আমরা এতদিন ধরে বিস্তারিত আলোচনায় দেখলাম যে মেডিসিন বা করোনাভাইরাস স্বরাট কোন সত্তা নয়। এদের সাথে জুড়ে আছে রাজনীতি, কর্পোরেট পুঁজি ও রাষ্ট্রক্ষমতার খেলা। যে কটি বিষয়কে করোনা অতিমারি বড্ডো দগদগে করে দেখিয়েছে তার মধ্যে বেশি করে চোখে পড়ে – (১) ভঙ্গুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা কিংবা প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার অপ্রতুলতা, (২) আমেরিকা সহ বেশ কিছু দেশের কাঠামোগত বর্ণবিদ্বেষ, (৩) সামাজিকভাবে যারা পশ্চাদপদ এবং অনগ্রসর তাদের কাছে বৈষম্যমূলকভাবে স্বাস্থ্যের সুযোগ পৌঁছনো, এবং (৪) প্রতিরোধী চিকিৎসা তথা জনসমাজ-কেন্দ্রিক প্রিভেন্টিভ মেডিসিনের অপ্রতুল কাঠামো।
গুরুচণ্ডালীতেই একটি প্রবন্ধে বেসরকারি হাসপাতালে লক্ষ লক্ষ টাকার বিল কিভাবে রোগীর ক্ষেত্রে কিভাবে প্রাণান্তকর হয়ে ওঠে তার বিবরণ পেয়েছি। একটুখানি ভালো করে ভাবলে আমরা বুঝতে পারবো যে বেসরকারি হাসপাতালে যে চিকিৎসা রোগীরা পেয়েছে তা হল রোগ-কেন্দ্রিক চিকিৎসা যাকে জনস্বাস্থ্যের পরিভাষায় ভার্টিকাল প্রোগ্রাম বা আলাদা আলাদা রোগ চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। এর বিপরীতে রয়েছে জনসমাজ-কেন্দ্রিক রোগ প্রতিরোধের চিকিৎসা যাকে জনস্বাস্থ্যের পরিভাষায় হরাইজন্টাল প্রোগ্রাম বলা হয়। গুরুচণ্ডালীর পাতায় আমরা পেয়েছি বিভিন্ন সব বিবরণ যেখানে দেখেছি করোনা অতিমারির সময়ে পশ্চিমবঙ্গে কিভাবে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বিনামূল্যে (অন্য প্রদেশের খবর আমি ভালো জানিনা, এজন্য বলতে পারবো না) করোনা-আক্রান্ত মানুষের কাছে সহজলভ্য এবং বন্ধুসুলভ করে গড়ে তোলা হয়েছে (এদিকে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ঈপ্সিতা পাল। আমি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।)। ফলে এই অতিমারি আমাদের কাছে, অন্তত পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার একটি সম্ভাবনার রাস্তা উন্মুক্ত করেছে। এ বিষয়ে আরও কিছু কথা বলার আগে জনস্বাস্থ্যের অন্য কয়েকটি দিক নিয়ে কথা বলা আবশ্যক।
ঐতিহাসিকভাবে জনসস্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ আধুনিক মেডিসিনের স্বাভাবিক চলার নিয়মে আসেনি। জনস্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ এসেছে যখন সমাজের ভারসাম্য এবং শ্রমপ্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়েছে সেরকম মুহূর্তে। তখন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য হাইজিন, স্যানিটেশন এবং সাধারণ স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে যে প্রোগ্রাম নেওয়া হয়েছে রাষ্ট্র সেগুলোকে পরবর্তীতে এর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতির অন্তর্ভুক্ত করেছে। জনস্বাস্থ্যের বিভিন্ন পলিসির জন্ম হয়েছে। সে ইতিহাস একটু ছোট্ট পরিসরে দেখা যাক।
প্রাক-আধুনিক স্বাস্থ্যের বোধ
আয়ুর্বেদ সহ বিভিন্ন প্রাচীন চিকিৎসাবিধিতে বিভিন্ন সময়, পরিবেশ ও কালে স্থিত মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে কেমন আচরণ হওয়া উচিত এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা আছে। আমি আয়ুর্বেদ খানিকটা জানি। অন্য দেশের এবং চিকিৎসাব্যবস্থার কথা কথা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারবোনা। এজন্য আয়ুর্বেদে সীমাবদ্ধ থাকছি।
আয়ুর্বেদে “সাত্ম্য” বলে একটি ধারণাকে ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণাটি হল – বিপুল বিশ্ব জগৎ বা (macrocosm)-এর মাঝে মানুষ বা অন্য যেকোন জীবিত কণা হচ্ছে অণুবিশ্ব বা microcosm। এ দুয়ের ভারসাম্য দিন, ঋতু, স্থান, সময়, ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে বিঘ্নিত হয়। এ ভারসাম্যকে সমস্ত দিক থেকে রক্ষা করতে পারলে মানুষ সুস্থ থাকে, না পারলে অসুখের আবির্ভাব হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় চরক-সংহিতা-র সূত্রস্থানম-এর ৬ নম্বর অধ্যায় (তস্যাশিতীয় শিরোনামে)-এ শেষ শ্লোকগুলোতে (৪৯ থেকে ৫১) বলা হচ্ছে –
ইত্যুক্তামৃতুসাত্ম্যং যচ্চেষ্টাহার ব্যাপাশ্রয়ম। উপশেতে যদৌচিত্যাদোকসাত্ম্যং তদুচ্যতে।। (৪৯) দোষাণামাময়নাং চ বিপরীতগুণং গুণৈঃ। সাত্ম্যমিচ্ছন্তি সাত্ম্যজ্ঞাশ্চেষ্টিতং চাদ্যমেব চ।। (৫০) তত্র শ্লোকঃ। ঋতাবৃতৌ নৃভিঃ সেব্যমসেব্যং যচ্চ কিঞ্চন। তস্যাশিতীয়ে নির্দিষ্টং হেতুমত্ সাত্ম্যমেব চ।। (৫১)
এই তিনটি শ্লোকের বাংলা করলে দাঁড়ায় – “এরকমভাবে যে ঋতুতে যেরকম চেষ্টা ও আহার করা উচিত তা বলা হল। একে ঋতুসাত্ম্য বা বিহার বলে। আর যেরকম আহার বিহার কোন ব্যক্তিবিশেষের প্রকৃতি অনুসারে অভ্যাস বশতঃ সুখজনক হয়, সেরকম আহার বিহারকে “ওক-সাত্ম্য” বলে। দোষ ও রোগের বিপরীত গুণবিশিষ্ট আহার বিহারকে সাত্ম্যজ্ঞেরা (পড়ুন আয়ুর্বেদজ্ঞরা) সাত্ম্য বলে থাকেন। এবং ওক-সাত্ম্যকেও সাত্ম্য বলা যায়। এই তস্যাশিতীয় অধ্যায়ে যে ঋতুতে যা সেব্য বা অসেব্য, তা হেতুর সাথে নির্দিষ্ট হয়েছে এবং সাত্ম্যের বিষয়ও বলা হয়েছে।”
লক্ষ্যণীয় যে, এ ধারণার মাঝে প্রকৃতি ও মানুষের ভারসাম্য রক্ষার উপযোগী একটি ধারণা আছে। আবার ব্রাহ্মণ্যবাদ ও পুরুষতান্ত্রিক আয়ুর্বেদশাস্ত্র যেহেতু সমাজের ক্ষেত্রে normative ভূমিকা পালন করেছে সেজন্য এ নির্দেশ ও অন্যান্য বিধিনিষেধ কার্যত, বর্তমানে প্রেক্ষিতে দেখলে, আধুনিক জনস্বাস্থ্যের অগ্রদূত বলা যায়। সমাজ-ভিত্তিক মানুষের জন্য সেসময়ের বিশেষ প্রেক্ষিতে নির্ভুল জনস্বাস্থ্য রক্ষার উপাদান।
কিন্তু শিল্প বিপ্লব পরবর্তী সময়ে macrocosm-microcosm তথা ব্রহ্মাণ্ডবিশ্ব ও অণুবিশ্বের এ ভারসাম্য চিরকালের মতো নিষ্ঠুরভাবে ভেঙ্গে গেছে। ফলে ঐতিহাসিক নিয়মে জনস্বাস্থ্যের নতুন চেহারা, চরিত্র, উপাদান এবং বৈশিষ্ট্য জন্ম নিয়েছে। একেই আমরা এখন জনস্বাস্থ্য বা পাব্লিক হেলথ বলে জানি।
জনস্বাস্থ্যের উন্মেষকাল
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসের এক মান্য ব্যক্তিত্ব এবং পণ্ডিত রয় পোর্টার তাঁর বৃহৎ পুস্তক The Greatest Benefit to Manknd-এ বলছেন – “The transition in Britain of public health from social agitation to a professional civil service was extensive but not unique; similar developments occurred elsewhere.” (পৃঃ ৪১৫। নজরটান লেখকের) ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি (আরেকটু পরে), বেলজিয়াম, আমেরিকায় শহরের গরীব, শ্রমিক শ্রেণী এবং সামাজিকভাবে সুযোগসুবিধা-বঞ্চিত মানুষের মাঝে প্রাথমিকভাবে ক্ষোভ এবং পরবর্তীতে জন আন্দোলনের জন্ম হয়। জার্মানির সুবিখ্যাত চিকিৎসক ভিরশো (Virchow) ডাক্তারদের এরকম প্রেক্ষিতে “attorney for the poor” বলে অভিহিত করেন।
ফ্রেডেরিখ এঙ্গেলস ১৮৭২ সালে প্রকাশিত তাঁর The Housing Question পুস্তকে বললেন – “Modern natural science has proved that the so-called “poor districts” in which the workers are crowded together are the breeding places of all those epidemics which from time to time afflict our towns. Cholera, typhus, typhoid fever, small-pox and other ravaging diseases spread their germs in the pestilential air and the poisoned water of these working-class quarters.” অর্থাৎ, মনুষ্য বসবাসের অনুপযোগী শ্রমিক অধ্যুষিত অঞ্চল থেকে রোগ ছড়ায়। ফলে, গণ অসন্তোষকে মোকাবিলা করা এবং উৎপাদনকে চালু রেখে মুনাফায় যাতে ঘাটতি না হয় সেজন্য জনস্বাস্থ্যের কর্মসূচী নেওয়া শুরু হয়।
এখানেই আসবে জন স্নো এবং এড্যুইন চ্যাডুইকের নাম। স্নো লন্ডনের সোহো অঞ্চলে ব্রড স্ট্রিটের পাম্প থেকে পাঠানো টেমস নদীর দূষিত জল যে সংলগ্ন এলাকায় কলেরা ছড়িয়ে পড়ার উৎস সেটা প্রমাণ করে দেখালেন। তিনি একটি ম্যাপও তৈরি করেছিলেন।
১৯৪২ সালে প্রকাশিত হল চ্যাডুইকের বিখ্যাত পুস্তক The Report from the Poor Law Commissioners on an Inquiry into the Sanitary Conditions of the Laboring Population of Great Britain। চ্যাডুইক বেন্থামের ভাবশিষ্য ছিলেন। জনস্বাস্থ্যের জগতে শুরু হল এক নতুন অধ্যায় – মেডিসিনের সাথে যুক্ত হল পরিসংখ্যান, এপিডেমিওলজি এবং রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী। এর আগে শব্যবচ্ছেদের ফলাফলকে পাতার ওপরে ইলাস্ট্রেশন করে গ্রাফিক্যালি দেখানোর প্রক্রিয়া চালু হয়েছিল। এবার নতুন যে জনস্বাস্থ্য তথা “সোশ্যাল মেডিসিন” জন্ম নিল সেখানে কাগজের ওপরে গ্রাফ বা মানচিত্র এঁকে পরিস্থিতিকে বোঝানো সম্ভবপর হল। পরিণতিতে, মেডিসিনের সাথে কোনভাবেই যুক্ত নয় এরকম আমলা এবং নীতি নির্ধারকেরা প্রাধান্যকারী ভূমিকায় আসতে শুরু করলো।
এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ আমরা আমাদের দেশে দেখেছি লকডাউনের সময়। কয়েক ঘন্টার নির্দেশে সমগ্র দেশব্যাপী লকডাউনের সিদ্ধান্তের সময় কোন এপিডেমিওলজিস্ট বা মেডিসিনের বিশেষজ্ঞদের প্রায় কোন ভূমিকাই ছিলনা। আমলা, অফিসার এবং মন্ত্রীদের সিদ্ধান্তে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় – জনস্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে।
পুরনো কথায় ফিরি। ফ্রান্সে Villerme, আমেরিকায় Shattuck, জার্মানিতে স্বয়ং ভিরশো, বেলজিয়ামে Quetelet প্রভৃতিরা প্রায় একই সময়ে মানুষের দারিদ্র্য, অসহনীয় বাসস্থান, ঘিঞ্জি এবং নোংরা পরিবেশ যে রোগের মূল উৎস তার ওপরে জোর দিতে থাকলেন। এর সম্ভাব্য কারণগুলোকে এভাবে দেখা যায় – (১) চিকিৎসক হিসেবে মানুষ তথা রোগী সম্পর্কে স্বাভাবিক মমতা এবং দায়বদ্ধতা, (২) নীচুতলার অসুখ যাতে ওপর তলায় এবং সার্বিকভাবে সমাজে না ছড়ায়, (৩) অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা যাতে অক্ষত থাকে, এবং (৪) রাষ্ট্রিকভাবে আন্দোলন এবং সামাজিক স্পেস এবং টাইমের (স্থান এবং সময়) ওপরে অধিকতর নিয়ন্ত্রণ যাতে রক্ষা করা যায়। শুধু তাই নয় হাইজিন স্যানিটেশন এবং জনস্বাস্থ্যের নতুন চেহারায় সামাজিক ক্ষেত্রে সার্বিক বিকাশের ফলে জনমানসে স্বাস্থ্য এবং অসুস্থতা সম্পর্কে রাষ্ট্র নির্ধারিত নতুন governance-এর টেকনিকসমূহ আয়ত্ত করার আগ্রহ সৃষ্টি। জন্ম নেবে আধুনিক রাষ্ট্রের উপযোগী নতুন এবং আধুনিক নাগরিকত্ব। স্টিফেন জ্যাসিনা মন্তব্য করছেন – “Medicine thus acquired a political status inasmuch as it gained a new relevance to the interests of the state...The success of the strategies of hygiene was dependent on the internalization of certain rules of behaviour by the population at large.” (The Western Medical Tradition: 1800-2000, p. 82)
অতিমারিকালে জনস্বাস্থ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ
আমেরিকাতে করোনা অতিমারিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গিয়েছে। প্রাইভেট ইন্সিউরেন্স নির্ভর ও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জিডিপি-র অংশ বরাদ্দ থাকে। তা সত্ত্বেও এই পরিণতি। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ নিবন্ধ “Covid-19 and the Mandate to Redefine Preventive Care”। এই প্রবন্ধে বলা হচ্ছে – “We believe the U.S. health care system should embrace this moment as an opportunity to shift the locus of preventive care from face-to-face annual exams to a strategy that focuses on population health: clinical registries that readily identify all preventive services for which a patient is due”। প্রবন্ধটির সিদ্ধান্ত হল – “A large-scale shift to a population-based prevention strategy is long overdue. The Covid-19 pandemic is delaying life-saving preventive screening for millions of patients, and our health system will struggle to catch up. Perhaps this crisis will be the impetus for change.” ঠেকে শেখা বলতে যা বোঝায় সে ব্যাপার আর কি!
ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত হয়েছে “Organising community primary care in the age of COVID-19: challenges in disadvantaged areas” (১৩.০৫.২০২০)। এখানে বলা হল – “In this context, coordinated efforts between hospital and community primary care have been crucial to maintain adequate health services. In the management of the COVID-19 outbreak”।
ভারতে এখনও অতিমারিকালে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে নতুন করে জীবন্ত ও ক্রিয়াশীল করে তোলার ব্যাপারে টুঁ শব্দটি নেই। পশ্চিমবঙ্গে করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক সরকারি সরকারি উদ্যোগ দেখা গেছে তাকে যদি অতিমারির পরেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা অব্দি প্রসারিত করা যায় তবে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য সে হবে এক দারুণ সুদিন।
গুরুচণ্ডালীতে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে একজন ভুক্তভোগী মানুষ লিখেছেন – “এক, বাঙ্গুর হাসপাতাল নিয়ে যে সব আতংকের কথা প্রচার করা হচ্ছে, তা সর্বৈব ভুয়ো। রোগী, যিনি উচ্চবিত্ত এবং রীতিমত পাঁচতারা জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত, তাঁর নিজের কথায়, “সরকারি হাসপাতাল যে এত ভালো ও পরিচ্ছন্ন হতে পারে, তা নিজে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। যারা বলেছিল বাঙ্গুরে গেলে আর বেঁচে ফিরতে পারবি না , টু হেল উইথ দেম”। মনে রাখতে হবে, রোগী জেনেরাল ওয়ার্ডে ছিলেন, কোনও স্পেশাল ব্যবস্থা করা হয় নি। দুই, আবারও রোগীর নিজের কথায়, “ডাক্তার, নার্স, এমনকি সাফাই কর্মীদেরও ব্যবহার এত ভালো ও তাঁরা এত কোওপারেটিভ যে ভাবা যায় না”।
তিন, চিকিৎসা ব্যবস্থার যেটুকু খবর আমরা পেয়েছি, তাতে কোথাও কোনও ত্রুটি হয় নি। ব্লাড টেস্ট, চেস্ট এক্স রে, সোয়াব টেস্ট সব নিয়ম মেনে হয়েছে। রোগীর যখন শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, তখন তাঁকে যথানিয়মে অক্সিজেন দেওয়া হয়।
চার, শুধু বাঙ্গুরের ডাক্তাররাই নয়, ওখানে এস এস কে এম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও অন্যান্য জায়গার ডাক্তারদের টীম আসছেন। এপিডেমিওলজির স্বনামধন্য স্পেশালিস্ট ডাক্তারদের টীম কাজ করছেন। পাঁচ, রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ছয়, আমাদের পকেট থেকে এক পয়সাও খরচ করতে হয় নি (অন্যান্য রাজ্যের অবস্থার খবর কিন্তু অন্যরকম।) এমনকি হাসপাতালের আম্বুলেন্স রোগীকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেছে।”
আরেকজন তাঁর বয়স্ক বাবাকে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন – “এই চোদ্দ দিনের ঘটনার ঘোর এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। বুঝতে পেরেছি,
১) বয়স্ক মানুষদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।
২) স্বাস্থ্য দপ্তর তার প্রথম দিককার অনভিজ্ঞতা কাটিয়ে উঠে ব্যবস্থাপনায় সুচারু হয়ে উঠেছে।
৩) বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক নিটোল।
৪) গত দিনগুলোতে যত ফোন আমার এসেছে প্রতিটি ফোনের ওপারে একটি করে মানবিক কণ্ঠস্বর আমি শুনেছি। আমার সব প্রশ্নের উত্তর তাঁরা অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে দিয়েছেন।
৫) এখন যেহেতু কভিড রোগীর একটা বড় অংশ হোম কোয়ারেন্টিনে বা সেফ হোমে আছেন তাই সরকারি হাসপাতালে বেড পাওয়া যাচ্ছে। বয়স্কদের অগ্রাধিকার। এবং এই পরিষেবা পেয়েছি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।তাই ব্যবসায়ী প্রাইভেট হাসপাতাল পরিত্যাগ করে আম জনতার সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভর করি সবাই। এখানেও পরিচ্ছন্নতার ত্রুটি নেই। আর, স্বাস্থ্য আমাদের অধিকার।”
এই অভিজ্ঞতাগুলো ফেলে দেবার নয়। সরকারকে ভাবতে হবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সীমা অবধি এ ব্যাপারগুলোকে কতটা বিস্তৃত ও বিকশিত করতে পারে। এখানেই রূপোলী রেখার অস্তিত্ব চোখে পড়বে সাধারণ আমজনতার। শুধু একটাই সমস্যা আমজনতাকে যদি শুধুমাত্র ভোটের সংখ্যা হিসেবে না দেখে একজন সার্বভৌম নাগরিক হিসেবে দেখা হয় তাহলে জনস্বাস্থ্য নিয়ে রাষ্ট্রের সত্যিকারের ভাবনা তৈরি হতে পারে। এবং একই সাথে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
"জনস্বাস্থ্যের জগতে শুরু হল এক নতুন অধ্যায় – মেডিসিনের সাথে যুক্ত হল পরিসংখ্যান, এপিডেমিওলজি এবং রাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী। "
জনস্বাস্থ্যে এপিডেমিওলজির প্রথম ব্যবহার জন স্নোর ১৮৫৪'র কলেরা অনুসন্ধানের অন্তত ২০০ বছর আগে জন গ্রান্টের ডেমোগ্রাফি নিয়ে কাজ করবার সময় থেকে। তবে ১৮৫৪ সাল নাগাদ দুটো বড় পরিবর্তন আসে, এক ক্রিমিয়ান যুদ্ধে ফ্লোরেনস নাইটিঙ্গেল বায়োস্ট্যাটিসটিকস, ক্লিনিকাল এপিডেমিওলজির গোড়াপত্তন করেন, এবং জন স্নো'র কলেরা অনুসন্ধান। জন স্নো ঠিক থেমসের জলকে কলেরার উৎস বলে প্রমাণ করেন নি, একটি বিশেষ জায়গাকে উৎস বলে স্থির করেন, এবং ব্রড স্ট্রিট পাম্পকে সিস্টেমেটিকালি অনুসন্ধান করে এপিডেমিওলজির প্রথম অনুসন্ধানকে প্রতিষ্ঠিত করেন। চ্যাডউইক অনেক পরে।
মাথায় রাখলাম, অরিন।
আমি ব্রড স্ট্রিট পাম্পের কথা বলেছি, ম্যাপও দিয়েছি। রাষ্ট্রের সরাসরি প্রবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফুকোর ধারণাও সাহায্যকারী।
আসলে যে কথাটা বিশেষ করে বলার, জনস্বাস্থ্য এবং জীববিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসার একটা তফাত রয়েছে, দুটোকে এক প্যারাডাইমে ফেললে সমস্যা হয়। যে কারণে WHOর আলমা আটা declaration এ স্বাসথ্যের সংজ্ঞা নিরূপণ নিয়ে পরবর্তী বহু দশক গোলমাল রয়ে গেছে।
আজকের ক্রাইসিস তার বহিঃপ্রকাশ।
খুব সুন্দর স্যার
অতিমারীর শুরু থেকেই ডা: জয়ন্ত ভট্টাচার্য তাঁর বিভিন্ন লেখার মারফত আমাদের সমৃদ্ধ করে এসেছেন। এখনও করে চলেছেন। ওনাকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
জয়ন্ত ভট্টাচার্য একজন সমাজ সচেতন ডাক্তার,লেখক এবং মানব দরদী মানুষ।
ওর সব লেখাই পড়ি,সচেতন হই এবং মানুষকে সে বার্তা দিতে থাকি।আজকের নিবন্ধে ডাঃ ভট্টাচার্য একটি সত্যকে তুলে ধরেছেন যার পিছনে অনেকাংশে চক্রান্ত কাজ করে চলেছে।ধন্যবাদ জানাই ।
অসাধারণ লাগলো
তথ্যসমৃদ্ধ এবং গুরত্বপূর্ণ লেখা!
ঠিকই বলেছেন । ঠেকে ইউরোপীয় বা আমেরিকা শিখেছে এ ইতিহাস তাদের আছে । ও দেশগুলোর রাস্তাঘাট, জল নিষ্কাশন ,পানীয় জল (tap এর জল পানীয় হয় ) ও সর্বোপরি ব্যক্তিমানুষের হাইজিন এর প্রয়োগ এ তার প্রমান । অতীতের মহামারীর শিক্ষার এ হলো প্রয়োগ ফল ।
আমাদের দেশে কি সরকার কি স্বাস্থ্যব্যবস্তা কেউ সে কথা উচ্চারণ ই করছে না । অথচ অতিমারীর শিক্ষা ই হলো পাশের মানুষ ভালো না থাকলে আমিও ভালো থাকবো না ।।
ঠিকই বলেছেন । ঠেকে ইউরোপীয় বা আমেরিকা শিখেছে এ ইতিহাস তাদের আছে । ও দেশগুলোর রাস্তাঘাট, জল নিষ্কাশন ,পানীয় জল (tap এর জল পানীয় হয় ) ও সর্বোপরি ব্যক্তিমানুষের হাইজিন এর প্রয়োগ এ তার প্রমান । অতীতের মহামারীর শিক্ষার এ হলো প্রয়োগ ফল ।
আমাদের দেশে কি সরকার কি স্বাস্থ্যব্যবস্তা কেউ সে কথা উচ্চারণ ই করছে না । অথচ অতিমারীর শিক্ষা ই হলো পাশের মানুষ ভালো না থাকলে আমিও ভালো থাকবো না ।।
ঠিকই বলেছেন । ঠেকে ইউরোপীয় বা আমেরিকা শিখেছে এ ইতিহাস তাদের আছে । ও দেশগুলোর রাস্তাঘাট, জল নিষ্কাশন ,পানীয় জল (tap এর জল পানীয় হয় ) ও সর্বোপরি ব্যক্তিমানুষের হাইজিন এর প্রয়োগ এ তার প্রমান । অতীতের মহামারীর শিক্ষার এ হলো প্রয়োগ ফল ।
আমাদের দেশে কি সরকার কি স্বাস্থ্যব্যবস্তা কেউ সে কথা উচ্চারণ ই করছে না । অথচ অতিমারীর শিক্ষা ই হলো পাশের মানুষ ভালো না থাকলে আমিও ভালো থাকবো না ।।
অসাধারণ লেখা খুবই সত্য
অসাধারণ স্যার ।
দারুণ লেখা । অতিমারি চিকিত্সা তথা স্বাস্থ্যব্যাবস্থার দগদগে ক্ষত চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে । আমি একজন মারাত্মকভাবে আক্রান্ত করোনার রোগী , সরকারী চিকিত্সা ব্যবস্থায় সুস্থ হয়েছি । আমার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ইতিবাচক । লেখকের সাথে সহমত হয়ে ও অতিরিক্ত যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করলে আরও ভালো হত ।
এক - অতিমারি শুরু হওয়ার আগে কোনোরকম প্রস্তুতি ছিল না ।
দুই - অবক্ষয়ী জনস্বাস্থ্যচেতনা , ফলে জনমানসে সংক্রামক ব্যাধি নিয়ে ভীষণ আতঙ্ক ,একঘরে করার প্রবণতা বৃদ্ধি ।
তিন - স্বাস্থ্যের Social Determinants বিশেষতঃ , ধনী - দরিদ্রের বৈষম্য ভিন্ন মাত্রা পায় ।
খুব ভাল লাগল আপনার লেখা,ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য।
আলোচনার উপসংহারে আপনি কথাগুলো লিখেছেন তার সঙ্গে আমি আমার মেঠো অভিজ্ঞতার নিরিখে একমত।
সরকারী চাকুরীর কারণে গ্রাম গ্রামান্তরে প্রচুর সময় কাটিয়েছি আমি। যে সব অঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু থেকেছে সেই সব গ্রামে বা বা আধাশহরে বাৎসরিক মহামারী কখনও আতঙ্ক ছড়ায় নি কারণ সহজেই প্রতিরোধ করা গিয়েছে। সমস্যা হয়েছে সেই সব অঞ্চলে যেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক বা চিকিৎসাকর্মী বা দুয়েরই অস্তিত্ব নেই।
অতএব নতুন নতুন চকচকে হাসপাতাল না করে বা চালু হাসপাতালগুলোর বহর না বাড়িয়ে যেগুলো আছে তাতে নির্দ্ধারিত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ করে উপযুক্ত ওষুধ সরবরাহ নিয়মিত সরবরাহ করা হোক।
দারুণ লেখা ।
বন্ধু জয়ন্ত খুব সুন্দর লিখেছে "কর্পোরেট পুঁজি ও রাষ্ট্রক্ষমতার খেলা"। এই খেলা শুধু স্বাস্থের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
লেখাটি অগাধ পান্ডিত্যপূর্ন ।
But at the end the west corporate world give the solution for diagnosis, epidemiological tools, vaccine and the the anti-viral medicines. How to eleveate the socialism or a socialistic system to provide these realistic outcomes remains a challenge.
Siba Prasad Raychaudhuri, University of California
ভালো লেখা, এসব লেখা একত্রে একটা সংকলন প্রকাশ করা
এ কথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে, কোভিড চিকিৎসা ব্যবস্থা কয়েকটা জিনিস পশ্চিমবঙ্গে দেখিয়ে দিয়েছে। দেখিয়েছে, বছরের পর বছর সমস্ত রকম অবহেলা, দুর্নীতি, দলবাজির অভিযোগ সত্ত্বেও সরকারি ব্যবস্থায় কত কিছু করা সম্ভব। দেখিয়েছে, করপোরেট হাসপাতালে মহামারী ধারণাটিই 'ফরেন'। ফেল কড়ি মাখ তেল ব্যবস্থার ত্রুটি সাধারণ অবস্থাতে গা-সওয়া হয়ে যায়, আর মহামারীতে তার কুৎসিত দিকগুলো বড় বেশি দেখা যায়।
বন্ধু অরিন লেখাটির কয়েকটা তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আমি বলব, লেখা সাজানোর ব্যাপারে জয়ন্তদা অনায়াসেই আরেকটু মনোযোগী হতে পারেন। লেখাতে এঙ্গেলস থেকে আয়ুর্বেদ পরে এলে, মহামারীবিদ্যা ও কোভিড আগে এলে, পাঠকের উৎসাহ ধরে রাখতে সুবিধা হত মনে হয়।
সুদেব সাহা বোধকরি রায়গঞ্জের সরকারি চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন, এবং তিনি একজন চিকিৎসক। তাঁর ভরসাই আমার কাছে হাজার তথ্যের চাইতে বেশি বড় তথ্য।
আর সুকুমার ভট্টাচার্যের মন্তব্যও অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। যেখানে যেটুকু সরকারি 'প্রাথমিক' চিকিৎসা চালু আছে, সেটুকু একই বিনিয়োগে পাওয়া বেসরকারি চিকিৎসার চাইতে ঢের বেশি 'রিটার্ন' দিচ্ছে। বেশি মানুষকে পরিষেবা দিয়ে, এবং পরিষেবা সংক্রান্ত আর্থিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়ে, যে সামাজিক 'রিটার্ন' তা দৃশ্যমান আর্থিক রিটার্নের বহুগুণ বেশি। অথচ সরকারি বিনিয়োগ গুটিয়ে আনা হচ্ছে।
বেসরকারি বিনিয়োগের ধর্মই এই যে তা মূলগত ভাবে অন্য অর্থে 'রিটার্ন'-এর কথা মাথায় রাখে। বেসরকারি পরিকল্পনা করেন যারা তাদের কাছে রোগ নিরাময় হল গুডউইল জেনারেশনের অনেক উপায়ের একটি উপায় মাত্র। বড় বড় বাড়ি বানিয়ে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা সেই বিজ্ঞাপন-কন্টকিত পথে হাঁটার চেষ্টা একেবারে করতে পারে না, এমন নয়ত। কিন্তু সরকারি ব্যবস্থার স্টেক অনেকটাই অন্যরকম।
আর এখান থেকেই চলে আসে শিবুদার মন্তব্য। ডা শিবপ্রসাদ রায়চৌধুরী বলছেন, কর্পোরেট ছাড়া আমাদের চিকিৎসার 'বিজ্ঞান' দেবে কে? কে দেবে রোগ নির্ণয়ের নানা হাতিয়ার? ভ্যাক্সিন? ভাইরাস মারার ওষুধ? শিবুদা বোধকরি খানিকটা জোর করে কর্পোরেট নির্ভর এলাকার মধ্যে মহামারীবিদ্যার হাতিয়ারকেও (epidemiological tools) ঢুকিয়ে দিয়েছেন। সোস্যালিজম বা সোশ্যালিস্ট সিস্টেম এমন সব জিনিস তৈরি করার চ্যালেঞ্জ এখনও নিতে পারেনি, তাকে আর একটু উচ্চমানে নিলে সে হয়তো বা নিতে পারবে এই চ্যালেঞ্জ-- লিখেছেন শিবুদা।
শিবুদা, How Do We Do Harm (Otis Webb Brawley) ( https://www.amazon.in/How-We-Do-Harm-America/dp/1250015766) এখন বেশ পুরনো বই হয়ে গেছে। কর্পোরেটকে উচ্চমানে নেবার, এলিভেট করার, কোনও রাস্তা কি অবশিষ্ট আছে? টেকনিক্যাল দিকে 'রাষ্ট্র', বা যে কোনও অ-কর্পোরেট সংস্থা, কেমন করে আরেকটু অবদান রাখতে পারে, সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। গত শতকের পেনিসিলিন, এমনকি ওআরএস, বা পোলিও ভ্যাক্সিন, কর্পোরেটের করা বর্তমান্ স্ট্রাচারের বিপ্রতীপে কিঞ্চিত অসহায়, সেটা শিবুদা ঠিকই ধরেছেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
জয়ন্ত (দাস) চমৎকার সারাংশ করেছে আমার লেখাটিকে ঘিরে বিভিন্ন মতামতের। লেখাটির গঠনের ব্যাপারে ওর পরামর্শ মাথায় নিলাম।
বিশ্বের প্রায় সব দেশে কর্পোরেট এমন সর্বময় অস্তিত্ব নিয়ে আছে যে এর বাইরে গিয়ে ভাবা প্রায় অসম্ভব - এমনই এক সোশ্যাল সাইকির জন্ম হয়েছে। কিন্তু, এমনকি কর্পোরেট নিয়ন্ত্রিত আমেরিকাতেও, সার্স-কোভ-২-এর ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের ব্যাপারে রাষ্ট্রের ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল। Operation Warp Speed (OWS) এর একটি উদাহরণ। OWSএর জন্য আমেরিকান রাষ্ট্র ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। যদিও ফাইজার OWSএর টাকা নেয়নি।