এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ভারতের নোট এবং ভেতরের গোপন কাহিনী

    দেব আচার্য ( মুল রচনাঃ অনিরুধ শেঠি) লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৭ নভেম্বর ২০১৬ | ৭২৭৬ বার পঠিত
  • ৫০০-১০০০ এর নোট বাতিল কেন ? মোদীর এবং সরকারী যুক্তি - ফেক ভারতীয় কারেন্সির  মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী,ড্রাগ এবং আর্মস স্মাগলারদের মত সরকারবিরোধী কার্যকলাপের অর্থের স্রোত বন্ধ করে দেওয়া । ৭০ বছর ধরে চলে আসা কালো অর্থ ব্যবস্থার মাজা ভেঙ্গে দেওয়া ইত্যাদি । কিন্তু যদি ধরুন আমাদের নূতন নোট ছাপবার দ্বায়িত্ব সরকার এমন এক কোম্পানির ওপর ন্যস্ত করে যাঁদের ভারত সরকার ইতিমধ্যে পাকিস্তানে নকল  ভারতীয় টাকা  ছাপানোর কাজে সহায়তা করবার অপরাধে ব্ল্যাক লিস্টেড করে রেখেছে ? চমকে উঠবেন না ! পড়তে থাকুন, আপনার -আমার বিপদের কথা । 

    ঘটনার সূত্রপাত …… 

    ২০০৯ -২০১০ সালে সি.বি.আই গোপন খবরের ভিত্তিতে ভারত নেপাল সীমান্তে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রায় ৭০ টি ব্র্যাঞ্চে আচমকা হানা দিয়ে বিপুল পরিমান ফেক ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধার করে এবং এক সংগঠিত র‍্যাকেটের অস্ত্বিত্ব প্রমাণ করে ।পাকিস্তান নেপাল ভারত খোলা বর্ডারের সুবিধা নিয়ে ফেক কারেন্সি ভারতে ঢোকাতো এই খবর থাকলেও  সি বি আই কে এই সমস্ত ব্রাঞ্চের অফিসাররা জানান যে সমস্ত ফেক ভারতীয় টাকা তাঁরা রিজার্ভ ব্যাংক থেকেই পেয়েছেন । খবরের সত্যতা বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সি.বি.আই রিজার্ভ ব্যাংকের ভল্ট রেড করে । অভুতপুর্ব ভাবে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের ভল্টে বিপুল পরিমান জালি ৫০০-১০০০ এর ভারতীয় টাকা  পাওয়া যায় ।  ঠিক একই ধরনের জালি টাকা  পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনী আইএস আই বিভিন্ন রুটে ক্রমাগত ভারতের বাজারে প্রবেশ করিয়ে চলছিল । এখন প্রশ্ন হোল বিপুল পরিমান ফেক ৫০০-১০০০ এর ভারতীয় টাকা রিজার্ভ ব্যাংকের ভল্টে এলো কি করে ? 

    ২০১০ সালের শেষের দিকে কমিটি অফ পাবলিক আন্ডারটেকিং ( COPU) ভারতের অন্যতম সংসদীয় কমিটি স্তম্ভিত হয়ে আবিষ্কার করে যে দেশের অর্থনৈতিক সার্বভৌমতা’র সঙ্গে চূড়ান্ত অবহেলা করে ভারতের সরকার ১ লাখ কোটি টাকার ৫০০-১০০০ টাকার নোট জার্মানি ,আমেরিকা এবং ব্রিটেনের তিনটে কোম্পানিকে আউটসোর্স করে ছাপিয়ে আনছে । যে তিনটে কোম্পানিকে এই টাকা ছাপার অধিকার দেওয়া হয়েছিল তাঁরা যথাক্রমে American Bank Note Company (USA ),Thomas De La Rue (UK) এবং Giesecke and Devrient Consortium (Germany ) । তাঁদের রিপোর্টে  COPU লেখে “India’s currency being printed in three different countries is alarming and during that particular fateful period our entire economic sovereignty was at stake.” The value of the currency notes given for printing was in “all amounting to a sum of Rs 1,00,000 crore.” It was further revealed that

    “2,000 million pieces of 100 rupee denomination and 1,600 million pieces of 500 rupee denomination of notes were outsourced for printing at American Banknote Company(USA) – 635 million pieces, Thomas De La Rue-UK – 1,365 million pieces (100 rupee denomination) and Giesecke and Devrient Consortium (Germany) – 1,600 million pieces (500 rupee denomination).” রিজার্ভ ব্যাংকের ভল্টে বিপুল পরিমান ফেক কারেন্সি ,সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট এবং এই মারাত্মক স্ক্যান্ডালের অবশেষে সত্য কি জানবার উদ্দেশ্যে রিজার্ভ ব্যাংক তাঁদের সিনিয়র অফিসার কে De La Rue’র ইউ.কে’র হ্যাম্পশায়ারের ছাপাখানায় পাঠায় । এখন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সিকিউরিটি পেপার ,নোট ছাপার কাগজের ৯৫% সাপ্লাই করত এই  De La Rue কোম্পানি । De La Rue কোম্পানি’র লাভের এক তৃতীয়াংশ আসত আমাদের দেশের রিজার্ভ ব্যাংক কে নোট ছাপার কাগজ বেচে আর কিছুটা নোট ছেপে । গড়বড় ধরা পড়ে ,প্রমাণ পাওয়া যায় যে হ্যাঁ একই কাগজ পাকিস্তান ফেক ভারতীয় কারেন্সি ছাপাতেও ব্যবহার করছে । De La Rue কোম্পানিকে  তাঁদের বিভিন্ন গুদামে ২০০০ টনের অধিক হাই সিকিউরিটি নোটের কাগজ মজুত থাকা অবস্থায় ভারত সরকার ব্ল্যাক লিস্টেড  করে । De La Rue কোম্পানি’র সিইও James Hussey ( God son of the Queen of England ) রহস্যজনক ভাবে পদত্যাগ করেন । কোম্পানির শেয়ার তলানিতে এসে ঠেকে এবং অন্যতম প্রধান কাস্টমার (RBI) কে হারিয়ে কোম্পানি প্রায় দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছায় । এই সময়ে De La Rue এর প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসী কোম্পানি 'Oberthur’  সমস্ত দেনা সমেত De La Rue কে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব ,বিড ইত্যাদি দিলেও De La Rue বিভিন্ন উপায়ে নিজেদের মালিকানা কোনরকমে টিকিয়ে রাখে । 

    ইত্যবসরে ভারতীয় অর্থমন্ত্রকের কোন সিনিয়র অফিসার নিজের নাম গোপন করে ,বিভিন্ন তথ্য সমেত বাকি কোম্পানি গুলির বিরুদ্ধে একই ধরনের কাজের অপরাধের প্রমাণ দিয়ে সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনের কাছে অভিযোগ পাঠান । এই কোম্পানিগুলি কারা ? ফরাসী সংস্থা  Arjo Wiggins, আমেরিকান সংস্থা Crane AB এবং জার্মানির Louisenthal। ২০১৫ সালে আমাদের সরকার আবিষ্কার করে এর মধ্যে জার্মানির Louisenthal পাকিস্তানকেও ব্যাংক নোটের কাগজ সরবরাহ করে । এই সত্য আবিষ্কারের পরে ২০১৫ সাল থেকে ভারত সরকারকে ব্যাংক নোটের কাগজ সরবরাহকারী হিসাবে জার্মানির Louisenthal নাম বাদ গেছে । 

    কিন্তু এই টাকা ছাপার কোম্পানিগুলি কার ?  কে  ? কোথায় ? এবং কি ভাবেইবা তাঁরা আমাদের হাই ভ্যালু নোট ছাপবার দ্বায়িত্ব পাচ্ছেন -পেয়েছেন ? কিভাবে একটা প্রায় দেউলিয়া এবং ভারত সরকারের কালো তালিকায় থাকা কোম্পানি পুনরায় ভারতের নোট ছাপার বাজারে প্রবেশ করছে ? নূতন ২০০০- ৫০০ টাকার নোট ছাপা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং কেন ভারতের আপমর জনতা এই বিপদজনক ভয়ানক তথ্য বিষয়ে সম্পুর্ন অন্ধকারে ?   

      

    টাকার কারিগরদের গোপন দুনিয়া 

    মূলত সারা পৃথিবীর হাই সিকিউরিটি কারেন্সি প্রিন্টিং এবং টাকা ছাপানোর নিত্য নূতন টেকনোলোজির ব্যবসা কতিপয় পশ্চিম ইউরোপিয়ান কোম্পানির কুক্ষিগত । এই মুষ্টিমেয় কতিপয় অতি উচ্চ যোগাযোগ সম্পন্ন ব্যবসায়ী এবং তাঁদের মোডাস অপারেন্ডি বিষয়ে Klaus Bender এর একটি বই আছে Money Makers-The Secret World of Banknote Printing।  এই বই থেকে মোটামুটি এই ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ে অনেক কিছু জানা গেলেও মূল সূত্র গোপনীয়তার নেটওয়ার্ক বিষয়ে লেখক সুচতুর ভাবে হয়ত ইচ্ছাকৃত প্রায় কিছুই বলেননি । ১৯৮৩ সালে আমেরিকান লেখক Terry Bloom এই বিষয়ে গবেষণা করে একটি বই লেখেন  “The Brotherhood of Money – The Secret World of Banknote Printers”. আশ্চর্যের কথা এই বইএর সমস্ত কপি  সিধা প্রকাশকের ঘর থেকে ,ছাপাখানা থেকে নোট ছাপানোর কোম্পানির প্রতিনিধিরা কিনে নেয় যাতে বাইরের দুনিয়া তাঁদের গোপনীয়তার নেটওয়ার্ক বিষয়ে বিন্দুবিসর্গ না জানতে পারে । অ্যামাজনে স্টক নেই,কিছু লাইব্রেরিতে পাওয়া যেতে পারে । 

    আমরা যদি কারেন্সি ব্যবসার কথা ধরি তো মোটামুটি তার চারটি মূল স্তম্ভ । যথাক্রমে - হাই সিকিউরিটি কাগজ , হাই সিকিউরিটি ছাপাখানা, বিশেষ ধরনের কালি  এবং অন্তিমে ডিজাইন থেকে পুর্ন নোট হিসাবে ছেপে বিভিন্ন দেশের সরকারকে সরবরাহ । এই চূড়ান্ত গোপনীয় এবং হাই ভ্যালুর ব্যবসা সারা পৃথিবীতে মাত্র ডজন খানেক কোম্পানির মৌরুসিপাট্টা । যেমন Arjo Wiggins, Giesecke & Devrient, Hologram.Industries, Hueck Folien, KBA-Giori S.A., Leonhard Kurz GmbH & Co. KG, Orell Füssli ইত্যাদি এঁদের মধ্যে প্রায় প্রত্যকেই পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে ব্যবসা করছে আর আমাদের রাষ্ট্রের কালো তালিকায় থাকা De la Rue  প্রায় দুশো বছরের পুরানো । 

    এখন এই কালো তালিকায় থাকা কোম্পানিটি কে ? De la Rue একদা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ক্রাউন এজেন্ট ছিল , এমনকি আজকের দিনেও এনারাই ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের ব্যাংক নোট ছাপেন । ক্রাউন এজেন্ট কারা ? যারা স্ট্যাম্প ,কোর্ট পেপার থেকে শুরু করে ব্যাংক নোট পর্যন্ত ছাপত । টেকনিক্যাল ,ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অর্থনৈতিক সার্ভিস সরবরাহ করত । বিভিন্ন কলোনির প্রাইভেট ব্যাংকার হিসাবে কাজ করত । সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ ,অস্ত্র সংগ্রহ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর মাইনে দেওয়ারও ব্যবস্থা করত -এক কথায় ক্রাউন এজেন্ট পুরো ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং তার সমস্ত কলোনির নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করত । পরবর্তিতে ১৮৩১ সালে “ Secretary of State for the Colonies” এর অধীনে ক্রাউন এজেন্টদের অফিস স্থাপিত হওয়া শুরু হয় । বিভিন্ন ক্রাউন এজেন্টদের ভূমিকা সংগবদ্ধ করে একটা সংগঠিত রূপ দেওয়া শুরু হয় ।  ভারতের চিরাচরিত অর্থব্যবস্থা ধ্বংস করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে আনা শুরু হয় । ভারতের মার্কেট শিল্পবিপ্লবের বিপুল পণ্যে ঢেকে যেতে শুরু করে -সেই নিয়ন্ত্রণের ক্রমাগত প্রয়াস এবং গ্রামীণ ভারতের ক্রমাগত প্রতিরোধে আজও অব্যাহত । 

    ১৮৪৯ সালে প্রথম কলোনি হিসাবে মরিশাসের স্থানীয় সরকারকে রুপি নোট বিতরণের অধিকার দেওয়া হয় ,কিন্তু ১৮৮৪ সাল পর্যন্ত বাকি ব্রিটিশ কলোনিগুলিকে রুপি নোট ছাপবার অধিকার দেওয়া হয়নি । কলোনি গুলি তাঁদের স্থানীয় রুপি নোট সরকার নির্দিষ্ট এজেন্টদের কাছ থেকে সংগ্রহ করত আর এজেন্ট’রা এই রুপি নোট পেত সাম্রাজ্যের ক্রাউন এজেন্ট De la Rue ‘র ছাপাখানা থেকে । ১৯২৮ সালে নাসিকে ভারত সরকার নোট ছাপার প্রথম কারখানা  স্থাপনা করেন ,নাসিক প্রেস চালু হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত ভারতের সমস্ত টাকা ছাপত এই “ Thomas De La Rue Giori” কোম্পানি । এমনকি ভারতের স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ভারতের সমস্ত টাকা ছাপার মেশিন এবং টেকনোলজি সরবরাহকারি কোম্পানি ছিল সেই De La Rue। এই কিছুকাল পুর্বেও ভারতের এবং পৃথিবীর ৯০% টাকা ছাপার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছিল এই Thomas De La Rue Giori কোম্পানির হাতে -মালিক সুইজারল্যান্ডের Giori পরিবার । কিন্তু বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে বিজেপি সরকার ( NDA ) ক্ষমতায় থাকবার সময় এমন একটা ঘটনা ঘটল যা পাল্টে দিল অনেক কিছু । 

    ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স Flight 814 হাইজ্যাক এবং …

    ১৯৯৯ সালের ২৪সে ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪ ভারতীয় বায়ুসীমায় প্রবেশ করবার সাথে সাথে কতিপয় অস্ত্রধারী বিমানের দখল নিল । বিভিন্ন বিমানবন্দরে ঘোরাঘুরির অবশেষে বিমান পৌছাল তালিবান নিয়ন্ত্রিত কান্দাহারে । হাইজ্যাক হওয়া এই বিমানে ছিলেন এক সুপার ভি আই পি । এই রহস্যজনক ব্যক্তি পৃথিবীর কারেন্সি প্রিন্টিং বিজনেস এর ৯০% এর নিয়ন্ত্রক Thomas De La Rue Giori কোম্পানির মালিক Roberto Giori । ভারতে ব্যাবসার কাজে আসা Roberto Giori  তার সঙ্গী Cristina Calabresi কে নিয়ে স্বল্পকালীন ছুটিতে কাঠমান্ড গিয়েছিলেন , ফেরার পথে প্লেন হাইজ্যাক ।  সুইজারল্যান্ড এবং ইতালির দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী  বছর পঞ্চাশেকের Roberto Giori সুইজারল্যান্ড এবং পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি । কারেন্সি প্রিন্টিং ব্যবসার রাজা এবং অভাবনীয় উচ্চ যোগাযোগের অধিকারি। ওনার মুক্তি এবং চুক্তির জন্য সুইজারল্যান্ড কান্দাহার বিমান বন্দরে এক স্পেশাল এনভয় পাঠায় । যে লোক পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশের টাকা ছাপে তার যোগাযোগের বহর আন্দাজ করতে পারছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন লবি ভারত সরকার কে যে কোন শর্তে Roberto Giori ‘র নিরাপত্তা এবং মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের সঙ্গে চুক্তি করবার জন্য চাপ দিতে থাকে । অপহরণের দু দিন পরে ২৬সে ডিসেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিদেশ মন্ত্রী Mr. Joseph Deiss আমাদের তৎকালীন বিদেশ মন্ত্রী যশবন্ত সিং এর সাথে দীর্ঘ টেলিফোন আলাপচারিতা করেন । সুইস সরকার Mr. Hans Stalder কে বিশেষ দূত হিসাবে কান্দাহারে পাঠায় ,তিনি প্রতিটি মুহূর্তের গ্রাউন্ড রিপোর্ট পাঠাতে থাকেন এবং বিশ্বের শক্তিশালী লবি কারেন্সি কিং Roberto Giori ‘র মুক্তির দাবীতে দিল্লীকে চাপ দিতে থাকেন । আমরা সকলেই জানি ঘটনার সাতদিন পরে  ভারত সরকার অপহরণকারীদের দাবী মেনে নিয়ে মৌলানা মাসুদ আজহার সমেত তিন সন্ত্রাসবাদীকে মুক্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান ঘটান কিন্তু যা জানিনা তা হল কত কোটি টাকা ভারত সরকার Roberto Giori ‘র মুক্তিপণ হিসাবে দিয়েছিলেন, অপহরণকারীদের দাবী ছিল ২০০ মিলিওন ডলার  । প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা ভালো এইচ কে আদবানী (এল কে আদবানী’র ভাই ) হায়দ্রাবাদ ট্যাঁকশালের আধুনিকীকরণের সময়ে De La Rue’র ভারতীয় এজেন্ট হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন আর কান্দাহার কাণ্ডের সময়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন ...........। ভারত সরকার যে মুক্তিপণ দিয়েছিলেন তা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এবং গোয়েন্দা বাহিনী পরবর্তিতে উল্লেখ করলেও সকলেই  নিজেদের স্বার্থে চেপে যায় । Roberto Giori  কোন সাধারণ ভি আই পি নন । তিনি এমন একটি কোম্পানির মালিক যার পরিবার বিগত এক শতাব্দী ধরে পৃথিবীর প্রায় ১৫০ দেশের টাকা ছেপে চলেছেন । যে কেন দেশের প্রধানমন্ত্রী তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের আওতায় এবং প্রায় প্রয়েক দেশেই তার কোম্পানির ইতিহাসের সাথে বিভিন্ন গভীর কালো গোপনীয় সম্পর্ক জড়িত । 

    আপনাদের মনে আছে মুয়াম্মার গদ্দাফিকে গদি থেকে বলপুর্বক হটানোর আগে তার কাছে সেনাবাহিনীকে মাইনে দেওয়ার মত ব্যাংক নোট ছিলোনা । লিবিয়ার ব্যাংক নোট ছাপানোর দ্বায়িত্ব ছিল এই “ Thomas De La Rue Giori” ‘র হাতে । ইচ্ছাকৃত ভাবে পশ্চিমের চক্রান্তে সেই নোট ডেলিভারি দিতে Roberto Giori দেরী করেন । সময়ে মাইনে না পাওয়ায় গদ্দাফির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নীচের তলায় আস্থার অভাব ঘটে বাকি আপনারা জানেন । সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙ্গে যাওয়ার পরে রাতারাতি যখন বিভিন্ন দেশ গজিয়ে ওঠে তাঁদের পাসপোর্ট এবং ব্যাংক নোট ছাপানোর লোভনীয় চুক্তি হাতাতে থাকে De La Rue। রাশিয়া কে না জানিয়ে এইরকমই এক গোপনীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয় চেচনিয়া এবং De La Rue এর মধ্যে । বিপুল গোপন লেনদেনের মাধ্যমে চেচনিয়ার পাসপোর্ট এবং ব্যাংক নোট ছাপানোর দ্বায়িত্ব নেয় এই De La Rue কোম্পানি । কিন্তু Roberto Giori কেজিবি কে এই গোপনীয় চুক্তির বিষয়ে খবর দেন । চেচনিয়ার পক্ষে চুক্তি ফাইনাল করতে পৌঁছান Ruslan এবং Nazerbeg Utsiev । দুজনেই কেজিবির পাঠানো আততায়ীর হাতে মারা যান । ডিলের মৃত্যু ঘটে কিন্তু ডিলের টাকার কি হোল সে প্রশ্ন করবার কেউ ছিলনা । 

    ২০১০ সাল পর্যন্ত বেশ ভালোই চলছিল । কিন্তু নেপাল ভারত সীমান্তের বিভিন্ন ব্যাংকে সিবিআই রেড । কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে রিজার্ভ ব্যাংকের ভল্টে ফেক কারেন্সি । পার্লামেন্ট কমিটির অনুসন্ধান । রিজার্ভ ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের অধিকারীদের De La Rue এর ইংল্যান্ডের নোট ছাপার কারখানা পরিদর্শন এবং বিরুদ্ধ তথ্য প্রমাণ এতোই জোরালো ছিল যে ভারত সরকার তার ৯৫ % টাকার হাই সিকিউরিটি কাগজ সরবরাহকারীকে কালো তালিকাভুক্ত করতে বাধ্য হয় । রিজার্ভ ব্যাংকের বিপুল অর্ডার হারিয়ে “ Thomas De La Rue Giori” প্রায় দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছায় । আর বর্তমানে এই প্রায় দেউলিয়া ,পাকিস্তান কে ভারতের কারেন্সি নোটের কাগজ সরবরাহের অভিযোগে কালো তালিকা ভুক্ত  De La Rue ভারতের নূতন ৫০০- ২০০০ টাকার নোট ছাপার অধিকারী । কিন্তু কেন ? কার  স্বার্থে ?

     Economic Times,এর বর্তমান এক  রিপোর্ট অনুযায়ী ঃ-

    [The notes]were largely printed at Mysuru under utmost secrecy while the paper note on which the printing was done came from Italy, Germany and London.

    The printing, according to officials, began in August-September and nearly 480 million notes of Rs 2,000 denomination and an equal number of Rs 500 denomination were printed. The printing facility at Bharatiya Reserve Bank Note Mudran Private Ltd. (BRBNMPL) in Mysuru under Reserve Bank of India was set up with the De La Rue Giori, now KBA Giori, Switzerland. । 

    আমরা যদি BRBNMPL এর ওয়েবসাইট দেখি তো দেখবো “ Both the presses have installed the latest "state of the art" Technology in bank note printing. The machinery at Mysore Site has been supplied by M/s. De La Rue Giori, now KBA Giori, Switzerland” এখন একটি প্রায় দেউলিয়া  কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানির মেশিন ভারতের হাই ভ্যালু কারেন্সি ছাপতে ব্যবহার করা হবে কেন ? 

    অন্যদিকে The Hindu’র প্রতিবেদন অনুযায়ী ঃ- 

     India imports bank note papers from European companies like Louisenthal in Germany, De la Rue in United Kingdom, Crane in Sweden and Arjo Wiggins in France and Netherlands.India had blacklisted two European firms in 2014 amid reports by security agencies that the security features, which come embossed on bank note paper, were compromised and given away to Pakistan.But the ban was lifted and the companies were removed from the blacklist. Why? Here is the reason given for the lifting of the ban.

     “These companies are in the business for 150 years? they will not hamper their trade by passing on information of one country to another. Some of these firms even print currency notes for smaller countries. After the investigations, it was found that the two firms had not compromised the security features and the ban was lifted,” said the official. অর্থাৎ এই সমস্ত কোম্পানির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে তাই কালো তালিকা ভুক্তি তুলে নেওয়া হল । কিন্তু সত্য কি ? 

     আপনেরা অনেকেই পানামা পেপার বিষয়ে শুনেছেন ।  সেই পানামা পেপার উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখছে  De la Rue paid out a 15% commission to a New Delhi businessmen to secure contracts from Reserve Bank of India.(ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এপ্রিল ০৭ .২০১৬ ) আরও প্রকাশিত  De la Rue paid £40m in settlement to the RBI ( প্রিন্ট উইক এ প্রকাশিত ২৮সে এপ্রিল ২০১৬ ) সুতরাং বুঝতেই পারছেন ঠিক কি রাস্তায় একটি ব্ল্যাকলিস্টেড কোম্পানি মোদীর সন্ত্রাসবাদি কার্যকলাপ রুদ্ধ করে দেওয়ার সব থেকে গুরুত্বপুর্ন কাজ ভারতের কারেন্সি ছাপানোর কাজে যুক্ত হতে পারে ? শুধু তাই নয় এই বিশ্বকুখ্যাত কোম্পানিটি বিজেপির সহায়তায় মেক ইন ইন্ডিয়া কে সামনে রেখে মধ্যপ্রদেশে টাকা ছাপানোর হাই সিকিউরিটি পেপার মিল এবং রিসার্চ সেন্টার স্থাপন করবার প্রস্তুতি নিচ্ছে । বিজেপি একদা এই কোম্পানির মালিক কে কান্দাহার থেকে ছাড়ানোর জন্য বিপুল পরিমান অর্থ গোপনে বিনিময় করেছে ,আমাদের পুর্বতন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ভাই এই কোম্পানি যাতে হায়দ্রাবাদ ট্যাঁকশালের চুক্তি পায় তার জন্য ভারতীয় এজেন্ট হিসাবে কাহ করেছে , বাকি আরও কি কি করেছে অজানা। 

     ২০১০ সালে পাকিস্তান কে ফেক কারেন্সি ছাপানোর কাগজ সরবরাহের অভিযোগে যে কোম্পানিকে কালো তালিকা ভুক্ত করা হয়েছিল সেই ব্ল্যাক লিস্টেড কোম্পানিকে সরকার আমাদের উচ্চ মূল্যের টাকা ছাপানোর দ্বায়িত্ব দিচ্ছে । যেই কোম্পানি রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার সাথে সাথে প্রায় দেউলিয়া হওয়ার পথে পৌঁছেছিল ,ভারতে পুনরায় টাকা ছাপার গেমে অংশীদার হওয়ার খবরে গত ৬ মাসে De la Rue তার শেয়ার ৩৪% এর অধিক  বৃদ্ধি পেয়েছে । 

    যে কোম্পানি ,কালো তালিকাভুক্ত , একদা কলোনিয়াল ক্রাউন এজেন্ট হিসাবে ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতি ধ্বংস করার পরিকল্পনা রচেছে ,পাকিস্তান কে জালি ভারতীয় টাকা ছাপানোর কাগজ থেকে টেকনোলোজি সরবরাহ করেছে সেই কোম্পানিকে জাতীয় আর্থিক নিরাপত্তার অতি গুরুত্বপুর্ন কাজে সরকার কেন কাজে লাগাচ্ছে । কার এবং কি স্বার্থ ? প্রশ্ন করুন।


    মূল রচনাঃ

    লেখাটি মূলতঃ অনিরুধ শেঠি ব্লগের ভিত্তিতে রচিত । (http://www.anirudhsethireport.com/secret-world-indian-currency-printers/)

     সূত্রসমূহ ঃ

    ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস - 07.4.2016। প্রিন্ট উইক 28.04.2016 । হিন্দু 12.11.2016 । ইকনোমিক টাইমস 11.11.2016 । The fake money saga এপ্রিল ৪ ,২০১১ দা আফটারনুন,  House panel pulls up govt for outsourcing printing of currency notes টাইমস অফ ইন্ডিয়া মে ১ , ২০১০ । RBI official to visit bank note supplier's plant in UK আগস্ট ১৭ ২০১০ জি নিউজ । CVC takes up complaint blaming many suppliers ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানুয়ারি ১৯ ২০১২ । De La Rue excluded from new India contracts - রয়টার জানুয়ারি ৫ ২০১১ ।  Who Was That Special Passenger?  টাইম  জানুয়ারি  ১৭ , ২০০০  ইত্যাদি । 

     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ নভেম্বর ২০১৬ | ৭২৭৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ছোটোলোক | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৯80840
  • সোনার পারচেজওতো বেঁধে দিয়েছে। বিবাহিত মেয়েদের মাথা পিছু হাফ কিলো করে রাখতে পারবে। আন্ম্যারেডরা ঢাইসো গ্রাম করে। ছেলেরা বিতর্কিত (একটা কাগজে বলছে ১০০ গ্রাম, আরেকটা বলছে ১৫০ গ্রাম)। কেন ছেলেদের প্রতি এত ডিস্ক্রিমিনেশন? আবার ম্যারেড কি আনম্যারেড ছেলেদের মধ্যে ভেদাভেদ নেই। সবার ঘরে ঘরে রেইড করে গোল্ড রাশে বেরোবে নাকি মোদি? কেন জানি না মনে হচ্ছে সোশ্যালিজম আসছে। বা হ্ঠাৎ এসব বন্ধ হয়ে যাবে।
  • ছোটোলোক | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৮80841
  • দামি বই, দুষ্প্রাপ্য স্ট্যাম্প, দামি দামি ক্যামেরা/লেন্সওয়ালারা সাবধানে থাকুন।
  • Chagol | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৯80830
  • শুধু গোটাদুই ছিলো পাশবই
    বাকি ভরে গেছে ঋণে
    মোদী কহিলেন বুঝেছো খগেন
    নোট পাবে গুনে গুনে
    কহিলাম হেসে গেছি আজ ফেসে
    পড়েছি কি যাঁতাকলে
    নেই কাজে মন খুঁজি কালোধন
    কোথা পাই ছলে বলে
    গোটা দুই চার পাঁচশো হাজার
    ছিলো বিছানার কোনে
    রাজার হুকুম কেড়েনিলো ঘুম
    কারো কথা নাহি শুনে
    নিমেষে অচল যা ছিলো সচল
    হুকুম রাজার কড়া
    সব যাবে শেষে রাজার আদেশে
    চোখ দুটো ছানাবড়া
    ভাবি মনে মনে এই তো সেদিনে
    বলেছিলো চোঙা ধরে
    বিদেশে যতন সব কালো ধন
    ব্যাঙ্কেতে দেবো ভরে
    ভোটে বাজিমাৎ হোল সব কাত
    ঘুচে যাবে দুর্দিন
    মগজেতে ঠাসা একবুক আশা
    হতে থাকে রোজ ক্ষীণ
    রোজ ভোরে উঠি পিছু পিছু ছুটি
    এটিএম এ ঝাঁপ বন্ধ
    হয়নি বাজার জোটেনি আহার
    রাজা সব দেখে অন্ধ (সংগৃহীত )
  • দ্রি | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৫:৫৯80831
  • “We had sought a hearing with RBI as we were not allocated enough cash, but we were told that rationing of cash may continue for some time,” said a banker who was present at one of several meetings with central bank officials.

    “Reserve Bank has asked us to push the use of digital channels to all our customers and ensure that we bring down use of cash in the economy,” said a banker.

    http://economictimes.indiatimes.com/articleshow/55694135.cms?utm_source=contentofinterest&utm_medium=text&utm_campaign=cppst

    এই ব্যাঙ্কার যদি সত্যি কথা বলে থাকে, তাহলে দেখা যাচ্ছে এইটাই আরবিআইয়ের পলিসি, ক্যাশের ব্যবহার কমানো। অর্থাৎ ক্যাশ রিলিজের রেটটা স্লো রাখাটা ইনটেনশানাল।,
  • ছোটোলোক | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৬:০৪80832
  • এ আবার নতুন কি?
    লাস্ট দু সপ্তা ধরে তো ব্যাংক ঐরকম ইমেল করে যাচ্ছে নিয়মিত।
  • দ্রি | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৬:৩২80833
  • নাঃ, নতুন কিছু নয়। কিন্তু আমার মতে এইটা হল আসল কারন।

    আরো অন্যান্য কারন বলে যেগুলো বলা হচ্ছে, যেমন কালো টাকা, পাকিস্তান এটসেট্রা, সেগুলো হল এই অ্যাকশানের ডেরিভেটিভ। মানে একটা কিছু করলে, সেই কাজটা কেন ভালো সেই নিয়ে মানুষকে একটু টুপিটাপা দিতে হয়। তা না হলে পাবলিক খচে যাবে। ঐসব হল পাবলিক সেন্টিমেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য।

    আসল রিজন হল ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে পুশ।

    স্পেনে যখন একই ধরনের মুভ হচ্ছে, সেখানে তো কালো টাকা ফাকা বলা যাবে না। সেখানে বলা হচ্ছে ক্যাশলেস সোসাইটি হলে স্পেনে ইকনমি ইম্প্রুভ করবে (এখন স্পেনে ইকনমি একটু বেশীই ঝুলে আছে)

    তো যেদেশের লোকেরা যেটা খাবে।
  • PM | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ১০:৩৬80834
  • মেক ইন ইন্ডিয়া তো প্রথমে টাকা ছাপানোতে হওয়া উচিত। নিজের টাকা নিজে ছাপাতে পরে না--তার আবার বড় বড় কথা ঃ(
  • sm | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ১১:১৩80835
  • টাকা দেশে না ছাপানোটা, বড়ো কথা নয়। অলওয়েজ উচিত কিছু অংশ বিদেশে আর কিছুটা দেশে ছাপানো। দু তরফেই সিকুরিটি ফিচার যতো সম্ভব বাড়ানো।
    পলিমার নোট নিয়ে আসা আশু কর্তব্য।কারণ প্রতিবেশী দেশগুলোতে এখন ও পলিমার নোট আসেনি।
    ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরী করা খুব বেশী রকম জরুরি। যতো সংখ্যক লেনদেন কার্ড ও চেকে হবে ততো সরকারের শ্রীবৃদ্ধি হবে।
    মোটামুটি ভাবে ধরুন গিয়ে বড়বাজারে কোনো ব্যবসায়ী কয়েক কোটি টাকার লেনদেন করলেও খাতায় কলমে কয়েক লক্ষ দেখানো হয়। এদিক থেকে অবিশ্যি দিল্লি, বোম্বাই ওয়ালারা আরো এক কাঠি সরেস।
    সেকন্ড হ্যান্ড গাড়ি, ফ্ল্যাট এ সমস্তেও কালো ও ক্যাশ টাকার লেনদেন প্রচুর।
    কিন্তু এক্ষেত্রে সাধারণ জনতার কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিয়ে কি লাভ হলো ? ওরা তো নিজের টাকা ফেরত চাইবেই।এখানে তো মনে হচ্ছে জবর দস্তি চলছে।
    সরকার যদি টাকা তোলার উর্ধ লিমিট তুলে দেয়; তাহলে তো অন্তত সাধারণ মানুষের সরকার ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস ফিরে আসবে। কেনা কাটায় গতি বাড়বে।
    এরকম চিপ্পুস গিরি চালাতে থাকলে, বাজারে ধ্বস অনিবার্য্য।জিনিস পত্রের দাম ভয়ানক চড়ে যাবে।
    মোদী এরকম ফালতু নীতি নিতে গেলো কেন? বিরোধীরা চোট পাট করার সুযোগ পাচ্ছে!
    আগে একবার বলেছিলাম বিরোধীদের মোদী সরকারের ভুলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে- মনে হচ্ছে অপেক্ষার শেষ হয়েছে। দেখো এটাকে যে যেভাবে ক্যাশ করতে পারে।
  • ছোটোলোক | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ১১:২৮80836
  • জিনিসের দাম চড়ছে কোথায়! পড়ছে তো। সোনার দাম হু হু করে নামিয়ে দিতে পারে এই অ্যাপ্রোচ ;-)
  • sm | ***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ১২:৫৩80837
  • সোনার দাম মূলত নির্ভর করে ডলার এর দাম এর ওপর।দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কম থাকলে অবিশ্যি কিছুটা কমবে। তবে সেটা সামান্য ভগ্নাংশ।কৃষি জাত পণ্য ও দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বাড়বেই। কারণ ব্যবসায়ীরা তাদের লোকসান উশুল করে নেবেই।
    কিছুটা কমতে পারে বাড়ি গাড়ি,বিলাস দ্রব্যের দাম।
  • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী | ***:*** | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১২:৩৯80842
  • অচল টাকা চলবে

    - লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
    পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট, চলবে অচল টাকা,
    ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনায়াসে, সে টাকা যাবে রাখা।
    ব্যাঙ্ক চালু, এটিএম চালু, ব্যাঙ্কে হচ্ছে টাকা বদল,
    ব্যাঙ্কে লাইনে দাঁড়িয়ে গলদঘর্ম রিক্সাচালকের দল।

    হাসপাতালে, মেডিকেল-স্টোরে নিচ্ছে টাকা সবাই,
    ক্রেডিট কার্ডে সব যাবে কেনা, কোথাও বারণ নাই।
    স্কুল, কলেজ, পোস্ট অফিসেও নিচ্ছে টাকা এবার,
    দুদিন পরেই ছাপা নতুন নোটে ছেয়ে যাবে বাজার।

    কালোবাজারী ও কালো টাকায় ছেয়ে গেছে দেশ,
    চালে তেলে দিচ্ছে ভেজাল, ভেজালের নাই শেষ।
    প্রধানমন্ত্রীর জন-ধন-যোজনা ঘুচাবে গরীবের দুখ,
    বীমা যোজনায় টাকা করলে জমা তবেই পাবে সুখ।

    ভারত হবে সোনার ভারত, বদলে যাবে তার হাল,
    দিন আগত সুদিন আসছে, আসবে নতুন সকাল।
  • একক | ***:*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৩80844
  • শেষ টা ভুল কোরে "আসবে নতুন সরকার " পড়লূম আর পুরো লেখাটা সম্ভাবনায় উজ্জ্বল হয়ে উটলো !!! ঃ)
  • de | ***:*** | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১২:১২80843
  • মা মা গো, এতো সুখ সইলে হয়!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন