এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • একটি গরুর রচনা 

    Naresh Jana লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৮ মে ২০২৪ | ৮৮৭ বার পঠিত
  •                            (এক
    নেহাৎই মজা করেই কথাটা বলেছিল অনুপ। কিন্তু দেবায়ন যে এমন রি-আ্যক্ট করবে ভাবতে পারেনি। নাই নাই করে পনের বছরের বন্ধুত্ব দু'জনের। যেমন তেমন বন্ধুত্ব নয়, রীতিমতো যাকে বলে বুজুম ফ্রেন্ড। সেই হিসেবে অনুপ জানে যে দেবায়ন এমন রি-আ্যক্ট করার ছেলে নয়। কাগজে দু'জনে মিলেই পড়েছিল খবরটা। চোদ্দই ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করার পরিবর্তে দেশবাসীকে গো-আলিঙ্গন দিবস’ পালন করার আর্জি জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রাণী কল্যাণ বোর্ড।  প্রাণী কল্যাণ বোর্ডের যুক্তি, পশ্চিমি সংস্কৃতির অগ্রগতির কারণে বৈদিক ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে। গরুকে আলিঙ্গন করলে মানসিক সমৃদ্ধি আসবে। খবরটা পড়ে দু'জনই কার্যত হেসে গড়াগড়ি খেয়েছে। ঘটনাটা হয়ত তারই রেশ ছিল, দিন কয়েক পরের ঘটনা সেটা। হাইকোর্ট চত্বরে ল'ক্লার্কদের অফিস লাগোয়া চায়ের দোকানে দেবায়নের সাথে আড্ডা মারতে মারতে অনুপ বলেই ফেলল, তুই বরং একটা গরু কিনে ফেল। মাঝে মধ্যে গরুকে হাগ করিস। দেখবি টেনশন রিলিজ হচ্ছে। 
     
    দেবায়ন রায় হাইকোর্টের নবীন প্র্যাকটিসনার, অনুপ মুখার্জী ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। অনুপের বাড়ি হাওড়া হওয়ার সুবাদে হাওড়া কোর্টেও খানিকটা পশার জমিয়েছে। দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধু, মাঝে মধ্যেই আড্ডা চলে হাইকোর্ট অথবা ব্যাঙ্কশাল চত্বরে। অনুপের বিয়ে হয়েছে সাত বছর কিন্তু দেবায়নের হয়নি। মেয়ে দেখা হয়, ম্যাট্রিমনি ডটকমও। যদিও শেষ অবধি দেবায়ন পিছিয়ে আসে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা। দেবায়নের ভয় বিয়ের পর যদি বউ বাবা-মাকে না দেখে! যদি আলাদা থাকতে চায়! ভয়টা খুব অমূলক নয়, বিয়ের পর বৌদিকে নিয়ে দাদার আলাদা হয়ে যাওয়াটাও হয়ত সেই আশংকার উৎস। ফলে পাত্রী দেখা হয় কিন্তু দেবায়ন শেষ অবধি পিছিয়ে আসে। বিয়ের উদ্যোগ সব চেয়ে বেশি নিতে হয়েছে অনুপকেই, কারন দেবায়নের মায়ের অনুরোধ, "যেমন করে হোক বাঁধতে হবে ছেলেটাকে তাতে আমাদের যা'হয় হোক,আমরা তো আর চিরকাল থাকছিনা।" সেই ধারাবাহিকতা মেনেই দেবায়ন সপ্তম পাত্রীটিও বাতিল করার পরই ওই গরু কেনার কথাটা অনুপ বলেছিল।
     
    অনুপ মজা করেই বলেছিল, "রাস্তাঘাটে তো আর গরুকে জড়িয়ে ধরতে পারবিনা। তার চেয়ে একটা গরুই কিনে ফেল। সরকার বলছে, গরুকে জড়িয়ে ধরলে ট্রেস রিলিজ হয়।" আর তখনই দেবায়ন বলে ফেলল কথাটা। "বলল, চল তা'হলে দুজনে মিলেই কিনি। কে জানে কখনও সখনও তোরও ভালোবাসায় ক্লান্তি এলে তুইও জড়াতে পারিস।" খোঁচাটা হজম করেছিল অনুপ। মাঝে মধ্যে রিয়ার সংগে খিটমিট হলে সে আড্ডায় এসে চুপচাপ বসে থাকে বটে কিন্তু সেটা যে দেবায়ন এত কালচার করে এটা অনুপ এতদিন খেয়াল করেনি। খেয়াল করল দেবায়নের দ্বিতীয় কথাটায় যখন সে বলল, "শুধু তুই আমার বিয়ে না করা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় রে, আমিও তোকে নিয়ে যথেষ্ঠ উদ্বিগ্ন।" অনুপ জানে দেবায়ন একটা ফ্যালাসির ডিফেন্স তৈরি করছে বিয়ে না করার যুক্তিটাকে জোরালো করার জন্য। ওই যে কথায় বলে দিল্লি কা লাড্ডু....। 
     
    অনুপ একটু চিন্তিত হল। তা'হলে কী দেবায়ন মনস্থির করে ফেলেছে যে বিয়ে সে করবেই না? কিন্তু তাই যদি হয় তবে সে পাত্রীর খোঁজ করছে কেন? দেবায়ন এবার যেন বিষয়টা হালকা করার জন্যই হেসে বলল, "গরু কিন্তু সত্যিই উপকারী জন্তু জানিস। সেদিন একটা জার্নালে দেখলাম গরুর উপকারিতা নিয়ে বেশ বড়সড় আর্টিকেল লিখেছে। বলছে, নেদারল্যান্ড, সুইৎজারল্যান্ড, আমেরিকা সহ বিশ্বের নানা দেশে নাকি গরু জড়িয়ে ধরে মানসিক চাপ কমানোর থেরাপি চালু আছে। গরুকে আদর করে, পিঠে ভাল করে হাত বুলিয়ে তারপর কিছুক্ষণ জড়িয়ে থাকলে নাকি শরীরের হ্যাপি হরমোনগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। অনুপ বলল, "আরে ধুর! ওটা নির্ঘাৎ নাগপুরিয়া জার্নাল কারন শুধু গরু নয়, ঘোড়া, ছাগল এমনকি খামারে পোষা শুয়োরকে আদর করেও ওই একই ফল পাওয়া যায়। নেদারল্যান্ডে গোট-যোগার চলও আছে। রীতিমত ট্যাঁক খসিয়ে ছাগল খামারে গিয়ে গোট-যোগা করতে হয়।"
     
    ছোটবেলায় গরুর রচনা পড়তে গিয়ে অনুপও পড়েছিল যে গরু একটি গৃহপালিত পশু। আর জেনেছিল গরুর দুধের উপকারিতা। এটা সেই সময়ের কথা যখন দুধকে সুষম খাদ্য বলা হত। এখন অবশ্য বিজ্ঞান বলছে দুধ সুষম খাদ্য নয়। কারন দুধে ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ ইত্যাদি প্রায় সব রকম উপাদান থাকলেও ভিটামিন সি আর আয়রন নেই বললেই চলে। দুধ তাই আদর্শ খাদ্য হলেও সেটাকে সুষম খাদ্য বলা চলেনা। পাঠ্যপুস্তক গরুর দুধের উপকারিতা জানিয়েই থেমে যায়, তার মাংসের উপকারিতা অবধি এগুতে পারেনা। ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ কিন্তু পাঠ্যপুস্তকে গরুর মাংসের উপকারিতা বোঝালে দাঙ্গা লেগে যেতে পারে। 
     
    অনুপের অবশ্য গরুর দুধ বা মাংস কোনও কিছু নিয়েই মাথা ব্যাথা ছিলনা। আর পাঁচ জনের মত সেও গরুর দুধকে ক্লাস ফোরের পাতাতেই ফেলে এসেছিল। অনেক দিন আগে সে যখন তার ছ'মাসের ছেলেকে গরুর দুধ খাওয়ানো যাবে কিনা, চিকিৎসকে প্রশ্ন করেছিল উত্তরে ডঃ দ্বৈপায়ন সেন,পেড্রিয়াটিক প্রশ্নটা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, "ধুর মশাই! গরু কী আপনার বাচ্চার জন্য দুধ দেয়? সে দুধ দেয় বাছুরের জন্য, বাছুর মানুষের বাচ্চার চেয়ে বড় তাই গরুর দুধও বেশি। ওই দুধ নিয়ে আপনার কী? ব্যাস! গরুর পর্ব ওই অবধিই ছিল। কিন্তু হাতেমপুরের ঘটনাটা আবার তাদের দু'জনকে গরুতেই ফিরিয়ে আনল।
                                                                              দুই 
    অনুপ প্রথমটায় হাতেমপুর থানার সেন্ট্রির কথায় মারাত্মক রেগে গিয়েছিল বটে কিন্তু রাগটা থিতু হলে আবারও সেই গরুর বিষয়টা তাকে হন্ট করল। সেদিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দেবায়নের গাড়িটা হেতমপুর থানায় ঢুকল। গাড়িটার কোথাও একটা ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস আওয়াজ হচ্ছে ঠিকই কিন্তু গাড়িটা গড়াচ্ছে। গাড়ির ডানপাশের পেছনের দরজাটা দুমড়ে গিয়ে গাড়ির মধ্যেই বসে গিয়েছে। সামনেটা অবশ্য ঠিকঠাকই আছে, দেখে বোঝার উপায় নেই যে গাড়িটা দুর্ঘটনায় পড়েছিল। কিন্তু থানার সেন্ট্রির চোখ বলে কথা! সে পুরো গাড়িটা ঘুরে ফিরে দেখল এবং দুমড়ে যাওয়া বডিটার দিকে অভিজ্ঞ চোখে তাকিয়ে বলল, 'অ,গরুর কেস!'
    দেবায়ন তখনও ট্রমাটা সামলে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে ! একটু আগেই সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত ছাড়িয়ে বেরিয়ে এসেছে তারা । একচল্লিশ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি সিগন্যালে দাঁড়িয়েছিল ওদের গাড়িটা। পেছন থেকে একটা লরি এসে গাড়িটাকে ধাক্কা মারে। ডান দিকের পেছনের কিছুটা অংশ সহ দরজাটা দুমড়ে গেছে। প্রথমে সেন্ট্রির কথাটা শুনেও যেন শুনেনি দেবায়ন এমন ভাব করল। মৃত্যু ভয়টা একটু একটু করে কেটে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এবার তার সামনে ফুটে উঠছে গাড়ির দুমড়ানো অংশটার ছবি। একটা অসম্ভব রাগ তাকে পেয়ে বসছে। তার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। সে ভাবেই সে তাকালো সেন্ট্রির দিকে। সেন্ট্রি কী বুঝল কে জানে। তার নিজের সঙ্গে কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়া থ্রি-নট-থ্রির ডগাটা ধরে সে নিজেও সোজা হল। আঙুল বাড়িয়ে দেখিয়ে দিয়ে বলল, 'ওই ঘরটায় ডিউটি অফিসার আছেন।' 
     
    দেবায়নের পরে গাড়ি থেকে নামল অনুপও। তাকেও নামতে হল বাঁদিকের দরজা দিয়েই। ড্রাইভার গাড়িটাকে থানার মুখ বরাবর দাঁড় করিয়েছিল। সেন্ট্রির নির্দেশ মত এক পাশে সরিয়ে নিয়ে গেল। দেবায়ন ডিউটি অফিসারের ঘরটার দিকে যাচ্ছিল। পেছন পেছন অনুপও। অনুপ একটু থমকে গিয়ে সেন্ট্রিকে বলল, 'গরুর কেস মানে?' সেন্ট্রি থমকে গিয়ে বলল, 'না মানে গাড়িটাকে গরু ধাক্কা দিয়েছে কিনা?' অনুপ একটু একরোখা গলায় বলল, 'কে বলল গরু ধাক্কা দিয়েছে? আপনি কি ওখানে ছিলেন? সেন্ট্রি বুঝল, পার্টি বেশ জাঁদরেল আছে। সে কথা না বাড়িয়ে বলল, 'আসলে স্যার এখানে গরুর কেসই বেশি আসে।'
                                                                             
    ঘটনাটা শুনেই হুংকার দিয়ে উঠলেন থানার সেকেন্ড অফিসার বা মেজোবাবু। বাজখাঁই গলায় ডাক পাড়লেন, "চক্রবর্তী!" সংসারের মেজো ছেলেদের মতই থানায় মেজো বাবুদের একটু বেশি দাপট থাকে। তাঁর ভয়ে গোটা থানা তটস্থ। যদিও এই মানুষটিকে দেখে প্রথমে ঠিক তেমনটা মনে হয়নি। অদ্ভুত এক প্রশান্তি তাঁর চোখে মুখে। পাট করে আঁচড়ানো চুল। তাঁর চোখ সেন্ট্রির থেকে শতগুণ অভিজ্ঞের। কেতাদুরস্ত দুজনকে দেখেই বিনীত ভাবে সামনের চেয়ার দুটোয় বসতে বললেন। দেবায়ন কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু বলতে যাচ্ছিল। মেজোবাবু তাকে থামতে ইশারা করে বললেন, "আগে একটু চা খান। আমারও অনেকক্ষন চা খাওয়া হয়নি।"
     
    দেবায়ন থমকে গেল। মেজোবাবু বেল টিপে একজনকে ডেকে তিন কাপ চা আনতে বললেন। তারপর অনুপের দিকে তাকিয়ে বললেন, "বলুন।" মেজোবাবু স্পষ্টত বুঝেছিলেন, কোনও একটা ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেবায়ন। তাই অনুপকেই বিষয়টা জানাতে বললেন। অনুপ ঘটনাটা জানালো। সঙ্গে বিশেষ ভাবে এটাও জানালো যে মুহুর্তের মধ্যেই সেই লরির ড্রাইভার ট্রাফিক পুলিশের সাথে কথা বলে লরিটি নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা আটকাতে চেয়েও আটকাতে পারেনি কারন ঘটনার সাথে সাথেই চার পাঁচজন যুবক এসে রীতিমত তাদেরকে ধমকে লরিটাকে চলে যেতে সাহায্য করে। তারপরই মেজোবাবু চক্রবর্তী বলে হাঁক পাড়লেন। চক্রবর্তী মানে সেই সিড়িঙ্গি চেহারার পুলিশটি বিনীত ভাবে এসে দাঁড়িয়েছে ততক্ষন। ইনিই ডিউটি অফিসারের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। অনুপরা প্রথমে তাঁর কাছেই গেছিল। অনুপদের উকিলি পরিচয় পাওয়ায় এই চক্রবর্তীই তাদেরকে মেজোবাবুর টেবিলে রেফার করেন।
     
     মেজোবাবু চক্রবর্তী নামক সেই অধঃস্তন পুলিশ আধিকারিকটির দিকে তাকিয়ে কড়া গলায় বললেন, "ট্রাফিক কি আজকাল লোকাল গুনসদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছ চক্রবর্তী?" পুলিশ আধিকারিকটি বিনীত ভাবে হাত কচলায়। মেজোবাবু আবার বললেন, "একটা লরি এঁদের গাড়িটাকে ধাক্কা মারল। সেই লরিটাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল কয়েকটা গুন্ডা আর তোমার ট্রাফিক কনস্টেবল নাকি সেই গুন্ডাদের সাথে হাত মিলিয়ে লরিটাকে যেতে সাহায্য করেছে? তা কুন্দ্রা মোড়ে এখন কার ডিউটি?"
     "আমরা স্যার লরিটার ছবি তুলে রেখেছি, নম্বর প্লেট সহ।" এতক্ষণে দেবায়ন যেন একটু স্বাভাবিক হয়েছে। মেজোবাবু একটু নরম হয়ে বললেন, " সে আপনারা না তুললেও আমরা পেয়ে যাব। আমাদের সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। কোর্টে এভিডেন্স হিসাবে বরং ওটা অনেক বেশি অথেনটিক। ওই ক্যামেরাতেই ওই সব গুন্ডা ফুন্ডা সব দেখা যাবে।" এরপর আবার সেই চক্রবর্তীর দিকে তাকিয়ে বললেন, "ক্যামেরা গুলো কাজ করছে তো ? নাকি সেগুলোরও বারোটা বাজিয়ে বসে আছ?" চক্রবর্তী বিনীত ভাবে বলল, "করছে স্যার। আমফানের পর প্রায় আড়াইশ ক্যামেরা খারাপ হয়েছিল। একশ তিরিশটা রিপ্লেস করা হয়েছে। তার মধ্যে কুন্দ্রা মোড়ও আছে।'

    মেজোবাবু তাচ্ছিল্যের স্বরে বললেন, "কৃতার্থ করেছ! এখন দেখো ওখানে কে ডিউটিতে আছে। ওই লরি কোথায় আছ এখুনি খোঁজ নাও। দু'ঘণ্টার‌ মধ্যেই ওই লরি যেন থানায় ঢোকে সেটা দেখ আর ওই ট্রাফিক কনস্টেবলকে কিন্তু ক্লোজ করা হবে। আমি বড়বাবুকে বলছি। কালই আমাকে একটা রিপোর্ট দাও।" তারপর দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বললেন, "একটু বেটার ফিল করছেন?" 
     
    মেজোবাবু ততক্ষণে জেনে গিয়েছেন যে অনুপ হাওড়ায় থাকে দেবায়ন কলকাতায়। অনুপ ক্রিমিনাল আর দেবায়ন সিভিল লইয়ার। একজন কলকাতা হাইকোর্ট, অন্যজন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে প্র্যাকটিস করে। দু'জনে মিলে একটি মামলার কাজে হলদিয়ায় এসেছিল। ফেরার পথে এই ঘটনা। দেবায়ন মেজোবাবুর প্রতি ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানালো যে, সে আগের তুলনায় এখন বেটার ফিল করছে। মেজোবাবু বললেন,  " ওই লরি আমি দু'ঘন্টার মধ্যে থানায় ঢোকাবো। ওই প্রত্যেকটা গুনস আর লরির চালককে আমি হাজতে পুরব। আপনার গাড়ির ড্যামারেজের পাই টু পাই কমপেনসেশন আমি ওই লরির মালিককে দেওয়াবই।  ট্রাফিক কনস্টেবলের কী ব্যবস্থা হচ্ছে আপনাদের সামনেই বললাম কিন্তু একটা কথা ভাবুন তো যদি আপনাদের কিছু হয়ে যেত আমার কী করার ছিল?" তারপর দেবায়নকে যেন পরামর্শ দেওয়ার মত করে বলেন, "এত উত্তেজিত হয়ে যান কেন?"

        মেজোবাবু এমন ভাবে কথা বলছিলেন যে দেবায়ন আর অনুপের মনে হল লোকটা পুলিশ অফিসার নয় যেন কোনও মনরোগ বিশেষজ্ঞ। মেজোবাবু  দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলছিলেন, "আমি কিন্তু শুরুতেই বুঝতে পারছিলাম গাড়ির মালিক আপনিই কারন আপনি প্রচন্ড টেনস ছিলেন। শুধু টেনস নয় একটা ভীতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন আপনি। সেই অবস্থায় আপনার কাছ থেকে ঘটনাটা শুনতে হলে আপনাকে ঘটনাটা রি-কল করতে হত তাতে আপনিই আরও ট্রমায় চলে যেতেন। তাই অনুপবাবুকেই ঘটনাটা বলতে বললাম। আসলে আপনার ট্রমাটা অদ্ভুত ধরনের। দুর্ঘটনার পর আপনি অক্ষতই আছেন কিন্তু ঘটনাটা কত ভয়ঙ্কর হতে পারত এটা ভেবেই আপনি ট্রমার মধ্যে ঢুকে যাচ্ছিলেন।" 
     
    একটু থেমে মেজোবাবু বললেন, "আপনাদের আমি আমার এক পরিচিত জনের কথা বলি তাহলে বুঝতে পারবেন এই ধরনের ট্রমা কত মারাত্মক হতে পারে। ওই ভদ্রলোক রাজধানী এক্সপ্রেসে দিল্লী যাচ্ছিলেন একটা কাজে। মুঘলসরাই, মানে হালে যার নাম হয়েছে দীন দয়াল উপাধ্যায় নগর জংশন পেরিয়ে একটি প্রচন্ড ঝাঁকুনি নিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়। ভদ্রলোক অনেক পেছনের দিকে কামরায় ছিলেন। ঝাঁকুনিটা তিনিও অনুভব করেন কিন্তু তাঁর কোনও আঘাতই লাগেনি। ঘন্টা তিনেক বাদে ফের ট্রেন চলতে শুরু করে। পরে টিকিট চেকারের কাছ থেকে ওই ভদ্রলোক জানতে পারেন যে ট্রেনের সামনের একটি কামরা ডি-রেল হয়েছিল। ঘটনাটি জানার পর ভদ্রলোক চুপচাপ হয়ে যান। দু'ঘন্টা পরে ভদ্রলোকের ট্রেনেই স্ট্রোক হয়। প্রায় ৮ মাস প্যারালাইজড হয়ে ছিলেন তিনি। তারপর স্বাভাবিক হয়ে যান বটে কিন্তু আর কোনও দিন ট্রেনে ওঠেননি। বলতে পারেন এটা হল একধরনের আফটার শক্। "
                             
                             তিন 
    দেবায়নের বুকটা কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠে। সত্যি মেজোবাবু তাকে রক্ষা করছেন আরও একটা বড় একটা দুর্ঘটনা থেকে। এই সব কথাবার্তা চলার মধ্যেই একটা সাদা কাগজে চোস্ত ইংরেজিতে কমপ্লেইনটা লিখছিল অনুপ। মেজবাবুর কথা শুনতে শুনতেই সেই কমপ্লেইন লিখলেও কোথাও একটু সঙ্গতি হারায়নি সে। সামান্যতম কাটাকুটি বা রি-রাইট নেই কমপ্লেইনে। একদম শেষে অনুপ একটা আপিল জুড়ে দিয়ে লিখল, যেন এই অভিযোগটাকেই এফ আই আর হিসাবে গণ্য করা হয়। মেজোবাবু হাত বাড়িয়ে কমপ্লেইনটা নিলেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নিলেন লেখাটা। গোটা ঘটনার নিখুঁত বিবরণের সাথে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা, গুন্ডা গুলোর কথা সবই উল্লেখ রয়েছে। পুলিশের সেই অধঃস্তন আধিকারিকটি বিদায় নিয়েছিল। মেজোবাবু তাকে ফের ডেকে পাঠালেন। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন, "কে আছে কুন্দ্রা মোড়ে?" আধিকারিকটি বললেন, "বানেশ্বর ঘোষ, স্যার।" মেজোবাবু তার উদ্দেশ্যে কমপ্লেইন কপিটা নাড়িয়ে বললেন, " উকিলবাবু এই যে কমপ্লেইনটা লিখেছেন তাতে শুধু তোমার বানেশ্বরই নয়, তোমাকেও ডিপার্টমেন্টাল ইনভেস্টিগেশনের মুখে পড়তে হতে পারে। কারন তুমিই তো ট্রাফিক ইনচার্জ।" জুনিয়ার অফিসারটি কিন্তু কিন্তু করে বলল, " স্যার ট্রাফিক অবস্ট্রাকশন হচ্ছিল তাই বানেশ্বর লরিটাকে সাইড করে রাখতে বলেছিল কিন্তু ড্রাইভার লরি নিয়ে পালায়।" মেজোবাবু অনুপের দিকে তাকিয়ে বললেন, " কী বুঝলেন? শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল।" অনুপ অবাক হয়ে ভাবে এই ধরনের পুলিশ আফিসার থাকার পরও পুলিশের এত বদনাম কেন?
                                                          
    মেজবাবু কমপ্লেইনের কপিটা দেবায়নের দিকে বাড়িয়ে বললেন, "নিন, আপনি সই করে দিন। আর আপনি অনুপবাবু কমপ্লেইনের ধারে ভাঁজ করা রুলের পোরসানে নিজের নাম ঠিকানা লিখে দিন। মানে জানেনই তো রাইটারকে পাশে এটা লিখতে হয়। আপনিই আমাদের সাক্ষী হবেন।" এরপর অনেকটা রিল্যাক্স হয়ে শরীরটাকে পিছনের দিকে হেলিয়ে দিয়ে বললেন, " আমি জানি আপনারা, মানে উকিলবাবুরা পুলিশকে খুব একটা ভাল চোখে দেখেননা। আসলে পরিস্থিতিটাই এমন হয়ে গেছে যে, আমাদের মধ্যে সবসময় একটা রাইভালরি চলে কিন্তু বিশ্বাস করুন আমাদেরও ঠিকঠাক কাজ করতে ইচ্ছা করে। আফটার অল আমরাও আপনাদের মত আইনসেবী কিন্তু আমাদের লিমিটেশন এতটাই বেশি যে সবসময় সবটা পেরে উঠিনা। চোদ্দচুয়াড়ি কাজ মশাই। তারমধ্যে পেপার ওয়ার্কিং দিনের দশ আনা সময় কেড়ে নেয়। কোনও থানায় মানে আমাদের মত থানা যেখানে স্টাফ বেস কম সেখানে যদি একদিনে পাঁচজন আ্যরেষ্ট হয় তো আমাদের নাওয়া খাওয়া উঠে যায়। মেডিকেল করতে হবে, পেপার রেডি কর, কোর্ট প্রোডাকশন করতে হবে, পেপার রেডি কর, কেস ডায়েরি, সিজার লিস্ট সব মিলিয়ে একটা যুদ্ধ আর তারমধ্যে রয়েছে গুচ্ছের কারবার। এই চক্রবর্তীর কথাই ধরুন, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কিন্তু আমাদের স্টাফ কম ফলে ওকে ডিউটি অফিসারের টেবিল সামলাতে হচ্ছে।" 
     
    মেজোবাবু দম নেন। তারপর হাসতে হাসতে বললেন, " তবে বুঝলেন অনেক দিন পরে একটা জাঁদরেল কেস পেলাম। সব ব্যাটাকে টাইট দিয়ে ছাড়ব। এই ধরনের কেস দাঁড় করাতে একটু ঝামেলা হয় ঠিকই কিন্তু এবার মনে হয় দাঁড়াবে। হ্যাঁ, ওই কনস্টেবলটাও একটু ফাঁসবে। তা ফাঁসুক, ব্যাটারা সরকারের বেতনও নেবে আবার ঘুষও খাবে বুঝলেন। এদের জন্যই আজ ডিপার্টমেন্টের এত বদনাম। যাইহোক ফিরবেন কিসে?" দেবায়ন সই করে অনুপের দিকে কমপ্লেইন কপিটা বাড়িয়ে দিতে দিতে বলল, " গাড়িটা চলছে তো স্যার। ওটাতেই চলে যাব। ওই মোড় থেকে দিব্যি চলে এলাম। ড্রাইভারও আছে।"

        মেজবাবু হেসে বললেন, " না, না ওকথা নয়, গাড়িটা আমাদের সিজ করতে হবে দেবায়নবাবু। আইন অনুযায়ী আমাদের দুটো গাড়িই সিজ করে কোর্টে দিতে হবে কিনা। মানে গাড়িটা থানাতেই থাকবে। কাগজপত্র কোর্টে জমা দিতে হবে। দিন পনেরোর মধ্যেই আশাকরি গাড়ি পেয়ে যাবেন।" দেবায়নের মুখটা হাঁ হয়ে যায়। সে তাকায় অনুপের দিকে। মেজোবাবু দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলেন, না না চিন্তা করবেননা। এখানে অনেকেই গাড়ি ভাড়া দেয়। আমাদের চেনাজানা, বেশ রিজনেবল। এখন স্টার্ট করলে দু'ঘন্টায় কলকাতা ঢুকিয়ে দেবে।" দেবায়নের অবস্থা বুঝতে পেরে অনুপ মেজবাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন, "ওর স্যার দুটো গাড়ির মধ্যে একটা অলরেডি গ্যারেজে আছে এটাও যদি... মানে ওর বাবা মা দুজনেই বয়স্ক। বাবার আবার হার্টের সমস্যা। যদি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে নিয়ে যেতে হয়।" দেবায়ন আগ্রহ ভরে তাকাল মেজোবাবুর দিকে।
    মেজোবাবু এবার যেন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন। বেশ কিছুক্ষণ কী সব ভাবতে লাগলেন। তারপর পাশে দাঁড়ানো সেই পুলিশ আধিকারিকের দিকে তাকিয়ে বললেন, " চক্রবর্তী কী করা বলা যায় বলত?" 
     
    এতক্ষণ কাঁচুমাচু হয়ে থাকা চক্রবর্তী এবার যেন তার সমস্ত দ্বিধা কাটিয়ে উঠে সামনে এগিয়ে এল। তারপর আস্তে আস্তে বলল, "ইয়ে স্যার যদি উকিল বাবুদের গাড়ির ফার্স্ট পার্টি ইন্স্যুরেন্স থাকে.." মেজোবাবু যেন একটু খেঁকিয়ে উঠে বললেন, " ফার্স্ট পার্টি ইন্স্যুরেন্স থাকলে কী?" চক্রবর্তী বলেন, " তা'হলে স্যার উকিলবাবুরা প্লেইন একটা ডায়রি করবেন যে ঘটনাটা গরুর ধাক্কায়  মানে কাউ ড্যাসিং স্যার। তাতে ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম পেয়ে যাবেন। আর ডায়রি করলে স্যার গাড়িটা সিজ না করলেও চলে।" মেজোবাবু দেবায়নদের দিকে তাকিয়ে বলেন, "চক্রবর্তী কথাটা খুব খারাপ কিছু বলেনি, কী বলেন? আপনাদের তো ড্যামারেজ পাওয়া নিয়ে কথা। আর সত্যি কথা বলতে কি, বলছি বটে পনের দিনের মধ্যে গাড়ি পেয়ে যাবেন কিন্ত মামলার কথা কে বলতে পারে? আপনারা আইনজীবী, জানেনই তো একেকটা মামলা কতদিন গড়ায়। কত গাড়ি পচে খত হয়ে গেল মশাই। আমাদের তো সিজ করা গাড়ি রাখার জায়গাই নেই। ওই যে থানায় ঢোকার মুখেই ডানদিকে সারি দিয়ে রাখা গাড়ির কঙ্কাল দেখে এলেন, সব সিজ করা। একেকটা দশ পনের বছর ধরে পড়ে রয়েছে। তার চেয়ে ভালো ঘরের গাড়ি ঘরে নিয়ে যান।" 
    "কিন্তু মেজোবাবু ওই গুন্ডা গুলো?" 
     
    অনুপ মরীয়া হয়ে বলে ওঠে। " ও আমি দেখে নেব মশাই। পালাবে কোথায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সব গুলোকেই গাঁথব। লরির ড্রাইভারও পার পাবেনা। অন্য মামলায় ঠিক গেঁথে দেব। অনুপবাবু আপনি বরং একটু কষ্ট করে আরেকটা কমপ্লেইন লিখে ফেলুন।" বলেই মেজোবাবু চক্রবর্তীর দিকে তাকিয়ে বললেন, " চক্রবর্তী, কমপ্লেইনটা কিভাবে করা হবে তুমি বলে দাও কারণ ইন্সুরেন্সওয়ালারা আবার ফাঁক খুঁজে বেড়ায়।" "আমি স্যার তা'হলে একটু গাড়িটা দেখে আসি। মানে কোথায় কী রকম ড্যামেজ হয়েছে।" চক্রবর্তী বেরিয়ে যায়।
    আরও আধঘন্টা পরে থানা থেকে বেরিয়ে আসে অনুপ আর দেবায়ন। থানার চত্বরটা আলোয় ঝলমল করছে। দেবায়ন গাড়িটার দিকে এগিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি ঘোরাতে বলে। গাড়ি ঘুরতে থাকে। অনুপ দেখতে পায় সেই সেন্ট্রি কনস্টেবল খইনি দলতে দলতে তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। অনুপ দ্রুত গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। তার মনে হ'ল সেন্ট্রি তাকে জিজ্ঞেস করতে আসছে, "কেসটা তা'হলে গরুরই ছিল স্যার?"

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০৮ মে ২০২৪ | ৮৮৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ০৮ মে ২০২৪ ০১:২৯531500
  • আমারও খুব ভালো লাগলো
  • মহুয়া ব্যানার্জী | 2405:201:9003:ff68:add3:8720:6834:***:*** | ১০ মে ২০২৪ ১৬:৪০531566
  • সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকে। গল্পটি প্রদীপষের নিচের অন্ধকারকে তুলে ধরেছে। 
  • Nirmalya Nag | ১৭ মে ২০২৪ ১১:৪২531853
  • দারুণ
  • | ১৭ মে ২০২৪ ১৩:৫২531864
  • দারুণ। 
  • পঞ্চানন মণ্ডল | 2409:4061:595:b63e::ed1:***:*** | ১৮ মে ২০২৪ ১২:৩২531906
  • যেমন নামকরণ তেমনই সুন্দর ঘটনার বিন্যাস। ভালো লাগল গল্পটি।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:7858:ea03:9b0d:***:*** | ১৮ মে ২০২৪ ১২:৩৫531907
  • লাস্টের টুইস্টটা একটু প্রেডিক্টেবল, তাও ভালো হয়েছে। 
     
    (যদিও রিয়েল লাইফে এরকম হয়না, মানে গাড়ি জমা রাখতে বলে না) 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন