৯২০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে ব্যোমকেশ। এরপর বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তি হয় ইন্টারমিডিয়েটে। ১৯২১ সালে, ব্যোমকেশ যখন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র, বয়স মাত্র সতেরো বছর, পর পর বাবা আর মা মারা যান। দুজনেই মারা যান দুরারোগ্য যক্ষ্মা রোগে। তাঁর জীবনে শুরু হয় এক অদম্য লড়াই, একলা চলার লড়াই ... ...
ব্যোমকেশের গল্প গুলো লেখা হয়েছিল অজিতের বয়ানে। অজিতের দৃষ্টিভঙ্গিতে। দৃষ্টিকোণ থেকে। এখানে সেই গল্পগুলোকে নিয়েই একটু আলোচনা করা হবে, তবে ব্যোমকেশের দৃষ্টিভঙ্গিতে। আর গল্প গুলো থেকে টুকরো টুকরো করে ঝেঁড়েবেছে ব্যোমকেশের জীবনকে বোঝার চেষ্টা করা হবে। অনেক কিছুই দেওয়া নেই। কল্পনা করে নিতে হয়েছে। যদিও কল্পনাকে কখনোই ডানা মেলে আকাশে উড়তে দেইনি। বাস্তবের মাটিতে পা রেখেই কল্পনাকে মেশাতে হয়ছে। চলুন এগিয়ে যাওয়া যাক। ... ...
ফেলুদার সাথে আমাদের প্রত্যক্ষ পরিচয় করিয়ে দেয় তোপসে। জানায় ফেলুদা তার মাসতুতো দাদা। ফেলুদা, ফনি ডাক্তারের সাথে দেখা করে। তোপসেকে একটা মুখোশ কিনে দেয় 'নেপাল কিউরিও শপ' থেকে। প্রবীর মজুমদারের সাথে দেখা হয়, তার মুখ থেকে তার হোটেলের খবর বের করে নেয়। তিনকড়িবাবুর আসল পরিচয় জানতে পারা যায়। তিনকড়িবাবুও ডঃ ফনি মিত্রের কাছে গেছিলেন। এবং তাঁর বয়ান থেকেই প্রথম জানা যায় ফেলুদার সিগারেটের নেশা আছে। এর আগে ফেলুদাকে সিগারেট ধরাতে দেখা যায়নি। এরপরে আছে। এই রাতেই রাজেনবাবুকে মুখোশ পরে ভয় দেখায়, অপরাধী। ... ...
ফেলুদা হঠাৎ 'জ্যাক দ্যা রিপার' শব্দটা কয়েকবার অস্ফুট উচ্চারণ করলো। লালমোহনবাবু বোধহয় ঠিক শুনতে পারেননি। উনি প্রশ্ন করলেন, "জ্যাক ফ্রুটের কথা বলছেন? মানে কাঁঠাল?"। ফেলুদা লালমোহন বাবুকে বললেন, "নাহ্। জ্যাক দ্যা রিপার"। তারপর আমাকে বললো, "চল তোর সিধু জ্যাঠার বাড়িতে, কয়েকটা ইনফর্মেশনের দরকার আছে। এ ব্যাপারে সিধু জ্যাঠার শরণাপন্ন হতেই হবে। আপনিও যাবেন নাকি লালমোহন বাবু? কাছেই। হাঁটাপথ।" ... ...
ফেলুদা ধপ্ করে একটা শব্দে বইটা বন্ধ করে, নীচু টেবিলটার উপরে রাখা ডান পায়ের উপরে বাঁ পাটা লম্বা করে তুলে, তুড়ি মেরে সিগারেটের ছাইটা ছাইদানিতে ফেলে বললো, "শার্লক হোমস।" ফেলুদা এতক্ষণে ধরে দুটো বই প্রায় একসাথে পড়েছিল। দুমাস আগে বিহারের শিমূলতলায় একটা খুনের ব্যাপারে অপরাধীকে জুতোর সাইজের গোলমালের সাহায্যে ধরে দিয়ে, বেশ মোটা রোজগার করে বসে আছে। ... ...
আমাদের বাড়িতে ছোটবেলায় ঠাকুমার এক বন্ধু, পাড়ারই এক বয়স্ক মহিলা, আসতেন। ঠাকুমা তাকে 'মেজদি' বলে ডাকতেন। আর আমরা সকলে, মানে ছোটরা, তাকে 'বিবিধ ভারতী' অথবা 'বিবিসি' বলতাম। সামনে না অবশ্য, পিছনেই। তিনি প্রায় প্রতিদিনই বিকেলবেলা, পাড়ার সকলের বাড়িতে যেতেন। প্রত্যেক বাড়ির জন্যেই তার বিকেল আর সন্ধ্যার খানিকটা সময় বরাদ্দ করে রাখতেন। আসতেন, চা খেতেন, গল্প করতেন, এক সময়ে চলে যেতেন। খালি হাতে ফিরতেন না। যাবার সময় তাঁর ঝুলিতে জমা পরতো একরাশ 'খবর'। ... ...