এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • অচলায়তনের রূপকথাঃ পর্ব ১৮

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৫ এপ্রিল ২০২৩ | ১১৫৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • ১০
    হোমো স্যাপিয়েন
    আমার বাবাকে লেখা চিঠি পরিবারে একটা ছোটখাটো ভূমিকম্পের কাজ করল। সাতদিন পরে আশ্রমে হাজির হলেন নানুকাকা, বাবার দূরসম্পর্কের ভাই-- আমার লোক্যাল গার্জেন। ওনার বর্ধমান শহরে একটা ওষুধের দোকান আছে।
    উনি এসে  আমাকে বললেন—হ্যাঁরে, তুই বড়দাকে কীসব লিখেছিস? দাদার রাত্তিরে ঘুম হচ্ছে না। আমাকে বলেছেন তোকে মিড-সেশনেই হোস্টেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে। এটাও বলেছেন যে একটা বছর নষ্ট হয় হোক, অমন পরিবেশে আর একদিনও নয়। হয়েছেটা কী?
    আমি চুপ; পায়ের নখ দিয়ে ধূলোয় নকশা বানাতে থাকি। উনি কেন আমার মুখ থেকে কথা বার করতে চান? চিঠিতে যা লিখেছি তা তো বাবার কাছ থেকে জেনে গিয়েছেন, তাহলে?
    বড়রাও মাঝেমধ্যে বড্ড ন্যাকা হয়।
    আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে নানুকাকার বোধহয় দয়া হল। বললেন—‘ঠিক আছে, তোকে কিছু বলতে হবে না। তবে আমার কথাটাও শুনে নে।
    দেখ, আশ্রমের হোস্টেলে তোর যে অসুবিধাই হোক, প্রায় পাঁচ বছর তো কাটিয়ে দিলি। আর একমাস পরে অ্যানুয়াল এগজাম। এ’কদিনে আর নতুন করে কী হবে? পরীক্ষাটা দিয়ে দে, ভাল করে মন দিয়ে পড়। ইলেভেনটা বর্ধমানের ভাল স্কুলে পড়বি; আমার বাড়ি থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক দিবি।
     ওই স্কুলের হেডমাস্টার আমার ভায়রা, আমি কথা বলে রেখেছি। কিন্তু তোকে ভাল রেজাল্ট করতে হবে, ফেল করলে ওখানে নেয় না’।
    দূর ছাতা! ফেল করব কেন? নানুকাকা শ্রীমান প্রদ্যুম্নকে ভাবেটা কী !
    ‘তাহলে আমি চলি। তুই রাজি হলে দাদাকে চিঠি লিখে দিচ্ছি যে চিন্তার কোন কারণ নেই। বছর নষ্ট হবে না। দু’মাস পরে এখান থেকে টিসি নিয়ে ভাল স্কুলে ভর্তি করে দিচ্ছি। আর  হোস্টেলে নয়’ ।
    চলে যাওয়ার সময় বিকেলের পড়ন্ত আলোয় নানুকাকাকে দেবদূতের মত লাগছিল।
    রাত্তিরে খাওয়ার পরে গুরু এবং প্রশান্তকে সুখবরটা শোনালাম।
    নাঃ দেড় নয়, খালি একটা মাস। তারপরে আসানসোলে নানুকাকার বাড়ি। ওনার ছেলে পল্লব প্রায় আমারই বয়েসি। ওদের ক্লাবে গিয়ে ক্রিকেট খেলা যাবে। ওর একটা বোন আছে, ওর চেয়ে পাঁচবছরের ছোট, বড্ড নাকেকাঁদা ঘ্যানঘেনে মেয়ে।
    সে যাকগে; আমাকে এখন মন দিয়ে পড়তে হবে, ভালো রেজাল্ট করে এখান থেকে মহারাজদের কাঁচকলা দেখিয়ে বেরিয়ে যাব। বেশ ঘ্যাম হবে। নাঃ অংকের ব্যাকলগগুলো নিয়ে খাটতে হবে। কার থেকে হেল্প নিই?
    সবচেয়ে ভাল তো বিপ্লব, ওর থেকে? নো কোশ্চেন। 
    তবে বিশু মন্দ নয়, আমার কাজ চলে যাবে।
      নখদর্পণের ভেল্কি
    হোস্টেলের রাঁধুনি পঞ্চা ভাত পুড়িয়ে ফেলায় আমাদের ক্লাসে আসতে দেরি হল। ওয়ার্ডেন চিঠি দিয়ে দিলেন।  ক্লাসে ঢুকে দেখি তুলকালাম।
    আমাদের আশ্রম বালক বিপ্লবকে নিয়ে  ডে-স্কলারদের মধ্যেই প্রায় হাতাহাতি শুরু হয় আর কি!
    ব্যাপারটা একেবারে পঞ্জুরিতে তিড়িতংক!
     
    ক্লাস টেন বি’র (হিউম্যানিটিজ) ডে স্কলার অনিল আমাদের ক্লাস টিচার বাংলার স্যার সন্তোষবাবুর কাছে নালিশ করেছে যে এ’ সেকশনের (সায়েন্স) বিপ্লব ওর রিস্টওয়াচ চুরি করেছে।

    কী যা তা! বিপ্লব তো ক্লাস টেন সায়েন্সের সেকেন্ড বয়।

    তাতে কী! পড়াশুনোয় সেকেন্ড বয় কি চুরিবিদ্যায় ফার্স্ট হতে পারে না?

    কিন্তু বিপ্লব কেন চুরি করবে?

    কোন চোর কেন চুরি করে? টাকার জন্যে। ওর এখন টাকার দরকার।

    হোস্টেলে থাকে বলে ওর নামে এমন নোংরা কথা বলতে পারলি?

    ধেত্তেরি! যা সত্যি তাই তো বললাম। এর মধ্যে হোস্টেল তুলছিস কেন?

    সন্তোষস্যার সবাইকে চুপ করতে বললেন।

    হ্যাঁরে অনিল, ঠিক করে বলতো –কী হয়েছিল?

    -কালকে ছুটির পরে আমি স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলছিলাম। আমি গোলকিপার। বইয়ের ব্যাগ, ফুলপ্যান্ট আর ঘড়ি একসাথে করে গোলপোস্টের পাশে রেখেছিলাম। খেলার শেষে প্যান্ট পরে ব্যাগ তুলতে গিয়ে দেখি প্যান্টের পকেটে রাখা রিস্টওয়াচটা নেই।  ওটা আমার জন্মদিনে মাসিমণির গিফট—ফেবার লুইবা।

    -- গোলপোস্টের কাছে বিপ্লব ছিল?

    --হ্যাঁ স্যার।

    সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসের ফার্স্টবয় আর থার্ডবয় চেঁচিয়ে উঠল। 
     
    --স্যার, আরও অনেক ছেলে ছিল। আমরাও ওর সঙ্গে ছিলাম।

    সন্তোষবাবুস্যার সাদামাটা ভাল মানুষ। বিপ্লবকে ডেকে বললেন-যদি নিয়ে থাক, তো দিয়ে দাও! 

    বিপ্লবের চোখমুখ বসে গেছে। কোনরকমে বলল—স্যার! আমি নিইনি। বিশ্বাস করুন, মা সরস্বতীর  দিব্যি!

    স্যার বিরক্ত হলেন—দিব্যি দিচ্ছ কেন? না নিলে সাফ বলে দাও নাও নি। ব্যস।  এরপরে পুলিশ খুঁজে দেখবে।

    গোটা দলটা সন্তোষস্যারকে নিয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার রাজেন্দ্রস্যারের চেম্বারে গেল। পেছন পেছন আমরা, হোস্টেলের ছেলেরা।

    রাজেন্দ্রস্যার জানতে চাইলেন যে অনিল হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই বিপ্লবকেই চোর ঠাঊরেছে কেন?

    অনিল বলল যে ও নিউ প্রভাত টকিজের কাছে এক তান্ত্রিকের আশ্রমে গেছল,চোর শনাক্ত করার জন্যে। সেখানে তান্ত্রিকবাবা যজ্ঞ করে যজ্ঞবেদীর ছাই দিয়ে নখদর্পণ করেন। তাতে অনিলের নখে ঘড়ি হাতে বিপ্লবের ছবি ফুটে উঠেছে।
      
    চারদিকে গুন গুন শুরু হয়ে গেল।

    দেখলি তো? নখদর্পণে চোর ধরা পড়েছে।

    যত্ত গাঁজাখুরি কথা।  অনিল কী দেখতে কী দেখেছে কে জানে?

    ওইটুকু নখের মধ্যে ছবি দেখে কাউকে চেনা যায় নাকি!

    একটা কথা ভাব। ও বিপ্লবের ছবিই কেন দেখল? প্রদ্যুম্নকে কেন দেখল না?

    আরে ওর সঙ্গে বোধহয় অনিলের ঝগড়া ছিল।

    না , ওদের মধ্যে বিশেষ আলাপ-পরিচয়ও ছিল না।

    তাহলে?

    রাজেন্দ্রস্যার গম্ভীর। তিনি অংকের সঙ্গে জ্যোতিষচর্চাও করেন। বলেন-ওটাও একরকম অংক।

    এবার উনি জিজ্ঞেস করলেন—আচ্ছা, তোমার তান্ত্রিক অন্য কারো আঙুলে নখদর্পণ করে চোর দেখাতে পারেন?

    --হ্যাঁ স্যার। তার নাম প, ম, র অথবা স দিয়ে শুরু হতে হবে। আর তার জন্মের রাশি তুলা, মেষ বা কন্যা হতে হবে।

    রাজেন্দ্রস্যার সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন।

    --তোমাদের মধ্যে কেউ আছ? ভলান্টিয়ার হতে রাজি হবে?
     
     সন্নাটা! সন্নাটা! কার ঘাড়ে ক’টা মাথা!
    আবার আমি পা বাড়িয়ে লেঙ্গি মারলাম।
    --আমি স্যার, আমি।

    সবার চোখ আমার দিকে।

    -আমার নামের প্রথম অক্ষর প।  আর রাশি কন্যা। আমি রাজি।

    --বেশ, আমি তোমার আর অনিলের জন্যে গেটপাস বানিয়ে দিচ্ছি। বিকেল সাড়ে চারটার মধ্যে ফিরে এসে স্টাফ রুমে সব স্যার আর ক্লাসের ছেলেদের সামনে রিপোর্ট করবে। আর বিপ্লবকেও তখন উপস্থিত থাকতে হবে।

    আমি আর অনিল গেটের দিকে এগোই।  পেছনে পেছনে আসে আমার হস্টেল বন্ধুরা, গেট  অব্দি এগিয়ে দেয়।ওদের চেহারায় বদলা নেওয়ার উল্লাস। বিপ্লবের মুখে একটু ভয়ের ছায়া খেলে গেল কি?

    উদাসীবাবার আখড়ায়

    ডিসেম্বরের শুরু। তবু শীত তেমন জাঁকিয়ে পড়েনি। দুপুরের রোদে সামান্য ঝাঁঝ। আমি ও অনিল হাঁটছি।  গন্তব্য নিউ প্রভাত সিনেমার কাছে তান্ত্রিকের ডেরা। এর মধ্যে অনিল একটা গলির ভেতরের দোকান থেকে একটু অগুরু, ধূপকাঠি, দেশলাই আর ছোট্ট ঘিয়ের শিশি কিনেছে।  আর আছে একটা ছোট শিশি তাতে সাদা জলীয় কিছু টলটল করছে। জানলাম ওটা কারণ বারি। কালীমাতার পূজো ও যজ্ঞে লাগে। খরচ হল ছ’টাকা তিন আনা।
     
    --আর জবাফুল নিলি না? রক্তজবা?

    -- তান্ত্রিকবাবার আশ্রমেই গাছ আছে, পঞ্চমুখী রক্তজবা ও লংকাজবা। কোন চাপ নেই।

    আমরা হাঁটছি, অনেকটা পথ। অনিল বকবক করছে।

    --পড়াশুনোয় ভাল হলেই হয় না, বুঝলি! আগে মানুষ হওয়া দরকার। বিপ্লব চুরি করবে ভাবতে পারি নি।  ভাগ্যিস তান্ত্রিকবাবা ছিলেন। নইলে চোর ধরা পড়ত না।  ঠিক কী না বল!

    আমি মাথা নাড়ি। আসলে কিছুই শুনছিলাম না। তান্ত্রিকের আড্ডায় যাচ্ছি। কী জানি কি হয়! পেটের মধ্যে গুরগুর করছে।
     
    নিউ প্রভাত সিনেমাহল তো এসে গেল। এবার? কই সেই আশ্রম?

    অনিলের চেহারায় কেমন একটা ভাব। আমার হাত ধরে একটা গলির মধ্যে বন্ধ বাড়ির পেছনে নিয়ে গেল।

    এই কি আশ্রম? এমন হয়?

    ভাঙা পাঁচিলের পাশ দিয়ে মাথা নীচু করে ঢুকে গিয়ে দেখি একটা তিনদিক ঘেরা আঙিনামত। একদিকে অন্য একটি বাড়ির বন্ধ দেয়াল। তার গায়ে খাঁজকাটা কুলুঙ্গিতে একটি ছোট্টমত কালীমূর্তি। অন্য দিকের পাঁচিল ঘেঁষে একটি মাটির বাড়ি, টালির চাল। গা বেয়ে পুঁই আর কুমড়োলতা জড়াজড়ি করে মাথা তুলেছে।  আর একটি বাঁকাচোরা কুঁজো মত টগর ফুলের গাছ। হ্যাঁ, অনিলের কথামত তিনটে জবাফুলের গাছও দেখতে পেলাম। ছ্যাতলা পড়া স্যাঁতসেঁতে দেয়াল।

    কিন্তু ওই কুঁজো টগরফুলের গাছ থেকে চোখ ফেরাতে পারছি না কেন?  কেমন একটা অজানা আতংক আমার শিরদাঁড়া বেয়ে নামছে। গাছটাকে কেন জীবন্ত মনে হচ্ছে? কেন যে মরতে পাকামি করতে গেলাম!
    বিপ্লবকে অনিল চোর ঠাউরেছে তো আমার কী? আমরা তো এখন আর লাকি-মিতা নই। ওকে মেরেছি, কথা বন্ধ হয়ে গেছে।
    ওর ডে- স্কলার বন্ধুর দল তো রয়েছে। ভারি আমার সেকন্ড বয় রে!

    একটা ঘড়ঘড়ে আওয়াজে কেউ বলল- এইচিস? তা জিনিসপত্র সব ঠিক ঠিক এনিছিস?

    এবার দেখতে পেলাম একজন সাদা দাড়ি সাদা চুল বুড়োকে। ওর পরণে একটা ময়লা লুঙ্গি আর খালি গায়ে পৈতে ও বুকের সাদা চুল মিলে মিশে গেছে। এই তবে বাবাজি?
    অনিলকে দেখলাম কোন কথা না বলে ঝোলা থেকে জিনিসপত্তর বের করে বাবাজির পায়ের কাছে নামিয়ে রেখে উবুড় হয়ে প্রণাম করল।

    --বাবা, এই ছেলেটি আমাদের সঙ্গে পড়ে।  স্যার বলেছেন ওর নখেও নখদর্পণ করে চোর দেখাতে।

    বাবাজি আমাকে চেরা চোখে জরিপ করে বললেন—নাম? গোত্র?

    --প্রদ্যুম্ন বসু। গোত্র পরাশর।

    -- কুলীন কায়স্থ?  তা বেশ। ভাল আধার। কিন্তু রাশি?

    -- কন্যা রাশি।

    -- বাঃ, নখদর্পণ হবে। আমার ভৈরবী বগলা মা সব ব্যবস্থা করে দেবে। আগে তুমি কালীমা’র সামনে পদ্মাসনে বস। বগলা! ওঠ। ওকে শুদ্ধ কর, আচমন করাও, তারপর যজ্ঞের আয়োজন কর।

    টগর গাছকে দেখে কেন জীবন্ত মনে হচ্ছিল এবার বুঝতে পারলাম।
    মা বগলা টগর গাছের পাশে এমনভাবে বসেছিলেন যেন উনি গাছেরই আর একটা কান্ড। ওঁর বয়স বাবার থেকে অন্ততঃ কুড়ি বছর কম। কিন্তু মাথার না আঁচড়ানো তেলহীন লম্বা চুল জটপাকিয়ে বিশাল জটার আকার নিয়েছে। ঠিক যেন আর একটা টগর গাছ।  বাবাজির চোখ আধবোঁজা, কিন্তু বগলা মা’র চোখ দীঘল।

         উনি আমার মাথায় গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিলেন। তারপর কালীমূর্তির সামনে একটি কুশাসনে বসিয়ে সামনে তামার কোশাকুশি ও খানিকটা জায়গা গোবর দিয়ে লেপে তার উপর একটি চৌকোণা তামার পাত্র বসিয়ে কিছু শুকনো কাঠকুটো সাজিয়ে তাতে অনিলের আনা ঘি খানিকটে ঢেলে দিলেন।  উনি একটি শিশি থেকে আমার মুখে টক দইয়ের মত কিছু একটা ঢেলে দিয়ে বললেন—বাবা,এবার আসুন।

          আমার থেকে একটু দূরে অনিল বসে উত্তেজনায় কাঁপছে।  বাবাজি একের পর এক মন্ত্র পড়ছেন ও মাঝে মাঝে হুংকার দিয়ে উঠছেন।  বগলা একহাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার পিঠের কাছে বসে আছেন।

     মাঝে মাঝে যজ্ঞের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে। মাঝে মাঝে ধোঁয়ায় চারদিক ভরে যাচ্ছে, আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।

         কিছু বুঝতে পারছি না।  খালি কানে আসছে ওঁ হ্রীং ক্লীং! বষটকারিণ্যৈ নমঃ। দক্ষিণাকালিকায়ৈ নমঃ। এই যজ্ঞ আর কতক্ষণ চলবে? আমার ঘুম পাচ্ছে।

          মা বগলার ছোঁয়ায় জেগে উঠেছি। যজ্ঞ মনে হয় শেষ। এবার তার ভস্ম আর ঘি মিশিয়ে খানিকটা কালো থকথকে জিনিস বানিয়ে আমার আর অনিলের কপালে টিপ পরিয়ে মা বগলা আমার ডানদিকে বসলেন। আমার পেছনে ইঁটের দেয়াল।  সামনে বাবাজি।

    --ওকে বজ্রাসনে বসাও বগলা!

    বাবাজি একের পর এক নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন।

     আমি নির্দেশমত হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে বসলাম। বগলা আমার ডানহাতের বুড়ো আঙুলের নখে ওই থকথকে কালোমত জিনিসটা লেপে দিয়ে আমার ডান হাত ওঁর দক্ষিণ করে ধারণ করে বাম হাতে পেছন দিক দিয়ে বেষ্টন করে বসেছেন। বাবাজি নখদর্পণের মন্ত্র পড়ছেন। বুঝতে পারছি ভাষাটা ঠিক সংস্কৃত নয়।

    হঠাৎ হুংকার দিয়ে বললেন—মুহুর্ত আগত। ওর দক্ষিণ করের বৃদ্ধাংগুষ্ঠ ধারণ করে দর্পণে চোরের মুখ দেখাও।

     কানের কাছে মুখ নিয়ে বগলা বললেন—কী দেখছ?

    --কিছু না।

    --দেখ, ভাল করে দেখ। আমি দেখতে পাচ্ছি, তুমিও পাবে। এবার দেখ।

    -- হ্যাঁ, দেখতে পাচ্ছি।

    --কী দেখছ?

    -- আমাদের মিশন স্কুলের লোহার গেট।
    --ঠিক। এবার?
    --স্কুলের তিনতলা বিল্ডিং।
    -- বাঃ।

       -- এখন স্কুলের ছাদ, জলের ট্যাংক। আর কিছু না।
    -- বিপ্লবকে দেখ নি?
     --নাঃ।

    বাবাজি আবার হুংকার দিলেন।

    --আয়! বিপ্লব আয়! যেখানেই লুকিয়ে আছিস, বেরিয়ে আয়। তোর পালাবার পথ সব বন্ধ করে দিয়েছি।  আয়! আয়! কার আজ্ঞে? হাড়িপ বাবার আজ্ঞে!

    বগলার গলায় উত্তেজনার ছোঁয়া।
      --এইবার দেখতে পাবে। এইবার!
    ওনার ভারি বুকের চাপ আমার পিঠে। শরীরে একটা ভালোলাগা অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে।
    আমার মনেও ছোঁয়া লাগে।
    --হ্যাঁ , হ্যাঁ। এই তো দেখতে পারছি। বিপ্লব! বিপ্লব!  

    অনিল আমার দিকে হাঁটু গেড়ে এগিয়ে আসে। ঠিক দেখেছিস? বিপ্লবই তো?
    --হ্যাঁ, ঘড়িতে টাইম দেখে রাখ।
    --তিনটে চল্লিশ। সাবাশ! এবার ও ঘড়ি না দিয়ে যাবে কোথায়!

    বগলা মা আমাকে ছাড়েন নি।

    -- কী দেখছ? বিপ্লব এখন কী করছে? 
    -- ও ছাদের ট্যাংকের নীচের থেকে কাপড়ে মোড়া একটা ছোট পুঁটুলি বের করে খুলছে।
    --এবার?
    -- ওর হাতে একটা ছোট জিনিস চকচক করছে।  জিনিসটা—জিনিসটা একটা রিস্টওয়াচ। ফেবার লুইবা!
    --এবার?
    --কিছু না; সব ধোঁয়া ধোঁয়া। কিছু না।

    আমি ক্লান্ত। আধো অন্ধকার এই আঙিনায় শ্যাওলাধরা স্যাঁতসেঁতে দেয়ালের গন্ধ, অগুরু ধূপের ধোঁয়া, ঘি ও কারণবারির গন্ধ, মা বগলার বিশাল জটার উৎকট গন্ধ সব মিলে আমার গা গোলাচ্ছে। মিনমিন করে বলি—আমায় এবার ছেড়ে দিন, আমাদের যেতে দিন।

    ফেরার পথে অনিলের মুখে খই ফুটতে থাকে। আমি নির্বাক। মিশনের কাছে এসে ও বলে—হ্যাঁরে, তুই যা যা দেখেছিস সব ঠিক ঠিক স্যারেদের সামনে বলবি তো?

     অলটারনেটিভ প্রুফ
    আমাদের স্কুলের স্টাফরুমে ভীড় ভেঙে পড়েছে।  এমন আজব ঘটনা!
    শুধু হেডস্যার আসেন নি, ব্যাপারটা তাঁর কানে তোলা হয় নি, তাই। নানান ক্লাসের ছেলের দল, ল্যাব সহকারীরা মায় স্কুলের চাপরাশি বৈকুন্ঠ ও ঘনশ্যাম।

     রাজীবস্যার প্রশ্ন করেন—প্রদ্যুম্ন, নখদর্পণ হল? কী দেখলে?
    -- স্যার, আগে অনিল বলুক।

    অনিলের বর্ণনা শেষ হলে সন্নাটা সন্নাটা।
     তাহলে বিপ্লব চোর? সবার চোখ এখন ওর দিকে।

    --হ্যাঁ স্যার! প্রদ্যুম্ন নখদর্পণে নিজে বিপ্লবকে দেখেছে। ও ছাতের উপর জলের ট্যাংকের নীচে  আমার ফেবার লুইবা রিস্ট ওয়াচ লুকিয়ে রেখেছে।  হ্যাঁ স্যার, আমি তখন ঘড়ি দেখেছিলাম—তিনটে বেজে চল্লিশ।

    রাজেন্দ্রস্যারের নির্দেশে ঘনশ্যাম চাপরাশি ছাদে জলের ট্যাংকের নীচের থেকে ঘড়ি উদ্ধার করতে গেল।
    কিন্তু স্টাফরুমে স্যারেদের আর ক্লাস টেনের ছেলেদের মধ্যে ফিসফাস কথা শুরু হয়ে গেছে।  উঠে দাঁড়িয়েছেন কেমিস্ট্রির বাণীব্রত স্যার।

    --আমাদের কোথাও কিছু একটা ভুল হচ্ছে।
    রাজেন্দ্রস্যার অবাক হয়ে কেমিস্ট্রির স্যারের দিকে তাকালেন। কী বলতে চান আপনি?
    --বলতে চাই যে প্রদ্যুম্ন বিপ্লব নয়, অন্য কাউকে দেখেছে। 
    -- মানে?

    -- স্যার, আজ ওদের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস ছিল।  তিনটের থেকে সওয়া চারটে পর্য্যন্ত। বিপ্লব আর অরবিন্দ একটা সল্ট টেস্ট করছিল, আমার সামনে। একবারও ক্লাস থেকে বের হয় নি। তাই তিনটে চল্লিশে ওর তিনতলার ছাতের ট্যাংকের নীচে কিছু লুকনোর প্রশ্নই ওঠে না।
    --হ্যাঁ স্যার, ও আর আমি তখন থেকে একসঙ্গে আছি। অরবিন্দ মুখ খোলে।

    অনিল চেঁচিয়ে ওঠে। নিশ্চয় ও বাথরুম যাবার নাম করে ক্লাসের বাইরে গিয়েছিল, স্যারের মনে নেই।

    বাণীব্রত স্যার ধমকে ওঠেন—তুমি থাম হে ছোকরা!

    কিন্তু আর কেউ মুখ খোলবার আগে চাপরাশি রাধেশ্যাম ফিরে আসে। জলের ট্যাংকের নীচে কিছু নেই। বিপ্লব সরালো কখন?
    রাজেন্দ্রস্যার বলেন—এবার আমরা প্রদ্যুম্ন’র কথা শুনব।
     
    আমি একবার গোটা ঘরের সবার দিকে চোখ বুলি নিই। সবাই কেমন অপেক্ষায় রয়েছে। এত ইম্পর্ট্যান্ট আমি!

    --স্যার, বলতে বাধ্য হচ্ছি এই তান্ত্রিকের নখদর্পণ ব্যাপারটা পুরো বুজরুকি! আমি কিচ্ছু দেখি নি। দেখা সম্ভব নয়।  এসব ওই বাবাজি ও বগলা মার চালাকি। একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ বানিয়ে জোর করে সাজেস্ট করে কিছু দেখেছি এ’রকম বলতে বাধ্য করা।
    আপনারাই বলুন,ওইটুকু নখের মধ্যে কালি লেপে স্কুলের ছাদ, জলের ট্যাংক, মানসের মুখ আর ঘড়িটা যে ফেবার লুইবা—এসব দেখা ও চিনে ফেলা সম্ভব?

    অনিল চেঁচিয়ে ওঠে—কী বলছিস কি তুই!

    ওকে রাজেন্দ্রাস্যার এক ধমকে চুপ করিয়ে দিয়ে বললেন—আর কিছু বলবে প্রদ্যুম্ন?
    --হ্যাঁ স্যার। আর একটা কারণে আমার হাতে নখদর্পণ হতে পারে না।
    --সেটা কী?

    --রাশি স্যার। আমার রাশি তো কন্যারাশি নয়। তাহলে আমি দেখলাম কী করে?
    -- তুমি—তুমি আমাকে মানে আমাদের সবাইকে মিথ্যে কথা বলে ক্লাস কেটে তামাশা দেখে এলে?

    --না স্যার! অলটারনেটিভ প্রুফ। অল্টারনেটিভ প্রুফ, বিকল্প প্রমাণ। আপনিই ক্লাসে  শিখিয়েছিলেন। দ্বিঘাত সমীকরণের মূল যে দুইয়ের বেশি হতে পারেনা সেটা প্রমাণ করতে ধরে নেওয়া হয় তিনটে মূল—আলফা, বেটা, গামা। তারপর এমন একটা জায়গায় পৌঁছোই যা প্রথম প্রমেয়র সংগে খাপ খায় না। তার মানে প্রথম ধরে নেওয়াটাই ভুল।
    এখানেও আমি তাই করলাম।
    আমার রাশি কন্যা নয়, বৃশ্চিক। অর্থাৎ তান্ত্রিকের লিস্টির কোন রাশি নয়।  নখদর্পণ সত্যি হলে আমার নখে কিছু দেখতে পাওয়া যাবে না। তাহলে বগলা মা কী করে সব দেখালেন? অর্থাৎ প্রথম প্রেমিসটাই ভুল। ব্যাপারটাই জালি।
        রাজেন্দ্রস্যার হো হো করে হেসে উঠলেন।
                                                 
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৫ এপ্রিল ২০২৩ | ১১৫৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:a6ec:bab7:e747:***:*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ২১:২১518993
  • অসাধারণ।
  • Amit Sengupta | 49.207.***.*** | ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ২২:০৪518994
  • জমে গেছে। 
  • Kishore Ghosal | ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১১:২১519015
  • ফাটিয়ে দিয়েছেন। কামাল করে দিয়েছেন।  
  • Kishore Ghosal | ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৩১519017
  • আরেকটা কথা ওই বুজরুক বাবাজি ও বগলা মা কোন প্রণামী বা দক্ষিণা নেয়নি? আসলে সেটাই আসল উদ্দেশ্য কিনা! সে সময় এরকম ঠকবাজির রেট কত ছিল - সেটাই আমার কৌতূহলের বিষয়।   
  • Bratin Das | ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:০০519019
  • এটা তো আগে পড়া 
    দুরন্ত 
  • Ranjan Roy | ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ২২:১৭519027
  • প্রণামী নিয়েছিল, দুবারে ছেলেটার মোট 11 টাকা 60 পয়সা খরচ হয়েছিল। 
    1965 সাল, তায় ওরা খুব গরীব তান্ত্রিক,  কোন পসার নামডাক নেই।
    পরে যখন কিছু স্কুলের ছেলে গিয়ে টাকা ফেরত চাইল তখন বগলা মা খ্যাঁক খ্যাঁক করে ঝগড়া করলেন আর  ছেলের দল  ফিরে যেতে যেতে ওঁদের বাড়ির চাল আর উঠোন লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে পালাল। 
     
    আমার ওঁদের জন্য খুব খারাপ লাগল। 
    ওরা বড্ড গরীব, বড়  নিরুপায়।
  • kk | 2601:14a:500:e780:266e:65fd:bc87:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ২২:২৫519028
  • সাবাশ পোদো!
  • কালনিমে | 2402:3a80:1985:faab:ac44:4513:d027:***:*** | ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ২২:৫৪519031
  • অসাধারন। আর যারা এই সব তান্ত্রিকদের কাছে যায়, চোর ধরতে বা রোগ সারাতে,তাদের টাকা পয়সা যাওয়াই উচিত
  • Kishore Ghosal | ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ১১:০৯519050
  • "প্রণামী নিয়েছিল, দুবারে ছেলেটার মোট 11 টাকা 60 পয়সা খরচ হয়েছিল। 
    1965 সাল, তায় ওরা খুব গরীব তান্ত্রিক,  কোন পসার নামডাক নেই।
    পরে যখন কিছু স্কুলের ছেলে গিয়ে টাকা ফেরত চাইল তখন বগলা মা খ্যাঁক খ্যাঁক করে ঝগড়া করলেন আর  ছেলের দল  ফিরে যেতে যেতে ওঁদের বাড়ির চাল আর উঠোন লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে পালাল। 
     
    আমার ওঁদের জন্য খুব খারাপ লাগল। 
    ওরা বড্ড গরীব, বড়  নিরুপায়"।
     
    ঠিকই। আজকাল প্রগতিশীল ও সত্যবাদী দৈনিক পত্রিকাগুলিতে এমন কত যে সচিত্র তান্ত্রিক যোগসিদ্ধ বাবাজীদের বিজ্ঞাপন দেখি - শুনেছি তাঁদের প্রণামীর রেট - ৫/১০ হাজারের কম নয় - মুরগি ভাল মালদার বুঝলে রেট আরও বেড়ে যায় ...। 
    বগলা মা সত্যিই গরিব।     
  • বিপ্লব রহমান | ০৮ মে ২০২৩ ০৯:০১519546
  • পুনশ্চঃ ১৭ নম্বর পর্ব কি ফস্কে গেল? enlightened
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন