বর্ধমান শহর স্বাস্থ্য উদ্ধারের শহর ছিল। বিদ্যাসাগর বঙ্কিমচন্দ্র দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ এই শহরে এসেছেন স্বাস্থ্য ভালো করবার আশায়। স্বাস্থ্য শহর থেকে মশা মাছি ধানের শহর কবে হল বর্ধমান? দিনক্ষণ লেখা নেই। তবে হল, একদিকে সিপাহি মহাবিদ্রোহ দমনের জন্য ক্যাম্পিং গ্রাউন্ডে সেনা শিবির অন্যদিকে রেল লাইন নির্মাণের জন্য কৃষি জমি দখল করে মাটি উঁচু রেলপথ নির্মাণ। জল নিকাশীর সহজ বন্দোবস্ত গেল ধ্বংস হয়ে। ম্যালেরিয়া এল। পথের পাঁচালী-র ইন্দির ঠাকরুণের দল বেঘোরে মরতে লাগলেন। জল নিকাশী ব্যবস্থা গড়ে না তোলায়। ... ...
জলপথে ডোভার থেকে ক্যালের দূরত্ব তিরিশ কিলোমিটার। ফ্রান্সের বাড়ি যাবার সময়ে গাড়ি সহ চ্যানেল টানেল দিয়ে সাগর পার হতে লাগে ৩৫ মিনিট। কোন উজ্জ্বল দিনে ফ্রান্সের কাপ গ্রি নেজ থেকে ডোভারের ঝকঝকে হোয়াইট ক্লিফস দেখে ভেবেছি, এই তো এতো কাছে ! দুই দেশের মধ্যে ভৌগোলিক দূরত্ব এখানে সবচেয়ে কম, রোমেল সহ অনেক জার্মান জেনারেল ধরে নিয়েছিলেন আক্রমণ আসবে অন্য কোথা নয়,এই পা দে ক্যালেতে। এরউইন রোমেল একদিন এইখানে দাঁড়িয়ে তাঁর বাইনোকুলার বাগিয়ে ইংল্যান্ডের দিকে চেয়েছিলেন – ভেবেছিলেন এই শান্ত সমুদ্রের ওপারে হয়তো তৈরি হচ্ছে কোন মারণ ফৌজ? তিনি বলেছিলেন, যেদিন শত্রু এই জলসীমা পার হয়ে তার হাওয়াই জাহাজ ও নৌ বহর নিয়ে ইউরোপীয় মূল ভূখণ্ডের কিনারায় আক্রমণ শুরু করবে, সেই দিন, সেই প্রথম চব্বিশ ঘণ্টা হবে আমাদের জার্মানদের ও শত্রু সৈন্যের পক্ষে সমান গুরুত্বপূর্ণ, নির্ণায়ক দিন, কেননা সেটাই হবে দীর্ঘতম দিন, দি লংগেস্ট ডে (ডের লেঙ্গস্টে টাগ, যা থেকে প্রযোজক ডারিল এফ জানুক তাঁর ছবির নাম রাখেন)। ... ...
যাই হোক, আমরা সাহস করে লাচুং এর বুকের পাথরে দাঁড়িয়েছিলাম, ঐ কতকটা মাঝ নদীতে বলা যায়। পায়ে হিম জলের ছিটে লাগছিল, হাত দিলে জল না ছুরি বোঝা দায়। হঠাৎ স্যার বললেন যে যেখানে আছ, নদী যে দিক থেকে আসছে সে দিকে ফিরে দাঁড়াও। আমরা ফিরে দাঁড়ালাম লাচুং এর উৎসের দিকে, আসলে অতীতের দিকে, ল্যান্ডস্কেপ কথা বলে উঠল। কানে তালা লেগে যাচ্ছে। সে কী শিহরণ! ঈশ্বর দর্শন কি এমনই হয়? ... ...
বাঃ, দনু-ই তো রাম-লক্ষ্মণকে বলে দিল সেই পাহাড়টার কথা যেখানে সুগ্রীব তখন থাকে – ঋষ্যমূক না কী যেন নাম বললে তু্মি! সেখানে না গিয়ে তো সুগ্রীব আর হনুমানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে না রাম-লক্ষ্মণের। সেই বন্ধুত্ব হবার আগেই কি সীতার খোঁজ করতে সারা পৃথিবীতে বেরিয়ে পড়বে সুগ্রীবের দল? ওরা তো সীতার নামই শোনেনি তখনও। আগে তো রাম-লক্ষ্মণের সঙ্গে সুগ্রীব-হনুমানের আলাপ হবে, বন্ধুত্ব হবে, তারপরেই না সুগ্রীব তার বন্ধু রামের জন্যে নিজেদের দলের বাঁদর-টাঁদরদের পাঠাবে সীতার খোঁজ নিতে! তাই না? ... ...
সুদীপ্তর সঙ্গে কথা বলে তৃপ্তি পেতাম। ওর বিশ্লেষণ শক্তি অসাধারণ, দৃষ্টি অনন্য। জটিল বা দৈনন্দিন যে কোন বিষয়ই হোক তার উপর সাধারণ মানুষের যা মতামত, তা ওর সঙ্গে আলোচনা করার পর বদলে যাবে। চিরদিনের লালিত ভাবনাকে নতুন করে চিন্তা করতে ইচ্ছা হবে। আমার অতি পরিচিত বস্তুকে এতকাল যে দৃষ্টিতে দেখেছি তার যে আরও একটা দিক আছে তা সুদীপ্তর সঙ্গে কথাবলার পর আবিষ্কার করেছি। নিরিবিলিতে আমাদের কথাবার্তা হত যখন আমরা পরস্পর পরস্পরের বাড়িতে যেতাম। ওরা যতদিন লন্ডনে ছিল ততদিন এমনই দেখা সাক্ষাৎ প্রায়ই হত। ... ...
গত এক হাজার বছরে বাঙালি বা ভারতীয় বা পৃথিবীর যেকোনও দেশের নাগরিক খেয়াল করবেন গত চার দশকে মানুষের মনোজগতে এক বিপুল পরিবর্তন হয়েছে। রেডিও এবং দূরদর্শন প্রথমদিকে মধ্যবিত্তের কৃষ্টি ও সাংস্কৃতিক জগতকে সযত্নে লালন করেছে। এবং দূরদর্শনে সিরিয়ালের আগমন পারিবারিক জীবনে পরিবর্তন আনতে শুরু করে। প্রথম প্রথম প্রতিবেশী বা আত্মীয় এলে একসঙ্গে বসে সিরিয়াল বা খবর বা খেলা দেখার চল ছিল। এরপর মধ্যবিত্ত পরিবারে সিরিয়ালের সময় কেউ এলে বিরক্তি উৎপাদন শুরু হল। ... ...
এক বিকালে দরজায় ঘন্টা বাজল। দরজা খুলে দেখি শ্মশ্রুশোভিত, দীর্ঘকেশ, ধুতি-পাঞ্জাবী পরিহিত এক যুবক। অচকিতে ঢিপ করে একটা প্রণাম করে বলল, “আমি আরিন্দম চক্রবর্তী।” আমি বললাম, “জানি, দেবাশিস আমাকে তোমার কথা বলেছে। ভিতরে এসো।” অনুর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলাম। সেই শুরু; আমরা হয়ে গেলাম ওর অনেক দিনের দাদা-বৌদি। ... ...
রেডিওর মানুষদের দেখা একটা বিরাট ব্যাপার ছিল তখন। রেডিওর কোনো মানুষকে প্রথম দেখি ১৯৮১-তে। সেকালে কোনও শিল্পীর পাশে বেতার খ্যাত লেখা মানে বিশাল ব্যাপার। ১৯৭৫-এ কলকাতায় টিভি এল। এর ১০ বছর পর মফস্বলে ভালো করে টিভি ছড়াল। বিশেষ করে রাজীব গান্ধীর কল্যাণে দূরদর্শনে রামায়ণ ধারাবাহিক সম্প্রচার হওয়ার পর। তার আগে টিভির গুরুত্ব ছিল বিশ্বকাপ ফুটবল ক্রিকেট ম্যাচ সংবাদ আর চিত্রহারে। মারাদোনা এবং আর্জেন্টিনা দলের জন্যও টিভি বিক্রি বেড়েছে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সময়। টিভি কোম্পানিগুলোর উচিত মারাদোনার পরিবারকে পয়সা দেওয়া এবং রামানন্দ সাগরের পরিবারকে। তার চেয়েও বেশি রাজীব গান্ধীর পরিবারকে। স্যাম পিত্রোদার সহায়তায় তথ্য ও সম্প্রচার ভারতে এক উন্মাদনা সৃষ্টি করে। এর সঙ্গে যোগ দিলেন প্রণয় রায়। প্রতি শুক্রবার রাতে বিশ্ব সংবাদের এক নতুন জগৎ খুলে দিলেন। খুল যা সিম সিম। যা টিভি দেখা অন্যায় মনে করতেন সেই বামপন্থীদের পরিবারেও টিভি ঢুকল। মানে ঢোকার একটা নৈতিক মতাদর্শ খাড়া করা গেল। প্রণয় রায় দেখা দরকার-- কী ভালো যে করছে লোকটা। ... ...
রেডিও চালানোর ঝকমারি ছিল অনেক। রেডিওতে অ্যান্টেনা উঠিয়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ ফুট একটা সোনালি রঙের জালি দেওয়া তার থাকতো, সেটা মাঝে মাঝে নাড়াতে হতো। নাহলে সিগন্যাল ভালো পাওয়া যেতো না। রেডিও চালানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে লাইসেন্স নিতে হতো। যাদের বড় রেডিও তাঁদের দিতে হতো বার্ষিক ২০ টাকা। মাঝারি রেডিওর ১২ টাকা। ডাকঘরে গিয়ে পৌষ মাস তথা জানুয়ারি মাসে জমা দিতে হতো। ... ...
রিমিনি থেকে ইমোলার ট্রেন নন স্টপ নয়, পঞ্চাশ মিনিটে আটটা স্টেশনে থামে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাভিনানো সুল রুবিকোনে, এখানেই কোথাও সিজার সেই নদীটি পার হয়ে রোমান রিপাবলিকে তুলকালাম বাধিয়েছিলেন। ইমোলা স্টেশন দেখে হতাশ হলাম। বোলপুর তার তিনগুন বড়ো। টেলিভিশনে আহরিত তথ্য অনুযায়ী দিনো এ এনজো ফেরারি ইপোদ্রোমে প্রায় এক লক্ষ দর্শক বসতে পারেন তবে স্টেশন এত ছোট কেন? কারণ শহরটি খুবই ছোট, মাত্র সত্তর হাজার লোকের বাস; বছরে তিন দিন লোকে লোকারণ্য হয় মাত্র! ... ...
মুড়কি অবিশ্যি আন্দাজ করেইছিল কথাটা ও জানবে না। তাই আজ রোববার সকালে জলখাবারের লুচির ময়দা মাখা হচ্ছিল যখন, তখনই সেখান থেকে একটুখানি মাখা-ময়দা সরিয়ে রেখেছে সে। আর সেই ময়দা দিয়ে তৈরি করেছে একটা মানুষ-পুতুল। সেই পুতুলটা বইয়ের আলমারি থেকে নামিয়ে, উচ্ছে কিছু বোঝবার আগেই এক টানে পুতুলটার মুণ্ডুটা ধর থেকে আলাদা করে দেয় মুড়কি, ধড়টাকে দেখিয়ে বলে, এই হল কবন্ধ। ... ...
বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে আমরা একশ কুড়িজন ছাত্রছাত্রী। তার মধ্যে কুড়ি জন করে স্যার ম্যামেরা গ্রুপ ভাগ করে নিলেন। আমরা ব্রেবোর্নাইটরা সব রোল নাম্বারে মোটামুটি প্রথম কুড়ির মধ্যেই ছিলাম। আমাদের গ্রুপে উনিশটি মেয়ে এবং একটি ছেলে - তাপস। আসল নামটা বলেই দিলাম। প্রৌঢ় বয়সে কী বা যায় আসে? গ্রুপে সে বেচারা গোবেচারা হয়ে থাকতেই বাধ্য হয়েছিল। তবে এখন আমাদের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মেয়েদের যেমন নেকুপুশু ভাব দেখি, যন্ত্রপাতি বইতে হলেই - ‘ওরে, ছেলেরা, তোরা ধর’ - অমন আমরা মোটে ছিলামনা। ... ...
পোয়েটস কর্ণারটা একটু অন্যরকমের। এখানেও কবি ও কবিতা নিয়ে আলোচনা হত। তবে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হত অংশগ্রহণকারী কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠের উপর। এরকম আসরে আমি প্রায়ই যেতাম এবং মাঝে মাঝে অংশ নিতাম। নিজের কবিতা পড়তাম। একবার এমনই এক আসরে গিয়ে একটা নতুন কিছু পেলাম যা আমাকে চমক দিয়েছিল। এখানে কয়েকজন তরুণ তরুণী কবির সঙ্গে আলাপ হল। তাদের এক অভিনব কর্মকান্ড দেখে আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। ... ...
বন্ধু ভাস্কর দত্ত আনন্দবাজার পত্রিকার বাদল বোসের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। একদিন এক আড্ডায় বাদল বোস আমাকে বলল কলকাতার পাব্লিশার্স গিল্ড লন্ডনে বই মেলার আয়োজন করছে। আমি যদি ওদের বইগুলো আমার বাড়িতে রাখতে দিই তাহলে ওদের খুব উপকার হয়। আমি সানন্দে রাজী হলাম। যথাসময়ে বেশ কয়েক বাক্স বই আমার বাড়িতে এসে হাজির। এর কিছুদিন বাদে কলকাতা থেকে গিল্ডদের পক্ষ থেকে অনিল আচার্য্য ও শ্রীবিন্দু এলো লন্ডনে। ক্যামডেন টাউন হলে পূজা মণ্ডপে বই সাজানো হল। আমি ও অনু প্রতিদিন সব বইয়ের বাক্স আর অনিল ও শ্রীবিন্দুকে নিয়ে গাড়ী করে ক্যামডেন টাউন হলে যেতাম। গাড়ী থেকে বাক্স বাক্স বই নিয়ে টেবিলে সাজানো সবই আমাদের নিজে হাতে করতে হত। লন্ডনে কুলি মজুর বা কোন সাহায্যের লোক পাওয়া যেত না। তারপর টেবিলে বসতাম ও বই বিক্রি করতাম। ... ...
ভারতের প্রথম বেতার সম্প্রচার শুরু হয়েছিল কলকাতা থেকে, এবং এই অসামান্য কাজটি করেছিলেন শিশিরকুমার মিত্র। ১৯২৬ এর ২৬ আগস্ট। এই আগস্ট মাসে কার্যত ভারতে বেতার সম্প্রচারের একশো বছর। কিন্তু কোথাও কোনও হেলদোল নেই। কলকাতার পর বেসরকারি উদ্যোগে বোম্বাই, কলকাতা ও মাদ্রাজে রেডিও ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৭ সালে 'ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি (IBC)' বোম্বে স্টেশন থেকে বেতার সম্প্রচারের শুরু করে। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার দেখলেন এত শক্তিশালী মাধ্যম। দখল নিলেন বেতার সম্প্রচারের। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হল সরকারের প্রতিষ্ঠান। ১৯৩৬এ নাম পরিবর্তন করে 'অল ইন্ডিয়া রেডিও'। পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর নাম দেন আকাশবাণী। ... ...
পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ওপাশের ফিরতি পথের জিপ থেকে প্রশ্ন ভেসে আসে, কিছু দেখতে পেলেন ভাই? আমার ভ্রাতুষ্পুত্রের চটজলদি জবাব শুনে চমকে যাই - হ্যাঁ হ্যাঁ গাছে গাছে বুনো পিঁপড়ে দেখলাম প্রচুর। দুই জিপেই হাসির রোল ওঠে। হাসির রেশ শেষ হবার আগেই উল্টোমুখে চলতি জিপ দুটি পরস্পরের থেকে অদৃশ্য হয়। মনে ভাবি পুরোটাতো রসিকতা নয়। জঙ্গলকে বুঝতে হলে শুধু বড় বড় জন্তুজানোয়ার দেখাটাই সব নয়। বড় গাছ, ছোট গাছ, ঝোপঝাড়, লতাপাতা, কীটপতঙ্গ, পশুপাখি সবাইকে নিয়ে পুরো সংসারটাকেই অনুভব করতে হবে। ... ...
একটা বিরাট পাখি, উচ্ছে বলে, অসুখ করে একা-একা শুয়ে আছে বিন্ধ্য পাহাড়ে, কিন্তু সেখানে সে এল কোথা থেকে? রাবণকে চেনে এমন একটা পাখি, সীতাকে চুরি করে রাবণের আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া দেখেওছে, তার বাড়ি কীভাবে যেতে হবে তা-ও জানে, এত কিছুর পেছনে একটা গল্প নেই? ... ...
সেটা বোধ হয় ১৯৮৭ সাল। দু একটা ছোটখাট কাজ পাচ্ছি। অনেকে আশ্বাস দিল তাদের নতুন প্রোজেক্ট শুরু হবে, তার কিছু কাজ আমাকে দেবে। আমি আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। এমন সময় হঠাৎ পৃথিবীর অর্থনৈতিক বাজারে কালোমেঘ দেখা দিল। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার স্টক মার্কেট ক্র্যাশ করল। আর তার জের সুনামির মত ইউরোপ ও এশিয়ার বাজারে ছড়িয়ে পড়ল। সব কোম্পানির অবস্থা খারাপ। আমাকে যারা কথা দিয়েছিল তাদের নতুন প্রজেক্টের কাজ আমাকে দেবে তারা সব পেছিয়ে পড়ল; বলল, আপাতত সে সব প্রোজেক্ট স্থগিত, ফ্রিজে রেখেছে সেগুলো সকলে। ... ...
আজ রিমিনিতে যেখানে উত্তর-দক্ষিণ পথ (কারদো) আর পূর্ব-পশ্চিম পথ (দেকামেনুস) এসে মিলেছে, সেখানে ছিল আরিমিনুম শহরের রোমান ফোরাম। রুবিকন পেরিয়ে সিজার তাঁর ফৌজ সহ ঘণ্টা দেড়েক বাদে সেইখানে পৌঁছুলেন। তিনি জানতেন রোমের আইন তিনি একা ভাঙেননি, তাঁর সঙ্গে ছ-হাজার লিজিওনেয়ার রোমের চোখে সেই একই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবে। রোমের শপথ নিয়ে তাঁরা সৈন্য বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন, এবার সিজারের সাথি হয়ে রোমের বিরুদ্ধেই বিশ্বাসঘাতকতা করবেন (আমাদের আজাদ হিন্দ ফৌজের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল)। সেদিন আরিমিনুম ফোরামে পৌঁছে একটি প্রস্তরখণ্ডের ওপরে দাঁড়িয়ে তাঁর লিজিয়নকে সম্বোধিত করে বলেছিলেন, আমাদের অভিযান রোমের পানে, গৃহ যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী কিন্তু আমরা বিজয়ী হবো। ... ...
যেদিন মমতার ঘরে ঢোকার কথা সেদিন দুপুরে মধ্যদিনের আহার শেষ করে উপরের ঘরে আমি নিদ্রাছন্ন। হঠাৎ নীচের থেকে শোরগোল ও চিৎকারের শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। মমতা চীৎকার করে বলছে “মিস্টার বিশ্বাস, কাম ডাউন কুইকলি।” আমি তাড়াতাড়ি নিচে গিয়ে দেখি, ছোটন, খোকনের ছেলে, সেই ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মোবাইল ক্যামেরাতে ওদের ছবি তুলছে। আমি যেতে মমতা আমাকে উত্তেজিত ভাবে অভিযোগ করল। বলল, “ দেখুন, এই ছেলেটি আমাদের ঘরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। বলছে এ বাড়িতে মামলা চলছে। তোমরা এ ঘরে ঢুকতে পারবে না। ... ...