ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘রণোন্মাদিনী’র বিজ্ঞাপনে প্রকাশক পরেশনাথ বসু বইটির সাহিত্যিক মূল্য বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে লিখেছিলেন: রণোন্মাদিনী রাজপুত ইতিহাসের একটি ক্ষুদ্রতম ঘটনা অবলম্বন করিয়া লিখিত হইয়াছে। লেখিকা স্ত্রীলোক, তিনি বৃথা বিগত রাজপুত গৌরব চিত্রিত ক্রিয়ার প্রয়াস পাইয়াছেন... তাঁহার রণোন্মাদিনী প্রকৃত উন্মাদিনী, শ্রীহীনা, ভূষণহীনা। তাঁহার আলাপ - প্রলাপ মাত্র, অর্থবিহীন, অসংলগ্ন।
১৮৮৪ সালে লেখিকার কলমে এই ঐতিহাসিক উপন্যাসটি যাতে অচিরে অন্ধকারে পতিত হয়, তার চেষ্টা করেই এই বিজ্ঞপ্তি। এর আগে সুরঙ্গিনী দেবী ও স্বর্ণকুমারী দেবীর দেখানো পথে তিনি যে পরিমাণ বাধা পেয়েছেন, স্বয়ং প্রকাশকের বিরুদ্ধ-বিজ্ঞাপনের সাহায্যে, সেসব সত্ত্বেও ‘রণোন্মাদিনী’ কিন্তু আনন্দবাজার পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল। ১৯ জানুয়ারি ১৮৮৫ আনন্দবাজার পত্রিকায় লেখা হয়েছিল - “গ্রন্থখানি মোটের উপর ভালোই হইয়াছে। ভাষা বিশুদ্ধ, অনেক স্থলের বর্ণনা স্বাভাবিক ও হৃদয়গ্রাহী।”
উপন্যাসটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। রঘুবংশম্, হিতোপদেশ, মার্কণ্ডেয় পুরাণ, বৃত্রসংহার কাব্য থেকে প্রতি পরিচ্ছেদের আরম্ভ হয়েছে।মুঘল ইতিহাস ও টডের Annals And Antiquities of Rajasthan গ্রন্থ থেকে কাহিনি সংগ্রহ করে চারটি নারীচরিত্র সৃজন করেন বসন্তকুমারী। রাণা উদয়সিংহের মহিষী, লীলাবাঈ, মনোরমা ও সুরমা। এদের মধ্যে লীলাবাঈ আমাদের আলোচ্য। তিনি রাধার উপপত্নী, রাণাকে আকবরের আক্রমণ থেকে উদ্ধার করেন ও কারারুদ্ধ অবস্থা থেকে বাঁচান। যুদ্ধে আকবর পরাজিত হন ও ফিরে যান। এ উপন্যাসে লীলাবাঈ-ই প্রকৃত উন্মাদিনী ও বীরাঙ্গনা। উদয়সিংহ বলেছিলেন, ”অদ্য হইতে আমি আমার বিবাহিত মহিষীগণ অপেক্ষা তোমাকে অধিকতর মান্য করিব।” কিন্তু প্রকাশক পরেশনাথের বক্তব্যের কোনো যুক্তি পাওয়া যায় না, বোঝা যায় তা সর্বৈব মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। লেখিকার প্রতি পুরুষ প্রকাশকের লিঙ্গাত্মক ঈর্ষা-রাজনীতি; যা লীলাবাঈয়ের প্রতি একইরকম ভাবে গর্জে ওঠে যখন রাণা তাঁর প্রশংসা করেছেন ভরা রাজসভায়। রাজপুত নেতারা ক্রোধে লীলাবাঈকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন, তেমন করেই লেখিকা কাহিনির প্রথম খণ্ডের পরে আর দ্বিতীয় খণ্ড লেখার সাহস করেননি।
ওফেলিয়া নামাঙ্কিত বিখ্যাত ছবিটির মডেল হিসেবে কবি ও চিত্রকর এলিজাবেথ সিড্ডালকে বাথটবের ঠাণ্ডা জলে ভেসে থাকতে হয় বহু ঘন্টা এবং এর পরিণামে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৩২ বছর বয়সে মারা যান তিনি। জীবনের শুরুতে শিক্ষার সাধারণ স্তরে সীমাবদ্ধ ছিলেন, কিন্তু আচমকা কবিতার প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়। আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিতি পেলেন না, কবি হিসেবে তাঁকে কেউ জানলো না, স্বয়ং দান্তে গেব্রিয়েল রসেটি স্বামী হয়ে তাঁর কবিকৃতির প্রতি অবহেলা ও তীব্র উপেক্ষা দেখালেন কেন? যে কারণে আমরা মন্জুলিকা দাশ বা দস্যু কেনারামের কবিত্বের হিসেব রাখিনি, সে কারণে এলিজাবেথ বা লিজ্জি সাহিত্যপাঠকের কাছে কোনো স্বীকৃতি পেলেন না, বা পেতে দেওয়া হল না তাঁকে। তাঁর মৃত্যুর পর নিজের লেখার খাতাটি ও কবরস্থ করার ৬ বছর পরে আবার কবর থেকে সেই খাতাটি বার করা হল। অথচ এলিজাবেথের কবিতাকে প্রায় ১৫০ বছর অপেক্ষা করতে হল কোনো রসিক পাঠকের জন্য। তাই কি তাঁর বহু কবিতা নিজের শটিত প্রেমের নাসিকা কুন্চন বহন করেছে?
এলিজাবেথ এলিনর সিড্ডালের জন্ম ২৫ জুলাই ১৮২৯। আকস্মিক ভাবে মাখন মোড়ানো কাগজে টেনিসনের কবিতা দেখে তিনি কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হন। যৌবনের নমনীয়তা ও সুদীর্ঘ খয়ের রঙের কেশরাশির কারণে শিল্পীদের মডেল হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছিলেন এবং বহু বছর দান্তে গেব্রিয়েলের রক্ষিত হয়ে কাটানোর পর বিবাহিত স্ত্রীর মর্যাদা পান। কিন্তু মৃত্যুর শতবর্ষ পরেও কবিকে কেউ পাঠ করেনি। একটি কবিতায় লিখছেন—
Oh never weep for love that’s dead
Since love is seldom true
But changes his fashion from blue to red
From brightest red to blue,
And love was born to an early death
And is so seldom true.
Then harbour no smile on your Bonny face
To win the deepest sigh.
The fairest words on truest lips
Pass on and surely die,
And you will stand alone,my dear,
When wintry winds draw nigh.
...
দানব ও মানুষ
প্রাকৃত প্রেমের মিথ্যাচার ও ভণ্ডামি তাঁর কবিতার মূল মোটিফ। মনে পড়বে শেলি-পত্নী মেরি শেলির কথা। ১৮১৫ সালে লিখলেন সেই দৈত্যাকার মানুষের গল্প, যার জন্ম বৈজ্ঞানিকের গবেষণাগারে মৃতদেহের ওপর পরীক্ষার আকস্মিকতায়। মেরি শেলি সেই সময়ে স্বামী শেলি, বায়রন, তাঁর সৎ বোনের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। টানা কতদিন ঝড়বৃষ্টির প্রকোপও তাঁরা বেরোতে পারছেন না। তাঁদের এই বাধ্যতামূলক বন্দিদশাকে আনন্দময় করবার পরিকল্পনায় প্রতি রাতে সকলে একটা ভূতের গল্প লিখবে স্থির করা হল। রোজ অন্যরা নিজেদের লেখা গল্প পাঠ করে, মেরির কিচ্ছু লেখা হয় না। তারপর একদিন রাতভর নির্ঘুম চোখে দৈবযোগে পেলেন ফ্রাঙ্কেস্টাইন এর গল্প। ১৮১৮ সালে এই মানুষের নির্মিত অতিমানবের কাহিনি ডারউইনের তত্ত্বের বিরুদ্ধ দাবি নিয়ে এসেছিল, কিন্তু এর প্রাসঙ্কিকতা সম্পর্কে স্বীকৃতি এল ১০০ বছরের বেশি সময় পরে ১৯৩১ এ চলচ্চিত্রের কারণে। আলাদীনের ইচ্ছেপূরণ বুড়ো যে আসলে আমারই ভেতরের ‘the intimate’ “alien”, লাকঁ যার কথা এনেছেন— আজ জাঁ বদ্রিয়ে-র দর্শনের সাহায্য নিয়ে বুঝতে অসুবিধে হবে না, আমরা কীভাবে নিজেদের সর্বজ্ঞ কথকের বা লেখকের মতো omnipresent করে ফেলেছি। ১ জানুয়ারি বই প্রকাশিত হলেও, ১৮ বছরের মেরি অনুভব করেছিলেন সাহিত্যিক স্বামীর পাশে তাঁর নাম কোনদিন লেখা হবে না। তাঁর ডায়েরির পাতায় রয়ে গেল দাম্পত্যের অত্যাচার ও প্রমেথিউসের বিষাক্ত খিদের ইতিহাস। তাই এর দু’ বছর পরে সদ্য জননী মেরি ডায়েরিতে লিখেছেন—
“Nurse the baby, read”, তার কয়েকদিন বাদে লিখলেন, ”Find my baby dead”, “Dream that my little baby came to life again; that it had only been cold and that we rubbed it before the fire,and it lived.” পরবর্তী শতকের গবেষণায় মাতৃহীন কিশোরীর মনের বিক্ষোভ থেকে জন্ম এই দানবের, এরকম ভাবনা পোষণ করেছেন কেউ কেউ। ১৮২৩ এর একটি থিয়েটার উপস্থাপনায় আমন্ত্রিত মেরি বন্ধু Leigh Hunt কে চিঠিতে লিখেছেন—
“This nameless mode of naming the unnamable is rather good” কারণ দৈত্যের কোনো নামকরণ করা হয় নি। তবে সে নিজে সমাজ ও গ্রামবাসীরা ঘৃণার পাত্র হয়ে নিজের প্রতি ধিক্কারে নিজেকেই monster বলেছে। এই অতিমানবের মনের একান্ত সংগোপন একটা কোণায় জমা ছিল আত্মপরাজয়, আর অভিশাপ জর্জরতা। তাই নিজের স্রষ্টার কাছে সে এমন একজন সঙ্গিনী প্রার্থনা করেছে, যে তারই মতো বৃহদাকার ও কুৎসিত। আশ্চর্য হই ভাবলে যে, এ গল্প আসলে সেই আধুনিক মানুষের,তার একাকিত্ব ও সঙ্গহীনতা, প্রত্যাখ্যান ও ক্ষোভের কাহিনি যাকে অতিমানব হতে হচ্ছে বিশেষ কারণে,বাধ্যতামূলকভাবে। বৈজ্ঞানিকের বাসনার পুতুল হয়ে থাকেনি এই তথাকথিত জানোয়ার যাকে তার স্রষ্টা creature, thing, devil, spectre, wretch, ogre বলে ডেকেছেন।কিন্তু নাম নেই তার। অর্থাৎ সাহিত্য আমাদের প্রথম “সে” “the other”। এই নামহীনতা স্বৈরতন্ত্রের শাসন কায়েম করে এবং ব্যক্তিকে “যে-কেউ” এ পরিণত করে দেয়। কিন্তু এই নামহীন জন্তুটাই তার স্রষ্টার পরিচয়ের স্মারক হয়ে উঠল বিশ শতকে, বলা যায় নিজেকে ক্রীতদাসত্ব থেকে মুক্ত করতে পেরেছে এই বর্বর রাক্ষস, যে আসলে নিজেই তার ইচ্ছায় প্রভুকে চালনা করেছে। বিশ শতকে দু দুটো বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে ঠকে যাওয়া, হেরে যাওয়া মানুষ শাসকদলের হিংস্রতাকে যেভাবে প্রত্যক্ষ করেছে, তার ফলে উপন্যাসের নামকরণে প্যারাডাইম শিফ্ট্ অবশ্যম্ভাবী ছিল। হল ও তাই। বৈজ্ঞানিকের নাম না হয়ে দানবের নাম হল ফ্রাঙ্কেনস্টাইন, যে প্রকৃতপক্ষে মানুষের অন্তরের একজন ,আমাদের ভেতরকার এক অন্য সত্তা। হননতাড়িত আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের কাছে তাই প্রতিবাদী রুক্ষ কদর্য দানব অনেক কাছের মনে হল, সে হল
নতুন শতকের প্রতিনিধি। এর ও বহু বছর পরে লেখা হবে পিশাচিনীর কথা, পিশাচিনীর ব্রেকফাস্ট, পিশাচিনীর চলমান জীবনের টুকরো সাজিয়ে দেবেন যশোধরা রায়চৌধুরী, তাঁর ১৯৯৮ এ প্রকাশিত পিশাচিনী কাব্য কবিতাবই এ। নারীভাষ্যের এ এক নতুন দলিল, অন্যস্বর যা চিরাচরিতকে উৎপাটন করেছে। কালের সামনে এ এক অচিন ভোকাবুলারি, প্রতিটা শব্দের সঙ্গে তার বাচ্য ও অভিপ্রায়ের রণরণি চলেছে। উপকরণে রক্তমাংসে রূপকে চিত্রকল্পে কবি নিজে নিজেকে কতটুকু চেনেন!
তাই পুরুষের ব্যবহৃত সিলেবাস তাঁর নয়। প্রতিষ্ঠানের পরিপোষণ তাঁর কাজ নয়ঃ
পিশাচিনী মনে জানে এই প্রেম হবে না কখনো
তবুও কী ভক্তি আসে, সুবিশ্বাস,টান করে তোলে
মনটিকে, নরম ন্যাতানো মন, পিশাচিনী মনে জানে এ মনের
শিরায় শিরায়
রক্ত সন্চালন আর হবে না কখনো তবু বর্ষারাতে ভক্তি আসে
দুর্বার, সতত (৫ নং কবিতা)
পুরুষের সাপেক্ষে নয়, বরং মেয়েটি নিজে এখানে বিষয় ও বিষয়ী দুই ই। তার মনের স্তরের তলায় সত্যজ্ঞান নির্ভীক, সে জানে প্রেমের হওয়া এখন নেই। নব্বই এর কবিতায় নারীকন্ঠের এই আবিষ্কার এত শীতল ও স্বাভাবিক যে কবি বুঝিয়ে দেন ঐ ন্যাতানো মনের চামড়া তুলে ফেলা আশু দরকার। তাঁর কবিতায় ছত্রগুলো অনিয়মিত, ছেদযতির বহুল ব্যবহার নারীমননের টুকরো করা বিভাজিত অংশকে ইঙ্গিত করতে পারে। একটা মন আর একটা মনের ওপর আলগা করে যেন বসানো। এই নিস্পৃহতা লক্ষ করার মতো, যেন কমলা দাস এর আত্মজীবনীর একটা খোলা পাতা।’বৃত্তান্ত’ কবিতায় মেয়েটি তার নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে নিজের প্রকরণমুদ্রা সনাক্ত করেছে—
আবার আমি ফিরে আসছি লালচী মেয়ের মত,আবার দুহাত
সামনে পেতে দিই আর স্কার্টের ঘেরের মধ্যে লুকোনো খাবার
যা কিছু কুড়িয়ে নিয়ে চুপিচুপি রেখে দেওয়া, সব, সব পরে
খাবো বলে
কেউ দেখতে পেয়ে টেনে ফেলে দিল, ধুলোতে ছড়িয়ে গেল সব
দুগালে যে নামছে জল,চোখ বেয়ে, কে বলে এটাকে
অভিনয়?...
...
কোথাও ফেলাও যায় না, এত প্রেম, এই অসম্ভবতম ক্ষুধা
এই তৃষ্ণা, এ লালচ বয়ে বয়ে বেড়াতে হবে তো, আজীবন
...
এই অসম্ভবতম ক্ষুধা যেন ঐ বর্বর মানুষের, যে কিছুতেই ঐ অবশেসিভ পৌনপুনিকতা থেকে বেরোতে পারে না, খন্ডে খন্ডে আলুলায়িত কেশভারের তলায় চাপা পড়ে ওফেলিয়া হয়ে ওঠা সিড্ডালের মৃত্যু ও শেখাতে পারে না যে প্রেম সত্যিই মৃত। জর্জ অরওয়েল তাঁর Nineteen Eighty Four বইয়ের এক জায়গায় বলেন, ”The ideal set up by the party was something huge, terrible and glittering — a world of steel and concrete, of monstrous machines and terrifying weapons — a nation of warriors and fanatics marching forward in perfect unity, all thinking the same thoughts and shouting the same slogans, perpetually working, fighting, triumphing, persecuting— three hundred million people all with the same face.” যশোধরা রায়চৌধুরীর কথিত পিশাচিনী একদিন নিজেই নিজের পিঠে সেই রক্ত লাগা ছোরা চালিয়ে দেয়। বুঝতে পারি, মেরি শেলি-র ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের পরে কেন আবার একটি উপন্যাস লেখা হয় যার শিরোনাম বিগত বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে সত্য উচ্চারণ— “The Last Man”। ১৮২৬ এ প্রকাশিত এই উপন্যাসের গল্প আজকের পৃথিবীর পরিস্থিতি নিয়ে,আগামী পৃথিবীর সামনে কীভাবে আসবে বিরাট মহামারি। প্রভুর অন্যায় চাহিদা থেকে জন্ম যে বিরাটাকায় দানবের, সে একদিন নিজেই তার জনককে অস্বীকার করেছে। ঠিক আজ যেমন গুগল্ আমাদের খেয়ে ফেলছে, নষ্ট হয়েছে যা কিছু ব্যক্তিগত আমাদের, যা কিছু নেই তাকে হ্যাঁ করবার কী বিপুল চাহিদার গুহায় আমরা বন্দি! কিন্তু প্রায় ২০০ বছর পরে বুঝি এই উপন্যাসটির পাতা উল্টে দেখা দরকার। ১৯৬০ এর আগে বইটি সম্পর্কে কেউ কোনো মন্তব্য করলেন না, চক্রান্ত করে একে টুঁটি টিপে মারা হল। অর্থাৎ তিনি যে শেলীর পত্নী, লেখিকা। ‘রণোন্মাদিনী’-র মতো এরও কপালে ছিল পুরুষ নিয়ন্ত্রিত ভাগ্যবিভ্রাট। মৃত লম্পট স্বামীর বইয়ের তদারকি ব্যতিরেকে এঁর আর কোনো জীবনের উদ্দেশ্য নেই। Apocalyptic fiction যা আজও খুব প্রাসঙ্গিক এক নতুন রিয়ালিটির আবিষ্কার, এর জন্ম সেই ১৮ বছরের মেয়ের বীর্যে, যাকে পিতৃতন্ত্রের ও স্বামীতন্ত্রের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল সারা জীবন। পিতা উইলিয়াম গডউইনের বেঁচে থাকার খরচ, সৎ বোনের সঙ্গে স্বামীর ব্যভিচার, তাদের সন্তান - এরা সকলে প্রতিপালিত হয়েছে মেরির যত্নে ধৈর্যে মমতায়। আর ঔপন্যাসিক মেরি শেলিকে সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছি শেলীর রোম্যান্টিক আত্মরতিময় খ্যাতির দামামায়।
অজানা তথ্য, আর গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ। আরও লেখা হোক, এই বিষয়ে। অপেক্ষায়।
অজানা তথ্য, আর গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ। আরও লেখা হোক, এই বিষয়ে। অপেক্ষায়।