নতুন ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিল - এত প্রতিবাদ, এত বিক্ষোভ - আপনি ভাববেন না? : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১২৯০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
সাবেক এমসিআই নিয়ে হাজার অভিযোগের মধ্যেও একটা স্বস্তি ছিল - সেফটি ভালভ-ও বলতে পারেন - যে, তার প্রতিনিধিরা নির্বাচিত, চিকিৎসকদের ভোটে নির্বাচিত। ঠিক যেমন, দেশের হাল নিয়ে যত আক্ষেপই করি না কেন, গণতন্ত্রের শক্তির উপর আমাদের আস্থা সদা অটুট। আমরা আশা রাখি, বেশী বাড়াবাড়ি করলে সেই নেতাকে আমরা ভোটে হারিয়ে ক্ষমতাহীন করে ফেলতে পারব - না, শেষমেশ পেরে উঠি না হয়ত - কিন্তু, এই আশাটা একটা বড় জোরের জায়গা, এবং নেতারাও কোনো এক জায়গায় সচেতন থাকেন, যে, পরের দফায় তো ভোটে জিতে আসতে হবে। এনএমসি বিল সেই আস্থার জায়গাটাই ভেঙে দিয়েছে। প্রস্তাবিত কমিশনের বেশীর ভাগ সদস্যই হবেন কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক মনোনীত। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সত্ত্বেও সেই কমিশনে নিয়মিত ভিত্তিতে অধিকাংশ রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব থাকার অবকাশ নেই। রাজ্যের প্রতিনিধিরা যেখানে থাকবেন, তাঁদের ভূমিকা মূলত পরামর্শদাতা বা উপদেষ্টার - সেই পরামর্শ অনুসারে চলতেই হবে, কমিশনের এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
পঠন-অভিজ্ঞতা : শিল্পী গণেশ হালুই-এর “আমার কথা” : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : ছবিছাব্বা | ১৮ এপ্রিল ২০১৯ | ২৮৮৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
প্রায় জনমানবহীন এক আশ্চর্য নিসর্গকে রঙ-তুলিতে ধরতে চেয়ে গণেশ হালুই বারবার ভুল-বোঝার শিকার হয়েছেন। সমকালীন চিত্রধারার আপাত-দৃশ্যমান সমাজমুখিনতার বিপ্রতীপে তাঁর বিমূর্ত নিসর্গকে ফেলে তাঁর শিল্পকে সমাজবিমুখ বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। মিতবাক, বিনয়ী মানুষটি উত্তর দিতে পারেন নি এই অভিযোগের। নাকি দিতে চাননি? আজ এক আত্মকথনে তিনি যখন বলেন,
“এখন আমি একজন ছবি আঁকিয়ে। অনেকের মতে আমার ছবিতে মানুষের কথা নেই। আমি এর উত্তর খুঁজি।
নির্ঘাত মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠাতেই মানুষ মৃত্যুর কথা ভোলে এবং এই ভোলার মধ্যেই যে আনন্দের ধারা, তাতেই সেই মৃত্যুর সুর বাজে।”
সেও কোনো উচ্চকিত জবাব নয়, এ এক নিভৃত মনোলগ। নিজের সাথে নিজের কথা।
স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, গণস্বাস্থ্য-আন্দোলন - আসন্ন লোকসভা নির্বাচন, একটি ম্যানিফেস্টো-ভিত্তিক পাঠ : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০১৯ | ৯৪০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
দেশের স্বাস্থ্যের হালহকিকত নিয়ে ভাবতে বসলে আশার আলোটুকু এতোই দুর্লভ, যে একটু গুছিয়ে আগলে না রাখতে পারলে অন্ধকারই অনিবার্য বোধ হওয়ার আশঙ্কা। সেইখানে, নিজের ভাবনা অস্বস্তি, হাজার না-পাওয়ার পাশে ছোটখাটো প্রাপ্তিগুলো, নিদেনপক্ষে প্রাপ্তির আশাটুকু সাজিয়ে লিখে রাখা জরুরী।
একদিকে দেশের স্বাস্থ্যের পেছনে সরকারের খরচ ক্রমেই কমতে কমতে আণুবীক্ষণিক হয়ে দাঁড়ানোর বাস্তব, প্রতিবছর স্রেফ চিকিৎসার খরচা মেটাতে গিয়ে কয়েক লক্ষ মানুষের নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যাওয়া, বিশ্বের সুস্থ দেশের সারণীতে আমাদের দেশের ক্রমেই পিছিয়ে পড়া, স্বাস্থ্যব্যবস্থার ডামাডোলের পেছনে এক এবং একমাত্র ডাক্তারদেরই দায়ী ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে (আর এরাজ্যে তো কথাই নেই, আক্ষরিক অর্থেই “এগিয়ে বাংলা”) ডাক্তারদের উপর আক্রমণের খবর।
ছবি দেখা : উই মিনজিনের একটি ছবি - এই সময়ের কিছু ভাবনা : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : ছবিছাব্বা | ১১ আগস্ট ২০১৯ | ১১৩৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
শিল্পী যখন তাঁর ছবির নাম দেন এক্সিকিউশন - ঠিক কোন অর্থে নেব এই শব্দটিকে? এমনিতেই ছবির নামকরণের বিষয়টি কিছু গোলমেলে। নামকরণের মাধ্যমে শিল্পী নিজের ভিশনটিকে দর্শকের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন - এবং, সেই সুবাদে ছবিটি কোনো এক জায়গায় সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, এমন প্রশ্ন বারবার উঠেছে। সম্ভবত এই কারণেই অজস্র ছবির তলায় আমরা আনটাইটেলড, অর্থাৎ অনামা, শব্দটি দেখে থাকি, কেননা আঁকিয়ে নামকরণের ঝামেলায় যান নি - দর্শকের সামনে ছবির আকাশটি উন্মুক্ত রেখেছেন। এ তো জানাই কথা, যেকোনো ছবির অর্ধেকটি আঁকেন শিল্পী, আর বাকি অর্ধেকটি সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব নিবিষ্ট দর্শকের। সেইখানে, শিল্পীর স্বাধীনতাকে স্বীকার করলে, দর্শকের স্বাধীনতাকে নামকরণের মাধ্যমে সীমায়িত করে দেওয়া তো কোনো কাজের কথা নয়।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি বা চিকিৎসা ও দুর্নীতি-ডাঃ পার্থসারথি গুপ্ত স্মারক বক্তৃতা - দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব : ডাঃ বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ৯৩৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
নব্বই দশক নাগাদ, মুক্ত অর্থনীতির আবির্ভাবের সাথেসাথেই আপনি জানতে শুরু করলেন, যে, সরকারি হাসপাতাল সাক্ষাৎ নরক, সেখানকার ডাক্তারেরা ফাঁকিবাজ দুর্ব্যবহারী ইত্যাদি ইত্যাদি - আর, হ্যাঁ, এখন কলকাতাতেই এসে গিয়েছে বিশ্বমানের চিকিৎসা, চিকিৎসাপরিষেবা, ওই পাঁচতারা হোটেলতুল্য হাসপাতালগুলিতে। এই একই সময়ে নেতামন্ত্রীরা ধীরে ধীরে নিজেদের চিকিৎসার জন্যে যেতে শুরু করলেন বেসরকারী হাসপাতালে।অর্থাৎ, বেসরকারী হাসপাতালই যে উন্নততর পথ, তা সামাজিক মান্যতা পেয়ে যেতে থাকলো।ঝাড়া সিকি শতকের মগজধোলাইয়ের পরে, আপনাকে যদি কেউ উল্টোটা বোঝাতে আসে, কেউ যদি বলেন আপনাকে , যে সংখ্যার চিকিৎসক মিলে যে সংখ্যার রোগী সামলানো হয় সরকারি স্বাস্থ্যকাঠামোয়, আর সেই চিকিৎসার রেজাল্ট অধিকাংশ অসুখের ক্ষেত্রেই বিশ্বের গড়ের চাইতে কম নয়, একে যদি আপনি সাফল্য না মানেন, একে যদি আপনি দক্ষতা বলে স্বীকার না করেন, তাহলে আপনার কাছে দক্ষতার সংজ্ঞা ঠিক কী?
বিজয়ের গল্প : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ১৯১৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
দেশে বিদেশে, স্বাচ্ছন্দ্যের শিখরে বসে, বিজয়ের কৃতি ও সফল বন্ধুবান্ধবেরা বলছে RIP. পাঁচতারায় ডিনারের মাঝে এক ফাঁকে তারা হোয়াটস্যাপে তীব্র দেশপ্রেমের মেসেজ ফরোয়ার্ড করছে, পানীয়ের গ্লাসটুকু ভরে নেওয়ার মাঝে টুক করে ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শত্রুদের নিকেশের আহবান। বিজয়ের সাথে স্কুলে ভরতি হয়েও মাঝপথে পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়া বন্ধুরা পানের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে কাঁচা খিস্তি করছে প্রতিশোধ চাইছে আর ফেসবুকে বলছে, RIP.
এমপ্যাথি, র্যাশনাল কমপ্যাশন, কাঁটাতার, ছিন্নমূল, আজকের ছবিটবি : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৩ অক্টোবর ২০১৯ | ১৬৩৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
না, শিল্পী কখনই সাংবাদিক নন - নিত্যকার ঘটনার জার্নাল মেইনটেইন করা তাঁর অবশ্যপালনীয় দায় নয়। তাঁর মনের মধ্যে আসা দৃশ্যকল্পকে তিনি রঙতুলি দিয়ে ধরেন কাগজে, ক্যানভাসে। কিন্তু, সেই মনের মধ্যে আসা দৃশ্যকল্পে সমকাল, পারিপার্শ্বিক হানাহানি, মানুষের অসহায়তা, সমাজের গরিষ্ঠ অংশের অনিশ্চয়তা ঠাঁই পাবে না এতটুকু? ছবিতে শুধুই ফুটে উঠতে থাকবে শিল্পীর সমকালবিমুক্ত অন্তর্দর্শন (শিল্পীর অন্তর্জগত যদি সমকালীন সঙ্কটে আলোড়িত না হয়, তাহলে সেই অন্তর্দর্শন তো নিছক আত্মকেন্দ্রিকতা), কিম্বা স্বপ্নের নারী, অথবা দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতিদৃশ্য? এ কী তাঁদের অন্তর্জগতের যথার্থ প্রতিফলন? নাকি, তাঁরা সর্বার্থেই এমন অন্তঃসারশূন্য হয়েছেন, যে ক্লিশে বিষয় বাদ দিয়ে কিছুই আনতে পারেন না ক্যানভাসে?
রবীন মণ্ডল - ফিরে দেখা : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | বাকিসব : মোচ্ছব | ০১ জানুয়ারি ২০২০ | ১৬৫৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
আর দেখুন, রবীন মণ্ডল তো কলকাতার লোক কেনে নি। কিনেছে দিল্লী আর মুম্বাইয়ের বায়াররা। লাস্ট ফোর-ফাইভ ইয়ার্স, দে আর বায়িং টু বিল্ড আপ দেয়ার স্টক। এরপর কী হবে? মার্কেটে যা পড়ে আছে, ওরাই কিনে নেবে - দরকার হলে, বেশী দামে হলেও। দেন, দে উইল ক্রিয়েট আ ডিমান্ড, আ ক্রাইসিস - প্রাইস চড়চড় করে বাড়বে। দিস হ্যাপেনড উইথ সুজা অ্যান্ড টেক মাই ওয়ার্ডস, দ্য সেম ইজ গোয়িং টু হ্যাপেন উইথ রবীন মণ্ডল।
বেশ কথা। শাঁসালো কালেক্টর কদ্দূর সহমত হলেন, বলতে পারি না। আমার শুধু মনে পড়ে গেল, রবীন মণ্ডল চেয়েছিলেন, তাঁর ছবি দেখে দর্শক যেন দর্পণের মুখোমুখি হন। কে সেই দর্শক? দর্পণের মুখোমুখি হয়ে ডিজাইনার হেয়ার-সালোঁ থেকে ছেঁটে আসা চুলটুকু গুছিয়ে নেওয়া বাদে সেই ধনী মানুষটি আর কী করবেন?
শিল্প শিল্পী দর্শক এবং : হিরণ মিত্রের মুখোমুখি বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : ছবিছাব্বা | ০১ জানুয়ারি ২০২০ | ১৬৬৫ বার পঠিত
আমরা আগে জানতাম যে শিল্পী প্রতিভা নিয়ে জন্মায়, আজকের দিনের কথা হচ্ছে যে, শিল্পী তৈরি করা হয়, শিল্পী কিছু নিয়ে জন্মায় না। শিল্পীকে বানিয়ে তোলা হয়। একটা দল, দলের কতগুলি ভাবনা, শৃঙ্খলা আছে, সেই শৃঙ্খলা দিয়ে শিল্পীকে তৈরি করা হয়। An artist been made, been born না, সেই ‘মেড’ যেহেতু তখন তার নিশ্চয় কোনো শৃঙ্খলা থাকবে, কার্যকারণ থাকবে, সেই কার্যকারণ দিয়ে শিল্পী তৈরি করা হয়।
ছবি দেখা - দর্শকের কল্পনা – বারবার দেখার অনুভূতি – যোগেন চৌধুরীর (অ)সাধারণ ফুলদানি : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : ছবিছাব্বা | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ২২৫৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
গল্প খোঁজার জন্যে “ছবির সাথে সহবাস”-এর প্রয়োজন। দিনের অনেক সময়, বারবার যাতে চোখ যায়, এমন জায়গায় ছবিটি থাকা প্রয়োজন। যাঁদের বাড়ির দেওয়ালে ছবি রয়েছে (আবারও বলি, এইখানে ছবি বলতে প্রিন্ট বা ওরিজিন্যাল সবকিছুকেই বোঝাতে চেয়েছি), তাঁদেরকে এই বিষয়টি আলাদা করে বোঝানোর কিছু নেই। এইটা অনেকাংশেই, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতানির্ভর। কিন্তু, যাঁদের বাড়িতে ছবি নেই, তাঁরা একবার চেষ্টা করে দেখুন। আগেই বলেছি, অনলাইন স্টোরে বেশ উঁচু মানের প্রিন্টের দাম তো তেমন কিছু নয়। শুধুই পশ্চিমের নয়, ভারতীয় মাস্টারদের ছবির প্রিন্টও পাওয়া যায় সেইখানে। আর, ওরিজিন্যাল ছবি ঝোলাতে পারলে তো কথা-ই নেই।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি বা চিকিৎসা ও দুর্নীতি-ডাঃ পার্থসারথি গুপ্ত স্মারক বক্তৃতা : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৭৬৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
বাজার অর্থনীতির নিয়মে স্বাস্থ্যপরিষেবাকে চলতে দেওয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি অমোঘ যুক্তি রয়েছে। প্রথমত, বাজারের অত্যাবশ্যক শর্ত, তথ্যের সাম্য। অর্থাৎ, ক্রেতা এবং বিক্রেতা দুজনেই কেনার জিনিসটা নিয়ে সমান অবগত থাকবেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে, হাজার গুগলের সহায়তা সত্ত্বেও, চিকিৎসক এবং রোগীর মধ্যে এই তথ্যের সাম্য আসা একেবারে অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, ফ্লোরিডার বিচারকের যুক্তিটি। কেনার বাধ্যবাধকতা কাজ করলে বাজারের নিয়ম খাটে না। আপনার যদি দামে না পোষায়, এবং তদসত্ত্বেও যদি আপনি কিনতে বাধ্য হন, তাহলে বাজারের নিয়ম চললো কি? আপনি যদি সত্যিই অসুস্থ হন, তাহলে তো আপনি যেকোনো মূল্যেই, ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও, চিকিৎসা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতি বছর, এই দেশে কয়েকলক্ষ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নীচে চলে যাচ্ছেন, স্রেফ চিকিৎসার খরচ জোগাতে না পেরে। অন্তত খাতায়কলমে, তত্ত্বগতভাবে, বাজার অর্থনীতি কিন্তু এমন পরিস্থিতির কথা বলেন না। তৃতীয়ত, বাজারের নিয়ম অনুসারে, ক্রেতা এবং বিক্রেতার সম্পর্কটি সরাসরি এবং সেইখানে তৃতীয় ব্যক্তির সরাসরি লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রশ্ন নেই (মধ্যবর্তী মুনাফাভোগী বা দালালের প্রশ্ন আনছি না)।
ছবি দেখা – সুনীল দাসের শিল্পকৃতি ও কিছু অপ্রসঙ্গ : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | বাকিসব : মোচ্ছব | ২৭ অক্টোবর ২০১৮ | ৫২৩০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫৪
ছবি দেখার কি আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে? (অথবা, রাগসঙ্গীত শোনার? সাহিত্যপাঠের? কিম্বা, ভালো সিনেমা দেখার? এককথায়, শিল্পবিষয়ে সচেতন চর্চার কি আদপেই কোনো যুক্তি আছে?) ভেবেছিলাম, এই প্রশ্নের অতি স্বাভাবিক উত্তরটি অস্তিবাচক। কিন্তু, কিছু আলাপ-আলোচনার শেষে বুঝলাম, এই প্রশ্নের সর্বজনগ্রাহ্য উত্তর পাওয়া মুশকিল।
যেমন, আমার মনে হয়, এই অভ্যেস জরুরী। এই প্রসঙ্গেই, আগের একটি লেখায় বলেছিলাম, নান্দনিকতার বোধ গড়ে তুলতে এই অভ্যেস অবশ্যপ্রয়োজনীয়। পশ্চিমী দেশে, স্কুলের বাচ্চাদের নিয়মিত আর্ট গ্যালারী বা চিত্রপ্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়ার চল রয়েছে। এবং, শুধু দেখাই নয়, ছবি দেখে কেমন লাগলো, সেই অনুভব নিয়ে তাদের দস্তুরমতো লিখতেও হয়। এইভাবেই নান্দনিকতার বোধ তৈরী হয়, আর সাথে সাথে নিজের ভালো লাগাটিকে বিচার বা বিশ্লেষণ করার বোধটিও তৈরী হয়। সুকুমার হৃদয়বৃত্তির গঠনে এমন চর্চা বা পাঠ জরুরী, এমনই আমার ধারণা।
লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে কিছু কথা : ডা. বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ মার্চ ২০২০ | ৭৬৯৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
লকডাউন নিজে নিজেই কোনো সমাধান নয়। লকডাউন অসুখ সারায়ও না, অসুখের বিরুদ্ধে সমষ্টিগত প্রতিরোধের ক্ষমতাও তৈরী করে দেয় না। বাকি সব ব্যবস্থাগুলোর সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করা গেলে লকডাউন, অবশ্যই, খুব কার্যকরী ব্যবস্থা - কার্যকরী মহামারীর ভয়াবহতা ঠেকানোর ক্ষেত্রে, কার্যকরী একজন মানুষ থেকে অন্যজনের শরীরে সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে, কার্যকরী অসুস্থ মানুষের সংখ্যা কমিয়ে রাখতে, যাতে আমাদের পরিকাঠামো দিয়ে সেই সীমিতসংখ্যক মানুষের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করা যেতে পারে - কার্যকরী, আরো প্রস্তুত হওয়ার জন্যে সময় কিনতে। কিন্তু, মনে রাখুন, এগুলো সবই হতে পারে - যদি লকডাউনের সাথে সাথে বাকি ব্যবস্থাগুলোও নেওয়া হয়, তবেই।
সমাজ ও স্বাস্থ্যকর্মী - দেওয়ালের লিখন : ডা. বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ মার্চ ২০২০ | ২৫৬৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
আমরা জানতাম, এই রোগে সারা পৃথিবীতেই চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশী করে আক্রান্ত হচ্ছেন - আক্রান্ত হলে মৃত্যুহারও তাঁদের মধ্যে বেশী - ঝুঁকির কথা আমাদের মাথায় থাকে না, এমন তো নয়। আমরা জানতাম, হাসপাতালে মাস্ক-স্যানিটাইজার অকুলান হলেও আপনাদের মধ্যে অনেকেই বাড়িতে যে বিপুল পরিমাণ মাস্ক-স্যানিটাইজার জমিয়েছেন, তা দিয়ে একটা হাসপাতালের একটা বিভাগের মাসখানেক চলে যেতে পারে। এ-ও জানতাম, আপনাদের সমাজসেবার অদম্য তাগিদ - একেকজন হাজার মাস্ক বা কুড়ি লিটার স্যানিটাইজার কিনে উচ্চবিত্ত হাইজিং-এ প্রতিবেশীদের মধ্যে বিলিয়ে যাচ্ছেন - এবং আপনাদের এবম্বিধ সমাজসেবার প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী আমরা, যারা কিনা মাথা খুঁড়েও হাসপাতাল বা দোকান কোথাওই এগুলো পাচ্ছি না - তবুও, সিরিয়াসলি বলছি - খুব ভালো লেগেছিল সেদিন প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর কথায়।
এদেশে ধর্ম বনাম স্বাস্থ্যবিধি - তবলিঘি জামাত বিপজ্জনক উদাহরণমাত্র : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ এপ্রিল ২০২০ | ৫৬৯৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই করোনার বাড়বাড়ন্ত
শুরু হয়েছে ধর্মীয় সমাবেশের হাত ধরে - যেমন ধরুন, দক্ষিণ কোরিয়ার সেই মহিলা - সেখানকার চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের কাছে কেস নম্বর থার্টি ওয়ান - একাই সংক্রমণের বড়ো চেইন রিয়্যাকশন শুরু করেছিলেন - চার্চে গিয়ে একধাক্কায় সাঁইত্রিশ জনেরও বেশী মানুষকে করোনা পজিটিভ করেছিলেন -
তাঁদের থেকে আবার আরো অনেকে। কাজেই, সংগঠিত ধর্মাচরণ সংক্রমণের সহায় - অন্তত এই পরিস্থিতিতে - এবং, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মই এই বিপদের বিরুদ্ধে সচেতন ও দায়িত্বশীল আচরণ করে না - ধর্মাচ্ছন্ন এই দেশে তো একেবারেই না।
করোনা-নীতি বিষয়ে একটি প্রশ্নোত্তর : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৭ এপ্রিল ২০২০ | ৬৩২৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩২
আরে, বলতে চাইছেন কী এক্স্যাক্টলি? লকডাউনটা ভুল - এই তো??
এককথায় ঠিক নাকি ভুল - বলা মুশকিল। কিন্তু, তার চেয়েও বড় কথা - বলে আর লাভ নেই। আমরা তো লকডাউনের চতুর্থ সপ্তাহে আছি। লকডাউনই বলুন বা সোশ্যাল ডিস্টান্সিং - তার আর্থিক প্রভাব গভীর। শুধু গরীব লোকই না - আঁচ পড়বে আমার বা আপনার উপরেও - কিন্তু, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষেরা যেমন ঘোর বিপদে, নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে, আপনি বা আমি ততোখানি নই। লকডাউন ঠিক হয়েছিল, নাকি ভুল - এ নিয়ে আলোচনা করার সময় অনেক পাওয়া যাবে - স্রেফ লকডাউন করে করোনার থাবা থেকে কত লক্ষ বা কত কোটি মানুষকে বাঁচিয়ে দেওয়া গেল, সে নিয়েও হাওয়া গরম করার সময় পরে মিলবে - আপাতত এটুকু নিশ্চিত করা যাক, যাতে লকডাউনের কারণে অনাহারে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত না হতে পারে।
ছবি দেখা - ফেলে আসা এক প্যান্ডেমিকের ছবি : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | ছবি | ০২ মে ২০২০ | ৩৪৯৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
এই হতাশার ছবি, এই ক্লান্তির ডকুমেন্টেশন করে চলেছেন কোনো না কোনো শিল্পী - পৃথিবীর কোনো না কোনো প্রান্তে - নিশ্চিত। শিল্পীদের মতো করে এই অনুভূতি চিরকালীন করতে পারেন আর কে-ই বা। হ্যাঁ, এই ডিজিটাল দুনিয়াতেও - হাজারে হাজারে বা লক্ষ লক্ষ ছবি বা ভিডিও - যার কতক সত্যি, কতক মিথ্যে - সেই ক্যামেরাবন্দী ছবির ভিড়ে চিত্রকরের ছবির আবেদন ভিন্ন অবশ্যই। মুনখ-ই বলেছিলেন, ফটোগ্রাফ কখনোই পেইন্টিং-এর যথার্থ বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে না - অন্তত ততোদিন পর্যন্ত নয়, যতোদিন না স্বর্গে বা নরকে ক্যামেরায় ছবি তোলার ব্যবস্থা হচ্ছে।
ছবি দেখা – পঁচিশে বৈশাখে রবীন্দ্রনাথের একখানা ল্যান্ডস্কেপ : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৮ মে ২০২০ | ৪০২০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
ছবি নিয়ে তিনি আঁচড় কাটতে কাটতে যে গভীরতায় পৌঁছেছিলেন, আজীবন সাঁতারু বহু শিল্পীর সে জলে পৌঁছানো হয়ে ওঠে না। অতএব, প্রত্যাশিতভাবেই, ইউরোপীয় চিত্রদর্শনে অভ্যস্ত চোখ বা প্রাচ্য চিত্ররীতিতে অভ্যস্ত অনুভূতি – দুইয়ের কেউই রবীন্দ্র-অনুভবে গভীর অবগাহনে সক্ষম হলেন না – হওয়া সম্ভবই ছিল না, হয়ত। একটি সাক্ষাৎকারে এই সময়ের শিল্পী লালুপ্রসাদ সাউ বিমূর্ত শিল্পকলা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথের ছবি, তাঁর মননটাই সম্পূর্ণ আলাদা স্তরের – সেই চেতনার স্তরে উত্তরণ সবার পক্ষে সম্ভব নয়।
পাশে থাকার বার্তা - ব্যাঙ্কসির ছবি : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৪ মে ২০২০ | ৩৯৮২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
ব্যাঙ্কসি কে, বা তাঁকে কেমন দেখতে, তিনি শ্বেতাঙ্গ নাকি তাঁর গাত্রবর্ণ গাঢ় - সেকথা কেউ জানেন না। অথচ, তিনি ভুবনবিখ্যাত। ক্যামেরার সামনে নিজের মুখটিকে অষ্টপ্রহর ভাসিয়ে রাখার এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টার যুগে, তিনি নিজেকে আড়ালে রাখেন - এবং, অনেকে বলেন, এই আড়ালে রাখার সচেতন প্রয়াসই, সম্ভবত, তাঁর বিপণন-কৌশল - আর, সেটাকে যদি কৌশল বলে মেনেই নেন, মেনে নিতেই হয়, সে কৌশল অসম্ভব কার্যকরীও বটে। তিনি পথশিল্পী - রাস্তার ধারের দেওয়ালে তিনি ফুটিয়ে তোলেন নিজের শিল্প - তিনি গ্রাফিত্তি-শিল্পী - এক নিজস্ব ধাঁচের স্টেনসিলে দেওয়ালে আঁকেন সময়ের ধারাভাষ্য। গ্যালারিতে নিয়মিত শো না করেও তিনি বিশ্ববিখ্যাত।
অতিমারী - শিকারী ও শিকার : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৩৮১৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
কোভিড থেকে বাঁচার জন্যে সুরক্ষাসামগ্রীর দাম বেড়েছে বহুগুণ। N95 মাস্কের দাম কোভিড পরিস্থিতির আগে যা ছিল, কিছু ক্ষেত্রে দাম বেড়েছে তার দশগুণ - পরবর্তীতে দামে কিছুটা লাগাম টানা গেলেও, কোভিড-পূর্ব দামে পৌঁছানো যায় নি। পিপিই কিট বা হেড শিল্ড সবকিছুর ক্ষেত্রেই তা-ই। এর সাথে বাড়তি বিপদ, নিম্নমানের সামগ্রীকেও চড়াদামে বেচে দেওয়া। সরকারি কমিটি, যাদের দায়িত্ব গুণমান যাচাই করা, তাঁরা প্রবল উদ্যোগে এবিষয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন - এমন অপবাদ কেউই দিতে পারবে না। যাঁরা এইধরণের সুরক্ষাসামগ্রী তৈরী করেন, যাঁদের এবিষয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে - বিশ্বজুড়ে কোভিড মাথাচাড়া দেওয়ার সময়েই তাঁরা সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ঠিক কী পরিমাণ বাড়তি সামগ্রী প্রস্তুত করে রাখা প্রয়োজন - অভিযোগ, সরকার তাঁদের একাধিক চিঠির উত্তরটুকুও দেননি।
অপবিজ্ঞানের রমরমার এই দিনকালে এমন ধারালো বিজ্ঞানচর্চা বাংলা ভাষায় আরও প্রয়োজন : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | পড়াবই : প্রথম পাঠ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৩৯০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
বিশিষ্ট কিছু বিজ্ঞানীর কথা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের স্বর্ণযুগের কাহিনি, গণ-আন্দোলনে বিজ্ঞানীদের অবস্থান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক প্রচারে অপবিজ্ঞানের জনপ্রিয় ব্যবহার, গণ-মারণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের ভূমিকা। বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে একগুচ্ছ প্রবন্ধের সংকলন। পড়লেন চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের কর্মী বিষাণ বসু।
কোভিড ভ্যাক্সিন, ফাইজার মৃত্যু, তারপরেও কিছু কথা : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ১৭ জানুয়ারি ২০২১ | ৭২৮৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩৪
ফাইজারের বায়োটেকনোলজি-জাত ভ্যাক্সিন এদেশে এখনও আসেনি। সে ভ্যাক্সিনে নরওয়েতে তেইশ জন মারা গিয়েছেন। সকলেই ভ্যাক্সিনের কারণেই মারা গিয়েছেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয় - তবু, ধরেই নেওয়া যাক, এঁদের মৃত্যুর কারণ ওই টিকা। এই ভ্যাক্সিন সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতির এম-আরএনএ ভ্যাক্সিন - পৃথিবীতে প্রথম। আগামী দিনে এই পথেই হয়ত আসবে অজস্র সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধী টিকা।
দিমিত্রভ পড়িনি, তবু... : বিষাণ বসু
বুলবুলভাজা | ভোটবাক্স : বিধানসভা-২০২১ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৯৯৮৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬৬
শুধু বলি, স্পষ্টভাবে বলুন - যা বলতে চাইছেন, দায়িত্ব নিন। উত্তরটি গ্রহণযোগ্য না-ই হতে পারে - সর্বজনগ্রাহ্য তো কখনোই হবে না - তবুও, স্পষ্ট অবস্থান ও উচ্চারণ জরুরি। শুধুই নেতি নেতি করে আধ্যাত্মিক সত্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকলেও, রাজনৈতিক লক্ষ অর্জন মুশকিল। বিরোধিতা করার মুহূর্তে বিরুদ্ধ কোনো একটি দলের পক্ষে বোতাম টেপা জরুরি। আমার পক্ষে সেই বোতাম বামেদের - আপনি সিদ্ধান্ত নিন, সেই বোতাম কাদের।