কলকাতার এক পোড়খাওয়া সাংবাদিক কর্মজীবনের উপান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এক বিকেলে কাজের বিরতিতে তাঁর সঙ্গে চা খাচ্ছি। তিনি এমনিতে এই সময়টায় নিজেই জমিয়ে রাখেন। কিন্তু সেদিন নীরবেই চা খাচ্ছিলেন, একটিও কথা বলছিলেন না। অনেকটা সময় চলে যাওয়ার পর মৌনতা বললেন, "গত পঁয়ত্রিশ বছরে অনেক কিছু দেখেছি, লিখেছি। অনেক যত্ন নিয়ে আজও একটা খবরের পিছনে ছুটি। কিন্তু খবরটি পাঠকের হাতে আসতে না আসতেই এভাবে পিতৃমাতৃশ্রাদ্ধ কেউ করেনি।"
ভদ্রলোক প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক। কিন্তু এখন এই মিডিয়া কনভারজেন্সের (সম্মিল্লন বলা যেতে পারে) যুগে তাঁর সংগ্রহ করা খবরটি ই-দুনিয়াতেও পাঠক পড়তে পারেন, কারণ বহুরূপে সম্মুখে তোমার পাঠক ঈশ্বর। তো তাঁর লেখা এমনই একটি আর্টিকেল সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই গালিগালাজের বন্যা বইতে শুরু করে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে আমরা যারা অপেক্ষাকৃত অনেকটাই নবীন, তাঁরা পরিচিত। প্রতিদিন নানা খবরে বর্গের সঙ্গে বর্গের সংঘাত বেঁধে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়, সংশ্লিষ্ট সংস্থার কমেন্ট বক্সে। হিন্দু বনাম মুসলমান, ভারতীয় বনাম বাংলাদেশের নাগরিক, ধনী বনাম দরিদ্র, তৃণমূল বনাম বিজেপি, এই তালিকাটার কোনও শেষ নেই। আর বিষয়টি তর্কে থেমে থাকে না, বলা ভালো কোনও তর্কই থাকে না। যা অনেক বেশি উদগ্রভাবে থাকে তা স্রেফ ঘৃণা। শ্রেণি-বর্ণ-ধর্মের প্রতিটি আপাত বিপরীতমুখী অবস্থান থেকে চলে মুহূর্মুহু আক্রমণ। সাংবাদিক-সম্পাদকও ছাড় পান না। বিরোধাভাস থাকলেই বাছাই শব্দে ঘৃণার বহিপ্রঃকাশ দেখা যায় নাম করে। এসবে আমরা অভ্যস্ত। আমরা শিখে নিয়েছি অগ্রাহ্য করতে হবে। কিন্তু এই প্রবীণ যিনি পাঠকের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সুযোগই পাননি জীবনের বেশিটা সময়, তিনি ডিজিটাল মিডিয়ার প্রতি অনেক উচ্চাশা তৈরি করে ফেলেছিলেন। তিনি হতভম্ভ হয়েছেন পাঠকের আচরণ দেখে। তাঁর প্রশ্ন, "এত বছর লিখে কি এই অপমানটাই প্রাপ্য ছিল? কেউ এতটুকু সুস্থ আলোচনা করল না? তর্কও করল না, আমাকে নস্যাৎ করে দিল! এদের কেউ কিছু বললও না!"
আমাকে স্তব্ধ করে দেয় এই শেষ প্রশ্নটা। আমি ভাবতে থাকি, তাই তো, এই গত সাত আট বছর নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এই মাধ্যমে কাজ করে, গালাগালি আর ঘৃ্ণার যে পাহাড়নির্মাণ প্রতিদিন দেখে গিয়েছি। তাকে প্রতিহত করার জন্য কেউ কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন! আমি বর্ম পরে রয়েছি মানে বিষয়টা নেই তা তো নয়। অবিরল যে ভাবে লড়ে চলে দুটো গোষ্ঠী, দু'জন ব্যক্তি, তাতে প্রতি পলে ক্ষয়ে যায় সভ্যতার বাঁধনটা। প্রতি মুহূর্তে আলগা হয় সম্পর্ক। রেশ রেখে যায় ঘৃণা। অথচ কেউ কোনও ভাবেই একে নিয়ন্ত্রণ করে না। কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত?
প্রাথমিক ভাবে কোনও সংস্থা চাইলে খবরের থ্রেডে আসা কমেন্ট মুছে ফেলতে পারে। কিন্তু তা সময় সাপেক্ষ কাজ। তাছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া ব্যাবসার কাঠামোই দাঁড়িয়ে রয়েছে আন্তঃসক্রিয়তার উপর। মানে যত বেশি ইন্টারঅ্যাকশান ততই লাভ সংবাদমাধ্যমের। ফলে দায় সে এড়াতেই পারে। কিন্তু দায় এড়াতে পারে না ফেসবুক। কারণ তাদের মাধ্যমটিকে ব্যবহার করে ক্রমাগত ঘৃণার চাষ করা হচ্ছে। যে পদ্ধতি, যে ভাষা আকছার ব্যবহার করা হচ্ছে কথাবার্তায় তা ফেসবুকের নীতিবিরুদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে গুজব, হিংসা, ভুয়ো তথ্য, হুমকি। ইথিওপিয়া, মায়ানমার থেকে কলকাতা-দিল্লি, সহিংসতার এই নতুন মাধ্যমের বাড়বাড়ন্ত আর নিজেদের অক্ষমতা দেখে ক্লান্ত হয়ে ফেসবুকের মায়াপৃথিবীতেই ঘুরে বেড়াচ্ছি এই সময়েই খবরটা এলো।
শীর্ষ আদালতের রায় অনুযায়ী অস্ট্রেলিয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকেই কমেন্টবক্সে জোরদার নজরদারি চালাতে হবে। কোনও পেজ, গ্রুপ বা প্রোফাইলের মালিক তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে আসা কমেন্টের জন্য দায়বদ্ধ। এই রায়ে বলা হচ্ছে, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে, কারও সম্মানহানি হলে সেই ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তো বটেই, সরকারও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে পারেন।
অস্ট্রেলিয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ফেসবুককে জনসমক্ষে কাওয়ার্ড'স প্যালেস বা ভীতুর প্রাসাদ বলে ডাকেন। নাম ভাঁড়িয়ে ফেসবুকের মঞ্চ ব্যবহার করে কোনও অপছন্দের ব্যক্তি বা সংস্থা বা মঞ্চকে লাগাতার আক্রমণ করে যাওয়া তাঁর অপছন্দ। তাঁর সরকার চায়, যে কোনও মন্তব্যকারীই নিজের পরিচয় নিয়ে সামনে আসুক। কোনও জায়গায় যদি তাঁর উল্টোটা হয়, কেউ আত্মগোপন করে যদি প্রতিপক্ষকে অপমান করে, তবে ছেড়ে কথা বলবে না অস্ট্রেলিয় সরকার।
মরিসন বলছেন, "সোশ্যাল মিডিয়া একটা ভীতুর প্রাসাদ। এখানে মানুষ নিজের পরিচয়টুকু প্রকাশ করে না। মানুষের জীবন ধ্বংস করে দেয় আক্রমণ করে। স্বাধীনতার যথেচ্ছ অপব্যবহার চালায় ওরা।"
শুধু সংস্থাকেই কাঠগড়ায় তোলা নয়, অস্ট্রেলিয় জনসংযোগমন্ত্রী পল ফ্লেচার বলছেন, সরকারি কমিটি আলোচনা করছে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ব্যক্তির পাশাপাশি ফেসবুবকেও দায়ী করা হবে কিনা তাই নিয়ে।
অস্ট্রেলিয় সরকার এই সিদ্ধান্ত এক দিনে নেয়নি। এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে ২০১৬ সালের একটি টিভি অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে একটি ছবিতে দেখানো হয় অস্ট্রেলিয়ায় এক ১৭ বছরের যুবক ডিলান ভোল্লারকে চেয়ারে বেঁধে রাখা রয়েছে। ডিলান ভোল্লার অস্ট্রেলিয়ায় পরিচিত কিশোর অপরাধী। অন্তত ২০০ অপরাধে তার নাম রয়েছে। ১১ বছর বয়সে সে সহপাঠীর হাত ভেঙে দেয়। এরপরে সে নাম লেখায় গাড়িচুরির দলে। অস্ট্রেলিয়ার কুখ্যাত ডাকাত দলের সঙ্গেও মিশত সে। মাদক পাচারের অভিযোগও রয়েছে তার নামে। ফলে অচিরেই তার জায়গা হয় শিশু-কিশোর সংশোধানাগারে, সেখানে সে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে এবিসি টিভি 'অস্ট্রেলিয়াস শেম' নামক একটি অনুষ্ঠান করে। সেখানে দেখানো হয় ভোল্লারের মতো কিশোর অপরাধীদের কী ভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে। ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠতে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার বহু মিডিয়াই তখন ভোল্লারের ছবি-সহ ঘটনাটি সামনে আনতে থাকে। দীর্ঘ সময় ডিজিটাল দুনিয়ায় আলোচনায় ছিল সে। তার বিরুদ্ধে মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতাগুলি ছেয়ে যায়। বিভিন্ন মিডিয়া হাউজের পাতায় কেউ বলতে থাকেন ভোল্লার বৃদ্ধ মহিলাদের ধর্ষণ করেছে। কেউ আবার বলে, এক সামরিক কর্মীকে বেঁধে জ্যান্ত পুড়িয়েছে ভোল্লার। ভোল্লারের অপরাধের তালিকা দীর্ঘ। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় নিউজ ওয়েবসাইটের পাতায় যে অভিযোগগুলি তার বিরুদ্ধে উঠছিল তার কোনও সারবত্তা ছিল না। ভোল্লার এসব অভিযোগের পাল্টা মন্তব্য করতে যায়নি।
২০১৭ সালের মাঝামাঝি জেল থেকে বেরিয়ে সবার প্রথম ওই মিডিয়া হাউজগুলির বিরুদ্ধেই মানহানির মামলা করেন তিনি (ততদিনে ভোল্লার পূর্ণবয়স্ক)। ভোল্লার সংস্থাগুলিকে ওই ভুল মন্তব্যগুলি সরানোর কথাও বলেননি। তিনি সরাসরি একটি প্রতর্ক রাখেন যে, কোনও এক ব্যক্তিকে একটি সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া মঞ্চ ব্যবহার করে অপদস্থ করা হলে, সংস্থার অজ্ঞাতসারে তা হলেও দায় নিতে হবে সংস্থাকেই। অর্থাৎ ফেসবুকে ঘুরতে থাকা অপতথ্যের দায় কার, বিশ্বজোড়া এই তর্কটাকে শেষমেষ একটা ফয়সলার জায়গায় নিয়ে জায়গায় নিয়ে যান। অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ আদালতও মেনে নেয় এক্ষেত্রে দায় নিতে হবে নির্দিষ্ট গণমাধ্যমকেই।
এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল বহু গণমাধ্যম। তাদের যুক্তি ছিল, এই কমেন্টগুলি তাদের সম্পাদিত কন্টেন্টের অংশ নয়। কিন্তু এসব আদালত শুনতেই চায়নি। ফলে সরকারও পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে।
একটি সংস্থার পক্ষে সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া কমেন্ট নিরীক্ষা করা আদৌ সহজ কাজ নয়। ধরা যাক অস্ট্রেলিয়ার স্কাই নিউজ নামক সংস্থাটির কথা। তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ৮০ লক্ষ ৭০ হাজার। এই ৮০ লক্ষের বৃত্তের কে কোথায় কখন কী লিখছে তা নিরীক্ষণ করার জন্য যত বড় ইউনিট লাগে, তা রাখার খরচ বহন করা খুব সহজসাধ্য নয়। সেক্ষেত্রেও একটা দুটো পথ খোলা থাকে। সেটা কী? কোনও সংস্থা চাইলে কোনও বিতর্ক উদ্রেককারী কমেন্ট সেকশানটাই বন্ধ করে রাখতে পারেন। অর্থাৎ দ্বিমুখী যোগাযোগের পথ বন্ধ করে দিতে পারেন। অথবা যে খবর/মতামতটি ঘৃণার মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে তাকে এই মঞ্চে না নিয়ে আসতে পারেন। দুটি ক্ষেত্রেই সংস্থাটি যা হারাবে তাকে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের চালু পরিভাষায় বলে ইন্টারঅ্যাকশান বা আন্তঃসক্রিয়তা, যা বাজারে ছড়িয়ে পড়ার অমোঘ অস্ত্র। অর্থাৎ সংস্থার লাভের গুড় সামান্য হলেও কমবে। জানা কথা কোনও পুঁজিমুখী সংস্থাই এতে খুশি হবে না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবসা করতে হলে এই বজ্রনির্ঘোষই মানতে হবে। ঠিক যেমন কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ায় আরও এক নীতি প্রণয়ন হয়, গুগল এবং ফেসবুককে অস্ট্রেলিয়ায় খবর পরিবেশন করতে হলে মূল্য দিতে হবে।
গার্ডিয়ানের অস্ট্রেলিয়া অডিয়েন্স এডিটর ডেভ আর্লেকে মেল করে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল এ বিষয়ে তাঁদের নীতি নিয়ে। উত্তরে তিনি বলেন, "আমরা আদালতের সিদ্ধান্ত বা কোনও রাজনৈতিক নেতা বিষয়ক কোনও খবর ফেসবুকে শেয়ার করার আগে আলোচনা করি বহুবার। বিষয়টি স্পর্শকাতর হলে আমরা তা ফেসবুকে সামনে আনি না।"
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের অস্ট্রেলিয়ার পাতায় তারা কোনও খবরই প্রকাশ করবে না। সিএনএন দায় চাপাচ্ছে ফেসবুকের উপর। সংস্থার মুখপাত্র বলেন, "এর দায় ফেসবুককেই নিতে হবে। কারণ তথ্যনিষ্ঠ, সমৃদ্ধ সাংবাদিকতার মঞ্চ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে ফেসবুক ব্যর্থ হয়েছে। অন্য দিকে ফেসবুকের তরফে পাল্টা বলা হয়, আমরা সিএনএন-কে আইনি রক্ষাকবচ দেওয়ার কাজ করতে পারব না। আমরা সিএনএন-কে একটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট টুল দিয়ে সাহায্য করতে পারি।" বোঝাই যায় ফেসবুক আসলে দায় এড়াতে আগ্রহী। ২০২১ ক্যানবেরা রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার প্রতি তিনজনে একজন ফেসবুককে সংবাদমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে। তাহলে মঞ্চকে সাফসুতরো রাখার দায় কি ফেসবুকের উপরেও বর্তায় না?
দায় কার ফেসবুকের না সংবাদমাধ্যমের এই নিয়ে তরজা চলবে, চলবে দোষ চাপানোর খেলা । তবে সাঁটে সারতে বলি, আবিল গণ-হিংসা রুখতে, বৃহত্তর জনকল্যাণের জন্য যে পদক্ষেপ জরুরি তা অস্ট্রেলিয়া নিতে পেরেছে। আরও একটা বিষয় ভাবার, ভোল্লার কোনও মহাপুরুষ নন। সংশোধনাগার থেকে বেরিয়েও তিনি কমনওয়েলথে বোমা রাখার গুজব ছড়িয়েছেন, পুলিশকে লিঙ্গ দেখিয়ে রেলট্র্যাকে ঝাঁপ দিয়েছেন। তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ে সদাসন্ত্রস্ত অস্ট্রেলিয় প্রশাসন। কিন্তু তাঁর মতটাকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়নি। তাঁর কথা শোনা হয়েছে। অর্থাৎ একজন অপরাধীর যে নিজস্ব প্রস্থান থাকতে পারে, তাঁকেও যে যে কোনও অপরাধের জোব্বা পরিয়ে দেওয়া যায় না, তা প্রতিষ্ঠা করল অস্ট্রেলিয়া।
ফিরে যাই আমাদের সেই চায়ের আড্ডায়। এক অপমানিত বৃদ্ধের অসহায়তার কাছে। আমাদের দেশে যদি এর সিকিভাগ সতর্কতাও থাকত, ফেসবুকে ঘৃণার চাষ রোখা যেত, কমেন্টে হিংসা ছড়ানোর প্রবণতার বিরুদ্ধে সরকার, সংবাদপত্র বা ফেসবুক, কোনও একটি পক্ষ পদক্ষেপ করত, তবে ওই বৃ্দ্ধ তাঁর সারাজীবনের পথচলা নিয়ে সংশয়ে পড়তেন না। আমরা যাঁরা লিখে খাই তাদের প্রতিদিন যে লজ্জার মুখে পড়তে হয়, ভুলে যেতে হয় বাধ্যত, তা এড়ানো যেতে। সর্বপোরি হিংসার আগুনে বারুদসঞ্চারের পথটা বন্ধ হলে লাভবান হতেন আমাদের আত্মীয় বন্ধুরা, বলা ভালো বৃহত্তর সমাজ। কিন্তু যে রাজনৈতিক দল টিকে আছে ঘৃণাকেই হাতিয়ার করে, তারা কি তা চাইবেন কখনও? সদিচ্ছা দেখিয়ে ইন্টারঅ্যাকশান হাতছাড়া করবে ফেসবুক ও সংবাদমাধ্যমগুলি? সরকার কখনও বিষয়টি নিয়ে ভাববে? শোনা হবে ঊনজনের কথা? হোক বা না হোক, প্রশ্নগুলো রইল।