উৎসর্গ
অবধূতের মতো আমার কিছু গুরু আছে। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই, বিশেষতঃ সাহিত্যের জন্য রয়েছেন একাধিক সাহিত্য-গুরু। অবধূত না বলে একলব্যও বলতে পারেন। এঁদের একজন বাদে কারোর সাথে আমার কোনোদিন মোলাকাত হয় নি। তাঁরা সব্বাই যে প্রচণ্ড জনপ্রিয় তা কিন্তু নয়। কিন্তু তারা আমার প্রিয়।
হুমায়ুন আহমেদ তাদের মধ্যে একজন। বাংলাদেশে প্রবল জনপ্রিয়, পশ্চিমবঙ্গে নন। জনপ্রিয়তা না পাওয়ার কারণ খুব সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গের পাঠকের সঙ্কীর্ণতা। চাচা-খালু-জনাব-পানি-বুয়া এসব শব্দ বোধহয় আমরা খোলা মনে নিতে পারি নি।
সেসব আলাদা প্রসঙ্গ। ভক্ত হিসেবে তাঁর লেখা প্রতিটি প্রকাশিত শব্দ (হ্যাঁ, লেখা নয়, শব্দ) আমি পড়েছি। সবই দারুণ ভালো লাগে নি। কিন্তু ট্রিপ্ল সেঞ্চুরির ইনিংসে মিস-টাইম্ড বাউন্ডারির মতোই সেগুলি সহজে এড়িয়ে যাওয়া যায়। মনে মনে বা লিখে লিখে তাঁর স্টাইলের নকল করার চেষ্টা করেছি।
গুরুচণ্ডালীতে একজন লিখেছিলেন হুমায়ুন আহমেদ মৃদু মানুষের ঈশ্বর। উপযুক্ত বিশেষণ।
নারায়ণ সান্যালের অবশ্য সেরকম কোনো বিশেষণ নেই। ইনি হুমায়ুনের তুলনায় বেশ খানিকটা কম জনপ্রিয়। সম্ভবতঃ একটি বিশেষ প্রকাশনা গোষ্ঠীর কাছে মাথা নত না করতে পারায় তাঁর লেখার প্রাপ্য প্রচারে অনেকটা খামতি থেকে গেছে। ‘বিশ্বাসঘাতক’ এখনও প্রচুর বিক্রি হয়। কিন্তু ‘আনন্দে’ না থাকতে পারলে ‘টপ টেনে’ টিকে থাকা বড়োই মুশকিল।
নারায়ণ সান্যালের অনেকগুলো স্টাইলের মধ্যে একটি অনবদ্য স্টাইল ছিল - যেটা কিছুটা ইতিহাস, কিছুটা কল্পনা। এই স্টাইলটাকে সঠিকভাবে ভাষায় বর্ণনা করা মুশকিল। চেষ্টা করছি
এককথায় বলতে পারেন ইতিহাসের শূন্যস্থান পূরণ। ইতিহাসের বিকৃতি বলবেন না, প্রেম আর যুদ্ধের থেকেও সাহিত্যে গণ্ডি বেঁধে দেয়া আরো বেশি কষ্টকর। এবারের লেখা নারায়ণ সান্যালের সেই স্টাইলে। স্টাইলের নাম? – ওই যে বললাম 'ইতিহাসের শূন্যস্থান পূরণ'।
বিশ্বাসঘাতকের দোহাই, পড়লে লাইন বাদ দিয়ে পড়বেন না। বিশ্বাসঘাতক যারা পড়েছেন, তাঁরা বুঝতে পারবেন, ধরতে পারবেন এই নকলনবিশি। এমনকি, ‘লাইন বাদ দিয়ে পড়বেন না’ শব্দবন্ধটাও ‘বিশ্বাসঘাতক’ থেকে টোকা। আর হ্যাঁ, পারলে গল্পের মাঝখানে গুগল উইকি না ঘেঁটে গল্পটা শেষ করে ফেলুন।
বিশ্বাসঘাতকের প্রথম সংস্করণে, গল্পের সাঙ্ঘাতিক নাটকীয় স্থানে এরকম ধরনের একটা বাক্য ছিল – সেই বিজ্ঞানী হয়তো এখন কবরে শুয়ে আপসোস করছেন। পরের কোনো একটা সংস্করণে স্টার দিয়ে নিচে ফুটনোট দেয়া ছিল। সরি, উনি বেঁচে আছেন। সে বছরের নোবেল প্রাপকদের তালিকায় তাঁর নাম দেখা গেছে। তাই আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, কল্পনা আছে, বাস্তব থেকে বিচ্যুতি আছে। কিন্তু একটা গল্পও আছে।
আসুন, শুরু করা যাক। গল্পের নাম 'অসূর্যম্পশ্যা'।
অসূর্যম্পশ্যা – ক
আমার নাম বলবো না আপনাদের। মানে লেখার প্রথমেই বলবো না, পরে বলবো। আমি ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলাম এটুকু শুধু বলতে পারি। সবাই তাই বলে, এই তো পাশের ছবিটা দেখুন, আপনারাও বলবেন।
আচ্ছা, বরং ডাকনামটা বলি, ক্যামন? নইলে তো পুরো গপ্পোটাই সর্বনাম দিয়ে বলতে হবে। সে বড়ো মুশকিলে ব্যাপার। আমার ডাকনাম হলো রুট্ঠি।
এ শব্দের মানে কি? আমিও ঠিক জানি না। তবে আমার ধারণা আমার বড়ো নামটা ছোটো করে একটা আদুরে ডাকনাম বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মোটেও ভাববেন না যেন সুন্দরী বলে এ মেয়ের পড়াশোনা হয় নি, আদরে বাঁদর হয়ে গেছে। বাড়িতে কড়া শাসনের মধ্যে থাকতে হত আমাদের সবাইকে। রক্ষণশীল পার্সি পরিবার বলে কথা। দাঁড়ান, আমার কথা বলার আগে আপনাদের আমাদের বাড়ির ইতিহাসটা ছোটো করে একটু বলে নিই।
দাদুকে আমি তেমন দেখতে পাই নি। আমার যখন সবে এক বছর হয়েছে, দাদু চলে গেলেন। ব্যবসায়ী মানুষ ছিলেন, বেশ বড়ো ব্যবসা। আমাদের পরিবারের পদবি ‘পেতি’। সেও এক অদ্ভুত ইতিহাস। দাদুর নাম ছিল মানেকজী। ফ্রেঞ্চ ব্যবসায়ীরা তো সে নাম উচ্চারণ করতে হিমশিম। দাদুর ছোট্টখাট্টো চেহারা দেখে তারা দাদুকে দিব্বি ‘পেতি’ বলে ডাকতে শুরু করল। বেশ সহজ নাম। ফরাসি ভাষায় ‘পেতি’ মানে ‘ছোট্ট’। সেই থেকে ‘পেতি’ শব্দটা আমাদের পরিবারের পদবী হয়ে গেল। ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল!
আমেরিকান সিভিল যুদ্ধের ডামাডোলের সময়ে ইওরোপিয়ান কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করে দাদু খানিকটা অবস্থাপন্ন হন। তারপর সেই উপার্জন মূলধন করে অবিভক্ত ভারতবর্ষের প্রথম টেক্সটাইল মিল তৈরি করেন। সহজেই অনুমেয়, এরপর আমাদের পরিবারকে আর আর্থিকভাবে পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। সেই অর্থে সোনার চামচ মুখে দিয়েই আমার জন্ম।
১৯১৬ সালের গরম দুপুর। বোম্বে দারুণ তাপপ্রবাহে জ্বলছে। গরম কাটাতে বাবা আমাদের নিয়ে গেলেন হিমালয়ে – দার্জিলিং। আচ্ছা, দাঁড়ান, আমার বয়েসের হিসেব রাখার অঙ্কটা আপনাদের জন্য সোজা করে দিই, ক্যামন? এই তো তার আগের শীতে আমি ষোলোতে পড়লাম। ব্যাক ক্যালকুলেশন করে ফেললেন তো?
হ্যাঁ, আমার জন্ম ১৯০০ সালে, ২০শে ফেব্রুয়ারি। হিসেব করতে খুব সুবিধে করে দিলাম, তাই না? ঝটপট বিয়োগ করা যাবে। অনেকদিনের কথা কিন্তু। কতটা আগের সেটা বোঝানোর জন্য একটা আন্দাজ দিই। আমার জন্মের সময় সুভাষচন্দ্র কটকের স্টুয়ার্ট স্কুলে পড়ছেন, পরের বছর কটকেরই র্যাভেন্শ স্কুলে ট্রান্সফার নেবেন। কলকাতায় ও পরবর্তীকালে সারা বিশ্বে সুভাষের গম্ভীর পদক্ষেপ তখনও অতল ভবিষ্যতের গর্ভে।
ব্রিটিশ সরকার টালমাটাল, ১৮৫৮ এর সিপাহী বিদ্রোহ কঠোর হাতে দমন করেছে তারা। কিন্তু সে বিদ্রোহ আগুন ঢেলে দিয়েছে আসমুদ্রহিমাচল ভারতবাসীর বুকে। দিকে দিকে বিভিন্ন রাজ্যে প্রায়শই জ্বলে উঠছে ছাই-চাপা আগুন। Divide and conquer নীতিতে ব্রিটিশ প্রথমেই আঘাত হেনেছে ভারতের পুবে। ১৯০৫, হিন্দু-মুসলিম রেষারেষিকে উস্কানি দিয়ে, ব্রিটিশ স্বার্থসিদ্ধির প্রয়াসে লর্ড কার্জন দু’ভাগ করে দিয়েছেন বঙ্গদেশকে। অজুহাত এতে নাকি প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়বে। প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছে সারা বাংলা জুড়ে। প্রতিবাদের তীব্রতা এতোটাই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যে ব্রিটিশ ১৯১১ তে বাধ্য হয়েছে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে।
এরকম পটপট করে কথা বলি ভাববেন না যেন আমি স্রেফ একটা ছটফটে ষোলো বছরের মেয়ে। আমার বাবা আর দাদু দু’জনকেই ব্রিটিশ সরকার নাইট উপাধি দিয়ে দিয়েছেন। আরো পরে, আমার স্বামীকে ব্রিটিশরা যখন নাইট উপাধি দিতে চলেছে বলে গুজব রটবে, সাংবাদিকরা, বন্ধুরা আমায় ছেঁকে ধরবে। জানতে চাইবে স্যারের সাথে লেজুড় হয়ে আসা লেডি উপাধিটা আমার পছন্দ কিনা।
তখন আমি ঠোঁট উল্টে, হেলায় বলবো দরকার হলে আমি ডিভোর্স নেবো, কিন্তু ব্রিটিশরাজের দেওয়া নাইট উপাধি মেনে নিতে পারবো না।
কিন্তু সে তো অনেক পরের কথা, ক্রমশঃ প্রকাশ্য। আপাতত এই বংশের মেয়ে হিসেবে আমার যে প্রচুরই দায়িত্ব, সেটা তো আন্দাজ করতে পারলেন, নাকি?
ও হ্যাঁ। বলা হয় নি। বাড়ির প্রথা মতো আমি অসূর্যম্পশ্যা, বাড়ির বাইরে কোথাও গেলে আমায় মাথায় আচ্ছাদন দিয়ে যেতে হয়।
আমাদের স্কুলিং এর জন্য বাবা আমাদের ফ্রান্সে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে অব্দি মাথায় কাপড় ঢাকা দিয়ে স্কুলে যেতে হত, স্কুলে প্রথম দিন সবাই কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ছিল। বাবা, মা সব সময় চিঠিতে খোঁজ নিতেন। তারপর যুদ্ধ বেধে গেল – প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ১৯১৪। ফ্রান্স, ব্রিটেন আর রাশিয়া একজোট হয়ে জার্মানি-অস্ট্রিয়া-ইতালির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল। বাবা তড়িঘড়ি আমাদের ফ্রান্স থেকে বোম্বে ফিরিয়ে আনলেন।
ফাস্ট ফরোয়ার্ড টু ১৯১৬, দার্জিলিং। পৌঁছেই আমি পরের দিন এক ছুট্টে বেরিয়ে গেছি বাইরে। সে কিরকম দার্জিলিং? এই ২০১২তে বসে আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। অল্প করে বলি, ম্যাল আছে, মন্দির নেই, কাঞ্চনজঙ্ঘা আছে, ভিড় নেই। স্বপ্নের শহর। দার্জিলিং। দোর্জেলিং’র অপভ্রংশ। তিবেতি ভাষায় ‘দোর্জে’ মানে ঝড়, ঝঞ্ঝা। ‘লিং’ মানে স্থান, দেশ। ঝঞ্ঝার দেশ - the land of the thunderbolt। ঝঞ্ঝাই হলো বটে। জীবনটা দুমড়ে, মুচড়ে, পালটে গেল।
আমি তো সেই ভোরে বেরিয়ে পড়েছি, চা বাগান থেকে নিজে হাতে চা তুলবো। বাবাকে বলতেই প্রথমে বেঁকে বসেছিলেন। শেষ অব্দি কপাল অব্দি কাপড়ে ঢেকে যাবো চা বাগানের মেয়েদের মতো – এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তবে রেহাই পেলাম। তর তর করে আমি নেমে গেছি। বাগানে পৌঁছে দেখি ঘোড়ায় চড়ে ব্রিটিশ মালিক চা বাগানের দেখাশোনা করছে। তাকে বলা আছে, স্যার দিনশ পেতির মেয়ে আসছে চা বাগানে। চারিদিকে একটা সাজো সাজো রব।
চা-তুলুনী মেয়েগুলো অবশ্য এসব কিছু বোঝে না, ওরা উর্দু-ইংরিজি কিছুই জানে না তো। আমার অপক্ক হাতে চাপাতা তোলা দেখে ওরা তো হেসেই গড়াগড়ি। জানে তো না, রুট্ঠির জেদ। আমি ওদের দেখা দেখি বেশ খুঁজে খুঁজে চা-পাতা তোলা শিখে গেলাম। ওদের মতো তাড়াতাড়ি তুলতে পারছিলাম না যদিও। আর তারপর পায়ে গামবুটটায় একবার জোঁক ঢুকে গিয়ে ভীষণ রক্তারক্তি কাণ্ড। একটু সময় নষ্ট হলো। কিন্তু সে যাই হোক, প্রথম দিনের পক্ষে আমার চা-পাতার ঝুড়ি ভালোই ভরে উঠেছে। সেই ঝুড়ি নিয়ে আমি তো দে দৌড়। চলে এসেছি বাংলোতে। উত্তেজনায় একেবারে বাড়ির সামনে। বাবাকে দেখাতে হবে যে নিজে হাতে করে আমি কত্তোগুলো চা-পাতা তুলেছি।
বাংলোর গাড়ি-বারান্দার সামনে এসে দেখি বাবা আর একজন অত্যন্ত হ্যান্ডসাম ভদ্রলোক চা বাগানের মালিদের সাথে কথা বলছেন। আমার পায়ের শব্দ পেয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন। জানেন, সেই প্রথম আমি দেখলাম আমার পুরুষকে, আমার জে’কে। না, নাম গোপন করবো বলে জে বলছি না। সেই প্রথম দিনটা থেকেই আমি ওঁকে জে বলেই ডাকি। দৃপ্ত ঋজু মেদহীন লম্বা চেহারা। ব্যাক ব্রাশ করা ঘন কালো চুল। চোখ ঝলসে যায়। সাদা ফরম্যাল শার্ট, গাঢ় রঙের টাই, তার ওপরে ডার্ক গ্রে স্যুট। আর খুব বুদ্ধিদীপ্ত ঝকমকে এক জোড়া চোখ। বয়েস আন্দাজ করতে পারা যায় না। কতোই বা আর হবে? বড়ো জোর সাতাশ, খুব বেশি হলে তিরিশ। সুন্দর পুরুষ দেখলে এই হিসেবটা যে বিশ্বের সব কুমারী মেয়েই করে।
উনি চাবাগানের শ্রমিকদের সাথে কথা বলছিলেন, হিন্দিতে। ওদের অভাব-অভিযোগ শুনছিলেন। শ্রমিকদের সাথে মিশে গেছিলেন, শুধু ওনার হিন্দি উচ্চারণটা শ্রমিকদের থেকে অনেক বেশি মার্জিত বলে তফাৎ করা যাচ্ছিল। হিন্দির মধ্যে দু-চারটে উর্দু শব্দ। মাঝে মাঝে একটা ছোট্ট নোটবইতে লিখে রাখছিলেন। আমাকে দেখে স্মিত হাসলেন। ঘুরে দাঁড়ালেন। বললেন, “গুড মর্নিং, ইয়ং লেডি।”
আমার সারা গায়ে মাটি-কাদা, হাতে চা-পাতার থলি। সারা মুখে ঘাম বিজ্বিজ্ করছে, আর বুকের ভেতর ধুকপুক। আমার গলার স্বর যেন আমিই শুনতে পেলাম না।
কোনোরকমে প্রত্যুত্তর দিলাম, প্রায় ফিসফিস করে, “গুড মর্নিং, স্যার”।
জে আমার হতবিহ্বল অবস্থাটা চট্ করে আন্দাজ করে নিয়ে বাবার দিকে ঘুরে তাকালেন। “অর, শ্যাল আই সে আফটারনুন, স্যার পেতি?” বলে নিজের হাতের ঘড়িটার দিকে অঙ্গুলি-নির্দেশ করলেন।
বাবা মৃদু হেসে ঘড়ি দেখে নিলেন, “নো, ইট সিম্স দ্য মর্নিং ইজ স্টিল প্রেটি গুড। ওয়েল, লেট মে ইন্ট্রোডিউস ইউ টু মাই ডিয়ার রুট্ঠি।”
ভাগ্যিস জে বাবার সাথে ইচ্ছে করে এতোগুলো কথা বললেন। নইলে যে কি অঘটনটাই ঘটতো। ওঁদের কথা শেষ হতে হতে আমি শ্বাস ফিরে পেয়েছি। ও হ্যাঁ, ১৯১৬’র কথা বলছি তো। অচেনা পুরুষ ও মহিলাদের আপনি বলাটাই তখনকার রীতি।
দুপুরে খাওয়ার টেবিলে বসার আগে মার সাথে কথা হলো। জানলাম ষোড়শীর চোখের আবেশ ভুল বলেছে, জে আসলে উনচল্লিশ। উৎসাহ কমার বদলে অদ্ভুতভাবে বেড়ে গেল। চল্লিশ ছুঁইছুঁই বয়েসে এরকম হ্যান্ডসাম বড়ো দেখা যায় না, ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে তো নয়ই। তার সাথে লন্ডনের লিঙ্কন’স্ ইনের মার্জিত কিন্তু তুখোড় উচ্চারণে খাঁটি ব্রিটিশ ইংলিশ। এই যদি পৌরুষ না হয়, তাহলে আমি জানতে চাই পৌরুষ বস্তুটা আসলে কি?
দুপুরে খেতে বসে জে’র সাথে অনেক কথা হলো, সেই প্রথম বার। দার্জিলিঙে বাকি দিন ক’টা দেখতে দেখতে কেটে গেল। মন-মাতানো পাহাড়ের কোলে, জে’র সঙ্গে, জে’র বাগ্মিতায়, জে’র স্পর্শে।
অসূর্যম্পশ্যা – খ
বোম্বেতে ফিরে এখন আমরা লুকিয়ে দেখা শুরু করেছি। আমার জে বোম্বের সব’চে সেরা ল’ইয়ার। প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর আপাদমস্তক প্রফেশনাল জে, দু’হাতে রোজগার করেন। ভাবছেন, পছন্দের পুরুষের প্রশংসা করছি? মোটেই না, আপনাদের বরং জে’র প্রফেশনাল জীবনের একটা ঘটনা বলি।
আমার জন্মেরও আগে, সেই ১৮৯৬ সালের ২৪শে আগস্ট জে বোম্বে হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট হিসেবে নাম নথিভুক্ত করেন। অচিরেই জন ম্যাকফার্সন, বোম্বে হাইকোর্টের তখনকার দাপুটে অ্যাডভোকেট-জেনারেল, জে’র কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে জে’কে নিজের চেম্বারে অন্তর্ভুক্ত করে নেন।
১৯০০ সালে প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ দস্তুর বিদায় নেওয়ার পর, জে সেই পদের জন্য আবেদন করেন। জে তখনো বয়েস ও অভিজ্ঞতা অনুপাতে জুনিয়র অ্যাডভোকেট। আরো অনেক সিনিয়র ল’ইয়ার বোম্বে হাইকোর্টে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে আবার ব্রিটিশ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্রিটিশ ল’ইয়াররা বরাবরই একটা অলিখিত সুবিধে পেয়ে থাকেন। কিন্তু অল্প সময়ে জে’র কর্মদক্ষতা উপর মহলে ছড়িয়ে পড়েছিল বলে তাঁকে সাময়িক ভাবে প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট পোস্টে বহাল করা হয়।
যথারীতি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জে প্রমাণ করে ছাড়েন, উপর মহল পাকা জহুরী। হীরে চিনতে তারা ভুল করে নি। সাময়িক চাকরি শুরু হওয়ার ছ’মাস বাদে স্যার চার্লস তাঁকে পার্মানেন্ট অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাঠালেন। প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট পোস্ট, বেতন মাসে দেড় হাজার টাকা।
জে এই চিঠির যে উত্তর দেন, তা আজো বোম্বে হাইকোর্টে কান পাতলে শুনতে পাওয়া যায়। জের কাজে খুশি হলে কি হবে, ওপরওলা আদতে ব্রিটিশ তো। একজন ব্রিটিশ ব্যারিস্টার প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট পদে থাকলে যে মাইনে পেতেন তার থেকে অনেক কম মাইনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ব্রিটিশরাজের সেই চাকরির প্রস্তাব জে সপাটে প্রত্যাখ্যান করেন। শুধু তাই নয়, সেই প্রত্যাখ্যানের চিঠিতে এও জানিয়ে দেন, তাঁর রোজগারের লক্ষ্যটা আর একটু বেশি উঁচু। মাসে নয়, তিনি দিনে ১৫০০ টাকা রোজগার করতে চান। জে’র এই চিঠি কিন্তু নিছকই দম্ভোক্তি ছিল না। বোম্বে হাইকোর্টের সফলতম ব্যারিস্টার হিসেবে জে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই এই পরিমাণে রোজগার করতে সমর্থ হন।
আপনাদের ফের মনে করিয়ে দিই সময়টা ১৯০০। বোম্বেতে এক কিলো ভালো চালের দাম তখন সাড়ে পাঁচ পয়সা।
বড্ড এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আবার ফিরে আসা যাক, কাট টু ১৯১৭। প্রায়ই জে আমার জন্য নিজের গাড়িটা পাঠিয়ে দেন। আমরা কোনো রেস্টুরেন্টে দেখা করি। ভারতবর্ষের রাজনীতি, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের গতি-প্রকৃতি, পশ্চিমী সাহিত্য – আলোচনায় বাদ যায় না কিছুই।
সেদিন এরকমই একটা রেস্টুরেন্টে কফি অর্ডার করে, আমি জে’কে বলে ফেললাম। সেই কথাটা। সেই আপাত সহজ, কিন্তু অমোঘ কথাটা। জে, আমি বাকি জীবনটা আপনার সাথে থাকতে চাই। আপনি কি তাই চান?
জে আমার চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। তারপর মুখ খুললেন, “রুট্ঠি ডার্লিং, তুমি কি ভাল করে সব দিক ভেবে দেখেছো? তুমি সতেরো, আমি একচল্লিশ। তোমার কাছে তো আমি কিছুই গোপন করি নি। আমার প্রথমা স্ত্রীর অকাল মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে আমি ভালো করে চিনতামও না। ইংল্যান্ডে পড়তে যাওয়ার আগে মার অনুরোধ রাখতে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলাম। বিদেশ থেকে ফিরে আমি তার দেহ কাফন করারও সুযোগ পাই নি।”
আমি ধীরে ধীরে ঘাড় নাড়লাম। এ সবই তো আমি জানি। এ সব ভেবেই তো আমি রাজী হয়েছি। আপনারা শুনলে হাসবেন। যে পুরুষের জন্য আজ আমি পাগল, তাঁর প্রথম বিয়ে ফেব্রুয়ারি ১৮৯২’তে। আমার জন্মের ঠিক আট বছর আগে।
জে, মাই ডিয়ার জে, আসল সমস্যাটাই কিনা আপনি ভুলে গেলেন। এটা ভারতবর্ষ, এটা ১৯১৭ সালের ভারতবর্ষ। এখানে আজ থেকে ঠিক নব্বই বছর বাদে, ২০০৭ সালে, রিজওয়ানূর নামের একটি মুসলিম ছেলে, ঘোষিত ভাবে ধর্ম-নিরপেক্ষ ও কমিউনিস্ট শাসিত রাজ্যে, ভিন্ন ধর্মের মেয়েকে ভালোবাসার দায়ে খুন হবেন।
জে, পেশায় আপনি যতই সফল ব্যারিস্টার হোন না কেন, ভারতের উচ্চবিত্ত সমাজে যতই আপনার সহজ আনাগোনা থাকুক না কেন, যশ-খ্যাতি-বিত্ত-প্রতিপত্তি এসব যতোই আপনার হাতের মুঠোয় এসে থাকুক না কেন, জেনে রাখুন আম আদমির চোখে আপনার একমাত্র পরিচয় আপনি একজন মুসলিম, স্রেফ একজন মুসলিম।
এই ঠিক যেমন আমি শুধুই একজন পার্সি। জে ম্লান হাসলেন, “রুট্ঠি, আমি ঠিক ভুলে যাই নি, বলতে পারো প্রসঙ্গটা এড়িয়ে যাচ্ছিলাম। লেট মি টক টু স্যার দিনশ। আই মাইট বি এব্ল তো আর্গ্যু হিম। ডোন্ট এভার ফরগেট য়ু হ্যাভ গট দ্য বেস্ট ল’ইয়ার অফ বোম্বে অন ইয়োর সাইড”।
উফ্ফ্, জে।
আজকে জে বাবার সাথে দেখা করতে আসবেন। সকাল থেকেই আমি ভয়ে কাঁটা হয়ে আছি। কাউকে বুঝতে দিচ্ছি না যদিও। জে আসবেন বলে বাবা নিজে রান্না-বান্নার খোঁজ-খবর করছেন। বোম্বেতে জে’র যশ-প্রতিপত্তি ইতিমধ্যে অনেকটাই বেড়েছে। বোম্বের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে কোর্ট-কাছারি তো আমাদের বাড়িতে লেগেই আছে। আমাদের বাড়িতে শুধুমাত্র ব্যারিস্টার হিসেবেই জে’র আলাদা খাতির।
শুধু জে’র আগমনের হেতুটা বাবা যদি জানতেন। জে অবশ্য কথা দিয়েছেন, আলোচনা উত্তপ্ত হবে না। যেন না হয়, যেন না হয়। জে অবশ্য সেটা পারবেন বলেই আমার বিশ্বাস। গুছিয়ে কথা বলাই তো জে’র পেশা। বোম্বের সেরা ল’ইয়ার যদি নিজের বক্তব্য গুছিয়ে না বলতে পারে, তাহলে বলবেটা কে শুনি, হ্যাঁ? জে’র ওপর সেটুকু বিশ্বাস আমার আছে।
যথাসময়ে জে এলেন। ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে। বাবা জানতেন জে সময়েই আসবেন, সিকিউরিটি গার্ডদের সেরকমই বলা ছিল। জে আসলেই যেন সোজা ড্রেসিং রুমে নিয়ে আসা হয়।
জে এসেছেন একটা নেভি ব্লু স্যুট পরে। সাদা টাই। বরাবরে মতোই অসম্ভব স্মার্ট লাগছে। কিন্তু ড্রইং রুমে ঢুকে আমার দিকে তাকিয়ে যখন হাসলেন, এক লহমার জন্য একটু যেন নার্ভাস মনে হলো। বাবা এসে নিজে সঙ্গে করে জে’কে রিডিং রুমে নিয়ে গেলেন। জে আবার সাথে নিউজ পেপারটা নিয়ে গেলেন। কিন্তু খবরের কাগজ তো জে’র পড়া, প্রতিদিন বাড়িতেই তো বেডটির সাথে খবরে চোখ বুলোন। নার্ভাস ভাবটা কাটানোর জন্যই বোধহয় নিলেন।
বন্ধ জানলার পাশে আমি কান পেতে দাঁড়িয়ে, ফস করে দেশলাই জ্বালার শব্দ আর তারপরে অম্বুরি তামাকের মিষ্টি গন্ধ। জে নিউজ পেপারটা নামিয়ে রেখে একটা পাইপ ধরিয়েছেন। “আচ্ছা, স্যার দিন’শ, আপনার কি মনে হয় না ভারতবর্ষের মতো বিশাল একটা দেশে, যেখানে হিন্দু-মুসলিম-বুদ্ধ-জৈন-খৃশ্চান সবাই একসাথে থাকে, আর ভবিষ্যতে থাকবেও, সেখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে সামাজিক মেলামেশা, মতামতের আদান-প্রদান বড্ডো কম হয়?”
বাবা যেন জে’র মুখের কথা কেড়ে নিলেন, “য়ু আর অ্যাবসুলেটলি কারেক্ট। এই তো সেদিন ভিনসেন্ট স্মিথ নামে এক সায়েবের লেখা পড়ছিলাম। সে লিখেছে ভারতবর্ষের মূল ধারাটা হচ্ছে - unity in diversity। বিভেদের প্রাচুর্যের মাঝে ঐক্যের মিলন। ভারতের বাইরে থেকে এসে একজন মানুষ যদি এই সরল সত্যটা বুঝতে পেরে থাকে, ভারতবাসী হয়ে আমাদের এই ধারাটা রক্ষা করতে হবে বৈকি।”
খুব আস্তে একটা শোঁ করে শব্দ হল, জে বোধহয় মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়লেন, “তাহলে আপনি বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে বিবাহ সম্বন্ধে কি ভাবেন? এতে কি আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি আরো বাড়বে না?”
বাবা সাথে সাথে বলে উঠলেন, “এক্স্যাক্টলি সো। ভারতের জাতীয় সংহতি রক্ষা করার জন্য আন্ত-ধর্ম-বিবাহ অবশ্যই জরুরী। অন্তত আমার এ বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। অ্যাজ এ ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট, আই বিলিভ দিস কুড আল্টিমেটলি প্রুভ টু বি দ্য ফাইনাল সল্যুশন টু ইন্টার-কম্যুনাল অ্যান্টাগোনিজ্ম।”
জে সামান্য কেশে গলাটা সামান্য পরিষ্কার করে নিলেন। তারপর খুব শান্ত স্বরে, গম্ভীর গলায় বলতে শুরু করলেন, “ওয়েল, স্যার দিন’শ, ইন দ্যাট কেস, আমি আপনাকে এরকম একটা বিয়ের অংশ হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছি।” একবার বোম্বে হাইকোর্টে জে’র সওয়াল শুনতে গেছিলাম, ঠিক সেরকম। যুক্তির পশরা সাজিয়ে, মহামান্য আদালত ও জুরীবৃন্দের সামনে মামলাটা পরতে পরতে সাজিয়ে, তারপর ক্ষুরধার ক্লোসিং আর্গুমেন্ট।
“আমি নিজে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম। হিন্দু-বৌদ্ধ-জৈন-পার্সি-খৃশ্চান সব ধর্মকেই আমি শ্রদ্ধা করি। আপনার মতো আমিও বিশ্বাস করি ইন্টার-কম্যুনাল ম্যারেজ ভারতবর্ষের সব ধর্মের মানুষকে মেলানোর অনেকগুলো পথের একটা। মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি, আমি নিজে অ-মুসলিম একজন মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।” বাবা জে’কে থামিয়ে বলে উঠলেন, “য়ু শুড অ্যাবসুলেটলি গো অ্যাহেড। সমাজ হয়তো প্রথমে আপনাকে মেনে নেবে না। হয়তো কেন? নিশ্চয়ই মেনে নেবে না। কিন্তু, আপনি পথপ্রদর্শক হতে পারেন। আপনি সমাজের একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আপনি নিজে যদি এরকম একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন, তাহলে সমাজ শিখবে, এগোবে। অর্ধশতাব্দী আগে, বঙ্গদেশে পণ্ডিত বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ অ্যাক্ট চালু করেছিলেন। সকলের মুখ বন্ধ করার জন্য নিজের খরচায় বিধবাবিবাহ চালু করেছিলেন, এমনকি নিজের ছেলের বিয়েও দিয়েছিলেন সমাজের চোখে হতভাগা এক বিধবা মেয়ের সাথে। ইতিহাস ওঁকে মনে রেখেছে। কে বলতে পারে, ইতিহাস একদিন সেই একই ভাবে আপনাকেও স্মরণ করবে না?”
আমার মাথার ওপরে কেউ যেন দশ কিলো ওজনের বস্তা চাপিয়ে দিয়েছে। জে এবার কি বলবেন? “রুট্ঠি, আই মিন, আপনার মেয়ে মিস্ পেতিকে আমি ভালোবাসি এবং যোগ্য সম্মানের সাথে বিয়ে করে তাঁকে আমার সহধর্মিণীর সম্মান দিতে চাই। আমরা দু’জনেই এই বিয়েতে সহমত। আই বিলিভ আই অ্যাম স্পীকিং ফর বোথ অফ আস হোয়েন আই সে দ্যাট উই হ্যাভ এগ্রীড টু বি ম্যারিড।”
উত্তেজনায় একটা ষোলো বছরের হৃদয় থরথর করে কাঁপছে। কানটা জানলার ওপরে চেপে বসেছে। বাবা কি কিছু বলছেন? কিছু শোনা যাচ্ছে না কেন? কেন, কেন, কেন?
অনেকক্ষণ কিছু শোনা গেল না। আমার কানটা জানলায় চেপে চেপে ব্যথা হয়ে গেছে। ঘড়ির কাঁটাটা যেন থেমে গেছে।
হঠাৎ দুম করে রিডিং রুমের ভারী কাঠের দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল।
1900 সালে সুভাষচন্দ্র বসুর পড়াশুনো বোধহয় শুরু হয় নি, কারণ তখন তাঁর বয়স মাত্র তিন বছর।
অনির্বানবাবু খুব ভালো শুরু করেছেন। আপনার লেখার বিষয়বস্তু অত্যন্ত আকর্ষণীয়. ভারতে আমরা যেকজন মানুষকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা korte bhalobasi এবং সবচেয়ে কম তার সম্পর্কে জানি তিনি হলেন আপনার গল্পের নায়িকার স্বামী জে . আশা করবো ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই মানুষটিকে আমরা আরো ভালোভাবে জানতে পারবো. আপনার প্রতিটি কিস্তি পড়বার জন্য মুখিয়ে থাকবো. পরিশেষে বলি হুমায়ুন আহমেদ আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক. উনি প্রথমে বাংলা ফিক্শন এ অন্য ভুবন বা প্যারালাল ওয়ার্ল্ড একে সঠিক রূপায়ণ করেন মিসির আলীর একটি গল্প নিষাদ এ. দুর্ভাগ্য কোলকাতার পাঠক এই শক্তিশালী লেখকটিকে চিনতেই পারলোনা. আমার নিজের eei lockdown eer somoy হুমায়ুন আহমেদ এর স্মৃতির উদ্যেশ্যে উৎসর্গ করে কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল কিন্তু জানিনা আর পারবো কিনা. শুভেচ্ছা নেবেন.
Zinnah converted a Persian, non-Muslim woman to Islam and married her...Mashallah! Muslim men should convert all the non-Muslim women and have Muslim babies from them...this is true spirit of Islam.
শুরুটা বেশ ক্লাইমেকসপূর্ণ, ভাষাও খুব সুন্দর। তারপর?
#
হুমায়ুন আহমেদ মৃদু মানুষের ঈশ্বর নাকি? ঈশ্বরের তাহলে বড়ই দুর্দিন বলতে হয়। এপারে অবশ্য টিন এজদের মধ্যে এখনো হুমায়ুন আহমেদ পড়া হয়।
এসদে, ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।
রিজওয়ানুল, এই পৃথিবীতে অনেক ভালো মানুষ আছেন। ভালো ভালো ব্যাপারটা যাতে বেড়ে না যায়, সেই জন্য আপনারাও আছেন।
বাহ্ বেশ লাগলো শুরুটা। সবটা পড়ার ইচ্ছে রইলো। আপনার 'জে' কে, 'রট্ঠি' কে চেনার ইচ্ছা রইলো।
যদিও ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না, তবু দুজন মানুষকে আমি ঈশ্বর বলে মানি, লেখার জগতে।
এক। সুকুমার রায় , আর
দুই। নারায়ণ সান্যাল।
আমি লিখতে বসলেই মাথার মধ্যে এসে নারায়ণ সান্যাল বাসা বাঁধে। পারি না। চাই।
একটা অনুযোগ, না জেনেই করছি। সুভাষ চন্দ্র বসু কি তিন বছর বয়সে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন? ১৮৯৭ সালে জন্ম। সে সময় পড়াশোনার 'পাঠ' কি এতো তাড়াতাড়ি শুরু হতো?
খুব ভালো লাগছে এটা পড়তে