এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বিদ্যালয় নিয়ে ...

    Salil Biswas লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৪ আগস্ট ২০১৮ | ১৬৫৯ বার পঠিত
  • “তবে যেহেতু এটি একটি ইস্কুল,
    জোরে কথা বলা নিষেধ। - কর্তৃপক্ষ” (বিলাস সরকার-এর ‘ইস্কুল’ পুস্তক থেকে।)

    আমার ইস্কুল। হেয়ার স্কুল। গর্বের জায়গা। কত স্মৃতি মিশে আছে। আনন্দ দুঃখ রাগ অভিমান, ক্ষোভ তৃপ্তি আশা হতাশা, সাফল্য ব্যার্থতা, এক-চোখ ঘুগনিওয়ালা, গামছা কাঁধে হজমিওয়ালা, শুক্রবারের ডবল টিফিন, চিলের ছোঁ, গোলপোস্টে জমা জল, বলশালী ডাকাবুকো সহপাঠীর ল্যাং, আর এক সহপাঠীর সাইকেল-পা, বাজি রেখে বিটনুন খাওয়া, লজেন্স-দিদিমণির ঝাঁঝাঁলো পেপারমিন্ট, টেবিলের নিচে লুকোনো গল্পের বই, অঙ্ক স্যারের বিখ্যাত কিল, বাংলা স্যারের চাপড়, বিজ্ঞান স্যারের স্কেলের বাড়ি, স্যোশাল সায়েন্স পড়তে গিয়ে জাড়োয়াদের খাটাশ খাওয়ার কাহিনী, ড্রয়িং স্যারের পেন্সিল কাটার ছুরি, সেনেট হলের টুকরো টুকরো হওয়া, ব্যাডমিনটন খেলে টিনের মেডেল, গল্পের বই পড়তে পড়তে এক সন্ধ্যেতে শরদিন্দু-র হারিয়ে যাওয়া, ‘ইংরেজিতে হাইয়েস্ট পেয়েছিস?’ বলে ফার্স্টবয়ের বক্রোক্তি, শরৎ বুক হাউসে দাঁড়িয়ে বাবার সঙ্গে টোস্ট খাওয়া, বর্মণ কাকুর ক্রাচ আর ইজিচেয়ার, ‘ক্যাপ্টেনের মেয়ে’ আর ‘পালিয়ে চল’ আর ‘এক যে ছিল জাদুকর’ পড়তে পড়তে একটু একটু করে বড় হওয়া, দূর থেকে ট্রাম পোড়া গন্ধ – আরো কত কী মিশিয়ে আমার হেয়ার স্কুল।

    তারপর দিন কাটে। নিজে এক সময় ‘শিক্ষক’ হয়ে যাই। সুপ্রকাশ স্যারের (সুধীর ভট্টাচার্য) ভবিষ্যৎবাণী সঠিক প্রমাণ করে। পুরো সঠিক কিনা জানি না, আজও নিজেকে ‘শিক্ষক’ বলতে কুণ্ঠিত বোধ করি, ওটা যে বড্ড বড় দাবী। অনেক রকম স্কুল দেখেছি জীবনে। আমি কি তার কোনোটার জন্য যোগ্য? জানি না।
    তেমন কয়েকটা স্কুলের কথা বলি।

    সত্তরের দশকের শেষের দিকে পড়ি ‘লেটার টু এ টীচার’। অনুবাদ করে লিখি ‘আপনাকে বলছি স্যার’। নিজেকে আরও অশ্রদ্ধা করতে শিখি। প্রশ্ন করি কেন পড়াই, কাকে পড়াই, কী পড়াই। নিজেকে কার হাতে যেন ক্রীড়ণক মনে হতে থাকে। আমাকে দিয়ে নিজেদের কাজ কেউ করিয়ে নিচ্ছে, সেটা বুঝতে পারি। তার বিরুদ্ধতা করতে হবে, সেটাও বুঝতে পারি। কিন্তু এক অর্থে তো দাসত্ব করি, তাই বিরুদ্ধতাও খুব জুতসই যে হয় না, সেটা বুঝে হতাশায় ভুগতে ভুগতে মনে করি আমার বাবা-র কথা, যিনি বলতেন, সারা জীবন যে অন্ধকার ঘরে থাকে তার উপরে একটা ইলেকট্রিক বাল্বের কী ভীষণ প্রভাব বুঝতে শেখো, বুঝতে শেখো, লিখতে জানা পড়তে জানা একটা বড় সুযোগ, সকলে পায় না। কাউকে এক পাতা পড়তে শেখানো মানে তাকে এক নতুন জগতের সন্ধান দেওয়া। সেটুকুও যদি করতে পারো, একটা বড়ো কাজ করলে।

    সেই চেষ্টায় লেগে পড়েছিলাম ওই সত্তরের দশকের শেষ থেকে। সেই লেগে পড়ার কথা একটু বলি।
    আমার বাবার মত শিক্ষক আর দেখিনি। তাঁর কথা মেনে চলার চেষ্টা করে আসছি সেই থেকে।
    আমরা কয়েকজন বন্ধু, সকলেই কলেজে পড়াই, তখন বীতশ্রদ্ধ দিনগত পাপক্ষয়ে। চোখের সামনে দেখি কী বস্তুকে শিক্ষা বলে চালানো হচ্ছে। বাচ্চা ছেলে-মেয়েগুলোকে কীভাবে পেষা হচ্ছে তোতাকাহিনী অনুপ্রাণিত জাঁতাকলে। ‘শেখা’ এই ধারনাটাই সেখানে ব্রাত্য। বাধ্য হয়ে আমরা পরীক্ষা পাশের ফন্দিফিকির ‘ট্রিক’ শেখাই, আর কিছু নয়। অন্যতর চেষ্টা দেওয়ালে বাধা পেয়ে ফিরে আসে। শিক্ষক আন্দোলন নামক একটি বস্তু সামনে ছিল। সেখানেও ‘শেখা’র ধারণা ঠাঁই পায় না। সেখানকার দ্বিচারীতা আমাদের অল্প দিনেই বিবমিষা আনে।

    কী করা যায়? এই প্রশ্ন নিয়ে ফিরি আমরা এখানে-সেখানে। আমাদের তো কোনো সংগঠন নেই, রাজনৈতিক দলও নেই। তথাকথিত সমাজসেবা করতে ঘুরে বেড়াইনি কোনোদিন। ‘সমাজসেবা’ জিনিসটার মধ্যে উঁচুনিচু ভেদাভেদ লুকিয়ে থাকে। অনেকে তো থাকে পেশাদার সমাজসেবী, তাই দিয়েই করে খায় তারা। “নিরক্ষরতা-দূরীকরণ” বস্তুটিতেও আস্থা নেই আমাদের।

    এর মধ্যে এক বন্ধু খবর আনল, কোনো একটা ওই “সমাজসেবী” সংগঠন এ্কটা/দুটো স্কুল খুলতে চাইছে কলকাতার কিছু প্রান্তিক এলাকায়। আমরা চাইলে সেগুলো চালাতে পারি। শুনে একটু ঘাবড়ালাম। দলে ভিড়তে হবে নাকি! এরা সাধারনত উল্টোপাল্টা ব্যাপারে জড়িত থাকে, বিদেশ থেকে টাকাপয়সা নেয়। “না, না,” বন্ধু বলে, “নিজেদের মত পড়াতে দেবে এরা। স্বাধীন ভাবে।“

    তাহলে ভালো। আমরা তৈরি হই। যেতে হবে ঝালদার মাঠ, টালিগঞ্জের এক দুর্গত বিশ্রী এলাকা। সাবধান! বলে সবাই। খারাপ জায়গা। আরে মানুষই তো থাকে ওখানে! দেখ গিয়ে, বলে সবাই। তবে চলে আসতে রাত কোরো না কিন্তু।

    কী করে গেলাম, কী ব্যবস্থা হল, বিস্তারিত বলছি না। বড়ো রাস্তা থেকে অনেকটা হেঁটে গিয়ে জমাট এক ‘বস্তি’-র মধ্যে একটা এজমালি জায়গা। সেখানে একটি মন্দির, কীসের বা কার, এখন আর মনে নেই। অবশ্য সব মন্দিরই এক রকম হয়। তারই সামনে বাঁধানো চাতালে স্কুল বসবে। সন্ধ্যের সময় শাঁখ ঘণ্টা বাজে খানিক, এক পাশে কিছু মানুষ বসে আড্ডা দেন, আর এক পাশে বাচ্চারা এসে বসে। স্কুল হবে এটাই।
    শুরু হল স্কুল। আমি ইংরেজি পড়াব বলে একটু বেশি ছেলেপিলে আসে। কীভাবে পড়াব, কী পড়াব, কিচ্ছু ধারণা নেই। ওই এ বি সি ডি দিয়েই শুরু করি। বেশির ভাগ বাচ্চা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। একটু-আধটু গল্প বলি। কোনো সাড়া পাই না। কী হোলো? কলেজে তো এমন হয় না। অল্প দিন মফঃস্বলে একটা স্কুলে পড়িয়েছি প্রথম চাকরিতে। সেখানেও তো এমন হত না।

    তখনও আসল কথাটা বুঝিনি। তখনও এনিয়ে কোনো অভিজ্ঞতাই হয়নি আমাদের। তত্ত্বগত ভাবে জানি – আমরা কারা আর ‘ওরা’ কারা।

    তবু স্কুল চলল। আমরা নিজেদের মত পড়িয়ে যাই। অন্য সমস্যা যে দানা বাঁধছে, তা তখনও বুঝিনি। যারা পড়তে আসে তারা, তাদের বাবা-মায়েরা আমাদের ভালো ভাবেই কাছে নেয়। আমি একটু সঙ্কুচিত হয়ে থাকি, সহজ হতে পারি না, যদিও বাচ্চাগুলিকে ভালোই লাগে।

    সব কিছু লিখছি না। অনেক কিছু ঘটেছিল। আমি তখন কেবল পড়াতেই যেতাম। অন্য কিছুতে বড় একটা থাকিনি।

    একদিন গেছি যথারীতি। কেউ নেই মন্দির চাতালে। কী ব্যাপার? স্কুল আর হবে না। কেন? কী হলো?
    পরে জানলাম। ওখানকার বাহুবলীরা আমাদের বন্ধুদের বলেছে, আপনারা খুব ভালো, মানুষের উপকার করছেন, কিন্তু তার বিনিময়ে নিশ্চয় কিছু পেয়ে থাকেন ... উত্তরে বন্ধুরা বলেন, আমরা তো কিছু পাই না, উল্টে কিছু দিয়ে থাকি ... শুনে তারা বাঁকা হেসে বলে, তাই বুঝি ... কিন্তু আমরা তো অন্য কথা শুনেছি ... যাই হোক, উপকার-টার করতে গেলে আমাদের কিছু দিতে হবে ...

    কী আর করা, আমরা রণে ভঙ্গ দিয়ে স্কুল ছেড়ে চলে এলাম।

    অল্পদিনের মধ্যেই আবার এল খবর, আর একটা স্কুল বানাবার সুযোগ আছে। এটা সুইনহো স্ট্রীটে, একটা ছোট ‘বস্তি’তে স্থানীয় ক্লাবঘরে। এটাও ওই এনজিও-রই খবর।

    এলাম সেখানে। বিজন সেতু থেকে নেমে বাঁদিকে হেঁটে খানিকটা। শীতলা মন্দির সামনে। পিছনের অংশে কাঁচা মেঝেতে কিছু টাইল বসানো। একপাশে জলার দিকে পিছন করে একটা সাদা-কালো টিভি। তখন রঙিন টিভি এত চল হয়নি। সেখানে তালিমারা ‘শতরঞ্চি’ পেতে বসা। সন্ধ্যেবেলা বাচ্চারা আসে স্কুলের পরে। বস্তির সকলেই উৎসাহী বাচ্চাদের পড়াশোনায়। দু’তিন জন একসঙ্গে যাই। ক্লাস অনুযায়ী ভাগ করে নিয়ে আলাদা আলাদা বসি। দেবাশীষের বাড়ি কাছেই। তপন আসে। আসে অর্পিতা নন্দিতা। আসে সন্দীপ। দীপাঞ্জন আরতীদি তো আসেই। টুকুনের বন্ধুরা আসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সবিতা গান শেখাবে। ওর নিজের লেখা নিজের সুর দেওয়া। আমাদের বন্ধুরা অনেকে যে আসে তা নয়। পড়াতে বসলে, বসতিবাসী কারো পাশের চায়ের দোকান থেকে এসে যায় এক ভাঁড় করে চা। পয়সা দিতে গেলে জিভ কাটে সকলে। বাচ্চারা, তাদের মায়েরা, (বাবাদের বেশি দেখা যেতো না) সকলের উৎসাহ আর পড়ার ইচ্ছা আমাদেরও উৎসাহী করে। ঝালদার মাঠের তুলনায় স্বর্গ। এখানে কাটবে আমাদের অনেক বছর। আজ তিরিশ বছর পরেও, সুইনহো লেনের তখন ছোট এখন প্রাপ্তবয়স্ক শুকদেব আমাদের ভোলেনি। শুধু ভোলেনি না, আমাদের শেখানো গান ওর মেয়েদের শিখিয়েছে। গেয়ে শুনিয়েছে দুই কিশোরী, একটি স্মৃতিবিধুর অনুষ্ঠানে।

    ফেরার সময় কসবা মোড়ে চায়ের দোকানদার দীপাঞ্জনের চায়ের দাম নেন না, কী দাম নেবো বলুন তো, খান তো শুধু চায়ের রঙ করা গরম জল। লাল চা তখনও বেশি কেউ খেতো না। আমরাও না। ডি আর সি বরাবরই আলাদা।

    এই স্কুলেই – বলতে গেলে – প্রথম আমরা অপটু হাতে ফ্রেইরি-র চেতনায়নের তত্ত্ব প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছি। সীমিত সাফল্যও পেয়েছি। শিখে গেলাম কী করে প্রোজেকটর বানানো যায় টিন আর চশমার দোকান থেকে ঘসিয়ে আনা লেনস দিয়ে। দেখানো হত সব চাইতে কম দামী ‘অরো’ স্লাইড ফিল্মে তোলা নানান ছবি। নিজেরা গান লিখে সুর দিয়ে গান গাওয়ানো হত। চেষ্টা করা হত বাচ্চাদের মায়েদের পড়তে বসানোর। মেয়েদের বোঝানো হত বিয়ে করিস না বাচ্চা বয়সে। একটি পড়ায় মনোযোগী মেয়েকে প্রায় জোর করে তার বাবার বয়সী একটি লোকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া দেখেও আমরা কিছুই করতে পারিনি। নাটক করানো হত, সেও নিজেদের লেখা। ছোট একটি পত্রিকা বের করা হয়েছিল ছাত্রদের লেখা আর আঁকা ছবি দিয়ে। আমাদের ভাবনা ছিল স্থানীয় ব্যাপারে আমরা জড়িয়ে পড়ব না। নির্বাচন বস্তুটি থেকে সযত্নে দূরে থাকতাম বলে রাজনৈতিক দলগুলি আমাদের জ্বালাতো না। ‘পার্টি’ এক সময় ভাবল, এই কাজের বিবরণ তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বেশ দেখাবে। একটি মেয়েকে পাঠানো হল, নিজেদের দখল জারি করতে। কিন্তু কাজটা এতই ‘অ-বিপ্লবী’ যে দল অল্প দিনেই আগ্রহ হারালো। মেয়েটি এদিকে ততদিনে আমাদের সঙ্গে মিশে অন্যভাবে ভাবতে শুরু করেছে। কাজেই ঝটিতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল তাকে। অন্য বন্ধুরা আমাদের ভূয়সী প্রশংসা করত এবং সাহায্য করতে এগোতো না।

    এই করে বহুদিন চলেছিল সেই স্কুল। তারপর দেবাশীষ চলেস গেল অন্যত্র চাকরি নিয়ে। এক সময় তথাকথিত ‘এনট্রপি’ ঢুকে পড়ল আমাদের অকর্মন্যতার হাত ধরে। আমাদের কেউ কেউ তারপরেও অনেক দিন প্রচেষ্টাটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। ওই শুকদেবও চেষ্টা করেছিল স্কুল চালিয়ে যাবার, অন্য দু’একজনের সঙ্গে। কিন্তু সে চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।

    স্কুল বন্ধ হবার আরো একটি কারণ ছিল। স্কুলটা নিয়ে আগ্রহ কমছিল। বসতির সব বাচ্চাই স্কুলে যাচ্ছিল। তাদের দাবী ছিল স্কুলের পড়া পড়িয়ে দিতে হবে। সে কাজ তো আমরা করতাম না। কেন করি না সে কথা মানুষকে বোঝাতে পারিনি। হৃদয়ঙ্গম করাতে পারিনি, একে চন্দ্র অ-য়ে অজগর ‘এ’-তে অ্যাপল পড়ার নিরর্থক পরিশ্রমের অসারতা। বোঝানো যাবেও না, যতদিন না মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক জয়েন্ট বিএ এমএ জড়িত আগডম বাগডমের বিষ সকলের মন থেকে দূর করা যাবে। অন্যের ভাষা ভালো আমারটা খারাপ, আমার সংস্কৃতি নোংরা ওদেরটা কত সুন্দর, আমি তো কথা বলতে জানিই না, আমার কথা বলে দেবেন অমুক দাদা আর তমুক খুঁটি – যতদিন না এই সব কেউটের ছোবলের অ্যান্টি-ভেনম আমরা আবিষ্কার করতে পারব, ততদিন চলতেই থাকবে বোঝানো যাবেও না। একথা জোর দিয়েই বলছি। কারণ্ সম্প্রতি মাধ্যমিকের পড়ার পাশে পাশে জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষা সংগঠিত করতে গিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা অনেকটাই নঞর্থক হয়েছে। সে কথা বলব অন্যত্র।

    ওই স্কুল চলতে চলতেই আরও তিন জায়গায় অল্প দিন করে স্কুল চলেছে।

    বাঘা যতীন রেল স্টেশন থেকে অল্প দূরে, খালের ধারের বসতিতে এক পাড়ে একটা গাছের নিচে বাঁধানো বেদীর উপর বসতো আমাদের স্কুল। সন্ধ্যে হলে কুপি আর লণ্ঠন আর মোমবাতির মিটমিটে আলো খালের নোংরা জলেও একটা মায়া সৃষ্টি করত। তেমনই ম্লান আলোয় ওই বেদীতে বসে চলত পড়াশোনা। ওখানে ‘পার্টি’র একটি ছেলে আমাদের অনেক সাহায্য করেছিল। এই ছেলেটির কাছেই শুনেছিলাম, তার গুণধর নেতাদের জনগণের প্রতি ভালোবাসার কাহিনী। চা খেতে দিলে খেতেন না তাঁরা, বলতেন, না খাওয়াই ভালো, এখানে তো ঘরে ঘরে টিবি। মনে আছে, কাছেই একটা মাঠে, কতগুলো পাইপ আর কী যেন একটা আবর্জনার যন্ত্রের পাশে, আমাদের সেই টিনের প্রোজেকটর নিয়ে ছবি দেখিয়ে চিনা একটি কৃষক ছেলের স্কুল-ছাত্র থেকে ভুমিদাস হয়ে যাবার গল্প বলার কথা, মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে এক পুলিস-পুঙ্গবের সেই গল্প মন দিয়ে শোনার কথা। এক সময় ফুরিয়ে গেল সেই স্কুল, যতদূর মনে পড়ে লোকাভাবে।

    আর একটি স্কুল তৈরি হয়েছিল বেলেঘাটায়। মারুতি গাড়ির জন্য ‘ফিটিংস’ তৈরির একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার পাশে, প্রাক্তন ইউনিয়ন ঘরে এখানে বসত স্কুল। পড়তে আসতেন বয়স্ক মানুষেরা। এখানে এক মে দিবস উদযাপনের কথা মনে আছে আমার। সেখান থেকে অল্প দূরেই ছিল সেই বাড়ি যেখানে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী নামে এক ভদ্রলোক দাঙ্গার সময় অনশন করে ছিলেন। এখানে একজন দিদির কথা বিশেষ করে মনে পড়ে, যাঁর শেখার আগ্রহ ছিল অপরিসীম। কিন্তু সারা দিন দূরের কারখানায় হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরে, অনেকটা হাঁটার পরে যখন তিনি পড়তে আসতেন, বইয়ের অক্ষরগুলি তাঁর কাছে আর অর্থবহ হত না। এই ক্লান্তিই বেলেঘাটার স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে সাহায্য করেছিল – বুক ভেঙে দেবার মত অল্প দিনে।

    তারপর আমরা এলাম কাশীপুর। গঙ্গার ধারে অস্ত্র কারখানার পাঁচিলের পাশে একটা জমি জুড়ে, যাকে বলে, সেই ঝুপড়ি-পট্টি – ‘বস্তি’ বললে অনেক বাড়িয়ে বলা হবে। সেখানেও আমাদের নিয়ে এলো সেই ‘সমাজসেবী’ সংগঠন। পলিথিন চাদর আর ছেঁড়া চট আর দোমড়ানো টিন দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ঝুপড়ি, কোনো রকমে নিচু হয়ে ভিতরে ঢোকার পথ। ভিতরের কথা না বলাই ভালো। কাগজ কুড়িয়ে দিন গুজরান করেন এই মানুষগুলো। মহিলারা কেউ কেউ ঠিকে কাজ করেন বাবুদের বাড়িতে। মাথা তুলতেই ভুলে যাওয়া এই মানুষেরা হাতজোড় করে আমাদের বলেন, আমাদের বাচ্চাদের লেখাপড়া শেখাবেন, আপনাদের মহত্ব ভুলবো না কখনও। স্কুলঘর ওঁরাই তৈরি করেন পোড়া বাঁশ আর সরস্বতী পূজা প্যান্ডালের ফেলে দেওয়া চাটাই দিয়ে। অনুষ্ঠান করে স্কুল শুরু করিয়ে দেয় সেই ‘সমাজসেবী’ সংগঠন। চলতে থাকে স্কুল। আমাদের অমতেই একটি মেয়েকে ‘টিচার’ হিসেবে কাজে লাগায় ‘সমাজসেবী’রা। মেয়েটি চাকরি পাবে, এই আশায় আমরা আপত্তি করি না।

    পাশের কাঠগুদামের মালিক আপত্তি তুলে এসেছে প্রথম দিন থেকে। জমিটা শেষ অবধি হাতানো তার মতলব। আমরা আমল দেই না। খিটিমিটি লেগেই থাকে। আমাদের নানা রকম ভয় দেখানো চলতে থাকে। ইতিমধ্যে, ‘সমাজসেবী’রা পাদ্রীদের দেওয়া বিনা পয়সায় বিলি-যোগ্য বই বসতিতে এক টাকা মূল্যে বিক্রি করে। নিতেই হবে সকলকে। ঠগবাজীটা বুঝতে পেরে বসতির একমাত্র ঘাড়-শক্ত মহিলা প্রতিবাদ করতে চাইলে সমস্ত বস্তিবাসী তাঁকে বাধা দেয়। যুক্তি, ‘সমাজসেবী’রা অনেক সাহায্য তো করে! আমরা জানতে পেরে ঝগড়া করি। আমাদের কথা কানে তোলাই হয় না। এমন আরো অনেক গোলমাল নজরে আসে আমাদের। আগে আসেনি নজরে। ওই মহিলা আমাদের অনেক কথা বুঝতে শেখান। আমরা ঠিক করি – এই জোচ্চুরি মেনে নিলে আমরা ওদের স্তরেই নেমে যাবো। তাই এখানে আর কাজ করা যাবে না।

    কিন্তু আমাদের কিছুই করতে হয় না। এক নির্জন দুপুরে স্কুলঘর পুড়ে যায় অজানা (আসলে জানা) দুর্বৃত্তদের হাতে। আমাদের জানানো হয়, বাধা দিতে গেলে বাচ্চাদেরও পুড়ে মরতে হতে পারে। চলে আসি আমরা।
    এবারে আমাদের শেষতম প্রচেষ্টার কথা।

    সে বিষয়ে কিছুই বলব না। এখনও সময় আসেনি চূড়ান্ত কিছু বলার। শুধু বলি, কথার ফুলঝুরি দিয়ে কিছু চেনা যায় না। কাজের মধ্যে গেলে তখনই নিষ্পত্তি হয় অনেক আশঙ্কার। আরও বলি, দীর্ঘ তিন/চার বছর ঘনিষ্ঠ ভাবে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিশে বুঝেছি, সঠিক পথে হাঁটলে ছাত্রদের মনে নিয়ে আসা যায় অচেনা কৌম-ভাবনার অন্য হদিশ।

    মনে হচ্ছে তো, জোড়াতালি দিয়ে শেষ করলাম। ঠিক ধরেছেন। সব জায়গা সব কথা বলার জন্য উপযুক্ত নয়।
    প্রচেষ্টা চলতেই থাকবে। আমি না থাকলেও। সেই আশায় বুক বাঁধি। মনে করি আমার বাবার কথা। মনে করি, হেয়ার স্কুলের ‘স্যার’দের কথা। তাঁদের নিয়ে গর্ব আছে আমার। তাঁদের দৈনন্দিন শিক্ষাদানে কতটুকু কী শিখতে পেরেছিলাম তা মনে নেই, হয়ত তেমন কিছু শেখাতে পারেননি তাঁরা, কিন্তু তাঁদের অনেকের কাছে অস্থিরমতি আমি জ্ঞানার্জনের কিছু পন্থা তো শিখেইছিলাম। নাহলে আমি বাঁচলাম কী করে।

    কুমার বাবু ‘স্যোশাল সায়েন্স’ পড়াতে গিয়ে জাড়োয়াদের খাটাশ খাওয়ার গল্প বলেছিলেন। অনেক দিন পরে, কোনো এক দিন তাঁকে বলতে শুনেছিলাম, “সলিল, হ্যাঁ, ও তো আমার ছাত্র!” তাঁর কন্ঠে আনন্দের অনুরণন আমাকে গর্বিত করেছিল।

    “হে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ, আপনাদের প্রণাম!”
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৪ আগস্ট ২০১৮ | ১৬৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ১৪ আগস্ট ২০১৮ ০৪:১৬63857
  • আপনার প্রচেষ্টাকে সেল্যুট। বিকল্প শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
  • কল্লোল | ***:*** | ১৪ আগস্ট ২০১৮ ০৫:২৫63858
  • আমরা কলেজের এক বেঞ্চে বসা বন্ধুরা আজও গর্ব করি আপনাকে আর হিতেনদাকে আমাদের শিক্ষক হিসাবে পেয়েছিলাম। কলেজের পরীক্ষা পাসের পড়ানোর ফাঁকে আপনাদের দেওয়া অন্যতর শিক্ষা আজও আমার পথচলার সাথী।
    কিন্তু আজ আপনার সাথে তক্কো জুড়তে ইচ্ছে করছে। অবশ্য এই দুঃসাহসটাও আপনার শিক্ষা।
    আপনাদের এই বিকল্প শিক্ষার খোঁজ খবর নিয়মিত পাই নানান বন্ধুদের কাছ থেকে। এখন যে প্রকল্পটিতে আপনারা আছেন সেটা হয়তো অন্য প্রকল্পগুলির তুলনায় কমঝামেলার। চট করে বন্ধ হবার ভয় নেই।
    কিন্তু, এই শিক্ষা আমাদের কতদূর নিয়ে যাবে? মাধ্যমিক দিতে গেলে সেই খোঁয়াড়েই ঢুকতে হবে এবং সেখানেই থেকে যেতে হবে, কারন আর কোন রাস্তাই নেই। যেকোন জীবিকায় যেতে গেলে ডিগ্রী আবশ্যক। সেটি খোঁয়াড়ে না ঢুকলে পাওয়া যাবে না।
    হতে পারে ভিতটা বিকল্প শিক্ষায় তৈরী হলে সেই ছাত্র কিছুটা অন্য মানুষ হয়ে উঠতে চাইবে।
    এখানেই আমার প্রশ্ন - আপনি কোন শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এসেছেন? আপনার সাথে যারা এই বিকল্প শিক্ষার জন্য আজও লড়ে যাচ্ছেন, তারা কোন শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এসেছেন? আমি যতদূর জানি তাদের বয়সের ফারাক বেশ। বয়সের ফারাক প্রায় ২০/২৫ বছরের। ফলে সমাজ ও সময়ের দুস্তর ব্যবধান সত্ত্বেও আপনারা আজও বিকল্প শিক্ষা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। এটা সম্ভব কি করে? আপনারা সকলে পরীক্ষা পাসের ব্যবস্থা থেকেই উঠে আসা।
    এই প্রশ্নগুলোর রাজনৈতিক শুদ্ধতা বা অশুদ্ধতার খবর জানি না। তবে আপনাকে এসব প্রশ্ন করা যায়, তাই করলাম।
  • Salil Biswas | ***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৫63859
  • তুমি ঠিকই বলেছ। এই কথাটা আমাকে খুব বিচলিত করে। বলছি আমি নিজেই, আমরা তো সেই ব্যবস্থা থেকেই "করে" খেয়েছি। তার ফলেই লড়াইটা জোর দিয়ে করতে গেলেই একটা কিছু বারে বারে গলা আটকে দিয়েছে। আজ, জীবন সায়াহ্নে মনে হয়, যতক্ষণ এই ব্যবস্থাকে শেষ করা যাচ্ছে, কিছুই হবার নয়। শুধু, এই কিছু হবার নয়, এটা বোঝাবার চেষ্টা করে যাওয়া ছাড়া কীই বা করতে পারি। তবে আবার, ওই যে বিশ্লেষণী চেতনা-উন্মেষের উপায় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করে, হয়ত কাঠবেড়ালীর ভূমিকায় নামা যেতে পারে। জানি না ...
    এনিয়ে যা কিছু ভাবছি, লিখে যেতে চেষ্টা করছি ... সেখানেও মুশকিল ... এই ভাবনা জরুরী, নাকি আজকের ওই ভয়ঙ্কর বিপদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাওয়া জরুরী ... জানি না ...
  • Kallol Dasgupta | ***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৫63860
  • এখানেই একটা মুস্কিলে পড়ছি আমরা সব্বাই। অন্য শিক্ষা, অন্য স্বাস্থ্য, অন্য রাজনীতি একটা পর্যায়ে এসে "লাইনে" ঢুকতে হচ্ছে।
    অন্য শিক্ষার সফলতম উদাহরণ (একটা সময় পর্যন্ত) রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী। কিন্তু ঐ প্রথম ২০ বছর। বা হয়তো অতোও নয়, হয়তো প্রথম ১০ বছর। তারপর "লাইনে" চলে আসা।
    বিশ্বভারতী ডিগ্রি দিতো না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকেও বাজারের কাছে নতি স্বীকার করতে হয়।
    সেদিন ইন্দুমতী সভাগৃহে দীপাঞ্জনদা, আপনি যে অ্যাবারেশনের কথা বল্লেন সেটা পথ হতে পারে। এই ব্যবস্থার ভিতরেই সাবোতাজ করা।
    আমরা/আপনারা এইসব অ্যাবারেশন ও সাবোতাজের ফসল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন