এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মুক্তির জন্য সাংস্কৃতিক প্রয়াস ২

    Salil Biswas লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫ | ২১০৪ বার পঠিত
  • পাওলো ফ্রেইরি-র শিক্ষাতত্ত্ব নিয়ে কাজ করার আগে একটা ভয় দেখানোর দরকার আছে। আপনি কাজ করবেন কিন্তু সীমিত সময়ে জীবিত মানুষ নিয়ে, যাদের জীবনের অনেকটা সময় কিন্তু আপনার হাতে থাকবে। দায় কিন্তু অনেকটাই আপনার উপর বর্তাবে।
    পাওলো ফ্রেইরি-র শিক্ষাতত্ত্ব আমি যেটুকু বুঝেছি তা মূলত কাজ করতে করতে, যে বোঝাটা আজও প্রতি পদে পাল্টাচ্ছে, আশা করি, উন্নততর হচ্ছে। পদ্ধতি যতটা বুঝছি, তা থেকেই বুঝতে পারছি যে তার প্রয়োগ অনেক সময়েই ত্রুটিপূর্ণ হচ্ছে। একটা কারণ হয়ত এটা বুঝতে না পারা (বা আত্মতুষ্টিও হতে পারে) যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী-সমষ্টিই (বিদ্যায়তনের ক্লাস বা শ্রেণী) এক একটি স্বতন্ত্র সত্ত্বা যাদের প্রত্যেকের জন্যই আমাকে নতুন করে ভাবতে হবে, এবছরের কর্মপত্র (ওয়র্কশিট) পরের বছর নাও চলতে পারে। আবার ওই সমষ্টির প্রত্যকে আলাদা মনোযোগ দাবী করে।
    আর একটা কথা মনে রাখতে হবে। পাওলো প্রধানত কাজ করেছিলেন প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়ে। তাঁর পদ্ধতি ছোটোদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা আরও কষ্টসাধ্য। কীভাবে তা করা যাবে সেটা চিন্তা করতেই অনেক সময় যায়। কিন্তু সেটা যে সম্ভব, এবং কীভাবে, সেটা আজ আলোচনা করব। ভুল-ভ্রান্তি ছিল, থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। এটা মাথায় রেখে এই আলোচনা।
    পুরোনো কথা দিয়ে শুরু করছি। সময়ক্রম ঠিক না রেখেই বলব।
    আশির দশকের গোড়ার দিকে, Letter to a Teacher: School of Barbiana’ বইটি (তখনো ‘আপনাকে বলছি স্যার’ প্রকাশিত হয়নি) পড়ে সচেতন হয়ে, আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে কলকাতার কিছু জায়গায় শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি করেছিলাম। তার সব ক'টাই ছিল প্রান্তিক অঞ্চলে।
    প্রথমে যাই ঝালদার মাঠ। সেখানে, মনে আছে, একটা বেশ নিকোনো একটা দাওয়ায় আমরা শিক্ষাকেন্দ্র শুরু করি। বেশিদিন সেটা চলেনি, কারণ স্থানীয় কিছু বাহুবলীর নজরে পড়ি আমরা। তাদের বক্তব্য ছিল বেশ হৃদয়গ্রাহী। আমরা কাজটা যে খারাপ করছি তা নয়, আমরা সাহায্যই পাবার যোগ্য, কিন্তু আমরা নিশ্চয় “বেকার বেকার” বেফয়দা একাজ করছি না, সেই “ফয়দা”র খানিক তো আমাদেরও পাওয়া উচিত, তাই না স্যার?” যুক্তি অকাট্ট। “ভাগ” দিতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিতেই হল।
    এর পরে শুরু করা হল গড়িয়া স্টেশনের কাছে খালের ধারে। সেখানে স্থায়ীত্ব হল দীর্ঘতর।
    বিজন সেতুর ওপারে একটা বসতিতে আমরা যাই একটা অ-সরকারী প্রতিষ্ঠানের সূত্রে। সেটি এখন আর নেই। অতিরিক্ত অর্থদোহনের ফলে সংগঠন দেহ রাখে। সব মিলিয়ে ওখানে পঞ্চাশ ষাট ঘর পরিবার থাকতেন। তাঁদের পুরুষদের অধিকাংশই ছিলেন রাজমিস্ত্রি আর সিমেন্টের তৈরি সিংক তৈরির কারিগর। মেয়েরা অনেকেই বাড়িতে বাড়িতে ঠিকে কাজ করতেন, আবার অনেকে সংসার সামলাতেন, বাচ্চা দেখাশুনা করতেন। অন্য কোনো ধরনের উপার্জন-সক্ষম কাজ করতে কাউকে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। লক্ষনীয় ব্যাপার ছিল, বাধা কিছু না দিলেও পুরুষরা বাচ্চাদের পড়ার ব্যাপারে উদাসীন থাকতেন, কিন্তু মায়েরা খুব উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে আসতেন। সময় মত বাচ্চারা যাতে বইখাতা নিয়ে স্কুলঘরে পৌঁছে যায়, সেদিকে নজর রাখতেন। একটু বড় ছেলেমেয়েরাও চলে আসত, পরের দিকে নিজেদের তাগিদেই। আমরা স্কুলের পড়া করিয়ে দিতাম না, তবু ওরা আসতো খানিকটা নতুন কিছু শোনার টানে, কিছুটা আমাদের ভালবেসে, আর অনেকটাই নিজেদের ঘরের মালিন্য থেকে দূরে থাকতে। একটাই ছিল ঘর। স্থানীয় ক্লাবের সৌজন্যে। শাসক দল বিশেষ ঝামেলা করেনি। ওরা বুঝে গিয়েছিল নির্বাচন নামক মোক্ষ লাভে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।
    বিভিন্ন বয়স ও স্কুলের শ্রেণী অনুযায়ী ওদের বসাতাম আমরা। কালক্রমে কিছুটা কে কী জানে না জানে সেই মোতাবেক নিজেই একটা ভাগ হয়ে গিয়েছিল। আমরা কেউ একদিন কেউ দুদিন করে যেতাম। সেই অনুযায়ী তৈরি হয়ে যেত কে কী কাজ নেব সেটা। নানা কারণে কাজগুলো ভাগ হত। যেমন, আমার যন্ত্র-অনুরক্তি ছবি তোলা, প্রোজেক্টর বানানো, স্লাইড দেখানো, এই সব কাজে জড়িত করত। আমার আর একটা কাজ ছিল কথকতা, ছবি দেখিয়ে গল্প বলা। এই ধারণাটা আমাদের এসেছিল পট-চিত্র দেখিয়ে গল্প বলার সাবেকী প্রথা থেকে। তখনো কেবল টিভি আর ভিডিও আর, সোজা কথায়, পর্ণোগ্রাফি আমাদের মাটির টানকে ধর্ষণ করতে পারেনি, আমাদের এবং অন্যান্যদের মানসিক সারল্য তখনো বেঁচে। ‘মাটি’ শব্দটিকে তখনো কোনো দল হাতিয়ে নিতে পারেনি।
    এখানেই প্রথম আমরা সঙ্কেতায়ন এবং সঙ্কেত-ভেদ পদ্ধতিতে বর্ণ পরিচয় ও শব্দসৃষ্টি অভ্যাস করানো শুরু করি। প্রথমে কিছু শব্দ আমরা নির্বাচন করলাম, কথোপকথনের ও অনুসন্ধানের দ্বারা। শব্দগুলি সবই শিক্ষার্থীদের জীবন ও পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেই শব্দ নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম আমরা। এই শব্দগুলিকে আমরা বলতাম জেনারেটিভ ওয়র্ড বা যে শব্দ থেকে কিছু উৎপন্ন হতে পারে, যা শিক্ষার্থীদের মনে কিছু অনুরণন তুলতে পারে। যেহেতু, এই বিশেষ এলাকায় বসতি ছিল রাজমিস্ত্রি আর কংক্রিটের সিঙ্ক বানাবার কারিগরদের, শব্দ উঠে এসেছিল "বাড়ি"। বসতি মাত্রেই সমস্যা থাকে জলের, নির্ভরশীলতা থাকে সকালে দুপুরে বিকেলে সময় ধরে আসা জলের উপর যাকে বলে "টাইমকল"। সেখান থেকে এল "কল"।
    কিন্তু শুধু শব্দ খুব কল্পনাকে উস্কে দিতে পারেনা। তাই দরকার ছবি। কল বা বাড়ির ছবি সমস্যা হল না, আমি ক্যামেরা নিয়ে তুলে নিলাম। কিন্তু যখন কালক্রমে শব্দ এলো "জেলখানা", তখন আলোকচিত্রে কাজ হল না, আঁকাতে হল। সেও যখন ঠিক হল না আমি নিজেই আঁকলাম। সে ছবি হিসেবে যুতসই না হলেও, কাজে লেগে গেল।
    আমরা বর্ণমালা ধরে এগোবো না ঠিক করেছিলাম, কারণ 'অ'-য়ে অজগর তো স্কুল থেকেই মাথায় ঢোকানো আছে। শুরু করা হল "জল" দিয়ে। কেবল কল আর জল পড়া দেখিয়ে ঠিক সাড়া মিলল না। তখন কলের সামনে জল নিতে আসা মহিলাদের (প্রধানত) ছবি তোলা আর আঁকা হল। সেই ছবি দিয়ে কথা শুরু হল। এখানে আলোকচিত্র কাজে এল না, সে ছবি এক তো তোলা মুশকিল, দ্বিতীয়ত চেনা মুখ দেখলে মনোযোগ অন্যদিকে চলে যাবে। ঠিক করা হল শুরু হবে ‘বাড়ি’ ছবি দিয়ে।
    প্রথমে যেমন হবারই কথা, প্রথমে কোনো সাড়া এলো না। কিছু ধরতাই দিতেই হয়। স্কুলে তো কেউ কথা বলতে বলে না। পড়তে বসে কথা বলতে বলা হচ্ছে, এই নতুন অভিজ্ঞতা চুপ করিয়ে রাখছিল। যখন কথা শুরু হল তখন অনেক কিছু বেরিয়ে আস্তে লাগল। সেই কথাবার্তা লিখে সবটা বোঝানো অসম্ভব। (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫ | ২১০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sahana | ***:*** | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:০৪69611
  • পড়ব বলে অপেক্ষায় রইলাম । খুব ভালো লাগছে ।
  • ranjan roy | ***:*** | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:২০69612
  • সলিলবাবু,
    অপেক্ষায় আছি। আমি অ্যাডাল্ট এডুকেশনের রিসোর্স সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত। ছত্তিশগড়ে। কিন্তু সেখানে পাওলো ফ্রেইরির নাম বিভিন্ন অনুষঙ্গে পরম শ্রদ্ধাভরে মার্ক্স-লেনিনের মত উচ্চারণ করা হয়। তাঁর পদ্ধতি নিয়ে কোন কাজ করা হয় না। প্রথম কাউকে পেলাম যিনি গভীরভাবে পাওলোর তত্ত্বকে বুঝতে চাইছেন প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে।
    আগ্রহের সঙ্গে শুনছি।
  • pi | ***:*** | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:২৬69613
  • খুব ইন্টারেস্টিঙ্গ । পরের পর্বের অপেক্ষায়।
  • dc | ***:*** | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৯:১৪69614
  • "Freire was explicitly interested in the oppressed. His entire life and work were presented as a vocation committed to assuming their view, their interests. Yet, he ignored the plain fact that for the oppressed, the social majorities of the world, education has become one of the most humiliating and disabling components of their oppression: perhaps, even the very worst."
  • dd | ***:*** | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১২:১০69615
  • সে যাই হোক। ইনি কি সেই সেন্নাইএর dc না কি? তাইলে তো ভেরী গুড।
  • Debabrata Chakrabarty | ***:*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০৫:৪২69617
  • প্রথাগত শিক্ষা দুই শ্রেণীর মানুষ তৈরি করে , শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত অথবা কম শিক্ষিত । স্বভাবতই শিক্ষিত শ্রেণী পৃথিবীর অতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হলেও সমস্ত সুযোগ ,সুবিধা ,প্রিভিলেজ তাদের জন্যই সংরক্ষিত - বাকি অশিক্ষিত অথবা কম শিক্ষিতদের জন্য রয়ে যায় যথা সম্ভব বঞ্চনা এবং সমস্ত ধরনের প্রান্তিক নিঃসঙ্গ রিক্ত অবস্থান ।পৃথিবীর আজ পর্যন্ত কোন শিক্ষা আন্দোলন অথবা এডুকেশনাল প্রজেক্ট কোন সমাজেই ,কোন দেশেই এই বঞ্চনা অথবা প্রান্তিক নিঃসঙ্গ রিক্ত অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি, পারবেওনা । ফ্রেইরে এই অমোঘ সত্য বিষয়ে বস্তুত কেন চোখ বুজে ছিলেন ?প্রকৃত অর্থে বাকি সমস্ত এডুকেশনাল রিফরমারের মতই তিনি এই বঞ্চনার শৃঙ্খল পলিশিং এবং কসমেটাইজিং করার কাজে তার সমস্ত সৎশ্রম দান করেছেন । তিনি শিক্ষা পরিবর্তনের পথের মাধ্যমে,শিক্ষার বৃত্তের বাইরে থাকা নিপীড়িত জনতার সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের নিপীড়নের পদ্ধতি বিষয়ে অবগত হয়ে নিপীড়ন হতে মুক্ত হওয়ার প্রজেক্ট হিসাবে ‘যে Pedagogy for libaration’ এর কথা ভেবেছেন বস্তুত তা বর্তমানের নিপীড়নের পদ্ধতিকেই লেজিটিমেসি দেয় মাত্র ।

    পুঁজিবাদী আধুনিকতার যুগের শুরুতে হেগেল পরিষ্কার করে বলেছিলেন ঃ- জনতা নিজেদের শাসন করতে অক্ষম ,জনতাকে শাসন করতে কাউকে বা কাউকে প্রয়োজন - হেগেল পরবর্তী সমস্ত রাজনৈতিক তত্ব এমনকি 'ডিক্টেটরশিপ অফ দা প্রলেতারিয়েত' এবং তার প্রয়োগ এই দর্শনেরই অনুগামী -অর্থাৎ জনতা নিজেরা নিজেদের কোনমতেই নিপীড়নের হাত থেকে মুক্ত করতে পারেনা - একপক্ষের থেসিস অনুসারে জনতার নিপীড়ন মুক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজন ‘ভ্যানগার্ড পার্টি ‘ প্রলেতারিয়েত শ্রেণীর নেতৃত্ব আর অন্যমতের অনুসারীদের মতে আলোকপ্রাপ্ত কিছু এলিট জনতাকে বিবর্তনের পথ দেখাবে, কখনো নিয়ন্ত্রণ করবে ,কখনো এক ব্যবস্থা থেকে আরেক ব্যবস্থায় বিবর্তনের পথে পরিচালিত করবে । জনতা নেতৃত্ব বিহীন পথে চলতেই পারেনা !

    ফ্রেইরের ‘ Pedagogy for libaration’ এই সেই হেগেলের অমোঘ ভাষণের পরিবর্তিত সংস্করণ । আলোকপ্রাপ্ত কিছু এলিট অথবা ‘ভ্যানগার্ড পার্টি ‘ র জায়গায় , ক্লাসরুম এর বাইরে এডুকেটর বাহিনী চাই , মিডিয়েটর চাই। বস্তুত 'Pedagogy for libaration’ নয় 'libaration from Pedagogy' চাই - ফ্রেইরে এবং তার চিন্তা ব্যবস্থা পরিবর্তনের পরিবর্তে ব্যবস্থা বজায় রাখে এবং তার প্রসার ঘটায় মাত্র । তাই রাডিক্যাল বলে মনে হলেও আদপে বঞ্চনার শৃঙ্খল পলিশিং এবং কসমেটাইজিং করার প্রজেক্ট হিসাবেই রয়ে যায় ।
  • Salil Biswas | ***:*** | ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ১২:৪২69616
  • dc আপনাকে বলছি্য।কিছু মনে করবেন না, আমার মনে হচ্ছে আপনি বোধহয় আরো কিছু যদি সন্ধান করেন, তাহলে এমন কিছু তথ্য পাবেন, যা আপনার মত বদলাতে হয়ত ভাবাবে। ফ্রেইরি কিন্তু এবিষয়ে (education has become one of the most humiliating and disabling components of their oppression) ভাবেননি, তা নয়।
  • Debabrata Chakrabarty | ***:*** | ১০ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:১৮69619
  • সলিল বাবু -নিঃসন্দেহে ফ্রেইরি বিষয়ে আপনার জ্ঞানের তুলনায় আমি নগণ্য কিন্তু মোটের ওপর আমি যা বলেছি ঃ-মার্কসবাদী ভ্যানগার্ড পার্টির পথপ্রদর্শকের ভূমিকা এবং ফ্রেইরির ক্লাসরুমের বাইরে এডুকেটর মিডিয়েটর বাহিনী একই বস্তু - এই ধারনার জন্ম হেগেলিয় দর্শন - যে জনতা নেতৃত্ব বিহীন পথে নিজেরা নিজেদের সমস্যার সমাধান করতেই পারেনা । যদি এই ধারনা কে প্রশ্ন করা হয় তাহলে মার্কসবাদী ঐতিহ্য এবং ফ্রেইরি উভয়ের অস্তিত্বই সঙ্কটগ্রস্ত হতে বাধ্য । আপনি দক্ষিণ আমেরিকার উল্লেখ করেছেন আমি স্পেসিফিক ভাবে মেক্সিকোর 'যাপাতিস্তা' আন্দোলনের কথা বলি । যাপাতিস্তা এই ভ্যানগার্ড পার্টির পথপ্রদর্শকের ভূমিকা ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়ে সদর্ভে ঘোষণা করেছে I shit on all the revolutionary vanguards of this planet । না আমাদের প্রয়োজন আছে কোন ভ্যানগার্ড পার্টির না ক্লাসরুমের বাইরে এলিট এডুকেটর মিডিয়েটর বাহিনী । জনতা নিজেরাই নিজেদের রাস্তা খুঁজে নিতে পারে বরং ভ্যানগার্ড পার্টির নামে কতিপয় ব্যক্তির বিপ্লবের ঠিকাদারিত্ব এবং ক্লাসরুমের বাইরে এলিট এডুকেটর মিডিয়েটর বাহিনীর তথাকথিত শিক্ষা রিফর্ম ব্যবস্থা সিস্টেম বজায় রাখে মাত্র ।
  • Salil | ***:*** | ১০ জানুয়ারি ২০১৬ ১২:৫৯69618
  • সবিনয়ে বলি, দেবব্রত বাবু, আপনি ফ্রেইরি-র সব ক'টা বক্তব্য সম্ভব হলে আর এক বার যদি দেখেন তাহলে হয়ত ভালো হয়। 'পেডাগজি' শব্দটা নিয়ে আর একটু ভেবে দেখলে ভালো হয়। ১৯৮৪তে মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা আলোচনা সভা হয় যেখানে ছিলেন ফ্রেইরি আরও অনেক শিক্ষাব্রতী। সেই আলোচনার বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে 'পাওলো ফ্রেইরি অন হায়ার এডুকেশনঃ এ ডায়ালগ অ্যাট দ্য ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অব মেক্সিকো' (১৯৯৪) নামক বইতে। সেখানে 'পেডাগজি' আর সমাজ পরিবর্তনের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা নিয়ে ফ্রেইরি কিছু কথা বলেছেন। অন্যান্য বহু জায়গাতে এবিষয়ে ওনার আরও কথা আছে।
    জনতা নেতৃত্ব বিহীন পথে চলতে পারেনা (আমি নিজে মানি না) -- এই কথাকে আজ দক্ষিন আমেরিকা নানা ভাবে প্রশ্ন করছে। সে সব কথা নিয়ে ভাবা দরকার -- তা ঐতিহ্যিক মার্ক্সবাদীর সঙ্গে অনেকাংশে না মিললেও।
  • ই না সি | ***:*** | ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০৪:৩১69620
  • পাওলো ফ্রেইরি-র শিক্ষাতত্ত্ব বইটির ইংরেজি অনুবাদের কোমল কপি আমার কাছ আছে। নিতে চাইলে ইমেইল আই ডি জানান।
  • pi | ***:*** | ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০৪:৪৩69621
  • আমার চাই, মেইল আইডি তো জানেন ঃ)
  • sswarnendu | ***:*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ০৫:১৯69623
  • "পাওলো ফ্রেইরি-র শিক্ষাতত্ত্ব বইটির ইংরেজি অনুবাদের কোমল কপি"---এটা কোন বই? pedagogy র english তো free তেই পাওয়া যায়
  • Salil | ***:*** | ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ০৭:৪৬69622
  • Pedagogy বাংলা করেছেন শুভঙ্কর চন্দ। পাওয়া যাচ্ছে বই-চিত্র-তে।
  • চন্দন রায় | 103.67.***.*** | ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:০৯101392
  • আমার এসাইনমেন্টর কাজের জন্য পাওলো ফ্রেইরি নিয়ে যখন জানতে আসলাম গুগলে তখন হঠাৎই গুরুচণ্ডালীতে প্রবেশ করি একটা আশাহত মন নিয়ে, কারনে ফ্রেইরি সম্পর্কে তেমন কোন ভালো তথ্য পাচ্ছিলাম না যা এখানে পেলাম। তার জন্য লেখকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই, ধন্যবাদ স্যার আপনাকে। সেই সাথে রিকুয়েস্ট করছি ফ্রেইরির শিক্ষানীতি সংক্রান্ত কোন বাংলা বা ইংরেজি বই দিয়ে যদি সাহায্য করেন তাহলে একজন শিক্ষার্থীর কনসেনটাইজেশনে অনেক অগ্রগতি হবে বলে আমি আশা করছি। সেই হেতু আমি আমার জিমেইল কমেন্টে লিখছি : pupilchandanroy141@gmail.com           

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন