এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • স্বাস্থ্য, অধিকার (প্রথম কিস্তি)

    ডা. পুণ্যব্রত গুণ লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২০ অক্টোবর ২০১২ | ১৪৮৩ বার পঠিত
  • আজ থেকে ২৯ বছর আগে ১৯৮৩-তে পশ্চিম বাংলার জুনিয়র ডাক্তাররা স্লোগান তুলেছিল—‘স্বাস্থ্য কোন ভিক্ষা নয় স্বাস্থ্য আমাদের অধিকার’।
    আমাদের দেশে স্বাস্থ্যের অধিকার অধিকার হিসেবে স্বীকৃত নয়।
    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘স্বাস্থ্য কেবল অসুস্থতার অনুপস্থিতি নয়, স্বাস্থ্য মানে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ভাবে ভালো থাকা’।

    আমরা ভালো নেই

    • আমাদের দেশে ঋণ নেওয়ার দ্বিতীয় অন্যতম কারণ চিকিৎসার খরচ।
    • হাসপাতালে ভর্তির খরচ মেটাতে প্রতি বছর প্রায় এক কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যান।
    • হাসপাতালে যাঁরা ভর্তি হন, তাঁদের এক-তৃতীয়াংশকে ভর্তির খরচ মেটাতে হয় ধার করতে হয় নয়তো সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়।

    অথচ খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের মতই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা। জমির অধিকার, জলের অধিকার, কর্ম-সংস্থানের অধিকারের মত স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাপরিষেবার অধিকারও জীবনের বিষয়, কখনও কখনও বাঁচা-মরার প্রশ্ন।

    কিন্তু বাকী বিষয়গুলোর মত চিকিৎসাপরিষেবার অপ্রতুলতা সব সময় মানুষকে প্রভাবিত করে না। কারণ বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন খাদ্য-জল-বাসস্থান দরকার, চিকিৎসার দরকার হয় না সব সময়। কিন্তু চিকিৎসার অপ্রতুলতায় মানুষ যখন প্রভাবিত হন তখন তাঁর ক্ষোভ চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মী-চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ফেটে পড়ে, অনেক সময় অন্যায্য ভাবেও।

    আরও কিছু তথ্য মনে রাখার মত

    • চিকিৎসা পরিষেবায় বেসরকারীকরণ যে সব দেশে বেশী, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম আমাদের দেশ।
    • বেসরকারী চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রের ওপর সরকারী নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।
    • শহর ও গ্রামের মধ্যে পরিষেবায় বিপুল ফারাক।
    • চিকিৎসা পরিষেবা প্রধানত হাসপাতাল-কেন্দ্রিক, ডাক্তার-কেন্দ্রিক।
    • সরকারী চিকিৎসা পরিষেবার পরিমাণ ও গুণমান—দুই-ই অপর্যাপ্ত।

    দেশবাসীর দুর্দশা কমাতে মহানুভব ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ নিঃশুল্ক ডাক্তারখানা বা হাসপাতাল খুলেছেন, কোন রাজনৈতিক দল বা অ-রাজনৈতিক সংগঠন বন্যা-খরা-মহামারীর সময় চিকিৎসা ত্রাণ চালিয়েছেন—এমনটা দেখা গেলেও স্বাস্থ্যের দাবী নিয়ে আন্দোলনের ইতিহাস বেশী দিনের নয়, বছর ৩০-৩৫ এ ধরনের আন্দোলনের বয়স।

     

    বামপন্থী দলগুলোও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলোকে আন্দোলনের বিষয় হিসেবে নিয়েছেন এমনটা নয়—অথচ বহু ডাক্তার বামপন্থী দলগুলোর সদস্য বা সমর্থক হিসেবে ছিলেন বা আছেন। তাঁদের কাছ থেকে উচ্চ হারে লেভি নেওয়া, তাঁদের দিয়ে সংগঠনের সদস্য-সমর্থকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো, কখনও সখনও তাঁদের দিয়ে আন্দোলনের সময় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চিকিৎসা শিবির চালানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে দলগুলো। তাঁদের স্বাস্থ্য আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে ব্যবহার করা হয় নি বললেই চলে।

    স্বাস্থ্য ভিক্ষা নয়, অধিকার—সেই অধিকার অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে হবে—এই ধারণা থেকে আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে ৭০ দশকের মাঝামাঝি, ৮০-র দশকের শুরু থেকে। ভারতের নানা কোণে চলা এই সব আন্দোলনগুলো নিয়ে এই আলোচনা—উদ্দেশ্য আন্দোলনগুলোর ইতিবাচক-নেতিবাচক দিকগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে এগিয়ে চলা।

    জনস্বাস্থ্য আন্দোলন মানুষের স্বাস্থ্যের অবস্থার উন্নয়নকল্পে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর পক্ষে, কিন্তু জনস্বাস্থ্য আন্দোলন সাধারণ ভাবে মনে করে—

    • কেবল প্রযুক্তি দিয়ে সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায় না।
    • বিশেষজ্ঞ (এই ক্ষেত্রে চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী বা স্বাস্থ্যকর্মী) জনগণের হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।
    • জনগণ চিকিৎসা-প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার্য বস্তু নন, বরং জনগণেরই চিকিৎসা-পরিষেবার নির্ণায়ক শক্তি হওয়ার কথা।

    ভারতে এ যাবৎ চলে আসা স্বাস্থ্য আন্দোলনগুলোকে যদি আমরা পর্যালোচনা করি, তাহলে কয়েকটা সুস্পষ্ট ধারা দেখা যায়— 

    • গণবিজ্ঞান আন্দোলনের স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রয়াস
    • ওষুধনীতি নিয়ে প্রচার
    • নারীবাদী আন্দোলনের স্বাস্থ্য প্রচার
    • ভূপালের গ্যাসপীড়িতদের আন্দোলন
    • ডাক্তারদের সংগঠন
    • মেডিকেল ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন
    • পেশাগত রোগ নিয়ে প্রচার ও আক্রান্তদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে আন্দোলন
    • জনস্বাস্থ্য অভিযান
    • পত্র-পত্রিকা
    • গণসংগঠনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য আন্দোলন।

    একেক করে এগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।


    গণবিজ্ঞান আন্দোলনের স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রয়াস


    গণবিজ্ঞানের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সচেতনতার উল্লেখযোগ্য কাজ যে সংগঠনগুলো করেছে, তাদের মধ্যে আছে—
     

    • কেরালার কেরালা শাস্ত্র সাহিত্য পরিষদ, মূলত সিপিআইএম-প্রভাবিত।
    • মহারাষ্ট্রের লোক বিদ্যান সংঘঠনা, শ্রমিক মুক্তি দল-প্রভাবিত।
    • পশ্চিমবাংলায় তৃতীয় ধারার শক্তি পরিচালিত বিভিন্ন বিজ্ঞান সংগঠন, অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশিত পত্রিকার নামে যাদের পরিচয়—উৎস মানুষ, বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী, ইত্যাদি।

    আশির দশক ছিল এই সংগঠনগুলোর কাজের গৌরবোজ্জ্বল সময়। সে সময়ে এই সংগঠনগুলো মিলে গড়ে তোলে গণবিজ্ঞান সমন্বয় কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ। পরবর্তী কালে সিপিআইএম-প্রভাবিত সরকারী মদতপুষ্ট পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ-এর সামনে এগুলো ক্ষীণবল হয়ে পড়ে।

    ওষুধনীতি নিয়ে প্রচার

    ১৯৭৫-এ জয়শুকলাল হাথীর নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি প্রকাশিত রিপোর্টে বলে ১১৭টা মাত্র ওষুধ ভারতের জন্য অত্যাবশ্যক। কমিটি এই ওষুধগুলোর উৎপাদন নিশ্চিত করার সুপারিশ করে, ওষুধের ব্রান্ড নাম বা বাজারী নামের বদলে জেনেরিক নাম বা বৈজ্ঞানিক নাম ব্যবহারের সুপারিশ করে। যাতে জীবনদায়ী ও অত্যাবশ্যক ওষুধগুলো মানুষের আয়ত্বের মধ্যে থাকে তাই মূল্য-নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করা হয়। হাতি কমিটি চেয়েছিল পাব্লিক সেক্টর যেন ওষুধ উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা নেয়। দেশীয় ওষুধ-কোম্পানীগুলোর বিকাশের জন্য কিছু ওষুধ-উৎপাদন কেবল দেশীয় কোম্পানীগুলোর জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা বলা হয়। ওষুধ-শিল্পে বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর ভূমিকার নিন্দা করে কমিটি, ওষুধ-কোম্পানীগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগের মাত্রা তৎক্ষণাৎ কমিয়ে ৪০% করা এবং তারপর কমিয়ে ২৬% করার কথা বলা হয়, এমনকি বিদেশী ওষুধ-কোম্পানীগুলোর জাতীয়করণের পক্ষে ছিল হাতি কমিটি।

    আশির দশকের শুরুতে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সামরিক স্বৈর সরকার এক জনমুখী পদক্ষেপ নেয়, বাংলাদেশের বাজার থেকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর সব ওষুধ নিষিদ্ধ করে। প্রায় একই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অত্যাবশ্যক ওষুধের প্রথম তালিকা প্রকাশ করে, সে তালিকায় ওষুধ ছিল শ’দুয়েক। এই ওষুধগুলো দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের প্রায় সমস্ত রোগ চিকিৎসা সম্ভব। অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকা ছিল ১৯৭৭-এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ঘোষিত ‘২০০০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অথচ ভারতের বাজারে তখন হাজার ষাটেক ওষুধের ফরমুলেশন।

    জনমুখী জাতীয় ওষুধনীতির দাবীতে গড়ে ওঠে অল ইন্ডিয়া ড্রাগ একশন নেটওয়ার্ক (AIDAN)। নানা রাজ্যে AIDAN-এর শাখা সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ড্রাগ একশন ফোরাম, পশ্চিমবঙ্গ (DAF-WB)। ড্রাগ একশন ফোরাম স্লোগান তোলে ‘মানুষের জন্য ওষুধ না ওষুধের জন্য মানুষ’। একই নামে ফোরামের এক পুস্তিকা প্রচুর জনপ্রিয় হয়। পুস্তিকাটার হিন্দী অনুবাদও করা হয়, পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহারে প্রচারের জন্য। ডাক্তারদের ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহারে শিক্ষিত করতে এক দ্বিমাসিক জার্নাল বার করা হতে থাকে—ড্রাগ ডিজিজ ডক্টর (DDD)। ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি অবশ্য DAF দুর্বল হয়ে পড়ে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ব্যক্তিত্বের সংঘাতে।

    ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টেরন-এর উচ্চমাত্রায় মিশ্রণের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করে AIDAN। AIDAN-এর জনস্বার্থ মামলার চাপে সরকার ৭০টারও বেশী ক্ষতিকর ওষুধ নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়।

    যুক্তিসঙ্গত জেনেরিক ওষুধ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কিছু উদ্যোগও শুরু হয়েছিল এই আন্দোলনের পাশাপাশি। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বরোদার LOCOST এবং কলকাতার কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট মেডিসিনাল ইউনিট (CDMU)। LOCOST নিজস্ব কারখানায় জেনেরিক নামের কিছু অত্যাবশ্যক ওষুধ তৈরী করে। CDMU ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে দর কষাকষি করে ওষুধ কিনে কম দামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে সরবরাহ করে।

    AIDAN-এর প্রধান দুর্বলতা হল গণ আন্দোলনের সঙ্গে ওষুধনীতির আন্দোলনকে যুক্ত করার চেষ্টা না করে আদালতে মামলা আর সরকারী দপ্তরে আবেদন-নিবেদনে নিজেকে সীমিত রাখা।

     

    নারীবাদী আন্দোলনের স্বাস্থ্য প্রচার

    হায়দরাবাদের স্ত্রীশক্তি সংগঠন, দিল্লীর সহেলীর মত নারীবাদী সংগঠনগুলো Depo-provera, NET-EN, Nor-plant—এর মত ক্ষতিকর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো বিরুদ্ধে জোরদার প্রচার চালিয়ে সরকারকে জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচীতে এগুলো অন্তর্ভুক্ত করায় সফল ভাবে বাধা দেয়। মহিলাদের জননস্বাস্থ্যের বিষয়গুলোকে ধোয়াশামুক্ত করার প্রয়াস, স্ত্রীভ্রূণ-হত্যার বিরুদ্ধে প্রচার এদের উল্লেখযোগ্য অন্য কাজ।

    এই সংগঠনগুলোর মূল দুর্বলতা হল—এরা ফান্ডিং এজেন্সির ফান্ড নিয়ে কাজ করে এবং এদের কাজ ছোট-ছোট এলাকায় সীমিত।

    ভূপালের গ্যাসপীড়িতদের আন্দোলন
     
    ভারতের স্বাস্থ্য আন্দোলনের ইতিহাসে আলাদাভাবে উল্লেখ্যের দাবী রাখে ভুপালের গ্যাসপীড়িতদের আন্দোলন। ২-৩ ডিসেম্বর, ১৯৮৪-তে ইউনিয়ন কার্বাইডের গ্যাসকান্ডের পর গ্যাসপীড়িতরা যে আন্দোলন শুরু করেন তাতে ছিল তথ্যের অধিকারের দাবী—বিষগ্যাসে কি কি উপাদান ছিল, মানব ও মানবেতর প্রাণীর শরীরে তাদের কিইবা প্রভাব, বিষের প্রতিষধকই বা কী সে সম্বন্ধে গ্যাসপীড়িতরা জানতে চান। আর ছিল যথাযথ চিকিৎসা, বিষের উচিত প্রতিষেধকের দাবী। গ্যাসপীড়িতদের যে সংগঠন এই আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল তা হল জাহরিলী গ্যাস কান্ড সংঘর্ষ মোর্চা (ZGKSM)। এই সংগঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে মধ্যপ্রদেশে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন কর্মী ও এসইউসিআই-এর কিছু সংগঠক। এছাড়া ছিল সিপিআই-প্রভাবিত নাগরিক রাহত আউর পুনর্বাস কমিটি (NRPC)। স্বাস্থ্য নিয়ে সমীক্ষার কাজ করে চিকিৎসকদের সংগঠন মেডিকো ফ্রেন্ডস সার্কেল (MFC)।

    ১৯৮৫-র ৩রা জুন গ্যাসপীড়িতরা ইউনিয়ন কার্বাইড প্রাঙ্গণকে মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করে সেখানে এক ক্লিনিকের কাজ শুরু করেন। ZGKSM ও NRPC ছাড়া বম্বের ট্রেড ইউনিয়ন রিলিফ ফান্ড (TURF) ও ইউনিয়ন কার্বাইড কর্মচারী সংঘ (UCKS) যৌথভাবে জনস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামে এই ক্লিনিক চালাত।

    এই ক্লিনিকে ডাক্তার হিসেবে কাজ করতেন মূলত পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা DAF-WB ও মেডিকাল কলেজ ডেমোক্রাটিক স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন (MCDSA)-এর সঙ্গে যুক্ত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা গ্যাসপীড়িতদের বিষের প্রতিষেধক সোডিয়াম থায়োসালফেট ইঞ্জেকশন লাগাতেন এবং রোগীদের উপসর্গের পরিবর্তন নথিভুক্ত করতেন। ইউনিয়ন কার্বাইডের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ যোগাড় হচ্ছিল, তাতে সন্ত্রস্ত হয়ে ইউনিয়ন কার্বাইডের দোসর সরকার আক্রমণ নামিয়ে আনে সপ্তাহ তিনেকের মাথায়। ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রেপ্তার হন, স্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। আবার মাস দেড়েক বাদে DAF, MFC, মেডিকাল সার্ভিস সেন্টার, শহীদ হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা পর্যায় ক্রমে জনস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালান কয়েক মাস। এর মাঝে ZGKSM-NRPC-র বিরোধে জনস্বাস্থ্য কেন্দ্র ভেঙ্গে তৈরী করতে হয় জনস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ভূপাল।

    এরপর ZGKSM এস ইউ সি আই-এর কুক্ষিগত হয়, স্বেচ্ছাসেবীদের মোর্চায় একঘরে করে দেওয়া হয়। শেষে ZGKSM ইউনিয়ন কার্বাইডের সঙ্গে ভারত সরকারের অন্যায় চুক্তি সমর্থন করে গ্যাস-পীড়িতদের আস্থা হারায়। গ্যাস-পীড়িতদের নেতৃত্ব দিতে এবার এগিয়ে আসে গ্যাসপীড়িত মহিলা উদ্যোগ সংগঠন। ZGKSM-এর সহযোগী বুদ্ধিজীবীদের একাংশ গঠন করেন ভূপাল গ্রুপ ফর ইনফরমেশন এন্ড একশন। পরে গঠিত হয় সম্ভাবনা ট্রাস্ট।

    সম্ভাবনা ট্রাস্ট এলোপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, যোগের সমন্বয়ে গ্যাস-পীড়িতদের চিকিৎসা ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত গবেষণার কাজ চালাচ্ছে—তার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আমাদের অজানা। এছাড়া সম্ভাবনা ট্রাস্ট কোন ফান্ডিং এজেন্সির অর্থগ্রহণ না করলেও, প্রায় পূর্ণত দান (অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশী বন্ধুদের দান)-এর ওপর নির্ভরশীল, এটাও এর দুর্বলতার দিক।

    ডাক্তারদের সংগঠন—মেডিকো ফ্রেন্ডস সার্কেল

    সত্তর দশকের প্রথমার্ধে জয়প্রকাশের আদর্শে অনুপ্রাণিত কিছু ডাক্তার এই সমন্বয় গড়ে তোলেন। বছরে দুবার অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক সভায় এরা স্বাস্থ্যনীতি-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। MFC Bulletin নামে এক বুলেটিনের মাধ্যমে মতামত আদান-প্রদান করেন।

    এঁদের উল্লেখযোগ্য কিছু প্রকাশনা—
     

    1. Health Care: Which Way to Go?
    2. In Search of Diagnosis
    3. Under the Lense
    4. Medical Education Re-examined

    MFC-র উদ্যোগে ভূপালের গ্যাসপীড়িতদের স্বাস্থ্য-সমীক্ষা হয় ১৯৮৬ এবং ১৯৮৯-এ।
    গুজরাটের দাঙ্গা-পরবর্তী ত্রাণ-শিবিরগুলোতে এঁদের উদ্যোগে চিকিৎসা-ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়।
    MFC-র দুর্বলতার দিক হল প্রথম অবস্থায় এর সদস্যরা প্রায় সবাই গণ-সংগঠন গণ-আন্দোলনের কর্মী হলেও এখন তাঁরা প্রায় সবাই ফান্ডেড এন জি ও-র কর্মী বা কর্মকর্তা।

    মেডিকেল ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন

    এই পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গের মেডিকেল ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তারদের কথা বলব। (এই বিষয়ে বিস্তারে বলব পরে কোনও এক লেখায়।
     

    • ১৯৭৩-হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও ভাতা-বৃদ্ধির দাবীতে মেডিকেল ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করেন।
    • ১৯৭৪—MFC-র বার্ষিক সভায় বাংলার মেডিকেল ছাত্ররা অংশ নেন।
    • ১৯৭৪—সরকারী ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারদের ৪১ দিন-ব্যাপী ধর্মঘট হয় নীতি-নির্ধারণে আমলাদের বদলে প্রযুক্তিবিদদের গুরুত্ব দেওয়ার দাবীতে।
    • ১৯৭৫—বাঁকুড়ায় খরা-ত্রাণে মেডিকেল ছাত্ররা।
    • ইমার্জেন্সির কালো দিনগুলোতে নিজেদের সংঘবদ্ধ রাখা ও মেহনতী মানুষের পাশে থাকার জন্য মেডিকেল কলেজ সোশ্যাল সার্ভিস এসোসিয়েশন গঠন করা হয়, শিবপুরের চওড়া বস্তিতে সাপ্তাহিক শিবির চলে বেশ কয়েক বছর।
    • ১৯৭৮—অন্ধ্রের সাইক্লোন-পীড়িত, মরিচঝাঁপির উদবাস্তুদের পাশে মেডিকেল ছাত্ররা।
    • ১৯৮০—মেডিকেল কলেজ ও আর জি করে হাসপাতাল আন্দোলন চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবীতে।
    • ১৯৮৩ ও ১৯৮৬-তে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন অল বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফেডারেশন (ABJDF)-এর নেতৃত্বে, এই আন্দোলনের প্রধান দাবীগুলো ছিল—
      1. ২৪ ঘন্টা এক্স-রে, ইসিজি,বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথোলজি, ব্লাড ব্যাংক
      2. বেড সংখ্যাবৃদ্ধি
      3. কর্মীসংখ্যা বৃদ্ধি
      4. টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
      5. জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশিক্ষণান্তে কর্মসংস্থান
      6. ভাতা বৃদ্ধি


    এই আন্দোলনকে ভাঙ্গতে ABJDF ভেঙ্গে শাসক দলে পেটোয়া জুনিয়র ডক্টরস’ কাউন্সিল গড়ে তোলা হয়, JDC-র সদস্যদের মেডিকেল কলেজগুলোতে বসিয়ে দেওয়া হয় আন্দোলন ভাঙ্গার দায়িত্ব দিয়ে। সরকারী ডাক্তারদের একমাত্র সংগঠন হেলথ সার্ভিস এসোসিয়েশন (HSA) ABJDF আন্দোলনকে সমর্থন করায় ট্রান্সফার-প্রোমোশনের লাঠি ও গাজর দেখিয়ে তৈরী করা হয় এসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস (AHSD)।
    তাহলেও এ আন্দোলন ব্যর্থ হয় নি, সাময়িক ভাবে হলেও সরকার সরকারী হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ বাড়াতে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা বাড়াতে বাধ্য হয়।
    এছাড়া আরেকটা দিকও উল্লেখ করার মত—শহীদ হাসপাতাল, বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের মত জনস্বাস্থ্য কর্মসূচীগুলোর সংগঠকের ভূমিকা যাঁরা পালন করছেন, তাঁরা প্রায় সবাই-ই ABJDF আন্দোলনের ফসল।
    এই আন্দোলনই স্লোগান তুলেছিল—স্বাস্থ্য কোনও ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য আমাদের অধিকার।


    পেশাগত রোগ নিয়ে প্রচার ও আক্রান্তদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে আন্দোলন ও প্রচার আন্দোলন

    • Occupational Health and Saftey Centre
    • PRIA, নয়াদিল্লী
    • খেড়ুত মজদুর সংঘ, মধ্যপ্রদেশ
    • People’s Training & Research Centre, গুজরাট
    • OSHAJ, ঝাড়খন্ড
    • PRASAR, দিল্লী
    • টপ কোয়ার্ক (বিজন ষড়ঙ্গী), ঝাড়গ্রাম,পশ্চিমবঙ্গ
    • নাগরিক মঞ্চ, কলকাতা

    এই সংগঠনগুলো পত্র-পত্রিকা বার করে জনসচেতনতা তৈরী করা, আদালতে মামলা করে ক্ষতিপূরণ আদায় করার মত কাজ করে।


    জনস্বাস্থ্য অভিযান

    ১৯৭৭-এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘২০০০ সালের মধ্যে সকলের জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল। ২০০০-র সালের দোরগোড়ায় পৌঁছে যখন দেখা গেল সকলের জন্য স্বাস্থ্য তো দূরের কথা বরং সরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবা দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে, চিকিৎসা ব্যবসায় বেসরকারী পুঁজির রমরমা বাড়ছে তখন ২০০০ সালে স্থাপিত হল জনস্বাস্থ্য অভিযান। এতে MFC-র সদস্য বেশ কিছুজন সংগঠক হিসেবে থাকলেও মূল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ছিল সিপিআইএম তার নানা গণ-সংগঠনের আড়ালে। (যেজন্য পশ্চিমবঙ্গে বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য আন্দোলনে কর্মরত অনেক সংগঠনের কোনটাই জনস্বাস্থ্য অভিযানে স্থান না পেয়ে কেবল স্থান পায় সরকারী গণ-বিজ্ঞান সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।)

    ২০০০-এর ডিসেম্বরে যুবভারতীতে ২ দিনের পিপলস হেলথ এসেম্বলীতে সারা ভারতের প্রতিনিধিরা আলাপ-আলোচনা করেন। তারপর ঢাকায়।

    পরবর্তী কালে সরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারী ব্যবস্থার ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে জনশুনানীর আয়োজন করে।

    জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন (NRHM)-এর ওপর নজরদারীকেও এরা কাজ হিসেবে নিয়েছে। 

    NRHM-এর অন্তর্গত গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণের এক পাইলট প্রোজেক্ট ছত্তিশগড়ে চালান জনস্বাস্থ্য অভিযানের অন্যতম সংগঠক ডা বিনায়ক সেন। সেই স্বাস্থ্যকর্মীরা মিতানিন নামে পরিচিত।

    জনস্বাস্থ্য অভিযানের অন্যান্য ঘটকরা অনেকে NRHM-এর গ্রামীণ মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ASHA (Accreditated Social Health Activist) ট্রেনিং-এর কাজে লিপ্ত আছেন।

    জনস্বাস্থ্য অভিযান ব্যবস্থা পরিবর্তনের ঘোষিত লক্ষ্যে ব্যবস্থার সঙ্গে লিপ্ত হওয়ার যে পন্থা নিয়েছে তাতে ব্যবস্থার জনমুখী পরিবর্তন হবে, না ব্যবস্থা জনস্বাস্থ্য অভিযানকে গিলে খাবে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

    (চলবে)


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২০ অক্টোবর ২০১২ | ১৪৮৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • i | ***:*** | ২১ অক্টোবর ২০১২ ০২:১০90637
  • ২০১০ নাগাদ বন্ধুর সৌজন্যে নবদ্বীপের পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের একটি পত্রিকার পিডিএফ সংস্করণ পড়ি। ভূপাল ট্রাজেডি নিয়ে লেখাগুলি। সেখানে পড়েছিলাম একজন সদ্য পাশ করা ডাক্তারের অভিজ্ঞতা-'দশ দিনের শিক্ষানবিশি' শিরোনামে। অনেক কিছুই জানা ছিল না। আজ সে কথাই আবারও মনে হচ্ছে।
    লেখক ও সম্পাদকদের ধন্যবাদ এ লেখাটির জন্য।
  • ranjan roy | ***:*** | ২১ অক্টোবর ২০১২ ০৬:১৫90638
  • খুব মন দিয়ে পড়ছি। কিছুই জানা ছিল না। লেখক ও সম্পাদকমন্ডলীকে ধন্যাবাদ।
  • sosen | ***:*** | ২২ অক্টোবর ২০১২ ০৪:১৭90639
  • চলুক। স্বাস্থ্য যে অধিকার এ নিয়ে আরো সচেতনতা গড়ে ওঠার প্রয়োজন।
  • সহিদুল ইসলাম | ***:*** | ১২ নভেম্বর ২০১৬ ১২:২৪90641
  • আমার বাংলার গণমানুসের স্রাস্থ্য সেবা নিয়,মানুসিক স্বাস্থ্যনিয়",পারিবারিক স্বাস্থ্য নিয়ে,সামাজিক স্বাস্থ্য নিয়ে, দেশ ও জাতির স্বাস্থ্য নিয়ে, আমাদের ও গণ মানুসের স্বাস্থ্য নিয়ে,ঐক্যবদ্ধ স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের পথে এগিয়ে যাওয়া দরকার।
  • সহিদুল ইসলাম | ***:*** | ১২ নভেম্বর ২০১৬ ১২:২৪90640
  • আমার বাংলার গণমানুসের স্রাস্থ্য সেবা নিয়,মানুসিক স্বাস্থ্যনিয়",পারিবারিক স্বাস্থ্য নিয়ে,সামাজিক স্বাস্থ্য নিয়ে, দেশ ও জাতির স্বাস্থ্য নিয়ে, আমাদের ও গণ মানুসের স্বাস্থ্য নিয়ে,ঐক্যবদ্ধ স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের পথে এগিয়ে যাওয়া দরকার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন