অনির্বাণবাবু,
দারুণ! দারুণ!
আমি প্রায় সব পয়েন্টেই আপনার সঙ্গে একমত।
১ বামপন্থা একটি বড় সেট, কমিউনিস্টরা তার সাবসেট।
.২"আমি এটুকুই বলছি যে ঘুষ আর বাজার আসলে একই নিয়মে কাজ করে। ঘুষ বেআইনি আর বাজার আইনি – ঘুষ আর বাজারের মধ্যে পার্থক্য এটাই"।
--এই প্রেক্ষিত থেকেই বোধহয় প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু একসময় ঘুষ বা সার্ভিস প্রোভাইডারদের কমিশন দেওয়াকে আইনি করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন বলে মনে পড়ছে।
৩ "তাই ঘুষ হল অনৈতিক (এবং অবশ্যই বেআইনি) কিন্তু বাজার নৈতিক (এবং আইনসিদ্ধ)। কিন্তু এই আইন এবং নৈতিকতা পরিবর্তনশীল।"
--চমৎকার উদাহারণ দিয়েছেন --আইনক্সে ফ্লেক্সিবল টিকিটের দাম! আমার মনে পড়ছে ৯০ এর দশকে বোফোর্স বিতর্কের সময় জানতে পারলাম অস্ত্র বিক্রয়ে কমিশন দেওয়া ভারতে বে-আইনি, কিন্তু সুইডেনে এবং অনেক দেশে নয়। অতএব নৈতিকতার প্রশ্নে এ নিয়ে দুই দেশে পাবলিক পারসেপশন আলাদা।
৪ কিন্তু আটকে গেছি এই জায়গাটায়ঃ
আপনি বামপন্থার সাধারণ লক্ষণ নির্ধারণ করেছেন দুটোঃ
ক) সম্পদের পুনর্বন্টন (এবং তাতে রাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা)।
খ) গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে দাঁড়ানো।
--এইখানে ভেবে দেখুন। কমিউনিস্ট বামপন্থীরা ক্ষমতায় নাথাকলে সব দেশে গণতন্ত্র রক্ষার জন্যে লড়াই করেন। তাত্ত্বিক সমর্থনে স্তালিনের বিখ্যাত কোটেশনটি ব্যবহার করেনঃ "গণতন্ত্রের পতাকা আজ ধূলায় লুন্ঠিত। শ্রমিকশ্রেণী ও তার সহযোগী বন্ধুরা ছাড়া কেউ নেই সেই পতাকা তুলে ধরার", ইত্যাদি।
কিন্তু ক্ষমতায় এলে কোন কমিউনিস্ট পার্টি গণতন্ত্রের কথা বলে না। সে স্বয়ং লেনিন, স্তালিন বা মাও যাঁর দেশই হোক।
অবশ্য যদি আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে অন্ততঃ বহুদলীয় এবং মতামত প্রকাশের খোলা মাধ্যম (পত্রিকা, জনসভা ইত্যাদি) ধরি।
কাজেই সেই অর্থে শুধুমাত্র সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসি বা ইউরোপের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্টেটগুলোই কি আপনার সংজ্ঞা স্যাটিস্ফাই করছে?
* কমিউনিস্ট বন্ধুরা অবশ্য ওই গণতন্ত্রকে 'বুর্জোয়া গণতন্ত্র" বলে তিলক লাগিয়ে দেন এবং প্রলেতারীয় একনায়কত্বকে বৃহত্তর গণতন্ত্র বলে দাবি করেন।
আপনার বক্তব্য বুঝতে যদি কোন ভুল করে থাকি তাহলে নির্দ্বিধায় খেই ধরিয়ে দিন।
আলোচনা চলুক, অন্যদের মত আসুক।