এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • সাজানো ঘটনা, প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে

    জিগীষা ভট্টাচার্য লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১২ এপ্রিল ২০১৩ | ৩৬৪২ বার পঠিত
  • এটা কে আপনারা কেন এত বড় করে তুলছেন জানি না, এটা তুচ্ছ ঘটনা, আর দিল্লি তে যা হয়েছে তারপর এরকম হয়ে থাকতেই পারে । দিল্লিতে এস এফ আই-এর বিক্ষোভের মুখে মাননীয় প্রাক্তন প্রেসিডেন্সিয়ান অমিত মিত্র যদি পড়েন, তাঁর গায়ে যদি হাত পড়ে, তো তার জের প্রেসিডেন্সি পড়বে না তো কোথায় পড়বে? স্বতঃস্ফূর্ততা বলে একটা ব্যাপার আছে তো নাকি!

    আর টি এম সি পি-র প্রধান মাননীয় শঙ্কুদেব পাণ্ডা মহাশয় তো বলেই দিয়েছেন যে ওনারা ‘গান্ধীজীর পায়ের তলায় বসে অহিংস পথে আন্দোলন’ করছেন । অহিংস আন্দোলন চলবে আর প্রচারে প্রেসিডেন্সি যাওয়া হবে না ? করা যায় নাকি!
    নিন্দুকে ওরকম বলবে, বলবে যে প্রেসিডেন্সিতে বন্ধ গেটের তালা গ্যাস কাটার দিয়ে কাটা হয়েছে , বলবে যে তাই পরেরদিন অর্থাৎ, ১১ তারিখ থেকে একটা ব্র্যান্ড নিউ গোদরেজের তালা শোভা পাচ্ছে ! বলবে ছুরি, বর্শা(!) নিয়ে লোকজন এসেছিল , বলবে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মারা হয়েছে, বলবে সামনে যে মহিলাকে পেয়েছে তাকেই তাড়া করেছে, বলেছে ধর্ষণ করবে । বলবে মহিলা ডিন অফ স্টুডেন্টস কে তাড়া করেছে গুণ্ডারা, ওনাকে আড়াল করে থাকা ছাত্রছাত্রীদের বলেছে ‘মাগি’ টাকে বের করে দিতে, ওরা ধর্ষণ করবে । বলবে শতাব্দী প্রাচীন বেকার ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি ভাংচুর করেছে, বলবে দরজা জানলা ভেঙে দেওয়া হয়েছে । বলবে জগদিশ্চন্দ্রের বেকার ল্যাব,প্রফুল্লচন্দ্রের বেকার ল্যাব, মেঘনাদ সাহার বেকার ল্যাব তছনছ করা হয়েছে । কিছু নিন্দুকে এও বলতে পারে, প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন অধ্যাপকের বিশেষ ক্লাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা হয়েছে এবং সেই অধ্যাপক বাধা দিতে এলে তাকেও ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে । বলবে পুলিশ সামনে ছিল, তাও কিছু করে নি, কারণ তাদের কিছু করার ‘অর্ডার’ ছিল না(নাকি অর্ডার ছিল, কিছু না করার?), বলবে ভাঙা গেটের সামনে ছাত্রছাত্রীদের ব্যারিকেডে দাঁড়ানো মহিলাদের সবাইকে ক্যাম্পাসের বাইরে রেপ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে? বলবে ওরা টি এম সি পি-র ফ্ল্যাগ নিয়ে মিছিল করছিলো, বলবে ওরা ‘ফ্রাসট্রেটেড এস এফ আই’(ডেরেক উবাচ) নয়, কারণ তৃনমূলের কাউন্সিলর পার্থ বসু টিভি ফুটেজে প্রকট ভাবে দৃশ্যমান যেখানে তিনি প্রেসিডেন্সির বন্ধ গেট ধরে ঝাঁকানোর ভঙ্গীতে শোভা পাচ্ছেন ।

    কিন্তু, আসল ব্যাপারটা মোটেই এরকম নয়, এই ‘অহিংস’ ঘটনা ঘটার দিন বিকেলে প্রেসিডেন্সির বন্ধ গেটের বাইরে সাধন পাণ্ডে মহাশয়ের নেতৃত্বাধীন জনসভার বক্তব্য থেকে আসল ব্যাপার পরিস্ফুট হয় । ‘চক্রান্ত’-এর অন্ধকার কেটে আলোর দ্যাখা পান ডিরোজিয়ানরা এবং অন্যান্য মূঢ় ব্যক্তিবর্গ । আসলে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রেসিডেন্সি থেকে বেরিয়ে ছাত্রছাত্রীরা হামলা করে, যে জন্য মিছিলে উপস্থিত লোকজন বাধা দিতে বাধ্য হন । যে কারণে পরের দিন প্রেসিডেন্সির হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক-কর্মচারী-প্রাক্তনী যখন পথে নামেন, তখন প্রেসিডেন্সির ছাত্র দেবর্ষি চক্রবর্তী এবং প্রেসিডেন্সি প্রাক্তনী ছন্দক চ্যাটারজির বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করে টি এম সি পি , ১৪৭, ১৪৮ ও ১৪৯ নং ধারায়, দাঙ্গা বাধানো এবং উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে । এই দেবর্ষি চক্রবর্তী আগেরদিন হাসপাতালে গেছিলেন আহত হয়ে ? ও সে তো নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে গিয়ে লেগে গেছিল । আরেকজন ছাত্রকেও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল না? ওরা দুজন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছিল । সিম্পিল ।

    যে বর্শা পাওয়া গেছে ওটা নিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীরা নিশ্চয়ই পরের বছরের স্পোর্টসএর প্র্যাকটিস করছিল , যে কাচ ভেঙ্গেছে সেটা মাঠের উঁচু বেড়া এড়িয়ে ক্যাম্বিস বল লেগে হয়ে থাকতে পারে , ডিন ম্যামকে তাড়া করার ঘটনা স্রেফ ‘সাজানো’, ভিসি বলছেন লোকজন টি এম সি পির ফ্ল্যাগ নিয়ে এসছিল উনি দেখেছেন ? এক্ষুনি ওনার ‘ইতিহাস, ভূগোল’ খতিয়ে দেখতে হবে সুব্রতবাবুর নির্দেশমতো, তাহলেই ওনার বক্তব্যের সত্যতা জলের মত পরিষ্কার!

    অথচ সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অসংখ্য ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী, শিক্ষক, পুস্তকবিক্রেতা । অথচ সেদিন ভাঙ্গা গেটে ছাত্রছাত্রীদের ব্যারিকেডের সামনে থেকে পিছু হটতে বাধ্য হল হামলাকারীরা । অথচ ঘটনার তীব্র নিন্দায় সমস্ত মিডিয়া (চ্যানেল টেন বাদে) । অথচ সে দিন ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হল ঘটনার পর । অথচ পরেরদিন পথে নামলেন হাজার হাজার লোক । মিছিলে পা মেলালেন অরুণাভ ঘোষ, রতন খাসনবিশ, অসীম চট্টোপাধ্যায় সহ রেজিস্ট্রার , ডিন, ভিসি সহ প্রেসিডেন্সির অসংখ্য প্রাক্তনী । আই সি-এস এফ আই-অরাজনৈতিক দলাদলি ভুলে প্রেসিডেন্সির সম্মিলিত চেহারা দেখল কলকাতাবাসী । দুজন নিরপরাধ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা আনায় ধিক্কারে ফেটে পড়ল সবাই । মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রেসিডেন্সি, সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের পথিক প্রেসিডেন্সিতেই তাণ্ডব ওনার সংগঠনের ছাত্রশাখার । যেখানে সমস্ত ক্যাম্পাসকে রাজনীতিমুক্ত করাই ওনার একমাত্র লক্ষ্য(একই দাবি মাননীয়  ব্রাত্য বসুরও) সেখানে এই ঘটনা । আশ্চর্য, অমিত মিত্রের প্রেসিডেন্সি, ব্রাত্য বসুর প্রেসিডেন্সির দু’শ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহিরাগত ছাত্রদের(পড়ুন ত্রিশোর্ধ লোকজন) আক্রমণের ঘটনা প্রায় নেই বললেই চলে । মিছিলের পরে রাজ্যপালকে জমা দেওয়া ডেপুটেশনের প্রেক্ষিতে কলেজ পরিদর্শনে আসেন রাজ্যপাল । এখন এই একুশে আইনের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্সির লড়াই । আসলে, প্রেসিডেন্সি তো শিক্ষা দেয়, আঘাত যদি নেমেই আসে পাল্টা আঘাত ফিরিয়ে দাও । 

    ----------------------------------------------------------------------------------------

    লেখিকা প্রেসিডেন্সির ছাত্রী, গত পরশুর ভাঙচুরের প্রত্যক্ষদর্শী।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১২ এপ্রিল ২০১৩ | ৩৬৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • S | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৫:৪১76458
  • বর্তমান আবার কবে থেকে সত্যি কথা লিখতে শুরু করলো?
  • জিগীষা | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৫:৪৬76459
  • ১ । সোমক রায়চৌধুরির বাকি বক্তব্য গুলো আপনি পড়ে দেখেন নি বোধহয়, উনি একের পর এক আপডেট দিয়েছেন, পারলে সেগুলও পড়ে নেবেন, আউট অফ কনটেক্সট কথা তুলে দেওয়া টা খুব সততার পরিচয় নয় :)
    ২। সোমক বাবুর কাছে তথ্য না থাকতে পারে, দেবর্ষি চক্রবর্তী কে যোগাযোগ করলেই জানা যাবে সে হাসপাতাল গেছিল কিনা, সমকবাবু নিজেই বলেছেন, উনি এই ঘটনার পরেই সেমিনার চালাচ্ছিলেন, ফলে কি হয়েছে না হয়েছে সেতার আগাগোড়া তথ্য ওনার কাছে না থাকাটাই স্বাভাবিক।
    ৩। টুপু বাবু, আমি সর্বজ্ঞানী এই দাবি কোথাও করিনি, আপনি বরং সেদিনের ঘটনার একটা যুক্তিসঙ্গত বিবরণ দিতে পারেন। আমার জ্ঞানের জন্য।
    ৪! আপনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর বক্তব্য নিয়ে কিছু জিগ্যেস করলে আমায় ক্ষমা করুন! আমি উত্তর দিতে পারছিনা! :O
    আর পাই দি কে, আমি এখেনে আর লিখুম না পাই দি :O পার্থ বাবুর বক্তব্য খণ্ডন করার দিন দেখতে হবে এ আমি ভাবতেই পারিনি লেখাটা গুরুতে দেওয়ার সময় :O

    @arin বাবু, আপনিই আনলেন, তবে এটা নিয়ে মন্তব্য করার খুব প্রয়োজন বোধ করছি না। :)
  • টুপু | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৫:৪৮76460
  • লেখে না?নাই লিখতে পারে

    তা সত্যি -মিথ্যা কে বিচার করবে? আপনি না আমি? আর কোনো কথা লেখেনি প্রশ্ন করেছে।

    তাছারা'ও অন্য একজনের বক্তব্য আছে।
  • টুপু | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:০৩76462
  • পার্থ চট্টোপাধ্যায়'এর বক্তব্য নিয়ে এখানে কোনো প্রশ্ন বা কথা তোলা হয় নি।

    সোমক বাবু নিজে লিখেছেন যে বেকার ল্যাবে ভাঙচুর বলতে কয়েকটা চেয়ার আর গ্লাস।এর বেশী কিছুই নয়।ল্যাবের যন্ত্রপাতি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এটা 'ভূল তথ্য'।

    পদার্থ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান গবেষনাগার সম্পর্কে ও তার কী ক্ষতি হয়েছে কতটা ক্ষতি হয়েছে সেটা বাকীদের চেয়ে ভালো জানবেন এইটুকু আশা করাই যায়।যায় না?নাকি ধুস আমি যা বলেছি সেটাই সত্যি বাকিরা কে কী বলেছে সেই নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন বোধ করছি না এরকম একটা মনোভাব দেখাবেন?

    প্রশ্নগুলো অপ্রিয় হতেই পারে।
  • S | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:০৩76461
  • এখন চেঁচিয়ে কোনো লাভ নেই। ঐ কান্ডটা যে তিনোদের করা সে দিদি নিজেও জানেন। আর পার্থবাবু হেব্বি ঝাড় খেয়েছেন, তাই গ্যানেশ্বরীর লাইনে সিপিয়েমকে দোষ দিয়ে যাচ্ছেন।
  • ranjan roy | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:০৫76476
  • @টুপু,
    জিগীষা লেখার আগেই আমরা টিভি চ্যানেলে অধ্যাপক/অধ্যাপিকা/ রেজিস্ট্রারের বক্তব্য শুনেছি।
    সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে দেবশ্রুতি ম্যামকে কানে আঙুল দেয়া ভাষায় সম্বোধন করা হয়েছে।
    দু'বার পড়েও অধ্যাপক সোমক ও জিগীষার মূল বক্তব্যে কোন কন্ট্রাডিক্শন দেখতে পেলাম না। জ্যাভেলিন বা ল্যাবের যন্ত্র ভাঙা বা মারধোরের প্রশ্নে । আর আইসির নেতার ( যিনি পরীক্ষাতেও ইউনিভার্সিটিতে প্রথম হয়েছেন) মার খাওয়া মুখ প্রথম দিন থেকেই চ্যানেলে দেখানো হয়েছে।
    মনে হচ্ছে আপনিই সোমকের বিবৃতি ভাল করে পড়েন নি। জিগীষা ওখানে ছিলেন, তাই লিখেছেন। আপনি ওকে সবজান্তা বলছেন, তো আপনি ওখানে ছিলেন কি? থাকলে কি করছিলেন?
  • S | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:১২76463
  • প্রথমে বলা হোলো তিনোদের কেউ ছিলোনা। তারপরে বলা হোলো একটু চেয়ার গ্লাস ভাঙ্গা হয়েছে মাত্র। আর লাস্টে মেয়েদেরকে কোনো থ্রেট দেওয়া হয়নি।

    ধরা যাক এটা সিপিয়েমের কাজ, তাহলে ছেলেগুলো কি ভাবো ভাবুন - বেশি কিছু ক্ষতি করেনি।

    আর একটা কোস্নো কবে থেকে করে আসছি - পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলো কেন? সে নিয়ে তো উপাচার্যের স্পস্ট মতামত আছে - আমরা সক্কলে শুনেছি।
  • টুপু | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:১৩76464
  • চেয়ার-গ্লাস ভাঙা হয়েছে সেটা বলছেন পদার্থ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।সে কোন রাজনৈতিক দলের জানা নেই।

    আপনার জানা আছে জেনে প্রীত হলাম ;-)
  • S | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:২৯76465
  • আপনার দেওয়া লিন্কে তো তাই দাবি করা হচ্ছে।
  • টুপু | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:৩৪76466
  • আমার দেওয়া লিঙ্কে দাবী করা হচ্ছে যে সোমক রায় চৌধুরী তৃণমূলে 'র ?

    খাইসে
  • sch | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ০৮:৫৩76467
  • সোমক রায়চৌধুরীর বক্তব্যটা পড়ালাম - ভালো লাগলো এত সাহসী লেখার মতো একজন অধ্যাপক আছেন বলে -- নির্মেদ সত্যনিষ্ঠ বক্তব্য -- কোনো পলিটিক্যাল গন্ধ নেই -

    এবার জিগীষা দেবীর লেখাটা আবার পড়লাম

    জিগীষা লিখেছেন "নিন্দুকে ওরকম বলবে, বলবে যে প্রেসিডেন্সিতে বন্ধ গেটের তালা গ্যাস কাটার দিয়ে কাটা হয়েছে , বলবে যে তাই পরেরদিন অর্থাৎ, ১১ তারিখ থেকে একটা ব্র্যান্ড নিউ গোদরেজের তালা শোভা পাচ্ছে ! বলবে ছুরি, বর্শা(!) নিয়ে লোকজন এসেছিল"

    অধ্যাপক সোমক উবাচ "During one attack, two hooligans with an iron rod and a javelin (!) entered the Baker lab. I was standing in the lobby with our Colloquium speaker, proudly showing him our construction work." ..............."This is the first time ever where I have seen a mob of outsiders attacking the College, breaching the front gate, and attacking students and staff. This is unacceptable. If there had been ten people instead of two entering Baker, they could have caused irreparable damage.""

    তো কোনো সমস্যা দেখলাম না - তালা ভাঙ্গা, বর্শা সবই আছে। breaching মানে ভেংগে ঢোকাই বলে বোধহয়।

    জিগীষা লিখেছেন "সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মারা হয়েছে, বলবে সামনে যে মহিলাকে পেয়েছে তাকেই তাড়া করেছে, বলেছে ধর্ষণ করবে । বলবে মহিলা ডিন অফ স্টুডেন্টস কে তাড়া করেছে গুণ্ডারা, ওনাকে আড়াল করে থাকা ছাত্রছাত্রীদের বলেছে ‘মাগি’ টাকে বের করে দিতে, ওরা ধর্ষণ করবে । বলবে শতাব্দী প্রাচীন বেকার ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি ভাংচুর করেছে, বলবে দরজা জানলা ভেঙে দেওয়া হয়েছে । বলবে জগদিশ্চন্দ্রের বেকার ল্যাব,প্রফুল্লচন্দ্রের বেকার ল্যাব, মেঘনাদ সাহার বেকার ল্যাব তছনছ করা হয়েছে । কিছু নিন্দুকে এও বলতে পারে, প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন অধ্যাপকের বিশেষ ক্লাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা হয়েছে এবং সেই অধ্যাপক বাধা দিতে এলে তাকেও ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে । "

    অধ্যাপক সোমক উবাচ
    "One of the hooligans broke all the glass panes of the front door, built two weeks ago. Then they turned right and entered the MSc lab, where students were working. They beat up the first student - he is badly hurt. One guest lecturer went to protect him and was hurt. Nobody had to be taken to hospital (the media tends to exaggerate).

    Then they managed to damage one instrument on the table and a couple of chairs (they did NOT ransack the department) . The collective presence of students and staff somewhat deterred them and they ran away."

    তো এখানে জিগীষা কিন্তু বলেন নি ক'টা যন্ত্রপাতি ভেঙ্গেছে। একটা যন্ত্র যে ভেঙ্গেছেন সে তো বলাই হয়েছে আর "all the glass panes in the front door" এর ইন্টারপ্রিটেশান যদি হয়ে থাকে "তছনছ করেছে" কনো অতিরঞ্জন দেখতে পাচ্ছি না।
    এবার এই যে "সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মারা হয়েছে" সে ও তো অধ্যাপক বলে দিলেন। জিগীষাও কোথাও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন নি।
    আর ধর্ষণ ইত্যাদি হুমকির কথা যে জিগীষা বলেছেন - সেখানে তো অধ্যাপক সোমক না-ও থাকতে পারেন - উনি তো সর্বত্র ঘুরপাক খাচ্ছিলেন না। আর এখানে তো কেউ বলে না "বেরিয়ে আসুন - আপনাকে আমরা ধর্ষণ করতে চাই" - সহজ কমন গালাগাল "শালী এত্ত সাহস তোর - বেরিয়ে আয় - *দে রেখে দেব" -- আমি ওখানে ছিলাম না অবশ্যই -- কিন্তু বিভিন্ন সময়ে ওটোওয়ালা থেকে লুম্পেন ছাত্র নেতা - তাদের এহেন সুললিত সুভাষিতানী ব্যবহার করতে শুনেছি। খুব কিছু অদ্ভুত লাগলো না

    আসল কথাটা কিন্ত অধ্যাপক সোমক খুব সুন্দর ভাবে বলেছেন

    "Not much damage has been done in material terms, but this incident is an ominous one. We can deal with student politics. If student bodies fight with each other, we can negotiate with them or discipline them. "..............." This is unacceptable. If there had been ten people instead of two entering Baker, they could have caused irreparable damage. The Press, on the other hand, are making the Baker lab damage into a story that didn't happen. But who says it won't tomorrow?"

    প্রশ্নটা আশঙ্কার - দলীয় রাজনীতির না -একই কথা অধ্যাপক সোমকের গলাতেও - জিগীষার লেখাতেও -- কোনো apparent contradiction পেলাম না।

    কাল বুদ্ধদেবের ওপর হামলা হলে SFI এরকম করতেই পারে --আদবানির ওপর হলে ABVP

    একটা প্রিমিয়ার ইন্সটিটিউশানে ঢোকার এই সাহস কিছু বহিরাগত রাজনীতি বিদের হলো কি করে। দরকার ছিল দলমত নির্বিশেষে কড়া সমালোচনা আর সেখানে শাসক দলের একটু বেশী দায়। তা না করে রেজিস্ট্রার কেন বিবৃতি দিলেন বা VC র ইতিহাস ভূগোল কি ছিল - এগুলো বলা নিম্ন রুচির পরিচায়ক আর প্রকারান্তরে এই ধরণের পলিটিক্যাল হুলিগানিজমকে প্রশ্রয় দেওয়া।

    জিগীষার বয়েস সম্ভবতঃ কুড়ির আশেপাশে -- ওই বয়েসে এরকম ঘটনা চোখের সামনে দেখলে মনে দুটো জিনিস আসে ভয় আর ঘৃণা। তা সত্তেও যে জিগীষা তার বক্তব্য একটা পপুলার ফোরামে গুছিয়ে লিখেছেন এটা প্রশংসার্হ। আমি ওই বয়েসে পারতাম না - জানি না এখানে কতজন পারতেন ওই বয়েসে।

    তো আমার মনে হয় জিগীষাকে সর্বজ্ঞানী টানি বলে ব্যক্তি আক্রমণ করে না করে - কোনো তথ্যগত ভুল থাকলে ধরিয়ে দেওয়া যেত। আর হ্যাঁ বাড়ীর সামনের window pane এর সব কাঁচ ভাঙ্গলে তাকে তছনছ বলা যায় কি না সে নিয়ে কারো সন্দেহ থাকলে তিনি হাতেনাতে নিজের জানলার কাঁচগুলো কাউকে দিয়ে ভাঙ্গিয়ে দেখতে পারেন - তারপর অন্যরকম কিছু মনে হলে মিনিময় করা যাবে
  • sosen | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ১১:৪৩76468
  • Sch এর বক্তব্যকে সমর্থন জানালাম।
    এই সঙ্গে জিগীষাকে বলি, তোমার যা লেখার সেটা তুমি লিখেছ, স্বনামে , সেটা যে বিতর্কিত হতে পারে, এবং তোমার বিরুদ্ধে-ও যেতে পারে সেটা জেনেই। সেই সাহসকে আমরা কুর্নিশ করি। এই লেখাকে আবার মতামত লিখে কাউন্টার প্রটেকশন দেওয়ার দরকার তোমার এতটুকুও নেই।
  • | ***:*** | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ১২:৩৯76469
  • sch এর বক্তব্য কমা দাঁড়ি শুদ্ধ সমর্থন করলাম, আর সোসেনের বক্তব্যও।

    জিগীষাকে স্যালুট।

    'আয় আয় তোকে ধর্ষণ করি' সোমকবাবু শোনেন নি হয়ত, খুবই স্বাভাবিক। এই ধরণের কথাগুলো মেয়েদের টার্গেট করে তাদের কানের কাছাকাছিই হিসহিস করে শোনানো হয়।
  • কৃশানু | ***:*** | ১৫ এপ্রিল ২০১৩ ০১:৫৫76478
  • পাই-দির দেওয়া লিংকটার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ক।
  • শঙ্খ | ***:*** | ১৫ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:৩২76479
  • জিগীষা,

    খুব গুছিয়ে লিখেছ। অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা রইল।
  • Avada Kedavra | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৩ ০৪:১৩76481
  • যাব্বাবা, এখানে কেন লিংক এনেবল হয় না?
  • de | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৩ ১১:৫৮76482
  • জিগীষাকে হ্যাটস অফ! সোজা মেরুদন্ডের কিছু মানুষ এখন জঙ্গলের রাজত্বে থাকা পশ্চিমবঙ্গে খুব দরকারী --

    স্চ য়ের কাউন্টার রিপ্লাই গুলোও পছন্দ হলো।

    এই ঘটনারও জাস্টিফিকেশন দিতে লোক আসে -- সত্যি! অরাজকতার চুড়ান্ত!
  • | ***:*** | ১৬ এপ্রিল ২০১৩ ১২:১৬76483
  • জিগীষা কে এমন সাহসী লেখার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ।

    আমাদের/তোমাদের ছেড়ে যারা দোষী তাদের সবাই কে গ্রেফতার করা হোক। কোন রকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যেন না করা হয়।
  • keu na | ***:*** | ১৭ এপ্রিল ২০১৩ ১২:২২76484
  • জিগীষা কে ধন্যবাদ লেখার জন্যে! এই বয়েসে এই অবস্থায় কজন এত গুছিয়ে লিখতে পারে? আমি তো পারতাম না।
  • পল্লব | ***:*** | ১১ মে ২০১৩ ০৮:৪৩76485
  • একটা প্রশ্ন অনেকেই করছেন - পুলিশ ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলো কেন?

    এটার উত্তরে আসল সত্যিটা জানাই -

    পুলিশ দুই প্রকারের হয় - এক, দাঁড়ানো পুলিশ, আর দুই, বসে থাকা পুলিশ। প্রথমরা দাঁড়িয়েই থাকেন - কোথাও খালি হাতে (রাস্তার মোড়ে) কোথাও লাঠি কিম্বা বন্দুক(গুলিহীন) হাতে - যেমন পরিবর্তিত লোকজনের 'শান্তি'পূর্ণ কর্মকাণ্ডের পাশে, দ্বিতীয়রাও বসেই থাকেন - থানায় গেলেই দেখতে পাবেন - বিশেষত যদি আপনার অভিযোগ পরিবর্তিত কোনো লোকের বিরুদ্ধে হয়, - সেটাই ওনাদের কাজ। 'আমরা' বা 'ওরা' যে কোনো জমানাতেই এটা সত্য। লক্ষ্য করে দেখুন, প্রেসিডেন্সি কলেজে ওই পুলিশদের বসার জন্য মালবিকদেবী কোনো চেয়ারের বন্দোবস্ত করেছিলেন কি? করেন নি। তাই ওনারা বসেন নি - দাঁড়িয়েই ছিলেন।

    সিম্পল্।
  • siki | ***:*** | ১১ মে ২০১৩ ১০:১৩76486
  • উরেব্বাবা!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন