এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • আরজি কর - জুনিয়ার ডাক্তারদের অনশন এবার তোলার সময় হয়েছে কি? 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ | ১৬৯৪ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • এটা ব্যক্তিগত মতামত। নিয়মিত দিনপঞ্জিতেও থাকবে। সে পরে দেওয়া যাবে। অন্যভাবে। 
     
    কাল কিঞ্জল নন্দর বক্তব্য নিয়ে খুব হইচই হয়েছে। ট্রোলও হয়েছে। কিন্তু ওই একই প্রেস রিলিজে পরিচয় পাণ্ডাও কিছু বক্তব্য রাখেন, কেন তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এই নিয়ে। সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংক্ষেপে, ব্যাপারটা এই, যে, তাঁরা কিছু দাবী রেখেছিলেন। সরকার একটি চিঠি দিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে উনি জানাতে চান, যে, এই আন্দোলন কেবল কয়েকটি রেস্টরুম, কয়েকটি সিসিটি ক্যামেরার আন্দোলন নয়। এটি সামগ্রিক ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে পরিবর্তন এবং শুদ্ধিকরণের আন্দোলন। এটাকে এরকম ভাবে ছোটো করে দেবার কোনো মানে হয় না। এছাড়াও বলেন, দশ দফা দাবী থেকে তাঁরা নড়বেন না, এবং সরকার কোনো সদর্থক ইচ্ছা দেখায়নি এই দশ দফা দাবীকে নিয়ে। এবং তিনি নিজেও অনশনে যোগ দেন।

     শুনে সবই মিলিয়ে নেওয়াটা আমার স্বভাব। দশ দফা দাবীটা জানতাম। সরকারের চিঠিটাও দেখলাম, পাবলিক ডোমেনেই আছে। পরিচয় নিজের দশ দফা দাবী বা সরকারের চিঠি, কোনোটাই পড়েছেন কিনা জানিনা, তবে বিশেষ খাটাখাটনি না করেই দাবী এবং সরকারি প্রত্যুত্তরের  তালিকাটা বানিয়ে ফেলা গেল। সেটা নিচে দিলামঃ 

    ১। দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্যাতিতার বিচার। - এটা নিয়ে সরকারের চিঠিতে কিছু লেখা নেই। থাকার কথাও না।  তদন্ত সিবিআই করছে। 
    ২। স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ। ​​​​​​​- এটা নিয়েও কিছু নেই। তবে আগে অনেকগুলি দাবী মানলেও এটা ​​​​​​​সরকার মানেনি ​​​​​​​এবং ​​​​​​​তাতে ​​​​​​​রাজি ​​​​​​​হয়েই ​​​​​​​ডাক্তাররা ​​​​​​​কর্মবিরতি তুলেছেন। 
    ৩। কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা। - সরকার জানিয়েছে এটা হয়ে গেছে। অক্টোবরের ১৫ তারিখের মধ্যে দুটো স্বাস্থ্য জেলায় এবং ৩১ এর মধ্যে গোটা রাজ্যে চালু হবে। 
    ৪। হাসপাতালে কত বেড ফাঁকা তার ডিজিটাল মনিটরিং। - সরকার জানিয়েছে এটাও হয়ে গেছে। ওই একই টাইমলাইনে (১৫ এবং ৩১) এটাও করবে বলে জানিয়েছে। 
    ৫। কলেজভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন। সিসিটিভি, হেল্প নম্বর, প্যানিক বাটন চালু। - সরকার একটা বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে। প্রতিটি মেডিকাল কলেজ এবং হাসপাতালে স্টেকহোল্ডার্স কমিটি, সবার প্রতিনিধিত্ব নিয়ে, তৈরি হয়ে গেছে। আরেকটা আছে গ্রিভান্স রিড্রেসাল কমিটি। তার হেল্পলাইনের টোল ফ্রি ফোন নম্বর এবং মেল আইডিও দেওয়া আছে। সিসিটিভি ইত্যাদির আপডেটও দেওয়া আছে। আরজি কর বাদে সর্বত্র ৯০% কাজ হয়ে গেছে বলে জানানো হয়েছে। আরজিকরে এই কাজের জন্য এনওসি পেয়েছে দুদিন আগে, তাই কাজ এগোয়নি। এবং বাকিটা ১৫ তারিখের মধ্যে শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে। এইটা কোর্টেও জানিয়েছিল সরকার। এর জন্য আন্দোলনের প্রয়োজন ছিল বলে আদৌ মনে হয়না।
    ৬। সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে পুলিশ কর্মী। প্রচুর মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ।    - এইটা আংশিক মানা হয়েছে। ১১১৩ জন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৫১৪ জন নিরাপত্তারক্ষী নিযুক্ত হয়েছে। যদিও তারা প্রাইভেট। কিন্তু  পুলিশ ভেরিফিকেশন, ট্রেনিং, পিএসএআরএ লাইসেন্স ইত্যাদি সহ। 
    ৭। শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ। - এটাও মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাইমলাইন ছাড়া। বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব। 
    ৮। 'ভয়ের রাজনীতি'তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা। - এটা নিয়ে চিঠিতে কিছু বলা হয়নি। তবে এই দাবীটা ঠিক বুঝিও নি। অভিযুক্ত হলেই তো ব্যবস্থা নেওয়া যায়না। তদন্ত লাগে। অনেকগুলো কমিটি হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে, আরজি করেও জনা পঞ্চাশেক জনকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করা হয়েছে, এটা কাগজে পড়েছি। ফলে এটাও মেনে নেওয়া হয়েছে, ধরে নিলাম। 
    ৯। ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনকে স্বীকৃতি। - এইটা নিয়ে কিচ্ছু বলা হয়নি। সরকার এটা এক বছর সময় নিয়েই ঘোষণা করতে পারত। কিন্তু কেন করেনি, বোঝা যাচ্ছেনা। 
    ১০। দুর্নীতির তদন্ত। - এইটা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। তবে এই দাবীটা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন, এবং শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এখনও আরজি করকে নিয়েই তদন্ত করতে বলেছে। পরে দরকার হলে বৃহত্তর জিনিসটা নিয়েও হবে, এটা পর্যবেক্ষণে বলেছে। 

    তাহলে ৫ টা দাবী সরাসরি মেনে নেওয়া হয়েছে। ১ টা দাবী আধখানা ( আমার সেটাও যুক্তিযুক্ত লেগেছে) । ২ টো রাজ্যের আওতার বাইরে।  যোগ করলে হয়, সাড়ে সাত। ১ টা খুব যুক্তিযুক্ত দাবী(ছাত্র সংসদ ইত্যাদি) মানা হয়নি। আরও একখানা,  (স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ), এটা দাবী করার কোনো মানে নেই। এর আগে ৫ দফা দাবীতে এটা ছিল, তার বেশিরভাগটাই মেনে নেওয়া হয়েছিল, এইটা হয়নি, এবং সেটায় রাজি হয়েই কর্মবিরতি তোলা হয়েছিল। ডাক্তারদের দাবীগুলি হরবখৎ বদলাচ্ছে, প্রথম থেকেই, এটাও বলে রাখা উচিত।

    যাহোক, ছাত্র সংসদের জন্য দাবীটা রাখা উচিত, চাপও। কিন্তু তার জন্য অনশনের প্রয়োজন নেই। আর বাকি সাড়ে সাত বা সাড়ে আটটা দাবী যে মেনে নেওয়া হয়েছে, সেটাকে সদর্থক কেন ভাবা হচ্ছেনা, এবং এর পরেও অনশনটা এখনও কেন চালিয়ে যাওয়া হবে, এইটা নিয়ে প্রশ্ন রইল। সত্যিই, সরকারকে চাপে রাখাটা যেমন জরুরি, একই সঙ্গে জীবন নিয়ে খেলাটা একেবারেই ঠিক না। 

    এছাড়াও দ্বিতীয় আরেকটা প্রশ্ন রইল, যে, এর পুরোটা শুরু হয়েছিল তো সুবিচারের দাবী থেকে। সেটা এখনও এক নম্বরেই আছে। সেটায় এজেন্সি যথেষ্ট ঢিলে দিয়েছে। তো, তাদের সঙ্গে একটাও বৈঠক, একটাও ডেপুটেশন (লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়া বা না ছাড়া), বা দাবী সম্বলিত একটা ইমেল, এর কোনোটাই কেন করা হয়নি? এইটাই তো প্রথম দাবী হওয়া উচিত। সেটা এরকম পিছনের সারিতে, প্রায় অস্তিত্বহীন জায়গায় চলে যাচ্ছে কেন? 

    সরকারকে সাহায্যের জন্য নয়, স্বাস্থ্যব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, এবং সরকার আর সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষকে চাপে রাখার জন্য এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুবই জরুরি। আরও কিছু জিনিসও জরুরি, যেমন, বেসরকারি ক্ষেত্রের গলাকাটা, জেনেরিক ওষুধ, রোগীদের নিরাপত্তা এবং চিকিৎসার গ্যারান্টি, সে পরে লেখা যাবে। আপাতত এইগুলোর জবাব পেলে ভালো লাগবে। না পেলেও বা কি। এমনিতেই এইসব উটকো প্রশ্ন করার জন্য সোশাল মিডিয় জুড়ে অনেকেই রেগে যাচ্ছেন। তাও যান। কিন্তু যুক্তির জবাব তো যুক্তিতেই দিতে হবে, "আমি কি মহান", কিংবা "আপনি পয়সা খান" বললে তো হবে না। বললে তো সেটা ট্রোল হয়ে যায়। আর ট্রোল হল সেই কালসাপ, যা অন্য কিছু খেতে না পেলে নিজের ল্যাজই নিজে খেতে শুরু করে। এই দেখুন কিঞ্জল নন্দকেই কাল গণশত্রু বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উনি তো অসততা কিছু করেননি, ওঁর বক্তব্যের সঙ্গে একমত হবার দরকার নেই, কিন্তু বিরোধিতা করতে চাইলে তো যুক্তি দিয়ে করতে হবে। যদি না পারেন, তো আমাকেই বলবেন, একমত হই বা না হই, যুক্তি সাজিয়ে দেব। এই দুর্গতি আর চোখে দেখা যাচ্ছেনা।
     
    সূত্রঃ
    ১। কিঞ্জল নন্দ এবং পরিচয় পাণ্ডার বক্তব্যঃ https://www.facebook.com/share/v/3LU3xrfMLUn49mjZ/

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ | ১৬৯৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫০538480
  • সিবিআই চার্জশিট দিয়েছে এবং বস্তুত কপু র রিপোর্ট কেই সমর্থন করছে -এরপরেও কোর্টে যাবে।  বাকিগুলো কোনভাবেই এত ক্রিটিক্যাল নয় যে একবারে আমরণ অনশন এর পথ নিতে হবে । তা হলে কাল যে কেউ যে কোন দাবিতে একই পথ নেবে। 
     
    যারাই এটা ওদের বুঝিয়ে থাকুন, তারা এই অনশনকারীদের শুভানুধ্যায়ী নন এটা পরিষ্কার । 
  • :|: | 174.25.***.*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৪৯538481
  • এই "বুঝিয়েছে" ব্যাপারটা বোঝা দুষ্কর। ফেলিওর নকশাল আন্দোলন নিয়েও একই কথা বলা হয়। রীতি মতো ভালো ছাত্রদের নাকি "বোঝানো" হয়েছিলো তাই কেরিয়ার জলাঞ্জলি দিয়ে তারা মানুষ খুনের মতো ব্যাপারেও জড়িয়ে পড়তে দ্বিধা করেননি। এইখানে দাঁড়িয়ে মেধা আর মুখস্থ বিদ্যার মধ্যে পার্থক্যটা যাকে বলে জাজ্বল্যমান হয়ে ওঠে। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:bddc:daa8:c8b1:***:*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১১:০৬538482
  • '৮। 'ভয়ের রাজনীতি'তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা। - এটা নিয়ে চিঠিতে কিছু বলা হয়নি। তবে এই দাবীটা ঠিক বুঝিও নি। অভিযুক্ত হলেই তো ব্যবস্থা নেওয়া যায়না। তদন্ত লাগে। অনেকগুলো কমিটি হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে, আরজি করেও জনা পঞ্চাশেক জনকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করা হয়েছে, এটা কাগজে পড়েছি। ফলে এটাও মেনে নেওয়া হয়েছে, ধরে নিলাম'
    - সত্যিই কি মেনে নেওয়া হয়েছে? আজকের আবাপ থেকে -
     
     'কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার কৌস্তভ চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যে থ্রেট কালচার চলছে, তার অন্যতম ভয়ঙ্কর রূপ কল্যাণী জেএনএম। বেশ কয়েক জনকে অপসারণ করার পরেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। এই থ্রেট কালচারের সিন্ডিকেটের যারা মূল মাথা, রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আমরা রাজ্য সরকারকে গণইস্তফার মধ্যে দিয়ে একটা বার্তা দিতে চাইছি'
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৫৪538483
  • বুঝিয়েছে বলতে at keast primarily suggested বলতে চেয়েছি- এদের কেউ কেউ over confidence এর জন‍্য, কেউ বন্ধুর জন‍্যও করছেন হয়ত - কিন্তু র্‍‍্যাশনালি এই আন্োলন চালিয়ে যাওয়ার মানে দেখিনা যদিও এই মুহূর্তে পিছিয়ে আসা কঠিন।
     
    আর সিনিয়র ডাক্তাররা হাওয়ায় কথা না ভাসিয়ে সরাসরি  নাম নিচ্ছেন না কেন? কেউ থ্রেট দিলে তো পুলিশে অভিযোগ জানানো যেতেই পারে - অন্তত এখন জনগণের সহানুভূতি তো তারা পাবেনই। তা ছাড়া এতদিন এরা চুপ করে বসেছিলেন কেন সেটাও প্রশ্ন
  • . | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫৯538486
  • ডাক্তাররা তার মানে চাড্ডি হয়ে গেছে। ভেরি ব‍্যাড।
  • a | 49.183.***.*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৫৮538488
  • স্বাস্থ মন্ত্রীর অপসারণটা সাগর দত্ত ঘটনার পর দাবিপত্রে ফিরে আসে। তাই সেটাকে আলাদা দাবি বলেই গন্য করা হচ্ছে বলে মনে হয় 
  • দীপ | 42.108.***.*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:১২538490
  • ৯/৮/২৪, সেই জঘন্য, ঘৃণ্য অপরাধের দিনে, ঘটনাটির ধাক্কা সামলানোর আগেই আওয়াজ তুলেছিলাম আমরা সবাই। প্রত‍্যেকটি মানুষের কোন না কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ আছে। থাকবেই। কিন্তু সেদিন আমরা যে সকল ডাক্তাররা অন‍্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছিলাম তাদের মুল লক্ষ্য একটাই ছিল.. ন্যায় বিচার। সেদিন সেখানে প্রত‍্যেকটি মানুষ নিজেদের দলিয় রঙকে বাইরে রেখে এক হয়ে আওয়াজ তুলেছিলেন। এরপর আমাদের আন্দোলন জনসাধারণের আন্দোলন হয়ে ওঠে। সেখানে সেই বিপুলসংখ্যক“সাধারণ” মানুষের একটাই রঙ ছিল … সত‍্য। যে সকল মানুষ যারা নিজেদের রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে শুধুমাত্র সেই সত্যের লড়াই এ সামিল হতে এসেছেন তাদের আমরা সসম্মানে আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু যারা দলিয় রাজনীতি করতে চেয়েছেন WBJDF এর আন্দোলন নিয়ে তাদের প্রথম দিন থেকেই বাঁধা দিয়েছি আমরা, এর পরেও দেব। আন্দোলন করা প্রত‍্যেকের অধিকার। রাজনৈতিক দলেরও। কিন্তু তাদের আন্দোলন তাদের মত হোক। আন্দোলনের অধিকার যেমন শুধুমাত্র WBJDF এর না, তেমন আন্দোলনের দ‍্যায় ও শুধুমাত্র আমাদের না। আমরা সবাই ডাক্তার, রাজনীতিবিদ নই। যেখানে আমার ভাই বোনেরা মৃত‍্যুর সাথে লড়াই করছে, তাদের জীবন নিয়ে প্রতি মুহূর্তে সংশয়, সেখানে আমরা প্রত‍্যেকে আবেগগত দুশ্চিন্তায়। সেখানে সবাইকে পাশে চাইছি। রাজনীতি চাইছি না। আমার কোনো কথা যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী। Social media তে এতদিন এক দল আক্রমণ করেছে, এখন আর এক দল করছে, বাকিরাও বাদ রাখবেন কেন? কিন্তু তাতে আন্দোলন থামবে না। আন্দোলন অরাজনৈতিক ও অদলীয়ই থাকবে আর তীব্র থেকে তীব্রতর হবে কারণ “জনসাধারণ” এর জোর কতটা সেটা এই আন্দোলন বুঝিয়ে দিয়েছে।
     
    -কিঞ্জল নন্দ
  • :|: | 174.25.***.*** | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫৮538491
  • "জনসাধারণের জোর কতটা" সেটি আলাদা করে এই আন্দোলনের বোঝাবার কি আছে? জানা কথাই তো। অদ্ভুত কমেন্ট যা হোক! গণতন্ত্র মানেই তো তাই -- জনতা-জনার্দন। ইলেকশনই তো তার প্রমান।
  • সুরজিৎ ব্যানার্জি | 2405:201:8008:ead8:593:c4f9:f34a:***:*** | ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫১538511
  • আপনি যে যুক্তির বিস্তার ঘটিয়েছেন, তার সবচেয়ে বড় গলদ আপনি জুনিয়র ডাক্তারদের তরফের কোনো কথা না শুনে বা শুনতে চাওয়ার বিন্দুমাত্র ধৈর্য না দেখিয়ে আপনার পূর্বকল্পিত বা পূর্বনির্ধারিত ভাবনা প্রতিষ্ঠা করার জন্য শব্দের জাল বুনেছেন। এটা যেমন প্রথমত যুক্তিবিদ্যার একদম বিরোধী, দ্বিতীয়ত আপনার একদেশদর্শিতার পরিচয় জ্ঞাপক।
    এইবার আসি, আপনার দেওয়া প্রতিটি বিন্দুতে যুক্তির অবতারনা প্রসঙ্গে:
    ১। আপনি ১ নং বিন্দুতে লিখেছেন: “দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্যাতিতার বিচার। - এটা নিয়ে সরকারের চিঠিতে(অর্থাৎ স্ট্যাটাস রিপোর্টে) কিছু লেখা নেই। থাকার কথাও না। তদন্ত সিবিআই করছে।”
    WBJDF এর ১০ দফা দাবির ১ নং দাবি: দীর্ঘসূত্রিতায় বিভ্রান্ত না করে দ্রুত ও স্বচ্ছতার সাথে অভয়ার ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।
     
    এই দাবির আঙুল প্রাথমিকভাবে CBI এবং সুপ্রিম কোর্টের দিকে, এই ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। 
    কিন্তু আরেকটু তলিয়ে দেখলে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে এই দাবির অঙুলি নির্দেশ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও। কীভাবে, এর জন্য আমি চারটি বিন্দু রাখতে চাই।
     
    ১) প্রশাসনিক বিচার বলে একটি ব্যাপার আছে। অভয়া হত্যার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার সম্ভাবনা ছিল যাদের, তাদের বিরুদ্ধে prima facie disciplinary action নেওয়া প্রশাসনিক বিচারের আওতাধীন। 
    ২) অথচ, এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার কিছু তো করেইনি, বরং সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত এবং যথার্থ বিচারের বিরুদ্ধে কপিল সিব্বল সহ নামি দামি উকিলদের নামিয়ে দিয়েছে। 
    ৩) কুলতলির ব্যাপারে হাই কোর্ট পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করে। একই ব্যাপার ৯ জন যুবকের গ্রেফতারির ক্ষেত্রেও আমরা দেখতে পাই। এ ব্যাপারে আমি হাইকোর্টের এক নামি উকিলের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাই। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি, আদালত এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় না কেন? তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। এক কথায়, এইগুলো প্রশাসনের বিচারের আওতায় পড়ে।
    একটা বিরাট ব্যাপার হলো, এই যে তথ্য প্রমাণ লোপাট হলো, সেটার জন্য প্রশাসনিক কোনো স্টেপ এখনও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি । সন্দীপ ঘোষের suspension টাও arrest এর পরে হলো। প্রচণ্ড দ্রুততার সঙ্গে CNMC-তে প্রাইজ পোস্টিং-এর বদলে তার বিরুদ্ধে disciplinary action নেওয়াটা সঠিক প্রশাসনিক বিচারের আওতায় পড়তো, কিন্তু তা হলো না। 
    সুতরাং, সরকার প্রশাসনিক বিচার দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ। তাই নির্লজ্জের মতো সব কিছু CBI এবং সুপ্রিম কোর্টের ঘাড়ে ফেলে রাজ্য সরকার নিস্তার পেতে পারে না।
    তাই যারা ১ নং বিন্দুর বিষয়ে একথা বলেন যে এটা CBI-এর ব্যাপার, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বইকি, অন্তত যুক্তির নির্মোহ কষ্টিপাথরের বিচারে তো বটেই।
    ৪) WBJDF খুব স্পষ্টভাবে বলেছে যে তারা CBI-এর interim chargesheet দেখে তাদের উপর ভরসা রাখতে পারছে না। তাই তারা ১৪ অক্টোবর CBI-এর প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন ও স্বচ্ছ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে রাজভবন অভিযান করছে। 
    ২।  আপনি দ্বিতীয় যে বিন্দুটি রেখেছেন সেটি হলো:
           “স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ। - এটা নিয়েও কিছু নেই। তবে আগে অনেকগুলি দাবী মানলেও এটা ​​​​​​​সরকার মানেনি ​​​​​​​এবং ​​​​​​​তাতে ​​​​​​​রাজি ​​​​​​​হয়েই ​​​​​​​ডাক্তাররা ​​​​​​​কর্মবিরতি তুলেছেন।”
     আপনি বললেন, “তাতে ​​​​​​​রাজি ​​​​​​​হয়েই ​​​​​​​ডাক্তাররা ​​​​​​​কর্মবিরতি তুলেছেন”
    এতো বড় মিথ্যে কথা আপনি নিপাট বলে ফেললেন। আপনি ভালোকরেই জানেন যে ডাক্তাররা ​​​​​​​কর্মবিরতি তুলেছিলেন সাধারণ মানুষের কথা ভেবে, তাদের দিকে তাকিয়ে। আপনি কত সহজে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার কাজ করলেন।
    এই প্রসঙ্গে WBJDF-এর ১০ দফা দাবির ২ নং দাবিটি একটু দেখে নিই: স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রশাসনিক অক্ষমতা ও দুর্নীতির দায় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যসচিবকে অবিলম্বে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। সুতরাং বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই যে কর্মবিরতি তুললেও এই দাবি এখনও বলবৎ আছে। 
    ৩।  আপনি তৃতীয় বিন্দুতে যে প্রসঙ্গটি তুললেন সেটি হলো:
     “কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা। - সরকার জানিয়েছে এটা হয়ে গেছে। অক্টোবরের ১৫ তারিখের মধ্যে দুটো স্বাস্থ্য জেলায় এবং ৩১ এর মধ্যে গোটা রাজ্যে চালু হবে।”
     
    সরকারের প্রতি আপনার এই অপার বিশ্বাস দেখে আমার সরল মন প্রথমে তাজ্জব হয়ে পড়লেও, আপনারই দেখানো যুক্তিবিদ্যার পথ ধরে বুঝতে অসুবিধা হলো না আপনার প্রকৃত উদ্দেশ্য। আপনি যদি সত্যিই যুক্তির উপর নির্ভর করতেন, তবে আপনি নিদেনপক্ষে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতেন, তাদের মতামত জানতে চাইতেন। জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের প্রেস রিলিজে স্পষ্ট জানিয়েছেন যে স্ট্যাটাস রিপোর্টে কেন্দ্রীয় রেফারাল নিয়ে যা লেখা আছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট নয়।  
    ৪।  আপনি চতুর্থ যে বিন্দুটি তুললেন সেটি হলো:
    “হাসপাতালে কত বেড ফাঁকা তার ডিজিটাল মনিটরিং। - সরকার জানিয়েছে এটাও হয়ে গেছে। ওই একই টাইমলাইনে (১৫ এবং ৩১) এটাও করবে বলে জানিয়েছে।”
    ৩। নং বিন্দুতে যা বললাম, সেটাই প্রযোজ্য।
    ৫।  আপনি পঞ্চম যে বিন্দুটি তুললেন সেটি হলো:
    “কলেজভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন। সিসিটিভি, হেল্প নম্বর, প্যানিক বাটন চালু। ইত্যাদি। 
    আপনি সরকারের কথাগুলোকে যেভাবে উপস্থিত করলেন, তাতে আমি ধন্ধে পড়ে গেলাম, আপনি নিজেই সরকারের কেউ নন তো?
    এক্ষেত্রে কিছু পর্যবেক্ষণ:
    ক। সব কথা continuous tense-এ লেখা।
    খ। প্রত্যেকটি কলেজে আলাদা আলাদাভাবে কী এবং কত কাজ হয়েছে, তার কোনো বিবরণ নেই।
    গ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়, সেটি এই প্রসঙ্গে WBJDF-এর ৫ নং দাবি। এই দাবিটি এই:
    অতিদ্রুত সব কটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব সহ কলেজভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন করে প্রয়োজনমাফিক সিসিটিভি, অন কল রুম, বাথরুম, হেল্পলাইন নাম্বার এবং প্যানিক বাটনের ব্যবস্থা করতে হবে।
    যে কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষে এটা বুঝতে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে WBJDF-এর সঙ্গে আলোচনা না করে একপাক্ষিকভাবে এর সমাধান সম্ভব নয়।  
    ৬। আপনি বোল্ড করে লিখলেন: 
    সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে পুলিশ কর্মী। প্রচুর মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ।
    WBJDF ৬ নং দাবিতে স্পষ্ট উল্লেখ করেছে: সিভিক ভলান্টিয়ার নয়, স্থায়ী পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী নিয়োগ করতে হবে।
    কিন্তু স্ট্যাটাস রিপোর্টে রয়েছে— ১১১৩ জন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ এবং ১৫১৪ জন নিরাপত্তারক্ষী (private) নিযুক্ত হয়েছে।
    আপনি বিশেষণ ব্যাবহার করলেন ‘প্রচুর’। কতটা হলে ‘প্রচুর’? এগলো WBJDF-এর সঙ্গে সরকারের আলোচনার উপর নির্ভরশীল। একতরফাভাবে সরকার এটা ঠিক করতে পারে না। এমনকী স্ট্যাটাস রিপোর্টে ‘প্রচুর’--- এই বিশেষণটি ব্যাবহারও হয়নি। কিন্তু আপনি আগ বাড়িয়ে এই বিশেষণটি ব্যাবহার করে আপনার সরকারের পক্ষে stance, নাগরিক সমাজ যেভাবে বলে থাকে—অভয়ার বিপক্ষে stance স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
    ৭।  ৭ নং পয়েন্টে আপনি লিখেছেন:
    শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ। - এটাও মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাইমলাইন ছাড়া। বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব।
    কচু মেনে নেওয়া হয়েছে! ভাঁওতা ছাড়া এটা আর কিছু নয়। নাহলে স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকতো:
    ক) কতগুলো শূন্যপদ আছে
    খ) শূন্যপদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি কবের মধ্যে দেওয়া হবে, আনুমানিক কতদিনের মধ্যে সমস্ত নিয়োগ সম্পন্ন হবে, ইত্যাদি, ইত্যাদি।
    আসলে আমরা এতদিন সবকিছু মেনে নিয়েছি। মেনে মেনে এমন এক মনস্তত্ত্বে অভ্যস্ত হয়েছি যে কিছুই তো হওয়ার নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক আন্দোলন আমাদের মধ্যে এক নতুন সাহসের জন্ম দিয়েছে। আর আমরা মানবো না, মানছি না। আপনার বস্তপচা যুক্তি আর আমাদের ভোলাতে পারবে না। ভুলে যাবেন না, এটা দ্রোহকাল!
    ৮।  ৮ নং বিন্দুতে আপনি লিখেছেন “'ভয়ের রাজনীতি' নিয়ে স্ট্যাটাস রিপোর্টে কিছু বলা হয়নি। তবে এই দাবীটা ঠিক বুঝিও নি। অভিযুক্ত হলেই তো ব্যবস্থা নেওয়া যায়না। তদন্ত লাগে। অনেকগুলো কমিটি হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে, আরজি করেও জনা পঞ্চাশেক জনকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করা হয়েছে, এটা কাগজে পড়েছি। ফলে এটাও মেনে নেওয়া হয়েছে, ধরে নিলাম।” 
    প্রথমে বলে রাখি, যদিও আপনি খুব ভালোভাবেই জানেন, আরজি করে প্রায় পঞ্চাশ জনকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করা হয়েছে— তবে এটা হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের চাপে। সরকার যে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভীক দে-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, একথা নিশ্চয়ই আপনি সরকারের পক্ষে যুক্তি সাজাতে গিয়ে ভুলে যাননি। আর এতো গুরুত্বপূর্ণ দাবি আপনি কেন বোঝেন না, এটা বুঝতে আমি কোনো কষ্ট করতে রাজি নই।
    ৯। ১০ নং বিন্দুতে আপনার হেডিং— দুর্নীতির তদন্ত। - এইটা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। তবে এই দাবীটা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন, এবং শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এখনও আরজি করকে নিয়েই তদন্ত করতে বলেছে। পরে দরকার হলে বৃহত্তর জিনিসটা নিয়েও হবে, এটা পর্যবেক্ষণে বলেছে। 
    বাহ। সব সুপ্রিম কোর্ট করবে! আশ্চর্য আপনার ধীশক্তি!! 
    শেষে, দুয়েকটা কথা বলতে চাই। সরকারের যদি সত্যিই সদিচ্ছা থাকতো, তবে তারা অন্তত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে সমস্ত বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করে পদক্ষেপ করত, এভাবে উপর থেকে স্ট্যাটাস রিপোর্ট মেল করত না।
    ধর্মতলার অনশণ মঞ্চে যাঁরা গেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই শুনেছেন— জুনিয়র ডাক্তাররা একটা কথা বলে থাকেন— এখন দুটো পক্ষ— অভয়ার পক্ষ আর অভয়ার বিরুদ্ধ পক্ষ। এখন সময় পক্ষ নেওয়ার। 
    কোন সেই জোর, কোন সেই তাগিদ যার জন্য ৯ + ২, ১১ জন জুনিয়র ডাক্তার ২০০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনশণ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ২ + ১, ৩ জন ICU-তে ভর্তি। নিশ্চয়ই বিষয়টি ছোটো-খাটো নিত্য-নৈমিত্তিক হতে পারে না। তাঁরা নেমেছে স্বাস্থ্য পরিষেবার খোল-নলচে পাল্টাতে, এক স্বচ্ছ এবং কার্যকর স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্যকে উপহার দিতে। তাই নাগরিক সমাজ সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে তাঁদের পাশে এমনভাবে দাঁড়িয়েছে যে এই আন্দোলন এখন সমস্ত নাগরিক সমাজের আন্দোলন হয়ে উঠেছে।   
        
            
             ​​​​​​​
  • অরূপ রায় চৌধুরী | 146.196.***.*** | ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:৩৮538525
  • সুরজিতবাবু যথার্থ লিখেছেন। তাই ওই পয়েন্টগুলো আর পুনরায় উল্লেখ করছিনা। কয়েকটি কথা শুধু যোগ করতে চাই।

    বারবার চাওয়া সত্বেও কেন্দ্রীয় রেফারাল সিস্টেম আর ডিজিটাল মনিটরিং এর SOP কেন পাব্লিশ হচ্ছেনা বলতে পারেন? অথচ এগুলো নাকি হয়ে গেছে! SOP ছাড়াই হয়ে গেল? নাকি ঘাপলা আছে? আপনার যুক্তিবাদী মগজ কি বলছে?
     
    সিভিক ভলেন্টিয়ারদের উপর আপনার ও সরকারের অগাধ আস্থার যে মিল তা বেশ স্পষ্ট।
     
    আপনি আবার ভয়ের রাজনীতি ব্যাপারটা বুঝতেই পারেননি। যুক্তিবাদী অবোধের মতো কথা। কথায় কথায় ট্রান্সফার, ইচ্ছেমত ফেল করিয়ে দেওয়া, হোস্টেলে থাকতে না দেওয়া, অতিরিক্ত ডিউটি করতে বাধ্য করা, দাদাদের ফাই ফরমাশ খাটা ইত্যাদি প্রভৃতি আপনি বোঝেননা?

    ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও আরডিএ র স্বীকৃতি নিয়ে সরকার কোনও কথা বলেনি। অথচ কেন বলেনি, সেটা আবার আপনি বুঝতে পারেননি। প্রয়োজনমত কি সুন্দর বুঝতেই পারেননা। অথচ দেখুন আপাতভাবে কি সহজ দাবি, তাইনা? সিন্ডিকেট, রংবাজি, দাদাগিরি এই সবের পেছনে এই কারণটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে – বুঝতেই পারছেননা। তাঁর ফলে ভয়ের রাজনীতি ব্যাপারটাও বুঝতেই পারেননি। খুব মিষ্টি কিন্তু।
  • হিজি-বিজ-বিজ  | 149.142.***.*** | ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ০০:২৮538527
  • উফফ !! এরা ঘুরে ঘুরে সেই আমড়াতলার মোড়েই আসবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন