এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রান্নাঘর ও রাজ্যপাট

    Durba Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৮১৮৯ বার পঠিত
  • কিছুদিন যাবৎ চেষ্টা করছিলাম লিঙ্গভিত্তিক শ্রমবন্টনের চিত্রটা বুঝতে।

    যত পুরোনো হচ্ছি কাজের বাজারে তত দেখছি ওপরের দিকে মহিলাদের সংখ্যা কমতে থাকছে। কর্পোরেট সেক্টরে প্রায়শই সংখ্যা দিয়ে দেখানো হয় অনেক মেয়ে কেরিয়ার শুরু করলেও মাঝপথে ছেড়ে যাচ্ছেন বা কোনো রকমে চাকরি বজায় রাখতে পারলেই সন্তুষ্ট থাকছেন। নতুন কিছু করার চেষ্টা করছেন না বা বাড়তি দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। ফলে কর্মক্ষেত্রে তারা পিছিয়েই থাকছেন।

    এদিকে মহিলারা কর্মক্ষেত্রে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। গত কয়েক বছরে যৌন হেনস্থা নিয়ে মহিলারা মুখ খোলায় চারিদিকে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ক্ষমতাবান পুরুষরা তাতে আতঙ্কিত হয়ে মহিলাদের প্রায় একঘরে করে দিতেও উঠে পড়ে লেগেছেন। প্রায় শাঁখের করাত অবস্থা।

    মহিলা কর্মীদের ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। আমরা মহিলারা শুধু টাকার লোভে কদিন অন্তর চাকরি বদলাই না। আমরা পুরুষদের চেয়ে কম কর্মক্ষমও নই। স্থায়ী কর্মী হিসেবে মহিলাদের নিয়োগ সেক্ষেত্রে লাভজনক হবার কথা। আর কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে যে কোনো বিষয়কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ করে দেয়। তাই ইদানিং কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য বাড়াতে সংস্থাগুলিও মহিলাদের নিয়োগ বাড়াতে তৎপর হয়েছে।

    কিন্তু মহিলাদের কাজের উপযুক্ত পরিবেশ দেবার জন্য নিয়ম কানুন বা ব্যবস্থাপনায় কিছু রদবদল ঘটানো প্রয়োজন। সংস্থা ব্যাপী বদল ঘটাতে গেলে যারা এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন, তাদের মধ্যে মহিলাদের থাকা প্রয়োজন। বা বলা ভালো নেতৃত্বে মহিলাদের জোরালো উপস্থিতি প্রয়োজন। কিন্তু ওপরের দিকে মহিলাদের সংখ্যা ভীষণ কম হওয়ায় এই কাজটা হচ্ছে না। ফলে বহু মহিলা ভুগছেন।

    শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী যে ছবিটা পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে একই কাজের জন্য একই রকম কর্মক্ষম মহিলারা পুরুষদের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পান। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয় যে মহিলারা নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে পা রাখতে চান না, বাড়তি দায়িত্ব নিতে চান না, বাড়তি সময় দিতে চান না, কোনো রকম ঝুঁকি নিতে চান না ইত্যাদি। মোদ্দা কথা হল কর্মক্ষেত্রে অগ্রসর হতে তেমন আগ্রহ দেখান না। আচ্ছা সত্যি কি তাই?

    আমার ষোলো বছরের কর্মজীবনে আমি যা দেখছি তা খানিকটা আলাদা। বেশির ভাগ মহিলাকেই পেশার বাইরে এতো বেশি দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে হয় যে তারা আর পেরে ওঠেন না। আমি আমার নিজের ক্ষেত্রে দেখে আসছি গত দশ বছর ধরে আমার সঙ্গে একই প্রজেক্টে যারা কাজ করছেন তারা সবাই পুরুষ। তারা সবাই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসেন। বাড়িতে থাকা মহিলারা তাদের খাবার গুছিয়ে দেন। সন্ধের পরেও দীর্ঘ সময় অফিসে থাকতে তারা তেমন দ্বিধাবোধ করেন না। অফিসের পরে তারা জিমে যান, কখনো খেলতে, খেতে বা মদ্যপান করতে যান। কারণ তাদের কাউকেই বাড়িতে কোনো কাজ করতে হয় না। রান্না বা শিশুদের দেখাশোনা ইত্যাদি সবটাই তাদের গৃহ কর্ম নিপুণা স্ত্রীরা সামলান। এদের সহকর্মী হিসেবে এদের সঙ্গে তাল মেলাতে আমি হিমশিম খেতে থাকি। সন্ধে বেলা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য ছটফট করি। কারণ আমায় বাড়িতে এসে রাঁধতে হয়, বাচ্চার লেখাপড়া দেখতে হয়।

    আমার কিন্তু পুরুষ সহকর্মীদের চেয়ে নতুন কাজ শেখার বা করার আগ্রহ এতটুকু কম নয়। কিন্তু সব সময় মাথায় রাখতে হয় সংসার আর সন্তান সামলে তবেই কাজ করতে হবে। কর্মসূত্রে বেশ কিছু মেয়েকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তারা সবাই প্রায় আমার মতোই অতিরিক্ত পরিশ্রমে ক্ষয়ে যেতে যেতে নিজেদের স্বপ্ন গুলোকেই মেরে ফেলছে। প্রতিনিয়ত। দক্ষিণ ভারতে দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে দেখেছি নিচুতলার কর্মীদের প্রায় ৫০% মেয়ে। তারা যথেষ্ট শিক্ষিত, ভালো রোজগার করে, একাই একটা সংসার চালানোর ক্ষমতা রাখে। কিন্তু তার পরেও বাড়ির লোকের মন জোগাতে রাত থাকতে উঠে বাড়ির সব কাজ, রান্না নিজের হাতে সেরে তবে অফিসে আসে। তাই অফিসে একটু সেজেগুজেও আসতে পারে না। শুধু তাই নয়, এর পরেও পান থেকে চুন খসলে তাদের ওপর অত্যাচার হয়।

    বিয়ের বাজারে এখনো পুরুষরা বড়লোক বাবার গৃহ কর্ম নিপুণা মেয়েকেই পছন্দ করেন। বিয়ের যৌতুক হিসেবে অনেক টাকা আর বিনা পারিশ্রমিকে খাটানোর মত বৌ পেলে ভালোই লাগার কথা। বৌ স্বনির্ভর হলে তার নিজস্ব মতামত থাকে। তাকে অত সহজে যা ইচ্ছে বোঝানো বা করানো যায় না যে।

    নেহাত মন্দা আর মূল্যবৃদ্ধি ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, তাই আমরা কিছু মেয়েকে রোজগার করতে কাজে বেরোতে দেখছি। কিন্তু তাতেও কর্মক্ষেত্রে উন্নতিতে তাদের বাড়ির কেউ বিশেষ উৎসাহ দেন না। তার চেয়ে তাদের হাতের রান্নার সুখ্যাতি করেন। যে মহিলা সংসারে উদয়াস্ত পরিশ্রম করেন, তাতে বাড়ির স্বার্থপর পুরুষরা মহত্ত্বের শিরোপা দিয়ে অন্য মেয়েদের বোঝাতে চান, মেয়েদের ঠিক এই রকম হওয়া উচিত।

    তাতে যদি আমার মত সমাজের সব নিয়ম কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখানো মহিলার সামনে পড়তে হয়, আঁতে কিঞ্চিৎ ঘা লাগে বইকি। আমার কিছু সহকর্মী আমায় সোজাসুজি বলেছেন, আমি ভারী পুরুষালি। তাই আমার বিয়ে যে টেঁকেনি, সেটাই স্বাভাবিক। অবশ্য আমার বিয়েটা টিঁকে গেলে আমিই হয়তো আর টিঁকতাম না। শুধু তাই নয়, প্রায়শই আমার সামনে তারা আলোচনা করেন, কেন মেয়েদের বাড়িতে থাকা ভাল ইত্যাদি। সুখী সংসারী মহিলারাও আমায় কিছু কম কথা শোনাননি। ঘরে ও বাইরে। কিন্তু এত কিছুর পরেও এই জীবনটা বেছে নেবার জন্য আফসোস হয়নি কখনো। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়,

    "স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়?
    দাসত্ব-শৃঙ্খল কে পড়িবে পায় হে, কে পড়িবে পায়?"

    বেশ কিছু মহিলাকেও দেখি বিষয়টাকে এই ভাবেই আত্মস্থ করে নিয়েছেন। তারা স্বামীকে ঘরের কাজ করতে দিতে চান না, রাঁধতে দিতে চান না, কারণ পুরুষরা নাকি ভালভাবে এই কাজ গুলো পারেন না। যারা পারেন না, তারা করতে করতে শিখে নেবেন। আমরা শিখতে পেরেছি, তারা পারবেন না কেন? আবার কিছু মহিলা নিজেরাই বাড়ির বাইরে রোজগার করতে যেতে চান না। মূলত তিনটি কারণে | ১. স্বামীর রোজগারে বাড়ির কাজ করানোর জন্য তিনি লোক রাখতে পারেন, তাই বাড়িতে থেকে আরাম আয়েশ করতে পারেন। ২. ঘরে আর বাইরে দুই শিফটে কাজ করাটা তারা পেরে ওঠেন না। ৩. আর কিছু মহিলা আছেন যারা সম্ভবত আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন

    পুরুষতন্ত্রে পুরুষ তার ক্ষমতা আর সুবিধার জায়গা এত সহজে ছেড়ে দেবে এমন আশা আমরা করি না। কিন্তু মেয়েরা? তারা তো ভুক্তভোগী। তারা কবে বুঝবেন? কবে বাড়ির বিনা পারিশ্রমিকের কাজের সমান বন্টনের জন্য আওয়াজ তুলবেন? আমরা চাইলেই হবে। আস্তে আস্তে হলেও হবে। তবু হবে। অন্তত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেয়েদের আমাদের মত এত কষ্ট করতে হবে না।

    তথ্য সূত্র:

    https://www.payscale.com/data/gender-pay-gap

    https://www.ilo.org/asia/media-centre/news/WCMS_633284/lang--en/index.htm

    https://www.washingtonpost.com/posteverything/wp/2017/04/05/why-would-millennial-men-prefer-stay-at-home-wives-race-and-feminism/?noredirect=on&utm_term=.d95f51aa5a28

    https://www.cnbc.com/2018/04/10/heres-what-women-could-earn-if-household-chores-were-compensated.html
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৮১৮৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • sm | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:২৫65321
  • কিছু প্রশ্ন আছে। ধরাযাক আমার স্ত্রী বিশাল সরকারী বা কর্পোরেট চাকুরে।প্রচুর সম্পত্তির মালিক। আমি কাঠ বেকার। ছেলে পুলে নাই।
    তো, স্ত্রীর একাউন্ট থেকে ইচ্ছে মতো টাকা তুলবো,রেস্তোরাঁয় খাবো,পান করবো,লটারির টিকিটকাটবো।
    চলবে?
    দুই,যেসব মহিলা ধরাযাক,কাজের মাসি বা নার্স,প্রফেশন এর তাগিদে দীর্ঘক্ষন বাইরে থাকেন বা রাত কাটান,তাঁরা কিভাবে ছেলে পুলে মানুষ করেন?
    আর একটা জিনিস ল অনুযায়ী,আনম্যারেয়েড মা হলে সন্তান কাস্টোডি মূলত মায়েদের অধিকার ।কেন?
    বিবাহ,যদি মেয়েদের বাধ্য করে সাংসারিক কাজ পত্র করাতে, তো স্বনির্ভর মহিলারা বিবাহে যাবেন কেন?
    সবশেষে,বহু মহিলা মনে করেন,সন্তান পালন ফুল টাইম জব।কর্পোরেট বা কোন সংস্থায় কাজ করা মানে,একধরণের দাসত্ব।তাঁরা কি বেঠিক চিন্তা করেন?
  • dc | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৭65322
  • sm, প্রথম প্রশ্ন, আমার মতে, অবশ্যই চলবে। দুজনে মিলে যদি ঠিক করেন যে উপার্জনে দুজনের সমান অধিকার, তাহলে তো মনে হয়না কোন আপত্তি থাকবে বলে।

    যাঁরা বাইরে রাত কাটান বা অফিসের কাজের চাপে (বা পার্টি করে) দেরিতে বাড়ি ফেরেন তাঁদের সঙ্গী/সঙ্গিনী দায়িত্ব নেবেন। দুজনে মিলে আলোচনা করে ঠিক করে নেবেন কে কোন কাজটা করবেন আর কে কতোক্ষন ঘরে বা বাইরে থাকবেন। যদি দুজনকেই অনেকটা সময় ঘরের বাইরে কাটাতে হয় তো সেক্ষেত্রেও দুজনে মিলে আলোচনা করে সলিউশান বার করতে পারেন।

    সন্তান কাস্টোডি মূলত মায়েদের দেওয়া হয় কেন জানিনা। বিচারক যদি দেখেন বাবাও সন্তানকে ঠিকমতো বড়ো করতে পারবেন তাহলে বাবাকে দেওয়ার কথা ভাবতেই পারেন।

    স্বনির্ভর মহিলা কেন বিবাহ করবেন - কারন বিয়ে হলো গিয়ে দিল্লির লাড্ডু :d তাছাড়া দেখুন, জীবন একটা বিরাট লম্বা নদীর মতো। তো নৌকোয় একা না বসে থেকে যদি একজন সঙ্গী থাকে তাহলে জার্নিটা দুজনেই হয়তো বেশী উপভোগ করবেন, স্বনির্ভর হোন আর নাই হোন।

    যাঁরা এরকম চিন্তা করেন তাঁরা অবশ্যই ইন্ডিভিজুয়ালি সঠিক চিন্তা করেন। প্রত্যেকে একেকজন ইন্ডিভিজুয়াল, তাই নিজের নিজের মতো করে প্রত্যেকেই ঠিক।
  • sm | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৪১65323
  • প্রথম প্রশ্নের উত্তরের জন্য বড় করে ধন্যবাদ।
  • sm | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৫65324
  • তাহলে কি দেখা যাচ্ছে?যেসব মহিলা মনে করেন সন্তান পালন ফুল টাইম জব;তাঁরা সঠিক।
    যাঁরা মনে করেন ,সংসারে ছেলে পুলে মানুষ করা দাসত্ব;তাঁরাও সঠিক।
    কারণ, পরিসংখ্যান বলছে ,প্রথম শ্রেণীর মহিলারা শতাংশ হিসাবে বেশি।
    তাহলে একজন ওপর জনের ওপর 'উহা খারাপ' বলে চিহ্নিত করছেন কেন?ভাইসে ভার্সাও তো হতে পারে,নাকি?
    মোদ্দাকথা হলো শেয়ারিং।এটা ইম্পরট্যান্ট ,নিশ্চয়।উদাহরণ তো দিলাম। কাজের মাসি বা নার্স।তাঁদের ছেলে পুলেও মানুষ হচ্ছে। নিশ্চয় কেউ না কেউ সাহায্য করছে।
    দেশে হলে কারা হেল্প করছে?
    বিদেশেই বা কারা নার্স দের ছেলে পুলের দায়িত্ব নিচ্ছেন?
    ক্রেশ তো আর রাত্তির বেলা খোলা থাকে না?
  • dc | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৬:১৫65325
  • যাঁরা ইন্ডিভিজুয়ালি চিন্তা করেন তাঁদের তো বাধা দেবার প্রশ্ন নেই, কারন প্রত্যেকে তাঁর নিজের জীবন নিজের মতো করে বাঁচেন। তবে সোশ্যাল কন্ডিশানিং যেটা হাজার বছর ধরে চলে আসছে, সেটার প্রতিবাদ অবশ্যই করা দরকার। সোশ্যাল কনস্ট্রাক্টগুলো, যেগুলো ছেলে আর মেয়েদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে, সেগুলো ভাঙ্গা দরকার। একেবারে যে কিছুই পাল্টায়নি তা না, তবে আরো অনেকটা পাল্টাতে হবে।
  • sm | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:০০65327
  • পাল্টানো তো দরকার ই। বৈষম্য একেবারেই কাম্য নয়।আবার বেশি পক্ষপাতিত্বেরও বিরোধী।
    একটা জিনিস মনে রাখতে হবে। এটা হাজার বছর ধরে চালু সিস্টেম।
    অনেকটা ব্যাংকের চেকের মতো।টিঁকে আছে।পরিবর্তন ও সংশোধন দরকার। কিন্তু খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে। দুটো যুযুধান পক্ষ খাড়া করলে, আখেরে ক্ষতি।
    ওই যে বললুম, বহু কাজের মাসি সংসার ফেলে কাজ করতে বেরোয়।ছেলে পুলেকে দেখে হয়তো,শ্বাশুড়ি বা ননদ। বিদেশে একজন নার্স এর ওভার নাইট ডিউটির সময় ,হাজব্যান্ড ঘরকন্যে সামলায়।সংসারে সব চলে।
  • sm | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:০৫65328
  • আমার দেখা বহু পরিবারে,হাজব্যান্ড অফিসে চাকরির পর ঘরে এসে ছেলে মেয়ে কে পড়াতে বসায়,অঙ্ক করায়। মা, রান্নার কাজপত্র সামলান।
    ঠিক ই আছে।হ্যাপি ফ্যামিলি।
  • স্বাতী রায় | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:০৯65329
  • https://www.anandabazar.com/editorial/half-of-indian-women-thinks-that-domestic-violence-is-a-normal-thing-1.913034

    https://www.anandabazar.com/editorial/it-s-tough-to-change-women-s-perception-on-domestic-violence-but-not-impossible-1.913644

    এই লিঙ্ক দুটো ও থাকল। Ishan ও এই কথাই বলছিলেন মনে হয়।

    " পুরুষদের কাজ করা, বা ইঁদুর দৌড়ে নাম লেখানো, এটাই 'চয়েস', 'চাপ' নয়, সেটাই বা কি করে বোঝা গেল? " - এইটা নিয়েও একটু আলোচনা হোক না। আসলে অনেক মেয়েরাও যেমন বাঁধা গতে চলে, অনেক ছেলেরাও তাই চলে। আর ছেলেদের উপর চাপটা থেকেই গেলে, মেয়েদেরও কেউ সহজে পথ ছেড়ে দেবে না। তাই মেয়েদের স্বারথেও এই "পুং- লিঙ্গ নির্মাণ" নিয়ে কথা হওয়া উচিত। যত সচেতনতা বাড়বে, ততই এই জেন্ডারড রোলের গ্রহণ যোগ্যতা কমবে।

    আর Durba একজায়গায় বলেছেন দেখলাম স্বনিরভর মেয়েরা খোরপোশ চাইবেন না। আমার মনে হয় খোরপোশের দাবীর সঙ্গেও স্বনিরভরতা ছাড়াও আরও অনেক গুলো ডাইমেনসন জড়িয়ে থাকে। নিজের জন্য না হলেও সন্তানের জন্য ও কি সবাই দাবী ছেড়ে দেন? মনে হয় না, পুরো কাস্টডি পেলেও সব সময় ছেড়ে দিতে চান না।
  • dc | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৩৬65330
  • পুরুষদের "কাজ" করতে হবে আর মেয়েদের "সংসার" সামলাতে হবে, এই দুটো চাপই আছে, আর দুটোই বোধায় একই সামাজিক নির্মাণের এপিঠ ওপিঠ। দুটোর বিরুদ্ধেই সচেতনতা বাড়ানো উচিত। এই প্রসঙ্গে মনে পড়লো, অনেক দিন আগে মাইকেল কিটন এর একটা সিনেমা দেখেছিলাম মিস্টার মম বলে, সেখানে রোল রিভার্সাল দেখানো হয়েছিল আর তাতে বিভিন্ন ক্যারেকটারের রিয়াকশানও দেখিয়েছিল। অবশ্য মিসেস ডাউটফায়ার এও অল্প কিছু আলোচনা আছে।
  • | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:০৬65331
  • বেশ লেখা।

    প্রথমেই বলি আমি মহিলা, অপিচ শুধু টাকার জন্য বেশ দুই তিনবার চাকরি বদলেছি। এখনও আবার ভাল টাকা পেলে লাফিয়ে বদলে ফেলব। :-)

    হ্যাঁ জেন্ডার গ্যাপ প্রসঙ্গেঃ আমার বর্তমান কোম্পানিতে এই বছরের শুরুর দিকে একটা জেন্ডার গ্যাপ অ্যানালিসিস করা হয়, তাতে দেখা যায় এন্ট্রি লেভেলে মেয়েদের যোগদানের হার শতকরা ৩৭।৫ শতাংশ। সেইটাই ধাপে ধাপে কমতে কমতে এসে বিজনেস ইউনিট লেভেলে মাত্র ৫ শতাংশ, তার উপরের ধাপে হতেগোণা দুজন। তারপর শুন্য। তো এইটা দেখে ঐ যে লেভেলে মেয়েদের রিপ্রেসেন্টেশান শুন্য তাঁরা স্থির করেন যে একটা টাস্ক ফোর্স তৈরী করে কোম্পানিকে আরো মহিলাকর্মীবান্ধব করে তুলতে হবে।

    তো এই পর্যন্ত বেশ ভাল। এবার মেয়েদের ছাড়ার কারণ হিসেবে মেয়েরা যে সব কারণ দেখিয়ে গেছে সেগুলো সবই হয় পরিবারের জন্য, নয়ত পরিবার অন্য শহরে/দেশে সেটল করছে বলে ইত্যাদি। আমি এবং আরো দু তিনজন জানতে চেয়েছিলাম প্রোমোশান না হওয়া বা পছন্দসই জবরোল কিম্বা অধিক বেতনের জন্য কতজন মেয়ে ছেড়েছে? তাতে একটা ইন্টারেস্টিং উত্তর পাওয়া গেছিল। এই কারণগুলো তাঁরা অ্যাট্রিশান ডেটার থেকে মেয়েদের জন্য খোঁজার চেষ্টাই করেন নি, কারণ 'আমাদের মনে হয় না আমাদের কোম্পানিতে মেয়ে বলে কাউকে প্রোমোশান ডি করা হয়েছে' । তখন আমি 'আনকনআস বায়াসনেস' এর কথা তুলি, কিছু উদাহরণ দিই। খুব কেয়ারফুলি উদাহরণগুলি পছন্দ করেছিলাম, যাতে কোনোভাবেই কারো দিকে ফিঙ্গার পয়েন্টিং না হয়। তো এবারে একটু ধোঁক গিলে ওঁরা বললেন দেখবেন খুঁজে।

    খুঁজে যেটা দেখা গেল, সেটা হল প্রোমোশান ডিচড হওয়ার কারণ দেখিয়ে ছেড়েছেন মাত্র ৩ জন। 'বেটার অফার' বলে ছেড়েছেন ৭ শতাংশ (ছেড়ে যাওয়া মহিলা কর্মীর)। এই সাত শতাংশের আবার সাড়ে পাঁচ শতাংশ আবার এক্জিট ইন্টারভিউতে বলেছেন এক্ষেত্রে 'বেটার' মানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা ফ্লেক্সি আওয়ার কাজের সুবিধেটাই মুখ্য।

    ফলে এই ধারণাটা আবার লোকের মনে হল যে প্রোমোশান বা বেশি স্যালারি মেয়েদের জন্য তেমন দরকারী নয়। অথচ এটার ফল ভুগতে হয় উচ্চাকাঙ্খী মেয়েদের, যারা সত্যিই মই বেয়ে উঠতে চায়। তাদের উপর ঘরে ও অফিসে দুই তরফেই একটা পরোক্ষ চাপ আসে যে প্রোমোশানটা বা বেশি ইনক্রিমেন্ট একই রেটে পারফর্ম করা ছেলেটার বেশী প্রয়োজন মেয়েটার চেয়ে।

    (লম্বা হ্যাজ দেব, সঙ্গে থাকুন)
  • | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৫২65332
  • হ্যাঁ তো এই অধিক সংখ্যক ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা ফ্লেক্সি আওয়ার্সের সুবিধাজনিত পলিসি ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য দূর্বা যেমন বলেছে ডিসিশান মেকিং লেভেলে বেশী সংখ্যক মহিলা থাকা প্রয়োজন, একেবারে ঠিক কথা। কিন্তু ... এর সাথে একটা চোট্ট কিন্তু আছে। ডিসিশান মেকিঙে শুধু অধিক মহিলা থাকলেই চলবে না, তাদের মধ্যে 'সুপার উয়োম্যান' কমপ্লেক্স থাকলেও চলবে না। সুপার ম্যান বা সুপার উয়োম্যান কোনও কাজের কথা নয়। সাধারণ রক্ত মা`,সের মানুষ যাদের মাথা ধরে, ঘুম পায়, একটা নির্দিষ্ট সময়ের বেশী কাজ করলে শরীর ভেঙে পড়ে, কারো কারো বিভিন্ন মাত্রার ডিপ্রেশান হয় এইগুলো ধরে নিয়েই পলিসি বানাতে হবে।

    ইন্দ্রা নুই সহ অনেক উচ্চপদস্থ মহিলাই 'সুপার উয়োম্যান' কমপ্লেক্সটাকে ধোঁয়া দেন, যেটা আখেরে ক্ষতিকর, উয়োম্যান এমপাওয়ারমেন্টের একটা ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখি শেখানো হচ্ছে 'উই উয়োম্যান আর লাইক স্পঞ্জ, উই ক্যান অ্যাবজর্ভ এনিথিং'। বাধ্য হয়ে আপত্তি করতে হল। যিনি ওয়ার্কশপ কনডাক্ট করছেন, তিনি স্পঞ্জ হতেই পারেন, কিন্তু আমার বাপু স্পঞ্জ হতে যথেষ্ট আপত্তি আছে। তো উপস্থিত মেয়েদের মধ্যে মাত্র দুজন দেখলাম স্পঞ্জ হতে আপত্তি করছে, বাকীরা প্রচুর তর্ক করল, যে না মেয়েরা তো সত্যিই স্পঞ্জ, দুগগাঠাকুর হ্যানা ত্যানা। মোটিভেশানাল কিছু ভিডিও ক্লিপও আসে এই মর্মে, যে একজন মেয়ে সব কাজ করে ফেলতে পারে। আগে মানে এই নব্বইয়ের শেষের দিকে সনন্দাতে এই লাইনে সব লেখাপত্র দেখতাম।

    তো, বক্তব্য হল যে ফ্লেক্সি আওয়ার্সের সুবিধেটা মোটামুটি সব কর্মীর জন্যই থাকুক। আমার সহকর্মীরা অনেকেই অন্তত বাচ্চার দেখাশোনা, স্কুলের জন্য রেডী করা বা বাচ্চার শরীর খারাপ হলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করে থাকেন, বিশেষত যাঁদের স্ত্রীরা কোর এঞ্জিনিয়ারিঙের কোন না কোন শাখায় কর্মরত, তাঁরা এগুলো করেই থাকেন। কারণ কোর এঞ্জিনিয়ারিঙে কর্মরত স্ত্রীরা ওফ্রহো`্র সুবিধে পান না, কিন্তু আমার আইটি কলিগ সেটি পান।

    ফলে আইটিতে ফ্লেক্সি আওয়ার্স ইত্যাদি সবার জন্যই হোক। মেটার্নিটি ইত্যাদি তো আলাদা আলোচনা লাগবে। তবে কোর এঞ্জিনিয়ারিং বা অত্যাবশ্যক পরিষেবা (যেমন বাসের কন্ডাকটার মহিলা) পোস্ট অফিস ইত্যাদির ক্ষেত্রে কী করা যেতে পারে সেটা ভাবা দরকার।

    (হ্যাজ চলিবে)
  • dc | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:০১65333
  • "অনেক উচ্চপদস্থ মহিলাই 'সুপার উয়োম্যান' কমপ্লেক্সটাকে ধোঁয়া দেন"

    অনেকটাই একমত, যদিও কিছু এক্সেপশানও দেখেছি। ইন্দ্রা নুই বোধায় কোন একটা ইন্টারভিউতে সুপার ওম্যান কমপ্লেক্স এর বিরুদ্ধেই বলেছিলেন, ঠিক মনে পড়ছে না। তবে এই কমপ্লেক্স নিয়ে বিদেশেও ভালো বিতর্ক আছে। আপাতত যেমন শেরিল স্যান্ডবার্গের "লিন ইন" এর পক্ষে আর বিপক্ষে অনেকে বলছেন, অবশ্য বিপক্ষেই বোধায় বেশীজন বলছেন। কিছুদিন আগে মিশেল ওবামা এ নিয়ে বলেছেনঃ

    Marriage still ain't equal, y'all,' she said, according to Vanity Fair. 'It ain't equal. I tell women that whole "you can have it all" — mmm, nope, not at the same time, that's a lie. It's not always enough to lean in because that shit doesn't work.

    ওনার বক্তব্যের সাথে একমত।

    আর দ দির সাথেও একমত, ফ্লেক্সি আওয়ার সবার জন্যই হোক, শুধু আইটিতে না, সব সেক্টরেই যতোটা সম্ভব ফ্লেক্সি আওয়ার হোক।
  • | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:০৯65334
  • এইবার চাকরি। মন্দা মুল্যবৃদ্ধি চলছে বলে কিছু মেয়েকে বেরোতে দেখছি এটা অতি সরলীকরণ। তবে হ্যাঁ বড় বড় ঘটনার অভিঘাতে কিছু কিছু প্রচলিত জিনিষ ভাঙা সহজ হয়। ধর দুর্ভিক্ষ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেশভাগের ধাক্কা সামলাতে কলকাতার মেয়েরা বিভিন্ন কাজে কর্মে যোগ দিচ্ছে সেই ৪৭ থেকেই বেশ ভাল হারে। আমাদের বাঙাল বাড়িগুলোর প্রায় সমস্ত পরিবারের আমাদের আগের প্রজন্মের মেয়েরা চাকরি করেছেন বা কোন না কোনভাবে উপার্জন করেছেন। আমার মা ৫৬ সালে বিয়ে পাশ করেই স্কুলে কাজ পান, বিয়ের পর চাকরিটা ছাড়তে হয় বাবার বদলির জন্য, কিন্তু চোটপিসি চাকরি করতেন (মা'র চেয়ে বছর দশেকের বড়)। আমার কোনও কোনও বন্ধুর ঠাকুমা বা দিদিমারাও কিছু না কিছু করতেন, কেউ স্কুলে চাকরি কেউ অন্য কিছু।

    কিন্তু পরে যখন অন্য প্রদেশের মেয়েদের সাথে আলাপ পরিচয় হয়েছে দেখেছি উত্তর বা দক্ষিণ ভারতের আমাদের আগের প্রজন্মের মেয়েরা খুব একটা চাকরি বাকরি বা রোজগার কোনও উপায়ে কিছুই করতেন না। তো এই দেশভাগ ইত্যাদির এফেক্টটা কিছু সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোতেই হয়েছিল মনে হয়।

    এবার দিল্লি থাকার সময় দেখেছি পাঞ্জাবী মহিলারা সান্গ্ঘতিক কর্মঠ। ধুমধুম করে তুলো ধুনে লেপ বানিয়ে ফেললেন বা আরো কিছু ভারী কাজ করে ফেললেন। তা এগুলোও কোনও কোনওভাবে অর্থকরী রোজগার বৈকী। মহারাষ্ট্রেও দেখেছি কেউ বসে থাকে না। মানে শুধুই বসে থাকা আর বাচ্চা পালা এইটা কাউকে দেখি না। অনলাইন বিজনেস করে, নয়ত ছোট করে দোকান দিল, নয়ত বাড়িতেই কিছু বানিয়ে বিক্রি করল ইত্যাদি।

    এইবার আমার চেনা পরিচিত তিনজন মহিলা চাকরি ছেড়ে বাড়ি বসে গেছেন এইরকম নিজস্ব বা পারিবারিক ব্যবসায় যোগদানের উদ্দেশ্যে। সেক্ষেত্রে জব মার্কেটের ডেটা নিলে তাঁদের নাম আসবে না, কিন্তু অসংগঠিত ক্ষেত্রে তাঁরা উপার্জন করছেন। তো চাকরি রেখে ব্যবসায় সময় দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় নি। আবার বাড়িতেও সব কাজ তাঁরাই করেন না এইটা জানি না। তবে ব্যবসাও যথেষ্ট সময় দাবী করে, সেক্ষেত্রে গৃহশ্রমের বিভাজন হওয়া খুবই জরুরী।

    গৃহশ্রমের বিভাজন মানে আবার শুধুই স্পাউস দুজন শেয়ার করবেন এমনও না, সন্তানকেও একেবারে ছোট থেকেই নিজের কাজ নিজে করানোর অভ্যেস করানো ও ক্রমে বাড়ির অন্যদের জন্যও করানো অভ্যেস করানো দরকার। বাচ্চাকে ছোট থেকে ইনভলভ করলে অন্য যে সুবিধেটা হবে সেটা হল মা বা বাবা বচ্চার সাথে অনেকটা বেশী সময়ও কাটাতে পারছেন। সেক্ষেত্রে ঐ আমি তো বাইরে বাইরেই থাকি ছেলেমেয়ের কিছুই দেখতে পারি না, ঐ সব দেখে - জাতীয় অপরাধবোধ থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে।

    (আর একটু লিখব)
  • | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৪৩65335
  • *বিএ পশ
    **ছোটপিসি

    হ্যাঁ এই শেরিল স্যান্ডবার্গ আরেক যন্ত্রণা। আমাদের ঐ লিন-ইন ওয়ার্কশপ করানোর চেষ্টা চলছে। মুশকিল হল কোটিকোটিপতি মহিলাদের বাস্তব আর বহুকিছু একসাথে ব্যলেন্স করা চলা মধ্য বা উচ্চমধ্যবিত্ত মহিলার বাস্তব তো এক নয়।
    যাগগে।

    এবার আসি স্বেচ্ছায় গৃহবধুদের কথায়। কথা হল আমাদের ঠাকুমা বা এমনকি মায়েদের কালেও কিছুটা গৃহশ্রম ব্যপারটা বেশ সময় ও শ্রমসাধ্য ছিল। কিন্তু যবে থেকে গৃহকর্মের বিিন্ন ক্ষেত্রে যন্ত্রের আমদানী হয়েছে, তবে থেকে ক্রমশ গৃহকর্মের চাপ কমেছে উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মহিলাদের উপর থেকে। এতে হাতে তাঁরা অনেকটাই ফ্রী সময় পান। (যদ্দুর মনে হচ্ছে যশোধরার এই নিয়ে লেখাপত্র আছে)। সেই সময়টায় কিছু না কিছু করা উচিৎ বলেই মনে করি। বাচ্চার স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে বা আশেপাশের কোন বাড়ির রোয়াকে বসে স্কুলের সময়টুকু, পরীক্ষার সময়টুকু পার করা একেবারে অপচয় বলে মনে করি (যদি না বাচ্চা অসুস্থ বা বিশেষ শিশু হয়)।

    এবার অনেক মেয়েই আছে (আমার পরিচিত) যারা একটা ধরাবাঁধা নিয়মে রোজ কাজে বেরোন ও দায়িত্ব নেওয়া ইত্যাদির চেয়ে সন্তানের সাথে সময় কাটাতে কিম্বা নানারকম রান্নাবাড়ি করতে বেশী পছন্দ করেন। এমনকি বেশ কিছু মেয়ে বিয়েটাকে কেরিয়ার অপশান হিসেবেও দেখে থাকেন। (শুধুই টাকা পয়সা নয়, পছন্দের কাজ করতে পারা হিসেবেও বটে)। তো এইখানে ঈশানের কথাটা ঠিক, এক্ষেত্রে কমিউনিটি কিচেন বা কমিউনিটি ক্রেশের ব্যবস্থা ন্চালু করা গেলে সবচেয়ে ভাল। যে ৩ বা ৫ জন রান্না করতে ভালবাসেন তাঁরা ধরুন একটা চোট হাউসিঙের সব কটি পরিবারের রন্নার দায়িত্ব নিলেন, অবশ্যই পয়সার বিনিময়ে। এতে তাঁদেরও জব স্যাটিসফ্যাকশান ও রোজগার দুইই হল। আবার যে পরিবারগুলির হাতে রান্নার সময় কম তাঁরা এদের থেকে বাজার বা রেস্টুর‌্যান্টের তুলনায় সস্তায় বাড়িতে বানানো ভাল কোয়ালিটির খাবারো পেলেন, রান্নার সময়ও বাঁচল।

    একইভাবে যাঁরা বাচ্চাদের সথে সময় কাতাতে ভালবাসেন তাঁরা ক্রেশ বা হোমওয়ার্ক করানোর ব্যবস্থা করলেন নিয়মিত মূল্যের বিনিময়ে।

    আসলেই এইরকম সিস্টেম কোথাও কোথাও চালু হচ্ছে। আমি বাংলাদেশের মেয়েদের একটা মস্তবড় নেটোয়ার্কের সাথে জড়িত আজ বছর দশেক। সেখানে তৃষিয়া এই প্রস্তাবটা করেন। অনেকেই উৎসাহ দেখায় ও কিছু কিছু জায়গায় খুব ছোট স্কেলে করছেও।

    (আপাতত শেষ)
  • pi | ***:*** | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:২৪65336
  • স্বাতীদি দমদি দুজনকেই বড় হাতের ক দিয়ে গেলাম, সময় পেলে লিখব।
  • স্বাতী রায় | ***:*** | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:৪১65347
  • দ যে সল্যুসন গুলি বলেছেন সেগুলি ভারী ভাল লাগল. বিদেশ ভিত্তিক কর্পোরেটে কাজের ধরণ যেটুকু জানি, তাতে আমার মনে হয়েছে যে এসব জায়গায় এইচ আর থাকে বেশ ধোঁকার টাটি হিসেবে. মানে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক এই সব হ্যাল্ডল করতে দড়, কিন্তু যে হিউম্যান নিয়ে তাদের কাজ সেটাতেই তারা খুব কম কথা বলতে জানে বা / এবং বলার সুযোগ পায়. পলিসি টলিসির খাঁচা বিজনেসের দাবী মেনে হয় , এবং অবশ্যই আইন বাঁচিয়ে , কাজেই উপরওয়ালা বড় রকমের মানব তথা নারী দরদী না হলে, কিছুই হওয়ার নয়. অবশ্য উপর ওলা মেয়ে হওয়াটা খুব নেসেসারী বলে আমি মনে করি না. কিন্তু মেয়ে বাবদ্এ একটা ক্লিয়ার ফোকাস থাকতে হবে.

    ... আর একটা কথা যেটা খুব মনে করি , বিশেষত মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীর জন্য যে এ দেশ আর বিদেশের মধ্যে মেয়েদের পারিবারিক পরিস্থিতি, আইনগত পরিস্থিতি হয়তো বা শারীরিক সক্ষমতা(???) এবং সেন্স অফ ভালনারেবিলিটির বেশ তফাত থাকে. বিদেশের অনেক জায়গায় সন্তান ডেলিভারীর দিনতিনেকের মধ্যে অফিসে জয়েন করাটা খুবই কমন ব্যাপার. আমার জানা একটি মেয়ে সন্তান জন্মের ঘন্টা চারেক পরে মিটিং এটেন্ড করে প্রভুত প্রসংশা কুড়িয়েছিল. সবচেয়ে বেশী প্রসংশা করেছিলেন এইচ আরের এক মহিলা. কেউ কিন্তু বলে নি নমাস সময়ে কেন তার ব্যাক আপ তৈরী হল না. আমাদের দেশে আইনত মেটারনিটি লীভ মেয়েরা পায়. কিন্তু দেশীয় লিডারশিপকে সচেতন থাকতে হবে যে বিদেশী ওয়ার্ক মডেলটি যেন এখানকার ক্রস কান্ট্রি টিমে কাজ করা মেয়েদের মনে একস্ট্রা পারফরমেন্সের চাপ তৈরী না করে. এই মেটার্টানিটিটা একটা উদাহরণ মাত্র. দেশ বিদেশ জুড়ে যেসব সংস্থা তাদের লিডারশীপ যদি এই ধরণের বহু সূক্ষ্ম বিষয়ে যত্নশীল হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে দেশীয় মেয়েদের উপকার হবে.
  • বুঝভুম্বুল | ***:*** | ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৫65348
  • আমার এক মারাঠী সহকর্মী এই লেখাটা গুগল ট্রান্সলেট এ ফেলে পড়েছে এবং স্বভাবতই ঘেঁটে গেছে। এর কোনো ইংরাজি অনুবাদ কোথাও করছে কেউ? আরো অনেককে পড়ানোর ছিলো এটা।
  • Durba Mukherjee | ***:*** | ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪০65350
  • যারা ট্রান্সলেশন করতে বলেছিলেন, অবাঙালিদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য, তাদের জন্য আবার লিখেছি, কিছু এদিক ওদিক হয়েছে। পরে দেখে শেয়ার করতে পারেন।

    https://durbaspeaks.wordpress.com/2018/12/22/martyr-or-warrior-choice-is-yours/
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন