কমরেড কমি ডগসুন্দর বুঝিয়েছেন। আপনার সংজ্ঞা অনুয়ায়ী 'সনাতন ধর্ম' একটা ইউনিভার্সাল সেট, বাকি ভারতে উৎপন্ন সমস্ত ধর্মমত তার সাব সেট।
১) খালি একটা কথা। সনাতন ধর্মের এই ডেফিনিশন কোন শাস্ত্রে আছে? বা এটি কার তৈরি? আমরা অনেকে এতদিন সনাতন ধর্ম বলতে হিন্দু ধর্মাচরণকে বুঝেছি।
দেখুন, পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি গত শিক্ষক দিবসের ভাষণে বলেছেনঃ
," আমাদের দেশে যেসব দার্শনিক সত্য চিরন্তন বা শাশ্বত অর্থ বহন করে আমরা তাঁকে সনাতন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। ভগবত গীতায় একাধিকবার সনাতন শব্দ ব্যবহার হয়েছে, কৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শনের পর অর্জুন বলেছিলেন, তুমিই সনাতন। তবে সনাতন ধর্মের ভিত্তি বেদ। মনুর ব্যাখায় সনাতন ধর্ম হচ্ছে সত্য। "
--তাহলে সনাতন ধর্মের ভিত্তি যদি বেদ হয়, তাহলে বেদবিরোধী ধর্মগুলো (নাস্তিক্য ধর্ম তিনটে) কী করে সনাতন ধর্মের মধ্যে পড়ে?
দেখতেই পাচ্ছেন, আপনার দেওয়া সনাতন ধর্মের সংজ্ঞা অনেক শাস্ত্রবিদই মানছেন না।
২)
@ এস এম,
আইনের বিশেষ প্রয়োজনে উদ্ভুত ডেফিনেশন আর ধর্মের ডেফিনেশন এক নয়।
দুটো উদাহরণ দিচ্ছি।
ক) ধর্মশাস্ত্রে কন্যার অষ্টম বয়সে গৌরীদানের প্রথা আছে। রজঃস্বলা হওয়ার আগে কন্যার বিয়ে না দিলে বাপ-মা নরকে যায় এই বিধান মনু পরাশর দুটোতেই আছে। দু'শ বছর আগে এটাই আইন ছিল। আজকের আইনে অমন করলে বাবা জেলে যাবে।
খ) বিবাহিত না হলেও উভয়ের সম্মতিক্রমে সেক্স বে-আইনি নয়। কিন্তু মেয়েটি নাবালিক হলে ওই সম্মতি গ্রাহ্য হবে না। ওটা রেপ ধরা হবে। এখন নাবালিকের বয়ঃসীমাও আইনের চোখে বহুবার বদলেছে। কাল যা রেপ ছিল না (মেয়ের বয়স ১৬ বছর) আজ সেটা রেপ, ১৮ বছর হতে হবে।
আম্বেদকর পড়লেই স্পষ্ট হবে কেন উনি বৌদ্ধ হলেন, ক্রিশ্চান বা মুসলিম হলেন না।উনি নিজে সব ধর্ম এবং কম্যুনিজমের বইও অধ্যয়ন করেছেন।
উনি স্পষ্ট বলেছেন --হিন্দু- ইসলাম-খ্রীষ্টধর্ম এমনকি মার্ক্সবাদও মুক্তবুদ্ধির ধর্ম নয়। এরা একবার যা শাস্ত্রে লেখা তাকে অমোঘ, অপরিবর্তনীয় মনে করে।
একমাত্র বৌদ্ধ দর্শনই মুক্ত বুদ্ধির ধর্ম। এখানে প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তা এবং যুক্তির স্বাধীনতা আছে। কারণ বুদ্ধ বলেছেন ঃ
এক, আমার উপদেশ হল নৌকার মত। নদী পার হতে কাজে লাগে। তারপর ওটাকে লোকে বালির ওপর উলটে রেখে ঘরে যায়। মাথায় করে বাড়ি নিয়ে যায় না।
দুই, আত্মদীপো ভব। নিজেই নিজের চিন্তাও উপলব্ধির জোরে রাস্তা খুঁজে নাও।