এনার্সি আর ক্যাব, দুটিই দানবিক প্রক্রিয়া : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : NRC/CAA | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১২৪৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
প্রথম থেকে এই তালিকা বিয়োজনের উদ্দেশ্যে নিবেদিত। বর্তমানে এনার্সি শুধু আসাম নয়, ভারত নয়, এমনকি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রক্ষাপটেও একটি উল্লেখযোগ্য আলোচ্য বিষয়। প্রতিটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী, তাদের গণসংগঠন, প্রতিটি ভাষিক গোষ্ঠী, তাদের প্রতিনিধিত্বকারী দল উপদল, প্রতিটি ধর্মীয় গোষ্ঠী যাদের কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ভূগোল-ইতিহাস, তারা নিজের সুবিধামতো, নিজের রাজনৈতিক লাভ, সামাজিক লাভ ক্ষতি বিবেচনায়, একটি করে আনুমানিক সংখ্যা ঠিক করেছেন, এবং প্রত্যাশা করেছেন সেই সংখ্যাই প্রতিফলিত হবে এনার্সির চূড়ান্ত তালিকায়। অসমীয়া চেয়েছেন বাঙালির নামকর্তন হোক প্রভূত পরিমাণে, বাঙালিরা উল্টোটা চেয়েছেন। হিন্দুরা চেয়েছেন মুসলমান বিতাড়িত হোক এই ভূখণ্ড থেকে, মুসলমানরা চেয়েছেন মুসলমানের সংখ্যা কম হোক, হিন্দুরা চিহ্নিত হোক বেশি পরিমাণে। এবং এই ভাবেই সম্পূর্ণ নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গিতে নাম বিয়োজনের উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে এনার্সির চূড়ান্ত তালিকা।
সংসদে কি পরিবর্তিত (???) সিএবি আসতে চলেছে ? : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : NRC/CAA | ২০ নভেম্বর ২০১৯ | ১২৭৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
আমরা এক পা এগোলে হিন্দুত্ববাদীরা পাঁচ পা এগিয়ে যায়। ফলে আমরা যারা এতদিন সিএবি এর পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করে তার বিরোধিতা করেছি, শীতকালীন অধিবেশনে যে ভার্সনটি বিজেপির নিয়ে আসবার কথা তাতে সেই বিরোধিতার প্রসঙ্গগুলি হিসেব করেই আনা হবে বলে আমার ধারণা। ২০১৬ সালের বিলটি অবিকৃতভাবে আবারও রাজ্যসভায় এবং লোকসভায় পেশ করা হবে, এই অনুমান ভুল প্রমাণিত হতেই পারে। গতবারের বিলটিতে লেখা ছিল যে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত এবং পাকিস্তান বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান এর নাগরিক মানুষদের এদেশ থেকে পাসপোর্ট আইন অনুযায়ী বহিষ্কার করা হবে না এটুকু মাত্র। এই বিলে খুব সম্ভাবনা যে কোনও ভাবে নাগরিকত্ব প্রদানের সম্ভাবনার বিষয়টি যুক্ত করা হবে, আইনের ফাঁকফোঁকর রেখে। তাহলে বিরোধীদের মুখ অনেকটা বন্ধ করে দেওয়া যাবে। আমরা প্রথম থেকে প্রশ্ন তুলে আসছি যে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসার সময় একজন মানুষ এবং তার পরিবার কি প্রমানপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে পারে যাতে সে প্রমাণ করতে পারে যে তারা এই তিনটি দেশের নাগরিক ছিলেন, ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়েছিলেন এবং তারা এই অমুসলিম? হতেই পারে যে এতদিন যা গ্রাহ্য করা হয়নি সেই সেল্ফ ডিক্লারেশন বা এফিডেভিট কে গ্রাহ্য নথি হিসেবে মেনে নিয়ে এদেরকে আপাততঃ এ দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হলো। তাহলেই তো অনেকগুলি বিরোধিতার জায়গা দূর হয়ে যাবে।
কারমাইকেল থেকে - প্রথম পর্ব : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | ১২০৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
আমার ওয়ার্ডের সামনের টানা বারান্দা দিয়ে নিচে দেখা যায় স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিন এর আউটডোর। কারমাইকেল হাসপাতাল। কাতারে কাতারে লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার ওয়ার্ডের পিছনের টানা বারান্দা দিয়ে একটু দূরে দেখা যায় কলকাতা মেডিকাল কলেজ এর আউটডোর। কাতারে কাতারে লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে। কত লোক? তিন হাজার বা পাঁচ হাজার, বা দশ হাজার? আমার কোনও আন্দাজ নেই। “এখানে স্কিনের দিন সবচেয়ে বড় লাইন পড়ে। এইডস আর থ্যালাসেমিয়ার দিন কম। ডেঙ্গুর সময় তো দাঁড়াবার জায়গা পাবেন না।” সব ইনফরমেশন আমাকে জোগায় রুগীর আত্মীয়েরা, ওয়ার্ড অ্যাটেনডেন্টরা এমনকি নার্সেরাও। দু টাকার টিকিট, ডাক্তার লিখে দিলে ওষুধও ফ্রী। সারাটা দিন হয়তো এখানেই কাটবে, কিন্তু তাতে কী? পাড়ার ডাক্তারও ভিজিট একশো টাকা করে দিয়েছে। ওষুধের দাম আকাশছোঁয়া। চুলকুনি হলেও খরচ আছে তিনশো টাকা। জ্বরজারি হলেতো কথাই নেই। টেস্টের খরচ আছে কম করে পাঁচশো টাকা। তার চেয়ে একটা দিন নষ্ট হলে কী আর লোকসান।
নমামি বরাক উৎসব ও বন্ধ কাগজকলের গপ্পো -১ : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ | ২১১০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আজ চোদ্দমাস হতে চললো পেপার মিলের কর্মীরা মাইনে পায়না। অন্নচিন্তা চমৎকারা। চোদ্দমাসের কপর্দক শূণ্যতা সহস্রাধিক সংসারকে ধ্বংসের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। জনপদ ধ্বস্ত। রাঙা অধর নয়ন কালো, ভরা পেটেই লাগে ভালো। এত দিনের স্বপ্ন ভেঙ্গে চূরচূর। এক্সোডাস শুরু হয়ে গেছে। এই অশণি সংকেত সূদূর কল্পনাতেও ছিল না কাগজকল ঘিরে গড়ে ওঠা জনপদের। উজার করে তারা ভোট দিয়েছে, ক্ষমতায় এনেছে বিজেপিকে। তারপরই বন্ধ হয়ে গেল পাঁচগ্রামের মিল কর্মীদের মাসমাইনে। প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি, তারপর আশার ছলনে ভুলি....। শুধু কর্মহীন স্টাফদের হিসেব নিলে চলবে? ক্যাজুয়াল কর্মী রয়েছে আরও সহস্রাধিক। তাদের উপার্জন বন্ধ ষোল মাস। তাদের ঘিরে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য দোকানী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এক্সোডাস, এক্সোডাস। রোজ শোনা যাচ্ছে মিল বিক্রী হয়ে যাচ্ছে প্রাইভেট চত্বরে। তারা যে পুরোনো কর্মীদের বহাল রাখবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। আর সরকারের হাতে মাসমাইনের টাকাটুকুও নাকি অবশিষ্ট নেই।
কিন্তু নমামি বরাক নদী উৎসব? সেটি কীভাবে সম্পন্ন হবে?
নমামি বরাক উৎসব ও বন্ধ কাগজকলের গপ্পো -২ : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২১ জানুয়ারি ২০১৮ | ১২৮৬ বার পঠিত
জানোনা হঠাৎ এই নদী উৎসব শুরু হলো কেন? আজ ব্রহ্মপুত্র, কাল বরাক, করিমগঞ্জের কুশিয়ারা, পরশু পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গা, কেন? মনে হয়না? কেন ? কেন নদী উৎসব হচ্ছে এবং হবে? তার কারণ নর্থ-ইষ্ট থেকে বরাক ব্রহ্মপুত্র বেয়ে, বাংলাদেশের নদনদী সমুদ্র বন্দর ছুঁয়ে হলদিয়া, কোলকাতা হয়ে পণ্য পৌঁছাবে বারাণসী ঘাট অবধি, যেটা মোদীর কেন্দ্র। বরাক কুশিয়ারা দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলবে। তার জন্য কী প্রয়োজন? নদীখনন। নদীখননের জন্য কী প্রয়োজন? টাকা। কে দেবে? গৌরী সেন। মানে নরেন্দ্রভাই দামোদরভাই। তাও না? তাহলে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক? আজ্ঞে হ্যাঁ? তাই।
আপাততঃ এটুকু জেনে রাখুন ভারতবর্ষে টাকার বন্যা বইয়ে দেবার এক নতুন পরিকল্পনা ছকা হয়েছে। আন্তর্দেশ জলপথ পরিবহন। প্রাথমিক প্ল্যানটা হলো বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে বারাণসী থেকে হলদিয়া হয়ে সদিয়া ৪০০০ কিমি জলপথ সংযোগ, ড্রেজিং, ভেসেল কেনা ইত্যাদি। সবটাই প্রায় ঋণের টাকায়, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের ঔদার্যে সফ্ট লোন। কিছুদিন আগে নমামি ব্রহ্মপুত্র উৎসবের মাঝখানে এই বিষয়ে অনেকগুলি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। নমামি বরাক উৎসবের মাঝখানে ড্রেজিং শুরু হচ্ছে।
আসাম জ্বলছে? : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | ২০০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
দ্বিতীয় লাইনটি ফলো করলেই নোটিফিকেশানের লিস্টে কারা অন্তর্ভুক্ত জানা যায় শুধুমাত্র মুসলমান শব্দটিকে বাদ দিলেই। যারা জানেন তারা জানেন যে ইমিগ্রান্টস দের মধ্যে শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীর বিভাজন সংঘপরিবারের দীর্ঘদিনের ধর্মীয় রাজনীতির উপাদান। নোটিফিকেশানের মাধ্যমে তাকেই আইনী বৈধতা দেওয়া হল, যে নোটিফিকেশনের একমাত্র প্যারামিটার হচ্ছে ধর্মীয় নির্যাতন। যে বিশাল সংখ্যক দরিদ্র ও অর্থনৈতিকভাবে নির্যাতিত মুসলিম জনগণ জীবনধারণের আশায় ঢুকে পড়ছে ভারতবর্ষে,এখন থেকে সরকারীভাবে তাদের অনুপ্রবেশকারী ঘোষণা করা হবে। কিন্তু যারা শরণার্থী, তাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি সরকারীভাবে বিবেচিত হলো কি? এই নোটিফিকেশনে তার উত্তর মেলেনা।
“আপনি লিখছেন বিশ্বসাহিত্যের ধারাবাহিকতা বহন করে। লিখছেন সময়ের জন্য।” : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৯ মে ২০২০ | ৩৯১৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৩
আমি যেদিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বরিশালের যোগেন মণ্ডলে, বরিশাল কেন রাখলেন? তিনি তো বরিশালে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। জটিল সাহিত্যবোধে, অনেক গভীরতর কথা বলা যেতো, কিন্তু দেবেশ রায় প্রথমেই বললেন তখনকার সময়ে জায়গার নাম দিয়েই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চেনানো হতো। যেমন বরিশালের যোগেন মন্ডল, তিস্তাপারের বাঘারু , জলপাইগুড়ির দেবেশ এরকম। এর বেশি কোন কারণ তখন আমার মাথায় ছিলনা। আমার মাথায় ছিল একটা ঘোর, যে ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে আমি দিস্তার পর দিস্তা বরিশালের যোগেন মন্ডল লিখেছি, শুধু প্রাকৃতিক কর্ম ছাড়া লেখা থেকে চোখ সরাইনি। অসুস্থ হয়ে পড়তাম, একটু সুস্থ হয়ে আবার লিখতে বসতাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম ঐরকম একটা জায়গায় যেখানে যোগেন মন্ডল পাড়ি দিচ্ছেন পাকিস্তানে, সেখানে বইটা শেষ করলেন কেন? তাঁর উত্তর ছিল, আমি শুধু ঐটুকুই বলতে চেয়েছি। তার পরের অংশে আমার কোন আগ্রহ বা দায়িত্ব নেই। আমি তো ইতিহাস লিখছি না উপন্যাস লিখছি।
বরাক-উপত্যকায় বাঙালির ধারাবাহিক সমস্যা: ভাষাশহিদ স্টেশনের দাবি প্রত্যাখ্যাত -- দ্বিতীয় পর্ব : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১৬০৪ বার পঠিত
ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বিভাজনের খেলাও। মুসলিম কমিউনিটিকে টোপ দেওয়া হচ্ছে তোমরা নিজেদের ভূমিপুত্র দাবি করো। হিন্দুদের বহিরাগত বলো। এবং প্রচার করো তোমাদের ভাষা অসমীয়াও নয়, বাংলাও নয়, সিলেটি। বলো সিলেটি নিজেই একটি ভাষা, তার স্ক্রিপ্ট নাগরী। গোপনে এমন প্রচারও চলছে যে বরাক এবং বাংলাদেশের সিলেট জেলা নিয়ে আলাদা রাজ্যের ডাক দিতে হবে। মোদ্দা কথা যেহেতু সিলেটি বাংলা নয়, ফলে বরাকে বাংলাভাষার দাবি এমনিতেই নস্যাৎ হয়ে যাবে।
বরাক-উপত্যকায় বাঙালির ধারাবাহিক সমস্যা: ভাষাশহিদ স্টেশনের দাবি প্রত্যাখ্যাত -- তৃতীয় পর্ব : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২৪০৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
এই সমস্ত সরকারি নথি এটাই প্রমাণ করে যে আসাম বিধানসভায় শিলচর স্টেশনের নামাকরণের প্রস্তাব স্থগিত রাখার ঘোষণা আসলে মিথ্যাশ্রিত এবং হিমশৈলের চূড়া মাত্র। মূল আক্রমণ আসবে এর পরে। বিভিন্ন ভাষিক গোষ্ঠীকে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা, উপত্যকার সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর ভাষাকে অসমীয়ার উপভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা, সর্বোপরি আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার অজুহাত, এসবই এক গভীর ষড়যন্ত্রের পূর্বপ্রস্তুতি।
আইনের শাসন: উত্তর-পূর্বাঞ্চল : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২৮ অক্টোবর ২০২০ | ২২০৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সরকারি কর্মীর হাতে, পুলিশের হাতে, সেনাবাহিনীর হাতে, বিচারকদের হাতে, সাংবাদিকদের বা প্রচার মাধ্যমের হাতে, ব্যবসায়ীদের হাতে, এমনকি জঙ্গিদের হাতেও থাকে স্বেচ্ছাচারিতার অগাধ ক্ষমতার উপস্থিতি। তারাই ক্ষমতা বৃত্তের ভরকেন্দ্র। সাধারণ মানুষ এখানে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক।
সিপিএমের নতুন প্রজন্ম : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | ভোটবাক্স : বিধানসভা-২০২১ | ০৫ মার্চ ২০২১ | ৪৯৪২ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৩
কমিউনিস্ট বলতে জনমানসে এক বিচিত্র স্টিরিওটাইপ রয়েছে। তারা দুর্নীতিমুক্ত সৎ হবে, তারা বহুজনহিতায় জীবন উৎসর্গ করবে, তারা সর্ববিষয়ে আদর্শ হবে, তারা প্রতিস্রোত হবে, নীরব সেবাব্রতী হবে ইত্যাদি প্রভৃতি। সমস্যা হল সর্বগুণে গুণান্বিত সিপিএমের এই নব্যপ্রজন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উঠে আসে নি। ফলে এই বিচিত্র স্টিরিওটাইপ তাদের অধিগতও নয়, আকাঙ্ক্ষিতও নয়। তারা অনেক বেশি বাস্তববাদী।
ডলু চা-বাগান ও সবুজধ্বংসী বিমানবন্দরের বিশ্বাসঘাতকতা (পর্ব - ১) : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২৪ মে ২০২২ | ২৩০৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
আসামের বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলায় “ডলু চা বাগান” রাজ্য সরকার আংশিকভাবে অধিগ্রহণ করেছে। ১২ই মে ২০২২-এর কাকভোরে ২৫০০ বিঘা জমি, প্রায় ত্রিশ লক্ষ চা গাছের ঝোপ এবং কয়েক সহস্র ছায়া গাছ উপড়ে ফেলে জমি পরিষ্কার করা হয়েছে। অবশ্য বিজেপি সাংসদ বলেছেন, ডলুতে কোনও উচ্ছেদ হয়নি, যা হয়েছে জমি অধিগ্রহণ। এদিকে দুই হাজার চা শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেছে। স্থানীয়, রাজ্য এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি এই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে। কিন্তু তারপর থেকে সেখানে নেমে এসেছে এক শ্মশানের স্তব্ধতা। কোনও সংবাদ বাইরে বেরোচ্ছে না। কাউকে ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না ... তথাকথিত উন্নয়নবিরোধীর তকমা যাদের গায়ে সেঁটে দেবার চেষ্টা হয়েছিল, তাদেরই কয়েকজন ... কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – কেন ডলু? কেন পাশের বিশাল খালি জমি খরিল নয়?
ডলু চা-বাগান ও সবুজধ্বংসী বিমানবন্দরের বিশ্বাসঘাতকতা (পর্ব - ২) : পার্থপ্রতিম মৈত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ৩০ মে ২০২২ | ২০০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
আবারও বলছি, চুক্তিপত্রের কোথাও ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বলা নেই। অনিচ্ছুক শ্রমিকদের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণের টাকা ধরা হয়েছে কিনা, হলে তার পরিমাণ কত – সেটা বলা হয়নি। কোথাও বলা নেই – এই চুক্তিটি, এই আশ্বাস – কত সময়ের জন্য বলবৎ থাকবে। কোনো প্রতিশ্রুতির কোনো আইনগত প্রভিশন নেই, কোনো টাইম-ফ্রেম নেই। সমস্ত দায়িত্বটাই ন্যস্ত করা হয়েছে কোম্পানির সদিচ্ছার ওপর। সরকারের দায়িত্ব শুধুমাত্র কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আইনে কোম্পানিগুলিকে অধিকার দেওয়া হয়েছে অপ্রয়োজনীয় শ্রমিকদের ছাঁটাই করার। অনতিদূর ভবিষ্যতে কোম্পানি যে তার এই অধিকার প্রয়োগ করে শ্রমিক ছাঁটাই করবে না – তার গ্যারান্টি কী? এবং তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এই ধারাটিকে এই রকম শূন্যগর্ভ অর্থহীন শব্দ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কেন?