামাগোর ব্যপ্ত ইতিহাস পর্যালোচনার থেকেও আলাদা। গ্রসম্যানের মত শতাব্দী ব্যাপী স্বপ্নভঙ্গ বা স্বল্পস্থায়ী প্রত্যাঘাত নয় বরং বুলগাকভের মত প্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকে নাড়া দেওয়ার পলিটিক্স ধরা পড়ছে তাঁর লেখায়। কিন্তু নবারুন এর লেখা এমন বস্তু , তাকে সাবেক বা শখের বামপন্থী দের বা লিবেরালিজম কারোর পক্ষেই , এমনকি সদর্থেও আরাম করে ব্যবহার করা সম্ভব না।
সব সাহিত্যিকের মত নবারুণদার একটা নিজের শহর আছে। সেটা কলকাতা। আর, আমার একটা স্বপ্ন আছে। কিশোর স্বপ্নও বলা যায়, সে শহরে আমাদের প্রিয় সাহিত্যিক নবারুণদার বাড়িতে আবার একদিন আমরা জড়ো হব সবাই। যেমন ভাষাবন্ধনে হতাম। খুব আড্ডা হবে, হুল্লোড় হবে। আর তাতে বিরক্ত নবারুণদা চেঁচিয়ে উঠবেন হঠাৎ, "আস্তে"!! (হাসি)
(কথোপকথনের ভিত্তিতে অনুলিখন)
লেখাঃ দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২০ ০১:৪৮96069--, আমাদের মতো আনাড়িদের জন্য যে কাজ আপনি করলেন তার তুলনা মেলা ভার। ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাইছি না। আমি প্রথমে বোধিসত্ত্ববাবুর দেওয়া লিঙ্কটায় ক্লিকিয়েছিলাম। পরে দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়-এর দেওয়া লিঙ্কটা আর খুলিনি। কাল খুলে এই রত্নভাণ্ডারের সন্ধান করব।
aranya | 162.115.***.*** | ০৯ আগস্ট ২০২০ ০৫:৪৫96077